01.02.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
দীনদয়াল বাবা তোমাদের কড়ি থেকে হীরে-তুল্যে পরিণত করতে এসেছেন, তাই তোমরা সদা ওঁনার
শ্রীমৎ অনুসারে চলো"
প্রশ্নঃ -
তোমাদের
সর্বপ্রথমে সকলকে কোন্ একটি গুপ্ত রহস্য বোঝানো উচিত ?
উত্তরঃ -
"বাপদাদা"-র। তোমরা জানো যে, আমরা এখানে বাপদাদার কাছে এসেছি। এঁনারা দুজনেই একত্র।
শিবের আত্মাও এঁনার মধ্যে রয়েছে, ব্রহ্মার আত্মাও রয়েছে। একটি আত্মা, অন্যটি
পরমাত্মা। তাই সর্বপ্রথমে এই গুপ্ত রহস্য সকলকে বোঝাও যে এই বাপদাদা একত্রিত।
ইনি(দাদা) ভগবান নন। মানুষ ভগবান হতে পারে না। ভগবান বলা হয় নিরাকারকে। বাবা হলেন
সেই শান্তিধাম নিবাসী।
গীতঃ-
অবশেষে সেই দিন এসেছে আজ.....
ওম্ শান্তি ।
বাবা, দাদার
মাধ্যমে অর্থাৎ শিববাবা ব্রহ্মার দ্বারা বুঝিয়ে থাকেন, এ'কথা পাকা করে নাও। লৌকিক
সম্বন্ধে বাবা আলাদা, দাদা আলাদা হয়। বাবার থেকে দাদার(লৌকিকে দাদু) উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত হয়। বলা হয় যে, দাদার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি। তিনি হলেন দীনদয়াল।
দীনদয়াল তাঁকেই বলা হয় যিনি এসে গরীবকে মাথার মুকুটে পরিনত করেন। সে'জন্য
সর্বপ্রথমে পাকাপাকি নিশ্চয় হওয়া উচিত যে ইনি কে ? দেখতে তো সাকার মানুষের মতন,
এঁনাকেই সকলে ব্রহ্মা বলে। তোমরা সকলেই হলে ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। তোমরা জানো যে,
আমরা শিববাবার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার পাই। যিনি সকলের পিতা তিনি এসেছেন উত্তরাধিকার
প্রদান করতে। বাবা সুখের উত্তরাধিকার প্রদান করেন। পুনরায় আধাকল্প পর রাবণ দুঃখের
অভিশাপ দেয়। ভক্তিমার্গে ভগবানকে খুঁজতে গিয়ে ধাক্কা খেতে হয়। কেউই পায় না।
ভারতবাসীরাই গায়ন করে -- তুমিই মাতা-পিতা..... পুনরায় বলে যে, তুমি যখন আসবে তখন
একমাত্র তুমিই আমাদের হবে, দ্বিতীয় কেউ নয়। আর কারোর সঙ্গে আমরা মমত্ব রাখবো না।
আমাদের হলো একমাত্র শিববাবা। তোমরা জানো যে, এই বাবা হলেন দীনদয়াল। গরীবকে ধনবান
করেন যিনি, কড়ি থেকে হীরে-তুল্য করেন অর্থাৎ কলিযুগীয় পতিত কাঙ্গাল থেকে সত্যযুগীয়
মুকুটধারীতে পরিনত করার জন্য বাবা এসেছেন। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে এখানে আমরা
বাপদাদার কাছে এসেছি। এঁনারা দুজনেই একত্রিত। শিবের আত্মাও এঁনার মধ্যে রয়েছে,
ব্রহ্মার আত্মাও রয়েছে, দ্বৈত হয়ে গেল, তাই না! একটি আত্মা, অন্যটি পরমাত্মা। তোমরা
সকলেই হলে আত্মা। গাওয়াও হয় -- আত্মা পরমাত্মা পৃথক ছিল বহুকাল..... তোমরা হলে
মিলিত হওয়া প্রথম স্থানাধিকারী আত্মা অর্থাৎ যে আত্মারা সেই পরমাত্মা পিতার সঙ্গে
মিলিত হয়, যার উদ্দেশ্যেই আবাহন করে বলা হয় -- ও, গডফাদার! তোমরা হলে ওঁনার সন্তান।
বাবার কাছ থেকে অবশ্যই উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। বাবা বলেন, ভারত যা মাথার
মুকুট(ঐশ্বর্য্যশালী) ছিল তা এখন কত কাঙ্গাল হয়ে পড়েছে। বাচ্চারা, আমি এখন পুনরায়
এসেছি তোমাদের মাথার মুকুটে পরিনত করতে। তোমরা দ্বিমুকুটধারী হয়ে যাও। একটি মুকুট
হয় পবিত্রতার, তা থাকে আলোকমন্ডিত। দ্বিতীয়টি হলো রত্নজড়িত মুকুট। তাই সর্বপ্রথমে
এই গুপ্ত রহস্য সকলকে বোঝানো উচিত যে, এই বাপদাদা হলেন একত্রিত। ইনি(ব্রহ্মা) ঈশ্বর
নন। মানুষ ঈশ্বর হয় না। ঈশ্বর বলা হয় নিরাকারকে। সেই পিতা হলেন শান্তিধাম নিবাসী।
যেখানে তোমরা সকল আত্মারা থাকো, যাকে নির্বাণধাম বা বাণপ্রস্থ বলা হয়, পুনরায়
তোমাদের আত্মাদের এখানে শরীর ধারণ করে (নিজ) ভূমিকা পালন করতে হয়। অর্ধেককল্প
সুখের পার্ট, অর্ধেককল্প দুঃখের। যখন দুঃখ সমাপ্ত হয়, বাবা বলেন -- তখন আমি আসি। এই
ড্রামা পূর্ব-নির্ধারিত। বাচ্চারা, তোমরা এখানে ভাট্টীতে আসো। এখানে বাইরের আর কিছু
স্মরণে আসা উচিত নয়। এখানে থাকেই কেবল মাতা-পিতা আর সন্তান। আর এখানে শূদ্র
সম্প্রদায় থাকে না। যারা ব্রাহ্মণ নয় তাদের শূদ্র বলা হয়। তাদের সঙ্গ তো এখানে হয়ই
না। এখানে হয়ই কেবল ব্রাহ্মণদের সঙ্গ। ব্রাহ্মণ বাচ্চারা জানে যে, শিববাবা ব্রহ্মার
দ্বারা আমাদের নরক থেকে স্বর্গের রাজধানীর মালিক করতে এসেছেন। এখন আমরা মালিক নই
কারণ আমরা অপবিত্র। আমরা পবিত্র ছিলাম পুনরায় ৮৪ জন্ম পরিক্রমা করে সতঃ-রজঃ-তমোঃতে
এসেছি। সিড়িতে ৮৪ জন্মের হিসেব লেখা রয়েছে। বাবা বসে বাচ্চাদের বোঝান। যেসকল
বাচ্চাদের সঙ্গে সর্বপ্রথমে মিলিত হন পুনরায় তাদেরকেই সর্বপ্রথম সত্যযুগে আসতে হবে।
তোমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছ। রচয়িতা এবং রচনার সমগ্র জ্ঞান অদ্বিতীয় পিতার কাছেই রয়েছে।
তিনিই মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ। অবশ্যই বীজের মধ্যেই জ্ঞান নিহিত থাকবে যে এই বৃক্ষের
উৎপত্তি, লালন-পালন, বিনাশ কিভাবে হবে ? এ তো বাবা-ই বোঝান। তোমরা এখন জানো যে, আমরা
ভারতবাসীরা হলাম দরিদ্র। যখন দেবী-দেবতা ছিলাম তখন কত ধনবান ছিলে। হীরে দিয়ে
খেলা-ধূলো করতে(ঐশ্বর্য্যশালী ছিলে)। হীরের অট্টালিকায় বসবাস করতে। এখন বাবা স্মরণ
করান যে, তোমরা কিভাবে ৮৪ জন্ম নাও। আবাহনও করে -- হে পতিত-পাবন, দীনদয়াল বাবা এসো।
কাঙ্গাল হয়ে যাওয়া আমাদের পুনরায় স্বর্গের মালিক করে দাও। স্বর্গে গভীর সুখে ছিলাম,
এখন গভীর দুঃখে রয়েছি। বাচ্চারা জানে যে, এইসময় সকলেই সম্পূর্ণরূপে অপবিত্র হয়ে গেছে।
এখন কলিযুগের শেষ, পুনরায় সত্যযুগও চাই। প্রথমে ভারতে এক আদি সনাতন দেবী-দেবতা
ধর্ম ছিল, এখন তা প্রায় লুপ্ত হয়ে গেছে। আর সকলে নিজেদের হিন্দু বলে। এইসময়
খ্রিস্টান অনেক হয়ে গেছে কারণ হিন্দুধর্মাবলম্বীরা অনেকেই ধর্মান্তরিত হয়ে গেছে।
আসলে তোমাদের অর্থাৎ দেবী-দেবতাদের কর্ম শ্রেষ্ঠ ছিল। তোমরা পবিত্র
প্রবৃত্তিমার্গের ছিলে। এখন রাবণ-রাজ্যে পতিত প্রবৃত্তিমার্গের হয়ে গেছো, তাই তোমরা
দুঃখী। সত্যযুগকে বলা হয় শিবালয়। শিববাবার দ্বারা স্থাপিত স্বর্গ। বাচ্চারা, বাবা
বলেন -- আমি এসে তোমাদের শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ করে তোমাদের সূর্যবংশীয়-চন্দ্রবংশীয়
রাজধানীর উত্তরাধিকার প্রদান করি। এঁনারা হলেন বাপদাদা, এঁনাদের ভুলে যেও না।
শিববাবা ব্রহ্মার দ্বারা আমাদের স্বর্গের যোগ্য করে তুলছেন কারণ অপবিত্র আত্মা তো
মুক্তিধামে যেতে পারে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত পবিত্র হয়। এখন বাবা বলেন -- আমি এসে
তোমাদের পবিত্র হওয়ার পথ বলে দিই। আমি তোমাদের পদমপতি, স্বর্গের মালিক করে
গিয়েছিলাম, অবশ্যই তোমাদের স্মৃতিতে এসেছে যে আমরাই স্বর্গের মালিক ছিলাম। সেইসময়
আমরা অতি অল্পসংখ্যক ছিলাম। এখন তো কত অসংখ্য মানুষ। সত্যযুগে হয় ৯ লক্ষ, তবেই বাবা
বলেন -- আমি এসে ব্রহ্মার দ্বারা স্বর্গের স্থাপনা, শঙ্করের দ্বারা বিনাশ ঘটাই।
কল্প-পূর্বের মতনই তৈরী সকলেই করছে। কত বোমা তৈরী করে। ৫ হাজার বছর পূর্বেও এই
মহাভারত লড়াই হয়েছিল। ঈশ্বর এসে রাজযোগ শিখিয়ে মানুষকে নর থেকে নারায়ণে পরিনত
করেছিলেন। তাহলে অবশ্যই কলিযুগীয় পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হওয়া উচিত। সমগ্র দুনিয়ার
কাঁটার জঙ্গলে(ভম্ভোর) আগুন লাগবে। তা নাহলে বিনাশ কিভাবে হবে ? আজকাল বোমার ভিতর
আগুনও ভরা থাকে। মুষলধারে বৃষ্টিপাত, ভূমিকম্পাদি সবকিছুই সংঘটিত হবে তবেই তো বিনাশ
হবে। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ, নতুন দুনিয়ার স্থাপনা হয়। এ হলো সঙ্গমযুগ। রাবণ-রাজ্য
মৃত(মুর্দাবাদ) হয়ে রাম-রাজ্য জীবিত(জিন্দাবাদ) হয়। নতুন দুনিয়ায় কৃষ্ণের রাজত্ব
ছিল। লক্ষ্মী-নারায়ণের পরিবর্তে কৃষ্ণের নাম করে কারণ হলো সুন্দর, সর্বাপেক্ষা
প্রিয় বাচ্চা। মানুষের তো জানা নেই, তাই না! কৃষ্ণ ছিল আলাদা রাজধানীর, রাধা আলাদা
রাজধানীর। ভারত মুকুটধারী ছিল। এখন কাঙ্গাল, বাবা পুনরায় মুকুটধারী বানিয়ে দেন। এখন
বাবা বলেন -- পবিত্র হও আর মামেকম্ স্মরণ করো তবেই তোমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবে।
পুনরায় যারা সার্ভিস করে নিজ-সম তৈরী করবে তারা উচ্চপদ লাভ করবে, দ্বিমুকুটধারী হবে।
সত্যযুগে রাজা-রানী এবং প্রজা সকলেই পবিত্র থাকে। এখন তো হলোই প্রজার রাজ্য। দুটি
মুকুটই থাকে না। বাবা বলেন, যখন এরকম অবস্থা হয় তখনই আমি আসি। বাচ্চারা, আমি এখন
তোমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছি। আমিই পতিত-পাবন। এখন তোমরা আমায় স্মরণ করো তবেই আত্মার
খাদ নিষ্কাশিত হয়ে যাবে। পুনরায় সতোপ্রধান হয়ে যাবে। এখন শ্যাম থেকে সুন্দর হতে হবে।
সোনায় খাদ পড়লে তা কালো হয়ে যায় তাই এখন খাদ নিষ্কাশিত করতে হবে। অসীম জগতের বাবা
বলেন -- তোমরা কাম-চিতায় বসে কালো হয়ে গেছো, এখন জ্ঞান-চিতায় বসো আর সকলের সঙ্গে
মমত্ব মিটিয়ে ফেলো। তোমরা হলে প্রিয়তমা একমাত্র প্রিয়তমের অর্থাৎ আমার। ভক্তরা
সকলেই ভগবানকে স্মরণ করে। সত্যযুগ-ত্রেতায় ভক্তি করা হয় না। ওখানে হলো জ্ঞানের
প্রালব্ধ (ফলভোগ)। বাবা এসে জ্ঞানের দ্বারা রাতকে দিনে পরিনত করেন। এমন নয় যে,
শাস্ত্র পাঠ করলে দিন হয়ে যাবে। ওটা হলো ভক্তির সামগ্রী। জ্ঞানসাগর, পতিত-পাবন হলেন
একমাত্র বাবা। তিনি এসে বাচ্চাদেরকে সৃষ্টির জ্ঞান বোঝান এবং যোগ শেখান। ঈশ্বরের
সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনকারী যোগ-যোগেশ্বর এবং পরে হয়ে যায় রাজ-রাজেশ্বর,
রাজ-রাজেশ্বরী। তোমরা ঈশ্বরের দ্বারা রাজার-রাজা হয়ে যাও। যারা পবিত্র রাজা ছিল
তারাই পরে পতিত হয়ে যায়। নিজেই পূজ্য পুনরায় নিজেই পূজারী হয়ে যায়। এখন যতখানি
সম্ভব স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে। যেমনভাবে প্রিয়তমা তার প্রিয়তমকে করে, তাই না!
যেমনভাবে কন্যার বাগদান-পর্ব(পাকা কথা) সমাপ্ত হলে পরে একে অপরকে স্মরণ করতে থাকে।
এখন এই যে প্রিয়তম, ভক্তিমার্গে তো ওঁনার অনেক প্রিয়তমা রয়েছে। দুঃখে সকলেই বাবাকে
স্মরণ করে -- হে ঈশ্বর দুঃখ হরণ করো, সুখ প্রদান করো। এখানে তো না শান্তি রয়েছে, না
সুখ আছে। সত্যযুগে দুই-ই রয়েছে। এখন তোমরা জেনেছো যে, আত্মারা কিভাবে ৮৪ জন্মে (নিজ)
ভূমিকা পালন করে। ব্রাহ্মণ, দেবতা, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র হয়। ৮৪-র সিড়ি বুদ্ধিতে
রয়েছে, তাই না! এখন যতখানি সম্ভব হতে পারে ততখানি বাবাকে স্মরণ করতে হবে তবেই পাপ
খন্ডিত হবে। কর্ম করতে-করতেও বাবার স্মরণ যেন থাকে। বাবার দ্বারা আমরা স্বর্গের
উত্তরাধিকার গ্রহণ করছি। বাবা এবং উত্তরাধিকারকে স্মরণ করতে হবে। স্মরণের দ্বারাই
পাপ খন্ডিত হয়ে যাবে। যত স্মরণ করবে ততই পবিত্রতার আলোয় আলোকময় হতে থাকবে। খাদ
নিষ্কাশিত হয়ে যাবে। যতখানি সম্ভব বাচ্চাদের সময় বের করে স্মরণের উপায়ের ব্যবস্থা
করতে হবে। সকাল-সকাল সময় ভালোই পাওয়া যায়। এই পুরুষার্থ করতে হবে। অবশ্যই
গৃহস্থ-জীবনে থাকো, বাচ্চাদের লালন-পালনাদিও করো কিন্তু এই অন্তিম জন্মে পবিত্র হও।
কাম-চিতায় চড়ো না। এখন তোমরা জ্ঞান-চিতায় বসে রয়েছো। এই পাঠ অতি উচ্চমার্গের,
এরজন্য স্বর্ণ-পাত্র চাই। তোমরা বাবাকে স্মরণ করে সোনার পাত্রে পরিণত হও। স্মরণ
ভুললে পুনরায় লোহার পাত্রে পরিণত হয়ে যাও। বাবাকে স্মরণ করলে স্বর্গের মালিক হবে।
এ তো অতি সহজ। এখানে পবিত্রতাই হল মুখ্য । স্মরণের দ্বারাই পবিত্র হবে এবং
সৃষ্টি-চক্রকে স্মরণ করলে স্বর্গের মালিক হবে। তোমাদের ঘর-পরিবার ত্যাগ করতে হবে
না। গৃহস্থ-জীবনেই থাকতে হবে। বাবা বলেন, ৬৩ জন্ম তোমরা পতিত দুনিয়ায় থেকেছো। এখন
শিবালয় অমরলোকে যাওয়ার জন্য তোমরা যদি এই এক জন্ম পবিত্র থাকো তাতে কি হয়েছে ? অনেক
রোজগার হয়ে যাবে। ৫ বিকারের উপর বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে তবেই জগতজীৎ হতে পারবে। তা
নাহলে পদ প্রাপ্ত করতে পারবে না। বাবা বলেন, মৃত্যুবরণ তো সকলকেই করতে হবে। এ হলো
অন্তিম জন্ম পুনরায় তোমরা গিয়ে নতুন দুনিয়ায় রাজ্য করবে। হীরে-জহরতের খনি পরিপূর্ণ
হয়ে থাকবে। ওখানে তোমরা হীরে-জহরতের দ্বারা খেলা-ধূলো করতে থাকবে। তাহলে এমন বাবার
হয়ে ওঁনার মতানুসারেও চলা উচিত, তাই না! শ্রীমতের দ্বারাই তোমরা শ্রেষ্ঠ হবে।
রাবণের মতানুসারে তোমরা ভ্রষ্টাচারী হয়েছো। এখন বাবার শ্রীমতানুসারে চলে তমোপ্রধান
থেকে সতোপ্রধান হতে হবে। বাবাকে স্মরণ করতে হবে আর কোনো কষ্ট বাবা দেন না।
ভক্তিমার্গে তো তোমরা অনেক ধাক্কা খেয়েছো। এখন শুধু বাবাকে স্মরণ করো আর
সৃষ্টি-চক্রকে স্মরণ করো। স্বদর্শন-চক্রধারী হও তবেই ২১ জন্মের জন্য তোমরা চক্রবর্তী
রাজা হয়ে যাবে। অনেকবার তোমরা রাজ্য প্রাপ্ত করেছো এবং হারিয়েছো। অর্ধেককল্প হলো
সুখ আর অর্ধেককল্প হলো দুঃখ। বাবা বলেন -- আমি প্রতি কল্পের সঙ্গমে আসি। তোমাদের
সুখধামের মালিক করে দিই। এখন তোমাদের স্মৃতি এসেছে যে আমরা কিভাবে পরিক্রমা করি। এই
চক্র বুদ্ধিতে রাখতে হবে। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। তোমরা এখানে অসীম জগতের বাবার
সম্মুখে বসে রয়েছো। সর্বোচ্চ ঈশ্বর প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা তোমাদের উত্তরাধিকার
প্রদান করছেন। তাহলে এখন বিনাশের পূর্বে বাবাকে স্মরণ করো, পবিত্র হও। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আধ্যাত্মিক পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিরন্তর বাবার স্মরণে থাকার জন্য বুদ্ধিকে স্বর্ণ-পাত্রে পরিণত করতে হবে। কর্ম
করতে-করতেও বাবাকে স্মরণ করতে হবে। স্মরণের দ্বারাই পবিত্রতার লাইট আসতে থাকবে।
২ ) মুরলী কখনও মিস করা উচিত নয়। ড্রামার রহস্যকে সঠিকভাবে বুঝতে হবে। ভাট্টীতে
যেন বাইরের কিছু স্মরণে না আসে।
বরদান:-
নিজের প্রতি বাপদাদাকেও সমর্পিত করা ত্যাগ-মূর্তি, নিশ্চয়বুদ্ধি ভব
"বাবাকে পেয়েছি তো
সবকিছু পেয়ে গেছি" -- এই মত্ততা বা নেশায় সর্বকিছুর পরিত্যাগকারী জ্ঞান-স্বরূপ,
নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন বাচ্চারা বাবার দ্বারা যখন খুশী, শান্তি, শক্তি বা সুখের
অনুভূতি করে তখন লোকলজ্জার পরোয়া না করে সর্বদা গতিক্রম বৃদ্ধি করতে থাকে। দুনিয়ার
সবকিছু তাদের কাছে তুচ্ছ, অসার বলে অনুভূত হয়। এমন ত্যাগ-মূর্তি,
নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন বাচ্চাদের প্রতি বাপদাদা স্বয়ং সর্ব সম্পত্তি সহ সমর্পিত হয়ে
যান। যেমনভাবে বাচ্চারা সঙ্কল্প করে যে -- বাবা আমরা তোমার, তখন বাবাও বলেন যে --
যা বাবার সেটাই তোমাদের।
স্লোগান:-
সহজযোগী সে-ই, যে নিজের প্রতিটি সঙ্কল্প বা কর্মের দ্বারা বাবার স্নেহের প্রকম্পন (ভাইব্রেশন)
ছড়িয়ে দেয়।