01.04.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের এই জীবন দেবতাদের থেকেও উত্তম, কারণ তোমরা এখন রচয়িতা আর রচনাকে যথার্থরূপে জেনে আস্তিক হয়েছো"

প্রশ্নঃ -
সঙ্গমযুগী ঈশ্বরীয় পরিবারের বিশেষত্ব কি যা পুরো কল্পেও আর হবে না?

উত্তরঃ  
বাচ্চারা, এইসময় স্বয়ং ঈশ্বর পিতা-রূপে তোমাদের লালন-পালন করেন, শিক্ষক-রূপে পড়ান এবং সদ্গুরু হয়ে তোমাদেরকে সুন্দর সুন্দর ফুল (গুল-গুল) বানিয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যান। সত্যযুগে দৈবী-পরিবার হবে কিন্তু এমন ঈশ্বরীয় পরিবার হতে পারে না। বাচ্চারা, তোমরা হলে এখন অসীম জগতের সন্ন্যাসীও, আবার রাজযোগীও। রাজত্ব নেওয়ার জন্য পড়ছো ।

ওম্ শান্তি ।
এ হলো স্কুল বা পাঠশালা। কাদের পাঠশালা? আত্মাদের পাঠশালা। এ তো অবশ্যই ঠিক যে আত্মা শরীর ব্যতীত কিছু শুনতে পারে না। যখন বলা হয় যে, আত্মাদের পাঠশালা, তখন বোঝা উচিৎ - আত্মা শরীর ছাড়া তো বুঝতে পারে না। তখন আবার বলতে হবে জীবাত্মা। এখন জীবাত্মাদের পাঠশালা তো সবই, তাই বলা হয় যে, এ হলো আত্মাদের পাঠশালা আর পরমপিতা পরমাত্মা এসে পড়ান। ওটা হলো পার্থিব পড়াশোনা, এ হলো আত্মিক পড়া, যা অসীম জগতের পিতা এসে পড়ান। তাই এ হলো গড ফাদারের ইউনিভার্সিটি। ভগবানুবাচ, তাই না? এটা ভক্তিমার্গ নয়, এ হলো পড়াশোনা। স্কুলে পড়াশোনা হয়। ভক্তি তো মন্দির ইত্যাদি স্থানে হয় । এখান কে পড়ায়? ভগবানুবাচ। আর কোনও পাঠশালায় ভগবানুবাচ হয়ই না। শুধুমাত্র এই একটাই জায়গা আছে যেখানে ভগবানুবাচ হয়। উচ্চ থেকেও উচ্চতম ভগবানকেই জ্ঞান-সাগর বলা হয়, তিনিই জ্ঞান দিতে পারেন। আর বাকি সবই হলো ভক্তি। ভক্তির বিষয়ে বাবা বুঝিয়েছেন যে, এতে (ভক্তিতে) কোনো সদ্গতি হয় না। সকলের সদ্গতিদাতা এক পরমাত্মা, তিনি এসে রাজযোগ শেখান। আত্মা শরীরের দ্বারা শোনে। আর কোনো নলেজ ইত্যাদিতে ভগবানুবাচ নেই। একমাত্র ভারতই হলো সেই স্থান যেখানে শিবরাত্রি পালন করা হয়। ভগবান তো নিরাকার তাহলে শিবরাত্রি কিভাবে পালন করে। জন্মদিন/জয়ন্তী তো তখন হয় যখন শরীরে প্রবেশ করে। বাবা বলেন, আমি তো কখনও গর্ভে প্রবেশ করি না। তোমরা সবাই গর্ভে প্রবেশ করো। ৮৪ জন্ম নাও। সর্বাপেক্ষা অধিকবার জন্মগ্রহণ করে এই লক্ষ্মী-নারায়ণ। ৮৪ জন্ম নিয়ে আবার শ্যামবর্ণের, গাঁয়ের ছেলে হয়ে যায়। লক্ষ্মী-নারায়ণ বলো আর রাধা-কৃষ্ণ বলো। রাধা-কৃষ্ণ হলো শৈশবকালে। তারা যখন জন্মগ্রহণ করে তখন স্বর্গে জন্ম নেয়, যাকে বৈকুন্ঠও বলে। সর্বপ্রথম জন্ম হয় এঁনার(ব্রহ্মা), তাই ৮৪ জন্মও ইনিই নেন। শ্যাম(কালো) আর সুন্দর, সুন্দর তথা পুনরায় শ্যামবর্ণের। কৃষ্ণ সকলের কাছেই অতি প্রিয়। কৃষ্ণের জন্মই তো হয় নতুন দুনিয়ায়। পুনরায় জন্ম নিতে নিতে এসে পুরনো দুনিয়ায় পৌঁছায় তখন শ্যাম হয়ে যায়। এ খেলাই হলো এমন। ভারত প্রথমে সতোপ্রধান সুন্দর ছিল, এখন কালো (তমোপ্রধান) হয়ে গেছে। বাবা বলেন, এতো সব আত্মারা হলো বাবার সন্তান। এখন সকলে কাম-চিতায় বসে কালো হয়ে গেছে। আমি এসে সকলকে ফিরিয়ে নিয়ে যাই। এই সৃষ্টি-চক্র এইরকমই। ফুলের বাগিচাই পুনরায় কাঁটার জঙ্গলে পরিণত হয়। বাবা বোঝান, বাচ্চারা, তোমরা কত সুন্দর বিশ্বের মালিক ছিলে, এখন পুনরায় তৈরী হচ্ছো। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ বিশ্বের মালিক ছিল। তাঁরা ৮৪ জন্ম ভোগ করে পুনরায় এমন তৈরী হচ্ছে অর্থাৎ তাঁদের আত্মা এখন পড়ছে।

তোমরা জানো যে, সত্যযুগে অপার (অসীম) সুখ রয়েছে, সেইজন্য কখনো বাবাকে স্মরণ করার প্রয়োজনও পড়ে না। বলাও হয় - দুঃখে স্মরণ সকলেই করে...... কার স্মরণ? বাবার। এতো সব-কে স্মরণ করতে হবে না। ভক্তিতে কতো স্মরণ করে। কিছুই জানে না। কৃষ্ণ কখন এসেছে, তিনি কে - কিছুই জানে না। কৃষ্ণ আর নারায়ণের মধ্যে প্রভেদ কি তাও জানে না। শিববাবা হলেন সর্বোচ্চ। আবার তাঁর নীচে হলো ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্কর.... তাঁদেরকে দেবতা বলা হয়। লোকেরা তো সকলকেই ভগবান বলে সম্বোধন করে। সর্বব্যাপী বলে দেয়। বাবা বলেন - সর্বব্যাপী তো মায়া ৫ বিকার যা প্রত্যেকের ভিতরেই রয়েছে। সত্যযুগে কোনো বিকার থাকে না। মুক্তিধামেও আত্মা পবিত্র থাকে। অপবিত্রতার কোনও কথাই নেই। তাই এই রচয়িতা বাবা-ই এসে এখন নিজের পরিচয় দেন, আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝান, যার ফলে তোমরা আস্তিক হয়ে যাও। তোমরা একবার-ই আস্তিক হও। তোমাদের এই জীবন দেবতাদের থেকেও উত্তম। স্মরণও করা হয় যে, মনুষ্য জীবন অতি দুর্লভ। আর যখন পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ হয় তখন তা হীরে-তুল্য হয়ে যায়। লক্ষ্মী-নারায়ণকে (তাঁদের জীবনকে) হীরে-তুল্য বলা যাবে না। তোমাদের জন্ম হীরে-তুল্য। তোমরা হলে ঈশ্বরীয় সন্তান, এঁরা হলেন (লক্ষ্মী-নারায়ণ) দৈবী-সন্তান। এখানে তোমরা বলো যে, আমরা হলাম ঈশ্বরীয় সন্তান, ঈশ্বর আমাদের পিতা, তিনি আমাদের পড়ান কারণ তিনি জ্ঞানের সাগর, তাই না, তিনি রাজযোগ শেখান। এই জ্ঞান তো এই একবারই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে পাওয়া যায়। এ হলো উত্তম থেকে উত্তম পুরুষ (আত্মা) হওয়ার যুগ, যাকে দুনিয়া জানেই না। সকলেই কুম্ভকর্ণের মতো অজ্ঞানতার নিদ্রায় নিদ্রিত হয়ে রয়েছে। সকলেই বিনাশের সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাই বাচ্চারা, এখন তোমরা কারোর সাথেই সম্বন্ধ রেখো না। বলা হয় যে, অন্তিমকালে যে স্ত্রী-কে স্মরণ করে.....(তবে দেহপসারিনী হয়ে জন্ম হয়) অন্তিমসময়ে শিববাবাকে স্মরণ করলে নারায়ণের বংশের (বৈষ্ণবকুল) আসবে। এই সিঁড়ি একদম সঠিক। লিখিত আছে - আমরা (ব্রাহ্মণ) তথা দেবতা আবার তথা ক্ষত্রিয় ইত্যাদি। এইসময় হলো রাবণ-রাজ্য, যখন (তোমরা) নিজেদের আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মকে ভুলে অন্য ধর্মে আটকে পড়েছো। এই সমগ্র দুনিয়াই এখন লঙ্কা। এছাড়া স্বর্ণ-লঙ্কা বলে কিছু ছিল না। বাবা বলেন, তোমরা নিজেদের থেকেও বেশী আমার গ্লানি করেছো, নিজেদের জন্য ৮৪ লক্ষ আর আমাকে কণায়-কণায় (অনু-পরমানু-তে) বলে দিয়েছো। এমন অপকারীর উপরেও আমি উপকার করি। বাবা বলেন, তোমাদের কোনো দোষ নেই, এ হলো ড্রামার খেলা। সত্যযুগের শুরু থেকে নিয়ে কলিযুগের অন্তিম পর্যন্ত এই খেলা চলে, যাকে আবার রিপীট হতেই হবে। একে (খেলা) বাবা ছাড়া আর কেউ-ই বোঝাতে পারে না। তোমরা সকলেই হলে ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। তোমরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণেরা হলে ঈশ্বরীয় সন্তান। তোমরা ঈশ্বরীয় পরিবারে বসে রয়েছ। সত্যযুগে হবে দৈবী-পরিবার। এই ঈশ্বরীয় পরিবারে বাবা তোমাদের লালন-পালনও করেন, পঠন-পাঠনও করান আবার ফুল বানিয়ে সঙ্গে করে নিয়েও যাবেন। তোমরা পড়ো মনুষ্য থেকে দেবতা হওয়ার জন্য। গ্রন্থসাহেবে রয়েছে যে, মনুষ্য থেকে দেবতা হতে বেশি সময় লাগে না (মনুষ্য সে দেবতা কিয়ে করত না লাগি বার), তাই পরমাত্মাকে জাদুকরও বলা হয়। নরক-কে স্বর্গে পরিণত করা, এ তো জাদুরই খেলা, তাই না। স্বর্গ থেকে নরকে পরিণত হতে ৮৪ জন্ম লাগে, আবার নরক থেকে স্বর্গ এক সেকেন্ডেই হয়ে যায়। এক সেকেন্ডে জীবনমুক্তি। আমি আত্মা, আত্মাকে জেনেছি, বাবাকেও জেনে নিয়েছি। আর কোনো মানুষ(অজ্ঞানী) জানে না যে, আত্মা কি? গুরু অনেক, সদ্গুরু এক। বলা হয় যে, সদ্গুরু হলেন অকালমূর্তি। সদ্গুরু হলেন একজনই, তিনি পরমপিতা পরমাত্মা। কিন্তু গুরু তো অনেক। নির্বিকারী তো কেউ-ই নয়। সকলেই বিকার থেকে জন্ম নেয়।

এখন রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে। তোমরা সকলেই এখানে রাজত্ব প্রাপ্ত করার জন্য পড়ছো। তোমরা হলে রাজযোগী, অসীম জগতের সন্ন্যাসী। ওইসমস্ত হঠযোগীরা হলো পার্থিব জগতের সন্ন্যাসী। বাবা এসে সকলের সদ্গতি করে সবাইকে সুখী করে দেন। আমাকেই বলা হয় সদ্গুরু অকালমূর্তি। ওখানে (স্বর্গ) আমরা ঘন-ঘন শরীর ত্যাগ আর গ্রহণ করি না। ওখানে কাল গ্রাস করে না। তোমাদের আত্মাও অবিনাশী, কিন্তু পতিত আর পাবন হয়ে যায়। আত্মা নির্লিপ্ত অর্থাৎ লেপ-ছেপহীন নয়। ড্রামার রহস্যও বাবা-ই বোঝান। রচয়িতাই রচনার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্যকে বোঝেন, তাই না। তিনিই হলেন জ্ঞানের সাগর, আমাদের একমাত্র পিতা। তিনিই তোমাদেরকে মনুষ্য থেকে দেবতা, দ্বি-মুকুটধারী বানান। তোমাদের জন্ম তো কড়ি-তুল্য ছিল। এখন তোমরা হীরে-তুল্য তৈরী হচ্ছো। বাবা-ই তো ব্রাহ্মণ তথা দেবতা..... শূদ্র তথা ব্রাহ্মণ (হাম সো, সো হাম) -- এই মন্ত্রের অর্থ বুঝিয়েছেন। ওরা (অজ্ঞানী) বলে যে, আত্মাই পরমাত্মা তথা পরমাত্মাই আত্মা, অর্থাৎ আমিই সে, সে-ই আমি। বাবা বলেন, আত্মাই পরমাত্মা কি করে হতে পারে? বাবা তোমাদের বোঝান - আমরা অর্থাৎ আত্মারা এইসময় হলাম ব্রাহ্মণ, আবার আমরা আত্মারা ব্রাহ্মণ তথা দেবতা হব, পুনরায় তথা ক্ষত্রিয় হবো, আবার শূদ্র তথা ব্রাহ্মণ হবো। সর্বাপেক্ষা উচ্চ জন্ম হলো তোমাদের। এটা হলো ঈশ্বরীয় আলয়। তোমরা কার কাছে বসে আছো? মাতা-পিতার কাছে। সকলেই ভাই-বোন। বাবা আত্মাদের শিক্ষা দেন। তোমরা সকলেই আমার সন্তান, অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকারী, তাই পিতা পরমাত্মার কাছ থেকে সকলেই উত্তরাধিকার নিতে পারে। আবালবৃদ্ধ, ছোট, বড় সকলের-ই বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার অধিকার রয়েছে। তাই বাচ্চাদেরও এটাই বোঝাও - নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো আর বাবাকে স্মরণ করো তবেই পাপ কেটে যাবে। ভক্তিমার্গের মানুষেরা তো এই কথা কিছুই বুঝতে পারে না। আচ্ছা!

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাত-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-স্মরণ আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

রাত্রি ক্লাস :-

বাচ্চারা বাবাকে জানেও আর বোঝেও যে বাবা-ই পড়াচ্ছেন, ওঁনার কাছ থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার পাবে। কিন্তু মুশকিল হলো এই যে, মায়া ভুলিয়ে দেয়। কোনো না কোনো বিঘ্ন চলে আসে, যার ফলে বাচ্চারা ভয় পেয়ে যায়। তারমধ্যেও প্রথম নম্বরের বিকারে (কাম) পতিত হয়। চোখ ধোঁকা দিয়ে দেয়। এখানে চোখ উপরে ফেলার কোনো ব্যাপার নেই। বাবা জ্ঞান-নেত্র প্রদান করেন। জ্ঞান আর অজ্ঞানতার লড়াই চলে। জ্ঞান হলো বাবা, আর অজ্ঞান হলো মায়া। এদের লড়াই অত্যন্ত তীক্ষ্ণ (ভয়ংকর)। অধঃপতনে গেলেও বুঝতে পারে না। আবার অনুভবও করে যে, আমি পতিত হয়ে গেছি, আমি নিজের অনেক ক্ষতি করেছি। মায়া যদি একবার হারিয়ে দেয়, তখন আবার উপরে চড়া খুবই মুশকিল হয়ে যায়। অনেক বাচ্চারা বলে, আমরা যখন ধ্যানে যাই, তখনও কিন্তু সেখানেও মায়া প্রবেশ করে। জানতেও পারা যায় না। মায়া চুরি করাবে, মিথ্যা বলাবে। মায়া কি না করায় ! তা আর জিজ্ঞাসা কোরো না। নোংরা (অপবিত্র) করে দেয়। ফুল হতে-হতে আবার ছিঃ-ছিঃ (অপবিত্র) হয়ে যায়। মায়া এতো শক্তিশালী যে প্রতি মুহূর্তে পতনের দিকে নিয়ে যায়।

বাচ্চারা বলে, বাবা আমরা প্রতি মুহূর্তে ভুলে যাই। পুরুষার্থ করান বাবা, তিনি তো একজনই, কিন্তু কারোর ভাগ্যে যদি না থাকে তাহলে সে পুরুষার্থও করতে পারে না। এরজন্য কারোর কাছে বিশেষ আনুকূল্যও পেতে পারে না আর না (বাবা) অতিরিক্ত পড়া পড়ান। লৌকিক পড়ায় তো এক্সট্রা করে পড়ানোর জন্য আলাদাভাবে টীচারকে ডাকা হয়। বাবা তো ভাগ্য তৈরীর জন্য সকলকে একইরকম (একরস) পড়ান। এক-একজনকে আলাদা-আলাদা কিভাবে পড়াবেন? তাঁর কত অগণিত বাচ্চা। লৌকিক পড়ায় যদি কোনো ধনী ব্যক্তির সন্তান হয়, আর অধিক ব্যয় করতে পারে তবে তাকে আলাদাভাবে অতিরিক্তও পড়ানো হয়। শিক্ষক জানে যে, এই বাচ্চা ডাল (পড়াশোনায় মাথা কম) তাই তাকে পড়িয়ে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্য করে তোলে।এই বাবা এমন করেন না। তিনি তো সকলকেই একরস(সমানভাবে) পড়ান। ওটা হলো টীচারের অতিরিক্ত পুরুষার্থ করানো। ইনি তো কাউকে অতিরিক্ত পুরুষার্থ করান না। এক্সট্রা পুরুষার্থ মানেই হলো টীচারের কিছু কৃপা করা। যদিও এরজন্য পয়সা নেয়। বিশেষ সময় দিয়ে পড়ায় তাই সে বেশী পড়ে বুদ্ধিমান হয়ে যায়। এখানে তো বেশী কিছু পড়ার কোনো ব্যাপারই নেই। এঁনার তো একটাই কথা। একটাই মহামন্ত্র দেন - মন্মনাভব-র। স্মরণের দ্বারা কি হয়, বাচ্চারা, তা তো তোমরা বোঝো। বাবা-ই পতিত-পাবন, তোমরা জানো যে, তাঁকে স্মরণ করলেই আমরা পবিত্র হয়ে যাব। আচ্ছা - গুড নাইট।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সমগ্র দুনিয়াই এখন কবরে (সমাপ্ত) পরিণত হবে। বিনাশ সম্মুখে এসে গেছে, তাই কারোর সঙ্গে সম্বন্ধ রেখো না। অন্তিম সময়ে যেন একমাত্র বাবাই স্মরণে থাকে।

২ ) শ্যাম থেকে সুন্দর, পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার, এটাই হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। পুরুষের (আত্মার) উত্তম হওয়ার এটাই সময়, সদা এই স্মৃতিতে থেকে নিজেকে কড়ি থেকে হীরে-তুল্য বানাতে হবে।

বরদান:-
জ্ঞান ধনের দ্বারা প্রকৃতির সব সাধন প্রাপ্তকারী পদ্মা-পদমপতি ভব

জ্ঞান ধন স্থুল ধনের প্রাপ্তি স্বতঃই করায়। যেখানে জ্ঞান ধন আছে সেখানে প্রকৃতি স্বতঃতই দাসী হয়ে যায়। জ্ঞান ধনের দ্বারা প্রকৃতির সব সাধন স্বতঃই প্রাপ্ত হয়ে যায়, সেইজন্য জ্ঞান ধন হলো সকল ধনের রাজা। যেখানে রাজা আছে সেখানে সর্ব পদার্থ স্বতঃ প্রাপ্ত হয়। এই জ্ঞান ধনই পদ্ম-পদমপতি বানিয়ে দেয়। পরমার্থ আর ব্যবহারকে স্বাভাবিকভাবেই প্রমাণ করায়। জ্ঞান ধনে এত শক্তি আছে যে অনেক জন্মের জন্য রাজাদেরও রাজা বানিয়ে দেয়।

স্লোগান:-
“আমি হলাম কল্প-কল্পের বিজয়ী আত্মা” - এই আত্মিক নেশা ইমার্জ থাকলে মায়াজিৎ হয়ে যাবে।