01-05-2022 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
13-12-90 মধুবন
"তপস্যার ফাউন্ডেশন হল অসীম জগতের বৈরাগ্য"
আজ বাপদাদা সকল স্নেহী বাচ্চাদের স্নেহের পুষ্প অর্পিত করতে দেখছেন। দেশ বিদেশের
সকল স্নেহী বাচ্চাদের হৃদয়ের স্নেহের পুষ্প বর্ষা বাপদাদা প্রত্যক্ষ করছেন। সকল
বাচ্চাদের মনের একটিই সুর বা গীত শুনছেন। একটিই গীত - "আমার বাবা"। চতুর্দিকে মিলিত
হওয়ার সকল শুভ আশার দীপ জ্বলজ্বল করছে। এই দিব্য দৃশ্য সমগ্র কল্পে বাপদাদা আর
বাচ্চারা ছাড়া আর কেউই দেখতে পাবে না। এই অভিনব স্নেহের পুষ্প এখানে এই পুরানো
দুনিয়ার কোহিনূর হীরের থেকেও অমূল্য । এই হৃদয়ের সঙ্গীত বাচ্চারা ছাড়া আর কেউই গাইতে
পারবে না। এইরকম দীপমালা কেউ উদযাপনও করতে পারবে না। বাপদাদার কাছে সকল বাচ্চারা
ইমার্জ রয়েছে । এই স্থূল স্থানে সকলে বসতে পারবে না। কিন্তু বাপদাদার হৃদয় সিংহাসন
হল অতি বিশাল। সেইজন্য সকলকে ইমার্জ রূপে দেখছেন। সকলকে স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
স্নেহ ভরা অধিকারের অনুযোগ শুনছেন আর সাথে সাথে প্রতিটি বাচ্চাকে রিটার্নে পদমগুণ
বেশি স্মরণের স্নেহ-সুমন প্রদান করছেন। বাচ্চারা অধিকারের সাথে বলে - আমরা সবাই
সাকার স্বরূপে মিলিত হতে চাই। বাবাও চান, বাচ্চারাও চায়। তবুও সময় অনুসারে ব্রহ্মা
বাবা অব্যক্ত ফরিস্তা রূপে সাকার স্বরূপে অনেক গুণ তীব্রগতিতে সেবা করে বাচ্চাদেরকে
নিজের সমান বানাচ্ছেন । কেবল এক দুই বছর নয়, বরং অনেক বছর ধরে অব্যক্ত মিলন,
অব্যক্ত রূপে সেবার অনুভব করিয়েছেন এবং করাচ্ছেনও। তো ব্রহ্মা বাবা অব্যক্ত হয়েও
ব্যক্ততে কেন পার্ট প্লে করলেন ? সমান বানানোর জন্য। ব্রহ্মা বাবা অব্যক্ত থেকে
ব্যক্ততে এলেন, তো বাচ্চাদেরকে তার রিটার্নে কী করতে হবে ? ব্যক্ত থেকে অব্যক্ত হতে
হবে। সময় অনুসারে অব্যক্ত মিলন, অব্যক্ত রূপের দ্বারা সেবা এখন অত্যন্ত আবশ্যক।
সেইজন্য সময়ে সময়ে বাপদাদা অব্যক্ত মিলনের অনুভূতির ইশারা দিতে থাকেন। তার জন্য 'তপস্যা
বর্ষ'ও পালন করছো তোমরা তাই না ? বাপদাদাও আনন্দিত যে মেজরিটি বাচ্চাদের উৎসাহ
উদ্দীপনা খুব ভালো। মাইনরিটি এইরকম ভাবছে যে প্রোগ্রাম অনুসারেই করছি। এক হল
প্রোগ্রাম অনুসারে করা দ্বিতীয় হল হৃদয়ের উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে করা। প্রত্যেকে
নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করো - আমি কোনটায় ?
সময়ের পরিস্থিতি অনুসারে, নিজস্ব উন্নতি অনুসারে, তীব্র গতির সেবা অনুসারে,
বাপদাদার স্নেহের রিটার্ণ প্রদানের অনুসারে - তপস্যা হল অতি আবশ্যক। ভালবাসা হল অতি
সহজ আর সবাই ভালোবাসেও - এও বাবা জানেন। কিন্তু রিটার্ন স্বরূপে 'বাপদাদার সমান হতে
হবে।' এই সময় বাপদাদা এটাই চাইছেন। এতে জনা কয়েকের মধ্যেও কতিপয়ই বেরোয়। চায়
সকলে। কিন্তু চাওয়া আর করার মধ্যে সংখ্যার অন্তর রয়েছে। কেননা তপস্যার সদা আর সহজ
ফাউন্ডেশন হল - 'অসীম জগতের বৈরাগ্য' । অসীম জগতের বৈরাগ্য অর্থাৎ চতুর্দিকের কিনারা
বা ধারকে ছেড়ে দেওয়া। কারণ এই ধার গুলিকে অবলম্বন (সাহারা) বানিয়ে ফেলেছো। প্রিয়
হওয়ার সময় প্রিয় হলে আবার শ্রীমৎ অনুসারে নিমিত্ত হওয়া আত্মাদের ইশারা অনুসারে
সময় মতো সেকেন্ডে বুদ্ধি প্রিয় থেকে পুনরায় পৃথক হয়ে গেল, সেটা হচ্ছে না
তোমাদের। যত তাড়াতাড়ি প্রিয় হয়ে যাচ্ছো, ততখানি পৃথক হচ্ছো না। প্রিয় হতে তোমরা
ভালোই পারো কিন্তু পৃথক হওয়ার সময় ভাবতে বসে যাও, সাহসের দরকার হয় তখন। পৃথক
হওয়াই ধারকে ছেড়ে দেওয়া আর ধারকে ছাড়তে পারাই হল অসীম জগতের বৈরাগ্য বৃত্তি ।
ধার গুলিকে আশ্রয় বানিয়ে আঁকড়ে রাখতে অসুবিধা হয় না কিন্তু ছাড়বার সময় তোমরা
কী করো ? লম্বা কোশ্চেন মার্ক লাগিয়ে দাও। সেবার ইনচার্জ হতে ভালোই পারো কিন্তু
ইনচার্জের সাথে সাথে নিজের এবং অন্যদের ব্যাটারি চার্জ করার সময়ই কঠিন মনে হয়।
সেইজন্য বর্তমান সময়ে তপস্যার দ্বারা বৈরাগ্য বৃত্তি অত্যন্ত আবশ্যক ।
তপস্যার সফলতার বিশেষ আধার বা সহজ উপায় হল - একটিই শব্দের পাঠ-কে পাক্কা করো। দুই
তিন লেখা একটু কঠিন। কিন্তু এক লেখা খুবই সহজ। তপস্যা অর্থাৎ এক এর হওয়া। যাকে
বাপদাদা 'একনামী' বলেন। তপস্যা অর্থাৎ মন - বুদ্ধিকে 'একাগ্র করা', তপস্যা অর্থাৎ 'একান্ত-প্রিয়'
থাকা, তপস্যা অর্থাৎ স্থিতিকে 'একরস রাখা', তপস্যা অর্থাৎ সর্ব প্রাপ্ত ঐশ্বর্যকে (খাজানা)
ব্যর্থ থেকে বাঁচানো অর্থাৎ 'ইকোনমি'র সাথে চলা। তো এক এর পাঠ পাকা হল তাই না ? এক
এর পাঠ শক্ত নাকি সহজ হল ? 'সহজ তো নিশ্চয়ই, কিন্তু' - এই রকম ভাষা তো বলবে না তাই
না ?
অনেক অনেক ভাগ্যবান তোমরা। অনেক প্রকারের পরিশ্রম থেকে ছাড়া পেয়ে গেছো। দুনিয়ার
মানুষকে সময় তৈরী করিয়ে নেবে আর তখন সময় এলে বাধ্য হয়েই তাদেরকে করতেই হবে।
বাচ্চাদেরকে বাবা সময়ের পূর্বেই তৈরী করে দেন আর তোমরা বাবার প্রতি ভালোবাসা থেকেই
করে থাকো। কিন্তু যদি ভালবেসে না করো বা কিয়ৎ পরিমাণে করো, তবে কী হবে ? তখন তবে
বাধ্য হয়েই করতে হবে। অসীম জগতের বৈরাগ্যকে ধারণ করতেই হবে কিন্তু বাধ্য হয়ে করলে
কোনো ফলই পাওয়া যাবে না। ভালবাসার প্রত্যক্ষ ফল হল ভবিষ্যতের ফল আর যাদেরকে বাধ্য
হয়ে করতে হবে তাদেরকে কোথা দিয়ে ক্রস হতে হবে ? ক্রস করাও হল ক্রুশে চড়ারই সমান।
তাহলে কোনটা পছন্দ ? ভালবেসে করবে। বাপদাদা পরে কখনো কোন্ গুলো কিনারা তার লিস্ট বলে
দেবেন। এমনিতে তো তোমরা সে'সব ভালোই জানো। রিভাইস করবেন। কেননা বাপদাদা তো
বাচ্চাদের প্রতিদিনের দিনচর্যা যখন ইচ্ছা তখনই দেখতে পারেন। এক একজনের দিনচর্যা
দেখার কাজ বাপদাদা করেন না। সাকার ব্রহ্মা বাবাকে তোমরা দেখেছো ওঁনার নজর স্বতঃতই
কোথায় গিয়ে পড়ত ? তা সেটা তোমাদের পত্রই হোক, কিম্বা পোতামেল বা কারো আচার-আচরণ
অথবা আট পাতার পত্রই হোক না কেন, বাবার নজর কোথায় পড়তো ? যেখানে ডায়রেক্শন দিতে
হবে, যেখানে দেওয়ার প্রয়োজন। বাপদাদাও সব কিছুই দেখতেন, আবার দেখেও দেখতেন না।
জেনেও জানতেন না। যেটার প্রয়োজন নেই - সেটাকে না দেখতেন, না জানতে চাইতেন। ভালোই
খেলা দেখতেন, সে'সব পরে বলবো। আচ্ছা।
তপস্যা করা, অসীমের বৈরাগ্য বৃত্তিতে থাকা সহজ, তাই না ? ধার গুলিকে ছেড়ে দেওয়া কী
খুব কঠিন ? কিন্তু হতে তো হবে তোমাদেরকেই। কল্প কল্পের প্রাপ্তির অধিকারী হয়েছো
তোমরা আর অবশ্যই হবে। আচ্ছা । এই বছর কল্প পূর্বের অনেক অনেক কল্পের পুরানো আর এই
কল্পের নতুন বাচ্চারা চান্স পেয়েছে। তো চান্স পাওয়ার খুশীও তো আছে না ? মেজরিটি হল
নতুন, টিচার্স পুরানো । তাহলে টিচার, তোমরা কী করবে ? বৈরাগ্য বৃত্তি ধারণ করবে তাই
তো ? কিনার ছাড়বে ? নাকি সেই সময় বলবে যে, করতে তো চাই কিন্তু কীভাবে করব ? করে
দেখানোর দলে নাকি শোনানোর দলে ? এখন যারা চতুর্দিক থেকে বাচ্চারা এসেছো সব
বাচ্চাদেরকে বাপদাদা সাকার রূপে দেখে উৎফুল্ল হচ্ছেন। সাহস রেখেছো আর বাবার সহায়তা
তো সর্বদাই রয়েছে। সেইজন্য সর্বদা সাহসের দ্বারা সহায়তা প্রাপ্ত করবার অধিকারকে
অনুভব করে সহজ ভাবে উড়তে থাকো। বাবা সহায়তা করেন কিন্তু যারা নেবার তারা নেবে।
দাতা প্রদান করেন, কিন্তু যারা নেয় তারা যথা শক্তি অনুসারে তৈরি হয়। যথা শক্তি
তৈরি হয়ো না। সদা সর্বশক্তিমান হও। তবে যারা পরে এসেছো তারা সামনে নম্বর নিয়ে নেবে।
বুঝতে পেরেছো ? সর্ব শক্তি গুলির অধিকারকে সম্পূর্ণ প্রাপ্ত করো। আচ্ছা ।
চতুর্দিকের সর্ব স্নেহী আত্মারা, সদা বাবার ভালবাসার রিটার্ন দিতে পারা, অনন্য
আত্মারা, সদা তপস্বী মূর্তি স্থিতিতে স্থিত থাকা, বাবার সমীপ আত্মারা, সদা বাবার
সমান হওয়ার লক্ষ্যকে লক্ষণ রূপে নিয়ে আসা, এই রকম দেশ বিদেশের সকল বাচ্চাদেরকে
দিলারাম বাবার হৃদয়ের গভীর অন্তঃস্থল থেকে উৎসারিত স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।
দাদীদের প্রতি অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার - অষ্ট শক্তিধারী, ইষ্ট আর অষ্ট তোমরা
তাই না ! অষ্ট'র চিহ্ন কী হবে ? জানো কী ? প্রতিটি কর্ম সময় অনুসারে, পরিস্থিতি
অনুসারে, সকল শক্তিকে যারা কর্মে নিয়ে আসে। অষ্ট শক্তি গুলি ইষ্টও বানিয়ে দেয় আর
অষ্টও বানিয়ে দেয় । তোমরা হলে অষ্ট শক্তিধারী, সেই কারণে অষ্ট ভুজ দেখানো হয়।
বিশেষ আট শক্তি রয়েছে। এমনিতে আছে তো অনেক, কিন্তু আটে মেজরিটি এসে যায়। বিশেষ
শক্তির গুলিকে সময় মতো কার্যে নিয়ে আসতে হবে। যেমন সময়, যেমন পরিস্থিতি সেই রূপ
স্থিতি হবে। একেই বলা হয় 'অষ্ট বা ইষ্ট'। তো এই রকম গ্রুপ প্রস্তত রয়েছে তো ?
বিদেশে কত গুলো তৈরি হয়েছে ? অষ্টতে আসতে হবে তো ? আচ্ছা।
( ভোর বেলায় ব্রহ্ম-মুহূর্তের সময় সন্তরী দাদী শরীর ত্যাগ
করেছেন ১৩-১২-৯০)
খুব ভালো, যেতে তো সবাইকেই হবে। এভাররেডি তোমরা নাকি মনে আসবে
- আমার সেন্টার, এখন জিজ্ঞাসুদের কী হবে ? আমার আমার মনে আসবে না তো ? যেতে সবাইকেই
হবে, কিন্তু প্রত্যেকের নিজস্ব আলাদা আলাদা হিসাব। হিসাব-পত্র না চুকিয়ে কেউই যেতে
পারবে না। সেইজন্য সকলে খুশী মনে বিদায় দিয়েছে। সকলের ভালো লেগেছে তাই তো ? এই
রকম যাওয়াটাই ভালো। তাই না ? তো তোমরাও এভাররেডি হয়ে যেও। আচ্ছা।
পার্টিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎ -
১ ) দিল্লি আর পাঞ্জাব উভয়ই হল সেবার আদি স্থান। স্থাপনার
স্থান সব সময়ই গুরুত্বের সাথে দেখা হয়ে থাকে, সেই রকম প্রশস্তিও থাকে। যেমন সেবাতে
আদি স্থান থাকে, তেমনই স্থিতিতেও তোমরা আদি রত্ন কি ? স্থানের সাথে সাথে স্থিতিরও
মহিমা রয়েছে । আদি রত্ন অর্থাৎ প্রতিটি শ্রীমৎকে জীবনে নিয়ে আসার সূচনাকারী। কেবল
শুনল আর শোনালো - সেটা নয়, করে দেখায় তারা। কেননা শোনা আর শোনানোর লোক অনেক রয়েছে,
কিন্তু করে দেখানোর মতো কোটিতে কেউ কেউই হবে। সুতরাং এই নেশা থাকে কি যে, আমিই
কোটির মধ্যে সেই কেউ ? এই রুহানী নেশা, মায়ার নেশাকে ছাড়িয়ে দেয়। সুতরাং রুহানী
নেশা হল সেফ্টির সাধন। যে কোনো প্রকারের মায়ার নেশা - পোশাক প্রচ্ছদের, খাওয়া
দাওয়ার, কোনো কিছু দেখার নেশা তার দিকে আকৃষ্ট করতে পারে না। এই রকম নেশাতে থাকো
নাকি মায়া একটু আধটু আকর্ষণ করে ! এখন তোমরা সুবুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে গেছো। মায়া কি
তাও জেনে গেছো। বুদ্ধিমান কখনোই ধোঁকা খায় না। যদি বুদ্ধিমান ব্যক্তি কখনো ধোঁকা
খেয়ে যায় তবে তাকে কি বলবে ? বুদ্ধিমান হয়েও ধোঁকা খেয়ে নিল ? ধোঁকা খাওয়া অর্থাৎ
দুঃখকে আহ্বান করা। যখন তোমরা ধোঁকা খেয়ে যাও, তার কারণে দুঃখই তো পাও তাই না ! তো
দুঃখকে কি কেউ নিতে চায় ? সেইজন্য তোমরা হলে সদা আদি রত্ন অর্থাৎ নিজের জীবনে
প্রতিটি শ্রীমতের সূচনাকারী। এই রকম কি তোমরা ? নাকি আগে দেখে নাও যে অন্যরা আগে
করুক তারপর আমি করব ? এই রকম করো না তো যে, আমরা কীকরে করব ? করার ব্যাপারে সবার আগে
আমি। অন্যরা বদলালে তারপর আমি বদলাব... অমুকেও আগে পাল্টাক তবে আমি বদলাব....। না,
যে করবে সেই পাবে। আর কত পাবে ? এক এর পদমগুণ। তো করে দেখানোতেই তো তবে মজা তাই না
? এক করো আর পদম পাও। এতে তো প্রাপ্তিই প্রাপ্তি। সেইজন্য প্র্যাকটিক্যালে শ্রীমৎকে
নিয়ে আসার বিষয়ে "সবার আগে আমি"। মায়ার বশ হওয়ার ব্যাপারে সবার আগে আমি নয়, বরং
এই পুরূষার্থে সবার আগে আমি - তখনই সফলতা প্রতিটি কদমে অনুভব করতে পারবে। সফলতা
হয়েই রয়েছে । কেবল রাস্তাটা সামান্য একটু বদলে ফেলো তোমরা, বদলে ফেলার ফলে তখন
লক্ষ্যও দূর হয়ে যায়, তখন সময় লাগে। কেউ যদি ভুল রাস্তায় চলে যায় তবে লক্ষ্য
থেকেও দূর হয়ে যায়, তাই না ? তো এই রকম ক'রো না। লক্ষ্য সামনেই রয়েছে, সফলতাও
হয়েই রয়েছে । যদি কখনো পরিশ্রম করতে হয় তখন ভালোবাসার পাল্লাটা হাল্কা হয়ে যায়
। আর যদি ভালোবাসা থাকে তবে কখনোই পরিশ্রম করতে হবে না। কেননা বাবা অনেক ভুজ সহকারে
তোমাদের সহায়তা করবেন। তিনি নিজের বহুভুজ দিয়ে সেকেন্ডে সব কাজ সফল করে দেবেন।
পুরুষার্থে সদা উড়তে থাকবে। পাঞ্জাবের যারা রয়েছ তারা কি ওড়ো নাকি ভয় পাও ?
পাক্কা অনুভাবী হয়ে গেছো ? কেউ আছো যে ভয় পাও ? কী হবে, কীভাবে হবে...! না।
তাদেরকেও তোমরা শান্তির দান দিয়ে থাকো। যে কেউই আসুক তারা যেন শান্তি নিয়ে যায়,
খালি হাতে ফিরে না যায়। জ্ঞান যদি নাও দাও কিন্তু শান্তির ভাইব্রেশনও শান্ত করে
দেবে। আচ্ছা।
২ ) চতুর্দিক থেকে আগত শ্রেষ্ঠ আত্মারা তোমরা সকলে হলে
ব্রাহ্মণ, না রাজস্থানী, না মহারাষ্ট্রীয়, মধ্যপ্রদেশ... সবাই হলে এক। এই সময়
তোমরা সকলে হলে মধুবন নিবাসী। ব্রাহ্মণদের অরিজিনাল স্থান হল মধুবন। সেবার জন্য
ভিন্ন-ভিন্ন এরিয়াতে তোমরা গেছো। একটিই স্থানে যদি বসে যাও তবে চতুর্দিকের সেবা
কীভাবে হবে ? সেইজন্য সেবার কারণেই ভিন্ন-ভিন্ন স্থানে তোমরা গেছো। তা যদি লৌকিকে
কোনো বিজনেস ম্যান হলে অথবা গভর্নমেন্ট সার্ভেন্ট কিম্বা ফ্যাক্টরিতে হযত কাজ করে
থাকো... কিন্তু তোমাদের অরিজিনাল অক্যুপেশন হল সেবাধারী । মায়েরা গৃহে রয়েছো
সেটাও ঈশ্বরীয় সেবাতেই। জ্ঞান যদি শোনে কিম্বা না-ই শোনে, শুভ ভাবনা, শুভ কামনার
ভাইব্রেশনের দ্বারাও তারা বদলে যাবে। কেবল বাণীর সেবাই সেবা নয়, শুভ-ভাবনা রাখাও
হল সেবা। তাহলে দুটো সেবাই করতে পারো তো তোমরা, তাই না ? কেউ যদি তোমাদেরকে গালিও
দেয়, তবুও তোমরা শুভ ভাবনা, শুভ কামনা ছেড়ো না। ব্রাহ্মণদের কাজ হল - কিছু না কিছু
দেওয়া। তো এই শুভ ভাবনা, শুভ কামনা রাখাও হল শিক্ষা প্রদান করা। সকলে মুখের কথায়
(বাণী দ্বারা সেবায়) বদলায় না। সে যেমনই হোক, তাকে কিছু না কিছু অঞ্জলি অবশ্যই
দেবে, সে যদি পাক্কা রাবণও হয়। কোনো কোনো মায়েরা বলে থাকে যে - আমার আত্মীয়
স্বজন একেবারে পাক্কা রাবণ, কিছুতেই বদলাবে না, কিন্তু এইরকম আত্মাদেরকেও নিজের
খাজানার দ্বারা শুভ ভাবনা, শুভ কামনার অঞ্জলি অবশ্যই দেবে। কেউ যদি গালিও দেয়, তাও
তাদের মুখ থেকে কী বেরিয়ে আসে ? এরা হল ব্রহ্মা কুমারী.... তো ব্রহ্মা বাবাকে স্মরণ
করে, যদি গালিও দেয়, কিন্তু ব্রহ্মার নাম তো উচ্চারণ করে! তবুও বাবার নাম তো নেয়।
ব্রহ্মাকে তারা জানুক বা না-ই জানুক, তবুও তোমরা তাদেরকে অঞ্জলি দাও।এই রকম অঞ্জলি
দাও নাকি যে শোনেনা তাকে ছেড়ে দাও ? ছাড়বে না, নাহলে পরে তোমাদের কান ধরে অভিযোগ
করবে যে - আমাদের তো বুদ্ধি ছিল না, কিন্তু আপনি কেন (জ্ঞান-দান) দিলেন না। তো এসে
কান ধরবে তো না ? তোমরা দিয়ে যাও, কেউ নিক বা না নিক। বাপদাদা রোজ এত খাজানা
বাচ্চাদেরকে কেন দেন ? কেউ পুরোটাই নেয়, কেউ আবার যথা শক্তি নিয়ে থাকে। তাও
বাপদাদা কখনো কি বলেন যে - দেবো না ? কেন নাও না ? বাপদাদার কর্তব্যই হল দেওয়া।
দাতার বাচ্চা হলে তোমরা, তাই না ? তারা ভালো বললে তবে তোমরা দেবে তবে তো লেবতা হয়ে
গেলে। লেবতা কখনো দাতার সন্তান হতে পারে না। দেবতা হতে পারবে না কখনো তারা। তোমরা
তো দেবতা হবে, তাই না ? দেবত্বের পোশাক প্রস্তুত তো ? নাকি এখনও সেলাই এর কাজ চলছে,
ধোয়াধুয়ি চলছে ? নাকি কেবল ইস্ত্রি করা টুকু বাকি ? দেবত্বের পোশাক সামনে যেন
দৃশ্যমান থাকে। আজ ফরিস্তা, কাল দেবতা। কত বার দেবতা হয়েছ ? তো সর্বদা নিজেকে
দাতার সন্তান আর দেবতা হতে চলেছি - এটাই স্মরণে রাখো। দাতার সন্তান নিয়ে তারপর দেয়
না। মান পেলে, রিগার্ড দিলে তবেই দেবো - এই রকম নয়। সদা দাতার সন্তান, দিতে থাকা।
এই রকম নেশা সব সময় থাকে ? নাকি কখনো কম হয়ে যায় কখনো বেশি ? এখনো মায়াকে বিদায়
দিয়ে দাওনি ? ধীরে ধীরে দেওয়া নয় - এতটা সময় এখন নেই। এক তো এসেছো দেরিতে,
তারপরও যদি ধীরে ধীরে পুরুষার্থ করো তবে পৌঁছাতে পারবে না । নিশ্চয় হল, নেশা চড়ল
আর ওড়ো। এখন হল উড়তি কলার সময়। ওড়া তো সব থেকে দ্রুত হয় তাই না ! তোমরা হলে
লাকি - উড়বার সময়ে এসেছো। তো সর্বদা এটাই অনুভব করো যে, আমরা অনেক বড় ভাগ্যবান।
এই রকম ভাগ্য এরপর সমগ্র কল্পে আর পাওয়া যাবে না। তো দাতার সন্তান হও। নেওয়ার
সংকল্পটুকুও যেন না থাকে - টাকাপয়সা দিক, পোশাক আশাক দিক, খাবার দাবার দিক। তোমরা
হলে দাতার সন্তান, সব কিছুই স্বতঃতই প্রাপ্ত হয়ে যায় । যে চাইতে থাকবে সে পাবে
না। দাতা হও, আপনিই সব মিলতে থাকবে। আচ্ছা।
বরদান:-
যথার্থ স্মরণের দ্বারা সর্ব শক্তি সম্পন্ন হয়ে উঠতে
পারা সদা শস্ত্রধারী, কর্মযোগী ভব
যথার্থ স্মরণের অর্থ হল সর্ব শক্তি গুলির দ্বারা সদা
সম্পন্ন থাকা। পরিস্থিতি রূপী শত্রু এল আর শস্ত্র কাজে এল না, তবে তো তাকে
শস্ত্রধারী বলা যাবে না। সকল কর্মে স্মরণে থাকলে তখনই সফলতা আসবে। যেমন কর্ম না করে
এক সেকেন্ডও থাকতে পারা যায় না, তেমনই যে কোনো কর্ম যোগ বিনা করতে পারবে না।
সেইজন্য কর্ম-যোগী, শস্ত্রধারী হও আর সময় মতো শক্তি গুলিকে অর্ডার অনুযায়ী ইউজ করো
- তখন বলা হবে যথার্থ যোগী।
স্লোগান:-
যার সংকল্প আর কর্ম মহান, সে-ই হল মাস্টার
সর্বশক্তিমান ।