01.11.2023 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা হলে ব্রহ্মার সন্তান পরস্পর ভাই-বোন, তোমাদের বৃত্তি শুদ্ধ, পবিত্র হওয়া উচিত"

প্রশ্নঃ -
কোন্ বাচ্চাদের বোঝানোর প্রভাব অত্যন্ত ভালো পড়তে পারে?

উত্তরঃ  
যারা গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে কমল(পদ্ম) ফুল সমান পবিত্র থাকে। এরকম অনুভাবী বাচ্চারা কাউকে বোঝালে, তাদের বোঝানোর প্রভাব অত্যন্ত ভালো পড়ে, কারণ বিবাহ করেও যদি অপবিত্র বৃত্তি না আসে - তবে তো লক্ষ্যও অনেক উঁচু । এতে বাচ্চাদের অনেক সাবধানে থাকতে হবে।

গীতঃ-
আমাদের তীর্থ অনুপম.....

ওম্ শান্তি ।
বাবা বসে বাচ্চাদের বোঝান, কারণ বাচ্চারাই বাবাকে জানে। বাচ্চারা তো সবাই বাচ্চাই হয়, সব বাচ্চারাই ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। তোমরা জানো যে ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা হলো ভাই-বোন। সবাই এক পিতার সন্তান, তাই বোঝাতে হবে যে বাস্তবে আমরা আত্মারা হলাম ভাই-বোন। সবাই ভাই-ভাই। তোমরা জানো যে এখানে আমরা একই গ্র্যান্ড ফাদার এর (পিতামহ) এবং ফাদারের সন্তান। শিববাবার পৌত্র, ব্রহ্মার সন্তান। এঁনার (ব্রহ্মা) লৌকিক স্ত্রী, সেও নিজেকে ব্রহ্মাকুমারী বলে, তাহলে তার সম্পর্কও সেটাই হয়ে যায়। যেমন লৌকিক ভাই-বোন হলে সেখানে কোনো কু-দৃষ্টি পড়ে না। আজকাল তো সবাই খারাপ হয়ে গেছে। কারণ দুনিয়াই ডার্টি (নোংরা) হয়ে গেছে। তোমরা বাচ্চারা এখন বোঝো যে আমরা হলাম ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। ব্রহ্মার দ্বারা অ্যাডপ্টেড চিল্ড্রেন (দত্তক) হয়েছি, তাই ভাই-বোন। এও বোঝাতে হবে যে সন্ন্যাসও দুই প্রকারের হয়। সন্ন্যাস অর্থাৎ পবিত্র থাকা, ৫ বিকারকে ত্যাগ করা। ওরা হলো হঠযোগ সন্ন্যাসী, তাদের ডিপার্টমেন্টই আলাদা। প্রবৃত্তি মার্গের লোকেদের (নিজের সংসার) সাথে কানেকশনই (সম্পর্ক) ত্যাগ করে দেয়, তাদের নামই হলো হঠযোগ কর্ম-সন্ন্যাসী। বাচ্চারা, তোমাদের বোঝানো হয় যে গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে দেহ-সহ দেহের সর্ব সম্বন্ধ ত্যাগ করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। ওরা তো ঘর-সংসারই ত্যাগ করে। মামা, চাচা, কাকা কেউ-ই থাকে না। মনে করে শুধু একজনই আছে, তাকেই স্মরণ করতে হবে বা জ্যোতি, পরমজ্যোতিতে বিলীন হয়ে যাবে। নির্বাণধামে যেতে হবে। তাদের ডিপার্টমেন্টও আলাদা, তাদের রীতি-রেওয়াজও আলাদা। তারা বলে স্ত্রী হলো নরকের দ্বার, আগুন আর কার্পাস(তুলো) একসঙ্গে থাকতে পারে না। আলাদা হলেই আমরা সুরক্ষিত থাকবো। ড্রামানুসারে, তাদের ধর্মই আলাদা। ওই স্থাপনা শংকরাচার্যের, তিনি হঠযোগ, কর্ম-সন্ন্যাস শেখান, রাজযোগ নয়। তোমরা জানো ড্রামা তৈরী হয়েই আছে তাও আবার নম্বরের ক্রমানুসারেই। ১০০ শতাংশ সেন্সিবেল তো সবাইকে বলা যাবে না। তথাপি বলা হয় যে কেউ ১০০ শতাংশ সেন্সিবেল আবার কেউ ১০০ শতাংশ নন্-সেন্সিবেল। এমন তো হবেই। তোমরা জানো, আমরা বলি যে মাম্মা-বাবা তো পরস্পরের ভাই-বোন ছিল। খারাপ দৃষ্টি তো হওয়া উচিত নয়, ল'-ও(নিয়ম) তাই বলে। ভাই-বোনের পরষ্পরের সঙ্গে কখনোই বিবাহ হতে পারে না। যদি ঘরে ভাই-বোনের মধ্যে কিছু ঘটে যায়, বাবা দেখেন এদের চাল-চলন খারাপ, (তার/তাদের জন্য) উদ্বেগ চলে আসে। এরা কোথা থেকে জন্ম নিল, কত ক্ষতি করে, তাদের অনেক শাসন করা হয়। আগে এইসব বিষয়ে সাবধান থাকতো। এখন তো ১০০ শতাংশই তমোপ্রধাণ, মায়ার প্রভাব অত্যন্ত প্রবল। পরমপিতার সন্তানদের সঙ্গেই তো মায়ার প্রচন্ড লড়াই। বাবা বলেন - এরা হলো আমার সন্তান, আমি এদের স্বর্গে নিয়ে যাই । আর মায়া বলে - এরা আমার বাচ্চা, আমি এদের নরকে নিয়ে যাই। এখানে তো ধর্মরাজ বাবার হাতেই সবকিছু। তাই যারা গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও পবিত্র হয়ে থাকে তাদেরই অন্যদেরকে ভালো করে বোঝাতে হবে যে, আমরা কীভাবে একসাথে থেকেও পবিত্র হয়ে থাকি। যে কার্য হঠযোগী সন্ন্যাসীরাও করতে পারেনি, তা বাবা করাচ্ছেন। সন্ন্যাসী কখনো রাজযোগ শেখাতে পারে না । বিবেকানন্দের লেখা একটি বইয়ের নাম ছিল 'রাজযোগ '। কিন্তু সন্ন্যাসী, যারা নিবৃত্তি মার্গে থাকে তারা রাজযোগ শেখাতে পারে না। তোমরা যারা গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও পবিত্র হয়ে থাকো, তারা যদি বোঝায়, তো তীর নিশানায় ভালো মতো লাগবে। বাবা সংবাদপত্রে দেখেছিলেন যে দিল্লীতে গাছপালার বিষয়ে কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। তার উপরেও কিভাবে বোঝাবে, তোমরা এই জঙ্গলের গাছপালার ব্যাপারে এতো সচেতন, কিন্তু এই জিনিওলজিক্যাল ট্রি-র(মানবের বংশলতিকা, কল্পবৃক্ষ) কখনো খেয়াল রেখেছো যে এই মনুষ্য সৃষ্টির উৎপত্তি, পালনা কিভাবে হয়।

বাচ্চাদের এত বিশাল বুদ্ধি এখনো হয়নি। এত অ্যাটেনশন (সচেতনতা) নেই। কোনো না কোনো অসুখ লেগেই থাকে কিন্তু লৌকিক ঘরে ভাই-বোনের মধ্যে কখনো কোনো নোংরা বিচার আসে না। এখানে তো তোমরা সবাই এক পিতার সন্তানেরা হলে ভাই-বোন, ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। যদি কু-বুদ্ধি আসে তাহলে আর কীই বা বলা যেতে পারে? যারা নরকে বাস করে তাদের থেকেও হাজার গুণ খারাপ বলে পরিগণিত হবে। বাচ্চাদের উপর অনেক রেসপন্সিবিলিটি (দায়িত্ব) আছে। যারা গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও পবিত্র হয়ে থাকে - তাদের অনেক পরিশ্রম আছে। দুনিয়া এই কথা জানে না। বাবা আসেন পবিত্র করতে তাই অবশ্যই বাচ্চারা প্রতিজ্ঞা করবে, রাখী তো বাঁধাই আছে। এতে অনেক পরিশ্রম আছে। বিয়ে করে পবিত্র থাকা অনেক বড় লক্ষ্য । এতটুকুও বুদ্ধি যাওয়া উচিত নয়। বিয়ে হয়ে গেলেই বিকারী হয়ে যায়। বাবা এসে নগ্ন হওয়া থেকে রক্ষা করেন। দ্রৌপদীর কথাও শাস্ত্রে বর্ণিত আছে। এইসব কথার কিছু তো রহস্য আছেই, তাই না ! এই শাস্ত্র ইত্যাদি ড্রামায় ফিক্সড হয়ে আছে - যা কিছুই পাস্ট হয়ে গেছে তা ড্রামায় ফিক্সড রয়েছে তাকে পুনরায় রিপীট হতে হবে। জ্ঞানমার্গ ও ভক্তিমার্গও ফিক্সড হয়ে আছে। তোমাদের বুদ্ধি এখন অনেক বড় হয়ে গেছে, যেমন বাবার বুদ্ধি তেমনই মুরব্বী (দায়িত্ব জ্ঞান সম্পন্ন) বাচ্চাদের বুদ্ধি, যারা শ্রীমতে চলে। অনেক বাচ্চা আছে। জানা যায় না যে ঠিক কত বাচ্চা আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত অবিনাশী উত্তরাধিকার পেতে পারে না। এখন তোমরা ব্রহ্মা-বংশীরাই পুনরায় গিয়ে সূর্যবংশীয় বা বিষ্ণুবংশীয় হবে। এখন হলে শিব-বংশীয়। শিব হলো দাদা (পিতামহ) আর ব্রহ্মা হলো বাবা। সব প্রজাদের প্রজাপিতা তো একজনই, তাই না। তারা জানেও, মনুষ্য সৃষ্টির যে ঝাড় আছে, তারও বীজ অবশ্যই হবে। সেখানে আদি (প্রথম) মানবও হবে যাকে নিউ ম্যান বলা হয়। নিউ ম্যান কে হবে? ব্রহ্মাই হবে। ব্রহ্মা আর সরস্বতী নিউ ম্যান বলে বিবেচিত হবে। একে বোঝার মত বিশাল বুদ্ধি চাই। আত্মাই বলে, ও গড্ ফাদার, ও সুপ্রীম গড্ ফাদার। আত্মা বলে যে তিনিই সকলের রচয়িতা, তাই না। তিনি হলেন উচ্চ থেকে উচ্চতম। এবার এসো মনুষ্য সৃষ্টিতে। সেখানে উঁচুতে কাকে রাখবে? প্রজাপিতা। একথা তো যে কেউ বুঝতে পারে যে মনুষ্য সৃষ্টির ঝাড়ের মুখ্য হলো ব্রহ্মা।শিব হলেন আত্মাদের পিতা, ব্রহ্মাকে মানুষের (ব্রাক্ষ্মণ) রচয়িতা বলতে পারো। কিন্তু কার মতানুসারে করা হয়? বাবা বলেন, আমিই ব্রহ্মাকে অ্যাডপ্ট করি। নতুন ব্রহ্মা আবার কোথা থেকে আসবে। অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে এঁনার মধ্যে প্রবেশ করি। এঁনার নাম প্রজাপিতা ব্রহ্মা রাখি। এখন তোমরা জানো যে আমরাই হলাম ব্রহ্মার আসল বাচ্চা। শিববাবার থেকে নলেজ নিচ্ছি। আমরা বাবার কাছে পবিত্রতা, সুখ, শান্তি, হেল্থ(স্বাস্থ্য), ওয়েল্থ(ঐশ্বর্য্য) নিতে এসেছি। ভারতে আমরাই সদা সুখী ছিলাম, এখন নেই। পুনরায় বাবা সেই আশীর্ব্বাদী বর্সা দিচ্ছেন। বাচ্চারা জানে, প্রথমেই হলো পবিত্রতা। রাখী কাদের পড়ানো হয়? যারাই অপবিত্র হয়ে যায় তারাই প্রতিজ্ঞা করে যে আমরা পবিত্র থাকবো। বাবা বোঝান যে এই লক্ষ্য অনেক উঁচু। প্রথম থেকেই যারা যুগল, তারাই বোঝাবে - আমরা কিভাবে একসাথে ভাই-বোনের মতো থাকি। হ্যাঁ, অবস্থা পাকা হতে সময় লাগে। বাচ্চারা লেখেও যে খুবই মায়ার তুফান আসে। তাই যারা গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও পবিত্র হয়ে থাকে সেই বাচ্চারা যদি ভাষণ দেয় তাহলে ভালো। কারণ এ হলো নতুন কথা। এ হলোই স্ব- রাজযোগ। এতেও সন্ন্যাস(ত্যাগ) আছে । গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে আমরা জীবনমুক্তি অর্থাৎ সদ্গতি পাবো। এখন তো জীবনবন্ধ। তোমাদের হলো স্বরাজ্য পদ। স্ব অর্থাৎ নিজের রাজ্য চাই। এখন তাদের রাজ্য নেই। আত্মাই বলে, আমরা রাজা ছিলাম, রানী ছিলাম আর এখন আমরাই বিকারী কাঙ্গাল হয়ে গেছি, আমাদের মধ্যে কোনো গুণ নেই। এতো আত্মাই বলে, তাই না। তাই নিজেকে আত্মা, পরমপিতার সন্তান মনে করা উচিৎ। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই, পরস্পরের মধ্যে অনেক ভালবাসা থাকা উচিৎ। আমরা সমগ্র দুনিয়াকে লাভলী(সুন্দর) তৈরী করি। রাম-রাজ্যে তো বাঘে-গরুতে একত্রে জল পান করতো, কখনো লড়াই করতো না। তাহলে বাচ্চারা, তোমাদের কত ভালবাসা থাকা উচিৎ। এই অবস্থা ধীরে ধীরে আসবে। লড়াই তো অনেক হয়, তাই না। পার্লামেন্টেও লড়াই হয়, সেখানে একে-অপরকে চেয়ার তুলে মারতে শুরু করে। ওটা তো আসুরী সভা। তোমাদের হলো ঈশ্বরীয় সভা, তাহলে কত নেশা থাকা উচিৎ। কিন্তু আসলে এ হলো স্কুল। লেখা-পড়ায় কেউ অনেক উপরে উঠে যায়, কেউ শিথিল(ঢিলা) হয়ে পড়ে। এই স্কুলও ওয়ান্ডারফুল, ওখানে তো স্কুল টিচার আলাদা আলাদা হয়, কিন্তু এখানে স্কুল-টিচার একজনই, স্কুলও একটাই। আত্মা শরীর ধারণ করে শিক্ষা লাভ করে। আত্মাকে শেখায়, আমরা হলাম আত্মা শরীর দ্বারা পড়ছি। এতোটা আত্ম-অভিমানী হতে হবে। আমরা হলাম আত্মা আর উনি হলেন পরমাত্মা। সারাদিন এ যেন বুদ্ধিতে দৌড়তে থাকে। দেহ-অভিমানের জন্যই ভুল হয়ে যায়। বাবা বার-বার বলেন দেহী-অভিমানী ভব। দেহ-অভিমানে এলেই মায়া আঘাত করবে। অনেকটা চড়াই চড়তে হবে। কত বিচার সাগর মন্থন করা উচিত । রাত্রেই বিচার- সাগর মন্থন হতে পারে। এভাবেই বিচার-সাগর মন্থন করতে করতে তোমরা বাবার সমান হয়ে যাবে।

বাচ্চারা, তোমাদের সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধিতে রাখতে হবে। গৃহস্থ জীবনে থেকে রাজযোগ শিখতে হবে। বুঝতে হবে যে এ হলো আমাদের রাজযোগ। আমাদের ব্রহ্মাকুমার-কুমারী কেন বলে? এই রহস্য বা ধাঁধা বুঝতেও হবে, বোঝাতেও হবে। বাস্তবে বি. কে. হলে তোমরাই। প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো নতুন সৃষ্টি রচনা করে। নিউ ম্যান দ্বারা নিউ ওয়ার্ল্ড বানানো হয়। বাস্তবে, সত্যযুগের প্রথম বাচ্চা যে হবে তাকেই নিউ বলা হবে। এ কত আনন্দের কথা। ওখানে তো খুশীর বাজনা বাজতে থাকবে। ওখানে আত্মা আর শরীর দুই-ই পবিত্র। এখানে এখন এঁনার মধ্যে বাবা প্রবেশ করেছেন। এই নিউ ম্যান কিন্তু পবিত্র নয়, পুরোনোর মধ্যে বসেই এঁনাকে নিউ বানান। পুরোনো জিনিসকেই নতুন করে দেন। এখন নিউ ম্যান কাকে বলা হবে? ব্রহ্মাকে বলা হবে কী? বুদ্ধির কাজ যেন চলতেই থাকে। ওরা থোড়াই জানে যে অ্যাডম- ইভ কে? নিউ ম্যান হলো শ্রীকৃষ্ণ, আবার তিনিই হলেন পুরানো ম্যান ব্রহ্মা। পুনরায় ওল্ড ম্যান ব্রহ্মাকে নব মানবে পরিণত করি। নিউ ওয়ার্ল্ডে নিউ ম্যান চাই। তিনি কোথা থেকে আসবেন? নিউ ম্যান হলো সত্যযুগের প্রিন্স। তাঁকেই সুন্দর বলা হয়। ইনি(ব্রহ্মা) হলেন শ্যামবর্ণ, ইনি নিউ ম্যান নন। সেই শ্রীকৃষ্ণই ৮৪ জন্ম নিতে নিতে এখন অন্তিম জন্মে এসে গেছে, যাঁকে বাবা পুনরায় অ্যাডপ্ট করেন। পুরানোকেই নতুন বানায়। এ অতি গূহ্য কথা, বোঝার মত বিষয়। নিউ থেকে ওল্ড আবার ওল্ড থেকে নিউ। শ্যাম থেকে সুন্দর আবার সুন্দর থেকে শ্যামবর্ণ। যে সর্বাপেক্ষা পুরোনো সেই আবার নবীন থেকে নবীনতম হয়। তোমরা জানো যে বাবা আমাদের নবীন থেকে নবীনতম করে দেন। এ হলো অত্যন্ত বোঝার মত বিষয়। আর নিজের অবস্থাও বানাতে হবে। কুমার-কুমারীরা তো পবিত্রই থাকে। আর আমরা গৃহস্থে থেকে পদ্মফুল-সম হয়ে যাই, স্বদর্শন-চক্রধারী হই। বিষ্ণুবংশীয়-দের ত্রিকালদর্শীর নলেজ থাকে না। ওল্ড ম্যান (ব্রহ্মা) হলো ত্রিকালদর্শী। এ কতই না বিচিত্র কথা। ওল্ড ম্যানই নলেজ নিয়ে নিউ ম্যান হয়। বাবা বোঝান, ওটা হলো হঠযোগ আর এ হলো রাজযোগ। রাজযোগ অর্থাৎ স্বর্গের বাদশাহী (রাজত্ব)। সন্ন্যাসীরা বলে সুখ কাক-বিষ্ঠা সমান, তাই ঘৃণা করে। বাবা বলেন, নারীরাই হলো স্বর্গের দ্বার। মাতাদের উপরেই কলস(জ্ঞানের) রাখি। তাই শুরু-শুরুতে বোঝাও শিবায়ঃ নমঃ, ভগবানুবাচ। আওয়াজ যেন শক্তিশালী হয়। আচ্ছা!

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই, এই নিশ্চয়ে পবিত্রতার ব্রতকে পালন করে নিজেদের মধ্যে স্নেহের সাথে থাকতে হবে। সবাইকে লাভলী বানাতে হবে।

২ ) বিশালবুদ্ধি ধারণ করে জ্ঞানের গূহ্য রহস্যকে বুঝতে হবে, বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। মায়ার আঘাত থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য দেহ-অভিমানী হয়ে থাকার অভ্যাস করতে হবে।

বরদান:-
জ্ঞান অমৃতের বর্ষণ দ্বারা মহান হওয়া জীবন্মৃত ভব

তোমাদের মতো বাচ্চাদের উপরে বাবা জ্ঞান অমৃতের বর্ষণ করে তোমাদের মৃত থেকে মহান করে দিয়েছেন। জ্বলন্ত চিতা থেকে উঠিয়ে জীবন্মৃত করে দিয়েছেন। জ্ঞান অমৃত পান করিয়ে অমর করে দিয়েছেন। মানুষ বলে থাকে, ভগবান মৃতকেও প্রাণ ফিরিয়ে দেন, কিন্তু তিনি তা কিভাবে করেন, তা মানুষ জানতো না । এখন খুশীর কথা হলো যে, দেহ বোধের কারণে আগে যারা মৃত মানুষের সমান ছিলো, এখন তারা সেই মৃত অবস্থা থেকে মহান হয়ে গেছে ।

স্লোগান:-
ধর্মে স্থিত হয়ে কর্ম যে করে, সেই হলো ধর্মাত্মা ।

এই মাসের সমস্ত ঈশ্বরীয় মহাবাক্য নিরাকার পরমাত্মা শিব ব্রহ্মা মুখকমল দ্বারা তাঁর ব্রহ্মাবৎস অর্থাৎ ব্রহ্মাকুমার এবং ব্রহ্মাকুমারীদের সম্মুখে ১৮-০১-১৯৬৯ এর পূর্বে উচ্চারণ করেছিলেন। এ কেবল ব্রহ্মাকুমারীজ এর অধিকৃত টিচার বোনেদের দ্বারা নিয়মিত বি.কে বিদ্যার্থীদের শোনানোর জন্য।