02.01.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবার শ্রীমতের রিগার্ড (সম্মান) রাখার অর্থ হল মুরলী কখনো মিস্ না করা, প্রতিটি
আদেশ পালন করা"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, কেউ
যদি তোমাদের জিজ্ঞাসা করে সন্তুষ্ট ও প্রসন্ন আছো ? তবে তোমাদের কোন্ আওয়াজ
স্বপ্রতিভ ভাবে দেওয়া উচিত ?
উত্তরঃ -
বলো-- অধীর অপেক্ষায় ছিলাম ব্রহ্মের ঊর্ধ্বে যিনি থাকেন তাঁকে পাওয়ার, তাঁকে পেয়ে
গেছি, তাছাড়া আর কি চাই। যা পাওয়ার ছিলো পেয়ে গেছি ....। তোমাদের অর্থাৎ ঈশ্বরীয়
বাচ্চাদের কোনো ব্যাপারে আর আগ্রহ নেই। বাবা তোমাদের আপন করেছেন, তোমাদের মাথায়
মুকুট রেখেছেন, তবে কোন ব্যাপারে আর পরোয়া করার আছে!
ওম্ শান্তি ।
বাবা বোঝান,
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে অবশ্যই থাকবে যে বাবা হলেন - বাবাও, টিচারও, সুপ্রিম গুরুও, এইটা
অবশ্যই যেন স্মরণে থাকে। এই স্মরণ কেউ কখনো শেখাতে পারে না। একমাত্র বাবা প্রতি
কল্পে এসে শেখান। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, পতিত-পাবনও। এটা এখন বুঝতে পারা যায়, যখন
জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হয়। বাচ্চারা বুঝতে তো পারে কিন্তু বাবাকেই ভুলে যায়,
তবে টিচার গুরু আবার স্মরণে আসবে কীভাবে! মায়া হলো খুবই প্রবল, যার তিন রূপের মহিমা
থাকা সত্ত্বেও তিনকেই ভুলিয়ে দেয়, এতটাই সর্বশক্তিমান। বাচ্চারাও লেখে, বাবা আমি
ভুলে যাই। মায়া এমন প্রবল। ড্রামা অনুসারে হলো খুবই সহজ। বাচ্চারা মনে করে এইরকম
কেউ কখনো হতে পারে না। তিনিই হলেন বাবা, টিচার, সদ্গুরু-- সত্যি-সত্যিই, এতে
গল্প-কথা ইত্যাদির কোনো ব্যাপার নেই। অন্তর থেকে বোঝার ব্যাপার ! কিন্তু মায়া
ভুলিয়ে দেয়। মায়া বলে, আমি পরাজয় স্বীকার করে নিলে তবে প্রতি পদে অত্যাধিক
লাভ(কদম কদমে পদম্) হবে কীভাবে ! দেবতাদেরই পদম্ অর্থাৎ পায়ের চিহ্ন দেওয়া হয়।
সকলেরটা তো দিতে পারা যায় না। এটা হলো ঈশ্বর প্রদত্ত পাঠ, মানুষের না। এই পাঠ কখনো
মানুষ প্রদত্ত হতে পারে না। যদিও দেবতাদের মহিমা করা হয় তবুও কিন্তু উচ্চতমের
চেয়েও উচ্চ হলেন একমাত্র বাবা। এছাড়া ওঁনার (ব্রহ্মা বাবার) আর কৃতিত্ব কি আছে, আজ
ব্যবসায়িক আসন আগামীকাল রাজত্বের আসন। এখন তোমরা পুরুষার্থ করছো ওইরকম
লক্ষ্মী-নারায়ণ হওয়ার। তোমরা জানো যে এই পুরুষার্থতেই অনেকে ফেল করে। পড়াশুনা
তারাই করবে যারা কল্প পূর্বে পাশ করেছিলো। বাস্তবে জ্ঞান তো হলো খুবই সহজ, কিন্তু
মায়া ভুলিয়ে দেয়। বাবা বলেন নিজের চার্ট লেখো কিন্তু লিখতে পারে না। কতো আর বসে
লিখবে। যদি লেখে তখন তবে বুঝতে পারবে যে বড়জোর দুই ঘন্টা স্মরণে ছিলাম। সেটাও
তারাই বুঝতে পারবে, যারা বাবার শ্রীমৎ অনুসারে চলবে। বাবা তো বোঝেন এই বেচারাদের
লজ্জা বোধ হয় । না হলে তো শ্রীমতকে বাস্তবায়িত করা উচিত। কিন্তু দুই পার্সেন্টই
সাকুল্যে চার্ট লেখে। বাচ্চাদের শ্রীমতের রিগার্ড অতোটা নেই। মুরলী পাওয়া সত্ত্বেও
পড়ে না। মনে অবশ্যই লাগে-- বাবা তো বলেন সত্যিই, আমরা মুরলীই পড়ি না তো বাকি আর
সকলকে কি বোঝাবো?
(স্মরণের যাত্রা) ওম্ শান্তি। আত্মাদের পিতা আত্মা রূপী বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন, এটা
তো বাচ্চারা বরাবর বুঝতে পারে যে আমরা হলাম আত্মা, আমাদের পরমপিতা পরমাত্মা
পড়াচ্ছেন। আর কি বলেন ? আমাকে স্মরণ করলে তোমরা স্বর্গের মালিক হবে। এতে বাবাও এসে
গেলেন, পাঠ আর পাঠ করাতে যিনি পড়াচ্ছেন তিনিও এসে গেলেন। সদ্গতি দাতাও এসে গেলেন।
সামান্য শব্দে সমস্ত জ্ঞান এসে যায়। এখানে তোমরা আসোই রিভাইজ (পুনরাবৃত্তি) করার
জন্য। বাবাও এটাই বোঝান, কারণ তোমরা নিজেরাই বলো যে আমরা ভুলে যাই। এইজন্য এখানে
আসেনই রিভাইজ করানোর জন্য। যদি কেউ এখানে থাকেও তবুও রিভাইজ হয় না। ভাগ্যে নেই।
অনুপ্রেরণা একমাত্র বাবাই দিতে পারেন । এই অনুপ্রেরণা একমাত্র বাবা দেন। এতে কাউকেই
বেশী খাতির করা হয় না । না হলো স্পেশাল পড়াশুনা করানো হয় । টিচার জানে যে এরা হলো
ডাল্ (নিস্তেজ), তাই ওদের স্কলারশিপের যোগ্য করে তুলতেই হবে। এই বাবা এইরকম করেন
না। ইনি তো এক রকম ভাবে সবাইকে পড়ান। সেটা হলো টিচারের এক্সট্রা পুরুষার্থ করানো।
ইনি তো এক্সট্রা পুরুষার্থ কাউকে আলাদা করে করান না। এক্সট্রা পুরুষার্থ মানেই হলো
মাস্টার কিছু কৃপা করেন। এইরকম তো যদি পয়সা নেয়, বিশেষ টাইম দিয়ে পড়ায় যাতে সে
বেশী পড়াশুনা করে হুঁশিয়ার হয়। এক্ষেত্রে তো বেশী কিছু পড়ার ব্যাপারই নেই। এঁনার
তো কথাই নেই। একটাই মহামন্ত্র প্রদান করেন-"মনমনাভব"। স্মরণের ফলে কি হয়, এটা তো
বুঝতে পারো একমাত্র বাবা হলেন পতিত-পাবন। জানো যে ওঁনাকে স্মরণ করলেই পবিত্র হবে।
বাচ্চারা, এখন তোমাদের জ্ঞান আছে, যত স্মরণ করবে ততোই পবিত্র হবে। কম স্মরণ করলে কম
পবিত্র হবে। এটা ত
বাচ্চারা, তোমাদের পুরুষার্থের উপর। অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করলে আমরা এমন
লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে পারবো। তাদের মহিমা তো প্রত্যেকেই জানে। বলেও যে আপনি হলেন
পুণ্য আত্মা, আমি পাপ আত্মা। অনেক মন্দির তৈরী হয়ে আছে। সেখানে সবাই যায় কি করতে ?
দর্শনে তো লাভ কিছু নেই। একে অপরকে দেখে চলে যায়। ব্যাস্, দর্শন করতে যায়। অমুকে
যাত্রায় যাচ্ছে, আমিও যাবো। এতে কি হবে ? কিছুই না। বাচ্চারা, তোমরাও যাত্রা করেছো।
যেরকম আর সব উৎসব পালন করা হয়, সেইরকম যাত্রাও হলো এক উৎসব মনে করা হয়। এখন তোমরা
স্মরণের যাত্রাকেও এক উৎসব বলে মনে করো। তোমরা স্মরণের যাত্রাতে থাকো। কেবল একটাই
শব্দ "মন্মনাভব" । তোমাদের এই যাত্রা হলো অনাদি। তারাও বলে- এই যাত্রা আমরা অনাদি
কাল ধরে করে আসছি। কিন্তু তোমরা এখন জ্ঞান সহযোগে বলো আমরা প্রতি কল্পে এই যাত্রা
করি। বাবা এসেই এই যাত্রা শেখান। সেই চার ধাম জন্ম বাই জন্ম যাত্রা করে। এটা তো
অসীম জগতের পিতা বলেন--আমাকে স্মরণ করলে তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। এইরকম তো আর কেউ
কখনো বলে না যে স্মরণের ফলে তোমরা পবিত্র হবে। মানুষ তীর্থ যাত্রায় গেলে তখন সেই
সময় পবিত্র থাকে, আজকাল তো সেখানেও কলুষতা এসে গেছে, পবিত্র থাকে না। এই আত্মিক
যাত্রার কথা তো কারোর জানাই নেই। তোমাদের এখন বাবা বলেছেন - এই স্মরণের যাত্রা হলো
সত্যিকারের। সেই যাত্রায় তারা পরিক্রমায় বের হয়, তবুও যেমনকার তেমনই থাকে। চক্র
কাটতেই থাকে। যেমন ভাস্কোডাগামা পৃথিবীর পরিক্রমা করেছিল। সেটাও তো চক্র পরিক্রমা
করা না ! গানও আছে -- চারদিকে ঘুরে বেড়ালাম... তবুও সর্বক্ষণ রয়ে গেলাম দূরে
দূরেই । ভক্তিমার্গে তো কিছু প্রাপ্তি হতে পারে না। ভগবান প্রাপ্তি কারোরই হয় না।
ভগবানের থেকে দূরেই থাকে। পরিক্রমা করে আবার বাড়ী এসে ৫ বিকারে ফেঁসে যায়। সেই সব
যাত্রা গুলি হল মিথ্যা। বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো এটা হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ, যখন
কি না বাবা এসেছেন। একদিন সবাই জেনে যাবে বাবা এসেছেন। ভগবান শেষ পর্যন্ত প্রাপ্ত
হবে, কিন্তু কি ভাবে ? এটা তো কেউ জানে না। মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা এটা তো জানে যে
আমরা শ্রীমতের আধারে ভারতকে আবার স্বর্গে পরিণত করছি। ভারতেরই নাম তোমরা করবে। ওই
সময় আর কোনো ধর্ম হয় না। সমগ্র বিশ্ব পবিত্র হয়ে যায়। এখন তো অনেক ধর্ম আছে। বাবা
এসে তোমাদের সমগ্র বৃক্ষের নলেজ শোনান। তোমাদের মনে করিয়ে দেন। তোমরাই সেই দেবতা
ছিলে, তারপর আবার ক্ষত্রিয়, সেই তোমরাই বৈশ্য, তারপর শূদ্র হও। এখন সেই তোমরাই
ব্রাহ্মণ হয়েছো। এই আমিই সেই এর অর্থ বাবা কতো সহজে বোঝান। ওম্ অর্থাৎ আমি আত্মা
আবার আমি আত্মা ওই রকম চক্র আবর্তন করি। তারা তো বলে দেয় আমি যে আত্মা সেই পরমাত্মা,
পরমাত্মাই হলো সেই আত্মা। একজনও নেই যার আমিই সেই এর অর্থ জানা আছে। বাবা তাই বলেন,
এই যে মন্ত্র আছে এটা সর্বক্ষণ স্মরণে রাখা উচিত। চক্র বুদ্ধিতে না থাকলে তবে
চক্রবর্তী রাজা হবে কীভাবে ? এখন আমরা এই আত্মারা হলাম ব্রাহ্মণ, আবার সেই আমরাই
দেবতা হবো। এটা তোমরা যে কাউকেই জিজ্ঞাসা করো, কেউ বলতে পারবে না। তারা তো ৮৪
জন্মের অর্থও বোঝে না। ভারতের উত্থান আর পতন এর কথা প্রচলিত আছে । এটা ঠিক আছে।
সতোপ্রধান, সতো, রজো, তমো, সূর্যবংশী, চন্দ্রবংশী, বৈশ্যবংশী... এখন বাচ্চারা, তোমরা
সব বুঝতে পেরে গেছো। বীজরূপ বাবাকেই জ্ঞানের সাগর বলা হয়। তিনি এই চক্রে আসেন না।
এইরকম নয় যে আমরা জীব আত্মাই পরমাত্মা হয়ে যাই। না, বাবা নিজের সমান নলেজফুল করে
তোলেন। নিজের সমান গড করেন না। এই কথাটা খুবই ভালো করে বুঝতে হবে, তবে বুদ্ধিতে
চক্র আবর্তিত হতে পারবে, যার নাম স্বদর্শন চক্র রাখা হয়েছে। তোমরা বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে
পারো-- আমরা কীভাবে এই ৮৪ র চক্রে আসি। এতে সব কিছু এসে যায়। সময় এসে যায়, বর্ণও এসে
যায়, বংশতালিকাও এসে যায়।
বাচ্চারা, এখন তোমাদের বুদ্ধিতে এই সমগ্র জ্ঞান থাকা উচিত। নলেজ থেকেই উচ্চ পদ
প্রাপ্ত হয়। নলেজ থাকলে অন্যান্যদেরও দিতে পারবে। এখানে তোমাদের কোনো পেপার ইত্যাদি
ভরানো হয় না। লৌকিক স্কুলে যখন পরীক্ষা হয় তো পেপার্স বিলেত থেকে আসে (তৎকালীন সময়ে
আসতো) । যারা বিলেতে পড়ে তাদের তো সেখানেই রেজাল্ট বের হবে। ওদের মধ্যেও কেউ বড়
এডুকেশন অথরিটি হবে যারা সেই পেপার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। তোমাদের পেপার্স এর
নিরীক্ষণ কে করবে ? তোমরা নিজেরাই করবে। যেইরকম চাইবে নিজেকে সেই রকম তৈরী করো। যে
পদ প্রাপ্ত করতে চাও পুরুষার্থের দ্বারা বাবার থেকে প্রাপ্ত করো। প্রদর্শনী
ইত্যাদিতে জিজ্ঞাসা করে না যে -- কি তৈরী হবে ? দেবতা হবে, ব্যারিস্টার হবে... কী
হবে ? বাবাকে যত স্মরণ করবে, সার্ভিস করবে ততোই ফল প্রাপ্ত হবে। যারা ভালো ভাবে
বাবাকে স্মরণ করে তারা মনে করে আমাদের সার্ভিসও করতে হবে। প্রজা তৈরী করতে হবে যে !
এই রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। তাই সেখানে সব কিছু দরকার। সেখানে উপদেষ্টা থাকে না।
উপদেষ্টার দরকার তাদের হয় যাদের বুদ্ধি কম হয়। তোমাদের ওখানে নির্দেশের দরকার থাকে
না। বাবার কাছে নির্দেশ নিতে আসে-- স্থূল ব্যাপারের নির্দেশ নেয়, টাকা পয়সার কী
কী করবে ? ব্যবসা বা আজকর্ম কীভাবে কী করবে ? বাবা বলেন, এই দুনিয়ার পার্থিব কথা
বাবার কাছে এনো না। হ্যাঁ, কোথাও যাতে কেউ মুষরে না পড়ে, তাই কিছু না কিছু সহায়ক
হয়ে বলে দেন। আমার তো এটা কাজ নয় । আমার তো হলো ঈশ্বরীয় ধান্ধা- তোমাদের রাস্তা
বলে দেওয়ার। তোমরা বিশ্বের মালিক হবে কি করে ? তোমাদের শ্রীমত প্রাপ্ত হয়েছে। তাছাড়া
সব হলো আসুরিক মত। সত্যযুগে বলা হবে শ্রীমত। কলিযুগে আসুরিক মত। সেটা হলোই সুখধাম।
সেখানে এরকমও বলবে না সন্তুষ্ট তো ? খুশীতে আছো তো ? শরীর ঠিক আছে ? এই সব শব্দ
সেখানে থাকে না। এ'সব এখানে জিজ্ঞাসা করা হয়। কোনো কষ্ট নেই তো ? খুশী তো ?
সন্তুষ্ট তো ? এতেও অনেক কথা এসে যায়। সেখানে দুঃখ থাকেই না, যে জিজ্ঞাসা করা হবে।
এটা হলোই দুঃখের দুনিয়া। বাস্তবে তোমাদের কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারে না। যদিও মায়া
নীচে নামিয়ে দিতে থাকে, তবুও তো আমরা বাবাকে পেয়েছি যে ! তোমরা বলবে- কি! তোমরা
খুশীতে আছো কিনা ভালো আছি কিনা জিজ্ঞাসা করো ! আমরা হলাম ঈশ্বরের সন্তান, আমাদের কি
এত খুশী-প্রসন্নতার কথা জিজ্ঞাসা করো ! একটাই বাসনা ছিলো ব্রহ্মের ঊর্ধ্বে যিনি
থাকেন সেই বাবাকে পাওয়ার, তাঁকে পেয়ে গেছি, আবার কিসের চিন্তা ! এটা সব সময় স্মরণ
করা উচিত -- আমি কার বাচ্চা ! বুদ্ধিতে এই জ্ঞানও আছে যে- যখন আমরা পবিত্র হয়ে যাবো
তখন আবার লড়াই শুরু হয়ে যাবে। তাই যখনই কেউ তোমাদের জিজ্ঞাসা করবে তোমরা
সন্তুষ্ট-খুশী আছো ? তখন বলো আমরা তো সব সময়ই সন্তুষ্ট ও প্রসন্ন। অসুখও যদি হয়
তবুও বাবার স্মরণে থাকি। তোমরা স্বর্গের চেয়েও বেশী এখানে সন্তুষ্ট- প্রসন্ন থাকো।
স্বর্গের বাদশাহী প্রদানকারী বাবাকে যখন পাওয়া হয়ে গেছে, যিনি আমাদের এতটা যোগ্য
তৈরী করছেন তবে আমাদের আর চিন্তা কিসের থাকে ! ঈশ্বরের বাচ্চাদের কি আর চিন্তা!
সেখানে দেবতাদেরও পরোয়া নেই। দেবতাদের উপর তো আছেন ঈশ্বর। তো ঈশ্বরের বাচ্চাদের কি
আর উদ্বেগ হতে পারে ! বাবা আমাদের পড়ান। বাবা হলেন আমাদের টিচার, সদ্গুরু । বাবা
আমাদের মাথায় মুকুট রাখছেন, আমরা মুকুটধারী হয়ে উঠছি। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে
আমাদের কীভাবে বিশ্বের তাজ প্রাপ্ত হয়। বাবা মুকুট নিজে রাখেন না। তোমরা এটাও জানো
সত্যযুগে বাবা নিজের মুকুট তাঁর বাচ্চাদের উপর রাখেন, যাকে ইংরাজিতে বলে ক্রাউন
প্রিন্স। এখানে যতক্ষণ বাবার মুকুট বাচ্চাদের প্রাপ্ত হয় ততক্ষণ বাচ্চাদের মনে
উৎকন্ঠা থাকে, পিতার মৃত্যু হলে তবে মুকুট মাথার বসবে। ততক্ষণ প্রত্যাশা থাকে
প্রিন্স থেকে মহারাজা কবে হবো। সেখানে তো এইরকম কথাই হয় না। নিজের সময় মতো রীতি
অনুযায়ী বাবা বাচ্চাদের মুকুট দিয়ে আবার সরে যান। সেখানে বাণপ্রস্থের কথাই ওঠে না।
বাচ্চাদের মহল ইত্যাদি তৈরী করে দেয়, সব আশা পূর্ণ হয়ে যায়। তোমরা বুঝতে পারো
সত্যযুগে হলো সুখ আর সুখ। প্র্যাকটিক্যালে সুখ তখনই প্রাপ্ত করবে যখন সেখানে যাবে।
সেটা তো তোমরাই জানো, স্বর্গে কি হবে ? এক শরীর ত্যাগ করে তারপর কোথায় যাবে ? বাবা
এখন তোমাদের প্র্যাকটিক্যালে পড়াচ্ছেন। তোমরা জানো যে আমরা সত্যি-সত্যিই স্বর্গে
যাবো। তারা তো বলে দেয় আমরা স্বর্গে যাই, জানেও না স্বর্গ কাকে বলে। জন্ম-জন্মান্তর
এই অজ্ঞানতার কথা শুনে এসেছে, এখন বাবা তোমাদের সত্যি কথা শোনাচ্ছেন। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সর্বদা সন্তুষ্ট আর খুশী থাকার জন্য বাবার স্মরণে থাকতে হবে। অধ্যয়ণের দ্বারা
নিজের উপর রাজত্বের মুকুট রাখতে হবে।
২ ) শ্রীমতের আধারে ভারতকে স্বর্গ করে তোলার সেবা করতে হবে। সর্বদা শ্রীমতের
রিগার্ড (সম্মান) রাখতে হবে।
বরদান:-
কানেকশন আর রিলেশনের দ্বারা মনের শক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখতে পাওয়া সূক্ষ্ম
সেবাধারী ভব
যেমন বাণীর শক্তি বা
কর্মের শক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখতে পাওয়া যায়, সেইরকম সবথেকে পাওয়ারফুল সাইলেন্স
শক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখার জন্য বাপদাদার সাথে নিরন্তর ক্লীয়ার কানেকশন আর
রিলেশন থাকতে হবে, একেই বলা হয় যোগবল । এইরকম যোগবল সম্পন্ন আত্মারা স্থূল ভাবে
দূরে থাকা আত্মাদেরকে সম্মুখের অনুভব করাতে পারে। আত্মাদের আহ্বান করে তাদের
পরিবর্তন করতে পারে। এটাই হলো সূক্ষ্ম সেবা, এর জন্য একাগ্রতার শক্তিকে বৃদ্ধি করো।
স্লোগান:-
নিজের
সমস্ত ধন-ভান্ডারকে সফলকারীই হল মহাদানী আত্মা।