04.12.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সমস্তকিছুই কর্মের উপর নির্ভর করে, সর্বদা যেন খেয়াল থাকে যে, মায়ার বশীভূত হয়ে
কোনো উল্টো কাজ যেন না হয়, যার সাজা ভোগ করতে হয়''
প্রশ্নঃ -
বাবার নজরে
সবথেকে অধিক বুদ্ধিমান কে ?
উত্তরঃ -
যারমধ্যে
পবিত্রতার ধারণা আছে সে-ই বুদ্ধিমান আর যে পতিত, সে বুদ্ধিহীন । লক্ষ্মী - নারায়ণকে
সবথেকে অধিক বুদ্ধিমান বলা হবে । বাচ্চারা, তোমরা এখন বুদ্ধিমান হচ্ছো । পবিত্রতাই
হলো সবথেকে মূখ্য, তাই বাবা সাবধান করেন - বাচ্চারা, এই চোখ যেন তোমাদের ধোঁকা না
দেয়, একে সামলে চলতে হবে । এই পুরানো দুনিয়াকে দেখেও দেখো না । নতুন দুনিয়া স্বর্গকে
স্মরণ করো ।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি -
মিষ্টি হারানিধি বাচ্চারা এ কথা তো বুঝতেই পারে যে, এই পুরানো দুনিয়াতে আমরা অল্প
দিনের অতিথি । দুনিয়ার মানুষ মনে করে এখনো ৪০ হাজার বছর এখানে থাকবো । বাচ্চারা,
তোমরা তো নিশ্চিত, তাই না । এই কথা ভুলে যেও না । বাচ্চারা, এখানে বসে থাকলেও
তোমাদের অন্তরে গদগদ খুশীর ভাব হওয়া উচিত । তোমরা এই চোখে যা কিছুই দেখো, সবই বিনাশ
হয়ে যাবে । আত্মা তো অবিনাশী । আমরা আত্মারা ৮৪ জন্মগ্রহণ করেছি । বাবা এখন এসেছেন
আমাদের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে । পুরানো দুনিয়া যখন সম্পূর্ণ হয়, বাবা তখন আসেন নতুন
দুনিয়া স্থাপনের জন্য । নতুন থেকে পুরানো আর পুরানো থেকে নতুন দুনিয়া কিভাবে হয়, এ
তোমাদের বুদ্ধিতেই আছে । আমরা অনেকবার এই চক্র সম্পূর্ণ করেছি । এখন এই চক্র
সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে । নতুন দুনিয়াতে আমরা দেবতারা খুব অল্প সংখ্যায় থাকি । সেখানে
মানুষ থাকে না । বাকি সম্পূর্ণই কর্মের উপর নির্ভর করে । মানুষ উল্টো কর্ম করে, তা
অবশ্যই খাতায় জমা হয়, তাই বাবা জিজ্ঞেস করেন, এই জন্মে এমন কোনো পাপ করোনি তো ? এ
হলো পতিত ছিঃ ছিঃ রাবণ রাজ্য । এ হলো অন্ধকারের দুনিয়া । বাচ্চারা, বাবা এখন
তোমাদের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রদান করছেন । তোমরা এখন কোনরকম ভক্তি করো না । তোমরা
ভক্তির অন্ধকারে ধাক্কা খেয়ে এসেছো । এখন তোমরা বাবার স্পর্শ পেয়েছো । বাবার
সাহায্য ছাড়া তোমরা বিষয় বৈতরণী নদীতে গোত্তা খেতে । অর্ধেক কল্প হলো ভক্তি, জ্ঞান
পাওয়াতে তোমরা সত্যযুগী নতুন দুনিয়াতে চলে যাও । এখন তো এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ,
যেখানে তোমরা পতিত ছিঃ ছিঃ থেকে ফুল, অথবা কাঁটার থেকে ফুলে পরিণত হচ্ছো । তোমাদের
এমন কে তৈরী করেন ? অসীম জগতের পিতা । লৌকিক জগতের পিতাকে অসীম জগতের পিতা বলা হবে
না । তোমরা ব্রহ্মা এবং বিষ্ণুর কাজকেও জেনে গেছো । তাই তোমাদের কতো শুদ্ধ নেশা
থাকার প্রয়োজন । মূলবতন, সূক্ষ্মবতন, স্থূলবতন -- এ সব সঙ্গম যুগেই হয় । বাচ্চারা,
বাবা এখন বসে তোমাদের বোঝাচ্ছেন, পুরানো এবং নতুন দুনিয়ার এ হলো সঙ্গম যুগ । মানুষ
ডাকতেও থাকে, আমাদের পতিত থেকে পবিত্র বানাতে এসো । এই সঙ্গমে বাবারও অভিনয় চলতে
থাকে । তিনি তো সৃষ্টিকর্তা এবং নির্দেশক, তাই না । তাই অবশ্যই তাঁরও কিছু ভূমিকা
থাকবে । সবাই জানে যে, তাঁকে মানুষ বলা হয় না, তাঁর তো নিজের কোনো শরীরই নেই । বাকি
সকলকেই মানুষ বা দেবতা বলা হবে । শিববাবাকে না দেবতা বলা হবে, আর না মানুষ । এই
শরীর তো তিনি সাময়িকভাবে ধার হিসাবে নিয়েছেন । তিনি কোনো গর্ভ থেকে জন্ম নেনই নি ।
বাবা নিজেই বলেন -- বাচ্চারা, শরীর ছাড়া আমি কিভাবে রাজযোগ শেখাবো । যদিও মানুষ
আমাকে বলে দেয় যে, পরমাত্মা নুড়ি - পাথরে আছেন কিন্তু বাচ্চারা, এখন তোমরা বুঝতে
পারো যে, আমি কিভাবে আসি । তোমরা এখন রাজযোগ শিখছো । এই রাজযোগ কোনো মানুষই শেখাতে
পারেন না । দেবতারা তো রাজযোগ শিখতে পারে না । এখানে এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে
রাজযোগ শিখে মানুষ থেকে দেবতা হয় ।
বাচ্চারা, এখন তোমাদের অগাধ খুশী হওয়া উচিত যে, আমরা ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেছি
। বাবা কল্পে - কল্পে আসেন, তিনি নিজেই বলেন, এ হলো অনেক জন্মের অন্তিম জন্ম ।
শ্রীকৃষ্ণ তো সত্যযুগের প্রিন্স ছিলেন, তিনি এই ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেন ।
শিববাবা তো এই ৮৪ জন্মের চক্রে আসবেন না । শ্রীকৃষ্ণের আত্মাই সুন্দর থেকে শ্যাম হয়,
এ কথা কেউই জানে না । তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারেই তা জানতে পারে । মায়া
অনেক কড়া । মায়া কাউকেই ছাড়ে না । বাবা সবই জানতে পারেন । মায়া একদম গিলে ফেলে । এ
কথা বাবা খুব ভালোভাবে জানেন । এমন ভেবো না যে, বাবা অন্তর্যামী । তা নয়, বাবা
সকলের গতিবিধি জানেন । খবর তো আসে, তাই না । মায়া একদম কাঁচা গিলে ফেলে । বাচ্চারা,
এমন অনেক কথা তোমরা জানো না । বাবা তো সবই জানতে পারেন । মানুষ মনে করে নেয় যে,
পরমাত্মা অন্তর্যামী । বাবা বলেন, আমি অন্তর্যামী নই । প্রত্যেকেরই চলন দেখে বোঝা
যায়, তাই না । অনেকের খুবই ছিঃ ছিঃ আচার-আচরণ, তাই বাবা প্রতি মুহূর্তে বাচ্চাদের
সাবধান করেন । মায়ার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে । যদিও বাবা বুঝিয়ে বলেন,
তবুও বুদ্ধিতে থাকে না যে, কাম মহাশত্রু, বুঝতেই পারে না যে, আমরা বিকারে চলে গেছি,
এমনও হয় তাই বাবা বলেন, যদি কোনো ভুলও হয়ে যায় তাহলে পরিস্কার বলে দাও, কোনোকিছু
লুকিও না । না হলে শতগুণ পাপ হয়ে যাবে । অন্তরে অনুশোচনা হতে থাকবে । এই পাপও
বৃদ্ধি হতে থাকবে আর একদম নীচে নেমে যাবে । বাবার সাথে বাচ্চাদের সম্পূর্ণ স্বচ্ছ
থাকতে হবে না হলে তোমাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে । এ তো রাবণের দুনিয়া । এই
রাবণের দুনিয়াকে আমরা কেন স্মরণ করবো । আমাদের তো নতুন দুনিয়াতে যেতে হবে । বাবা
যখন নতুন বাড়ি ইত্যাদি তৈরী করেন তখন বাচ্চারা মনে করে, আমাদের জন্য নতুন বাড়ী তৈরী
হচ্ছে । তখন তারা খুশী হয় । এ হলো অসীম জগতের কথা । তিনি আমাদের জন্য নতুন দুনিয়া,
স্বর্গ তৈরী করছেন । এখন আমরা নতুন দুনিয়াতে যাচ্ছি, এরপর যতো যতো বাবাকে স্মরণ করবে,
ততই ফুলে পরিণত হতে থাকবে । আমরা বিকারের বশে এসে কাঁটায় পরিণত হয়েছি । বাচ্চারা,
তোমরা জানো - যারা আসে না, তারা তো মায়ার বশীভূত হয়ে গেছে । তারা তো বাবার কাছেই
নেই । তারা বিশ্বাসঘাতকে পরিণত হয়েছে । তারা পুরানো শত্রুর কাছে চলে গেছে । এমন -
এমন অনেককেই মায়া গিলে ফেলে । কতো মানুষই শেষ হয়ে যায় । অনেক ভালো - ভালো বাচ্চা
ছিলো যারা বলেছিলো - আমরা এই করবো , এই করবো । আমরা তো যজ্ঞের জন্য প্রাণদান করতেও
প্রস্তুত । আজ আর তারা নেই । *তোমাদের লড়াই হলো মায়ার সঙ্গে । দুনিয়াতে এ কেউই জানে
না যে, মায়ার সঙ্গে কিভাবে লড়াই হয় । শাস্ত্রে দেখানো হয়েছে, দেবতা আর অসুরদের
মধ্যে লড়াই হয় । তারপর কৌরব আর পাণ্ডবদের মধ্যে লড়াই হয়েছিলো । কাউকে জিজ্ঞেস করো,
এই দুটি বিষয় শাস্ত্রের কেমন কথা ? দেবতারা তো অহিংসক হয় । তাঁরা সত্যযুগে থাকে ।
তাঁরা কি কলিযুগে লড়াই করতে আসবে ? কৌরব আর পাণ্ডবদের অর্থও বোঝে না* । শাস্ত্রে যা
লেখা আছে তাই পড়ে শোনাতে থাকে । বাবা তো সম্পূর্ণ গীতা পড়েছিলেন । যখন তিনি জ্ঞান
পেয়েছিলেন, তখন চিন্তা করেছিলেন, গীতাতে এই লড়াই ইত্যাদির কথা কি লেখা হয়েছে ?
কৃষ্ণ তো গীতার ভগবান নন । এনার ভিতরে বাবা বসে ছিলেন, তো এনাকেও ওই গীতা ছাড়িয়ে
দিয়েছিলেন । এখন আমরা বাবার কাছ থেকে কতো জ্ঞানের আলো পেয়েছি । আত্মাই আলোকিত হয়
তাই বাবা বলেন, নিজেকে আত্মা মনে করো আর অসীম জগতের বাবাকে স্মরণ করো । ভক্তিতে
তোমরা স্মরণ করতে, তোমরা বলতে --আপনি এলে আমরা বলিহারি যাবো, কিন্তু তিনি কিভাবে
আসবেন আর তোমরা কিভাবে বলিহারি যাবে, তা বুঝতেই না ।
বাচ্চারা, এখন তোমরা বুঝতে পারো, বাবা যেমন, আমরা আত্মারাও তেমন । বাবার হলো অলৌকিক
জন্ম, বাচ্চারা, তিনি তোমাদের কি ভালোভাবে পড়ান । তোমরা নিজেরাই বলো, এ তো আমাদের
সেই বাবা, যিনি কল্পে - কল্পে আমাদের বাবা হন । আমরা সবাই তাঁকে বাবা - বাবা বলেই
ডাকি । বাবাও বাচ্চা - বাচ্চা বলে ডাকেন, তিনিই শিক্ষক রূপে আমাদের রাজযোগ শেখান ।
তিনি তোমাদের এই বিশ্বের মালিক বানান । তাই এমন বাবার হয়ে সেই শিক্ষক বাবার থেকে
শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন । এইসব কথা শুনে গদগদ হওয়া উচিত । যদি তোমরা ছিঃ ছিঃ হও,
তাহলে সেই খুশী আসবেই না । যতই মাথা ঠোকো না কেন, তারা আমাদের জাতি ভাই নয় । এখানে
মানুষের কতো পদবী হয় । এ সব হলো জাগতিক কথা । তোমাদের পদবী দেখো কতো বড় । বড়র
থেকেও বড় গ্রেট - গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার ব্রহ্মা । তাঁকে কেউ জানেই না । শিববাবাকে
তো সর্বব্যাপী বলে দিয়েছে । ব্রহ্মার কথাও কেউ জানে না । চিত্রও আছে -- ব্রহ্মা,
বিষ্ণু, শঙ্কর । ব্রহ্মাকে আবার সূক্ষ্মবতনে নিয়ে গেছে । তাদের বায়োগ্রাফি কিছুই
জানে না । সূক্ষ্মবতনে ব্রহ্মা কোথা থেকে এলো ? সেখানে কিভাবে দত্তক নেবে ? বাবা
বুঝিয়েছেন যে, এ হলো আমার রথ । এনার অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে আমি এনার মধ্যে
প্রবেশ করেছি । এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ হলো গীতার এপিসোড যাতে পবিত্রতাই মূখ্য ।
কিভাবে পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে, একথা কেউই জানে না । সাধু - সন্তরা কখনোই বলবেন
না যে, দেহ সহিত সমস্ত সম্বন্ধ ভুলে আমি এক বাবাকে স্মরণ করো, তাহলে মায়ার পাপ কর্ম
ভস্ম হয়ে যাবে । তাঁরা তো বাবাকেই জানেন না । গীতাতেও বাবা বলেছেন - আমিই এই সাধু
আদিদের উদ্ধার করি ।
বাবা বোঝান - শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যে সকল আত্মারা অভিনয় করছে, সকলেরই এ হলো
অন্তিম জন্ম । এনারও এ হলো অন্তিম জন্ম । এই আবার ব্রহ্মা হবেন । ছোটোবেলায়
গ্রামের ছেলে ছিল । ৮৪ জন্ম এই সম্পূর্ণ করেছে, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত । বাচ্চারা,
এখন তোমাদের বুদ্ধির তালা খুলে গেছে । এখন তোমরা বুদ্ধিমান তৈরী হচ্ছ । পূর্বে তোমরা
বুদ্ধিহীন ছিলে । এই লক্ষ্মী - নারায়ণ হলো বুদ্ধিমান । পতিতকে বুদ্ধিহীন বলা হয় ।
মূখ্য বিষয় হলো পবিত্রতা । এমন লিখেও থাকে যে, মায়া আমাকে নীচে নামিয়ে দিয়েছে ।
আমাদের অপরাধীর দৃষ্টি হয়ে গেছে । বাবা তো প্রতি মুহূর্তে সাবধান করেন - বাচ্চারা,
মায়ার কাছে কখনোই হেরে যেও না । এখন তোমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে । তোমরা নিজেকে আত্মা
মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । এই পুরানো দুনিয়া শেষ হলো বলে । আমরা তো পবিত্র তৈরী হই
তাই আমাদের তো পবিত্র দুনিয়াই চাই, তাই না । বাচ্চারা, তোমাদেরও পতিত থেকে পবিত্র
হতে হবে । বাবা তো আর যোগ করবেন না । বাবা তো পতিত হনই না যে যোগ করবেন । বাবা তো
বলেন, আমি তোমাদের সেবার জন্য উপস্থিত । তোমরাই চেয়েছিলে যে, তুমি এসে আমাদের মতো
পতিতদের পবিত্র করো । তোমাদের চাওয়াতেই আমি এসেছি । আমি তোমাদের খুব সহজ রাস্তা বলে
দিই, কেবল "মন্মনাভব* (মন আমাতে নিযুক্ত করো) । শাস্ত্রে কেবলমাত্র কৃষ্ণের নাম
দেওয়াতে বাবাকে সবাই ভুলে গেছে । বাবা হলেন প্রথম আর কৃষ্ণ হলেন দ্বিতীয় । বাবা
হলেন পরমধামের মালিক আর কৃষ্ণ বৈকুন্ঠের মালিক । সূক্ষ্ম লোকে তো কিছুই হয় না ।
সকলের মধ্যে এক নম্বর হলেন শ্রীকৃষ্ণ, যাকে সবাই ভালোবাসে । বাকি সকলেই তো পিছনে -
পিছনে আসে । স্বর্গে তো সকলে যেতেও পারবে না ।
তাই মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমাদের রন্ধ্রে - রন্ধ্রে খুশী হওয়া উচিত । কোনো
কোনো বাচ্চা বাবার কাছে আসেন, যারা কখনোই পবিত্র থাকে না । বাবা বোঝান, বিকারে যাও
তাহলে বাবার কাছে কেন আসো ? তারা বলে - কি করবো, থাকতে পারি না, কিন্তু এখানে আসি,
যদি কখনো তীর লেগে যায় । আপনি ছাড়া আমাদের কে সদ্গতি করাবে, তাই এখানে এসে বসে যাই
। মায়া কতো প্রবল । আবার এমন দৃঢ় বিশ্বাসও আছে যে, বাবা আমাদের পতিত থেকে পবিত্র
ফুলের মতো বানান, কিন্তু কি করবো, তবুও সত্যি কথা বললে কখনো তো শুধরে যেতেও পারবো ।
আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত যে, আপনার কাছেই আমাদের শুধরাতে হবে । বাবা এইসব
বাচ্চাদের জন্য দুঃখ পান, তাও এমন হবে । কিছুই নতুন নয় । বাবা তো রোজ রোজই শ্রীমত
দেন কিন্তু খুব অল্প সংখ্যকই তা অভ্যাসে আনতে পারে, এতে বাবা কি করতে পারেন । বাবা
বলেন, সম্ভবতঃ এদের এমনই পার্ট । সবাই তো আর রাজা - রানী হয় না । এখন রাজধানী
স্থাপন হচ্ছে । রাজধানীতে তো সকলেরই প্রয়োজন । বাবা তবুও বলেন - বাচ্চারা, হিম্মত
ত্যাগ করো না । তোমরাও এগিয়ে যেতে পারো । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতাপিতা - বাপদাদার স্মরণের স্নেহ -
সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে নমস্কার জানাচ্ছেন ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার সাথে সর্বদা স্বচ্ছ থাকতে হবে । এখনো কোনো ভুল যদি হয়ে যায়, লুকিও না ।
অপরাধীর দৃষ্টি যেন না থাকে - এরজন্য সাবধান থাকতে হবে ।
২ ) সদা এই শুদ্ধ নেশা যেন থাকে যে, অসীম জগতের পিতা আমাদের পতিত ছিঃ ছিঃ থেকে ফুল
বা কাঁটার থেকে ফুলে পরিণত করছেন । এখন আমরা বাবার সাহায্য পেয়েছি, যার সাহায্যে
আমরা বিষয় বৈতরণী নদী পার হয়ে যাবো ।
বরদান:-
ব্রাহ্মণ জীবনে বাবার দ্বারা আলোর মুকুট প্রাপ্তকারী মহান - ভাগ্যবান আত্মা ভব
সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ
জীবনের বিশেষত্ব হলো ''পবিত্রতা'' । পবিত্রতার নিদর্শন হলো আলোর মুকুট, যা প্রতিটি
ব্রাহ্মণ আত্মা বাবার কাছে প্রাপ্ত করে । পবিত্রতার আলোর এই মুকুট রতনজড়িত মুকুটের
থেকে অতি শ্রেষ্ঠ । মহান আত্মা, পরমাত্ম ভাগ্যবান আত্মা, উঁচুর থেকে উঁচু আত্মার এই
মুকুট হলো নিদর্শন । বাপদাদা প্রতিটি বাচ্চাকে জন্ম থেকেই ''পবিত্র ভব'' এই বরদান
দেন, যার সূচক হলো লাইটের মুকুট ।
স্লোগান:-
অসীম জগতের বৈরাগ্য বৃত্তির দ্বারা, ইচ্ছার বশ অশান্ত আত্মাদের অশান্তি দূর করো ।