05-06-2022 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
17-03-91 মধুবন
"সন্তুষ্টমণির শ্রেষ্ঠ আসনে আসীন হওয়ার জন্য
প্রসন্নচিত্ত, নিশ্চিন্ত আত্মা হও"
আজ বাপদাদা তাঁর চতুর্দিকের সন্তুষ্টমণিদেরকে দেখছেন। সঙ্গমযুগ হলই সন্তুষ্ট থাকা
আর সন্তুষ্ট বানানোর যুগ। ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্বই হল সন্তুষ্টতা । সন্তুষ্টতাই
হল অত্যন্ত বড় ঐশ্বর্য। সন্তুষ্টতাই হল ব্রাহ্মণ জীবনের পিউরিটির পার্সোনালিটি। এই
পার্সোনালিটির দ্বারা সহজেই বিশেষ আত্মা হয়ে ওঠে । সন্তুষ্টতার পার্সোনালিটি নেই
তো বিশেষ আত্মা বলা যাবে না। আজকাল দুই প্রকারের পার্সোনালিটির কথা প্রসিদ্ধ রয়েছে
- এক শারীরিক পার্সোনালিটি, দ্বিতীয় হল পজিশনের পার্সোনালিটি। ব্রাহ্মণ জীবনে যে
ব্রাহ্মণ আত্মার মধ্যে সন্তুষ্টতার মহানতা রয়েছে - তাদের অভিব্যক্তিতে, তাদের
চেহারাতেও সন্তুষ্টতার পার্সোনালিটি দেখতে পাওয়া যায় আর শ্রেষ্ঠ স্থিতির পজিশনের
পার্সোনালিটি দেখতে পাওয়া যায়। সন্তুষ্টতার আধার হল বাবার দ্বারা সর্ব প্রাপ্ত
হওয়া প্রাপ্তি গুলির সন্তুষ্টতা অর্থাৎ ভরপুর আত্মা। অসন্তুষ্টতার কারণ হল অপ্রাপ্তি।
সন্তুষ্টতার কারণ হল সর্ব প্রাপ্তি। সেইজন্য বাপদাদা তোমাদের অর্থাৎ সকল ব্রাহ্মণ
বাচ্চাদেরকে ব্রাহ্মণ জন্ম হওয়ার সাথে সাথেই সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার দিয়ে দিয়েছেন
নাকি একে অল্প ওকে অল্প কিছুটা দিয়েছেন ? বাপদাদা সর্বদা সব বাচ্চাদেরকে এটাই বলেন
যে, বাবা আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করতে হবে। বর্সা (ঐশ্বর্য) হল সর্ব প্রাপ্তি । এতে
সর্ব শক্তি গুলিও এসে যায়, গুণও এসে যায়, জ্ঞানও এসে যায় । সর্ব শক্তি, সর্ব গুণ
আর সম্পূর্ণ জ্ঞান । কেবল জ্ঞান নয়, সম্পূর্ণ জ্ঞান। কেবল শক্তি গুলি আর গুণ নয়,
বরং সর্ব গুণ আর সর্বশক্তি। তো উত্তরাধিকার সর্ব অর্থাৎ সম্পন্নতার । কোনোটা কম
থাকবে না। প্রত্যেক ব্রাহ্মণ বাচ্চার সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, অসম্পূর্ণ
নয়। সর্ব গুণের মধ্যে দুটো গুণ তোমাকে, দুটো গুণ ওকে এই রকম ভাবে বন্টন করেননি।
ফুল উত্তরাধিকার অর্থাৎ সম্পন্নতা, সম্পূর্ণতা। যখন প্রত্যেকের সম্পূর্ণ
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, তাহলে যেখানে সর্ব প্রাপ্তি রয়েছে সেখানে সন্তুষ্টতা
থাকবে। বাপদাদা সকল ব্রাহ্মণদের সন্তুষ্টতার পার্সোনালিটিকে দেখছিলেন যে, কতদূর
পর্যন্ত এই পার্সোনালিটি এসেছে। ব্রাহ্মণ জীবনে অসন্তুষ্টতার নাম নিশান নেই।
ব্রাহ্মণ জীবনে যে মজা রয়েছে, তা হল এই পার্সোনালিটির। যদি মজা অর্থাৎ আনন্দময়
জীবন হয়, তবে তা হল আনন্দ উপভোগের (মৌজের) জীবন।
তপস্যার অর্থই হল সন্তুষ্টতার পার্সোনালিটি নয়নে, চেহারাতে, আচরণে দেখতে পাওয়া
যাবে। এই রকম সন্তুষ্টমণিদের মালা বানানো হচ্ছিল। কতখানি মালা বানানো হয়ে থাকবে ?
সন্তুষ্টমণি অর্থাৎ বেদাগ মণি। সন্তুষ্টতার লক্ষণ হল - সন্তুষ্ট আত্মা সর্বদা
নিজেকেও প্রসন্নচিত্ত অনুভব করবে আর অন্যরাও প্রসন্ন হবে। প্রসন্নচিত্ত স্থিতিতে
প্রশ্ন চিত্ত থাকে না। এক হল প্রসন্নচিত্ত, দ্বিতীয় হল প্রশ্নচিত্ত। প্রশ্ন অর্থাৎ
কোশ্চেন। প্রসন্নচিত্ত ড্রামার নলেজফুল হওয়ার কারণে প্রসন্ন থাকে, প্রশ্ন করে না।
যা কিছু নিজের বিষয়েই হোক কিম্বা অন্যের বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে, তার উত্তর আগেই নিজের
মনেই এসে যায়। আগেও বলেছি যে, হোয়াট (কি) আর হোয়াই (কেন) নয়, তার বদলে ডট। কি
বা কেন নয়, ফুলস্টপ বিন্দু। এক সেকেন্ডে বিস্তার, এক সেকেন্ডে সার। এই রূপ
প্রসন্নচিত্ত সদা নিশ্চিন্ত থাকে। তাহলে চেক করো - এই ধরনের লক্ষণ গুলি আমি
সন্তুষ্টমণির মধ্যে রয়েছে ? বাপদাদা তো প্রত্যেককে টাইটেল দিয়েছেন - সন্তুষ্টমণির।
সেই কারণে বাপদাদা জিজ্ঞাসা করছেন যে হে সন্তুষ্টমণিরা, তোমরা সন্তুষ্ট তো ? তারপর
প্রশ্ন হল - নিজের প্রতি অর্থাৎ নিজের পুরুষার্থে, নিজের সংস্কার পরিবর্তনের
পুরুষার্থতে, নিজের পুরুষার্থের পার্সেন্টেজে, স্টেজে সদা সন্তুষ্ট তোমরা ? এরপর
দ্বিতীয় প্রশ্ন - নিজের মন, বাণী আর কর্ম অর্থাৎ সম্বন্ধ - সম্পর্কের দ্বারা সেবাতে
সদা সন্তুষ্ট ? তিনটি সেবাতেই, কেবল একটাতে নয়। তিনটি সেবাতে আর সদা সন্তুষ্ট তোমরা
? চিন্তা করছো ? নিজেকে দেখছো যে, কতখানি সন্তুষ্ট ? আচ্ছা তৃতীয় প্রশ্ন - সকল
আত্মাদের সম্বন্ধ - সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিজের দ্বারা বা সকল আত্মাদের দ্বারা
সন্তুষ্ট ? কেননা তপস্যা বর্ষে তপস্যার, সফলতার এই ফলই প্রাপ্ত করতে হবে । নিজের
প্রতি, সেবার প্রতি এবং সকলের প্রতি সন্তুষ্টতা। চার ঘন্টা তো যোগ করেছ - খুব ভালো
এবং চার ঘন্টাটা ৮ ঘন্টাতেও পৌঁছে যাবে। এও খুব ভালো। যোগের সিদ্ধি স্বরূপ তোমরা ।
যোগ হল বিধি। কিন্তু এই বিধির দ্বারা কী পেয়েছ ? যোগ লাগানো এটাই হল বিধি, যোগের
প্রাপ্তি এটাই হল সিদ্ধি । তো ৮ ঘন্টার যেমন লক্ষ্য রেখেছ, তো কমপক্ষে এই তিন
প্রকারের সন্তুষ্টতার সিদ্ধির স্পষ্ট শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য রাখো। অনেক বাচ্চারা নিজেকে সব
জানি সব বুঝি মনে করে নিজেকে সন্তুষ্ট মনে করে। এই রকম সন্তুষ্ট হয়ো না। এক হল মন
থেকে মানা, আরেক হল বুদ্ধি দিয়ে মানা। বুদ্ধি মনে করে আমি তো সন্তুষ্টই, কীসের পরোয়া।
আমরা তো বেপরোয়া। বুদ্ধি মনে করে আমি তো সন্তুষ্ট - এই রকম সন্তুষ্টতা নয়, যথার্থ
ভাবে বুঝতে হবে। সন্তুষ্টতার লক্ষণ গুলি নিজের মধ্যে অনুভূত হবে। চিত্ত সদা প্রসন্ন
থাকবে, পার্সোনালিটি থাকবে। নিজেকে ব্যক্তিত্বের অধিকারী মনে করছে, অথচ অন্যরা করছে
না, একে বলা হয় - নিজের বড়াই করা। এই রকম সন্তুষ্ট নয়। কিন্তু যথার্থ অনুভবের
দ্বারা সন্তুষ্ট আত্মা হও। সন্তুষ্টতা অর্থাৎ মন (হৃদয়) এবং বুদ্ধি সদা আরামে থাকবে।
সুখ আর স্বস্তির স্থিতিতে থাকবে। অস্থির হবে না। সুখ আর স্বস্তি থাকবে। এই রকম
সন্তুষ্টমণিরা সদা বাবার ললাটে মস্তকমণির মতো জ্বলজ্বল করবে। অতএব নিজেকে চেক করো।
সন্তুষ্টতা বাবার এবং সকলের আশীর্বাদ প্রাপ্ত করায়। সন্তুষ্ট আত্মা সময়ে সময়ে সদা
নিজেকে বাবা আর সকলের আশীর্বাদের বিমানে উড়তে থাকা অনুভব করবে। এই আশীর্বাদই হল
তোমাদের বিমান। সদা নিজেকে অনুভব করবে যেন বিমানে উড়ছি। আশীর্বাদ চাইবে না, কিন্তু
নিজে থেকেই তার কাছে আশীর্বাদ আসতে থাকবে। এই রকম সন্তুষ্টমণি অর্থাৎ সিদ্ধি স্বরূপ
তপস্বী। অল্পকালের সিদ্ধি নয়, এ হল অবিনাশী এবং রুহানী সিদ্ধি। এই রকম
সন্তুষ্টমণিদেরকে দেখছিলেন । প্রত্যেকে নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করো - আমি কে ?
তপস্যা বর্ষের উৎসাহ উদ্দীপনাও খুব ভালো। প্রত্যেকে যথা শক্তি করছেও। আরও করবার
জন্যও উৎসাহ আছে। এই উৎসাহ খুব ভালো। এখন তপস্যার দ্বারা প্রাপ্তি গুলিকে স্বয়ং
নিজের জীবনে আর সকলের সম্বন্ধ-সম্পর্কে প্রত্যক্ষ করো। নিজের মধ্যে নিজে অনুভব করো
কিন্তু অনুভবকে কেবল মন-বুদ্ধির দ্বারা অনুভব করেছো, শুধু এই পর্যন্ত রেখো না।
তাদের আচরণ আর চেহারাতে নিয়ে এসো, সম্বন্ধ-সম্পর্ক পর্যন্ত নিয়ে এসো। তখন প্রথমে
নিজের মধ্যে প্রত্যক্ষ হবে, তারপর সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ হবে, তবেই বিশ্বের স্টেজে
প্রত্যক্ষ হবে। তখন প্রত্যক্ষতার নাগাড়া বাজবে। যেমন তোমাদের স্মরণিক শাস্ত্রে বলা
হয়েছে - শংকর তৃতীয় নেত্র খোলে আর বিনাশ হয়ে গেল। তো শংকর অর্থাৎ অশরীরী তপস্বী
রূপ। বিকার রূপী সাপকে গলার হার বানিয়ে দেয়। সর্বদা উচ্চ স্থিতি আর উচ্চ আসনধারী।
এই তৃতীয় নেত্র অর্থাৎ সম্পূর্ণতার নেত্র, সম্পন্নতার নেত্র। যখন তোমরা তপস্বীরা
সম্পন্ন, সম্পূৰ্ণ স্থিতির দ্বারা বিশ্ব পরিবর্তনের সংকল্প করবে, তখন এই প্রকৃতিও
সম্পূর্ণ উথাল-পাতাল হওয়ার ডান্স করবে। উপদ্রব শুরু করে দেওয়ার ডান্স করবে। তোমরা
অচল থাকবে আর অন্যরা অস্থির হবে, কেননা এত বিরাট বিশ্বের সাফাই কারা করবে ?
মনুষ্যাত্মারা করতে পারবে ? এই বায়ু, ধরিত্রী, সমুদ্র, জল - এদের উথাল পাতাল অবস্থা
সাফাই করবে। তো এই রূপ সম্পূর্ণতার স্থিতি এই তপস্যার দ্বারা তৈরী করতে হবে।
প্রকৃতিও তোমাদের সংকল্পের দ্বারা অর্ডার তখনই মানবে যখন আগে তোমাদের নিজের সব
সময়ের সহযোগী কর্মেন্দ্রিয় গুলি মন - বুদ্ধি - সংস্কার অর্ডার মানবে। তোমাদের সব
সময়ের সহযোগী যদি অর্ডার না মানে, তবে প্রকৃতি কেন অর্ডার মানবে ? তপস্যার উঁচু
স্থিতি যাতে এতখানি পাওয়ারফুল হয় যাতে সকলের একটিই সংকল্প, একই সময়ে উৎপন্ন হবে।
এক সেকেন্ডের সংকল্প হবে - "পরিবর্তন", আর প্রকৃতি হাজির হয়ে যাবে। যেমন বিশ্বের
ব্রাহ্মণ আত্মাদের একই সময়ে ওয়ার্ল্ড পীসের যোগ হয়ে থাকে না ? তো সকলকে একই সময়
আর একই সংকল্প স্মরণিক হয়ে রয়ে যায়। এই রকম সকলের এক সংকল্পের দ্বারা প্রকৃতি
উথাল পাতাল হওয়ার ডান্স শুরু করে দেবে, সেইজন্য বলাই হয় - স্ব পরিবর্তনের দ্বারা
বিশ্ব পরিবর্তন। এই পুরানো দুনিয়ার থেকে নতুন দুনিয়াতে পরিবর্তন কীভাবে হবে ?
তোমাদের সকলের শক্তিশালী সংকল্পের দ্বারা সংগঠিত রূপের দ্বারা সকলের এক সংকল্প
উৎপন্ন হবে। বুঝতে পেরেছ কী করতে হবে ? তপস্যা একেই বলা হয় । আচ্ছা ।
বাপদাদা ডবল বিদেশি বাচ্চাদেরকে দেখে সদা প্রফুল্লিত থাকেন। এমন নয় যে
ভারতবাসীদেরকে দেখে হর্ষিত হন না। এখন হল ডবল বিদেশিদের টার্ণ, সেইজন্য বললেন।
ভারতের উপরে তো বাবা সদা প্রসন্ন । তবেই তো ভারতে আসেন ? আর তোমাদের সকলকেও ভারতবাসী
বানিয়ে দিয়েছে । এই সময় তোমরা সবাই বিদেশি নাকি ভারতবাসী ? ভারতবাসীর মধ্যেও
মধুবনবাসী। মধুবনবাসী হতে ভালো লাগে। এখন অতি দ্রুততার সাথে সেবা সম্পূর্ণ করো, তবে
মধুবনবাসী হয়েই যাবে । সমগ্র বিদেশে দ্রুততার সাথে ঈশ্বরীয় বার্তা দেওয়ার সেবা
সমাপ্ত করো। তারপর এখানে এলে আর ওদেশে পাঠাব না। ততক্ষণ পর্যন্ত স্থানও তৈরী হয়ে
যাবে । দেখো অনেক বিশাল বিশাল জমি পড়ে রয়েছে (পীস পার্ক), সেখানে আগে থেকেই
ব্যবস্থাদি করা হয়ে গেলে তোমাদের তখন আর কোনো অসুবিধা হবে না। কিন্তু যখন এই রকম
সময় আসবে সেই সময় নিজের অ্যাটাচিতেও মাথা রেখে হয়ত শুয়ে পড়বে। বিছানার দরকার
হবে না। সেই সময়ই অন্য রকম হবে। এই সময় হল আরেক রকম। এখন তো সেবার একই সময়ে, মন
- বাণী - কর্ম একত্রে সংকল্প হবে, তখনই হবে সেবার গতি তীব্র । মনসার দ্বারা
পাওয়ারফুল, বাণীর দ্বারা নলেজফুল, সম্বন্ধ-সম্পর্ক অর্থাৎ কর্মের দ্বারা লভফুল। এই
তিন অনুভূতিই যেন একই সময়ে একসাথে হয়। একেই বলা হয় তীব্র গতির সেবা।
আচ্ছা শরীর তো ঠিক আছে, মন ঠিক আছে তো ? তবুও দূর দূরান্ত থেকে আসে, তাই বাপদাদাও
দূর থেকে আগত বাচ্চাদের খুশী দেখে খুশী হন। তবুও এত এত দূর থেকে যারা এসেছো, খুব
ভালো। কেননা বিমানে এসেছো। যারা এই কল্পে প্রথম বার এসেছো, তাদেরকে বাপদাদা বিশেষ
স্মরণের স্নেহ-সুমন দিচ্ছেন। তবুও তোমরা অনেক সাহস রেখেছো। এখান থেকে যাওয়ার সাথে
সাথেই আবার আসার জন্য টাকা জোগাড় করতে শুরু করে দেয়। এও স্মরণেরই একটি বিধি যে -
যেতে হবে, যেতে হবে, যেতে হবে...। এখানে যখন আসো মনে করো যে বিদেশ যেতে হবে। আবার
যাওয়ার সাথে সাথেই আসার কথা ভাবতে শুরু করে দাও। এই রকম টাইমও অবশ্যই আসবে যখন
গভর্নমেন্টও মনে করবে যে আবুর শোভা তো হল এই ব্রাহ্মণেরাই। আচ্ছা।
চতুর্দিকের সকল মহান সন্তুষ্ট আত্মাদেরকে, সদা প্রসন্নচিত্ত নিশ্চিন্ত থাকা শ্রেষ্ঠ
আত্মাদেরকে সদা একই সময়ে তিন সেবা করতে থাকা তীব্র গতির সেবাধারী আত্মাদেরকে, সদা
শ্রেষ্ঠ স্থিতির আসনধারী তপস্বী আত্মাদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার
।
পার্টিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎ - সকলে নিজেকে হোলিহংস মনে করো ?
হোলিহংসের বিশেষ কর্ম কী ? ( প্রত্যেকে বললেন) যে বিশেষত্ব গুলি তোমরা বললে সে'গুলো
প্র্যাকটিক্যাল কর্মে আসে ? কেননা তোমরা ব্রাহ্মণরা ছাড়া হোলিহংস আর কে হতে পারে ?
সেইজন্য গর্বের সাথে বলো। যেমন বাবা হলেন সর্বদাই পিওর, সর্বদা সর্ব শক্তিকে কর্মে
নিয়ে আসেন, ঠিক সেই রকমই তোমরা হোলিহংসরাও সর্ব শক্তিকে প্র্যাকটিক্যালে নিয়ে এসে
থাকো আর সদা পবিত্র তোমরা। ছিলে আর সর্বদা থাকবে। তিনটি কাল স্মরণে আছে তো ? বাপদাদা
বাচ্চাদের অনেক বার প্লে করা পার্ট দেখে প্রফুল্লিত হন, সেইজন্য কঠিন বলে অনুভূত হয়
না। মাস্টার সর্বশক্তিবানের কাছে মুশকিল শব্দটি স্বপ্নেও আসতে পারে না। ব্রাহ্মণদের
ডিক্শনারীতে মুশকিল শব্দটি আছে ? ছোট অক্ষরের মধ্যে কোথাও মিশে নেই তো ? মায়ার
বিষয়েও তোমরা নলেজফুল হয়ে গেছো, তাই না ? যেখানে ফুল আছে সেখানে কখনো ফেল হতে পারে
না। ফেল কী কারণে হয় ? জানা সত্ত্বেও কী কারণে ফেল হয়ে যাও ? জানা সত্ত্বেও কেউ
যদি ফেল হয়ে যায়, তবে তাকে কী বলবে ? কোনো কিছু ঘটলে ফেল হয়ে যাওয়ার কারণ হল
কোনো না কোনো বিষয়কে ফিল করে নাও। ফিলিং ফ্লু হয়ে যায়। আর ফ্লু কী করে জানো ?
দুর্বল করে দেয়। তার ফলে ছোট্ট একটা কথা, কিন্তু সেটা বিরাট বড় হয়ে যায়। তাই
এখন ফুল হও। ফেল হয়ো না, পাশ হতে হবে। যা কিছুই ঘটে থাকুক পাস করে যেতে থাকো, তবেই
পাশ উইথ অনার হয়ে যাবে । তো পাস করতে হবে, পাশ হতে হবে আর পাশে থাকতে হবে। যখন
নেশার সাথে বলো যে বাপদাদার সাথে আমার যতখানি ভালোবাসা ততখানি আর কারোর সাথেই নেই।
তাহলে যখন ভালবাসা আছে তবে পাশে থাকতে চাও নাকি দূরে থাকতে চাও ? তাহলে পাশে থাকতে
হবে আর পাশ হতে হবে। ইউ. কে.-র যারা, তোমরা তো বাপদাদার আশা পূর্ণ করবে, তাই না ?
সবথেকে নম্বর ওয়ান বাবার শুভ আশা কোনটি ? বিশেষ করে ইউ. কে. 'র যারা তাদের জন্য
বলছি। বড় বড় মাইক (নামকরা ব্যক্তি) নিয়ে আসতে হবে। যারা বাবাকে প্রত্যক্ষ করার
জন্য নিমিত্ত হবে আর বাবার নিকটে আসবে। এখন ইউ. কে.-তে, আমেরিকাতে, বিদেশের
অন্যান্য দেশে মাইক বেরিয়ে এসেছে ঠিকই, কিন্তু এক হল সহযোগী আর দ্বিতীয় হল সহযোগী
আর সমীপও। তো এই রকম মাইক প্রস্তুত করো। এমনিতে তো সেবার ভালোই বৃদ্ধি হচ্ছে, হতেও
থাকবে। আচ্ছা, রাশিয়ার যারা, ছোট বাচ্চা তারা, কিন্তু লাকী তারা। বাবার সাথে
তোমাদের কতো ভালোবাসা। খুব ভালো বাপদাদাও বাচ্চাদের সাহস দেখে খুশী হচ্ছেন। সব
পরিশ্রম এখন ভুলে গেছো তাই না ? আচ্ছা ।
বরদান:-
প্রতিটি সংকল্প, বোল আর কর্মের দ্বারা পুণ্য কর্ম করে
আশীর্বাদের অধিকারী ভব
নিজেকে নিজে এই দৃঢ় সংকল্প করো যে, সারাদিনে
সংকল্পের দ্বারা, বাণীর দ্বারা, কর্মের দ্বারা পুণ্য আত্মা হয়ে পুণ্যই করবো।
পুণ্যের প্রত্যক্ষ ফল হল সকল আত্মাদের আশীর্বাদ। তো প্রতিটি সংকল্পে, বাণীতে
আশীর্বাদ জমা হোক। সম্বন্ধ-সম্পর্কের দিক থেকে অন্তর থেকে যেন ধন্যবাদ বেরিয়ে আসে।
এই রকম আশীর্বাদের অধিকারীই বিশ্ব পরিবর্তনের নিমিত্ত হয়। তাদেরই প্রাইজ মেলে।
স্লোগান:-
সদা এক বাবার কম্প্যানিতে থাকো আর বাবাকে নিজের
কম্প্যানিয়ন বানাও - এটাই হল শ্রেষ্ঠত্ব ।