05-11-2023 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
10-03-96 মধুবন
"করনহার এবং 'করাবনহার' এর স্মৃতির দ্বারা কর্মাতীত
স্থিতির অনুভব"
আজ কল্যাণকারী বাবা নিজের সাথী কল্যাণকারী বাচ্চাদের দেখছেন। সব বাচ্চা খুবই
একাগ্রতার সাথে, ভালোবাসার সাথে বিশ্ব কল্যাণের কার্যে নিয়োজিত রয়েছে। এমন সাথীদের
দেখে বাপদাদা সদা বাঃ সাথী বাচ্চারা বাঃ! এই গীত গাইতে থাকেন। তোমরাও সবাই বাঃ বাঃ
এর গীত গেয়ে থাকো, তাই না? আজ বাপদাদা চতুর্দিকের সেবার গতি দেখলেন। সেইসঙ্গে
স্ব-পুরুষার্থেরও গতি দেখেছেন। তাহলে, সেবা আর স্ব-পুরুষার্থ দুইয়ের গতিতে তিনি কী
দেখে থাকবেন? জানো তোমরা? সেবার গতি তীব্র নাকি স্ব-পুরুষার্থের গতি তীব্র? কোনটা?
দুইয়ের ব্যালেন্স আছে? নেই? তাহলে, বিশ্ব পরিবর্তনের আত্মারা এবং প্রকৃতি ব্লেসিং
কবে পাবে? কেননা, ব্যালেন্সের দ্বারা তোমাদের সকলের যে ব্লেসিং প্রাপ্ত হয়ে থাকে
তা' অন্যদের প্রাপ্ত হবে। সুতরাং প্রভেদ কেন? তোমাদের কী বলা হয়ে থাকে - কর্মযোগী,
নাকি শুধু যোগী? কর্মযোগী তো না! এটা নিশ্চিত, তাই না? তাহলে, সেবাও তো কর্ম! তোমরা
যখন কর্ম করো, বলো কিংবা দৃষ্টি দাও, কোর্স করাও, মিউজিয়াম এর ব্যাপারে বোঝাও, সেই
সব শ্রেষ্ঠ কর্ম অর্থাৎ সেবা। সুতরাং কর্মযোগী অর্থাৎ কর্মের সময়ও যোগের ব্যালেন্স।
কিন্তু তোমরা নিজেরাই বলছ যে ব্যালেন্স কম হয়ে যায়। এর কারণ কী? খুব ভালো ভাবেই
তোমরা জানো, নতুন বিষয় নয়। খুব পুরানো বিষয়। বাপদাদা দেখেছেন যে, সেবা এবং কর্ম ও
স্ব-পুরুষার্থ অর্থাৎ যোগযুক্ত। তো দুইয়ের ব্যালেন্স রাখার জন্য একটাই বিশেষ শব্দ
স্মরণে রাখো - সেটা কোনটা? বাবা 'করাবনহার' (করানোর মালিক) আর আমি আত্মা (আমি অমুক
নই), আত্মা 'করনহার'। তো 'করন-করাবনহার', এই এক শব্দ তোমাদের ব্যালেন্স খুব সহজ করে
দেবে। স্ব-পুরুষার্থের ব্যালেন্স কিংবা গতি কখনো যে কম হয়, তার কারণ কী? করনহারের
পরিবর্তে নিজেকে 'করাবনহার' মনে করে নাও। আমি করছি, যে মায়াই হোক যে রকমেই আসে তার
গেট কোনটা? মায়ার সবচাইতে ভালো আর সহজ গেট তো জানোই তোমরা - 'আমি'। তো এই গেট এখনো
সম্পূর্ণ বন্ধ করনি তোমরা। এমনভাবে বন্ধ করো যা মায়া সহজেই খুলে নেয় আর এসে যায়। যদি
'করনহার' হই তবে যিনি করানোর তিনি অবশ্যই স্মরণ থাকবেন। করছি, কিন্তু বাবা করাচ্ছেন
যিনি করানোর মালিক।
'করাবনহার' ব্যতীত 'করনহার' হতে পারো না। ডবল রূপে 'করাবনহারের' স্মৃতি থাকা উচিত।
এক তো বাবা 'করাবনহার' আর দ্বিতীয়তঃ, আমি আত্মাও এই সকল কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা কর্ম
করিয়ে থাকি। এতে কী হবে, কর্ম করলেও কর্মের ভালো বা মন্দের প্রভাবে প্রভাবিত হবে
না। একেই বলে - কর্মাতীত অবস্থা।
তোমাদের সকলের লক্ষ্য কী? কর্মাতীত হতে চাও তো না! নাকি অল্প অল্প কর্মবন্ধন যদি
থাকে তো কোনো ক্ষতি নেই! থাকা উচিত কি উচিত না? কর্মাতীত হতে চাও? বাবার প্রতি
ভালোবাসার লক্ষণ হলো - কর্মাতীত হওয়া। সুতরাং 'করাবনহার' হয়ে কর্ম করো, করাও,
কর্মেন্দ্রিয়সমূহ তোমাদের দিয়ে যেন না করায়, বরং তোমরা কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা করাও।
একদম নিজেকে স্বতন্ত্র মনে করে কর্ম করিও - এই কন্সাসনেস যেন ইমার্জ রূপে থাকে।
মর্জ রূপে নয়। মর্জ রূপে কখনো 'করাবনহার'-এর পরিবর্তে সমস্ত কর্মেন্দ্রিয়ের অর্থাৎ
মনের, বুদ্ধির, সংস্কারের বশ হয়ে যাও তোমরা। কারণ? আমি 'করাবনহার' আত্মা, আমি মালিক,
বিশেষ আত্মা, মাস্টার সর্বশক্তিমান আত্মা, এই স্মৃতি মালিকভাবের পুনরুদ্রেক করে।
নয়তো, কখনো মন তোমাদের চালনা করে আর কখনো তোমরা মনকে চালনা করো। সেইজন্য মন্মনাভব-র
স্থিতি সদা ন্যাচারাল থাকে না। সম্পূর্ণভাবে আমি আলাদা, আর শুধু আলাদা নই বরং আমি
মালিক, বাবাকে যখন স্মরণ করি তখন আমি বালক, আর আমি আত্মা যখন করাই তখন আমি মালিক।
এখন এই অভ্যাসে অ্যাটেনশন কম। সেবাতে তোমরা খুব ভালো ভাবে নিয়োজিত রয়েছ, কিন্তু
তোমাদের লক্ষ্য কী? সেবাধারী হওয়ার নাকি কর্মাতীত হওয়ার? নাকি দুটোই একসাথে হবে? এই
অভ্যাস পাকা হয়েছে? এখনই এখনই অল্প সময়ের জন্য এই অভ্যাস করতে পারবে? পৃথক হতে পারবে?
নাকি এমন অ্যাটাচড্ হয়ে গেছ যে ডিট্যাচ হওয়ার জন্য সময় চাই। কত সময়ে পৃথক হতে পারবে?
৫ মিনিট চাই, এক মিনিট চাই নাকি এক সেকেন্ড চাই? এক সেকেন্ডে হতে পারবে?
পাণ্ডব এক সেকেন্ডে সম্পূর্ণ আলাদা হতে পারবে? আত্মা মালিক আলাদা আর সমস্ত
কর্মেন্দ্রিয়-কর্মচারী
আলাদা, এই অভ্যাস যখনই চাইবে তখনই হওয়া উচিত। আচ্ছা, এখনই এই মুহূর্তে এক সেকেন্ডের
মধ্যে স্বতন্ত্র এবং বাবার প্রিয় হয়ে যাও। পাওয়ারফুল অভ্যাস করো শুধু - আমি
স্বতন্ত্রই। এই সমূহ কর্মেন্দ্রিয় আমার সাথী, কর্মের সাথী কিন্তু আমি স্বতন্ত্র
হয়েও প্রিয়। এখন এক সেকেন্ডে আবার অভ্যাস করো। (ড্রিল) সহজ লাগে নাকি কঠিন? যদি সহজ
হয় তো সারাদিনে কর্মের সময় এই স্মৃতি ইমার্জ করো, তবেই সহজভাবে কর্মাতীত স্থিতির
অনুভব করতে পারবে। কেননা, সেবা অথবা কর্ম ছাড়তে পারো কী? ছাড়বে কী? করতেই হবে।
তপস্যায় বসা এও তো কর্ম। সুতরাং কর্ম ব্যতীত অথবা সেবা ব্যতীত তোমরা থাকতে পারো না।
আর থাকতেও হবে না। কারণ সময় কম আর সেবা এখনও অনেক আছে। সেবার রূপরেখা পরিবর্তিত
হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো কোনো আত্মার অনুযোগ থেকে গেছে। সেইজন্য সেবা আর
স্ব-পুরুষার্থ উভয়তঃ ব্যালেন্স রাখো। এমন নয় যে, সেবাতে বিজি ছিলাম তো না সেইজন্য
স্ব-পুরুষার্থ কম হয়ে গেছে। না। সেবাতে আরোই স্ব-পুরুষার্থের অ্যাটেনশন বেশি
প্রয়োজন। কেননা, সেবাতে বহু রকমে মায়ার আসার মার্জিন থেকে যায়। নামে সেবা কিন্তু
থাকে স্বার্থ। নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে কিন্তু এগিয়ে যেতে গিয়ে ব্যালেন্স
ভুলো না। কারণ সেবাতেই স্বভাব, সম্বন্ধের বিস্তার হয় এবং মায়া চান্সও নেয়। সামান্য
একটু ব্যালেন্স কম হলো আর মায়া নতুন নতুন রূপ ধারণ করে নেয়, পুরানো রূপে আসবে না।
নতুন নতুন রূপে, নতুন নতুন পরিস্থিতির রূপে, সম্পর্কের রূপে আসে। সুতরাং, সেবা
ছাড়িয়ে বাপদাদা যদি আলাদাভাবে বসিয়ে দেন, এক মাস বসান কি ১৫ দিন বসান তবে কী
কর্মাতীত হয়ে যাবে? এক মাস দিলেন যে কিছু ক'রো না, শুধু বসে থাকো, তপস্যা করো,
খাবারও শুধু একবার বানাও। তখন কী কর্মাতীত হয়ে যাবে? হবে না?
যদি ব্যালেন্সের অভ্যাস না থাকে তবে যতই করো এক মাস কি ! দু'মাসও যদি বসে যাও তবুও
মন বসবে না, তন বসে যাবে। কিন্তু বসাতে হবে মনকে, না শুধু তনকে। তনের সাথে মনকে
বসাতে হবে, ব্যস্ বসে যাবে - বাবা আর আমি দ্বিতীয় আর কেউ নয়। তো এক মাস এই রকম
তপস্যা করতে পারো, নাকি সেবা মনে আসবে? বাপদাদা বা ড্রামা দেখাতেই থাকে যে, দিন-দিন
সেবা বর্ধিত হওয়ারই আছে, তাহলে বসে যাবে কীভাবে? যে সেবা এক বছর আগে ছিল আর এই বছর
যে সেবা করেছ তা' বেড়েছে নাকি কম হয়ে গেছে? বেড়ে গেছে, গেছে তো না! না চাইতেও সেবার
বন্ধনে বাঁধা হয়ে আছ, কিন্তু ব্যালেন্স দ্বারা সেবার বন্ধন, বন্ধন নয় সম্বন্ধ হবে।
যেমন, লৌকিক সম্বন্ধে তোমরা মনে করো, এক কর্মবন্ধন, আরেক হলো সেবার সম্বন্ধ। তাহলে
বন্ধনের অনুভব হবে না, সেবার সুইট সম্বন্ধ থাকবে। তবে কী অ্যাটেনশন দেবে? সেবা আর
স্ব-পুরুষার্থের ব্যালেন্স। সেবাতে সীমা পার করে যেয়ো না। শুধু আমাকেই করতে হবে,
আমিই করতে পারি, না। যিনি করানোর তিনি করাচ্ছেন, আমি নিমিত্ত 'করনহার'। তাহলে,
দায়িত্ব থাকলেও ক্লান্তি কম হবে। অনেক বাচ্চা বলে থাকে - অনেক সেবা করেছি তো না,
সেইজন্য ক্লান্ত হয়ে গেছি, মাথা ভারী হয়ে গেছে। তো মাথা ভারী হবে না। বরং 'করাবনহার'
বাবা আরোই খুব ভালো মাসাজ করবেন। আর মাথা আরোই ফ্রেশ হয়ে যাবে। পরিশ্রম হবে না,
এক্সট্রা এনার্জি আসবে। যখন সায়েন্সের ওষুধে শরীরে এনার্জি আসতে পারে, তাহলে কি
বাবার স্মরণে আত্মাতে এনার্জি আসতে পারে না? এছাড়া, আত্মাতে এনার্জি যদি আসে তো
শরীরে তার প্রভাব অটোমেটিক্যালি পড়ে। তোমরা অনুভাবীও, কখনো কখনো তো অনুভব হয়। তারপর
চলতে চলতে লাইন বদল হয়ে যায়। আর তোমরা জানতেও পারো না। যখন উৎসাহ হারিয়ে যায়,
ক্লান্তি বা মাথা ভারী হয়ে যায়, তারপরই বোধ আর বুদ্ধি আসে, কী হয়েছে, কেন হয়েছে!
কিন্তু শুধু একটা শব্দ 'করনহার' ও 'করাবনহার' স্মরণ করো, কঠিন নাকি সহজ? বলো "হাঁ
জী"। আচ্ছা।
এখন ৯ লাখ প্রজা তৈরী করেছো? বিদেশে কতজন হয়েছে? ৯ লাখ হয়েছে? আর ভারতে হয়েছে?
তৈরী হয়নি। তো তোমরাই সমাপ্তির কাঁটা সামনে এগোতে দিচ্ছো না। ব্যালেন্স রাখো।
ডায়মন্ড জুবিলী না? তাহলে খুব সেবা করো, কিন্তু ব্যালেন্স রেখে সেবা করো, তাহলে
দ্রত প্রজা তৈরী হয়ে যাবে। টাইম লাগবে না। প্রকৃতিও এখন খুব ক্লান্ত, আত্মারাও
নিরাশ হয়ে গেছে। আর যখন নিরাশ হয় তখন কাকে স্মরণ করে? ভগবান, বাবাকে স্মরণ করতে
থাকে। কিন্তু সম্পূর্ণ পরিচয় জানা না থাকার কারণে তোমাদেরকে, অর্থাৎ দেবী
দেবতাদেরকে বেশী করে স্মরণ করতে থাকে। তো নিরাশ আত্মাদের ডাক তোমরা শুনতে পাচ্ছো
না? শুনতে পাচ্ছো নাকি নিজের মধ্যেই এখনও ডুবে রয়েছো? মার্সিফুল না তোমরা? বাবাকেও
কি বলা হয়? মার্সিফুল । অন্য সব ধর্মের লোকেরা অবশ্যই মার্সি প্রার্থনা করবে,
সুখের প্রার্থনা নয়, বরং মার্সি সকলের চাই। তাহলে কে সেটা দেবে? তোমরাই তো দেবে
তাই না? নাকি নেবে? নিয়ে তারপর দেবে। দাতার বাচ্চা তো তোমরা! নিজেদের ভাই বোনেদের
উপরে ক্ষমাশীল হও আর ক্ষমাশীল হয়ে সেবা করলে তাতে নিমিত্ত ভাব স্বভাবতঃই থাকবে। যে
যত খারাপই হোক না কেন, কিন্তু তুমি যদি তার প্রতি ক্ষমাশীল হও, তবে তার প্রতি কখনোই
তোমার ঘৃণা কিম্বা ঈর্ষা বা ক্রোধের ভাবনা আসবে না। দয়ার ভাবনা সহজেই নিমিত্ত ভাবকে
ইমার্জ করে দেয় । স্বার্থ কেন্দ্রিক দয়া নয়, সত্যিকারের দয়া। স্বার্থ কেন্দ্রিক
দয়াও হয়ে থাকে। কোনও আত্মার প্রতি যদি মোহ থাকে, আর মনে করছো তার প্রতি দয়া করছো,
সেটা হবে স্বার্থ কেন্দ্রিক দয়া। সত্যিকারের দয়া নয়, সত্যিকারের দয়াতে কোনো মোহ
থাকে না, কোনো জাগতিক ভাব নেই, আত্মা - আত্মার প্রতি দয়া করছে। দেহ অভিমান বা
দেহের কোনো কোনো প্রকারের আকর্ষণের নামটুকুও থাকবে না। কারো আকর্ষণ বডি-তে থাকে
আবার কারো আকর্ষণ গুণের প্রতিও থাকে, বিশেষত্বের প্রতিও থাকে। কিন্তু বিশেষত্ব বা
গুণ প্রদানকারী কে? আত্মা যত বড়ই হোক না কেন কিন্তু সে নিয়ে থাকে বাবার থেকেই (লেবতা
সে) তার নিজের নেই, বাবা দিয়েছেন। তবে তা বাবর থেকেই নেবো না কেন? সেইজন্য বলা হয়
স্বার্থ কেন্দ্রিক দয়া নয়। কোনো কোনো বাচ্চা আবার মেকি ভানও করে, রয়েছে স্বার্থ
কেন্দ্রিক দয়া অথচ মুখে বলবে আমার খুব দয়া হলো। আর কিছু তো না, একটু না হয় দয়াই
করলাম। কিন্তু চেক করো - নিঃস্বার্থ দয়া রয়েছে? নাকি স্বার্থ কেন্দ্রিক দয়া? কোনো
অল্পকালের প্রাপ্তির কারণে দয়া না তো? তারপরে বলবে, খুব ভালো আত্মা, খুবই ভালো,
সেইজন্য একটু...
এতটুকুর জন্যও নয়। কর্মাতীত যদি হতে হয়, তবে এই যে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে,
যেগুলো বডি-কনশাসে নিয়ে যায়। সে খুব ভালো। কিন্তু তাকে ভালো বানিয়েছে কে? তার
ভালোটাকে অবশ্যই ধারণ করো কিন্তু তাতে প্রভাবিত হয়ে যেও না। স্ব কিছুর থেকে পৃথক
আর বাবার প্রিয়। যে বাবার প্রিয় হয়, সে সর্বদা সেফ থাকে। বুঝেছো?
সেবার বৃদ্ধি যদি ঘটাতে চাও, আর বৃদ্ধি তো করতেই হবে, তবেই তো স্থাপনাকেও নিকটে আনতে
পারবে? নাকি না? কে নিকটে আনবে? বাবা আনবেন? তোমরা সকলে আনবে। বাব র সাথী তো তোমর
না? বাবা একাও কিছু করতে পারেন না, বাচ্চাদেরকে ছাড়া। দেখো, বাবাকে যদি কিছু
বোঝাতেও হয়, তবে তার জন্য শরীরের সাহায্য নিতে হয়। শরীরের সাহায্য ছাড়া কথা বলবেন
কীভাবে? যদি পুরানো গাড়িও হয়, সেটাও চলবে, কারণ তার আধার নিতে হবে। আধার ছাড়া কথা
বলতে পারবেন না। ব্রহ্মা বাবার সাহায্য নিয়েছেন না, তবেই তো তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছো।
ব্রহ্মাকুমার বলতে পারছো নিজেদেরকে, শিব কুমার বলো না, কারণ নিরাকার বাবাকে সাকারের
আধার নিতেই হয়। যেমন সাকার ব্রহ্মার আধার নিয়েছেন, এখনও ব্রহ্মার অব্যক্ত ফরিস্তা
রূপের আধার না নিয়ে তোমাদেরকে প্রতিপালন করতে পারেন না। সাকার রূপই নিন কিম্বা
আকার রূপই নিয়ে থাকুন, কিন্তু আত্মার আধার, সাহায্য তো নিতেই হয়েছে। এমনিতে তো তিনি
হলেন অলমাইটি অথরিটি, জাদুকর যদি বিনাশী খেলা সেকেন্ডে দেখাতে পারে, তবে অলমাইটি
অথরিটি যেটাই চান সেটা করতে পারেন না? করতে পারেন? এখনই এখনই বিনাশকে নিয়ে আসতে
পারেন? একা নিয়ে আসতে পারেন? একা নিয়ে আসতে পারেন না। তিনি অলমাইটি অথরিটি হলেও,
তাঁর সাথী অর্থাৎ তোমাদের সাথে সম্বন্ধে বাঁধা রয়েছেন। তাহলে বাবার তোমাদের প্রতি
কতখানি ভালোবাসা রয়েছে! চাইলেই করতে পারেন, কিন্তু করতে পারবেন না। জাদুকাঠি ঘোরাতে
পারেন না কি? কিন্তু বাবা বলেন, রাজ্য অধিকারী কারা হবে? বাবা হবেন কি? তোমরা হবে।
স্থাপনাও করতে পারেন, বিনাশও করতে পারেন, কিন্তু রাজত্ব করবে কারা? তোমাদেরকে ছাড়া
কাজ হবে? সেইজন্য তোমাদের সবাইকে বাবার কর্মাতীত বানাতেই হবে। কর্মাতীত হতেই হবে
নাকি বাবা বলপূর্বক বানাবেন? বাবাকে তো বানাতে হবে আর তোমাদের নিজেদেরকে হতেই হবে।
এটাই হল সুইট ড্রামা। ড্রামা ভালো লাগে তো না? নাকি কখনো কখনো বিরক্ত হয়ে যাও যে
এটা কেন বানানো হয়েছে? এটা বদলানো উচিত - এই রকম ভাবো নাকি? বাবাও বলেন - ড্রামা
আগে থেকেই তৈরী হয়ে রয়েছে, এটাকে বদলানো সম্ভব নয়। রিপিট হবে, কিন্তু বদলাবে না।
বাবা উইল করেছেন, সেইজন্য উইল পাওয়ার আছে। তাহলে কোন্ শব্দটিকে স্মরণে রাখবে? 'করন-করাবনহার'
। পাক্কা ততো? নাকি প্লেনে যেতে যেতে ভুলে যাবে? ভুলও না।
এখন পুনরায় নিজেকে শরীরের বন্ধনের থেকে পৃথক কর্মাতীত স্টেজ, কর্ম করছি, কিন্তু
ডিট্যাচ, দেখছি, কথা বলছি কিন্তু ডিট্যাচ। মালিক আর বাবার দ্বারা নিমিত্ত আত্মা আমি,
এই স্মৃতিতে পুনরায় মন আর বুদ্ধিকে স্থিত করো। (ড্রিল)
আচ্ছা ।
চতুর্দিকের সর্বদা সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনাতে থাকা সেবাধারী আত্মারা, সদা স্ব
পুরুষার্থ আর সেবা দুয়ের ব্যালেন্স রেখে থাকা ব্লিসফুল আত্মারা, সদা নিঃস্বার্থ
ক্ষমাশীল হয়ে সকল প্রতি সত্যিকারের দয়া করে থাকা বিশেষ আত্মাদেরকে, সদা সেকেন্ডে
কর্মবন্ধন বা অনেক প্রকারের রয়্যাল বন্ধনের থেকে নিজেকে মুক্ত করে থাকা তীব্র
পুরুষার্থী আত্মাদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।
বরদান:-
আজ্ঞাকারী হয়ে বাবার সহায়তা বা আশীর্বাদের
অনুভবকারী সফলতার প্রতিমূর্তি ভব
বাবার আজ্ঞা হলো "একমাত্র আমাকে স্মরণ করো। এক বাবাই
হলেন জগৎ সংসার, সেইজন্য হৃদয়ে কেবল বাবা ছাড়া আর কোনো কিছুই যেন সমাহিত না থাকে।
এক মত, এক বল, এক ভরসা... যেখানে সেই এক আছেন, সেখানে সকল কার্যই সফল। তার কাছে যে
কোনো পরিস্থিতিকেমপার করা সহজ। আজ্ঞা পালনকারী বাচ্চাদের, বাবার আশীর্বাদ প্রাপ্ত
হয়, সেইজন্য কঠিন জিনিসও সহজ হয়ে যায়।
স্লোগান:-
নতুন ব্রাহ্মণ জীবনের স্মৃতিতে থাকো তাহলে পুরানো
কোনো সংস্কারই ইমার্জ হতে পারবে না।