06.06.2022
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
জ্ঞানের ফাউন্ডেশন হলো নিশ্চয়, নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে পুরুষার্থ করো, তাহলে লক্ষ্য
পর্যন্ত পৌঁছে যাবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ বিষয়টি
খুবই বোঝার মতো এবং নিশ্চয় করার মতো ?
উত্তরঃ
এখন সকল
আত্মার হিসেব - নিকেশ শোধ হবে । সকলেই মশার মতো নিজের সুইট হোমে যাবে, এরপর নতুন
দুনিয়াতে খুব অল্প আত্মারা আসবে । এই কথা খুবই বোঝার আর নিশ্চয় করার মতো ।
প্রশ্নঃ -
বাবা কোন্
বাচ্চাদের দেখে খুশী হন ?
উত্তরঃ -
যে বাচ্চারা বাবার কাছে সম্পূর্ণ বলিদান যায়, যে মায়ার সামনে নড়ে যায় না, অর্থাৎ
অঙ্গদের মতো অবিচল - অটল থাকে । এমন বাচ্চাদের দেখে বাবাও খুশী হন ।
গীত
:-
ধৈর্য ধর রে
মানব...
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা কি
শুনলো ? এ তো বাবাই বলতে পারেন, তাই না । সন্ন্যাসী - উদাসী কেউই বলতে পারে না ।
পারলৌকিক, অসীম জগতের পিতাই বাচ্চাদের বলেন, কেননা আত্মার মধ্যেই মন - বুদ্ধি আছে।
তিনি আত্মাদের বলেন, এখন ধৈর্য ধরো । বাচ্চারাই জানে, এই অসীম জগতের পিতা সম্পূর্ণ
দুনিয়াকে বলেন - ধৈর্য ধরো । এখন তোমাদের সুখ - শান্তির দিন আসছে । এ তো দুঃখধাম,
এরপর আবার সুখধামকে আসতে হবে । সুখধামের স্থাপনা তো বাবাই করবেন, তাই না । বাবাই
বাচ্চাদের ধৈর্য প্রদান করেন । প্রথমে তো নিশ্চয় চাই, তাই না । এই নিশ্চয় হয়
ব্রহ্মা মুখ বংশাবলী ব্রাহ্মণদের । না হলে এতো ব্রাহ্মণ কোথা থেকে আসবে ? বি.কের
অর্থই হলো বাচ্চারা । এতো সব বাচ্চাদের বি.কে বলা হয়, তাহলে অবশ্যই প্রজাপিতা
ব্রহ্মা থাকবেন, তাই না ! এতো সকলেরই একই মাতা-পিতা, আর সকলের তো আলাদা আলাদা
মাতা-পিতা হয় । এখানে তোমাদের সকলেরই একই মাতা-পিতা । এ নতুন কথা, তাই না । তোমরা
ব্রাহ্মণ ছিলে না, এখন হয়েছো । এই ব্রাহ্মণরা হলো কুখ বংশাবলী, তোমরা হলে মুখ
বংশাবলী । প্রতিটি কথায় তো প্রথমে নিশ্চয় চাই যে, কে আমাদের বোঝাচ্ছেন । ভগবানই
বোঝান যে, এখন হলো কলিযুগের অন্ত, লড়াই সামনে উপস্থিত । ইউরোপবাসী যাদবরাও আছে যারা
বোম্বস ইত্যাদির আবিস্কার করেছে । এমন গায়ন আছে যে, পেট থেকে মুষল বেরিয়েছিলো, যাতে
নিজের কুলেরই বিনাশ করেছিলো । বরাবর কুলের বিনাশ তো অবশ্যই করবে । একই কুলেরই তো হলো
। একে অপরকে বলতে থাকে, আমরা বিনাশ করবো । এও বরাবর লেখাই আছে । বাবা এখন তাই
বোঝাচ্ছেন, বাচ্চারা ধৈর্য ধরো । এখন এই পুরানো দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে । কলিযুগ শেষ
হলে তখনই তো সত্যযুগ হবে, তাই না । তাহলে অবশ্যই তার পূর্বে স্থাপনা হওয়া উচিত ।
এমন মহিমাও আছে, ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা, শঙ্করের দ্বারা বিনাশ । প্রথমে স্থাপনা
করবে, তারপর যখন স্থাপনা সম্পূর্ণ হয়ে যায়, তখন বিনাশ হয় । এখন স্থাপনা হচ্ছে ।
এ হলো এক পৃথক মার্গ, যা কেউই বুঝতে পারে না । কেউ কখনো শোনেইনি, তাই মনে করে, যেমন
অন্য মঠ প্রতিষ্ঠান আছে, তেমনই এও বি. কেদের একটা প্রতিষ্ঠান । ওই বেচারাদের কোনো
দোষ নেই । কল্প পূর্বেও এমনই বিঘ্ন উপস্থিত হয়েছিলো । এ হলো রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ,
রুদ্র শিবকে বলা হয় তিনিই রাজযোগ শেখান, যাকে প্রাচীন সহজ রাজযোগ বলা হয় ।
প্রচীনের অর্থও বুঝতে পারে না । এ হলো সঙ্গম যুগের কথা, পতিত আর পাবন তো সঙ্গমই হলো,
তাই না । সত্যযুগ আদিতে থাকে একই ধর্ম । ওরা হলো আসুরী সম্প্রদায় আর তোমরা হলে দৈবী
সম্প্রদায় । যুদ্ধ ইত্যাদির তো কোনো কথাই নেই । এও এক ভুল । তোমরা ভাই - ভাই কীভাবে
লড়াই করবে ।
বাবা বসে ব্রহ্মার
দ্বারা সমস্ত বেদ শাস্ত্রের সার বুঝিয়ে বলেন । বাস্তবে মুখ্য ধর্ম হলো চার । তাদের
চার ধর্ম শাস্ত্র আছে তাতে প্রথম হলো আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্ম, যার শাস্ত্র হলো
সর্বশাস্ত্র শিরোমণি গীতা, যা হলো ভারতের প্রথম মুখ্য শাস্ত্র, যার থেকেই আদি সনাতন
দেবী দেবতা ধর্ম অথবা সূর্যবংশী, চন্দ্রবংশী ধর্মের স্থাপনা হয়েছিলো । সে তো অবশ্যই
সঙ্গম যুগেই হয়েছিলো । একে কুম্ভও বলা হয় । তোমরা জানো যে, এ হলো কুম্ভের মেলা --
আত্মা - পরমাত্মার মেলা, এ হলো সুন্দর এবং কল্যাণকারী । কলিযুগের পরিবর্তন হয়ে
সত্যযুগ হতেই হবে, এইজন্য একে কল্যাণকারী যুগ বলা হয় । সত্যযুগ থেকে ত্রেতা হয়,
তারপর ত্রেতা থেকে দ্বাপর হয়, তাই কলা কম হতে থাকে । অকল্যাণও হতে থাকে । তখন
অবশ্যই কল্যাণকারী কাউকে চাই । যখন সম্পূর্ণ অকল্যাণ হয়ে যায়, তখন বাবা আসেন
সকলের কল্যাণ করার জন্য । বুদ্ধির দ্বারা কাজ করতে হয়। বাবা অবশ্যই এই সঙ্গম যুগে
সকলের কল্যাণ করার জন্যই আসবেন সকলের সদ্গতি দাতা হলেন বাবা । সকলে তো দ্বাপরে নেই
। সত্যযুগ, ত্রেতাতেও সবাই নেই, বাবা অন্তিম সময়েই আসবেন, যখন সমস্ত আত্মারা এসে
যায় তখন বাবা এসেই এই ধৈর্য ধরার শক্তি প্রদান করেন । বাচ্চারা বলে বাবা, এই পুরানো
দুনিয়াতে অনেক দুঃখ । বাবা শীঘ্র আমাদের নিয়ে চলো । বাবা বলেন - না বাচ্চারা, এই
ড্রামা বানানো আছে, চট করে ভ্রষ্টাচারী থেকে শ্রেষ্ঠাচারী তো হতে পারবে না ।
নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে পুরুষার্থ করতে হবে । সেকেন্ডে জীবনমুক্তি, সে তো ঠিক আছে ।
বাচ্চা হওয়া অর্থাৎ উত্তরাধিকারের অধিকারী হওয়া, কিন্তু সেখানেও তো নম্বরের
ক্রমানুসারে তো পদ আছে, তাই না । উচ্চ পদ প্রাপ্তির জন্য পড়াতে তো পুরুষার্থ করতে
হয় । এমন নয় যে, চট করে কর্মাতীত অবস্থা হয়ে যাবে । তখন তো এই শরীরও ত্যাগ করতে
হবে । এমন নিয়ম নেই । মায়ার সঙ্গে তো খুব ভালোভাবে যুদ্ধ করতে হবে । তোমরা জানো যে,
যুদ্ধ আট, দশ বা পনেরো বছর ধরেও চলতে থাকে । তোমাদের যুদ্ধ তো মায়ার সঙ্গে । যতক্ষণ
বাবা আছেন, তোমাদের যুদ্ধ চলতেই থাকে । শেষের দিকে রেজাল্ট বের হবে - কে কতটা মায়াকে
জয় করতে পারলো । কর্মাতীত অবস্থায় কতটা পৌঁছালো । বাবা বলেন - যতটা সম্ভব তোমরা
নিজের ঘরকে স্মরণ করো । সেটা হলো শান্তিধাম । বাণীর ঊর্ধ্ব স্থান হলো ওটা । বাচ্চারা,
তোমাদের বুদ্ধিতে খুশী আছে । তোমরা জানো যে, এই ড্রামা কীভাবে তৈরী হয়েছে । তিন
লোকও তোমরাই জানো, আর কারোর বুদ্ধিতে তা নেই । এই বাবাও অনেক শাস্ত্র পাঠ করেছেন,
কিন্তু এই কথা তো বুদ্ধিতে ছিলোই না । যদিও গীতা ইত্যাদি পড়তেন, কিন্তু একথা তো
বুদ্ধিতে ছিলোই না যে, আমরা দূরদেশ পরমধামের অধিবাসী । এখন জানতে পেরেছি, আমাদের
বাবা, যাঁকে পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়, তিনি পরমধামে থাকেন । যাঁকে সবাই স্মরণ করে
বলে - হে পতিত পাবন, এসো । ফিরে তো কেউই যেতে পারে না । যেমন ভুল ভুলাইয়ার খেলা হয়
না, যেখানেই যাও দরজা সামনে এসে যায় । সঠিক জায়গায় পৌঁছাতেই পারে না । যখন
পরিশ্রান্ত হয়ে যায়, তখন কাঁদতে থাকে, কেউ তো পথ বলে দিক । এখানেও যতই বেদ
শাস্ত্র পড়ো না কেন, তীর্থ যাত্রাতেও যাও, কিছুই জানে না যে, আমরা কোথায় যাচ্ছি ।
কেবল বলে দেয় - অমুক জ্যোতি জ্যোতিতে মিলে গেলো । বাবা বলেন - কেউই ফিরে যেতে পারে
না । নাটক যখন সম্পূর্ণ হওয়ার সময় উপস্থিত হয়, তখনই সব অভিনেতারা স্টেজে এসে
উপস্থিত হয় । এ হলো নিয়ম । সবাই সেই ড্রেসে উপস্থিত হয়ে যায় । সবাইকে মুখ দেখিয়ে
বস্ত্র আদি পরিবর্তন করে ঘরে চলে যায় আবার পরের দিন আগের পার্টই রিপিট করে । আর এ
হলো অসীম জগতের নাটক । তোমরা এখন দেহী অভিমানী হও, তোমরা জানো যে, আমরা এই শরীর
ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করবো । পুনর্জন্ম তো হয়, তাই না । ৮৪ জন্মে আমরা ৮৪ নাম
ধারণ করেছি । এখন এই নাটক সম্পূর্ণ হয়ে গেছে, সকলেরই এখন জরাজীর্ণ অবস্থা । আবার
নতুন করে রিপিট হবে । এই ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি - জিওগ্রাফির পুনরাবৃত্তি হয় । তোমরা
জানো যে, এখন আমাদের পার্ট সম্পূর্ণ হবে, তারপর আমরা ফিরে যাবো । বাবার নির্দেশও কম
কিছু নয় । পতিত পাবন বাবা বসে বোঝান -- বাচ্চারা, আমি তোমাদের খুব সহজ উপায় বলে
দিচ্ছি । উঠতে - বসতে - চলতে এই কথা মনে রেখো যে, আমরা হলাম অভিনেতা । ৮৪ জন্ম এখন
সম্পূর্ণ হয়েছে । বাবা এখন এসেছেন আমাদের ফুলে পরিণত করতে, মনুষ্য থেকে দেবতা
বানাতে । তিনি আমাদের মতো পতিতদের পাবন তৈরী করছেন । পতিত থেকে পবিত্র আমরা অনেকবার
হয়েছি আর হবোও । এই হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি রিপিট হবে । প্রথমে তো দেবী - দেবতা
ধর্মের মানুষই আসবে । এখন এর চারা লাগানো হচ্ছে । আমরা হলামই গুপ্ত । আমরা শিরোমণি
আদি কি করবো আমাদের অন্দরে জ্ঞান আছে, অন্দরে খুশী উৎপন্ন হয় । আমাদের দেবী - দেবতা
ধর্ম অথবা ঝাড়ের যে পাতা আছে, সে সবই ধর্ম ভ্রষ্ট, কর্ম ভ্রষ্ট হয়ে গেছে । এই
ভারতবাসীরই ধর্ম, কর্ম শ্রেষ্ঠ ছিলো । মায়া কখনোই পাপ করাতো না । এখানেই পুণ্য
আত্মাদের দুনিয়া ছিলো । ওখানে রাবণ থাকেই না, ওখানে কর্ম, অকর্ম হয়ে যায় । তারপর
রাবণ রাজ্যে কর্ম, বিকর্ম হতে শুরু হয়ে যায় । ওখানে তো বিকর্ম হতে পারে না । কোনো
ভ্রষ্টাচারীই ওখানে থাকতে পারে না । তোমরা বাচ্চারা শ্রীমতে চলে যোগবলের দ্বারা এই
বিশ্বের মালিক হও । বাহুবলের দ্বারা কেউ তো বিশ্বের মালিক হতে পারে না । তোমরা জানো
যে, এরা যদি একসঙ্গে মিলে যায় তাহলে এই বিশ্বের মালিক হতে পারে কিন্তু ড্রামাতে
পার্টই নেই দেখানো হয় যে, দুই বিড়াল নিজেদের মধ্যে লড়াই করছিলো আর মাঝখান থেকে
বাঁদর মাখন খেয়ে গেলো । এমন সাক্ষাৎকারও করে যে, কৃষ্ণের মুখে মাখন । এই সৃষ্টির
রাজ্য রূপী মাখন সে পায় । বাকি লড়াই হয় যাদব আর কৌরবদের মধ্যে, তা তো দেখছো যা এখন
হচ্ছে । খবরের কাগজে বেরিয়েছিলো - অমুক জায়গায় এতো বড় হিংসা হয়েছিলো, তখন চট করে
কাউকে না কাউকে মেরে দেবে । ভারতে পূর্বে তো এক ধর্ম ছিলো । তাহলে অন্য ধর্মের
রাজ্য কোথা থেকে এলো ? খৃস্টানরা শক্তিশালী ছিলো, তাই তো তারা রাজ্য করেছিলো। এখন
বাস্তবে সমগ্র দুনিয়ার উপর রাবণ কব্জা করে আছে এ হলো গুপ্ত কথা । শাস্ত্রতে তো এইসব
কথাই নেই বাবা বোঝান যে, এই বিকার তোমাদের অর্ধেক কল্পের শত্রু, যার জন্য তোমরা আদি
- মধ্য - অন্ত দুঃখ পাও, এইজন্য সন্ন্যাসীরাও বলে, এই সুখ হলো কাক বিষ্ঠা সম । ওরা
তো জানেই না যে, স্বর্গে সুখই সুখ হয় । ভারতবাসীরা তো জানে, তাই কারোর যখন মৃত্যু
হয় তখন বলে, স্বর্গে গেছেন । স্বর্গের কতো মহিমা, তাই অবশ্যই এ এক খেলা, কিন্তু
কাউকে যদি বলো, তুমি নরকবাসী, তখনই সে বিগড়ে যাবে । এ কতো আশ্চর্যের কথা । মানুষ
মুখে বলছে স্বর্গবাসী হয়েছে, তাহলে নিশ্চয়ই নরক থেকেই গেছে তাইনা। তারপর তোমরা ওদের
ডেকে নরকের জিনিস কেন খাওয়াওয? স্বর্গে তো ওদের অনেক বৈভব প্রাপ্তি হয়ে থাকে, তাই
না ! এর মানে হচ্ছে তোমাদের নিশ্চয় নেই তাইনা। ওখানে কি-কি আছে, বাচ্চারা সব দেখেছে।
নরকে দেখ কি-কি করতেই থাকে, বাচ্চারা বাবাকে মারতেও দেরি করে না। স্ত্রীর কারো প্রতি
মন জুড়ে গেলে পতিকেও মেরে ফেলে। ভারতের জন্য একটা গান তৈরি করা হয়েছে – একদিকে বলে
কি হয়ে গেছে আজকের মানুষের....তারপর বলে আমাদের সোনার ভারত সবচেয়ে ভালো। ভারত
সবচাইতে ভালো ছিল, কিন্তু এখন আর নেই। এখন কাঙাল হয়ে গেছে, কোনো নিরাপত্তা এখানে
নেই। আমরাও আসুরিক সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলাম। এখন বাবা আমাদের ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়ভুক্ত
করে তোলার জন্য পুরুষার্থ করাচ্ছেন। এটা কোনো নতুন বিষয় নয়। কল্পে-কল্পে, কল্পের
সঙ্গম যুগে আমরা পুনরায় উত্তরাধিকার গ্রহণ করে থাকি। বাবা আমাদের উত্তরাধিকার দিতে
আসেন। মায়া তারপর শাপ দেয়। কত সমর্থ এই মায়া। বাবা বলেন মায়া তুমি কত শক্তিশালী,
ভালোকেও তুমি নীচে নামাতে পারো। সেনাবাহিনীতে মরার বা মারার ভয় থাকে না। আহত হয়েও
তারা যুদ্ধক্ষেত্রে আসে, ওদের এটাই কাজ, প্রফেশান। তারপর ওদের পুরস্কৃতও করা হয়।
এখানে তোমরা বাচ্চারা শিববাবার কাছ থেকে শক্তি নিয়ে, মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করে
থাকো। বাবা হলেন ব্যারিস্টার, যিনি মায়ার থেকে তোমাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। তোমরা
হচ্ছো শিবশক্তি সেনা, মায়েদের উচ্চে স্থান দিয়ে বলা হয়েছে বন্দে মাতরম্। এটা কে
বলেছেন ? বাবা বলেছেন, কেননা তোমরাই বাবার প্রতি বলি প্রদত্ত( সম্পূর্ণ রূপে
সমর্পিত) হও। বাবা খুশি হন – যখন কেউ দৃঢ়তার সাথে দাঁড়িয়ে থাকে, নড়ে যায় না।
অঙ্গদের দৃষ্টান্ত আছে না, তাকে রাবণ নড়াতে পারেনি। এটা সম্পূর্ণ অন্তিমের বিষয়।
শেষে গিয়ে সেই অবস্থা হবে। সেই সময় তোমাদের খুব আনন্দ হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত বিনাশ
না হবে ধরিত্রী পবিত্র না হবে, ততক্ষণ দেবতারা আসতে পারবে না। খড়ের গাদায় আগুন
অবশ্যই লাগবে। সমস্ত আত্মাদের হিসেব- নিকেশ মিটিয়ে মশার মতো ঝাঁকে-ঝাঁকে সুইট হোমে
ফিরে যেতে হবে। কোটি কোটি মশা মরে যায় সেইজন্যই গাওয়া হয় রাম গেল, রাবণ গেল...ফিরে
তো যেতেই হবে। তারপর তোমরা নতুন দুনিয়াতে আসবে। সেখানে খুব অল্প সংখ্যক থাকবে। এটাই
বোঝার এবং নিশ্চয় করার বিষয়। এই নলেজ বাবাই দিতে পারেন। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
উঠতে-বসতে, চলতে ফিরতে নিজেকে অ্যাক্টর মনে করতে হবে, অন্তরে থাকবে আমি ৮৪ জন্মের
পার্ট কমপ্লিট করেছি, এখন ঘরে ফিরতে হবে। দেহী-অভিমানী হয়ে থাকতে হবে।
২ ) নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে
কাঁটা থেকে ফুল হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। মায়ার সাথে যুদ্ধ করে বিজয়ী হয়ে কর্মাতীত
হতে হবে। যতটা সম্ভব নিজের ঘরকে স্মরণ করতে হবে।
বরদান:-
নিজের
হাল্কা স্থিতির দ্বারা প্রতিটি কাজকে লাইট করতে পারা বাবার সমতুল্য সব কিছুর থেকে
পৃথক এবং প্রিয় ভব
মন-বুদ্ধি আর সংস্কার
– আত্মার এই যে সূক্ষ্ম শক্তি আছে, এর তিনটিতেই লাইট অনুভব করা, এমনই বাবার সমতুল্য
সব কিছুর থেকে পৃথক এবং প্রিয় হতে হবে। কেননা সময়ানুসারে বাইরের বাতাবরণ, মনুষ্য
আত্মাদের বৃত্তিও ভারী হবে। বাইরের বাতাবরণ যত ভারী হবে ততই বাচ্চারা তোমাদের
সংকল্প, কর্ম, সম্বন্ধ লাইট হতে থাকবে আর এই লাইট(হাল্কা) হওয়ার কারণে সমস্ত কাজ
লাইট ভাবে চলবে। কাজকর্মের প্রভাব তোমাদের উপরে পড়বে না, এইরকম স্থিতিই হল বাবার
সান স্থিতি।
স্লোগান:-
এই অলৌকিক নেশাতে থাকো "বাঃ রে আমি" তবেই মন আর তনের দ্বারা ন্যাচারাল ডান্স হতে
থাকবে।