09.05.2022
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
যে বাবাকে তোমরা অর্ধেককল্প ধরে স্মরণ করেছো, এখন তাঁর যা আদেশ পাও তা পালন করো
এতেই তোমাদের আরোহন কলা (চড়তি কলা/উন্নতি) হয়ে যাবে"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের নিজেদের নেচার-কিওর (প্রাকৃতিক নিরাময়) নিজেদেরকেই করতে হবে, কিভাবে ?
উত্তরঃ -
একমাত্র বাবার স্মরণে থেকে এবং প্রেম-পূর্বক যজ্ঞের সেবা করলে নেচার কিওর হয়ে যায়।
কারণ স্মরণের দ্বারাই আত্মা নিরোগী হয়ে যায় আর সেবা করলে অপার খুশী বজায় থাকে।
সেইজন্য যারা স্মরণ আর সেবায় ব্যস্ত থাকে তাদের নেচার কিওর হতে থাকে।
গীতঃ-
তুমি রাত নষ্ট
করেছিস শুয়ে, দিন নষ্ট করলে ঘুমিয়ে, অমূল্য সময় নষ্ট হয়ে যায়....
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা গান
শুনেছে। মালা জপ করতে-করতে যুগ পেরিয়ে গেছে। কত যুগ ? দুই যুগ। সত্যযুগ ত্রেতায় তো
কেউ মালা জপ করে না। কারোর বুদ্ধিতেই এ'টা নেই যে আমরা উঁচুতে যাই, আবার নীচে নেমে
আসি। এখন আমাদের হয় আরোহণ-কলা। আমাদের অর্থাৎ ভারতের। যত ভারতবাসীদের আরোহণ-কলা এবং
অবরোহন-কলা হয় তত আর কারোরই হয় না। ভারতই শ্রেষ্ঠাচারী আর ভ্রষ্টাচারী হয়ে যায়।
ভারতই নির্বিকারী হয়, ভারতই বিকারী হয়ে যায়। আর খন্ডগুলি বা ধর্মগুলির সঙ্গে এত
সম্বন্ধ নেই। ও'গুলি হেভেনে আসে না। ভারতবাসীদেরই চিত্র রয়েছে। বরাবর রাজত্ব করেছিল।
তাই বাবা বোঝান তোমাদের এখন হল অবরোহণ-কলা। যাঁর হাত ধরেছো তিনি তোমাদের সাথে করে
নিয়ে যাবেন। আমাদের ভারতবাসীদেরই হলো আরোহণ-কলা। মুক্তিতে গিয়ে পুনরায় জীবনমুক্তিতে
আসবো। আধাকল্প ধরে দেবী-দেবতাদের রাজ্য চলে। ২১ জন্ম চড়তে থাকো, তারপর অবরোহণ-কলা
হয়ে যায়। বলাও হয়ে থাকে -- আরোহণ-কলার সান্নিধ্যেই সকলের ভালো হবে। সকলের ভালো তো
এখন হয়, তাই না! কিন্তু আরোহণ-কলা এবং অবরোহন-কলায় তোমরাই আসো। এইসময় ভারত যত ঋণ
নেয় তত আর কেউই নেয় না। বাচ্চারা জানে যে আমাদের ভারত সোনার পাখি ছিল। অত্যন্ত
ঐশ্বর্যশালী ছিল। এখন ভারতের অবরোহণ-কলা সম্পূর্ণ হয়। বিদ্বানাদিরা মনে করেন যে
কলিযুগের আয়ু এখনও ৪০ হাজার বছর স্থায়ী হবে। সম্পূর্ণ ঘোর অন্ধকারে রয়েছে। তাদের
বোঝাতেও হবে খুব যুক্তি-সহকারে, নাহলে ভক্তরা চমকে যাবে। সর্বপ্রথমে বাবার পরিচয়
দিতে হবে। ভগবানুবাচ হলো - গীতাই হলো সকলের মাতা-পিতা। উত্তরাধিকার গীতার(বাবার
জ্ঞান) থেকে পাওয়া যায়, বাকি সকলেই হলো ওঁনার সন্তান। বাচ্চাদের থেকে উত্তরাধিকার
পাওয়া যায় না। বাচ্চারা, তোমাদের গীতার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হচ্ছে, তাই না!
গীতা মাতা, আবার পিতাও আছে। বাইবেল ইত্যাদিদের কেউ মাতা বলবে না। সেইজন্য সর্বপ্রথমে
তোমরা এ'টাই জিজ্ঞাসা করো যে পরমপিতা পরমাত্মার সঙ্গে তোমাদের কিসের সম্বন্ধ?
সকলেরই পিতা একজনই, তাই না! সমস্ত আত্মারাই হলো ভাই-ভাই, তাই না! এক পিতার সন্তান।
বাবা মনুষ্য সৃষ্টি রচনা করেন প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা, তাহলে তোমরা পরস্পরের
ভাই-বোন হয়ে যাও। তাহলে অবশ্যই পবিত্র থাকে। পতিত-পাবন বাবা-ই এসে যুক্তির দ্বারা
তোমাদের পবিত্র করেন। বাচ্চারা জানে যে পবিত্র থাকলে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে।
আমদানি অনেক বড়। কে এ'রকম হবে - যে ২১ জন্মের বাদশাহী নেওয়ার জন্য পবিত্র হবে না।
আবার শ্রীমৎও পাওয়া যায়, যে বাবাকে আধাকল্প ধরে স্মরণ করেছো, তাঁর আদেশ তোমরা মান্য
করবে না! ওঁনার আদেশানুসারে না চললে তখন তোমরা পাপাত্মা হয়ে যাবে। এই দুনিয়াই হলো
পাপাত্মাদের। রাম-রাজ্য পুণ্যাত্মাদের দুনিয়া ছিল। এখন রাবণ-রাজ্য হলো পাপাত্মাদের
দুনিয়া। বাচ্চারা, এখন তোমাদের হলো আরোহণ-কলা। তোমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। কি'রকম
গুপ্তভাবে বসে রয়েছো। কেবল বাবাকে স্মরণ করতে হবে। মালা ইত্যাদি জপ করার কোনো
প্রয়োজন নেই। বাবাকে স্মরণ করতে করতেই তোমরা কাজ করো। বাবা তোমার যজ্ঞের স্থূল,
সূক্ষ্ম দুই সেবাই আমরা একসাথে কীভাবে করি। বাবা আদেশ করেন, এ'ভাবে করো।
প্রকৃতিগতভাবে নিরাময় করায়, তাই না! তোমাদের আত্মা কিয়োর হলে শরীরও কিয়োর হয়ে যাবে।
কেবল বাবার স্মরণেই তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাও। পবিত্রও হও আর যজ্ঞের সেবাও
করতে থাকো। সার্ভিস করতে অত্যন্ত আনন্দ লাগবে। আমরা এতখানি সময় বাবার স্মরণে থেকে
নিজেকে নিরোগী বানিয়েছি বা ভারতকে শান্তির দান দিয়েছি। শ্রীমতানুসারে চলে তোমরা
ভারতকে শান্তি এবং সুখের দান করো। দুনিয়ায় আশ্রম তো অসংখ্য আছে। কিন্তু সেখানে কিছু
নেই। তাদের এ'টা জানা নেই যে ২১ জন্ম স্বর্গের রাজত্ব কীভাবে প্রাপ্ত হয়। তোমরা এখন
রাজযোগের পড়া করছো। ওই সকল লোকেরাও বলে থাকে, গড ফাদার এসে গেছে। অবশ্যই কোথাও আছে।
সে তো অবশ্যই থাকবে, তাই না! বিনাশের জন্য বোমাও বেরিয়ে গেছে। অবশ্যই বাবা-ই
স্বর্গের স্থাপনা এবং নরকের বিনাশ করিয়ে থাকেন। এ হলো নরক, তাই না! কত লড়াই, মহামারী
ইত্যাদি হয়। অনেক ভয় রয়েছে। বাচ্চাদের কীভাবে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। কত উপদ্রব হয়। এখন
তোমরা জেনেছো যে এই দুনিয়া বদলে যেতে চলেছে। কলিযুগ বদল হয়ে সত্যযুগ হতে চলেছে। আমরা
সত্যযুগের স্থাপনায় বাবার সহায়তাকারী। ব্রাহ্মণরাই সহায়তাকারী হয়ে থাকে। প্রজাপিতা
ব্রহ্মার থেকেই ব্রাহ্মণের জন্ম হয়। ওরা হলো গর্ভজাত, তোমরা হলে মুখ-বংশজাত। ওরা তো
ব্রহ্মার সন্তান হতে পারে না। তোমাদের দত্তক নেওয়া হয়ে থাকে। তোমরা ব্রাহ্মণরা হলে
ব্রহ্মার সন্তান। প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো সঙ্গমেই হতে পারে। ব্রাহ্মণই পুনরায়
দেবী-দেবতা হয়। তোমরা ওই ব্রাহ্মণদেরকেও বোঝাতে পারো যে তোমরা হলে গর্ভজাত। বলে থাকো,
ব্রাহ্মণ দেবী-দেবতায় নমঃ। ব্রাহ্মণদেরও নমস্কার, দেবতাদেরও নমস্কার করে। কিন্তু
ব্রাহ্মণদের নমস্কার তো তখনই করবে, যেমন এখন। মনে করে, এরা হলো ব্রাহ্মণ, যারা
তন-মন-ধনে বাবার শ্রীমতানুসারে চলে থাকে। ওই ব্রাহ্মণেরা স্থূল যাত্রায় নিয়ে যায়। এ
হলো তোমাদের রুহানী যাত্রা। তোমাদের যাত্রা কত মধুর। ওই শারীরিয় যাত্রা তো অনেকই আছে।
গুরুও অনেক আছে। বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে আমরা শিববাবার মতানুসারে চলে ব্রহ্মার
মাধ্যমে ওঁনার থেকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করছি। উত্তরাধিকার শিববাবার থেকে নেয়। তোমরা
এখানে এলে তৎক্ষণাৎ জিজ্ঞাসা করি -- কার কাছে এসেছো ? বুদ্ধিতে রয়েছে যে এ হলো
শিববাবার লোন(ধার) নেওয়া রথ। আমরা ওঁনার কাছে যাই। বাগদান তো ব্রাহ্মণরাই করায়।
কিন্তু কানেকশন তৈরী হয় প্রেমিক-প্রেমিকার পরস্পরের মধ্যে, বাগদান করিয়ে দেওয়া
ব্রাহ্মণের সাথে নয়। স্ত্রী স্বামীকে স্মরণ করে নাকি হস্তবন্ধন করায় যে ব্রাহ্মণ
তাকে স্মরণ করে ? তোমাদেরও প্রিয়তম হলেন শিব। তাহলে কেন তোমরা কোনো দেহধারীকে স্মরণ
করো? স্মরণ করতে হবে শিবকে। এই লকেট ইত্যাদিও বাবাই বানিয়েছেন বোঝানোর জন্য। স্বয়ং
বাবা দালাল হয়ে বাগদান করান। তাহলে দালালকে স্মরণ করতে হবে না ! প্রিয়তমাদের যোগ
থাকে প্রিয়তমের সঙ্গে। বাচ্চারা, মাম্মা-বাবা এসে তোমাদের মাধ্যমে মুরলী শুনিয়ে
থাকেন, বাবা বলেন, এ'রকম অনেক বাচ্চারা আছে যাদের ভ্রুকুটিতে বসে আমি মুরলী শোনাই
-- কল্যাণ করার জন্য। কাউকে সাক্ষাৎকার করানোর জন্য, মুরলী শোনানোর জন্য, কারোর
কল্যাণ করার জন্য আসি। ব্রাহ্মণীদের মধ্যে এত শক্তি নেই, জানি যে এদের এই ব্রাহ্মণী
উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না, তাই আমি এমন তীর নিক্ষেপ করি, যারফলে এরা সেই ব্রাহ্মণীর
থেকেও তীব্রবেগে এগিয়ে যায়। ব্রাহ্মণী মনে করে এদের আমি বুঝিয়েছি। দেহ-অভিমানে চলে
আসে। বাস্তবে এই অহংকারও আসা উচিত নয়। সবকিছুই শিববাবা করে থাকেন। এখানে তোমাদের বলা
হয় যে বাবাকে স্মরণ করো। কানেকশন তো শিববাবার সঙ্গে থাকা উচিত। মাঝে ইনি হলেন দালাল,
ইনি তার মূল্য পেয়ে যান। তবুও এ হলো বৃদ্ধ অনুভবী শরীর। এর বদল হতে পারে না।
ড্রামায় নির্ধারিত রয়েছে। এ'রকম নয় যে অন্য কল্পে অন্যের শরীরে আসবেন। না, যিনি
লাস্টে আছেন, তাঁকেই পুনরায় প্রথমে যেতে হবে। বৃক্ষে দেখো শেষে দাঁড়িয়ে রয়েছেন,
তাই না! এখন তোমরা সঙ্গমে বসে রয়েছো। বাবা এই প্রজাপিতা ব্রহ্মার মধ্যে প্রবেশ
করেছেন। জগদম্বা হলেন কামধেনু আর কপিলদেবও বলা হয়। কাপল অর্থাৎ যুগল, বাপদাদা
মাতা-পিতা, তাহলে এঁনারা কাপল বা যুগল হলেন, তাই না! মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার
পাবে না। উত্তরাধিকার আবার শিববাবার থেকেই প্রাপ্ত হয়। তাই ওঁনাকে স্মরণ করতে হবে।
আমি এসেছি এঁনার (ব্রহ্মার) দ্বারা তোমাদের নিয়ে যেতে। ব্রহ্মাও শিববাবাকে স্মরণ করে।
শঙ্করের সামনেও শিবের চিত্র রাখা হয়। এ'সব হলো মহিমা কীর্তনের জন্য। এইসময়ে শিববাবা
এসে নিজের বাচ্চা বানান। তারপর তোমরা বসে-বসে বাবাকে পূজা করবে নাকি! বাবা এসে
বাচ্চাদের সুন্দর সুন্দর ফুলে (গুলগুল) পরিণত করেন। নর্দমার থেকে বেরিয়ে আসে। তারপর
প্রতিজ্ঞা করে যে আমরা কখনও পতিত হবো না। বাবা বলেন -- কোলে (দত্তক) এসে পুনরায়
মুখ কালো কোরো না। যদি করো তাহলে কুল কলঙ্কিত হয়ে যাবে। পরাজিত হলে ওস্তাদের(বাবা)
নাম বদনাম করে দেবে। মায়ার কাছে পরাজিত হলে পদ ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। আর কোনো সন্ন্যাসী
ইত্যাদিরা এই কথা শেখাতে পারে না। কেউ আছে যে বলে, মাসে একবার বিকারে যেতে। কেউ বলে
৬ মাসে এক বার যাও। কেউ কেউ তো আবার সম্পূর্ণ অজামিলের মতন হয়। বাবা তো অনেক গুরু
করেছেন। তারা কখনও এইরকম বলবে না যে পবিত্র হও। বোঝে যে, আমরাই হতে পারি না। যে
সেন্সীবেল হবে সে তৎক্ষণাৎ বলবে যে তোমরাই হতে পারো না, আমাদের কি'করে বলো ? তবুও
বলে যে জনকের মতন সেকেন্ডে জীবনমুক্তির রাস্তা বলে দাও। আবার গুরুরা বলে যে,
ব্রহ্মকে স্মরণ করো তাহলেই তোমরা নির্বাণধামে চলে যাবে। কেউই তো যায় না, শক্তিই নেই।
সর্ব আত্মাদের থাকার জায়গা হলো মূললোক (মূলবতন), যেখানে আমরা আত্মারা তারার মতন থাকি।
পূজার জন্য এ'রকম বড় লিঙ্গ নির্মাণ করে। বিন্দুর পূজা কীভাবে হবে? বলাও হয় যে
ভ্রুকুটির মধ্যস্থলে জ্বল-জ্বল করে আজব তারা। তাহলে আত্মার বাবাও তেমনই হবে, তাই
না! বাবার দেহ নেই। ওই স্টারের(পরমাত্মার) পূজা কিভাবে হতে পারে। বাবাকে পরম আত্মা
বলা হয়। তিনি হলেন ফাদার। যেমন আত্মা তেমনই হলো পরমাত্মা। তিনি কোনো বড় (তারা) নন।
ওঁনার মধ্যে এই নলেজ আছে। এই অসীমের বৃক্ষকে আর কেউই জানে না। বাবা-ই হলেন নলেজফুল।
জ্ঞানেও পরিপূর্ণ, পবিত্রতাতেও পরিপূর্ণ। তিনি হলেন সকলের সদ্গতি দাতা। সকলকে
সুখ-শান্তি প্রদানকারী। বাচ্চারা, তোমরা কত বড় মাপের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করো, যা
আর কেউ পেতে পারে না। মানুষ তো গুরুদের কত পূজো করে। নিজেদের রাজারও এত পূজা করে
না। তাহলে এ'সব হলো অন্ধশ্রদ্ধা, তাই না! কি-কি করতে থাকে। সকলের মধ্যেই গ্লানিই
গ্লানি রয়েছে। কৃষ্ণকে লর্ডও বলে আবার গডও বলে থাকে। গড কৃষ্ণ হেভেনের (স্বর্গ)
প্রথম প্রিন্স, লক্ষ্মী-নারায়ণের উদ্দেশ্যেও বলে থাকে যে এই দু' জন হলেন গড-গডেজ।
অনেক পুরোনো-পুরোনো চিত্র কিনে থাকে। পুরোনো-পুরোনো স্ট্যাম্পসও বিক্রী করা হয়ে থাকে,
তাই না! বাস্তবে সবথেকে পুরানো হলেন শিববাবা, তাই না! কিন্তু কারোর জানা নেই। সমস্ত
মহিমা তো শিববাবারই। সেই জিনিস তো পাওয়া যাবে না। পুরোনোর থেকেও পুরোনো জিনিস কোনটি
? নম্বর ওয়ান হলেন শিববাবা। কেউ বুঝতে পারে না যে আমাদের বাবা কে ? ওঁনার নাম-রূপ
কি ? বলে দেয় যে ওঁনার কোনো নাম-রূপ নেই, তাহলে কার পূজা করো ? শিব নাম তো আছে, তাই
না! দেশও আছে, কালও আছে। স্বয়ং বলেন, আমি সঙ্গমেই আসি। আত্মা শরীরের দ্বারা বলে
থাকে,তাই না! বাচ্চারা, এখন তোমরা বোঝ যে শাস্ত্রে কত গল্প-গাঁথা বলা আছে, যার ফলে
অবরোহন-কলা হয়ে গেছে। আরোহন-কলা হলো সত্যযুগ-ত্রেতা, অবরোহণ কলা হলো দ্বাপর-কলিযুগ।
এখন আবার আরোহণ-কলা হবে। বাবা ছাড়া আর কেউ আরোহণ-কলা বানাতে পারবে না। এ'সমস্ত কথা
ধারণ করতে হয়। সেইজন্য কোনো কার্যাদি করতে-করতেও স্মরণে থাকতে হবে। যেমন শ্রীনাথ
দ্বারকায় মুখে কাপড় বেঁধে কাজ করে। শ্রীনাথ কৃষ্ণকে বলা হয়ে থাকে। শ্রীনাথের ভোজন
তৈরী হয়, তাই না! শিববাবা তো ভোজনাদি খান না। তোমরা শুদ্ধ ভোজন বানাও তাই স্মরণে
থেকে তৈরী করা উচিত, তবেই তাতে বল পাওয়া যাবে। কৃষ্ণলোকে যাওয়ার জন্য ব্রত, উপবাসাদি
করে। এখন তোমরা জেনেছো যে আমরা কৃষ্ণপুরীতে যেতে চলেছি, তাই তোমাদের সুযোগ্য করে
তোলা হয়। তোমরা বাবাকে স্মরণ করো আর তারপর বাবা গ্যারান্টি করেন যে তোমরা অবশ্যই
কৃষ্ণপুরীতে যাবে। তোমরা জানো যে আমরা নিজেদের জন্য কৃষ্ণপুরী স্থাপন করছি তারপর
আমরাই রাজ্য করবো। যে শ্রীমতে চলবে সেই কৃষ্ণপুরীতে আসবে। লক্ষ্মী-নারায়ণের থেকেও
কৃষ্ণের নামের মহিমা অধিক। কৃষ্ণ তো ছোট বাচ্চা তাহলে তো মহাত্মার সমান। বাল্য
অবস্থা হলো সতোপ্রধান তাই কৃষ্ণের নাম বেশী। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজের কানেকশন সম্পূর্ণভাবে একমাত্র শিববাবার সঙ্গে রাখতে হবে। কখনো কোনো দেহধারীকে
স্মরণ করবে না। কখনো নিজের ওস্তাদের(বাবা) নামের গ্লানি করবে না।
২ ) নিজের দ্বারা যদি
কারও কল্যাণ হয় তাহলে আমি এর কল্যাণ করেছি, এই অহংকারে আসা উচিত নয়। এও হলো
দেহ-অভিমান। করাবনহার বাবাকে স্মরণ করতে হবে।
বরদান:-
অমৃতবেলায় তিন বিন্দুর তিলক ধারণকারী কেন, কি-এর আলোড়ন থেকে মুক্ত অবিচল অটল ভব
বাপদাদা সর্বদা বলেন
যে, রোজ অমৃতবেলায় তিন বিন্দুর তিলক লাগাও। তুমিও বিন্দু, বাবাও বিন্দু আর যা ঘটে
গেছে, যা ঘটছে নাথিং নিউ (নতুন নয়) তাই ফুলস্টপও বিন্দু। এই তিন বিন্দুর তিলক লাগানো
অর্থাৎ স্মৃতিতে থাকা। তারপর সারাদিন অবিচল, অটল থাকবে। কেন, কি-এর আলোড়ন সমাপ্ত হয়ে
যাবে। যে'সময় কোনো কথা হয়, সেই সময়েই ফুলস্টপ লাগিয়ে দাও। নাথিং নিউ, হওয়ার ছিল,
হচ্ছে..... সাক্ষী হয়ে দেখো আর এগিয়ে যেতে থাকো।
স্লোগান:-
পরিবর্তন শক্তির দ্বারা ব্যর্থ সঙ্কল্পের গতির বেগকে সমাপ্ত করে দাও তাহলেই সমর্থ
হয়ে যাবে।