10-01-2021 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
09-10-87 মধুবন
"অলৌকিক রাজ্য দরবারের সমাচার"
আজ বাপদাদা নিজের স্ব-রাজ্য অধিকারী বাচ্চাদের রাজ্-দরবার
দেখছেন l এই সঙ্গমযুগের অনুপম, শ্রেষ্ঠ মর্যাদাপূর্ণ অলৌকিক দরবার সারা কল্পে
স্বাতন্ত্র্য-সূচক এবং অতি মনোরম l এই রাজ্য-সভার রূহানী ঔজ্জ্বল্য, রূহানী কমল-আসন,
রূহানী মুকুট আর তিলক, মুখমন্ডলের দ্যুতি, স্থিতির শ্রেষ্ঠ স্মৃতির বায়ুমন্ডলে
অলৌকিক সুগন্ধি অতি মনোমুগ্ধকর, অতিশয় আকর্ষক l এইরকম সভা দেখে বাপদাদা
প্রত্যেক রাজ্য -অধিকারী আত্মাকে দেখে উৎফুল্ল হচ্ছেন l কতো বড় দরবার ! প্রত্যেক
ব্রাহ্মণ বাচ্চা স্বরাজ্য-অধিকারী l তাহলে কতো ব্রাহ্মণ বাচ্চা ! সব ব্রাহ্মণের
রাজসভা যদি একসাথে করো, তাহলে কতো বড় রাজসভা হয়ে যাবে ! এত বড় রাজ-দরবার কোনো যুগে
হয় না l এটাই সঙ্গমযুগের বিশেষত্ব যা উঁচুতম l বাবার সব বাচ্চা স্বরাজ্য অধিকারী হয়
l সাধারণতঃ, লৌকিক পরিবারে প্রত্যেক বাবা বাচ্চাদের বলেন, এ আমার বাচ্চা 'রাজা' ছেলে
বা ইচ্ছা রাখে যে আমার প্রত্যেক বাচ্চা 'রাজা' হোক l কিন্তু সব বাচ্চা রাজা হতেই
পারে না l পরমাত্মা বাবার এই বচন তারা কপি করেছে l এই সময় বাপদাদার সব বাচ্চা
রাজযোগী অর্থাৎ স্ব-এর রাজা, নম্বর অনুক্রম অবশ্যই আছে, কিন্তু রাজ-যোগী সবাই, প্রজা
যোগী কেউ নয় l সুতরাং বাপদাদা অসীম রাজসভা দেখছিলেন l সবাই নিজেকে স্বরাজ্য অধিকারী
মনে করো তো, তাই না ? নবাগত বাচ্চারা অধিকারী হয়েছ নাকি এখন হতে হবে ? তোমরা নতুন
সেইজন্য কীভাবে একসাথে মিলে মিশে থাকতে হয় শিখছ l অব্যক্ত বাবার বলা অব্যক্ত বিষয়
বোঝারও অভ্যাস হয়ে যাবে l যাই হোক, এই ভাগ্যের মূল্য তোমরা এখন থেকেই বুঝবে, সময়কালে
আরও বুঝবে যে তোমরা সব আত্মা কতো ভাগ্যবান !
তাইতো বাপদাদা তোমাদের অলৌকিক রাজ্য দরবারের সমাচার শুনাচ্ছিলেন l না চাইতেই বাবার
অ্যাটেনশন সব বাচ্চার বিশেষ মুকুট আর মুখমন্ডলের উজ্জ্বলতার দিকে যাচ্ছিল l মুকুট
ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্ব - 'পবিত্রতা'রই সূচক l মুখের দীপ্তি আত্মিক স্থিতিতে
স্থিত থাকার আধ্যাত্মিকতার দ্যুতি l সাধারণভাবে যদি কোনও ব্যক্তিকে দেখা হয়, তাহলে
সবচাইতে আগে দৃষ্টি মুখের উপরে পড়বে l এই মুখই বৃত্তি আর স্থিতির দর্পণ l সেইজন্য
বাপদাদা দেখছিলেন - দীপ্তি তো সবার মধ্যেই ছিল, কিন্তু এক ছিল সদা অধ্যাত্ম স্থিতিতে
স্থিত, তাদের এই স্থিতি ছিল স্বতঃ আর সহজ আর এবং অন্যরা ছিল সদা রূহানী স্থিতির
অভ্যাস দ্বারা স্থিত l একদিকে ছিল সহজ স্থিতির, অন্যদিকে ছিল পরিশ্রম দ্বারা এই
স্থিতিতে স্থিত অর্থাৎ এক ধরণের ছিল যারা সহজ যোগী, অন্যরা ছিল পুরুষার্থ দ্বারা
যোগী l উভয়ের উজ্জ্বলতায় তারতম্য ছিল l একদিকে তাদের ন্যাচারাল বিউটি ছিল, অন্যদের
ছিল পুরুষার্থ দ্বারা বিউটি l যেমন, আজকাল মেক-আপ করেও বিউটিফুল হয়, না ! ন্যাচারাল
(স্বাভাবিক ) বিউটির প্রকাশ সদা একরস থাকে আর অন্য বিউটি কখনো খুব ভালো আর কখনো
পার্সেন্টেজে থাকে ; একভাবে, একরস থাকে না l সুতরাং সদা সহজ যোগী, স্বতঃ যোগী স্থিতি
নম্বর ওয়ান স্বরাজ্য-অধিকারী বানায় l যেহেতু, সব বাচ্চার প্রতিজ্ঞা থাকে ব্রাহ্মণ
জীবন অতিবাহিত করা অর্থাৎ এক বাবাই সংসার, দ্বিতীয় কেউ নয়, এখনও পর্যন্ত যখন বাবাই
সংসার, দ্বিতীয় কেউ নেই, তখন তো স্বতঃ আর সহজ যোগী স্থিতি সদাই থাকবে, তাই না ! নাকি
পরিশ্রম করতে হবে ? যদি অন্য কেউ থাকে, তাহলে তোমাদের বুদ্ধি যাতে সেদিকে না গিয়ে,
এদিকে যায় তার জন্য তোমাদের পরিশ্রম করতে হবে l যেমনই হোক, যখন সবকিছুই এক বাবা, তো
বুদ্ধি কোথায় যাবে ? যেতেই যদি পারে না, তবে কী অভ্যাস করবে ? অভ্যাসেও তারতম্য হয়
l এক হলো স্বতঃ অভ্যাস, সবসময় সেই স্থিতিতেই থাকা আর দ্বিতীয় হলো পরিশ্রমের অভ্যাস
l সুতরাং স্বরাজ্য-অধিকারী বাচ্চাদের সহজ অভ্যাসী হওয়ার এই লক্ষণ সহজ যোগী, স্বতঃ
যোগীর l তাদের মুখের দীপ্ত আভা অলৌকিক, যে মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই অন্য আত্মারা
অনুভব করে যে ইনি শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তিস্বরূপ সহজ যোগী l যেমন কারও স্থূল ধন বা স্থূল
পদের প্রাপ্তি মুখের উজ্জ্বলতায় প্রকাশ পায় যে ইনি বিত্তশালী বংশের বা উঁচু
পদাধিকারী, সেইরকম এই শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি, শ্রেষ্ঠ রাজ্য অধিকার অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ
পদপ্রাপ্তির নেশা বা দীপ্তি মুখমন্ডলে প্রতীয়মান হয় l দূর থেকেই অনুভব করা যায় যে
এনারা কিছু পেয়েছেন, প্রাপ্তিস্বরূপ আত্মা l সেইরকমই রাজ্য অধিকারী সব বাচ্চার
দ্যুতিমান মুখ যেন দৃশ্যমান হয় l পরিশ্রমের চিহ্ন দৃশ্যগোচর হতে দিও না, যেন
প্রাপ্তির চিহ্ন প্রতীয়মান হয় l এখনও দেখ, কোন কোনও বাচ্চার মুখ দেখে বলা হয়, এঁরা
কিছু পেয়েছেন আর কোন কোনও বাচ্চার মুখ দেখে এটাও বলা হয় যে এটা অনেক উঁচু লক্ষ্য,
কিন্তু খুব উঁচু ত্যাগও করেছেন l মুখে ত্যাগ দৃশ্যমান হয়, ভাগ্য নয় l অথবা এ'রকম বলা
হবে ইনি খুব ভালো পরিশ্রম করছেন l
বাপদাদা এটাই দেখতে চান, প্রত্যেক বাচ্চার মুখে যেন সহজযোগীর সমুজ্জ্বল কিরণ দেখা
যায়, শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির নেশার আভা দেখা যায়, কারণ সমুদয় প্রাপ্তি-ভান্ডার বাবার
তোমরা বাচ্চা, সঙ্গমযুগের প্রাপ্তির বরদানী সময়ের অধিকার প্রাপ্ত হোক l নিরন্তর
যোগযুক্ত কীভাবে হওয়া যাবে এবং কীভাবে ভান্ডারের নিরন্তর অনুভূতির অনুভব করা যাবে,
এখনও এই পরিশ্রমেই সময় নষ্ট ক'র না, বরং প্রাপ্তিস্বরূপের ভাগ্য সহজে অনুভব করো l
সমাপ্তির সময় এগিয়ে আসছে l এখনো কোন না কোন বিষয়ে যদি পরিশ্রমে লেগে থাকবে তাহলে তো
প্রাপ্তির সময়ই সমাপ্ত হয়ে যাবে l তখন আর প্রাপ্তিস্বরূপের অনুভব কখন করবে ?
সঙ্গমযুগ এবং ব্রাহ্মণ আত্মাদের প্রতি বরদান আছে - "সর্বপ্রাপ্তি ভব l" 'সদা
পুরুষার্থী ভব'-র বরদান নয়, 'প্রাপ্তি ভব'-র বরদান l 'প্রাপ্তি ভব'-র বরদানী আত্মা
কখনও অমনোযোগী হতে পারে না, সেইজন্য তাদের কখনও পরিশ্রম করতে হয় না l তাহলে বুঝেছ,
কি হতে হবে ?
রাজ্যসভায় রাজ্য অধিকারী হওয়ার বিশেষত্ব কি, সেটা স্পষ্ট হয়েছে, তাই না ? তোমরা
রাজ্য অধিকারী, তাই তো ! নাকি এখন ভাবছ ঠিক কি ঠিক না ? তোমরা বিধাতার বাচ্চা,
বরদাতার বাচ্চা হয়ে গেছ ; রাজা অর্থাৎ বিধাতা, যিঁনি দেন l যদি অপ্রাপ্তি কিছু না
থাকে তাহলে তোমরা কী নেবে ? সুতরাং, বুঝেছ নতুন নতুন বাচ্চাদের এই অনুভবে থাকতে হবে
l যুদ্ধেই সময় নষ্ট ক'র না l যদি যুদ্ধেই সময় নষ্ট করে ফেল তাহলে তোমার অন্ত-মতিও
যুদ্ধে থাকবে l তাহলে কী তৈরি হবে ? চন্দ্রবংশে যাবে নাকি সূর্যবংশে ? যারা যুদ্ধে
লিপ্ত থাকছে তারা চন্দ্রবংশে যাবে l 'আমি তো এগিয়েই চলছি, করছি, হয়েই যাবে, পৌঁছে
যাব' - এখন আর এই লক্ষ্য রেখো না l এখন নয় তো কখনো নয় l হতে হলে এখনই, পেতে হলে
এখনই - এইরকম উৎসাহ-উদ্দীপনায় যারা আছে, সময়কালে তারাই নিজের সম্পূৰ্ণ লক্ষ্যে
পৌঁছাতে পারবে l ত্রেতায় রাম সীতা হওয়ার জন্য কেউই তো প্রস্তুত নয় l যদি সত্যযুগের
সূর্যবংশীতে যেতে চাও, তাহলে সূর্যবংশ অর্থাৎ সদা মাস্টার বিধাতা এবং বরদাতা হওয়া,
নেওয়ার ইচ্ছা না থাকা l সাহায্য যদি পাই, এটা যদি হয়ে যায় তাহলে তো খুব ভালো,
পুরুষার্থে ভালো নম্বর নিয়ে নেব - না l তোমরা সহায়তা পাচ্ছ, সবকিছু হচ্ছে - একেই বলে,
স্বরাজ্য অধিকারী বাচ্চা l তোমরা এগিয়ে যেতে চাও নাকি পরে এসেছ ব'লে পিছনেই থাকতে
চাও ? অগ্রচালিত হওয়ার সহজ রাস্তা - সহজযোগী, স্বতঃ যোগী হওয়া l খুব সহজ l যখন এক
বাবাই আছেন, দ্বিতীয় কেউ নেই তো কোথায় যাবে ? যখন প্রাপ্তিই প্রাপ্তি তখন পরিশ্রম
কেন লাগবে ? অতএব, প্রাপ্তির সময়ের লাভ নাও l সর্বপ্রাপ্তি-স্বরূপ হও l বুঝেছ ?
বাপদাদা তো এটাই চান যে প্রত্যেক বাচ্চা, হয় লাস্টে এসেছে অথবা স্থাপনের আদিতে, সব
বাচ্চা নম্বর ওয়ান যেন হয় l রাজা হও, নাকি প্রজা ! আচ্ছা l
মহারাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রদেশের গ্রুপ এসেছে l দেখ, মহা শব্দ কতো ভালো l মহারাষ্ট্র
স্থানের মধ্যেই 'মহা' শব্দ আছে, আর হতেও হবে মহান l মহান তো হয়ে গেছ, তাই না ! কারণ
বাবার হওয়া মানেই মহান হওয়া l তোমরা মহান আত্মা l ব্রাহ্মণ অর্থাৎ মহান l প্রতিটা
কর্ম মহান, প্রতিটা বোল মহান, প্রতিটা সঙ্কল্প মহান l অলৌকিক হয়ে গেছ, তাই না !
সুতরাং মহারাষ্ট্র থেকে আগত তোমরা সদাই স্মৃতিস্বরূপ হও যে তোমরা মহান l ব্রাহ্মণ
অর্থাৎ মহান শিখর, তাই নয় কি ?
মধ্য প্রদেশ - সদা যারা 'মধ্যাজী ভব'-র নেশায় থাকে l 'মন্মনাভব'-র সাথে তোমাদের 'মধ্যাজী
ভব'-র বরদানও আছে l তোমাদের আপন স্বর্গীয় স্বরূপকে (মধ্যকালের স্থিতি) বলে 'মধ্যাজী
ভব', সুতরাং, যারা নিজের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির নেশায় থাকে অর্থাৎ 'মধ্যাজী ভব'
মন্ত্রের স্বরূপে যারা স্থিত থাকে, তারাও মহান হয়ে গেছে l তোমরা যদি 'মধ্যাজী ভব'
হও, তবে তোমরা অবশ্যই মন্মনাভবও হবে l সুতরাং মধ্যপ্রদেশ অর্থাৎ মহামন্ত্রের স্বরূপ
হওয়া l অতএব, উভয়েই তোমরা নিজ নিজ বিশেষত্বে মহান l বুঝেছ তোমরা কে ?
যখন থেকে তোমরা প্রথম পাঠ শুরু করেছ, সেটাই পাকা করেছ, 'আমি কে ?' বাবাও সেই একই
বিষয় তোমাদের মনে করিয়ে দেন l এটাতেই মনন করা দরকার l শব্দ একই 'আমি কে' কিন্তু এর
উত্তর অনেক l লিস্ট বানাও - 'আমি কে?' আচ্ছা l
চারিদিকের সর্বপ্রাপ্তি স্বরূপ, শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সর্ব অলৌকিক রাজ্য সভা অধিকারী
মহান আত্মাদের, সদা আধ্যাত্মিকতার দীপ্তি ধারণকারী বিশেষ আত্মাদের, সদা স্বতঃ যোগী,
সহজযোগী, সর্বোচ্চ আত্মাদের, উঁচুতম বাপদাদার স্নেহ সম্পন্ন স্মরণ-স্নেহ স্বীকার
হোক l
অব্যক্ত বাপদাদার সাথে ডবল বিদেশি ভাই-বোনেদের
সাক্ষাৎকার :
ডবল বিদেশি অর্থাৎ সদা নিজের স্ব-স্বরূপ, স্বদেশ, স্বরাজ্যের স্মৃতিতে থাকা l ডবল
বিদেশিদের বিশেষ কোন্ ধরনের সেবা করতে হবে ? এখন আত্মাদের বিশেষ রূপে সাইলেন্সের
শক্তির অনুভব করাও l এটাও বিশেষ সেবা l সায়েন্সের পাওয়ার যেমন নামিদামী হয়, তাই না
! বাচ্চা-বাচ্চারাও জানে সায়েন্স কি ! সেইরকম সাইলেন্সের পাওয়ার, সায়েন্স থেকেও উঁচু
l সেই দিনও আসবে l সাইলেন্সের পাওয়ারের প্রত্যক্ষতা অর্থাৎ বাবার প্রত্যক্ষতা l
যেমন সায়েন্স প্রত্যক্ষ প্রুফ দেখাচ্ছে, সেইরকম সাইলেন্সের পাওয়ারের প্র্যাকটিক্যাল
প্রুফ হলো, তোমাদের সবার জীবন l যখন এত সব প্র্যাকটিক্যাল প্রুফ দৃশ্যগোচর হবে, তখন
না চাইতেই তোমরা সবার নজরে সহজে এসে যাবে l ঠিক যেমন তোমরা বিগত বছরে এই পীস
প্রকল্পের কাজ করেছ, সেটা স্টেজে প্র্যাকটিক্যালি দেখিয়েছ, সেইরকমই চলতে ফিরতে
পীসের মডেল যদি দৃশ্যমান হয় তাহলে সায়েন্সের লোকেরও নজর সাইলেন্সের লোকের উপরে
অবশ্য যাবে l বুঝেছ ? সায়েন্সের ইনভেনশন বিদেশে বেশি হয় l সুতরাং সাইলেন্সের
পাওয়ারের আওয়াজও সেখান থেকে সহজে ছড়িয়ে পড়বে l সেবার লক্ষ্য তো আছেই, আর তোমাদের
সবার উৎসাহ-উদ্দীপনাও আছে l সেবা ব্যতীত তোমরা থাকতে পার না l যেমন ভোজন ছাড়া কেউ
থাকতে পারে না, ঠিক একইভাবে, তোমরা সেবা ছাড়াও থাকতে পার না, সেইজন্য বাপদাদা খুশি
হন l আচ্ছা !
পাটিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার -
তোমরা স্বদর্শন চক্রধারী শ্রেষ্ঠ আত্মা হয়ে গেছ, নিজেদের এইরকম অনুভব করো ? স্ব-এর
দর্শন হয়ে গেছে, তাই না ? নিজেকে নিজে জানা অর্থাৎ স্ব-এর দর্শন হওয়া আর চক্রের
জ্ঞান জানা অর্থাৎ স্বদর্শন চক্রধারী হওয়া l যখন তোমরা স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে যাও
তখন অন্যান্য সব চক্র সমাপ্ত হয়ে যায় l দেহভাবের চক্র, সম্বন্ধের চক্র, সমস্যার
চক্র - মায়ার কত চক্র ! যতই হোক, স্বদর্শন চক্রধারী হলে এই সব চক্র সমাপ্ত হয়ে যায়,
সব চক্র থেকে তোমরা বেরিয়ে আসো l তা' নয়তো জালে আটকা পড়ে যাও l তোমরা তো আগে আটকে
ছিলে, এখন বেরিয়ে গেছ l ৬৩ জন্ম তো অনেক চক্রে বারবার ফেঁসেছ, আর এই সময় এইসব চক্র
থেকে বেরিয়ে এসেছ, সুতরাং আর আটকা পড়ে যেও না l অনুভব করে দেখে নিয়েছ, না ? অনেক
চক্রে আটকা পড়ে যাওয়ায় সবকিছু হারিয়ে ফেলেছ আর স্বদর্শন চক্রধারী হওয়ায় বাবাকে
পেয়েছ, সুতরাং সবকিছু পেয়ে গেছ l সুতরাং সদা স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে, মায়াজিত হয়ে
সামনে এগিয়ে চলো, এতে সদা হালকা থাকবে, কোনরকম বোঝা অনুভব হবে না l বোঝাই নিচে
নামিয়ে আনে, আর হালকা হলে উড়তে থাকবে l তাহলে তোমরা উড়বে, তাই না ? দুর্বল নও তো ?
যদি একটা পাখাও দুর্বল হয় তাহলে নিচে নামিয়ে আনবে, উড়তে দেবে না, সেইজন্য দু'টো
পাখাই যদি মজবুত হয় তাহলে নিজে থেকেই উড়তে থাকবে l স্বদর্শন চক্রধারী হওয়া অর্থাৎ
উড়তি কলায় যাওয়া l আচ্ছা l
তোমরা রাজযোগী, শ্রেষ্ঠ যোগী আত্মা, তাই না ? সাধারণ জীবন থেকে সহজযোগী, রাজযোগী হয়ে
গেছ l এইরকম শ্রেষ্ঠ যোগী আত্মারা সদাই অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় দোলে l হঠযোগী যোগ
দ্বারা শরীর উঁচুতে উঠায় আর ওড়ার অভ্যাস করে l বাস্তবে, রাজযোগী তোমরা সকলে উঁচু
স্থিতিতে থাকো, সেইজন্য বলা হয়, যোগী উঁচুতে থাকে l সুতরাং মনের স্থিতির স্থান উঁচু,
কারণ তোমরা ডবল লাইট হয়ে গেছ l যাই হোক, ফরিস্তাদের জন্য বলা হয়ে থাকে যে
ফরিস্তাদের পা কখনো ভূমির উপরে থাকে না l ফরিস্তা অর্থাৎ বুদ্ধিরূপী পা ধরণীর উপরে
না থাকা, দেহভাব না থাকা l দেহভাব থেকে সদা উঁচুতে - তোমরা এমনই ফরিস্তা তথা রাজযোগী
হয়ে গেছ l এখন এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি তোমাদের কোনরকম টান থাকে না l সেবা করা আলাদা
ব্যাপার কিন্তু আকর্ষণ যেন না থাকে l যোগী হওয়া অর্থাৎ বাবা আর আমি, তৃতীয় কেউ নয় l
সুতরাং সদা এই স্মৃতি বজায় রাখ যে তোমরা রাজযোগী, সদা ফরিস্তা l এই স্মৃতিতে সদা
অগ্রচালিত হতে থাকবে l রাজযোগী সদা অসীম জগতের মালিক, সীমিত পরিসরের মালিক নয় l
সীমিত পরিসর থেকে বেরিয়ে গেছ l অসীম জগতের অধিকার প্রাপ্ত হয়েছে তোমাদের - এই খুশিতে
থাকো l বাবা যেমন অসীম জগতের, সেইরকম অসীম খুশিতে থাকো, নেশায় থাকো l আচ্ছা l
বিদায়ের সময় :
অমৃতবেলায় সব বরদানী বাচ্চার, বরদাতা বাবার থেকে স্বর্ণালী স্মরণ-স্নেহ স্বীকার হোক
l সেইসঙ্গে স্বর্ণালী দুনিয়া বানানোর সেবার প্ল্যান তোমরা যারা সদা মনন কর এবং সদা
সেবায় মন-প্রাণ নিয়োজিত কর, আন্তরিক স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে তন, মন, ধন দ্বারা তোমরা
যারা সহযোগী আত্মা, তোমাদের সকলকে বাপদাদা গুড মর্নিং, ডায়মন্ড মর্নিং জানাচ্ছেন এবং
সদা ডায়মন্ড হয়ে এই ডায়মন্ড যুগের বিশেষত্বকে বরদান আর অবিনাশী উত্তরাধিকার হিসেবে
নিয়ে নিজেও স্বর্ণালী স্থিতিতে স্থিত থাকবে আর অন্যদেরও এইরকমই অনুভব করাতে থাকবে l
সুতরাং চারিদিকের ডবল হিরো বাচ্চাদের ডায়মন্ড মর্নিং l আচ্ছা l
বরদান:-
দয়াশীল ভাবনা দ্বারা অপকারীর প্রতিও উপকার করে
শুভচিন্তক ভব
যে কোনও ধরনের আত্মা, সে সতোগুণী হোক বা তমোগুণী,
তোমাদের সম্পর্কে এলে তাদের সকলের প্রতি তোমরা শুভচিন্তক অর্থাৎ অপকারীর প্রতি
উপকার করো l কখনো কোনও আত্মার প্রতি ঘৃণা দৃষ্টি রেখো না, কারণ তোমরা জানো যে সে অ-জ্ঞানের
বশীভূত, বিচক্ষণ নয় l তার প্রতি দয়া বা স্নেহ রাখতে হবে, ঘৃণা নয় l শুভচিন্তক আত্মা
এইরকম ভাববে না যে সে কেন এমন করেছে, বরং এটাই ভাববে - এই আত্মার কল্যাণ কীভাবে হবে,
এটাই শুভচিন্তক স্টেজ l
স্লোগান:-
তপস্যার বল দ্বারা অসম্ভবকে সম্ভব করে সফলতা মূর্তি হও l