11.11.2023 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - যত যত তোমরা বাবাকে স্মরণ করবে, ততই তোমাদের বুদ্ধির তালা খুলতে থাকবে, যারা প্রতি মুহূর্তে বাবাকে স্মরণ করতে ভুলে যায়, তারা হলো আনলাকি বাচ্চা”

প্রশ্নঃ -
খাতা জমা করার আধার কী? সবথেকে বেশী উপার্জন কিসে হয়?

উত্তরঃ  
দান করলে খাতা জমা হয়। যত যত তোমরা অন্যদেরকে বাবার পরিচয় দেবে, ততই আমদানী বৃদ্ধি হতে থাকবে। মুরলীর দ্বারা তোমাদের অনেক বেশী উপার্জন হয়। এই মুরলী তোমাদেরকে শ্যামলা থেকে গৌর (সুন্দর) করে তোলে। মুরলীর মধ্যেই ঈশ্বরীয় জাদু আছে। মুরলীর দ্বারাই তোমরা ধনসম্পদে সম্মৃদ্ধ হচ্ছো।

গীতঃ-
আমাদের সেই রাস্তায় চলতে হবে...

ওম্ শান্তি ।
আত্মিক বাবা বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন যে বাচ্চারা, এই জ্ঞান মার্গে হোঁচট খেয়ে পড়তেও হবে আবার নিজেকে সামলে নিতে হবে। মুহূর্মুহূ বাবাকে ভুলে যাও তাই হোঁচট খেয়ে পড়ে যাও। বাবার স্মরণে থাকলে নিজেকে সামলে নিতে পারবে। মায়া বাবার স্মরণ ভুলিয়ে দেয় কেননা এইসব হল নতুন কথা, তাই না। এমনি তে তো বাবাকে কেউ কখনও ভুলে যায় না। স্ত্রী কখনও তার স্বামীকে ভুলে যায় না। বিয়ে হয়ে গেলেই বুদ্ধির যোগ তার প্রতি চলে যায়। ভোলার কোনও কথাই নেই। পতি হল পতি। বাবা হলেন বাবা। এখন ইনি তো হলেন নিরাকার বাবা, যাঁকে সাজনও বলে থাকো। ভক্তদেরকে সজনী বলা হয়। এইসময় সবাই হল ভক্ত। ভগবান হলেন এক। ভক্তদেরকে সজনী, ভগবানকে সাজন বা ভক্তদেরকে বালক, ভগবানকে বাবা বলা যায়। এখন পতিদের পতি বা পিতাদের পিতা হলেন এক তিনিই। প্রত্যেক আত্মার বাবা পরমাত্মা তো আছেনই। সেখানের লৌকিক বাবা তো সকলের আলাদা আলাদা। এই পারলৌকিক পরমপিতা সকল আত্মাদের বাবা হলেন এক গড্ ফাদার, তাঁর নাম হল শিববাবা। কেবল গড্ ফাদার, মাউন্ট আবু লিখলে বলো - চিঠি পৌঁছাবে? নাম তো লিখতে হবে তাই না। ইনি তো হলেন অসীম জগতের বাবা। তাঁর নাম হল শিব। শিবকাশী বলে থাকে তাই না। সেখানে শিবের মন্দির আছে। অবশ্যই সেখানেও গেছেন। দেখায় না যে - রাম এখানে গেছে, সেখানে গেছে, গান্ধী এখানে গেছে… তো অবশ্যই শিববাবারও চিত্র আছে। কিন্তু তিনি তো হলেন নিরাকার। তাঁকে ফাদার বলা হয়। আর কাউকে ‘সকলের ফাদার’ বলা হয় না। তিনি হলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শংকরেরও ফাদার। তাঁর নাম হল শিব। কাশীতেও মন্দির আছে। উজ্জয়িনীতেও শিবের মন্দির আছে। এত মন্দির কেন তৈরী হয়েছে, কেউ তা জানে না। যেরকম লক্ষ্মী-নারায়ণের পূজা করে, বলে যে এনারা স্বর্গের মালিক ছিলেন, কিন্তু স্বর্গ কবে ছিল, এনারা কিকরে মালিক হলেন, এসব কথা কেউ জানে না। পূজারী যার পূজা করে, তাঁর অক্যুপেশনকেই যদি না জানে, তাহলে সেটাকে অন্ধশ্রদ্ধা বলা হবে তাই না। এখানেও বাবা বলছেন কিন্তু সম্পূর্ণ পরিচয় নেই। মাতা-পিতাকে জানে না। লক্ষ্মী-নারায়ণের পূজারী পূজা করে, শিবের মন্দিরে গিয়ে মহিমা করে, গাইতে থাকে - তুমি মাতা-পিতা.… কিন্তু তিনি কিরকম মাতা-পিতা, কবে হয়েছিলেন - কিছুই জানে না। ভারতবাসীরা একদম কিছুই জানে না। খ্রিষ্টান, বৌদ্ধী ইত্যাদি নিজেদের খ্রাইষ্টকে, বৌদ্ধকে স্মরণ করে। দ্রুত তার বায়োগ্রাফি বলে দেবে - খ্রাইষ্ট অমুক সময়ে খ্রীষ্টার্ণ ধর্মের স্থাপনা করতে এসেছিলেন। ভারতবাসী যাকেই পূজা করুক, কিন্তু তিনি কে, তা জানে না? না শিবকে, না ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরকে, না জগদম্বাকে, জগতপিতাকে, না লক্ষ্মী-নারায়ণকে জানে, কেবল পূজা করতে থাকে। তাদের বায়োগ্রাফি সম্বন্ধে কিছুই জানে না। বাবা আত্মাদেরকে বসে বোঝাচ্ছেন - তোমরা যখন স্বর্গে ছিলে তখন তোমাদের আত্মা আর শরীর দুটোই পবিত্র ছিল, তোমরা তখন রাজত্ব করতে। তোমরা জানো যে অবশ্যই আমরা রাজত্ব করেছিলাম, আমরা পুনর্জন্ম নিয়েছি। ৮৪ জন্ম ভোগ করতে-করতে বাদশাহী হারিয়ে ফেলেছি। গোরা থেকে কালো হয়ে গেছি। সুন্দর ছিলাম, এখন শ্যাম হয়ে গেছি। আজকাল তো নারায়ণকেও শ্যাম বর্ণ দেখায়, এথেকে প্রমাণিত হয় যে তিনিই শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন, পরে শ্রীনারায়ণ হন। কিন্তু এই কথাকে কেউ বুঝতে পারে না।

যাদব হলো মিসাইল ইনভেন্টকারী আর কৌরব-পাণ্ডব ভাই-ভাই ছিল। সেখানে আসুরিক ভাই আর এখানে হল দৈব ভাই। ইনিও আসুরিক ছিলেন, এনাকে বাবা শ্রেষ্ঠ বানিয়ে দৈব ভাই বানিয়েছেন। দুই ভাই-এর যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছিল? অবশ্যই পাণ্ডবদের জয় হয়েছিল, আর কৌরবদের বিনাশ হয়েছিল। এখানে বসে যদিও মাম্মা-বাবা বলে ডাকে, কিন্তু কিছুই জানে না। বাবার শ্রীমতে চলে না। জানে না যে বাবা আমাদেরকে রাজযোগ শেখাচ্ছেন। নিশ্চয় থাকে না। দেহ-অভিমানী হওয়ার কারণে, দেহের মিত্র-সম্বন্ধীদেরকে স্মরণ করতে থাকে। এখানে তো দেহী (আত্মিক) বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এটা হল নতুন কথা। মানুষ তো কিছুই বুঝতে পারে না। এখানে মাতা-পিতার কাছে বসে থেকেও তাকে জানে না। এটা আশ্চর্যের বিষয় তাই না। জন্মই এখানে হয়েছে। তথাপি জানেনা, কারণ তিনি হলেন নিরাকার। তাঁকে ভালোভাবে বুঝতে পারে না। তাঁর শ্রীমতে চলে না তাই আশ্চর্যবৎ ভাগন্তী হয়ে যায়। যার দ্বারা স্বর্গের ২১ জন্মের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, তাঁকে না জানার কারণে ছেড়ে চলে যায়। যারা বাবাকে জানে তাদেরকে বখ্তাবর (ভাগ্যবান) বলা হয়। দুঃখ থেকে লিবারেট করেন তো এক বাবা-ই। দুনিয়াতে দুঃখ তো অনেক আছে। এটা হলই ভ্রষ্টাচারী রাজ্য। ড্রামা অনুসারে পুনরায় ৫ হাজার বছর পর এইরকমই ভ্রষ্টাচারী সৃষ্টি হবে, পুনরায় বাবা এসে সত্যযুগী শ্রেষ্ঠাচারী স্বরাজ্য স্থাপন করবেন। তোমরা মানুষ থেকে দেবতা হতে এসেছো। এটা হল মানুষের দুনিয়া। দেবতাদের দুনিয়া সত্যযুগে হয়। এখানে আছে পতিত মানুষ, পাবন দেবতা সত্যযুগে হবে। এসব কথা তোমাদেরকেই বোঝানো হয়, তোমরা যারা ব্রাহ্মণ হয়েছো। যারা ব্রাহ্মণ হবে, তাদেরকেই বোঝানো হবে। সবাই তো আর ব্রাহ্মণ হবে না। যারা ব্রাহ্মণ হয়েছে, তারাই পুনরায় দেবতা হবে। ব্রাহ্মণ না হলে তো দেবতা হতে পারবে না। বাবা-মাম্মা বলেছো তো ব্রাহ্মণ কুলে এসেছো। তারপর তো হল পড়াশোনার আধারে পুরুষার্থ। এখন কিংডম্ (রাজধানী) স্থাপন হচ্ছে আর ইব্রাহিম, বুদ্ধ প্রমুখ কেউই কিংডম্ স্থাপন করে না। খ্রাইষ্ট একা এসেছে। কারো মধ্যে প্রবেশ করে খ্রীষ্টার্ন ধর্ম স্থাপন করেছে। তারপর তো যারা খ্রীস্টান ধর্মের আত্মারা উপরে ছিল, তারা আসতে থাকে। এখন সকল খ্রীস্টান আত্মারা এখানে আছে। এখন অন্তিম সময়ে সবাইকে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। বাবা সকলের গাইড হয়ে সবাইকে দুঃখ থেকে লিবারেট করছেন। বাবা-ই হলেন সমগ্র মনুষ্যজাতির লিবারেটার আর গাইড। সকল আত্মাদেরকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। আত্মা পতিত হওয়ার কারণে বাড়ি ফিরে যেতে পারে না। নিরাকারী দুনিয়া তো হল পবিত্র তাই না। এখন এই সাকারী সৃষ্টি হল পতিত। এখন এদের সকলকে পবিত্র কে বানাবেন, যাতে এরা নিরাকারী দুনিয়াতে যেতে পারে? এইজন্য আহ্বান করে, ও গড্ ফাদার এসো। গড্ ফাদার বলছেন যে আমি একই বার আসি, যখন সমগ্র দুনিয়া ভ্রষ্টাচারী হয়ে যায়। কতো গুলি-বারুদ ইত্যাদি তৈরী হচ্ছে - একে-অপরকে মারার জন্য। একদিকে তো বম্ব তৈরী করছে, অন্যদিকে আবার ন্যাচারাল ক্লাইমেটিস (প্রাকৃতিক বিপর্যয়), ফ্লাডস্ (বন্যা), আর্থকোয়েক (ভূমিকম্প) ইত্যাদি হবে, বিদ্যুৎ চমকাবে, সবাই অসুস্থ হয়ে পড়বে কেননা জৈব সার তো তৈরী হতে হবে তাই না। নোংরা পচনশীল দ্রব্য থেকেই তো সার তৈরী হয়, তাই না। তো এই সমগ্র সৃষ্টিতে জৈব সার চাই, যার দ্বারা ফার্স্ট ক্লাস বৃক্ষ উৎপাদন হবে। সত্যযুগে কেবল ভারতই ছিল। এখন এত সকলের বিনাশ হতে হবে। বাবা বলছেন - আমি এসে দৈবী রাজধানী স্থাপন করি, অন্যদিকে সবকিছু বিনাশ হয়ে যাবে, বাদবাকি তোমরা স্বর্গে চলে যাবে। স্বর্গকে তো সবাই স্মরণ করে তাই না। কিন্তু স্বর্গ কাকে বলা হয়, এটা কারো জানা নেই। কেউ মারা গেলে বলে স্বর্গবাসী হয়েছে। আরে কলিযুগে যারা মরবে তারা অবশ্যই কলিযুগেই পুনর্জন্ম নেবে তাই না। এতটাও বুদ্ধি কারো নেই। ‘ডক্টর অফ্ ফিলোসোফি’ নাম রেখে দেয়, বুঝতে কিছুই পারে না। মানুষ মন্দিরে বসবাসের যোগ্য ছিল। সেটা হল ক্ষীর সাগর আর এটা হল বিষয় সাগর। এইসব কথা বাবা-ই বোঝাচ্ছেন। পড়াবেন তো মানুষকেই, জন্তু-জানোয়ারকে তো পড়াবেন না, না!

বাবা বোঝাচ্ছেন, এই ড্রামা দৈবনির্ধারিত। যেরকম ধনবান মানুষ, সেইরকমই তাদের ফার্নিচার হবে। গরীবের কাছে মাটির পাত্র থাকবে, ধনবানদের কাছে তো অনেক বৈভব থাকবে। তোমরা সত্যযুগে ধনবান হবে তখন তোমাদের হিরে-জহরতের মহল থাকবে। সেখানে কোনও নোংরা আবর্জনা থাকবে না, দুর্গন্ধ থাকবে না। এখানে তো চারিদিকে দুর্গন্ধ তাই ধূপ জ্বালানো হয়। সেখানে তো ফুল ইত্যাদিতে ন্যাচারাল সুগন্ধি থাকবে। ধূপ জ্বালানোর দরকারই পড়বে না, তাকে হেভেন বলা হয়। বাবা হেভেনের মালিক বানানোর জন্য পড়াচ্ছেন। দেখো, কিরকম সাধারণ। এইরকম বাবাকে স্মরণ করতেও ভুলে যায়! পুরোপুরি নিশ্চয় নেই তাই ভুলে যায়। যাঁর থেকে স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, এইরকম মাতা-পিতাকে ভুলে যাওয়া কতটা দুর্ভাগ্যের ব্যাপার! বাবা এসে উঁচুর থেকেও উঁচু বানাচ্ছেন। এইরকম মাতা-পিতার শ্রীমতে না চললে তো ১০০ শতাংশ মোস্ট আনলাকি বলা হবে। নম্বরের ক্রমানুসার তো আছে তাই না। কোথায় পড়াশোনা করে বিশ্বের মালিক হওয়া, কোথায় নকর-চাকর হওয়া! তোমরা বুঝতে পারো যে আমরা কতটা পড়াশোনা করছি। সেখানে তো কেবল ধর্ম পিতারা আসে ধর্ম স্থাপন করার জন্য, এখানে মাতা-পিতা আছেন কেননা এটা হল প্রবৃত্তি মার্গ তাই না। পবিত্র প্রবৃত্তি মার্গ ছিল। এখন হল অপবিত্র প্রবৃত্তি মার্গ। লক্ষ্মী-নারায়ণ পবিত্র ছিলেন তো তাদের সন্তানও পবিত্র ছিলেন। তোমরা জানো যে আমরা কি হতে চলেছি? মাতা-পিতা কতো উচ্চ বানাচ্ছেন তাই তাকে ফলো করতে হবে তাই না! ভারতকেই মাদার-ফাদার কান্ট্রি বলা হয়। সত্যযুগে সবাই পবিত্র ছিল, এখানে সবাই হল পতিত। কত ভালোভাবে বোঝানো হয় কিন্তু বাবাকে স্মরণ না করলে বুদ্ধির তালা বন্ধ হয়ে যায়। শুনতে-শুনতে পড়া ছেড়ে দেয় তো বুদ্ধির তালা একদম বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলেও নম্বরের ক্রমানুসার আছে। পাথরবুদ্ধি আর পারসবুদ্ধি বলা হয়। পাথর বুদ্ধি কিছুই বুঝতে পারে না, সারাদিনে ৫ মিনিটও বাবাকে স্মরণ করে না। ৫ মিনিট স্মরণ করলে তো এতটুকুই তালা খুলবে। বেশী স্মরণ করলে তো ভালোভাবে তালা খুলে যাবে। সবকিছুর আধার হল স্মরণ। কোনো কোনো বাচ্চা বাবাকে পত্র লেখে - প্রিয় বাবা বা প্রিয় দাদা। এখন কেবল প্রিয় দাদা লিখে পোস্টে চিঠি ফেললে তো দাদার কাছে পৌঁছাবে? নাম তো চাই তাই না! দাদা-দাদী তো দুনিয়াতে অনেক আছে। আচ্ছা!

আজ হলো দীপাবলী। দীপাবলীতে নতুন খাতা রাখে। তোমরা হলে সত্যিকারের ব্রাহ্মণ। লৌকিকের ব্রাহ্মণরা ব্যবসায়ীদের দিয়ে নতুন খাতা রাখায়। তোমাদেরকেও নতুন খাতা রাখতে হবে। কিন্তু এটা হল নতুন দুনিয়ার জন্য। ভক্তি মার্গের খাতা হল সীমাহীন লোকসানের খাতা। তোমরা অসীম জগতের উত্তরাধিকার গ্রহণ করছো, অসীম জগতের সুখ-শান্তি প্রাপ্ত করছো। এই অসীম জগতের কথা অসীম জগতের বাবা বসে বোঝাচ্ছেন আর অসীম সুখ প্রাপ্তকারী বাচ্চারাই এই সব বুঝতে পারে। বাবার কাছে কোটির মধ্যে কয়েকজনই আসে। চলতে-চলতে উপার্জনে ঘাটতি দেখা দেয় তখন যেটুকু জমা হয় সেটাও না-এর সমান হয়ে যায়। তোমাদের খাতা তখন বৃদ্ধি পাবে যখন কাউকে দান করবে। দান না করলে আমদানীর বৃদ্ধি হয় না। তোমরা পুরুষার্থ করছো যাতে আমদানীর বৃদ্ধি হয়। সেটা তখন হবে, যখন কাউকে দান করবে, কারো ভালো করবে। কাউকে বাবার পরিচয় দেওয়া মানে জমা হওয়া। পরিচয় না দিলে তো জমাও হবে না। তোমাদের উপার্জন হল অনেক অনেক বড়। মুরলী থেকে তোমাদের সত্যিকারের উপার্জন হয়, কেবল এটা বুঝতে হবে যে মুরলী কার? এটাও তোমরা বাচ্চারা জানো - যারা শ্যামলা হয়ে গেছে তাদেরকেই গৌর বানানোর জন্য মুরলী শুনতে হবে। ‘তোমার মুরলীতে জাদু আছে’। ‚ঈশ্বরীয় জাদু’ বলে তাই না। তো মুরলীতে ঈশ্বরীয় জাদু আছে। এই জ্ঞানও তোমাদের এখনকার জন্য। দেবতাদের মধ্যে এই জ্ঞান ছিল না। যখন তাদের মধ্যেই জ্ঞান ছিল না তো তাদের পরবর্তী সময়ের মানুষের মধ্যে জ্ঞান কিকরে থাকবে? শাস্ত্র ইত্যাদি যাকিছু পরবর্তী সময়ে তৈরী হয়েছে, সেই সব বিনাশ হয়ে যাবে। তোমাদের এই সত্যিকারের গীতা তো খুবই অল্প। দুনিয়াতে তো সেই গীতা প্রায় লক্ষ সংখ্যক আছে। বাস্তবে এই চিত্রই হল সত্যিকারের গীতা। সেই গীতাতে এত কিছু বুঝতে পারবে না, যতটা এই চিত্র দেখে বুঝতে পারবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) ভালোভাবে পড়াশোনা করে নিজেকে বখ্তাবর (ভাগ্যবান) বানাতে হবে। দেবতা হওয়ার জন্য পাক্কা ব্রাহ্মণ হতে হবে।

২ ) দেহী বাবাকে স্মরণ করার জন্য দেহী-অভিমানী হতে হবে। দেহকেও ভোলার অভ্যাস করতে হবে।

বরদান:-
সর্বদা নিজেকে সারথী আর সাক্ষী মনে করে দেহ-ভাব থেকে পৃথক থাকা যোগযুক্ত ভব

যোগযুক্ত থাকার সরল বিধি হলো - সর্বদা নিজেকে সারথী আর সাক্ষী মনে করে চলা। এই রথের চালক হলাম আমি আত্মা সারথী, এই স্মৃতি স্বতঃ এই রথ অথবা দেহ থেকে বা কোনো প্রকারের দেহ-ভাব থেকে পৃথক বানিয়ে দেয়। দেহ ভাব নেই তো সহজেই যোগযুক্ত হয়ে যায় আর প্রত্যেক কর্মও যুক্তিযুক্ত হয়। নিজেকে সারথী মনে করলে সকল কর্মেন্দ্রিয় নিজের কন্ট্রোলে থাকে। সে কোনও কর্মেন্দ্রিয়ের বশীভূত হতে পারবে না।

স্লোগান:-
বিজয়ী আত্মা হতে হলে অ্যাটেনশন আর অভ্যাস - একে নিজস্ব সংস্কার বানিয়ে নাও।