12-11-2023 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
22-03-96 মধুবন
‘‘ব্রাহ্মণ জীবনের পার্সোনালিটি - সব প্রশ্নের
ঊর্ধ্বে সদা প্রসন্নচিত্ত থাকা’’
আজ সর্বপ্রাপ্তি দাতা, বাপদাদা নিজের সর্বপ্রাপ্তি স্বরূপ বাচ্চাদের দেখছেন।
বাপদাদার দ্বারা বহুল প্রাপ্তি তো হয়েছে, যদি সেসবের বর্ণনা করো তবে তা' কিন্তু
অনেক লম্বা লিস্ট, বলার পরিবর্তে তোমরা এটাই বর্ণন করে থাকো, 'এই ব্রাহ্মণ জীবনে
কোনো বস্তু অপ্রাপ্ত নয়।' তাইতো বাপদাদা দেখছেন যে, প্রাপ্তি তো অনেক, লম্বা লিস্ট
রয়েছে তো না! সুতরাং যার সর্বপ্রাপ্তি হয়েছে তার লক্ষণ হিসেবে প্রত্যক্ষ জীবনে কী
প্রতীয়মান হবে তা' জানো তো না? সর্বপ্রাপ্তির লক্ষণ হলো - সর্বদা তার মুখে আর আচরণে
প্রসন্নতার পার্সোনালিটি দেখা যাবে। পার্সোনালিটিই যে কোনো কাউকে আকর্ষণ করে। অতএব,
সর্বপ্রাপ্তির লক্ষণ হলো প্রসন্নতার পার্সোনালিটি, যাকে বলাও হয়ে থাকে সন্তুষ্টতা।
কিন্তু আজকাল প্রসন্নতার যে দীপ্তি মুখমন্ডলে সদা প্রতিভাস হতে দেখা যাবে, তা' দেখা
যায় না। কখনো প্রসন্নচিত্ত কখনো প্রশ্নচিত্ত, দুইরকমের। এক - সামান্য পরিস্থিতির
উদ্ভব হলো তো প্রশ্নচিত্ত - কেন, কী, কীভাবে, কখন... এ হলো প্রশ্নচিত্ত। আর প্রাপ্তি
স্বরূপ সদা প্রসন্ন চিত্ত হবে। তার কখনও কোনো বিষয়ে কোশ্চেন (প্রশ্ন) থাকবে না।
কেননা, সর্বপ্রাপ্তিতে তারা সম্পন্ন। সুতরাং এই কেন, কী যা আছে তা' হলো সংশয়। যারা
সম্পন্ন হয় তাদের মধ্যে সংশয় উৎপন্ন হয় না। যে খালি থাকে, তার মধ্যে সংশয় থাকে।
সুতরাং নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করো যে, আমি সদা প্রসন্ন চিত্ত থাকি? কখনো কখনো নাকি
সদা? যারা ১০ বছরের তারা তো সদা হবে নাকি না? হ্যাঁ বলছো না, ভাবছো? প্রসন্নতা যদি
কম হয় তাহলে তার কারণ প্রাপ্তি কম আর প্রাপ্তি কম হওয়ার কারণ হলো কিছু না কিছু ইচ্ছা
রয়েছে। ইচ্ছার ফাউন্ডেশন ঈর্ষা আর অপ্রাপ্তি। অতি সূক্ষ্ম ইচ্ছাগুলো অপ্রাপ্তির দিকে
টেনে নেয়, তারপরে রয়্যাল রূপে এটাই বলে যে, আমার ইচ্ছা নেই, কিন্তু যদি হয়ে যায় তো
ভালো। কিন্তু যেখানে অল্পকালের ইচ্ছা থাকে, সেখানে ভালো (হিন্দি আচ্ছা) হতে পারে
না। সুতরাং চেক করো - জ্ঞানের জীবনেই হোক না কেন, জ্ঞানের রয়্যাল রূপের ইচ্ছাগুলো
বা স্থূলরূপের ইচ্ছাগুলো এখন দেখা গেছে যে স্থূলরূপের সব ইচ্ছা সমূহ তো সমাপ্ত হয়েছে,
কিন্তু রয়্যাল ইচ্ছেগুলো জ্ঞানের পরে সূক্ষ্মরূপে থেকে গেছে, সেটা চেক করো। কারণ
বাপদাদা এখন সব বাচ্চাকে বাবা সমান সম্পন্ন, সম্পূর্ণ বানাতে চান। যাঁর প্রতি প্রেম
থাকে তাঁর সমান হওয়া কোনো বিশেষ কঠিন হয় না।
তাহলে, বাপদাদার প্রতি সকলের খুব ভালোবাসা আছে নাকি ভালোবাসা আছে? (খুব ভালোবাসা আছে)
নিশ্চিত তোমরা? তো ভালোবাসার জন্য ত্যাগ করা কিংবা পরিবর্তন করা কোনো বড় ব্যাপার
কী? (না)। তাহলে সম্পূর্ণ ত্যাগ করেছো? যা বাবা বলে থাকেন, যা বাবা চেয়ে থাকেন তা'
করেছো তোমরা? নিরন্তর করেছো? কখনো কখনো দ্বারা কাজ হবে না। সদাসর্বদার রাজ্য-ভাগ্য
প্রাপ্ত করতে চাও নাকি কখনো কখনোর? সদাসর্বদার জন্য চাই তো না? অতএব, সদা প্রসন্নতা,
অন্য কোনও ভাব যেন মুখে বা আচরণে প্রতীয়মান না হয়। কখনো কখনো তোমরা বলে থাকো তো না
আজ বহন জী কিংবা ভাইজীর মুড অন্য রকম ! তোমরা নিজেদের জন্যও বলো আজ আমার মুড
অন্যরকম। তো এটাকে তোমরা কী বলবে? সদা প্রসন্নতা হয়েছে? কোনো কোনো বাচ্চা প্রশংসার
আধারে প্রসন্নতা অনুভব করে কিন্তু সেই প্রসন্নতা অল্পকালের। আজ আছে, কিছু সময় পরে
সমাপ্ত হয়ে যাবে। সুতরাং এটাও চেক করো, আমার প্রসন্নতা প্রশংসার আধারে নয় তো? যেমন,
আজকাল যখন গৃহ নির্মাণ করে তো সিমেন্টের সাথে বালির মাত্রা বেশি দিয়ে মিক্স করে। তো
এটাও সে'রকমই, যা মিক্স (মিশেল) ফাউন্ডেশন, যথার্থ নয়। তাইতো, সামান্য পরিস্থিতির
ঝড় যদি আসে অথবা কোনও রকম দোলাচল হয় তবে প্রসন্নতা সমাপ্ত করে দেয়। তো এইরকম
ফাউন্ডেশন তো নয়, তাই না?
বাপদাদা আগেও বলেছিলেন, এখন আবারও আন্ডারলাইন করাচ্ছেন যে, রয়্যাল রূপের ইচ্ছার
স্বরূপ হলো নাম, মান আর যশ। সার্ভিসের আধার নেয়, সার্ভিসে নাম হবে। কিন্তু যে নামের
জন্য সেবা করে অল্পকালের জন্য তার নাম তো হয়ে যায় - খুব ভালো সার্ভিসেবল, ভালোই
আকৃষ্ট করতে পারে, কিন্তু নামের আধারে যারা সেবা করে উঁচু পদে তাদের নাম পিছনে হয়ে
যায়। কারণ অপক্ক ফল খেয়ে নিয়েছে, পরিপক্কই হয়নি। তো পাকা ফল কোথায় খাবে, কাঁচাই খেয়ে
নিয়েছে। এখন-এখনই সেবা করেছে, এখন-এখনই নাম পেয়েছে তো সেটা হলো কাঁচা ফল, কিংবা
ইচ্ছা রেখেছো যে, আমি তো অনেক সেবা করেছি, সবচাইতে বেশি সেবার নিমিত্ত আমি, এই
নামের আধারে সেবা হয়েছে - এটা বলা হবে কাঁচা ফল ভক্ষণকারী। তো কাঁচা ফলে শক্তি থাকে
কি? কিংবা সেবা করেছি, তো সেবার রেজাল্টে আমার মান পাওয়া উচিত। এটা মান নয় বরং
অভিমান। যেখানে অভিমান থাকে সেখানে প্রসন্নতা থাকতে পারে না। বাপদাদার হৃদয়ে মর্যাদা
প্রাপ্ত করো, সর্বাপেক্ষা মহান গৌরব। ওই সব রয়্যাল ইচ্ছা প্রাপ্তি-স্বরূপ হতে দেয়
না, সেইজন্য প্রসন্নতার পার্সোনালিটি সদা মুখে এবং আচরণে প্রতীয়মান হয় না। যে কোনো
পরিস্থিতিতে প্রসন্নতার মুড যদি পরিবর্তন হয় তাহলে সদকালীন প্রসন্নতা বলা হবে না।
ব্রাহ্মণ জীবনের মুড সদা চিয়ারফুল আর কেয়ারফুল হবে, মুড বদল করা
উচিত নয়। আবার রয়্যাল রূপে তোমরা কী বলো, আজ আমার বড়ই একান্তের প্রয়োজন। কেন
প্রয়োজন? কারণ সেবা এবং পরিবার থেকে সরে থাকতে চায়, আর বলে শান্তি চাই, একান্ত চাই।
আজ আমার মুড এ'রকম। তো মুড বদল ক'রো না। কারণ যাই হোক না কেন, কিন্তু তোমরা তো
কারণকে নিবারণ করে থাকো, নাকি কারণে যেতে চাও? তোমরা নিবারণকারী। কী দায়িত্ব নিয়েছো
তোমরা? তোমরা কন্ট্রাক্টর তো না? তো কী কন্ট্রাক্ট নিয়েছো যে, প্রকৃতির মুড চেঞ্জ
করবে! প্রকৃতিকেও চেঞ্জ করতে হবে তো না? তাহলে, যারা প্রকৃতির পরিবর্তন করে তারা
নিজের মুডকে পরিবর্তন করতে পারো না? মুড চেঞ্জ হয় কি হয় না? কখনো কখনো হয়? পরে বলবে
সাগরের কিনারে গিয়ে বসি, জ্ঞান সাগর নন, স্থূল সাগর। ফরেনার্স এমন বলে থাকো তো না?
নাকি বলবে জানিনা, আজ একা একা লাগছে। তাহলে বাবার কম্বাইন্ড রূপ কোথায় গেল? আলাদা
করে দিয়েছো? কম্বাইন্ড থেকে একলা হয়ে গেছো, একে কী ভালোবাসা বলে? তো যে কোনও ধরনের
মুড, এক তো হয় মুড অফ, সেটা তো অনেক বড় ব্যাপার, কিন্তু মুড পরিবর্তন হওয়া এটাও
ঠিক নয়। যাদের মুড অফ তারা তো বিভিন্ন ধরনের অনেক খেলা দেখায়, বাপদাদা দেখেন তারা
বড়দেরকে অনেক খেলা দেখায় কিংবা নিজের সাথীদের অনেক খেলা দেখায়। এ'রকম খেলা ক'রো না।
কেননা, বাপদাদার সব বাচ্চার প্রতি ভালোবাসা রয়েছে। বাপদাদা এটা চান না যে যারা
বিশেষ নিমিত্ত, তারা বাবা সমান হয়ে যাক আর বাকীরা হোক কিংবা না হোক, না। সবাইকে
সমান বানাতেই হবে, এটাই বাপদাদার ভালোবাসা। তাহলে, কীভাবে ভালোবাসার রেসপন্স দিতে
হয় জানো তোমরা? নাকি দুষ্টুবুদ্ধি খাটিয়ে রিটার্ন করো? কখনো তোমরা দুষ্টামি ভরা খেলা
দেখাও আর কখনো সমান হয়ে দেখাও। এখন সেই সময় সমাপ্ত হয়েছে।
এখন তোমরা ডায়মন্ড জুবিলী পালন করছো তো না? তো ৬০ বছর পরে এমনিতেই বাণপ্রস্থ শুরু
হয়। তো এখন তোমরা ছোট বাচ্চা নও। এখন বাণপ্রস্থ অর্থাৎ সব কিছু জ্ঞাত, অনুভাবী
আত্মা তোমরা। নলেজফুল তোমরা, পাওয়ারফুল তোমরা, সাকসেসফুল তোমরা। যেমন সর্বদা
নলেজফুল, তেমনই পাওয়ারফুল আর সাকসেসফুলও তো না? কখনো কখনো সাকসেসফুল কেন হতে পারো
না? তার কারণ কী? এমনিতে তো সফলতা তোমাদের সকলের জন্মসিদ্ধ অধিকার । বলে থাকো তোমরা
না? কেবল মুখেই বলো নাকি মানোও সেটা? তাহলে সফল হও না কেন? এর কারণ কী? যখন সেটা
নিজের জন্মসিদ্ধ অধিকার, তবে অধিকার প্রাপ্ত হতে, অনুভূত হওয়াতে ঘাটতি কেন? কারণ
কী? বাপদাদা দেখেছেন - মেজরিটি নিজের দুর্বল সংকল্পকে আগে ইমার্জ করে থাকো তোমরা
যে, কি জানি হবে কি হবে না! তো এই নিজেরই দুর্বল সংকল্প প্রসন্নচিত্ত নয় বরং
প্রশ্নচিত্ত বানিয়ে দেয়। হবে কি হবে না? কি হবে? জানি না... এই সংকল্প প্রাচীর হয়ে
দাঁড়ায় আর সফলতা সেই প্রাচীরের আড়ালে লুকিয়ে পড়ে। নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী - এটাই
তো তোমাদের স্লোগান তাই না? এই স্লোগান যখন এখনকার, ভবিষ্যতের নয়, বর্তমানের, তবে
সর্বদা প্রসন্নচিত্ত থাকা উচিত নাকি প্রশ্নচিত্ত? তো মায়া নিজেরই দুর্বল সংকল্পের
জাল বিস্তার করে ফেলে আর নিজেরই জালে তোমরা ফেঁসে যাও। আমি তো বিজয়ীই - এর দ্বারা
দুর্বল জালকে সমাপ্ত করো। ফেঁসো না, বরং সমাপ্ত করো। সমাপ্ত করার শক্তি আছে? ধীরে
ধীরে ক'রো না, হঠাৎ করে সেকেন্ডে এই জালকে বাড়তে দিও না। একটি বারের জন্যও যদি এই
জালে ফেঁসে গেলে, তবে তার থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে যাবে। বিজয় হলো আমার বার্থ
রাইট, সফলতা হলো আমার বার্থ রাইট। এই বার্থ রাইট হলো পরমাত্ম বার্থ রাইট, একে কেউ
কেড়ে নিতে পারে না - এই রকম নিশ্চয়বুদ্ধি, সদা প্রসন্নচিত্ত সহজে আর স্বতঃতই থাকবে।
পরিশ্রম করার প্রয়োজনই নেই। অসফলতার দ্বিতীয় কারণ কী? তোমরা তো অন্যদেরকেও বলতে
থাকো যে, সময়, সংকল্প, সম্পত্তি সব সফল করো। তো সফল করা অর্থাৎ সফলতা পাওয়া। সফল
করাই হলো সফলতার আধার। সফলতা যদি না পাওয়া যায়, তবে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো খাজানাকে
সফল করোনি, সেই কারণেই সফলতা আসেনি। খাজানার লিস্টকে তো জানো তোমরা না? তাই চেক করো
- কোন্ খাজানাকে সফল করোনি, ব্যর্থ নষ্ট করেছো? তো স্বাভাবিকভাবেই প্রাপ্ত হয়ে যাবে।
এটা যেমন সম্পদের উত্তরাধিকার আবার বরদানও - সফল করো আর সফলতা পাও। তো সফল করতে জানো
নাকি জানা নেই? তো সফলতা লাভ হয়? সফল করাই হলো বীজ আর সফলতা হলো ফল। বীজ যদি ভালো
হয়, তবে ফল পাওয়া যাবে না এটা হতেই পারে না। সফল করার বীজেই কিছুর অভাব রয়েছে,
সেই কারণেই সফলতার ফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে কি করতে হবে? সর্বদা প্রসন্নতার
পার্সোনালিটিতে থাকো। প্রসন্নচিত্ত থাকলে অত্যন্ত ভালো অনুভব করবে। এমনিতেও কাউকে
যদি প্রসন্নচিত্ত দেখো, তবে কতো ভালো লাগে! তার সঙ্গ-তে থাকতে, তার সাথে কথা বলতে,
বসতে কতো ভালো লাগে! আর প্রশ্নচিত্ত বিশিষ্ট কেউ যদি চলে আসে তবে কেমন বিরক্ত হয়ে
যাও! সুতরাং এই লক্ষ্য রাখো - কী হতে হবে? প্রশ্নচিত্ত নয়, প্রসন্নচিত্ত।
আজ হলো সীজনের লাস্ট দিন। তো লাস্টে কি করা হয়? কোনো যজ্ঞ রচিত হলে লাস্টে কি করা
হয়ে থাকে? স্বাহা করা হয়। অতএব তোমরা কি করবে? প্রশ্নচিত্তকে স্বাহা করো। এই রকম
কেন হয়? এইসব কী হচ্ছে?... না। নলেজফুল তোমরা না? তাই কেন, কি নয়। সুতরাং আজ থেকে
এই ব্যর্থ প্রশ্নকে স্বাহা। তোমাদেরও টাইম বেঁচে যাবে আর অন্যদেরও টাইম বেঁচে যাবে।
দাদীদের টাইমও এতে যায়। এটা কেন, এটা কি, এই রকম কী করে! তো এই সময়কে বাঁচাও,
নিজেরও আর অন্যদেরও। সাশ্রয়ের খাতা জমা করো। এরপর ২১ জন্ম আরামে খাও, দাও, আনন্দ
করো, সেখানে জমা করতে হবে না। তাহলে স্বাহা করেছো নাকি ভাববে? ভাবতে চাইলে ভাবো।
নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করে নাও যে কীভাবে হবে, এটা করতে পারবো কি পারবো না? এটা এক
মিনিটে ভেবে নাও, পাকাপাকি ভাবে করে নাও। নিজেকে যতগুলি প্রশ্ন করতে চাও এক মিনিটে
জিজ্ঞাসা করে নাও। জিজ্ঞাসা করে নিয়েছো? স্বাহাও করে নিয়েছো নাকি কেবল প্রশ্ন
জিজ্ঞাসা করেছো? এরপরে আর কোনও প্রশ্ন নয়। (এক মিনিট সাইলেন্সের পরে) শেষ করেছো? (হ্যাঁ
বাবা) এমনিই হ্যাঁ বলে দিও না। যখন অনেক কালের অনুভব হলো প্রশ্নচিত্ত অর্থাৎ
চিন্তিত (distressed) হওয়া আর অন্যকে চিন্তায় ফেলা। ভালোই অনুভব আছে তোমাদের না!
তো নিজের নিশ্চয় আর জন্মসিদ্ধ অধিকারের গড়িমাতে থাকো তবে চিন্তান্বিত হবে না। যখন
এই গড়িমার থেকে দূরে সরে যাও, তখনই চিন্তাগ্রস্ত হও। বুঝেছো? খুব ভালো ভাবে বুঝেছো
নাকি এখনই বলবে যে - হ্যাঁ বুঝেছি আর ফরেনে গিয়েই বলবে করাটা খুব কঠিন! এই রকম নয়
তো?
এক সেকেন্ডে অশরীরী হওয়া - এই পাঠ পাক্কা আছে? এখনই এখনই বিস্তার, এখনই এখনই সারে
মিশে যাও। (বাপদাদা ড্রিল করালেন) আচ্ছা - এই অভ্যাসকে সব সময় সাথে রাখবে।
চতুর্দিকের সকল প্রশ্নচিত্ত থেকে পরিবর্তীত হওয়া, সর্বদা প্রসন্নচিত্তের
পার্সোনালিটি বিশিষ্ট শ্রেষ্ঠ আত্মাদেরকে, সদা নিজের বিজয় আর জন্ম সিদ্ধ অধিকারের
স্মৃতিতে থাকা, স্মৃতি স্বরূপ বিশেষ আত্মারা, সর্বদা সফল করার ফলে সহজে সফলতার
অনুভবকারী, বাবার সমীপ আত্মাদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার । ডবল
বিদেশের চতুর্দিকের ১০ বছরের যে সব বাচ্চারা রয়েছে, তাদেরকে বিশেষ অভিনন্দন আর
স্মরণের স্নেহ-সুমন।
দাদীদের প্রতি : -
বাপদাদার আপনাদের অর্থাৎ পরিবারের শিরোমুকুট নিমিত্ত
আত্মাদের জন্য "চিরঞ্জিবী হও, উড়তে থাকো আর ওড়াতে থাকো" - এই সংকল্প সব সময় থাকে।
নিজেদের তপস্যার শক্তির দ্বারা নিজের শরীরকে তো আপনারা চালাচ্ছেন, কিন্তু আপনাদের
থেকে বেশী বাপদাদার চিন্তা ভাবনা থাকে। সেইজন্য এই সময় অনুসারে এত বেশী ট্যুর
করবেন না। আরামে যান আর আসুন। কেননা বিশ্বের পরিস্থিতিও ফাস্ট বদলে যাচ্ছে। সেইজন্য
বাপদাদা সেবার জন্য মানা করছেন না, কিন্তু ব্যালেন্স। সবার প্রাণ আপনাদের শরীরে
রয়েছে, শরীর ঠিক থাকলে সেবাও ভালো মতো হতে থাকবে। সেইজন্য খুব সেবা করুন। কিন্তু
বেশী ধাক্কা লাগাবেনও না, অল্প ধাক্কা লাগান। বেশী ধাক্কা লাগালে কী হয়? ব্যাটারি
স্লো হয়ে যায়। সেইজন্য এখন থেকেই ব্যালেন্স রাখা জরুরী। এই রকম ভাববেন না যে, এই
বছর তো করে নিই, পরের বছর জানি না কি আছে? না। বাঁচতে হবে আর উড়তে হবে। এখন তো
আপনাদের পার্ট তাই না? তো নিজের পার্টকে বুঝে ধাক্কা লাগান, কিন্তু ব্যালেন্স রেখে
ধাক্কা দিন। ঠিক আছে। ফাস্ট প্রোগ্রাম নয়, দুই দিন এখানে তো তৃতীয় দিন ওখানে, না।
এখন সেটার টাইম আসেনি, যখন এই রকম সময় আসবে তখন এক দিনে চার - চারটি স্থানে যেতে
হতে পারে, কিন্তু এখন নয়। আচ্ছা।
বরদান:-
দিব্য গুণ গুলির আহ্বানের দ্বারা সকল অবগুণ গুলির
আহূতি দিয়ে থাকা সন্তুষ্ট আত্মা ভব
দীপাবলীতে যেমন বিশেষ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আর
উপার্জনের দিকে খেয়াল রাখা হয়, সেই রকম তোমরাও সকল প্রকারের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা
আর উপার্জনের দিকে লক্ষ্য রেখে সন্তুষ্ট আত্মা হও। সন্তুষ্টতার দ্বারাই সকল দিব্য
গুণের আহ্বান করতে পারবে। তখন স্বভাবতঃই অবগুণ গুলির আহূতি হয়ে যায় । ভিতরে যে যে
দুর্বলতা, ঘাটতি, কোমলতা রয়ে গেছে, সে'গুলিকে সমাপ্ত করে এখন নতুন খাতা শুরু করো
আর নতুন সংস্কারের নতুন বস্ত্র পরিধান করে সত্যিকারের দীপাবলী পালন করো।
স্লোগান:-
বাবার আজ্ঞাকারী হয়ে থাকো, তবে গুপ্ত দুয়া সময় মতো
সহায়তা করতে থাকবে।