14-02-2021 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
02-11-87 মধুবন
"স্ব - পরিবর্তনের আধার - 'সত্যিকারের হৃদয়ের অনুভূতি"
আজ বিশ্ব পরিবর্তক, বিশ্ব কল্যাণকারী বাপদাদা তাঁর স্নেহী,
সহযোগী, বিশ্ব পরিবর্তক বাচ্চাদেরকে দেখছেন। প্রত্যেকে নিজে পরিবর্তনের দ্বারা
বিশ্ব পরিবর্তন করবার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে রেখেছে। সকলের মনে একটিই উৎসাহ
উদ্দীপনা যে, এই বিশ্বকে পরিবর্তন করতেই হবে আর এই নিশ্চয়ও (দৃঢ় বিশ্বাস) আছে যে,
পরিবর্তন তো হবেই অথবা বলা যেতে পারে পরিবর্তন হয়েই আছে। কেবল নিমিত্ত বাপদাদার
সহযোগী, সহজযোগী হয়ে বর্তমান আর ভবিষ্যতকে শ্রেষ্ঠ বানাচ্ছে।
আজ বাপদাদা চতুর্দিকের নিমিত্ত বিশ্ব পরিবর্তক বাচ্চাদেরকে দেখার সময় একটি বিশেষ
জিনিস দেখছিলেন - সকলে একই কার্যের জন্য নিমিত্ত, লক্ষ্যও সকলের স্ব-পরিবর্তন আর
বিশ্ব-পরিবর্তনই, কিন্তু স্ব-পরিবর্তন বা বিশ্ব-পরিবর্তনের নিমিত্ত হওয়া সত্ত্বেও
নম্বর ক্রম অনুসারে কেন ? কোনো কোনো বাচ্চা স্ব পরিবর্তন খুবই সহজে আর তাড়াতাড়িও
করে নিতে পারে আর কোনো কোনো বাচ্চা এখনই পরিবর্তনের সংকল্প করবে, কিন্তু নিজের
সংস্কার বা মায়া আর প্রকৃতির দ্বারা আগত পরিস্থিতি কিম্বা ব্রাহ্মণ পরিবারের দ্বারা
যে সব হিসাব মেটানোর আছে, সেইসবব হিসাবপত্র তাদের শ্রেষ্ঠ পরিবর্তনে উৎসাহে ভাটা এনে
দেয়। আবার কোনো কোনো বাচ্চার মধ্যে পরিবর্তন করবার সাহসেরই ঘাটতি রয়েছে। যেখানে
সাহস নেই, সেখানে উৎসাহ উদ্দীপনাও নেই। আর স্ব পরিবর্তন বিনা বিশ্ব পরিবর্তনের
কার্যে কখনোই মনের মতো (আশানুরূপ) সফলতা আসবে না। কেননা এই অলৌকিক ঈশ্বরীয় সেবা হল
একই সময়ে তিন প্রকারের সেবার সিদ্ধি। সেই তিন প্রকারের সেবা একসাথে কী কী ? এক -
বৃত্তি, দুই - ভাইব্রেশন (প্রকম্পন), তিন - বাণী। তিনটিই শক্তিশালী নিমিত্ত,
নির্মান ( নিরহংকার) আর নিঃস্বার্থ - এর আধারে। আর তখনই মনের মতো সফলতা পাওয়া সম্ভব।
নতুবা সেবা হবে, নিজেকে বা অন্যদেরকে অল্প সময়ের জন্য সেবার সফলতার কারণে খুশী তো
করে দেয়, কিন্তু আশানুরূপ সফলতা, যার কথা বাপদাদা বলেন, সেইরূপ হয় না। বাপদাদাও
বাচ্চাদের খুশীতে খুশী হয়ে যান, কিন্তু দিলারামের হৃদয়ে যথাশক্তি রেজাল্ট অবশ্যই
নোট হয়ে যায়। শাবাশ! শাবাশ! তো অবশ্যই বলবেন, কেননা বাবার তো সব বাচ্চাদের উপরে
বরদানের দৃষ্টি আর বৃত্তি থাকে যে, এই বাচ্চা আজ নয় তো কাল সিদ্ধি স্বরূপ অবশ্যই
হবেই হবে। কিন্তু তিনি তো বরদাতার সাথে সাথে শিক্ষকও, সেইজন্য পরবর্তীকালের জন্য
অ্যাটেনশন দেওয়ার কথাও মনে করিয়ে দেন।
তো আজ বাপদাদা বিশ্ব পরিবর্তনের কার্যের আর বিশ্ব পরিবর্তক বাচ্চাদের রেজাল্ট
দেখছিলেন। বাচ্চাদের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রাপ্ত হচ্ছে, আওয়াজ চতুর্দিকে ছড়াচ্ছে,
প্রত্যক্ষতার পর্দা উন্মোচিত হওয়াও শুরু হয়ে গেছে। চতুর্দিকের আত্মাদের এখন ইচ্ছা
উৎপন্ন হচ্ছে যে, কাছে গিয়ে দেখি। এতদিন যেটা এদিক - ওদিক থেকে শুনেছে, এখন সেটা
দেখার ইচ্ছাতে পরিবর্তিত হচ্ছে। এই সব পরিবর্তন হচ্ছে। তবুও ড্রামা অনুসারে এখনও
পর্যন্ত বাবা এবং নিমিত্ত হওয়া শ্রেষ্ঠ আত্মাদের শক্তিশালী প্রভাবের পরিণাম স্বরূপ
এই রূপ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যদি মেজরিটি এই বিধির দ্বারা সিদ্ধি প্রাপ্ত করে, তবে
অতি দ্রুত সকল ব্রাহ্মণ সিদ্ধি স্বরূপ রূপে প্রত্যক্ষ হয়ে যাবে। বাপদাদা দেখছিলেন
- 'দিলপছন্দ', 'লোকের পছন্দ', 'বাবার পছন্দ' মতো সফলতার আধার 'স্ব-পরিবর্তনের' এখন
অভাব রয়েছে আর 'স্ব-পরিবর্তন' এর অভাব কেন রয়েছে ? তার মূল আধার হল একটি বিশেষ
শক্তির অভাব। সেই বিশেষ শক্তিটি হল - 'অনুভূত হওয়ার শক্তি' ।
যে কোনো পরিবর্তনের সহজ আধার হল অনুভূতি করবার শক্তি। যতক্ষণ পর্যন্ত অনুভূত হওয়ার
শক্তি আসবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত অনুভূতি হবে না আর যতক্ষণ পর্যন্ত না অনুভূতি হচ্ছে,
ততক্ষণ পর্যন্ত ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্বের ফাউন্ডেশন মজবুত নয়। তোমার ব্রাহ্মণ
জীবনকে আদি থেকে সামনে নিয়ে এসো।
'প্রথম পরিবর্তন' - আমি হলাম আত্মা, বাবা হল আমার - এই পরিবর্তন কীসের আধারে হয়েছে
? যখন অনুভব করো যে, হ্যাঁ, আমি হলাম আত্মা, ইনিই হলেন আমার বাবা।' তবেই অনুভূতি
আসবে, তখনই পরিবর্তন হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না অনুভূতি আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সাধারণ
গতিতে চলতে থাকে আর যেই মুহূর্তে অনুভূতি শক্তি অনুভব করাবে, তখনই তীব্র পুরুষার্থী
হয়ে যাবে । এই রকম পরিবর্তনের যে যে বিশেষ বিষয় গুলি রয়েছে - তা সে রচয়িতার
বিষয়েই হোক, কিম্বা রচনার বিষয়ে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সকল বিষয়ে অনুভূতি না করবে যে,
হ্যাঁ, এটা হল সেই সময়, সেই যোগ, আমিও হলাম সেই শ্রেষ্ঠ আত্মা - ততক্ষণ পর্যন্ত
কর্মে উৎসাহ - উদ্দীপনা আসবে না । কারো কারো বায়ুমন্ডলের প্রভাবে অল্প সময়ের জন্য
পরিবর্তন হবে, কিন্তু সেটা চিরস্থায়ী হবে না। অনুভূতি করবার শক্তি সদাকালের জন্য
সহজে পরিবর্তন করে নেবে।
এই অনুসারে স্ব-পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত অনুভূতি করবার শক্তি না আসছে,
ততক্ষণ পর্যন্ত সদাকালের শ্রেষ্ঠ পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়। এতে বিশেষতঃ দুটি বিষয়ের
অনুভূতি প্রয়োজন । এক - নিজের দুর্বলতাকে অনুভব করা। দ্বিতীয় - যে পরিস্থিতি বা
ব্যক্তির কারণে হচ্ছে, তার ইচ্ছা আর তার মনের ভাবনা বা ব্যক্তির দুর্বলতা কিম্বা
পরবশের স্থিতির অনুভূতি । পরিস্থিতির পেপারের কারণকে জেনে, নিজে পাশ করবার শ্রেষ্ঠ
স্বরূপের অনুভূতিতে থাকবে যে - আমি হলাম শ্রেষ্ঠ, স্ব-স্থিতি হল শ্রেষ্ঠ, পরিস্থিতি
হল পেপার। এই অনুভূতি সহজেই পরিবর্তন করিয়ে নেবে আর পাশ করিয়ে দেবে। অন্যদের ইচ্ছা
বা অন্যদের স্ব-উন্নতিরও অনুভূতি হল স্ব-উন্নতির আধার । তো স্ব-পরিবর্তন - অনুভূতির
শক্তি ছাড়া হওয়া সম্ভব নয়। এতেও এক হল হৃদয় সঞ্জাত অনুভূতি, দ্বিতীয় হল - মস্তিষ্ক
সঞ্জাত অনুভূতি। কেননা তোমরা তো অনেক নলেজফুল হয়ে গেছ। সময়কে বিবেচনা করে নিজেকে
প্রমাণিত করবার জন্য, খ্যাতনামা হওয়ার জন্য সেই সময় হয়ত অনুভবও করে নেবে, কিন্তু
এই অনুভূতির মধ্যে শক্তি থাকে না যার দ্বারা নিজেকে পরিবর্তন করে নিতে পারবে। অতএব
হৃদয় সঞ্জাত অনুভূতি দিলারামের আশীর্বাদকে প্রাপ্ত করায় আর মস্তিষ্ক সঞ্জাত অনুভূতি
সাময়িক সময়ের জন্য অন্যদেরকেও খুশী করায় আর নিজেকেও।
তৃতীয় প্রকারের অনুভূতি - মন বুঝতে পারে যে এটা ঠিক নয়, বিবেক বলতে থাকে এটা
যথার্থ নয়, কিন্তু সকলের সামনে নিজেকে মহারথী প্রমাণিত করবার জন্য, নিজের নাম যাতে
পরিবারের মাঝে দুর্বল বা খাটো যাতে না হয়ে যায়, তার জন্য নিজের বিবেকেরও খুন করতে
থাকে। এই বিবেককে নিধন করাও হল পাপ। নিজেকে হনন (জীবঘাত, সুইসাইড) করা যেমন মহাপাপ,
ঠিক তেমনই এও পাপের খাতাতে জমা হয়ে যায়। সেইজন্য বাপদাদা হাসতে থাকেন আর তাদের
মনের মধ্যে কী ডায়লগ চলছে তা শুনতে থাকেন। ডায়লগ গুলোও খুব সুন্দর হয়। মূল কথা
হল - এই রকম যাদের অনুভূত হয় যে, কে জানতে পারবে, এই রকমই চলছে...। কিন্তু বাবার
কাছে রয়েছে প্রতিটি পাতার খবর। কেবল মুখে বললেই জানা যাবে না, সব জেনেও বাবা যেন
জানেন না এইরকম ভোলাভালা হয়ে ভোলানাথ রূপে বাচ্চাদেরকে পরিচালিত করেন। তিনি কিন্তু
সব জানেন, তাও ভোলা কেন হয়ে যান ? কারণ তিনি হলেন দয়াবান পিতা, বুঝেছো ? এই রকম
বাচ্চারা 'চতুরসুজান' (সবচেয়ে চতুর) বাবার কাছেও, নিমিত্ত আত্মাদের সামনে অতিরিক্ত
চতুর হওয়ার চেষ্টা করে। সেইজন্য বাবা দয়াবান, ভোলানাথ হয়ে যান।
বাপদাদার কাছে প্রতিটি বাচ্চার প্রতিটি কর্মের, মনের সংকল্পের খাতা স্পষ্ট ভাবে থাকে।
বাচ্চাদের অন্তরকে জানবার প্রয়োজন হয় না, প্রতিটি বাচ্চার হৃদয়ের স্পন্দনরেখা
পর্যন্ত বাবার জানা। সেইজন্য তিনি বলেন, আমি বাচ্চাদের হৃদয়কে জানিনা, কেননা জানার
প্রয়োজন নেই, সেটা এতটাই স্পষ্ট বাবার কাছে । প্রতিটি মুহূর্তের হৃদয়ের স্পন্দন বা
মনের সংকল্পের চার্ট বাপদাদার সামনে রয়েছে । তিনি বলে দিতেও পারেন, এমন নয় যে বলতে
পারবেন না। তিথি, স্থান, সময় আর কী কী করেছে - সব বলে দিতে পারবেন। সেইজন্য জেনেও
যেন জানেন না। তো বাবা আজ সমস্ত চার্ট দেখলেন।
স্ব-পরিবর্তন তীব্রগতিতে না হওয়ার কারণ - 'আন্তরিক ভাবে অনুভূতি'র অভাব। অনুভূতির
শক্তি অতি মধুর অনুভব করিয়ে থাকে। এ তো তোমরা জানো, তাই না ! কখনো নিজেকে বাবার
আলোক রত্ন আত্মা (নূরে রতন) অর্থাৎ বাবার নয়নে সমায়িত থাকা শ্রেষ্ঠ বিন্দু অনুভব
করো। নয়নে তো বিন্দুই কেবল সমায়িত হতে পারে, শরীর তো সমায়িত হতে পারে না। কখনো
নিজেকে ললাটে ঝলমলে উজ্জ্বল মস্তক-মণি, ঝিলিমিলি করা তারা অনুভব করো, কখনো নিজেকে
ব্রহ্মা বাবার সহযোগী, রাইট হ্যান্ড সাকার ব্রাহ্মণ রূপে ব্রহ্মার ভুজ রূপে অনুভব
করো। কখনো অব্যক্ত ফরিস্তা স্বরূপ অনুভব করো। এইরূপ অনুভূতি করবার শক্তির দ্বারা
অনেক অনুপম, অলৌকিক অনুভব করতে থাকো। কেবল নলেজের মতো করে বর্ণনা নয়, অনুভব করো।
এই অনুভূতি করবার শক্তিকে বাড়াও, তাহলে অন্যান্য যে সব দুর্বলতা গুলি রয়েছে,
সেগুলি তোমার কাছে স্পষ্ট ভাবে প্রতিভাত হবে । শক্তিশালী দর্পণের মধ্যে ছোট্ট একটু
দাগও তখন স্পষ্ট দেখতে পাওয়া গেলে তখন পরিবর্তনও করে নিতে পারবে। তাহলে বুঝতে পেরেছো,
স্ব-পরিবর্তনের আধার হল অনুভূতি করবার শক্তি । শক্তিকে কার্যে ব্যবহার করো, কেবল
গুণে গুণে খুশী হয়ে যেও না - হ্যাঁ, এটাও শক্তি, এটাও শক্তি। বরং নিজের প্রতি,
সকলের প্রতি, সেবার প্রতি সদা সকল কার্যে ব্যবহার করো। বুঝতে পেরেছো ? কোনো কোনো
বাচ্চারা বলে, বাবা কী এই কাজই করতে থাকেন ? কিন্তু বাবা বলেন, সাথে তো নিয়ে যেতেই
হবে। যখন সাথে নিয়ে যেতেই হবে, তবে সাথীও তো এমনই চাই, তাই না ! সেইজন্য বাপদাদা
দেখতে থাকেন আর সমাচার শোনাতে থাকেন যাতে সাথী সমান হয়ে যায়। পিছনে - পিছনে যারা
আসবে তাদের তো কোনো প্রশ্নই নেই, তাদের সংখ্যা তো অনেক। কিন্তু সাথী তো সমান চাই,
তাই না ! তোমরা সাথী নাকি বরযাত্রী ? বরযাত্রী তো অনেক লম্বা হবে, তাইতো বলা হয়
শিবের বরযাত্রী । বরযাত্রী তো ভ্যারাইটি ধরনের হবে, কিন্তু সাথী তো এইরকম চাই, তাই
না !
এ হল ইস্টার্ন জোন। ইস্টার্ন জোন কী করছে ? প্রত্যক্ষতার সূর্য কোথা থেকে উদয় হবে
? বাবার অবতরণ হয়, সে তো এখন পুরানো খবর । কিন্তু এখন কী করবে ? ব্রহ্মা বাবার
পুরানো রাজত্ব - তোমাদের এই নেশা তো খুব ভালো, কিন্তু এখন কী করবে ? এখন কোনো
নতুনত্বের সূর্যের উদয় ঘটাও, যাতে সকলের মুখ থেকে এটাই নির্গত হয় যে, এই ইস্টার্ন
জোন থেকে নতুনত্বের সূর্যোদয় হয়েছে ! যে কাজ আজ অবধি কেউ করেনি, তোমরা এখন সেটা
করে দেখাও। ফাংশন করা, সেমিনার করা, ভি. আই
পি.দের (বিশিষ্ট ব্যক্তি) সেবা করা, খবরের কাগজে ছাপানো - এ'সব তো সবাই করে, কিন্তু
নবীনত্বের কিছু ঝলক দেখাও। বুঝতে পেরেছো ?
বাবার গৃহ হল নিজের গৃহ। আরামে এখানে পৌঁছে গেছো। হৃদয়ের আরাম স্থূল আরামও প্রদান
করিয়ে থাকে। হৃদয়ের আরাম না হলে, আরামের সব বন্দোবস্ত থাকলেও বে-আরাম মনে হবে।
হৃদয়ের আরাম রয়েছে অর্থাৎ হৃদয়ে সদা রাম সাথে রয়েছে। সেইজন্য যে কোনো
পরিস্থিতিতেই আরাম অনুভূত হয়। আরাম আছে না ? নাকি আসা - যাওয়া বে-আরামের মনে হয় ?
তাও মিষ্টি ড্রামারই লিখন মনে করো। মেলা তো উপভোগ করছো তাই না ? বাবার সাথে মিলন,
পরিবারের সাথে মিলিত হওয়া - এ হল মেলা উপভোগ করবার মিষ্টি মধুর ভবিতব্য। আচ্ছা।
সর্বশক্তিশালী শ্রেষ্ঠ আত্মাদেরকে, প্রতিটি শক্তিকে সময় মতো কার্যে ব্যবহারকারী
সকল তীব্র পুরুষার্থী বাচ্চাদেরকে, সদা স্ব-পরিবর্তনের দ্বারা সেবায় 'দিলপছন্দ'
সফলতা প্রাপ্তকারী দিলখুশ বাচ্চাদেরকে, সদা দিলারাম বাবার সামনে সততার (সত্য হৃদয়
দিয়ে) সাথে স্পষ্ট থাকা সফলতা-স্বরূপ শ্রেষ্ঠ আত্মাদেরকে দিলারাম বাপদাদার অন্তর
থেকে স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
পার্টিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার -
সর্বদা নিজেকে বাবার ছত্রছায়ার মধ্যে থাকা বিশেষ আত্মা অনুভব করো ? যেখানে বাবার
ছত্রছায়া রয়েছে, সেখানে সর্বদা মায়ার থেকে সেফ থাকবে। ছত্রছায়ার মধ্যে মায়া আসতে
পারবে না। পরিশ্রম থেকে স্বতঃতই দূর হয়ে যাবে। সদা মৌজে থাকবে, কেননা যখন পরিশ্রম
হয়, তখন পরিশ্রম মৌজ অনুভূত করতে দেয় না। যেমন বাচ্চারা যখন পড়াশোনা করে তখন
পড়াশোনার পিছনে পরিশ্রম করতে হয়। যখন পরীক্ষার দিন এগিয়ে আসে তখন তো আরো বেশী
পরিশ্রম করতে হয়। আনন্দ করে খেলতে পারে না। আর যখন পরিশ্রম শেষ হয়ে যায়, পরীক্ষা
শেষ হয়ে যায়, তখন তো মৌজ করে। তাই যেখানে পরিশ্রম রয়েছে, সেখানে আনন্দ (মৌজ) নেই।
যেখানে মৌজ রয়েছে সেখানে পরিশ্রম নেই। ছত্রছায়ার মধ্যে থাকা অর্থাৎ সদা মৌজে থাকা।
কেননা এখানকার পড়াশোনার মান অনেক উচ্চ, কিন্তু তোমাদের এই পড়াশোনা উচ্চ শ্রেণীর
হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের মনে এই নিশ্চয় রয়েছে যে, আমরা বিজয়ীই। পাশ তো হয়েই আছি।
সেইজন্য তোমরা মৌজে থাকো। কল্প কল্পের পাঠ, নতুন কিছুই নয়। তাই সদা মৌজে থাকো আর
অন্যদেরকেও মৌজে থাকার সন্দেশ দিতে থাকো, সেবা করতে থাকো। কেননা সেবার ফল এই সময়
এখন এবং ভবিষ্যতেও খেতে থাকবে। সেবা করবে তবে তো ফল পাবে।
বিদায় নেওয়ার সময় -
বাপদাদা সকল বাচ্চাকে সমান বানানোর শুভ ইচ্ছার সাথে ওড়াতে চান। নিমিত্ত হওয়া
সেবাধারী তো বাপ-সমান হয়ই, যেভাবেই হোক বাবাকে বানাতেই হবে। কেননা যেমন তেমনকে তো
বাবা সাথে নিয়ে যাবেনই না। বাবারও তো মর্যাদা রয়েছে, তাই না ! বাবা সম্পন্ন আর
সাথী কানা খোঁড়া তো বেমানান হয়ে যাবে। কানা খোঁড়া এরা তো বরযাত্রী হবে, সাথী নয়।
সেইজন্য শিবের বরযাত্রী সব সময় কানা খোঁড়াই দেখানো হয়। কেননা কিছু দুর্বল আত্মা
ধর্মরাজপুরী হয়ে যাওয়ার মতো তৈরী হবে।
বরদান:-
সেবার স্টেজে সমায়িত করবার (মানিয়ে নেওয়া) শক্তির
দ্বারা সফলতার প্রতিমূর্তি হয়ে ওঠা মাস্টার সাগর হও
যখন তোমরা সেবার স্টেজে আসো, তখন নানান রকমের বিষয়
সামনে আসে, সেই সব বিষয় গুলিকে নিজের মধ্যে যদি সমায়িত করে নাও, তবে সফলতার
প্রতিমূর্তি হয়ে যাবে । সমায়িত করা অর্থাৎ সংকল্পের রূপেও কারো মনে যেন বাইরের
কারো কোনো কথা কিম্বা ভাবনা বিন্দুমাত্রও মিশে না থাকে । অকল্যাণকারী শব্দ কল্যাণের
ভাবনাতে এমনভাবে বদলে দাও যেন সেটা অকল্যাণের মতো কোনো শব্দই নয়। অবগুণকে গুণে,
নিন্দাকে স্তুতিতে বদলে দাও - তবে বলা হবে মাস্টার সাগর ।
স্লোগান:-
বিস্তারকে না দেখে সারকে দেখে বা নিজের মধ্যে সমায়িত করে নেয় যে, সে-ই হল তীব্র
পুরুষার্থী।