15-01-2023 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
18-11-19 মধুবন
"সঙ্গমযুগের রাজদুলাল তথা ভবিষ্যতের রাজ্য অধিকারী"
আজ, সকল বাচ্চার দিলারাম বাবা চারদিকে তাঁর নিজের সব রাজা-
বাচ্চাকে দেখছেন। প্রত্যেক বাচ্চা দিলারামের সমাদরের যোগ্য। এই দিব্য আদর,
পরমাত্ম-মর্যাদা কোটির মধ্যে কতিপয় ভাগ্যবান আত্মাদেরই প্রাপ্ত হয়। অনেক জন্ম
আত্মাদের কিংবা মহান আত্মাদের দ্বারা স্নেহাদর অনুভব করেছ। এখন এই অলৌকিক জন্মে
পরমাত্ম-ভালোবাসা বা মর্যাদা অনুভব করছ। এই দিব্য স্নেহাদরে তোমরা রাজদুলাল হয়ে গেছ,
সেইজন্য দিলারাম বাবারও গর্ব হয় যে আমার প্রত্যেক বাচ্চা রাজা বাচ্চা। তোমরা রাজা
তো না? প্রজা তো নও? সবাই নিজের টাইটেল কী বলো? রাজযোগী। সবাই রাজযোগী, নাকি কেউ
কেউ প্রজাযোগীও? সবাই রাজযোগী তো প্রজা কোথা থেকে আসবে? কা'র উপরে রাজত্ব করবে?
প্রজা তো দরকার, তাই না? সুতরাং সেই প্রজাযোগী কবে আসবে? রাজদুলাল অর্থাৎ এখনেরও
রাজা আর ভবিষ্যতেরও রাজা। ডবল রাজত্ব। শুধু ভবিষ্যতের রাজত্ব নয়। ভবিষ্যতের আগে এখন
স্বরাজ্য অধিকারী হয়েছ। নিজের স্বরাজ্যের রাজ্য-কারবার চেক করো? যেমন, ভবিষ্যৎ
রাজত্বের মহিমা করো - এক রাজ্য, এক ধর্ম, সুখ, শান্তি, সম্পদশালী রাজ্য, ঠিক তেমন
ভাবেই, হে স্বরাজ্য অধিকারী রাজে! স্বরাজ্যের রাজ-কারবারে এই সব বিষয় সদা থাকে?
এক রাজ্য অর্থাৎ সদা আমি আত্মার রাজ্য এই সব রাজ-কারবারী
কর্মেন্দ্রিয়ের উপর ন্যস্ত, নাকি মাঝে মাঝে স্বরাজ্যের পরিবর্তে পর-রাজ্য নিজের
অধিকার, এমন করো না তো? পর-রাজ্য হলো মায়ার রাজ্য। পর-রাজত্বের লক্ষণ পর-অধীন হয়ে
যাওয়া। স্বরাজ্যের লক্ষণ হলো সদা শ্রেষ্ঠ অনুভব করবে। পর-রাজ্য পর-অধীন তথা পরবশ
বানায়। যখনই কোনো অন্য রাজা কোনো রাজ্যের অধিকার প্রাপ্ত করে তখন প্রথমে রাজাকেই
কয়েদি বানায় অর্থাৎ পর-অধীন বানায়। সুতরাং চেক করো এক রাজ্য কিনা! কিংবা মাঝে মাঝে
মায়ার রাজ্য অধিকারী, তোমরা সব স্বরাজ্য অধিকারী রাজাকে কিংবা তোমাদের কর্মেন্দ্রিয়
রূপী কোনও রাজ-কারবারীকে পরবশ বানিয়ে দেয় না তো? তাহলে, তোমাদের এক রাজ্য নাকি দুটো
রাজ্য? তুমি স্বরাজ্য অধিকারীর ল' অ্যান্ড অর্ডার চলে নাকি মাঝে মাঝে মায়ারও অর্ডার
চলে?
এর সাথে এক ধর্ম, ধর্ম অর্থাৎ ধারণা। তাহলে স্বরাজ্যের এক
ধর্ম বা এক ধারণা কোনটা? 'পবিত্রতা।' মন, বচন, কর্ম, সম্বন্ধ, সম্পর্ক সব রকমের
মধ্যে পবিত্রতা - একেই বলা হয়ে থাকে এক ধর্ম অর্থাৎ এক ধারণা। স্বপ্ন মাত্র,
সঙ্কল্প মাত্রও অপবিত্রতা অর্থাৎ অন্য ধর্ম যেন না হয়, কারণ যেখানে পবিত্রতা থাকে
সেখানে অপবিত্রতা অর্থাৎ ব্যর্থ অথবা বিকল্পের লেশমাত্র থাকবে না। এমন শক্তিশালী
সম্রাট হয়েছ? নাকি ঢিলেঢালা রাজা তুমি? নাকি কখনো ঢিলা, কখনো সম্রাট? কোন ধরনের রাজা
তুমি? যদি এখন ছোট একটা জন্মের রাজ্য চালাতে না পারো তবে ২১ জন্মের রাজ্য অধিকার
কীভাবে প্রাপ্ত করবে? এখন সেই সংস্কার তোমরা ভরছ। এখনের শ্রেষ্ঠ সংস্কার দ্বারা
ভবিষ্যৎ সংসার তৈরি হবে। সুতরাং এখন থেকে এক রাজ্য, এক ধর্মের সংস্কার ভবিষ্যৎ
সংসারের ফাউন্ডেশন।
সুতরাং চেক করো - সুখ, শান্তি, সম্পত্তি অর্থাৎ সদা সীমিত
প্রাপ্তির আধারে তোমাদের সুখ, নাকি পরমাত্ম-সুখময়-রাজত্বের আত্মিক অতীন্দ্রিয় সুখ
থাকে? সাধন (সুযোগ-সুবিধা) বা স্যালভেশন অথবা প্রশংসার আধারে সুখের অনুভূতি, নাকি
তোমাদের রাজ্য পরমাত্ম-আধারে অতীন্দ্রিয় সুখময় রাজ্য? এই ভাবে অখন্ড শান্তি - কোনও
রকমের অশান্তির পরিস্থিতি অখন্ড শান্তিকে খন্ডিত করে দেয় না তো না? অশান্তির তুফান
তা' বড় হোক বা ছোট, কিন্তু স্বরাজ্য অধিকারীর জন্য তুফান যেন অনুভাবী বানানোর উড়তি
কলার উপহার হয়ে যায়, লিফ্টের গিফ্ট হয়ে যায়। একেই বলে, অখন্ড শান্তি। সুতরাং চেক করো
অখন্ড শান্তিময় স্বরাজ্য আছে কিনা।
ঠিক এইভাবেই, সম্পত্তি অর্থাৎ স্বরাজ্যের সম্পত্তি জ্ঞান,
গুণ আর শক্তি। এই সমস্ত সম্পত্তি দ্বারা তোমরা সম্পন্ন স্বরাজ্য অধিকারী হয়েছ?
সম্পন্নতার নিদর্শন - সম্পন্নতা অর্থাৎ সদা সন্তুষ্টতা, অপ্রাপ্তির লেশমাত্র নেই।
সীমাবদ্ধ দুনিয়ার সবরকম ইচ্ছার অবিদ্যাকে বলা হয়ে থাকে সম্পত্তিবান। আর রাজার অর্থই
দাতা। যদি সীমিত ইচ্ছার বা প্রাপ্তির উদ্ভব হয় তাহলে সে রাজা হওয়ার পরিবর্তে ভিখারী
হয়ে যায়, সেইজন্য নিজের স্বরাজ্য অধিকারকে ভালোভাবে চেক করো, আমার স্বরাজ্য এক
রাজ্য, এক ধর্ম, সুখ-শান্তি সম্পন্ন হয়েছে? নাকি এখনও তৈরি হচ্ছ? যদি রাজা তৈরি
হচ্ছ তো তখন রাজ্য অধিকারী স্থিতি থাকে না তাহলে সেই সময় তোমরা কী হও? প্রজা হয়ে
যাও অথবা না রাজা, না প্রজা! মাঝখানে আছ তোমরা? এখন মাঝখানে থেকো না। এটাও ভেবো না
যে, অন্তে হয়ে যাবে। যদি বহুকালের রাজ্য-ভাগ্য প্রাপ্ত করতেই হয়, তাহলে অবশ্যই
বহুকালের স্ব-রাজত্ব করা চাই, তবেই তার ফল হবে বহুকালের রাজত্ব প্রাপ্তি। ফুল (পূর্ণ)
সময়ের রাজ্য অধিকারের আধার বর্তমানের সদাকালের স্বরাজ্য। বুঝেছ? কখনো অমনোযোগী হয়ো
না। হচ্ছে, হবে করতে থেকো না। বাচ্চারা খুব মিষ্টি মিষ্টি কথায় বাপদাদাকে ভুলায়।
রাজা হওয়ার পরিবর্তে অনেক বড় উকিল হয়ে যায়। এমন-এমন ল' পয়েন্টস শোনায় যাতে বাপদাদাও
স্মিতহাসি হাসতে থাকেন। উকিল ভালো নাকি রাজা ভালো? খুব চালাকি দ্বারা ওকালতি করো,
অতএব, এখন ওকালতি করা ছাড়ো, রাজদুলাল হও। বাচ্চাদের প্রতি বাবার স্নেহ আছে সেইজন্য
দেখেশুনেও স্মিতহাস্য করেন। এই মুহূর্তে তিনি ধর্মরাজকে কাজে লাগাচ্ছেন না।
স্নেহ সবাইকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্নেহের কারণেই এখানে পৌঁছে
গেছ, তাই না! তাইতো, স্নেহের রেসপন্সে বাপদাদাও পদম্ গুন স্নেহের রিটার্ন দিচ্ছেন।
দেশ-বিদেশের সব বাচ্চা স্নেহের বিমানে মধুবনে পৌঁছেছ। বাপদাদা সাকার রূপে এখানে
উপস্থিত তোমাদের সবাইকে এবং সর্বত্র স্নেহ স্বরূপে সব বাচ্চাকে দেখছেন। আচ্ছা!
স্নেহে সমাহিত হওয়া সমীপ বাচ্চাদের, সব স্বরাজ্য অধিকারী তথা
বিশ্ব রাজ্য অধিকারী শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সর্বপ্রাপ্তি সম্পন্ন শ্রেষ্ঠ সম্পত্তিবান
বিশেষ আত্মাদের, সদা এক ধর্ম, এক রাজ্য সম্পন্ন স্বরাজ্য অধিকারী বাবা সমান
ভাগ্যবান আত্মাদের ভাগ্যবিধাতা বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।
দাদিদের সাথে সাক্ষাৎকার :― সব
কার্য ভালো ভাবে চলছে তো না? ভালো উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে কার্য হচ্ছে। করাবনহার
করাচ্ছেন আর নিমিত্ত হয়ে করনহার করছে, এমন অনুভব হয় তো না? সকলের সহযোগের আঙুল
দ্বারা সব কার্য সহজ আর সফল হয়। কীভাবে হচ্ছে তা' জাদু মনে হয়, তাই না! দুনিয়ার লোকে
তো শুধু দেখে আর ভাবতে থাকে। আর সেখানে তোমরা নিমিত্ত আত্মারা সদা অগ্রচালিত হবে,
কেননা, তোমরা নিশ্চিন্ত বাদশাহ। দুনিয়ার লোকের তো প্রতি কদমে চিন্তা থাকে আর
তোমাদের সকলের সঙ্কল্পে পরমাত্ম-চিন্তন, সেইজন্য তোমরা নিশ্চিন্ত। নিশ্চিন্ত থাকো
তো না? এটা ভালো, তোমাদের অবিনাশী সম্বন্ধ আছে। আচ্ছা, তো সব ঠিকভাবে চলছে এবং
চলতেই হবে। তোমাদের নিশ্চয় আছে এবং তোমরা নিশ্চিন্ত। কী হবে, কীভাবে হবে এই চিন্তা
নেই।
টিচারদের কোনো চিন্তা আছে? সেন্টারের বৃদ্ধি কীভাবে হবে সেই
চিন্তা আছে? সেবা কীভাবে বাড়বে সেই চিন্তা আছে? নেই? নিশ্চিন্ত? চিন্তন করা আলাদা
বিষয়, চিন্তা করা আলাদা বিষয়। সেবা বৃদ্ধি করার চিন্তন অর্থাৎ যদি বা সেবার
প্ল্যানও বানাও। কিন্তু চিন্তা দ্বারা কখনো সফলতা হবে না। চালানোর মালিক চালাচ্ছেন,
করানোর মালিক করাচ্ছেন, সেইজন্য সব সহজ হতেই হবে, শুধু নিমিত্ত হয়ে সঙ্কল্প, তন, মন,
ধন সময়োপযোগী করে এগিয়ে চলো। যে সময় যে কার্য হয় তা' আমাদের কার্য, আমার কার্য হ'লে
তখন, সেখানে আমিত্বভাব থাকে, তো সেখানে আপনা থেকেই সবকিছু প্রয়োগ হয়ে যায়। সুতরাং
এখন ব্রাহ্মণ পরিবারের বিশেষ কার্য কোনটা? টিচার্স বলো। ব্রাহ্মণ পরিবারের এখন
বিশেষ কার্য কোনটা, কিসে সফল করবে? (জ্ঞান সরোবরে) সরোবরে স্বাহা করবে। পরিবারে যে
বিশেষ কার্য হয় তখন সবার অ্যাটেনশন কোথায় থাকে? সেই বিশেষ কার্যের দিকে অ্যাটেনশন
থাকে। বর্তমান সময়ে ব্রাহ্মণ পরিবারে সবচাইতে বড় কার্য এটাই, তাই না। প্রতিটা
মুহূর্তের নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে, বর্তমান সময়ে দেশ-বিদেশের সব ব্রাহ্মণ পরিবারের
সহযোগ এই বিশেষ কার্যে থাকে নাকি নিজের নিজের সেন্টারে? যত বড় কার্য তত বড় হৃদয়। আর
যত বড় হৃদয়, ততটাই সম্পন্নতা আপনা থেকেই হয়। যদি হৃদয় ছোট হয়, তাহলে যা আসার থাকে
সেটাও আটকে যায়, যা হওয়ারই থাকে সেটাও থেমে যায় এবং বড় হৃদয়ের সাথে অসম্ভবও সম্ভব
হয়ে যায়। মধুবনের জ্ঞান সরোবর নাকি তোমাদের? কা'র? মধুবনের তো না? গুজরাটের তো নয়,
মধুবনের? মহারাষ্ট্রের? বিদেশের? সকলের। অসীম সেবার অসীমিত স্থান অনেক আত্মাকে অসীম
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করায়। ঠিক আছে তো না। আচ্ছা!
অব্যক্ত বাপদাদার পার্সোনাল সাক্ষাৎকার :
১) স্ব-পরিবর্তনের ভাইব্রেশনই বিশ্ব পরিবর্তন করাবে
সবাই নিজেকে ভাগ্যবান আত্মা অনুভব করো? খুশির ভাগ্য যা
স্বপ্নেও ছিল না তা' প্রাপ্ত করে নিয়েছ। তাইতো সকলের হৃদয় এই গীত গায় যে, সবচাইতে
ভাগ্যবান আত্মা আমি। এ' হ'লো মনের গীত। মুখের দ্বারা গীত গাইতে তোমাদের পরিশ্রম করতে
হয়। কিন্তু মনের গীত সবাই গাইতে পারে। সবচাইতে বড় থেকেও বড় ভান্ডার হলো খুশির
ভান্ডার, কারণ খুশি তখনই হয় যখন প্রাপ্তিলাভ হয়। যদি অপ্রাপ্তি হয় তাহলে যতই কেউ
কাউকে খুশি থাকবার জন্য বলুক, যতই আর্টিফিশিয়ালি খুশি থাকার চেষ্টা করুক কিন্তু
থাকতে পারে না। তো তোমরা সদা খুশি থাকো নাকি কখনো কখনো থাকো। যখন চ্যালেঞ্জ করো যে,
আমরা ভগবানের বাচ্চা, তো যেখানে ভগবান আছেন, সেখানে কোনো অপ্রাপ্তি হতে পারে? তাইতো,
খুশি সদাই আছে, কেননা তোমরা সদা প্রাপ্তিস্বরূপ। ব্রহ্মা বাবার গীত কী ছিল? পেয়ে
গেছি, যা পাওয়ার ছিল। তো এটা শুধু ব্রহ্মাবাবার গীত নাকি তোমাদের সবার? কখনো কখনো
খানিক দুঃখের তরঙ্গ আসে? কত সময় পর্যন্ত আসবে? এখন সামান্য সময়ও যেন দুঃখের তরঙ্গ
না আসে। যখন বিশ্ব পরিবর্তন করার নিমিত্ত হও তো নিজের এই পরিবর্তন করতে পারো না?
এখনও তোমাদের টাইম চাই, ফুলস্টপ লাগাও। এমন শ্রেষ্ঠ সময়, শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি, শ্রেষ্ঠ
সম্বন্ধ সারা কল্পে পাওয়া যাবে না। সুতরাং প্রথমে স্ব-পরিবর্তন করো। এই
স্ব-পরিবর্তনের ভাইব্রেশনই বিশ্ব পরিবর্তন করাবে।
ডবল বিদেশি আত্মাদের বিশেষত্ব হলো ফাস্ট লাইফ। তো তোমাদের
পরিবর্তনে তোমরা ফাস্ট? যদি ফরেনে কেউ ধীর গতিতে চলে তাহলে ভালো লাগে না তো না।
সুতরাং এই বিশেষত্বকে পরিবর্তনে প্রয়োগ করো। এটা ভালো। তোমরা এগিয়ে যাচ্ছ আর এগোতেও
থাকবে। তোমাদের চিনে নেওয়ার দৃষ্টি খুব প্রখর যা বাবাকে চিনে নিয়েছে। এখন
পুরুষার্থেও তীব্র হও, সেবাতেও তীব্র হও আর সম্পূর্ণ হয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোতেও তীব্র
হও। ফার্স্ট নম্বরে আসতে চাও তো না? যেভাবে ব্রহ্মা বাবা ফার্স্ট হয়েছিলেন, ঠিক
সেভাবেই ব্রহ্মা বাবার সাথী ফার্স্ট হয়ে, ফার্স্টের সাথে তো আসবে। ব্রহ্মা বাবার
প্রতি ভালোবাসা আছে না। আচ্ছা, মাতারা এমন চমৎকার করবে, করবে তো না! দুনিয়ার লোকে
যেটা অসম্ভব মনে করে সেটা তোমরা সহজ করে দেখিয়ে দিয়েছ। এমন চমৎকার করছ তোমরা, তাই
না। দুনিয়ার ওরা মনে করে মাতারা নির্বল, কিছু করতে পারে না, তোমরা অসম্ভবকে সম্ভব
করে বিশ্ব পরিবর্তনে সবার আগে এগিয়ে যাচ্ছ। পাণ্ডব, তোমরা কী করছ? অসম্ভবকে সম্ভব
করছ তো না। পবিত্রতার ধ্বজা উত্তোলন করেছ, করেছ না! ভালো করে হাতে পতাকা ধরেছ নাকি
কখনো নিচে হয়ে যায়? সদা পবিত্রতার চ্যালেঞ্জের পতাকা উড়াতে থাকো।
২) প্রতিদিন অমৃতবেলায় কম্বাইন্ড স্বরূপের স্মৃতির তিলক
লাগাও
সদা নিজেকে সহজ যোগী অনুভব করো? পরিস্থিতি যতই কঠিন অনুভব
করানোর হোক, কিন্তু কঠিনকেও সহজ করে দেয় এমন সহজযোগী তোমরা, তোমরা এরকম, নাকি
মুশকিলের সময় মুশকিল অনুভব হয়? সদা সহজ হয়? মুশকিল হওয়ার কারণ তোমরা বাবার সাথ ছেড়ে
দাও। যখন একলা হয়ে যাও তখন দুর্বল হয়ে যাও আর দুর্বলের তো সহজ বিষয়ও কঠিন লাগে,
সেইজন্য বাপদাদা প্রথমেও বলেছেন যে, সদা কম্বাইন্ড রূপে থাকো। কম্বাইন্ডকে কেউ আলাদা
করতে পারে না। যেভাবে এই সময় আত্মা আর শরীর কম্বাইন্ড, ঠিক সেভাবেই বাবা আর তুমি
কম্বাইন্ড থাকো। মাতারা কী মনে করো? কম্বাইন্ড তোমরা নাকি কখনো আলাদা কখনো
কম্বাইন্ড? এমন সাথ আর কখনো মিলবে? তাহলে সাথ কেন ছেড়ে দাও? কী বা কাজ দেওয়া হয়েছে?
শুধু এটা স্মরণে রাখো 'আমার বাবা।' এর থেকে সহজ কাজ কী হবে? এটা কঠিন? (৬৩ জন্মের
সংস্কার) এখন তো নতুন জন্ম হয়ে গেছে, তাই না! নতুন জন্ম, নতুন সংস্কার। এখন পুরানো
জন্মে আছ নাকি নতুন জন্মে? নাকি অর্ধেক-অর্ধেক? তো নতুন জন্মে স্মৃতির সংস্কার থাকে
নাকি বিস্মৃতির? তবে নতুনকে ছেড়ে আবার কেন পুরানোতে যাও? নতুন জিনিস ভালো লাগে নাকি
পুরানো জিনিস ভালো লাগে? পুরানোতে কেন চলে যাও? প্রতিদিন অমৃতবেলায় ব্রাহ্মণ জীবনের
তিলক লাগাও নিজেকে। ভক্তরা যেমন অবশ্যই করে তিলক লাগায়, সুতরাং সদা স্মৃতি রাখো
স্মরণে রাখো, আমি কম্বাইন্ড তো এই সাথের তিলক সদা লাগাও। যদি যুগল থাকে তো তিলক
লাগাবে, যদি যুগল না থাকবে তো তিলক লাগবে না। এই তিলক সাথের। সুতরাং প্রতিদিন
স্মৃতির তিলক লাগাও নাকি ভুলে যাও? কখনো লাগাতে ভুলে যাও, কখনো মুছে যায়! যারা সধবা
হয়, পতির সাথ থাকে তারা কখনো ভোলে না। সুতরাং সাথীকে সদা সাথে রাখো।
এই গ্রুপ সুন্দর পুষ্পস্তবক। ভ্যারাইটি ফুলের তোড়া
দৃষ্টিনন্দন লাগে। তোমরা সবাই, যে যেখান থেকেই এসেছ, প্রত্যেকে একে অপরের থেকে
প্রিয়। সবাই সন্তুষ্ট তো না? সদা সাথ আছে আর সদা সন্তুষ্ট তোমরা। শুধু এই এক শব্দ
স্মরণে রাখো, আমি কম্বাইন্ড আর কম্বাইন্ড হয়েই সাথে যাবো। কিন্তু সাথ থাকবে তবে তো
সাথে যাবে! সাথ থাকাই, সাথে চলা। যার প্রতি প্রেম থাকে তার থেকে তোমরা আলাদা হতে
পারো না। প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা সঙ্কল্পে তোমাদের সাথ আছেই। আচ্ছা!
বরদান:-
ব্যালেন্সের বিশেষত্ব ধারণ করে সবাইকে ব্লেসিংস দিয়ে
শক্তিশালী, সেবাধারী ভব
এখন তোমরা সব শক্তিশালী আত্মার সেবা হলো সবাইকে ব্লেসিংস দেওয়া। হয় নয়ন দ্বারা দাও,
নয়তো মস্তকমণি দ্বারা দাও। যেমন, কর্মাতীত স্টেজের লাস্ট সময় সাকার বাবাকে তোমরা
দেখেছ - কীভাবে ব্যালেন্সের বিশেষত্ব ছিল আর ব্লেসিংয়ের চমৎকারিত্ব ছিল।
অতএব, ফলো ফাদার করো - এটাই সহজ আর শক্তিশালী সেবা। এতে সময়ও কম, পরিশ্রমও কম, এর
রেজাল্টও বেশি পাওয়া যায়। তো আত্মিক স্বরূপে সবাইকে নিরন্তর ব্লেসিংস দাও।
স্লোগান:-
বিস্তারকে সেকেন্ডে সমাহিত করে জ্ঞানের সারাংশের
অনুভব করানোই লাইট-মাইট হাউজ হওয়া।
সূচনাঃ― আজ মাসের তৃতীয় রবিবার, সব রাজযোগী তপস্বী
ভাই-বোনেরা সন্ধ্যা ৬ : ৩০ থেকে ৭ : ৩০ পর্যন্ত, বিশেষ যোগ অভ্যাসের সময় লাইট মাইট
স্বরূপে স্থিত থেকে লাইট হাউজ হয়ে পুরো গ্লোবে শান্তি আর শক্তির সকাশ ছড়িয়ে দিন।