15.11.2023 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - একমাত্র বাবা-ই হলেন ব্লিসফুল, যিনি সকলকে ব্লেসিংস (আশীর্বাদ) দেন, বাবাকেই দুঃখহর্তা, সুখকর্তা বলা হয়। তিনি ছাড়া আর কেউই দুঃখ হরণ করতে পারে না"

প্রশ্নঃ -
ভক্তিমার্গ এবং জ্ঞান মার্গ দুয়েই অ্যাডপ্ট হওয়ার রীতি আছে, কিন্তু দুই-এর মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

উত্তরঃ  
ভক্তিমার্গে যখন কারও কাছে অ্যাডপ্ট হয় তখন গুরু ও শিষ্যের সম্বন্ধ থাকে, সন্ন্যাসীও অ্যাডাপ্ট হলে নিজেকে ফলোয়ার বলবে। কিন্তু জ্ঞানমার্গে তোমরা ফলোয়ার বা শিষ্য নও, তোমরা বাবার বাচ্চা হয়েছো। বাচ্চা হওয়া অর্থাৎ উত্তরাধিকারের অধিকারী হওয়া।

গীতঃ-
ওম্ নমঃ শিবায়ঃ....

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা গীত শুনেছে। এ হলো পরমপিতা পরমাত্মা শিবের মহিমা। বলাও হয়, শিবায় নমঃ। রুদ্রায় নমঃ বা সোমনাথ নমঃ বলা হয় না। শিবায় নমঃ বলা হয় আর ওঁনার অনেক স্তুতিও করা হয়। এখন শিবায় নমঃ হলেন বাবা। গড ফাদারের নাম হল শিব। তিনি হলেন নিরাকার। একথা কে বলে - "ও গড ফাদার" ! আত্মা বলে। শুধু "ও ফাদার" বললে তো শারীরিক পিতা হয়ে যায়। এ হলো বোঝার মতো বিষয়। দেবতাদের পারশবুদ্ধি বলা হয়। দেবতারা তো বিশ্বের মালিক ছিল। এখন কোনো মালিক নেই। এখন ভারতে কোনো ধণী বা মালিক নেই। রাজাকেও পিতা বা অন্নদাতা বলা হয়। এখন তো রাজারা নেই। তাহলে শিবায় নমঃ কে বলেছে? কেমন করে জানা যাবে যে ইনি পিতা? ব্রহ্মাকুমার-কুমারী তো অনেক আছে। তারা হলো শিবের পৌত্র-পৌত্রী। ব্রহ্মার দ্বারা তাদেরকে অ্যাডপ্ট করা হয়। সবাই বলে আমরা হলাম ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। আচ্ছা, ব্রহ্মা কার সন্তান? শিবের। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর তিনজনেই হলো শিবের সন্তান। শিববাবা হলেন সর্বোচ্চ ভগবান, নিরাকারী লোকের নিবাসী। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর হলো সূক্ষ্মবতনবাসী। আচ্ছা, মনুষ্য সৃষ্টির রচনা কীভাবে হয়েছে? তিনি তখন বলেন যে ব্রহ্মার সাধারণ শরীরে প্রবেশ করে এঁনাকে প্রজাপিতা বানাই। আমাকে এঁনার মধ্যেই প্রবেশ করতে হয়, যাঁকে ব্রহ্মা নাম দেওয়া হয়েছে। অ্যাডপ্ট করার পর নাম বদল হয়ে যায়। সন্ন্যাসীরাও নাম বদল করে। প্রথমে গৃহস্থীদের কাছে জন্ম নেয় তারপর সংস্কার অনুযায়ী শৈশব থেকেই শাস্ত্র ইত্যাদি পড়ে, তখন বৈরাগ্য আসে। সন্ন্যাসীদের কাছে গিয়ে অ্যাডপ্ট হয়, বলে ইনি হলেন আমার গুরু। কিন্তু তাকে বাবা বলে না। গুরুর শিষ্য বা ফলোয়ার হয়ে যায়। গুরু শিষ্যকে অ্যাডপ্ট করে, বলে যে তোমরা হলে আমার শিষ্য বা ফলোয়ার। কিন্তু এই বাবা বলেন তোমরা হলে আমার বাচ্চা। তোমরা বাচ্চারা ভক্তিমার্গ থেকেই ডেকে চলেছে, কারণ এখানে দুঃখ অনেক, ত্রাহি-ত্রাহি রব উঠছে । পতিত-পাবন বাবা তো একজনই। নিরাকার শিবকে আত্মারা নমণ করে। তিনি তো বাবা-ই । 'তুমিই মাতা-পিতা'- এ গড ফাদারের জন্যই গাওয়া হয়। ফাদার থাকলে মাদারও অবশ্যই হওয়া উচিত । মাতা-পিতা ছাড়া রচনা হয় না। বাবাকে বাচ্চাদের কাছে আসতেই হয়। এই সৃষ্টি-চক্র কীভাবে রীপিট হয়, এর আদি-মধ্য-অন্তকে জানা, একেই বলে ত্রিকালদর্শী হওয়া। এতো সব কোটি কোটি অ্যাক্টর আছে, প্রত্যেকের পার্ট আলাদা। এ হলো বেহদের ড্রামা। বাবা বলেন আমি হলাম ক্রিয়েটার, ডাইরেক্টার, প্রিন্সিপাল অ্যাক্টর (মুখ্য অভিনেতা)। অ্যাক্ট (ভূমিকা পালন) করছি তাই না ! আমি আত্মাকে সুপ্রীম বলা হয়। আত্মা ও পরমাত্মার রূপ একই। বাস্তবে আত্মা হলো বিন্দু। ভ্রুকুটির মধ্যভাগে তারা-রূপী আত্মা থাকে তাই না ! একদম সূক্ষ্ম। তাকে (এই চর্ম চক্ষু দিয়ে) দেখতে পারবে না। আত্মারাও সূক্ষ্ম আর আত্মাদের বাবাও সূক্ষ্ম। বাবা বোঝান যে তোমরা আত্মারা হলে বিন্দু সমান। কিন্তু আমি হলাম সুপ্রীম, ক্রিয়েটার, ডাইরেক্টার। জ্ঞানের সাগর। আমার মধ্যেই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান রয়েছে। আমি হলাম নলেজফুল, ব্লিসফুল, সকলের উপরে ব্লেসিং করি। সবাইকে সদ্গতিতে নিয়ে যাই। এক বাবাই হলেন দুঃখহর্তা, সুখকর্তা । সত্যযুগে কেউ দুঃখী হয় না। সেটা হল লক্ষ্মী-নারায়ণের-ই রাজ্য ।

বাবা বোঝান যে আমি হলাম এই সৃষ্টি-রূপী বৃক্ষের বীজরূপ। ধরো, আম গাছ রয়েছে, ওটা তো হল জড় বীজ, সে তো কথা বলতে পারবে না। যদি চৈতন্য হতো তাহলে বলতো যে আমার বীজ থেকে এমন ডাল-পালা, পাতা ইত্যাদি বেরোয়। এখন এ হলো চৈতন্য, একে কল্প বৃক্ষ বলা হয়। মনুষ্য সৃষ্টি-রূপী বৃক্ষের (ঝড়ের) বীজ হলো পরমপিতা পরমাত্মা। বাবা বলেন আমি এসেই এর নলেজ দিই। বাচ্চাদের সদাকালের জন্য সুখী বানাই। দুঃখী করে মায়া। ভক্তিমার্গকে পূর্ণ হতে হবে। ড্রামাকে অবশ্যই ঘুরতে হবে। এ হলো অসীম জগতের ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি -জিওগ্রাফি । চক্র ঘুরতেই থাকে। কলিযুগ বদলে আবার সত্যযুগ হয়। সৃষ্টি একই থাকে। গড ফাদার ইজ ওয়ান। ওঁনার কোনো বাবা নেই। তিনি টিচারও, আমাদের পড়াচ্ছেন। ভগবানুবাচ - আমি তোমাদের রাজযোগ শেখাই। মানুষ তো মাতা-পিতাকে জানে না। তোমরা তো জানো যে নিরাকারী শিববাবার আমরা হলাম নিরাকারী বাচ্চা। আবার সাকারী ব্রহ্মার-ও বাচ্চা। নিরাকার বাচ্চারা হলো সব ভাই-ভাই আর ব্রহ্মার বাচ্চারা হলো ভাই-বোন। এ হলো পবিত্র থাকার যুক্তি। ভাই-বোন বিকারে কেমন করে যাবে। বিকারেরই তো আগুন লাগে তাই না। কাম-অগ্নি বলা হয়, এর থেকে বাঁচার উপায় বাবা বলে দেন। এক তো প্রাপ্তি অনেক উঁচু। যদি আমরা বাবার শ্রীমতে চলি তাহলে অসীম জগতের বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার পাবো। স্মরণের দ্বারাই এভারহেল্দী (চিরসুস্থ) হওয়া যায়। প্রাচীন ভারতের রাজযোগ বিখ্যাত। বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করতে করতে তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে, পাপ ভস্ম হয়ে যাবে। বাবার স্মরণে শরীর ছাড়লে আমার কাছে চলে আসবে। এই পুরোনো দুনিয়ার বিনাশ হয়ে যাবে। এ হলো সেই মহাভারতের লড়াই। যারা বাবার হয়ে গেছে তাদেরই বিজয় হবে। এ রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। ভগবান রাজযোগ শেখান, স্বর্গের মালিক বানানোর জন্য। ‌তারপর আবার মায়া রাবণ নরকের মালিক বানায়। এ যেন অভিশাপ পাওয়া।

বাবা বলেন - প্রিয় বাচ্চারা, আমার মতে চলে তোমরা স্বর্গবাসী ভব। আবার যখন রাবণ রাজ্য শুরু হয় তখন রাবণ বলে - হে ঈশ্বরের বাচ্চারা, নরকবাসী ভব। নরকের পরে আবার স্বর্গ অবশ্যই আসবে। এ হলো নরক তাই না। মারামারি লেগেই আছে। সত্যযুগে লড়াই-ঝগড়া হয় না। ভারত স্বর্গ ছিল, আর কোনো রাজ্য ছিল না। এখন ভারত নরক, অনেক ধর্ম রয়েছে। গায়ন আছে যে অনেক ধর্মের বিনাশ, এক ধর্মের স্থাপনা করার জন্য আমাকে আসতে হয়। আমি একবার-ই অবতার-রূপ নিই। আমাকে পতিত দুনিয়ায় আসতে হয়। আসেই তখন, যখন পুরোনো দুনিয়ার বিনাশকালে। তার জন্যে লড়াই-ও চাই।

বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা অশরীরী এসেছিলে, ৮৪ পার্ট পূর্ণ হয়েছে, এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে। আমি তোমাদের পতিত থেকে পাবন বানিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাই। হিসাব তো আছে তাই না। ৫ হাজার বছরে দেবতারা ৮৪ জন্ম নেয়। সবাই তো ৮৪ জন্ম নেবে না। এখন বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো আর অবিনাশী উত্তরাধিকার নাও। সৃষ্টির চক্র যেন বুদ্ধিতে ঘুরতে থাকে। আমরা হলাম অ্যাক্টর তাই না। অ্যাক্টর হয়ে যদি ড্রামার ক্রিয়েটার, ডাইরেক্টার, মুখ্য অ্যাক্টরকে না জানে তাহলে তারা হলো নির্বোধ। এতে ভারত কত কাঙ্গাল হয়ে গেছে। বাবা এসে আবার সলভেন্ট (মালামাল/ উন্নতির শিখর) বানায়। বাবা বোঝান তোমরা ভারতবাসীরা স্বর্গে ছিলে তোমাদের আবার ৮৪ জন্ম নিতে হবে। এখন তোমাদের ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ হয়েছে, এই শেষ জন্ম বাকী আছে। ভগবানুবাচ, ভগবান তো সবার এক। কৃষ্ণকে আর সব ধর্মাবলম্বীরা ভগবান মানবে না। নিরাকারকেই মানবে। তিনি সব আত্মাদের পিতা। তিনি বলেন, আমি অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে এঁনার শরীরে প্রবেশ করি। যখন রাজ্য স্থাপন হয়ে যাবে তখন বিনাশ শুরু হবে আর আমি চলে যাবো। এ হলো বড় মহান যজ্ঞ। আর যে সব যজ্ঞ ইত্যাদি আছে, এর মধ্যে স্বাহা হয়ে যাবে। সারা দুনিয়ার নোংরা এর মধ্যে (যজ্ঞ) পড়ে যায়। আর কোনো যজ্ঞ রচনা করা হয় না। ভক্তিমার্গ শেষ হয়ে যায়। সত্যযুগ-ত্রেতার পর আবার ভক্তি শুরু হয়। এখন ভক্তি পূর্ণ হয়েছে। তাই এই সব মহিমা হলো শিববাবার। তাঁকেই এতো নাম দেওয়া হয়, জানে তো না কিছুই। তিনি তো শিব তাঁকে আবার রুদ্র, সোমনাথ, বাবুরীনাথও বলে। একের, অনেক নাম দেওয়া হয়। যেমন যেমন সার্ভিস করেন তেমনি নাম দেওয়া হয়। তোমাদের তিনি সোমরস পান করাচ্ছেন। তোমরা মাতারা স্বর্গের দ্বার খোলার নিমিত্ত হয়েছো বন্দনা পবিত্রদের-ই করা হয়। অপবিত্ররা পবিত্রদের বন্দনা করে। কন্যাদের সামনে সবাই মাথা নত করে। এই ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা এই ভারতের উদ্ধার করছে। পবিত্র হয়ে বাবার থেকে পবিত্র দুনিয়ার উত্তরাধিকার নিতে হবে। গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও পবিত্র হতে হবে, এতে পরিশ্রম আছে। কাম মহাশত্রু। কাম ছাড়া যখন থাকতে পারে না, তখন মারধোর করতে থাকে। রুদ্র যজ্ঞে অবলাদের উপর অত্যাচার হয়। মার খেয়ে খেয়ে তাদের পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়, তখন বিনাশ হয়ে যায়। অনেক বাচ্চারা আছে, কখনো দেখিনি, তারাও লেখে যে বাবা আমরা তোমাকে জানি। তোমার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্য অবশ্যই পবিত্র হবো। বাবা বোঝান যে শাস্ত্র পড়া, তীর্থ ইত্যাদি করা - এসব ভক্তিমার্গের শারীরিক যাত্রা তো করেই চলেছো, এখন তোমাদের ফিরে যেতে হবে, তাই আমার সাথে যোগ লাগাও। আর সব সঙ্গ ছেড়ে এক আমার সাথে সম্বন্ধ জোড়ো, তবেই তোমাদের সঙ্গে নিয়ে যাবো, আর আবার স্বর্গে পাঠিয়ে দেবো। ওটা হলো শান্তিধাম। ওখানে আত্মারা কিছু বলে না। সত্যযুগ হলো সুখধাম, এ হলো দুঃখধাম। এখন এই দুঃখধামে থেকেই শান্তিধাম-সুখধাম-কে স্মরণ করতে হবে তাহলেই তোমরা আবার স্বর্গে আসতে পারবে। তোমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছো। বর্ণ ঘুরতেই থাকে। প্রথমে ব্রাহ্মণদের শিখা (টিকি, চোটি),পরে দেবতা বর্ণ, ক্ষত্রিয় বর্ণ বাজোলী (ডিগবাজী খাওয়া) খেলে তাই না। এখন আমরা আবার ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা হবো। এই চক্র ঘুরতেই থাকে। একথা জেনে গেলেই চক্রবর্তী রাজা হয়ে যাবে। অসীম জগতের বাবার থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার চাই। তাহলে অবশ্যই বাবার মতে চলতে হবে। তোমরা বোঝাও যে নিরাকার পরম আত্মা এসে এই সাকার শরীরে প্রবেশ করেছে। আমরা আত্মারা যখন নিরাকারী তখন ওখানে (শান্তিধাম) থাকি। এই সূর্য-চন্দ্র হলো আলোর বাতি। আর একে অসীম জগতের দিন আর রাত বলে। সত্যযুগ-ত্রেতা হলো দিন, দ্বাপর-কলিযুগ হলো রাত। বাবা এসে সদ্গতির মার্গ বলেন। কত ভালো করে বোঝানো হয়। সত্যযুগে হয় সুখ, তারপর একটু একটু করে কমতে থাকে। সত্যযুগে ১৬ কলা, ত্রেতায় ১৪ কলা....... এসব বোঝার মতো বিষয়। ওখানে কখনো অকালে মৃত্যু হয় না। কান্না, লড়াই-ঝগড়া করার ব্যাপার নেই, সব কিছুর আধার হলো পড়া। পড়েই মানুষ থেকে দেবতা হতে হবে। ভগবান পড়ান ভগবান-ভগবতী বানানোর জন্য। ওই পড়া হলো কড়িতুল্য, এ হলো হীরেতুল্য। শুধু এই অন্তিম জন্মে পবিত্র হতে হবে। এ হোল সহজ থেকে সহজতম রাজযোগ। ব্যারিস্টারি ইত্যাদি পড়া - এসব এতো সহজ নয়। এখানে তো শুধু বাবা আর চক্রকে স্মরণ করলেই চক্রবর্তী রাজা হওয়া যাবে। বাবাকে না জানা মানে কিছুই না জানা। বাবা নিজে বিশ্বের মালিক হন না, বাচ্চাদের বানান। শিববাবা বলেন, ইনি (ব্রহ্মা) মহারাজা হবেন, আমি হবো না। আমি নির্বাণধামে থেকে যাই, বাচ্চাদের বিশ্বের মালিক বানাই। সত্যি সত্যি নিষ্কাম সেবা নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মাই করতে পারেন, মানুষ করতে পারে না। ঈশ্বরকে পেয়েই সারা বিশ্বের মালিক হয়ে যায়। দেবতারা বিশ্বের মালিক ছিল তাই না। এখন তো কত ভাগ হয়ে গেছে। এখন আবার বাবা বলেন যে আমি তোমাদের বিশ্বের মালিক বানাই। স্বর্গে তোমরাই ছিলে। ভারত বিশ্বের মালিক ছিল, এখন কাঙ্গাল। আবার সেই মাতাদের দ্বারা ভারতকে বিশ্বের মালিক করি। মেজরিটি (বেশী) মাতারাই আছে সেইজন্য 'বন্দে মাতরম্' বলা হয়। সময় কম, শরীরের উপর কোনো ভরসা নেই। মরতে তো সবাইকে হবে। সবার-ই বাণপ্রস্থ অবস্থা, সকলকে ফিরে যেতে হবে। এসব ভগবান পড়ান। জ্ঞানদাতা, শান্তিদাতা, সুখদাতা তাঁকেই বলা হয়। তিনিই আবার এমন সর্বগুণসম্পন্ন, ১৬ কলা সম্পূর্ণ, পবিত্র বানান। আচ্ছা,

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই পড়াশুনা হীরেতুল্য বানায়, তাই একে ভালো করে পড়তে হবে আর অন্য সব সঙ্গ ছেড়ে এক বাবার সাথেই সম্বন্ধ জুড়তে হবে।

২ ) শ্রীমতে চলে স্বর্গের সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নিতে হবে। চলতে ফিরতে স্বদর্শন-চক্র ঘোরাতে হবে।

বরদান:-
'আমার' ভাবকে ছেড়ে ট্রাস্টি হয়ে সেবা করে থাকা সদা সন্তুষ্ট আত্মা ভব

লৌকিক পরিবারে অথবা সেবা করার সময় সর্বদা স্মরণে থাকবে যে আমি হলাম ট্রাস্টি, সেবাধারী আমি । সেবা করার সময় এতটুকুও 'আমার' ভাব যেন না থাকে, তবেই সন্তুষ্ট থাকবে। যখন 'আমার' ভাব আসে তখন বিরক্তির উৎপত্তি হয়। তখন ভাবতে থাকো আমার সন্তান এই করে, সেই করে... তো যেখানে আমার ভাব আসে সেখানেই বিরক্তি বোধের সৃষ্টি হয় আর যেখানে 'তোমার তোমার' আসে সেখানে তরঙ্গায়িত হতে থাকো। 'তোমার তোমার' বলা অর্থাৎ স্বমানে থাকা, 'আমার আমার' বলা মানে অভিমানে আসা।

স্লোগান:-
বুদ্ধিতে সব সময় বাবা আর শ্রীমতের স্মৃতি থাকলে তখন বলা হবে অন্তর থেকে সমর্পিত আত্মা।