17.04.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - এই ওয়ান্ডারফুল পাঠ অসীম জগতের বাবা এসে পড়াচ্ছেন, বাবা আর তাঁর পড়াশোনার প্রতি কোনও সংশয় থাকা উচিত নয়, প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে যে কে আমাদের পড়াচ্ছেন"
 

প্রশ্নঃ -
তোমরা বাচ্চারা নিরন্তর স্মরণের যাত্রায় থাকার জন্য কেন শ্রীমত পেয়েছো?

উত্তরঃ  
কেননা শত্রু রূপে মায়া এখনও তোমাদের পিছনে পড়ে আছে, যে তোমাদের অধঃপতন ঘটিয়েছে । এখনও সে তোমাদের পিছু ছাড়বে না, সেইজন্য অসাবধান হয়ো না । যদিও তোমরা সঙ্গম যুগে রয়েছো, কিন্তু অর্ধকল্প ধরে মায়ার বশীভূত ছিলে, সেইজন্যই এতো শীঘ্র মায়া ছাড়বে না । স্মরণ করা ভুলে যাওয়াতেই মায়া এসে বিকর্ম করিয়েছে। সেইজন্যই সাবধান হতে হবে। আসুরিক মতে চলা উচিত নয়।

ওম্ শান্তি ।
এখন বাচ্চারাও আছে, বাবা ও আছেন । বাবা অনেক বাচ্চাদের বলবেন 'ওহে বাচ্চারা', সব বাচ্চারাও তারপর বলে উঠবে 'ও বাবা'। এখানে বাচ্চা অনেক । তোমরা এখন বুঝেছো এই জ্ঞান আমরা আত্মাদের জন্যই । এক বাবার অসংখ্য বাচ্চা। বাচ্চারা জানে বাবা শিক্ষা প্রদান করতে এসেছেন । তিনি প্রথমে বাবা, তারপর শিক্ষক, তারপর গুরু । এখন বাবা তো বাবাই, যিনি পবিত্র হওয়ার জন্য স্মরণের যাত্রা শেখান । বাচ্চারা এও জানে এই পড়াশোনা হলো ওয়ান্ডারফুল। ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বাবা ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না, তাই তাঁকে অসীম জগতের পিতা বলা হয় । এই নিশ্চয় তো বাচ্চাদের মধ্যে বসতে হবে, এর মধ্যে সংশয়ের কোনও প্রশ্ন উঠতেই পারে না । অসীম জগতের এই পড়াশোনা, অসীম জগতের বাবা ছাড়া আর কেউ পড়াতে পারবে না । আহ্বান করা হয় বাবা এসো, আমাদের পবিত্র জগতে নিয়ে চলো। কেননা এ হলো পতিত জগৎ । পবিত্র জগতে নিয়ে যান বাবা । ওখানে (সত্য যুগে) তো বলবেই না বাবা এসো, পবিত্র জগতে নিয়ে চলো । বাচ্চারা জানে আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পিতা হলেন উনিই, তখনই দেহ ভাব ছিন্ন হয়ে যায় । আত্মা বলে উনি আমাদের বাবা । এখন এটা দৃঢ়তার সাথে নিশ্চয় হওয়া উচিত যে প্রকৃতপক্ষে বাবা ছাড়া এতো নলেজ আর কেউ দিতে পারবে না । প্রথমেই তো নিশ্চয় বুদ্ধি হওয়া প্রয়োজন । নিশ্চয়ও আত্মার বুদ্ধিতেই থাকে । আত্মাই এই জ্ঞান প্রাপ্ত করে, ইনি হলেন আমাদের বাবা । এই দৃঢ় বিশ্বাস বাচ্চাদের হওয়া উচিত। মুখে কিছু বলার প্রয়োজন নেই । আমরা আত্মারা এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীর ধারণ করি । আত্মার মধ্যেই সংস্কার নিহিত রয়েছে ।

এখন তোমরা জেনেছো বাবা এসেছেন, আমাদের এমনই শিক্ষা প্রদান করান, এমনই কর্ম শেখান যাতে আমরা এখন আর এই জগতে আসবো না । লৌকিক জগতের মানুষ বোঝে যে এই দুনিয়াতে আবার আসতে হবে । তোমরা এমনটা ভাবো না। তোমরা এই অমরকথা শুনে অমরপুরীতে যাও । অমরপুরী অর্থাৎ যেখানে সবসময় অমরত্ব থাকে (অকালে মৃত্যু হয় না)। সত্য যুগ-ত্রেতা হলো অমরপুরী । বাচ্চাদের কত খুশি হওয়া উচিত । এই পড়াশোনা বাবা ছাড়া আর কেউ পড়াতে পারে না । বাবা আমাদের পড়ান, বাকি যারা টিচার্স আছে তারা সাধারণ মানুষ । এখানে তোমরা যাঁকে পতিত-পাবন, দুঃখ হরণকারী, সুখ প্রদানকারী বলে থাক, সেই বাবা এখন তোমাদের সামনে শিক্ষা প্রদান করছেন । সামনে না আসলে রাজযোগ পাঠ কি ভাবে পড়াচ্ছেন? বাবা বলেন তোমাদের অর্থাৎ মিষ্টি বাচ্চাদের এখানে পড়াতে আসি । শিক্ষা প্রদান করার জন্য এনার (ব্রহ্মা বাবা) মধ্যে প্রবেশ করি। প্রকৃতপক্ষে ভগবানুবাচ যখন আছে, সুতরাং ওনার শরীর নিশ্চয়ই প্রয়োজন । শুধু মুখ নয় সম্পূর্ণ শরীর প্রয়োজন । বাবা স্বয়ং বলেন - মিষ্টি মিষ্টি আত্মিক বাচ্চারা, কল্পে-কল্পে পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে সাধারণ শরীরে (ব্রহ্মা বাবা) আসি । খুব গরীবও নয়, আবার খুব বিত্তবানও নয়, সাধারণ । এটা তো তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের দৃঢ় বিশ্বাস হওয়া উচিত - উনি আমাদের বাবা, আমরা আত্মা । আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পিতা । সমগ্র পৃথিবীতে যত মানুষরূপী আত্মা আছে সবার পিতা তিনি, তাই তাঁকে অসীম জগতের বাবা বলা হয় । শিব জয়ন্তী উদযাপন করে কিন্তু তার কারণও কেউ জানেনা । কাউকে জিজ্ঞাসা করো যে, শিব জয়ন্তী কবে থেকে উদযাপন হয়ে আসছে? বলবে আবহমানকাল ধরে । সেটাও বা কবে থেকে? কোনও তারিখ তো চাই । ড্রামা তো অনাদি, কিন্তু এই ড্রামার অন্তর্ভুক্ত যে ক্রিয়াকলাপ ঘটিত হয়েছে, তার তিথি - তারিখ তো চাই তাইনা ! সেটা তো কেউ জানেনা । আমাদের শিববাবা আসেন, সেই লভ থেকে এই উৎসব পালন করে না । নেহেরু জয়ন্তী ভালোবাসার সাথে উদযাপন করবে । স্মৃতিচারণে দু-চোখে জলও আসবে । শিব জয়ন্তী কেন পালিত হয় কারো জানা নেই । এখন তোমরা বাচ্চারা অনুভাবী হয়েছো । অনেক মানুষ আছে যারা কিছুই জানেনা । কত মেলা হয়। ওখানে যারা যায় তারাই বলতে পারবে প্রকৃত সত্য কি। যেমন বাবা অমরনাথের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেছিলেন, ওখানে গিয়ে দেখো - প্রকৃতপক্ষে কি হয় সেখানে। অন্যরা তো অপরের কাছ থেকে শুনে তারপর বলে। কেউ বলবে বরফের লিঙ্গ হয়, শুনে বলবে সত্যি । এখন বাচ্চারা তোমাদের অনুভব হয়েছে - কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল। এখনও পর্যন্ত যা কিছু শুনেছো - পড়েছো, সবই ভুল । গাওয়াও হয়ে থাকে... এ হলো মিথ্যে খন্ড, সত্য যুগ প্রকৃত খন্ড । সত্য যুগ, ত্রেতা, দ্বাপর অতীত হয়ে গেছে, এখন কলিযুগ চলছে। এটাও খুব কম সংখ্যকই জানে। তোমাদের বুদ্ধিতে সব ধারণা চলে। বাবার মধ্যে সম্পূর্ণ নলেজ আছে, ওনাকে বলা হয় জ্ঞানের সাগর । ওনার কাছে যে নলেজ আছে তা উনি এই শরীরের (ব্রহ্মা বাবা) দ্বারা আমাদেরকে নিজের সমান করে তুলছেন । যেমন টিচারও সমতুল্য করে তোলেন, সুতরাং অসীম জগতের বাবাও চেষ্টা করে নিজের সমান করে তোলেন । লৌকিক বাবা সমতুল্য করে তোলেন না । তোমরা অসীম জগতের বাবার কাছে এসেছো। উনি জানেন আমাকে বাচ্চাদের আমার মতো করে তুলতে হবে । যেমন টিচার নিজের মতো করে তোলেন, সেটাও নম্বরনুসারে হবে। এই বাবাও বলে থাকেন নম্বরনুসারে হবে । আমি যে পড়াশোনা করিয়ে থাকি সেটা হলো অবিনাশী । যে যত পড়বে তা ব্যর্থ যাবে না । এরপর কোনো সময় দেখবে, তারাই এসে বলবে আমি ৪ বছর আগে, ৮ বছর আগে কারো একজনের কাছ থেকে এই জ্ঞান শুনেছিলাম। এখন আবার এসেছি। তখন কেউ কেউ ভীষণ ভাবে এর সাথে জড়িয়ে পড়বে । পতঙ্গ তো থাকবেই অগ্নিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য । কেউ বা অগ্নির চারদিক ঘুরে ফিরে চলে যায় । শুরুতে অনেক পতঙ্গ অগ্নির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল । ড্রামার প্ল্যান অনুসারে ভাট্টি তৈরি হওয়ার ছিল । কল্প-কল্প ধরেই এমনটা হয়ে আসছে । যা কিছু অতীতে হয়েছে, কল্প পূর্বেও এমনই হয়েছিল আবারও তাই হবে । এটাই দৃঢ় নিশ্চয় রাখো যে আমরা আত্মা, বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন । এই নিশ্চয়ে অটুট থাকো, ভুলে যেও না । এমন কোনও মানুষ হবে না যে বাবাকে বাবা বলে স্বীকার করবেনা । যদি বাবার সাথে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে চলেও যাবে, তবুও এটুকু বুঝতে পারবে যে আমি বাবাকে ছেড়ে এসেছি। ইনি অসীম জগতের বাবা, ওঁনাকে আমরা কখনোই ছেড়ে যাবো না । শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবো। এই বাবা তো সবার সদ্গতি প্রদাতা । ৫ হাজার বছর পর আসেন । এটাও তোমরা বুঝেছো, সত্য যুগে অল্প সংখ্যক মানুষ বাস করে । বাকি সমস্ত আত্মারা শান্তিধামে থাকে । এই নলেজও বাবা-ই শোনান আর কেউ শোনাতে পারেনা । কারো বুদ্ধিতেই ধারণ হবে না । তোমাদের, অর্থাৎ আত্মাদের পিতা তিনি। তিনি চৈতন্য বীজরূপ। কোন্ নলেজ দেবেন? সৃষ্টি রৃপী বৃক্ষের । রচয়িতা নিশ্চয়ই রচনার নলেজই দেবেন । তোমরাও কি জানতে সত্য যুগ কবে ছিল তারপর কোথায় গেছে?

এখন তোমরা সামনে বসে আছো, বাবা কথা বলছেন । তোমরা পাক্কা নিশ্চয় করে থাকো যে - ইনিই আমাদের, অর্থাৎ সমস্ত আত্মাদের বাবা, আমাদের শিক্ষা প্রদান করছেন । ইনি কোনও শরীরধারী শিক্ষক নন। এই শরীরে (ব্রহ্মা বাবা) শিক্ষা প্রদানকারী নিরাকার শিববাবা বিরাজমান । উনি নিরাকার হয়েও জ্ঞানের সাগর, মানুষ তো বলে ওঁনার কোনও আকার নেই । মহিমা করে গীতও গেয়ে থাকে - জ্ঞানের সাগর, সুখের সাগর... । কিন্তু কিছুই বোঝেনা। ড্রামা অনুসারে অনেক দূরে চলে গেছে, বাবাই কাছে টেনে আনেন । এটা তো ৫ হাজার বছরের কথা । তোমরা বুঝেছো প্রতি ৫ হাজার বছর পরে বাবা আমাদের শিক্ষা প্রদান করতে আসেন । এই নলেজ আর কারও কাছ থেকে পাওয়া যাবেনা। এই নলেজ হলো নতুন সৃষ্টির জন্য । কোনও মানুষ এই নলেজ দিতে পারবে না কেননা ওরা তমোপ্রধান হয়ে গেছে । ওরা কাউকে সতোপ্রধান করে তুলতে পারবেনা। ওরা তো তমোপ্রধান হয়েই চলেছে ।

তোমরা এখন জেনেছো - বাবা আমাদের এনার মধ্যে প্রবেশ করে বলছেন - বাচ্চারা গাফিলতি ক'রো না, শত্রু এখনও তোমাদের পিছনে রয়েছে, যে তোমাদের অধঃপতিত করেছে । শত্রু এখনও তোমাদের পিছু ছাড়বে না । যদিও তোমরা সঙ্গম যুগে রয়েছো কিন্তু অর্ধকল্প ধরে তোমরা শত্রুর বশীভূত ছিলে, সুতরাং এতো শীঘ্র সে তোমাদের ছাড়বে না, সাবধান না হলে । স্মরণে না থাকলে আরও বিকর্ম করাবে । তারপরও কিছু না কিছু চড় এসে পড়বে (মায়ার)। এখন দেখো মানুষ কেমন নিজেকেই নিজে চড় কষায় । কত কি বলে দেয় । শিব - শঙ্করকে এক বলে দেয়, ওদের পদমর্যাদা সেটা কি? কত পার্থক্য । শিব তো হলেন সর্বোচ্চ ভগবান, শঙ্কর দেবতা । তারপরও শিব-শঙ্কর একত্রে কিভাবে বলে? দু'জনের পার্টই আলাদা-আলাদা । এখানেও (লৌকিক জগতে) অনেকের এমন সব নাম আছে- রাধা-কৃষ্ণ, লক্ষ্মী-নারায়ণ, শিবশঙ্কর... দুটো নামই একত্রে নিজের জন্য রেখেছে । সুতরাং বাচ্চারা বুঝেছে এই সময় পর্যন্ত বাবা যা কিছু বুঝিয়েছেন তা আবার রিপিট হবে । অল্প সময় বাকি আছে । বাবা তো বসে থাকবেন না । বাচ্চারা নম্বরনুসারে অধ্যয়ন করে সম্পূর্ণ কর্মাতীত হয়ে যাবে । ড্রামানুসারে মালাও তৈরি হয়ে যাবে । কোন্ সে মালা? (সব আত্মাদের মালা তৈরি হবে তবেই ফিরে যাবে । মালা নম্বরনুসারে তোমাদের হবে । শিববাবার মালা অনেক বড়। ওখান থেকেই নম্বরনুসারে রোল প্লে করতে আসবে । তোমরা সবাই বাবা-বাবা বলে ডাকো। সবাই এক মালার দানা। সবাইকে বিষ্ণু মালার দানা বলা হবে না। এসবই বাবা বসে পড়ান । সূর্য বংশী হতেই হবে । সূর্যবংশী - চন্দ্র বংশী যা অতীত হয়ে গেছে আবার তৈরি হবে । ঐ পদ পঠনপাঠনের দ্বারাই প্রাপ্ত হয়। বাবার শিক্ষা গ্রহণ ছাড়া ঐ পদ প্রাপ্ত হবে না । চিত্র গুলি তো রয়েছে, কিন্তু কেউ এমন তৎপরতা দেখায় না যে, আমরা এদের মতো হতে পারি। সত্য নারায়ণের কথা শোনে । গরুড় পুরাণে এমন সব আছে যা মানুষকে শোনানো হয়। বাবা বলেন এই বিষয় বৈতরণী নদী ভয়াবহ । মূলতঃ ভারতের জন্যই বলা হয় । বৃহস্পতির দশা ভারতের উপরেই অবস্থান করছে । বৃক্ষপতিও ভারতবাসীদেরই পড়ান । অসীম জগতের বাবা বসে অসীম জগতের কথাই বোঝান । দশা অবস্থান করে । রাহুর দশা চলাকালীন বলা হয় দান দিলেই গ্রহণ থেকে মুক্ত হবে । বাবাও বলে থাকেন এই কলিযুগের শেষে সবার উপরেই রাহুর দশা অবস্থান করছে । এখন আমি বৃক্ষপতি ভারতে এসেছি বৃহস্পতির দশা প্রতিষ্ঠা করতে । সত্য যুগে বৃহস্পতির দশা ভারতেই ছিল । এখন চলছে রাহুর দশা । এ সবই অসীম জগতের কথা । এসব কথা কোনও শাস্ত্র ইত্যাদিতে নেই । এসব ম্যাগাজিন ইত্যাদি তাদেরই ধারণা করাবে যারা প্রথমে কিছু না কিছু বুঝেছিল । ম্যাগাজিন পড়ে আরও ভালো করে বোঝার জন্য দৌড় লাগাবে। বাকিরা তো কিছুই বুঝবে না । যে অল্প পড়ে ছেড়ে দিয়েছে তার মধ্যেও অল্প জ্ঞানের ঘৃত অর্পণ করলে সেও সজাগ হয়ে পড়ে । জ্ঞানকে ঘৃত বলা হয় । নিভে যাওয়া দীপক-কে ( প্রদীপ অর্থাৎ এখানে আত্মা) বাবা এসে জ্ঞানের ঘৃত অর্পণ করছেন । বাবা বলেন- বাচ্চারা, মায়ার তুফান এসে দীপকে (আত্মা) নিভিয়ে দেবে। বহ্নি পতঙ্গ কেউ মত্ত (ঈশ্বরীয় নেশায়) হয়ে পুড়ে মরবে ( সম্পূর্ণ সমর্পণ)। কেউ বা ঘুরে ফিরে চলে যাবে । প্র্যাকটিক্যালি এখন সেটাই হচ্ছে । নম্বরনুসারে সব পতঙ্গ । প্রথম- প্রথম তো সম্পূর্ণরূপে বাড়িঘর ছেড়ে চলে আসে বহ্নি পতঙ্গ রূপে । ঠিক যেন লটারি প্রাপ্ত হয়েছে । যা কিছু অতীতে হয়েছে তোমরাও সেটাই করবে । যদিও চলে গেছে, এমনটা ভেবো না যে স্বর্গে যেতে পারবো না । বহ্নি পতঙ্গ হয়ে দয়িতের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছো, তারপর মায়া এসে হারিয়ে দিয়েছে, সুতরাং পদ কম হয়ে যাবে । ক্রমিকানুসারেই তো নম্বর হবে । অন্যান্য সৎসঙ্গে কারো বুদ্ধিতে এসব ধারণা হবেনা । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে । বাবার সৃষ্টি নতুন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য আমরা সবাই নম্বরনুসার পুরুষার্থ অনুসারে শিক্ষা গ্রহণ করছি । আমরা অসীম জগতের বাবার সামনে বসে আছি । এটাও জেনে গেছো আত্মা দৃশ্যমান হয় না । আত্মাকে দিব্য দৃষ্টি দিয়ে দেখতে হয় । আমরা আত্মারাও ছোট বিন্দু স্বরূপ । কিন্তু দেহ বোধ ছেড়ে নিজেকে আত্মা মনে করা - এটাই হলো উচ্চ স্তরের পঠন-পাঠ । লৌকিকের পঠন-পাঠনে যে সাবজেক্ট ডিফিকাল্ট হয়, তাতে বিফল হয় । এই সাবজেক্ট তো কত সহজ । কিন্তু কারও কারও ডিফিকাল্ট অনুভব হয় । এখন তোমরা বুঝেছো শিববাবা সামনে বসে আছেন । তোমরাও নিরাকার আত্মা কিন্তু শরীরের সাথে রয়েছো। এইসব কথা অসীম জগতের বাবাই শোনান । আর কেউ শোনাতে পারেনা । তারপর কি করা উচিত? ওঁনাকে ধন্যবাদ দেবে? না । বাবা বলেন এই অনাদি ড্রামা পূর্ব নির্ধারিত । আমি নতুন কথা কিছু বলিনা। ড্রামানুসারে তোমাদের পড়াই। ধন্যবাদ তো ভক্তি মার্গে দেওয়া হয় । শিক্ষক বলবে স্টুডেন্ট ভালো করে পড়লে আমার সুখ্যাতি হবে । স্টুডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো হয় । যে ভালো ভাবে পড়ান, আর যে পড়ে তাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় । স্টুডেন্টও তারপর টিচারকে ধন্যবাদ জানায়। বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, বেঁচে থাকো । এইভাবেই সার্ভিস করো । কল্প পূর্বেও করেছিলে। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সর্বদা এই নেশা (ঈশ্বরীয়) আর নিশ্চয় যেন থাকে যে আমাদের শিক্ষা প্রদানকারী কোনও শরীরধারী শিক্ষক নন।স্বয়ং জ্ঞানের সাগর নিরাকার শিববাবা শিক্ষক রূপে আমাদের পড়াচ্ছেন । এই পঠন-পাঠনের মাধ্যমেই আমাদের সতোপ্রধান হতে হবে ।

২ ) আত্মা রূপী দীপক এ প্রতিদিন জ্ঞানের ঘৃত অর্পণ করতে হবে । জ্ঞান ঘৃতের দ্বারা এমনই প্রজ্জ্বলিত করে তুলতে হবে যাতে মায়ার কোনও তুফান নাড়াতে না পারে । সম্পূর্ণ বহ্নি পতঙ্গ হয়ে সমর্পিত হতে হবে ।

বরদান:-
সদা এক বাবার স্নেহে সমাহিত হওয়া সহযোগী বা সহজযোগী আত্মা ভব

যে বাচ্চাদের বাবার প্রতি অতি স্নেহ আছে, সেই স্নেহী আত্মারা সর্দা বাবার শ্রেষ্ঠ কার্যে সহযোগী হবে আর যে যত সহযোগী, ততই সহজযোগী হয়ে যাবে। বাবার স্নেহে সমাহিত হওয়া সহযোগী আত্মা কখনও মায়ার সহযোগী হতে পারে না। তাঁর প্রত্যেক সংকল্পে বাবা আর সেবা থাকে। সেইজন্য যখন ঘুমায় তখনও অনেক আরামের ঘুম ঘুমায়, শান্তি আর শক্তি প্রাপ্ত হয়। নিদ্রা, নিদ্রা হবে না, যেন উপার্জন করে খুশীতে শুয়ে আছে, এতটাই পরিবর্তিত হয়ে যায়।

স্লোগান:-
প্রেমের অশ্রু হৃদয়ের ডিব্বাতে মোতি হয়ে যায়।