18.01.2023
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
পিতাশ্রী জীর পুণ্য
স্মৃতি দিবসে শোনানোর জন্য বাপদাদার মধুর মহাবাক্য -
প্রশ্নঃ -
ভবিষ্যতের
জন্য বাচ্চারা বাবার সাথে কোন্ সওদা করেছে? ঐ সওদার দ্বারা সঙ্গম যুগে কি লাভ হবে?
উত্তরঃ
দেহ সমেত, যা
কিছু খারাপ কিছু আছে, সবকিছুই বাবার কাছে অর্পণ করে বাবাকে তোমরা বলে থাকো, বাবা
আমরা আবারও সবকিছু নেব (ভবিষ্যতে), এটাই হলো অতি উত্তম সওদা। এতে তোমাদের সবকিছু
বাবার সিন্দুকে সেফ হয়ে যায় আর অপার খুশী থাকে যে, এখন আমরা এখানে অল্প সময় আছি,
তারপর আমাদের রাজধানীতে থাকবো। তোমাদের কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবে বাঃ! আমরা তো অসীমের
বাবার কাছ থেকে অনন্ত সুখের উত্তরাধিকার গ্রহণ করছি। এখন আমরা এভার হেল্দি, এভার
ওয়েল্দি হতে চলেছি।
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক পিতা
ওঁনার আত্মিক বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন মিষ্টি বাচ্চারা, যখন এখানে এসে বসো আত্ম-অভিমানী
হয়ে বাবার স্মরণে বসো। এই অ্যাটেনশন তোমাদের জন্য হলো ফর এভার (চির-দিনের জন্য) ।
যতদিন জীবিত থাকবে, বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। স্মরণ না করলে জন্ম-জন্মান্তরের পাপও
বিনষ্ট হবে না। রচয়িতা আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের সমগ্র স্বদর্শন চক্র তোমাদের
বুদ্ধিতে ঘোরা উচিত। তোমরা লাইট হাউস তাইনা। তোমাদের এক চোখে শান্তিধাম, আরেকটিতে
সুখধাম। উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে নিজেকে লাইট হাউস মনে করো। নিজেকে লাইট হাউস মনে করলে
নিজেরও কল্যাণ করবে আর অন্যদেরও কল্যাণ করতে পারবে। বাবা ভিন্ন-ভিন্ন যুক্তি বলে
দেন। পথে কারো সাথে দেখা হলে তাকে বলো এটা হলো দুঃখধাম, শান্তিধাম, সুখধামে যেতে
চাও ! ইশারায় বোঝাতে হবে। লাইট হাউস তো ইশারাই করে, পথ দেখিয়ে দেয়। তোমাদেরও সুখধাম
আর শান্তিধামের পথ বলে দিতে হবে। দিন-রাত এই ধুন(সুর) থাকা উচিত। যোগের শক্তির
দ্বারা তোমরা কাউকে যদি অল্পও বোঝাও তাহলেও তাদের ঝট করে তীর লেগে যাবে। যার তীর
লাগে সে সম্পূর্ণ ঘায়েল হয়ে যায়। প্রথমে ঘায়েল হয়ে তারপর বাবার হয়ে যায়। তোমরা
বাচ্চারা বাবাকে ভালোবাসার সাথে স্মরণ করো সেইজন্য বাবারও চেষ্টা থাকে। কেউ তো
একেবারেই স্মরণ করে না, সেইজন্য বাবারও করুণা হয়। তারপরও বাবা বলে থাকেন মিষ্টি
বাচ্চারা, উন্নতি করতে থাকো। পুরুষার্থ করে সামনের দিকের নম্বরে যাও। পতিত-পাবন
সদ্গতি দাতা একমাত্র বাবা, ঐ বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। শুধুমাত্র বাবাকে স্মরণ করলেই
হবে না, সেইসঙ্গে সুইট হোমকেও স্মরণ করতে হবে। শুধু সুইট হোমো নয়, সম্পত্তিও (মিলকিয়ত)
চাই। সেইজন্য স্বর্গধামকেও স্মরণ করতে হবে।
বাবা এসেছেন
মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের পারফেক্ট বানাতে। সুতরাং বিশ্বস্ততার সাথে, সততার সাথে
নিজেকে চেক করা উচিত যে আমি কতখানি পারফেক্ট হয়েছি। পারফেক্ট হওয়ার যুক্তিও বাবা
বলতেই থাকেন। মুখ্য খামতি হলই দেহ-অভিমানের।দেহ-অভিমানই এগিয়ে যেতে দেয় না, সেইজন্য
দেহকেও ভুলতে হবে। বাচ্চাদের প্রতি বাবার কতখানি ভালোবাসা থাকে। বাবা বাচ্চাদের দেখে
কত খুশি হয়ে ওঠেন। সুতরাং বাচ্চাদেরও এতটাই খুশীতে থাকা উচিত। বাবাকে স্মরণ করে
অন্তরে গদগদ হয়ে যাওয়া উচিত। দিন-দিন খুশীর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া উচিত। স্মরণের
যাত্রাতেই খুশির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। সেটাও ধীরে-ধীরে বৃদ্ধি পাবে। হার জীত হতে-হতে
তারপর নম্বরানুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী কল্প পূর্বের মতোই নিজের নিজের পদ প্রাপ্ত
করবে। বাপদাদা বাচ্চাদের অবস্থা সাক্ষী হয়ে দেখতে থাকেন এবং বোঝাতেও থাকেন।
বাপদাদার উভয়েরই বাচ্চাদের প্রতি অনেক ভালোবাসা রয়েছে কারণ তারা প্রতি কল্পে সুন্দর
সার্ভিস করে এবং সেটা তারা অনেক ভালোবাসার সাথে করে। কিন্তু বাচ্চারা যদি শ্রীমত
অনুসারে না চলে তবে বাবা কি করতে পারে! বাবার খুব করুণা হয় বাচ্চাদের দেখে। মায়া
হারিয়ে দেয়, বাবা আবারও দাঁড় করিয়ে দেন। সবচেয়ে মিষ্টি থেকেও মিষ্টি হচ্ছেন এক বাবা।
কত মধুর আর প্রেমময় শিব ভোলা ভগবান। শিব ভোলা তো একজনেরই নাম।
মিষ্টি বাচ্চারা,
তোমরা এখন অতি ভ্যালুয়েবল হীরে তৈরী হচ্ছো। ভ্যালুয়েবল হীরে জহরতকে সেফ্টির জন্য
সবসময় ব্যাঙ্কে রাখা হয়। তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চারাও হলে অত্যন্ত ভ্যালুয়েবল, যারা
শিববাবার ব্যাঙ্কে সেফ্টির সাথে বসে আছো। এখন তোমরা বাবার আশ্রয়ে থেকে অমর হচ্ছো।
তোমরা কালের উপরেও বিজয় প্রাপ্ত করছো। শিববাবার হয়েছো তাই সেফ হয়ে গেছো। বাকি উচ্চ
পদ পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করতে হবে। দুনিয়াতে মানুষের কাছে কত ধন-দৌলত আছে কিন্তু
সব শেষ হয়ে যাবে। কিছুই থাকবে না। তোমরা বাচ্চাদের কাছেও এখন কিছুই নেই। এই শরীরও
নেই। এই শরীরও বাবাকে দিয়ে দাও। সুতরাং যার কাছে কিছুই নেই তার কাছে সবকিছুই আছে।
তোমরা অসীম জগতের বাবার সাথে সওদা করেছো ভবিষ্যতের নতুন দুনিয়ার জন্য। তোমরা বলো
বাবা দেহ সহ যা কিছু খারাপ জিনিস আছে আর তোমার থেকে সবকিছু সেখানে নেবো। সুতরাং
তোমরা সেফ হয়ে গেলে। সবকিছুই বাবার ভল্টে সেফ হয়ে গেলো। বাচ্চারা তোমাদের মনে কতো
খুশী থাকা উচিত যে, আর অল্প সময় বাকী আছে তারপর আমরা আমাদের রাজধানীতে থাকবো।
তোমাদের কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবে বাঃ ! আমরা তো অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে অনন্ত
সুখের উত্তরাধিকার নিতে চলেছি। আমরা এভার হেল্দি, এভার ওয়েল্দি হচ্ছি। আমাদের সব
মনোকামনা পূর্ণ হচ্ছে। বাবা কত লভলি পিওর। তিনি আত্মাদেরও নিজের সমান পবিত্র করে
তোলেন। তোমরা যত বাবাকে স্মরণ করবে ততই লাভলি হবে, দেবতারা কত লাভলি হয়, এখনও
পর্যন্ত তাদের ঐ জড় চিত্রকে মানুষ পূজা করে। সুতরাং বাচ্চারা তোমাদেরও এমন লাভলি হতে
হবে। কোনো দেহধারী, কোনো জিনিসের কথা শেষে গিয়ে যেন মনে না আসে। বাচ্চারা বলে বাবা
তোমার কাছ থেকে তো সবকিছুই পেয়ে গেছি।
মিষ্টি বাচ্চাদের
নিজের কাছেই প্রতিজ্ঞা করা উচিত যে আমার দ্বারা যেন কোনো বিকর্ম না হয় যার জন্য
অন্তর্মন দগ্ধ হয়, সেইজন্যই যতটা সম্ভব নিজেকে শোধরাতে হবে, উচ্চ পদ পাওয়ার জন্য
পুরুষার্থ করতে হবে। নম্বরানুসারে তো আছেই। গয়নাও নম্বরানুসারে (গুণগত মান) হয়ে থাকে।
কানোটার মধ্যে অনেক ত্রুটি থাকে, কোনোটা সম্পূর্ণ পিওর হয়। বাবাও জহুরি তাইনা। সুতরাং
বাবাকে এক-এক রত্নকে দেখতে হয়। এটা কোন্ রত্ন, এর মধ্যে কি ডিফেক্ট আছে। ভালো-ভালো
খাঁটি রত্নকে বাবাও খুব ভালোবাসার সাথে দেখেন। ভালো-ভালো খাঁটি রত্নকে সোনার কৌটোতে
রাখতে হয়। বাচ্চারাও নিজেরা বুঝতে পারে যে আমি কোন্ ধরণের রত্ন। আমার মধ্যে কি
ডিফেক্ট আছে।
এখন তোমরা বলবে বাঃ
সদ্গুরু বাঃ! যিনি আমাদের এই পথ দেখিয়েছেন। বাঃ ভাগ্য বাঃ ! বাঃ ড্রামা বাঃ !
তোমাদের অন্তর থেকে বেরিয়ে আসে ‐ তোমাকে ধন্যবাদ বাবা যে আমাদের এক মুঠো চাল নিয়ে
আমাদেরকে সেফটির সাথে ভবিষ্যতে শতগুণ রিটার্ন করে দাও। কিন্তু এর মধ্যেও বাচ্চাদের
বিশাল বুদ্ধি থাকা চাই। বাচ্চাদের অগাধ জ্ঞান ধনের খাজানা প্রাপ্ত হয় সুতরাং অপার
খুশী হওয়া উচিত তাইনা। হৃদয় যত শুদ্ধ হবে ততই অন্যদের শুদ্ধ করে তুলতে পারবে। যোগের
স্থিতিতেই হৃদয় শুদ্ধ হয়ে ওঠে। বাচ্চারা তোমিদের যোগী হওয়া এবং যোগী করে তোলার জন্য
আগ্রহ থাকা উচিত। যদি দেহের প্রতি মোহ থাকে, দেহ-অভিমান থাকে তবে বুঝবে যে আমার
অবস্থা অনেক কাঁচা। দেহী-অভিমানী বাচ্চারাই প্রকৃত ডায়মন্ড তৈরি হয়, সেইজন্যই যতটা
সম্ভব দেহী-অভিমানী হওয়ার অভ্যাস করো। বাবাকে স্মরণ করো। বাবা শব্দটি খুব মিষ্টি।
বাবা অতি ভালোবাসার সাথে বাচ্চাদের চোখের পালকে (পাতায়) বসিয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন।
এমন বাবাকে স্মরণ করার নেশায় চুরচুর হয়ে যাওয়া উচিত। বাবাকে স্মরণ করতে-করতে খুশিতে
ঠান্ডাও হার মানবে। যেমন বাবা অপকারীদের উপকার করেন – তোমরাও ফলো ফাদার করো। সুখদায়ী
হও।
তোমরা বাচ্চারা এখন
ড্রামার রহস্যকেও জেনেছ – বাবা তোমাদেরকে নিরাকার, আকার এবং সাকার দুনিয়ার সব খবর
শুনিয়ে থাকেন। আত্মারা বলে এখন আমরা পুরুষার্থ করছি, নতুন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য।
আমরা স্বর্গে যাওয়ার জন্য নিশ্চয়ই যোগ্য হয়ে উঠব। নিজের এবং অন্যদেরও কল্যাণ করব।
আচ্ছা - বাবা মিষ্টি বাচ্চাদের বুঝিয়ে থাকেন, বাবা হলেন দুঃখ হর্তা সুখ কর্তা সুতরাং
বাচ্চাদেরও সবাইকে সুখ প্রদান করতে হবে। বাবার রাইট হ্যান্ড হতে হবে। এমন বাচ্চারাই
বাবার প্রিয় হয়। শুভ কাজে ডান হাতকেই কাজে লাগানো হয়। সেইজন্যই বাবা বলেন ধার্মিক
হও, একমাত্র বাবাকেই স্মরণ করো তাহলেই অন্তিম কালে যেমন মতই তেমনই গতি হবে। এই
পুরানো দুনিয়ার প্রতি মমত্ব মিটিয়ে ফেলো। এটা তো একটা কবরখানা। কাজকারবার,
সন্তানাদির চিন্তায় মারা গেলে বেকারই নিজের সর্বনাশ করবে। শিববাবাকে স্মরণ করলে
তোমরা সমৃদ্ধি লাভ করবে। দেহ-অভিমানে আসলেই সর্বনাশ হয়। দেহী-অভিমানী হলে সমৃদ্ধ
হওয়া যায়। ধনের প্রতিও অতি লোভ থাকা উচিত নয়। তার চিন্তাতেও শিববাবাকে ভুলে যায়।
বাবা দেখেন সবকিছু বাবাকে অর্পণ করে তারপর আমার শ্রীমতে বাচ্চারা কতটা চলে। শুরুতে
বাবাও(ব্রহ্মা) ট্রাস্টি হয়ে দেখিয়েছেন না ! সবকিছু ঈশ্বরার্থে অর্পণ করে স্বয়ং
ট্রাস্টি হয়ে গেছেন। ব্যস্! সবকিছুই ঈশ্বরের কাজে লাগিয়েছেন। বিঘ্ন আসলেও কখনও ভয়
পাওয়া উচিত নয়। যতটুকু সম্ভব সার্ভিস করে নিজের সবকিছু সফল করা উচিত। ঈশ্বরের কাছে
অর্পণ করে ট্রাস্টি হয়ে থাকতে হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
অব্যক্ত-মহাবাক্য -
১৯৭৭
সবাই আওয়াজের ঊর্ধ্বে
নিজেকে শান্ত স্বরূপ স্থিতিতে থাকার অনুভব দীর্ঘ সময় ধরে করতে পারো? আওয়াজে আসার
অনুভব বেশী হয় নাকি আওয়াজের ঊর্ধ্বে থাকার অনুভব দীর্ঘ সময় করতে পারো? যত শেষ স্টেজ
অথবা কর্মাতীত স্টেজ নিকটে আসতে থাকবে ততই আওয়াজের ঊর্ধ্বে শান্ত স্বরূপ স্থিতি
অধিক ভালো লাগবে, এই স্থিতিতে সবসময় অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভূতি হবে। এমনই অতীন্দ্রিয়
সুখময় স্থিতির দ্বারা অনেক আত্মাদের সহজেই আহ্বান করতে পারবে। এই শক্তিশালী স্থিতিকে
বিশ্ব-কল্যাণকারী স্থিতি বলা হয়। আজকাল যেমন সায়েন্সের সাধনের দ্বারা সবকিছুই কাছে
থাকার অনুভব হয়ে থাকে, দূরের আওয়াজ টেলিফোনের সাধন দ্বারা কাছ থেকেই শুনতে পাওয়া
যায়, দূরদর্শন দ্বারা দূরের দৃশ্য কাছে দেখা যায়। এভাবেই সাইলেন্সের স্টেজ (স্থিতি)
দ্বারা অনেক দূরে থাকা আত্মাদেরও খবর পৌঁছে দিতে পারো। ওরা এমন অনুভব করবে যেন
সাকারে সামনে এসে কেউ খবর দিচ্ছে। দূরে বসেও তোমরা শ্রেষ্ঠ আত্মাদের দর্শন আর
প্রভুর চরিত্রকে হৃদয়ে এমন অনুভব করবে যেন ঠিক সামনেই দেখছে। সঙ্কল্পের দ্বারা দেখা
যাবে অর্থাৎ আওয়াজের ঊর্ধ্বে সঙ্কল্প সিদ্ধ হওয়ার পার্ট প্লে করবে। কিন্তু এই
সিদ্ধির বিধি হলো – দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ সময় ধরে নিজেকে শান্ত স্বরূপ স্থিতিতে স্থিত
হতে হবে। সেইজন্যই বলা হয় সাইলেন্স ইজ গোল্ড, একেই গোল্ডেন এজ স্টেজ বলা হয়। এই
স্টেজে স্থিত থাকলে কম খরচে অধিক লাভ ("কম খরাচ বালানশীন") হয়ে উঠবে। সময় রূপী
খাজানা, এনার্জির খাজানা আর স্থূল খাজানা সব কিছুতেই কম খরচে অধিক লাভ হবে। এরজন্য
একটা শব্দ স্মরণে রাখো, কোন শব্দ সেটা? ব্যালেন্স। প্রতিটি কর্ম, প্রতিটি সঙ্কল্প
আর বাক্য, সম্বন্ধ বা সম্পর্কের মধ্যে ব্যালেন্স থাকবে। তাহলেই বাক্যালাপ, কর্ম,
সঙ্কল্প, সম্বন্ধ বা সম্পর্ক সাধারণ হওয়ার পরিবর্তে অলৌকিক দেখা যাবে অর্থাৎ চমৎকারী
হবে। প্রত্যেকের মুখ থেকে, মন থেকে এই আওয়াজই বেরোবে এ তো বড় চমৎকার হয়ে গেছে ।
সময় অনুসারে নিজের পুরুষার্থ করার স্পীড এবং বিশ্ব সেবার স্পীড তীব্র-গতি হওয়া উচিত
তবেই বিশ্ব কল্যাণকারী হতে পারবে।
বিশ্বের অধিকাংশ
আত্মারাই বাবাকে আর তোমরা ইষ্ট দেবতাদের প্রত্যক্ষতার আহ্বান বেশি করে করছে আর ইষ্ট
দেব তাদের আহ্বান কম করছে। এর কারণ কি? নিজেদের লৌকিক স্বভাব, সংস্কার সীমিত
পরিবারের প্রতি বেশি সময় ব্যয় করছে। জ্ঞানহীন আত্মাদের যেমন জ্ঞান শোনার সময় নেই,
তেমনই অনেক ব্রাহ্মণদেরও এই পাওয়ারফুল স্টেজে স্থিত থাকার সময় হয়না, সেইজন্যই এখন
শক্তিশালী রূপ হওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে ।
বাপদাদা প্রত্যেকের
প্রবৃত্তিকে দেখে মুচকি হাসেন যে, বাচ্চারা কীভাবে এতো বিজি হয়ে গেছে। খুব বিজি থাকো
তাইনা ! বাস্তবিক স্টেজে সবসময় ফ্রি (হালকা) থাকবে। এতে সিদ্ধিও হবে আর ফ্রিও থাকবে।
যখন সায়েন্সের সাধন
ধরিত্রীতে বসে স্পেসে যাওয়া যন্ত্রকে কন্ট্রোল করতে সক্ষম হয়, যেভাবে চায়, যেখানে
চায় সেইভাবে মোল্ড করতে পারে, সুতরাং সাইলেন্সের শক্তি স্বরূপ হয়ে এই সাকার সৃষ্টিতে
শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের আধারে যে সেবা করতে চাও, যে আত্মার সেবা করতে চাও সেটা করতে পারবে
না? প্রথমে নিজের-নিজের প্রবৃত্তি থেকে ঊর্ধ্বে অর্থাৎ উপরাম হও।
যে সমস্ত খাজানার কথা
শোনালাম সেগুলো নিজের প্রতি নয়, বিশ্ব কল্যাণহেতু ব্যবহার করো। বুঝেছো, এখন কি করতে
হবে? আওয়াজ দ্বারা সার্ভিস, স্থূল সাধন দ্বারা সার্ভিস আর আওয়াজের ঊর্ধ্বে উঠে
সূক্ষ্ম সঙ্কল্পের শ্রেষ্ঠত্ব, সঙ্কল্প শক্তির দ্বারা সার্ভিসের ব্যালেন্স
প্রত্যক্ষ রূপে দেখাও, তবেই বিনাশের দামামা বাজবে। বুঝেছো। প্ল্যান তো অনেক কিছু
তৈরি করছো, বাপদাদাও প্ল্যান তৈরি করছেন। ব্যালেন্স ঠিক না হওয়ার কারণে বেশি
পরিশ্রম করতে হয়। বিশেষ কার্য করার পর বিশেষ রেস্টও নিচ্ছো তাই না ! ফাইনাল
প্ল্যান করার সময় ক্লান্তি অনুভব করবে না। আচ্ছা। এমনই সর্ব শক্তিকে বিশ্ব
কল্যাণার্থে কার্যে ব্যবহারকারী, সঙ্কল্প সিদ্ধি স্বরূপ, নিজের প্রবৃত্তি থেকে
স্বতন্ত্র, সদা শান্ত আর শক্তি স্বরূপ স্থিতিতে স্থিত থাকা সর্ব শ্রেষ্ঠ আত্মাদের
বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
সাইলেন্সের শক্তির দ্বারা নতুন সৃষ্টির স্থাপনার নিমিত্ত হওয়া মাস্টার শান্তি দেব
ভব
সাইলেন্সের শক্তি জমা
করার জন্য এই শরীরের ঊর্ধ্বে অশরীরী হয়ে যাও। এই সাইলেন্সের শক্তি হলো অত্যন্ত মহান
শক্তি, এর দ্বারাই নতুন সৃষ্টির স্থাপনা হয়। সুতরাং যারা আওয়াজের ঊর্ধ্বে সাইলেন্স
রূপে স্থিত হবে তারাই স্থাপনার কাজ করতে সক্ষম হবে। সেইজন্যই শান্তি দেব অর্থাৎ
শান্ত স্বরূপ হয়ে অশান্ত আত্মাদের শান্তির কিরণ দাও। বিশেষভাবে শান্তির শক্তিকে
বাড়িয়ে তোলো। এটাই হলো সবচেয়ে বড় মহাদান, এটাই হলো সবচেয়ে প্রিয় এবং শক্তিশালী বস্তু।
স্লোগান:-
প্রত্যেক আত্মা বা প্রকৃতির প্রতি শুভভাবনা রাখাই হলো বিশ্ব কল্যাণকারী হওয়া।