01.05.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
তোমরা অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে অসীমিত অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে এসেছো, এখানে
দেহের (হদের) দুনিয়ার কোনও ব্যাপার নেই, তোমরা খুব উৎসাহের সাথে বাবাকে স্মরণ করো
তাহলে পুরানো দুনিয়াকে ভুলে যাবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ একটি কথা
তোমাদের বারংবার নিজের মনে নাড়াচাড়া করে দৃঢ় করে নিতে হবে?
উত্তরঃ
আমরা হলাম
আত্মা, আমরা পরমাত্মা পিতার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিচ্ছি। আত্মারা হলো
সন্তান, পরমাত্মা হলেন বাবা। এখন সন্তান ও পিতার মিলন হয়েছে। এই কথাটি বারংবার
নাড়াচাড়া করে করে মনের মধ্যে পাকা করো। যত যত আত্ম-অভিমানী হবে, দেহ-অভিমান দূর হয়ে
যাবে ।
গীতঃ-
যে প্রিয়তমের
সাথে আছে....
ওম্ শান্তি ।
আত্মারূপী
বাচ্চারা জানে, আমরা আত্মারা বাবার সঙ্গে বসে আছি - ইনি হলেন উচ্চ থেকেও উচ্চ বাবা,
সকলের বাবা। বাবা এসেছেন। বাবার কাছে কি প্রাপ্ত হয়, এই প্রশ্নই তো ওঠে না। বাবার
কাছে প্রাপ্ত হয় অবিনাশী উত্তরাধিকার। ইনি হলেন সকল আত্মাদের অসীম জাগতিক পিতা,
যাঁর কাছে অসীমিত সুখ, অসীমিত সম্পদ প্রাপ্ত হয়। ওইসব হলো দেহের দুনিয়ার সম্পত্তি।
কারো কাছে হাজার, কারো কাছে ৫ হাজার হবে। কারো কাছে ১০-২০-৫০ কোটি হবে, আরব হবে। সে
সব হল লৌকিক বাবা আর দৈহিক সন্তান। এখানে তোমরা বাচ্চারা বুঝতে পেরেছো যে, আমরা
অসীম জগতের বাবার কাছে এসেছি অসীম জাগতিক সম্পত্তি প্রাপ্তির জন্য। মনে আশা তো থাকে,
তাইনা। এই স্কুল ছাড়া অন্য কোনো সৎসঙ্গ ইত্যাদিতে কোনও রুচি থাকে না। বলবে শান্তি
চাই, তা তো পাওয়া যায় না। এখানে তোমরা বাচ্চারা বুঝেছো যে আমরা এসেছি বিশ্ব নতুন
দুনিয়ার মালিক হতে। তা নাহলে এখানে আসা কেন। বাচ্চাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়! তারা বলে
বাবা আমরা তো বিশ্বের মালিক হতে এসেছি, সীমিত দেহের জগতের কোনও ব্যাপার নেই। বাবা
তোমার কাছে আমরা অসীম জগতের স্বর্গের উত্তরাধিকার নিতে এসেছি। কল্প-কল্প আমরা বাবার
কাছে উত্তরাধিকার নিয়েছি আর মায়া বেড়াল কেড়ে নিয়েছে তাই একেই হার-জিতের খেলা বলা হয়।
বাবা বসে আত্মা রূপী বাচ্চাদের বোঝান। বাচ্চারাও নম্বর অনুযায়ী বোঝে, ইনি কোনও
সাধু-সন্ন্যাসী নন। যেমন তোমাদের পোশাক, তেমনই এনারও পোশাক । ইনি তো বাবা, তাইনা।
কেউ প্রশ্ন করবে তোমরা কার কাছে যাও? তখন বলবে আমরা বাপদাদার কাছে যাই। এটা তো
পরিবার, তাইনা। কেন যাও, কি নিতে যাও? সে কথা তো কেউ বুঝবে না। বলতে পারবে না আমরা
বাপদাদার কাছে যাই, উত্তরাধিকার তার কাছেই প্রাপ্ত হয়। ঠাকুরদাদার সম্পত্তিতে সকলের
অধিকার থাকে। তোমরা হলে শিববাবার অবিনাশী সন্তান তারপরে প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান
হলে তাঁর নাতি নাতনী হয়ে যাও। এখন তোমরা জানো আমরা আত্মা। এই কথাটি দৃঢ় ভাবে মনে
রাখা উচিত। আমরা আত্মারা পরমাত্মা বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। আমরা
আত্মারা বাবার সঙ্গে এসে মিলিত হই। এর আগে দেহের অনুভূতি ছিল। অমুক নামের লোকই
সম্পত্তি পাবে। এখন তো হলো আত্মারা, পরমাত্মার কাছে উত্তরাধিকার নেয়। আত্মারা হল
সন্তান, পরমাত্মা হলেন পিতা। সন্তান ও পিতার বহু কাল পরে মিলন মেলা লেগেছে। মাত্র
একবার। ভক্তি মার্গে যদিও অনেক আর্টিফিশিয়াল মেলা আয়োজিত হয়। এই হল সবচেয়ে
ওয়ান্ডারফুল মেলা। আত্মা, পরমাত্মা দূরে থেকেছে বহুকাল.... কারা? তোমরা আত্মারা। এই
কথাও তোমরা বুঝেছো আমরা আত্মারা নিজের সুইট সাইলেন্স হোমে অর্থাৎ পরমধামে বাস করি।
এখন এখানে মনুষ্য আত্মারা পার্ট প্লে করে ক্লান্ত হয়েছে। তাই সন্ন্যাসী গুরুদের কাছে
গিয়ে শান্তির প্রাপ্তির জন্য অনুরোধ করে। ভাবে যে তারা ঘর সংসার ত্যাগ করে জঙ্গলে
বাস করে, তাদের কাছে শান্তি প্রাপ্ত হবে। কিন্তু এমন তো নয়। এখন তো সবাই শহরে এসে
গেছে। জঙ্গলের গুহা গুলি খালি পড়ে আছে। এখানে গুরু হয়ে বসে গেছে। যদিও তাদের
সন্ন্যাস মার্গের জ্ঞান প্রদান করে পবিত্রতার শিক্ষা দেওয়া উচিত। কিন্তু আজকাল তারা
বিবাহ ইত্যাদি সম্পন্ন করায়।
তোমরা বাচ্চারা নিজের
যোগ বলের দ্বারা নিজের কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করো। কর্মেন্দ্রিয় গুলি
যোগবলের দ্বারা শীতল হয়ে যাবে। কর্মেন্দ্রিয় গুলি চঞ্চল হয়, তাইনা। এখন
কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে জয় করতে হবে যাতে কোনো রকম চাঞ্চল্য না থাকে। যোগবল ব্যতীত
কর্মেন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বাবা বলেন কর্মেন্দ্রিয় গুলির চঞ্চলতা
যোগবলের দ্বারাই শেষ হবে। যোগবলের শক্তি আছে, তাইনা। এতে খুব পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়।
ভবিষ্যতে কর্মেন্দ্রিয় গুলির চঞ্চলতা থাকবে না। সত্যযুগে কোনো অসুখ থাকে না। এখানে
তোমরা কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে বা বশীভূত করে যাও তাই কোনও অশুদ্ধ কথা
সেখানে থাকে না। নাম-ই হলো স্বর্গ। সে কথা ভুলে যাওয়ার দরুন লক্ষ বছর বলে দিয়েছে।
এখনও মন্দির নির্মাণ করেই চলেছে। যদি লক্ষ বছরের ব্যপার হবে, তাহলে তো এসব কথা কথা
স্মরণেই থাকবে না। এই মন্দির ইত্যাদি কেন বানিয়েছিল? সুতরাং সেখানে কর্মেন্দ্রিয়
শীতল থাকে। কোনও চাঞ্চল্য থাকে না। শিববাবার তো কর্মেন্দ্রিয় নেই। যদিও আত্মায়
সম্পূর্ণ জ্ঞান তো থাকে, তাই না। তিনিই হলেন শান্তির সাগর, সুখের সাগর। তারা বলে
কর্মেন্দ্রিয় বশীভূত হতে পারে না। বাবা বলেন যোগবলের দ্বারা তোমরা কর্মেন্দ্রিয়কে
বশীভূত করো। বাবার স্মরণে থাকো। কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা কোনোরকম অনিয়মের কাজ করবে না।
এমন প্রিয় বাবাকে স্মরণ করতে করতে চোখে প্রেম সিক্ত হয়ে আসা উচিত। আত্মা, পরমাত্মায়
বিলীন তো হয় না। বাবার সঙ্গে কেবলমাত্র একবারই মিলন হয়, যখন তিনি দেহের আধার নেন
তাহলে এমন বাবার সঙ্গে কতখানি ভালোবাসা সহ চলা উচিত। বাবা স্বয়ং এসেছেন তাইনা। ওহো!
বাবা বিশ্বের মালিক করছেন তাহলে এই ধন সম্পদ নিয়ে কি করবে, সব ত্যাগ করো। যেমন
পাগলরা হয়ে থাকে না ! সবাই বলবে বসে থাকতে থাকতে কি হল । ব্যবসা ইত্যাদি সব ত্যাগ
করে চলে এসেছে। খুশীর পারদ ঊর্ধ্বে উঠেছে। সাক্ষাৎকার হল। রাজত্ব প্রাপ্তি হবে
কিন্তু কীভাবে, কি হবে? সেসব কিছু জানা নেই। শুধুমাত্র প্রাপ্তি হবে, সেই খুশীতে সব
ত্যাগ করেছে। তারপরে ধীরে ধীরে নলেজ প্রাপ্ত হল। তোমরা বাচ্চারা এখানে স্কুলে পড়তে
এসেছো, মুখ্য উদ্দেশ্য তো আছে তাইনা। এই হল রাজযোগ। অসীম জগতের পিতার কাছে রাজত্ব
নিতে এসেছো। বাচ্চারা জানে আমরা তাঁর কাছে পড়ি, যাঁকে স্মরণ করা হয়েছে যে বাবা এসে
আমাদের দুঃখ হরণ করে সুখ প্রদান করুন। কন্যা সন্তানরা বলে আমাদের যেন কৃষ্ণের মতন
পুত্র হয়। কৃষ্ণ তো বৈকুণ্ঠে থাকবে, তাইনা। কৃষ্ণ হলেন বৈকুণ্ঠের, তোমরা কৃষ্ণকে
দোলনায় বসিয়ে দোল দাও তো তাঁর মতন সন্তান তো বৈকুণ্ঠে প্রাপ্ত হবে, তাইনা। এখন তোমরা
বৈকুণ্ঠের বাদশাহী নিতে এসেছো। সেখানে নিশ্চয়ই প্রিন্স-প্রিন্সেস থাকবে। পবিত্র
সন্তান প্রাপ্ত হোক, এই আশাও পূর্ণ হয়। যদিও এখানেও অনেক প্রিন্স-প্রিন্সেস আছে,
কিন্তু তারা হল নরকবাসী। তোমরা চাও স্বর্গবাসীকে। পড়াশোনা তো খুব সহজ। বাবা বলেন
তোমরা অনেক ভক্তি করেছো, ধাক্কা খেয়েছো। তোমরা কতখানি খুশীর সাথে তীর্থ ইত্যাদি করতে
যাও। অমর নাথে যাও, তোমরা ভাবো পার্বতীকে শঙ্কর অমর কথা শুনিয়েছেন। অমর নাথের
প্রকৃত সত্য কাহিনী তোমরা এখনই শোনো। সেই কাহিনী এখন বাবা বসে তোমাদের শোনান। তোমরা
এসেছো - বাবার কাছে। জানো এ হলো ভাগ্যশালী রথ, শিববাবা এই রথটি লোনে নিয়েছেন। আমরা
শিববাবার কাছে যাই, তাঁর শ্রীমৎ অনুসারে চলবো। যা কিছু প্রশ্ন করার আছে বাবাকে
জিজ্ঞাসা করতে পারো। কেউ বলে - বাবা আমরা বলতে পারি না। তার জন্য তোমরা পুরুষার্থ
করো, এতে বাবা কি করবেন।
বাচ্চারা, বাবা
তোমাদের শ্রেষ্ঠ হওয়ার সহজ পথ বলে দিচ্ছেন - এক কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে বশীভূত করো,
দ্বিতীয়তঃ দিব্য গুণ ধারণ করো। কেউ রাগারাগি করলে শুনবে না। এক কান দিয়ে শুনে অন্যটি
দিয়ে বের করে দেবে। যে খারাপ কথা ভালো লাগে না, সেসব শুনবে না। যদি দেখো স্বামী
রাগারাগি করে, মারধর করে তখন কি করা উচিত? যখন দেখবে স্বামী রাগারাগি করছে তখন তার
উপরে ফুলের বর্ষা করবে। হাসি মুখে থাকো। যুক্তি তো অনেক আছে। কামেষু, ক্রোধেষু হয়,
তাইনা। অবলা নারী প্রার্থনা করে। দ্রৌপদী কেউ একজন নয়, সবাই। এখন বাবা এসেছেন
বস্ত্রহীন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে। বাবা বলেন এই মৃত্যুলোকে এই হল তোমাদের শেষ জন্ম।
বাচ্চারা, আমি তোমাদের শান্তিধাম নিয়ে যেতে এসেছি। সেখানে পতিত আত্মারা যেতে পারে
না, তাই আমি এসে সবাইকে পবিত্র করি। যে যেরকম পার্ট পেয়েছে সেসব সম্পূর্ণ করে এখন
সবাইকে ফিরে যেতে হবে। সম্পূর্ণ বৃক্ষের রহস্য বুদ্ধিতে আছে। যদিও বৃক্ষের পাতাগুলি
গোণা সম্ভব নয়। অতএব বাবাও মুখ্য কথা বোঝান - বীজ এবং বৃক্ষ। বাকি মানুষের সংখ্যা
তো অনেক। এক একজনের মনের স্থিতি বসে জানবেন না। মানুষ ভাবে ভগবান হলেন অন্তর্যামী,
প্রত্যেকের মনের কথা জানেন। এইসবই হলো অন্ধ শ্রদ্ধা।
বাবা বলেন তোমরা আমাকে
আহবান করো যে এসে আমাদের পতিত থেকে পবিত্র বানাও, রাজযোগের শিক্ষা প্রদান করো। এখন
তোমরা রাজযোগ শিখছো। বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো। বাবা এই মতামত দেন তাইনা। বাবার
শ্রীমৎ এবং সৎ গতি হলো সবচেয়ে পৃথক। মতামত অর্থাৎ রায়, যার দ্বারা আমাদের সদগতি হয়।
বাবা-ই একমাত্র আমাদের সদগতি করবেন, অন্য কেউ নয়, এসময়েই তাঁকে আহ্বান করা হয়।
সত্যযুগে তো তাঁকে ডাকা হয় না। এখনই বলা হয় সর্বজনের সদগতি দাতা একমাত্র রাম। যখন
মালা হাতে জপ করা হয় তখন মালার ফুল হাতে এলে রাম নাম করে চোখে ঠেকানো হয়। জপ করতে
হয় একমাত্র ফুল-কে। বাকি গুলো সব তাঁরই রচনা। মালার কথা তোমরা ভালোভাবে জেনেছো। যারা
বাবার সঙ্গে সার্ভিস করে তাদেরই হলো এই মালা। শিববাবাকে রচয়িতা বলা হবে না। রচয়িতা
বললে প্রশ্ন উঠবে রচনা কবে করেছেন? প্রজাপিতা ব্রহ্মা এখন সঙ্গমে ব্রাহ্মণদের রচনা
করেন তাইনা। শিববাবার রচনা তো অনাদি আছেই। শুধুমাত্র পতিত থেকে পবিত্র করতে বাবা
আসেন। এখন হলো পুরানো সৃষ্টি। নতুন সৃষ্টিতে থাকেন দেবতারা। এখন শূদ্রকে দেবতায়
পরিণত কে করবে। এখন তোমরা পুনরায় দেবতায় পরিণত হও। এখন তোমরা জানো বাবা আমাদের
শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ, ব্রাহ্মণ থেকে দেবতায় পরিণত করেন। এখন তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছো,
দেবতা হওয়ার জন্য। মনুষ্য সৃষ্টি রচনা করেন ব্রহ্মা, তিনি হলেন মনুষ্য সৃষ্টির হেড।
যদিও সকল আত্মাদের অবিনাশী পিতা সর্বদা-ই হলেন শিব। এইসব নতুন কথা তোমরা শুনছো। যে
বুদ্ধিমান হয় সে ভালোরীতি ধারণ করে। ধীরে ধীরে তোমাদেরও বৃদ্ধি হতে থাকবে। বাচ্চারা,
এখন তোমাদের স্মরণে এসেছে, আমরা আসলে দেবতা ছিলাম তারপরে কীভাবে ৮৪টি জন্ম নিয়েছি।
সব রহস্য তোমরা জানো। বেশী কথায় যাওয়ার দরকার নেই।
বাবার কাছ থেকে
সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্য মুখ্য কথা বাবা বলেন - এক তো আমাকে স্মরণ করো,
দ্বিতীয়তঃ পবিত্র হও। স্বদর্শন চক্রধারী হও এবং নিজ সম বানাও। কতখানি সহজ।
শুধুমাত্র স্মরণে স্থির থাকা যায় না। নলেজ তো খুবই সহজ। এখন পুরানো দুনিয়া শেষ হবে।
তারপর সত্যযুগে নতুন দুনিয়ায় দেবী-দেবতারা রাজত্ব করবেন। এই দুনিয়ায় পুরানো থেকে
পুরানো এই দেবতাদের চিত্র আছে বা তাদের মহল ইত্যাদি আছে। তোমরা বলবে অতি পুরানো আমরা
বিশ্বের মহারাজা-মহারানী ছিলাম। শরীর তো শেষ হয়ে যায়। যদিও চিত্র ইত্যাদি বানাতে
থাকে। এখন এই কথা কি কেউ জানে যে লক্ষ্মী-নারায়ণ যাঁরা রাজত্ব করতেন তাঁরা কোথায়
গেছেন? রাজত্ব কীভাবে নিলেন? বিড়লারা এত মন্দির বানায় কিন্তু জানে না। অর্থ আসতে
থাকে আর মন্দির বানাতে থাকে। ভাবে দেবতাদের কৃপা। একমাত্র শিবের পুজো হলো অব্যভিচারী
ভক্তি। জ্ঞান দাতা তো হলেন একমাত্র জ্ঞানের সাগর, বাকি সব হলো ভক্তি মার্গ। জ্ঞানের
দ্বারা অর্ধকল্প সদগতি হয় তখন ভক্তির দরকার থাকে না। জ্ঞান, ভক্তি, বৈরাগ্য। এখন
ভক্তির প্রতি, পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য থাকা উচিত। পুরানো দুনিয়া এখন সব শেষ
হবে, এতে আসক্তি রেখো না। এখন তো নাটক পূর্ণ হয়েছে, আমরা ফিরে যাই পরমধাম। সেই
খুশীর অনুভূতি থাকে। অনেকে ভাবে মোক্ষ প্রাপ্ত করা ভালো পুনরায় আর আসতে হবে না।
আত্মা জলবিন্দু (বুদ্বুদ) যা সাগরে মিশে যায়। এইসব হলো গল্প। অ্যাক্টর তো অ্যাক্ট
করবে নিশ্চয়ই। যে ঘরে বসে যায় তাকে কি অ্যাক্টর বলা যায় । মোক্ষ হয় না । এই ড্রামা
হলো অনাদি। এখানে তোমরা কতো নলেজ প্রাপ্ত করো। মানুষের বুদ্ধিতে তো কিছুই নেই।
তোমাদের পার্ট হলোই - বাবার কাছ থেকে জ্ঞান নেওয়ার, উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার। তোমরা
ড্রামার বন্ধনে আবদ্ধ। পুরুষার্থ অবশ্যই করবে। এমন নয় ড্রামাতে থাকলে হবে। তাহলে তো
বসে থাকো। কিন্তু কর্ম ছাড়া কেউ থাকতে পারে না। কর্ম সন্ন্যাস তো হতেই পারে না।
আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
যোগবলের শক্তির দ্বারা নিজের কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে শীতল করতে হবে। বশে রাখতে হবে।
খারাপ কথা শুনবে না, বলবেও না । যে কথা পছন্দ নয়, এক কানে শুনে অন্যটি দিয়ে বের করে
দেবে।
২ ) বাবার কাছ থেকে
সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্য স্বদর্শন চক্রধারী হতে হবে, পবিত্র হয়ে নিজ সম
পরিণত করার সেবা করতে হবে।
বরদান:-
মুরলীর
সুরের দ্বারা মায়াকে স্যারেন্ডার করানো মুরলীধর ভব
মুরলী তো অনেক শুনেছো
এখন এমন মুরলীধর হও যে মায়া মুরলীর সামনে স্যারেন্ডার হয়ে যাবে। মুরলীর রহস্যময় সুর
যদি সর্বদা বাজাতে থাকো তাহলে মায়া সবসময়ের জন্য স্যারেন্ডার হয়ে যাবে। মায়ার মুখ্য
স্বরূপ, কারণের রূপে আসে। যখন মুরলীর দ্বারা কারণের নিবারণ পেয়ে যাবে তখন মায়া
চিরকালের জন্য সমাপ্ত হয়ে যাবে। কারণ সমাপ্ত অর্থাৎ মায়া সমাপ্ত।
স্লোগান:-
অনুভবী
স্বরূপ হও তাহলে চেহারার দ্বারা সৌভাগ্যের ঝলক দেখা যাবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
আত্মিক রয়্যাল্টি আর পিওরিটির পার্সোনালিটি ধারণ করো
সঙ্গমযুগী
ব্রাহ্মণদের বিশেষত্ব হলো পবিত্রতা। প্রবৃত্তিতে থেকে অপবিত্রতা থেকে নিবৃত্ত থাকা,
স্বপ্ন মাত্রেও অপবিত্রতার সংকল্প থেকে মুক্ত থাকা - এটাই হলো বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ
করার সাধন, এটাই হলো তোমাদের ব্রাহ্মণদের আত্মিক রয়্যাল্টি আর পার্সোনালিটি।