01.12.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
রোজ বিচার সাগর মন্থন করো, তাহলে খুশীর পারদ চড়তে থাকবে, চলতে - ফিরতে যেন স্মরণে
থাকে যে, আমি স্বদর্শন চক্রধারী"
প্রশ্নঃ -
নিজের উন্নতি
করার সহজ সাধন কি?
উত্তরঃ
নিজের উন্নতির
জন্য রোজ পোতামেল (প্রতিদিনের চার্ট) রাখো । চেক করো - আজ সারাদিন কোনো আসুরী কাজ
করিনি তো? স্টুডেন্ট যেমন নিজের রেজিস্টার রাখে, বাচ্চারা, তেমনই তোমাদের দৈবী
গুণের রেজিস্টার রাখো, তাহলে উন্নতি হতে থাকবে ।
গীতঃ-
দূর দেশের
অধিবাসী...
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা জানে
যে, দূর দেশ কাকে বলা হয় । দুনিয়াতে একজন মানুষও তা জানে না । যত বড় বিদ্বানই হোক
না কেন বা পণ্ডিতই হোক, এর অর্থ বুঝতে পারে না । বাচ্চারা, তোমরাই বুঝতে পারো । বাবা,
যাকে সব মনুষ্যমাত্র স্মরণ করে বলে হে ভগবান.... অবশ্যই তিনি উপরে মূল লোকে (বতনে)
আছেন, আর কেউই একথা জানে না । বাচ্চারা, এই ড্রামার রহস্য তোমরাই এখন বুঝতে পারো ।
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যা হয়েছে, যা হবে, সব তোমাদের বুদ্ধিতে আছে । এই সৃষ্টিচক্র
কিভাবে ঘুরতে থাকে, সে'কথা বুদ্ধিতে থাকা উচিত, তাই না । বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যেও
এই কথা নম্বরের ক্রমানুসারেই বুঝতে পারে । বিচার সাগর মন্থন করে না, তাই খুশীর
পারদও চড়ে না । উঠতে - বসতে বুদ্ধিতে থাকা চাই যে, আমরা স্বদর্শন চক্রধারী । আদি
থেকে অন্ত পর্যন্ত আমি আত্মা এই সম্পূর্ণ সৃষ্টিচক্রকে জানি । যদিও তোমরা এখানে বসে
আছো, তবুও বুদ্ধিতে মূলবতন স্মরণে আসে । সেটা হলো সুইট সাইলেন্স হোম, নির্বাণধাম,
সাইলেন্স ধাম, যেখানে আত্মারা থাকে । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে চট করে এসে যায়,
আর কেউই জানে না । তারা যতই শাস্ত্র আদি পড়ুক না কেন, লাভ কিছুই নেই । ওইসব হলো
অবতরণের কলায় । তোমরা এখন উপরে উঠছো । ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য নিজেরাই তৈরী হচ্ছো ।
এই পুরানো কাপড় ত্যাগ করে আমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে । খুশী তো থাকে, তাই না । ঘরে
যাওয়ার জন্য তোমরা অর্ধেক কল্প ভক্তি করেছো । সিঁড়ি নীচে নামতেই থেকেছে । বাবা এখন
আমাদের সহজভাবে বোঝান । বাচ্চারা, তোমাদের খুশী হওয়া উচিত । বাবা ভগবান আমাদের পড়ান
- এই খুশী অনেক থাকা উচিত । বাবা তোমাদের সম্মুখে বসে পড়াচ্ছেন । যিনি সকলের বাবা,
তিনিই আমাদের আবার পড়াচ্ছেন । তিনি অনেকবার পড়িয়েছেন । তোমরা যখন চক্র লাগিয়ে তা
সম্পূর্ণ করো, তখনই বাবা আসেন । এই সময় তোমরা হলে স্বদর্শন চক্রধারী । তোমরা
বিষ্ণুপুরীর দেবতা হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো । দুনিয়াতে আর কেউই এই জ্ঞান দিতে পারে
না । শিববাবা আমাদের পড়াচ্ছেন, এই খুশী কতো থাকা উচিত । বাচ্চারা জানে যে, এই
শাস্ত্র ইত্যাদি সব ভক্তিমার্গের, এই শাস্ত্র সদগতির জন্য নয় । ভক্তিমার্গের
সামগ্রীও তো চাই, তাই না । অগাধ সামগ্রী আছে । বাবা বলেন যে, এতে তোমরা নেমেই এসেছো
। বিভ্রান্ত হয়ে কতো দ্বারে - দ্বারে ঘুরেছো । এখন তোমরা শান্ত হয়ে বসছো ।
তোমাদের ধাক্কা খাওয়া সব দূর হয়ে গেছে । তোমরা জানো যে, এখন খুব অল্প সময় বাকি আছে,
আত্মাকে পবিত্র করার জন্য বাবা সেই পথই বলে দিচ্ছেন । তিনি বলেন যে, আমাকে যদি
স্মরণ করো, তাহলে তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে, তারপর সতোপ্রধান
দুনিয়াতে গিয়ে রাজত্ব করবে । এই পথ বাবা কল্পে - কল্পে অনেকবার বলে দিয়েছেন । এরপর
নিজের অবস্থাকেও দেখতে হবে, ছাত্ররা পুরুষার্থ করে নিজেদের হুঁশিয়ার তৈরী করে, তাই
না । পড়ারও রেজিস্টার হয়, আবার চলনেরও রেজিস্টার হয় । তোমাদের এখানে দৈবীগুণ ধারণ
করতে হবে । রোজ যদি নিজের পোতামেল রাখো, তাহলে অনেক উন্নতি হবে - আজ সারাদিন কোনো
আসুরী কাজ করিনি তো? আমাদের তো দেবতা হতে হবে । লক্ষ্মী - নারায়ণের চিত্র তোমাদের
সামনে রাখা আছে । কতো সাধারণ চিত্র । উপরে শিববাবা । প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা তিনি
এই উত্তরাধিকার দেন, তাহলে অবশ্যই এই সঙ্গমে ব্রাহ্মণ - ব্রাহ্মণীরা থাকবে, তাই না
। দেবতারা থাকে সত্যযুগে । ব্রাহ্মণরা থাকে সঙ্গম যুগে । কলিযুগে থাকে শূদ্র বর্ণের
মানুষ । এই বিরাট রূপও বুদ্ধিতে ধারণ করো । আমরা ব্রাহ্মণরা এখন হলাম শিখা, এরপর
আমরা দেবতা হবো । বাবা ব্রাহ্মণদের দেবতা বানানোর জন্য পড়াচ্ছেন । তাই দৈবী গুণও
ধারণ করতে হবে, এতটাই মিষ্টি হতে হবে । তোমরা কাউকেই দুঃখ দেবে না । শরীর নির্বাহ
করার জন্য যেমন কিছু না কিছু কাজ করা হয়, তেমনই এখানে যজ্ঞ সেবা করতে হবে । কেউ যদি
অসুস্থ থাকে, সেবা না করতে পারে, তখন তার সেবাও করতে হবে । কেউ যদি অসুস্থ হয়ে
শরীর ত্যাগ করে, তখন মনে করবে তোমাদের এরজন্য দুঃখ করার বা কান্নাকাটির প্রয়োজন নেই
। তোমাদের তো সম্পূর্ণ শান্তিতে বাবার স্মরণে থাকতে হবে । কোনো আওয়াজ যেন না হয় ।
ওরা তো শ্মশানে নিয়ে যায়, তখন তো আওয়াজ করতে থাকে যে - রাম নাম সত্য । তোমাদের
কিছুই করতে হবে না । তোমরা সাইলেন্সের শক্তিতে এই বিশ্বকে জয় করো । ওদের হলো
সায়েন্স, আর তোমাদের সাইলেন্স । বাচ্চারা, তোমরা জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের যথার্থ অর্থ
জানো । জ্ঞান হলো বোঝার ক্ষমতা, আর বিজ্ঞান হলো সবকিছু ভুলে যাওয়া, জ্ঞানেরও উর্ধে
। তাই জ্ঞানও আছে আর বিজ্ঞানও আছে । আত্মা জানে যে, আমি শান্তিধামের অধিবাসী, আবার
এই জ্ঞানও আছে । রূপ আর বসন্ত । বাবাও তো রূপ - বসন্ত, তাই না । রূপও আছে, আবার
তাঁর মধ্যে সম্পূর্ণ সৃষ্টিচক্রের জ্ঞানও আছে । ওরা বিজ্ঞান ভবন নাম রেখেছে । অর্থ
কিছুই জানে না । বাচ্চারা, তোমরা বুঝতে পারো যে, এই সময় সায়েন্সের দ্বারা দুঃখও
যেমন আছে, আবার সুখও আছে । ওখানে সুখই সুখ । এখানে হলো অল্পকালের সুখ । বাকি তো
দুঃখই দুঃখ । মানুষ ঘরে কতো দুঃখে থাকে । তারা মনে করে, কোথায় গিয়ে মরলে এই দুঃখের
দুনিয়া থেকে মুক্তি পাবো । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, বাবা এসেছেন আমাদের স্বর্গবাসী
বানাতে । তোমাদের কতো গদগদ হওয়া উচিত । কল্প - কল্প বাবা আমাদের স্বর্গবাসী বানাতে
আসেন । তাই এমন বাবার মতে তো চলতে হবে, তাই না ।
বাবা বলেন যে - মিষ্টি
বাচ্চারা, কখনোই কাউকে দুঃখ দিও না । গৃহস্থ জীবনে থেকে পবিত্র থাকো । আমরা হলাম
ভাই - বোন, এ হলো প্রেমের সম্পর্ক । আর কোনদিকে দৃষ্টি যেতে পারে না । প্রত্যেকের
রোগই তার নিজের - নিজের, সেই অনুসারে বাবা রায়ও দিতে থাকেন । জিজ্ঞেস করে যে, বাবা
এমন - এমন অবস্থা হয়, এই অবস্থায় কি করবো? বাবা বোঝান যে, ভাই - বোনের দৃষ্টি
খারাপ হওয়া উচিত নয় । কোনো ঝগড়া যেন না হয় । আমি তো তোমাদের আত্মাদের বাবা, তাই না
। শিববাবা ব্রহ্মা তনের সাহায্যে বলছেন । প্রজাপিতা ব্রহ্মা হলেন শিবের সন্তান, তিনি
তো সাধারণের শরীরেই আসেন, তাই না । বিষ্ণু তো হলেন সত্যযুগের । বাবা বলেন যে, আমি
এনার মধ্যে প্রবেশ করে নতুন দুনিয়ার রচনা করতে এসেছি । বাবা জিজ্ঞাসা করেন, তোমরা
এই বিশ্বের মহারাজা - মহারানী হবে তো ? হ্যাঁ বাবা, কেন হবো না? হ্যাঁ, এতে পবিত্র
থাকতে হবে । এ তো মুশকিল । আরে, তোমাদের আমি এই বিশ্বের মালিক বানাই, আর তোমরা
পবিত্র থাকতে পারবে না? তোমাদের লজ্জা করে না? লৌকিক বাবাও তো বোঝান - খারাপ কাজ করো
না । এই বিকারেই যতো বিঘ্ন আসে । শুরু থেকে এর উপরই হাঙ্গামা চলে আসছে । বাবা বলেন
যে - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমাদের একে জয় করতে হবে । আমি তোমাদের পবিত্র বানাতে এসেছি
। বাচ্চারা, তোমরা রাইট-রং, ভালো-মন্দ শেখার/বোঝার বুদ্ধি পেয়েছো । এই লক্ষ্মী -
নারায়ণ হলো এইম - অবজেক্ট । স্বর্গবাসীদের মধ্যে দৈবীগুণ আছে, আর নরকবাসীদের মধ্যে
অপগুণ আছে । এখন হলো রাবণ রাজ্য, এও কেউ বুঝতে পারে না । রাবণকে প্রতি বছর জ্বালানো
হয় । সে তো শত্রু, তাই না । তাকে জ্বালাতেই আসে । কিছুই বুঝতে পারে না যে, এ কে?
আমরা সবাই তো রাবণ রাজ্যের' তাহলে অবশ্যই আমরা অসুরই হলাম, কিন্তু নিজেকে কেউই অসুর
মনে করে না । অনেকেই বলে যে, এ হলো রাক্ষস রাজ্য । যথা রাজা - রানী, তথা প্রজা,
কিন্তু এতটুকুও জ্ঞান নেই । বাবা বসে বোঝান যে, রামরাজ্য হলো আলাদা, আর রাবণ রাজ্য
আলাদা হয় । তোমরা এখন সর্বগুণ সম্পন্ন তৈরী হচ্ছো । বাবা বলেন যে, আমার ভক্তদের
জ্ঞান শোনাও, যারা মন্দিরে গিয়ে দেবতাদের পুজো করে । বাকি যেমন - তেমন মানুষদের কাছে
গিয়ে মাথা ঠুকো না । মন্দিরে তোমরা অনেক ভক্ত পাবে । তাদের নাড়িও দেখতে হয় ।
ডাক্তাররা দেখলে চট করে বলে দেয় যে, এর কি রোগ আছে । দিল্লীতে আজমল খাঁ নামে এই
বৈদ্য খুব বিখ্যাত ছিলো । বাবা তো তোমাদের একুশ জন্মের জন্য এবার হেলদি, এভার
ওয়েল্দি বানান । এখানে তো সবাই রোগী এবং অসুস্থ । ওখানে তো কখনোই রোগ হয় না ।
তোমরা এভার হেলদি, এভার ওয়েলদি হও । তোমরা যোগবলের দ্বারা তোমাদের কর্মেন্দ্রিয়ের
উপর বিজয় প্রাপ্ত করো । তোমাদের এই কর্মেন্দ্রিয় কখনোই ধোঁকা দিতে পারবে না । বাবা
বুঝিয়েছেন যে, তোমরা খুব ভালোভাবে স্মরণে থাকো, দেহী - অভিমানী থাকো, তাহলে কোনো
কর্মেন্দ্রিয়ই ধোঁকা দিতে পারবে না । এখানেই তোমরা বিকারকে জয় করো । ওখানে কোনো
কুদৃষ্টি থাকে না । ওখানে রাবণ রাজ্যই থাকে না । ওখানে হলো অহিংস দেবী - দেবতা ধর্ম
। ওখানে লড়াই ইত্যাদির কোনো কথাই থাকে না । এই লড়াইও অন্তিম সময়ে লাগবে, এতে
স্বর্গের দ্বার খুলে যায় । এরপর আর কখনোই লড়াই লাগবে না । এও শেষ যজ্ঞ । এরপর
অর্ধেক কল্প আর কোনো যজ্ঞ হবেই না । এতেই সম্পূর্ণ আবর্জনা সাফ হয়ে যায় । এই যজ্ঞ
থেকেই বিনাশ জ্বালা নির্গত হয়েছে, এতেই সম্পূর্ণ সাফাই হয়ে যাবে । বাচ্চারা,
তোমাদের সাক্ষাৎকারও করানো হয়েছে, ওখানকার সুবিরস ইত্যাদিও খুবই সুস্বাদু এবং
ফার্স্ট ক্লাস সব জিনিস । সেই রাজ্যকেই তোমরা এখন স্থাপনা করছো, তাই তোমাদের কতো
খুশী হওয়া উচিত ।
তোমাদের নামই হলো
শিবশক্তি ভারত মাতা । স্মরণের দ্বারাই তোমরা শিবের থেকে শক্তি নাও । এখানে ধাক্কা
খাওয়ার কোনো কথা নেই । ওরা মনে করে, যারা ভক্তি করে না, তারা নাস্তিক । তোমরা বলো
যে, যারা বাবা আর রচনাকে জানে না, তারা নাস্তিক, তোমরা এখন আস্তিক হয়েছো । তোমরা
ত্রিকালদর্শীও হয়েছো । তোমরা তিন লোক এবং তিন কালকে জেনে গেছো । এই লক্ষ্মী -
নারায়ণ বাবার থেকে এই উত্তরাধিকার পেয়েছে । তোমরা এখন তেমন তৈরী হচ্ছো । এইসব কথা
বাবাই বোঝান । শিববাবা নিজেই বলেন যে, আমি এনার মধ্যে প্রবেশ করে বোঝাই । নাহলে আমি
নিরাকার কিভাবে বোঝাবো । প্রেরণার দ্বারা কি পড়া হয়? পড়ানোর জন্য তো মুখ চাই, তাই
না । গোমুখ তো এটাই, তাই না । এই যে বড় মাম্মা আছেন, ইনি মানবের মাতা । বাবা বলেন
যে - বাচ্চারা, আমি এনার দ্বারা তোমাদের মতো বাচ্চাদের সৃষ্টির আদি, মধ্য এবং
অন্তের রহস্য বোঝাই, যুক্তি বলে দিই । এতে আশীর্বাদের কোনো ব্যাপারই নেই ।
ডায়েরেক্শন মতো চলতে হবে । তোমরা শ্রীমৎ পাও । কৃপা করার কোনো কথা নয় । তোমরা বলে
থাকো - বাবা প্রতি মুহূর্তে ভুলে যাই, কৃপা করো । আরে, এ তো তোমাদের কাজ যে, স্মরণ
করা । আমি কি কৃপা করবো । আমার কাছে তো সবাই সন্তান । কৃপা করলে তো সবাই কোলে এসে
বসে যাবে । পদ তো সবাই পড়া অনুসারে পাবে । পড়তে তো তোমাদেরই হবে, তাই না । তোমরা
পুরুষার্থ করতে থাকো । তোমাদের অতি বিলভড্ বাবাকে স্মরণ করতে হবে । পতিত আত্মা তো
আর ঘরে ফিরে যেতে পারে না । বাবা বলেন যে, তোমরা যত স্মরণ করবে, স্মরণ করতে করতে তত
পবিত্র হয়ে যাবে । পবিত্র আত্মা এখানে থাকতে পারবে না । পবিত্র হলে শরীরও নতুন চাই
। পবিত্র আত্মা, কিন্তু শরীর অপবিত্র, এমন নিয়ম নেই । সন্ন্যাসীরাও তো বিকারের
দ্বারাই জন্ম নেয়, তাই না । এই দেবতারা বিকারের দ্বারা জন্ম নেন না যে, সন্ন্যাস
নিতে হবে । এঁরা তো উচ্চ, তাই না । প্রকৃত মহাত্মা এঁরাই, যাঁরা সর্বদা সম্পূর্ণ
নির্বিকারী । ওখানে রাবণ রাজ্য নেই । সে হলো সতোপ্রধান রামরাজ্য । বাস্তবে রামও বলা
উচিত নয় । শিববাবা তো, তাই না । একে বলা হয় "রাজস্ব অশ্বমেধ অবিনাশী রুদ্র জ্ঞান
যজ্ঞ" । রুদ্র বা শিব একই । কৃষ্ণের তো নামই নেই । শিববাবা এসে জ্ঞান শোনান, ওরা
আবার রুদ্র যজ্ঞ রচনা করে তাই মাটির লিঙ্গ আর শালগ্রাম বানায় । পূজা করে আবার ভেঙ্গে
দেয় । বাবা যেমন দেবীদের উদাহরণ দেন । দেবীদের সাজিয়ে খাইয়ে - দাইয়ে, পুজো করে
তারপর ডুবিয়ে দেয় । তেমনই শিববাবা আর শালগ্রামের খুব প্রেম আর শুদ্ধতার সঙ্গে পুজো
করে তারপর বিসর্জন করে দেয় । এ হলো সম্পূর্ণ ভক্তির বিস্তার । বাবা এখন বাচ্চাদের
বোঝান - যতো বাবার স্মরণে থাকবে ততই খুশীতে থাকবে । রাত্রিতে রোজ নিজের পোতামেল দেখা
উচিত । কোনো ভুল তো করোনি । নিজের কান ধরা উচিত - বাবা, আজ আমার এই ভুল হয়ে গেছে,
ক্ষমা করে দিও । বাবা বলেন, সত্যিকথা বললে অর্ধেক পাপ মাফ হয়ে যাবে । বাবা তো বসে
আছেন, তাই না । নিজের কল্যাণ করতে চাইলে শ্রীমতে চলো । পোতামেল রাখলে অনেক উন্নতি
হবে । কিছুই তো খরচ নেই । উচ্চ পদ পেতে হলে মন - বচন এবং কর্মে কাউকেই দুঃখ দেবে না
। কেউ কিছু বললে শুনেও না শোনার ভান করবে । এই পরিশ্রম তোমাদের করতে হবে । বাবা
আসেনই তোমাদের মতো বাচ্চাদের দুঃখ দূর করে সর্বদার জন্য সুখ প্রদান করতে । তাই
বাচ্চাদেরও এমনই হতে হবে । মন্দিরে সবথেকে ভালো সেবা হবে । ওখানে তোমরা অনেক
ধর্মপ্রাণ মানুষ পাবে । প্রদর্শনীতে অনেকেই আসে । প্রজেক্টরের থেকেও প্রদর্শনী এবং
মেলাতে সেবা ভালো হয় । মেলাতে খরচ আছে কিন্তু অবশ্যই লাভ আছে, তাই না । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবা ভুল - ঠিক বোঝার বুদ্ধি দিয়েছেন, সেই বুদ্ধির আধারে দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে,
কাউকে দুঃখ দেবে না, নিজেদের মধ্যে ভাই - বোনের প্রকৃত প্রেম যেন থাকে, কখনোই যেন
কুদৃষ্টি না যায় ।
২ ) বাবার প্রতিটি
নির্দেশে চলে, খুব ভালোভাবে পড়ে নিজেকেই নিজে কৃপা করতে হবে । নিজের উন্নতির জন্য
পোতামেল রাখতে হবে, কেউ যদি দুঃখদায়ী কথা বলে তাহলে শুনেও না শোনার ভান করতে হবে ।
বরদান:-
ঈশ্বরীয় রয়্যাল্টির সংস্কারের দ্বারা প্রত্যেকের বিশেষত্বগুলির বর্ণনাকারী
পুণ্যাত্মা ভব
সদা নিজেকে বিশেষ
আত্মা মনে করে প্রত্যেক সংকল্প বা কর্ম করা আর প্রত্যেকের মধ্যে বিশেষ গুণ দেখা,
বর্ণনা করা, সকলের প্রতি বিশেষ বানানোর শুভ কল্যাণের কামনা রাখা - এটাই হলো ঈশ্বরীয়
রয়্যাল্টি। রয়্যাল আত্মারা অন্যদের ত্যাগ করা জিনিসকে নিজের মধ্যে ধারণ করে না
এইজন্য এই অ্যাটেনশান যেন থাকে যে কারো দুর্বলতা বা অপগুণকে দেখার নেত্র সদা বন্ধ
থাকবে। একে অপরের গুণগান করো, স্নেহ, সহযোগের পুষ্পের আদান-প্রদান করো, তাহলে
পুণ্যাত্মা হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
বরদানের শক্তি পরিস্থিতিরূপী আগুনকেও জল বানিয়ে দেয়।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও
নিরাকারী স্বরূপের
মুখ্য শিক্ষার বরদান হল “কর্মাতীত ভব”। আকারী স্বরূপ অথবা ফরিস্তাভাবের বরদান হল
ডবল লাইট ভব। ডবল লাইট অর্থাৎ সকল কর্ম বন্ধন থেকে হাল্কা আর লাইট অর্থাৎ সদা
প্রকাশ স্বরূপে স্থিত থাকা। এইরকম সদা ডবল লাইট স্থিতিতে থাকা আত্মা সহজেই কর্মাতীত
স্থিতি প্রাপ্ত করতে পারে। তো সেবা করেও এখন এই ধুন লাগাও যে আমাকে সম্পন্ন বা
কর্মাতীত হতেই হবে।