02.08.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
কখনোই পরিশ্রান্ত হয়ে স্মরণের যাত্রা ত্যাগ করো না, সদা দেহী - অভিমানী থাকার
প্রচেষ্টা করো, বাবার প্রেম আকর্ষণ করার জন্য বা মিষ্টি হওয়ার জন্য স্মরণে থাকো"
প্রশ্নঃ -
১৬ কলা
সম্পূর্ণ বা পারফেক্ট হওয়ার জন্য কোন্ পুরুষার্থ অবশ্যই করতে হবে?
উত্তরঃ
যতখানি সম্ভব
নিজেকে আত্মা মনে করো । প্রেমের সাগর বাবাকে বাবাকে স্মরণ করো, তাহলে পারফেক্ট হয়ে
যাবে । জ্ঞান খুবই সহজ, কিন্তু ১৬ কলা সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য স্মরণের দ্বারা আত্মাকে
পারফেক্ট বানাতে হবে । নিজেকে আত্মা মনে করলে তোমরা মিষ্টি হয়ে যাবে । সব ঝামেলা (খিটখিট)
সমাপ্ত হয়ে যাবে ।
গীতঃ-
তুমি প্রেমের
সাগর.....
ওম্ শান্তি ।
প্রেমের সাগর
তাঁর নিজের বাচ্চাদেরও তেমনই প্রেমের সাগর বানান । বাচ্চাদের এইম অবজেক্ট হলো, আমরা
এমন লক্ষ্মী - নারায়ণ হবো । এদেরকে সবাই কতো ভালোবাসে । বাচ্চারা জানে যে, বাবা
আমাদের এদের মতো মিষ্টি তৈরী করেন । এখানেই তোমাদের মিষ্টি তৈরী হতে হবে আর এমন তৈরী
হবে স্মরণের দ্বারা । ভারতের যোগের মহিমা আছে, সে হলো স্মরণ । এই স্মরণের দ্বারাই
তোমরা এনাদের মতো বিশ্বের মালিক হও । বাচ্চারা, তোমাদের এই পরিশ্রমই করতে হবে ।
তোমরা এই অহংকার করো না যে, আমাদের অনেক জ্ঞান । মূল বিষয় হলো স্মরণ । এই স্মরণই
ভালোবাসা প্রদান করে । অনেক মিষ্টি, অনেক প্রিয় হতে চাইলে, উঁচু পদ প্রাপ্ত করতে
চাও, তাহলে পরিশ্রম করো । তা নাহলে খুবই অনুতাপ করবে, কেননা অনেক বাচ্চা আছে, যারা
স্মরণে থাকতে পারে না, পরিশ্রান্ত হয়ে যায়, তাই ছেড়ে দেয় । এক তো দেহী - অভিমানী
হওয়ার জন্য অনেক প্রচেষ্টা করো, নাহলে অনেক কম পদ পাবে । তখন এতটা সুইট কখনোই হবে
না । অনেক অল্প বাচ্চাই আছে যাদের এই টান অনুভব হয়, কেননা তারা স্মরণে থাকে । কেবল
বাবার স্মরণ প্রয়োজন । যত স্মরণ করবে ততই অনেক বেশী সুইট হতে পারবে । এই লক্ষ্মী -
নারায়ণও আগের জন্মে অনেক স্মরণ করেছিলেন । এই স্মরণেই তাঁরা সুইট হয়েছিলেন ।
সত্যযুগে সূর্যবংশী হলো প্রথম নম্বরে, চন্দ্রবংশী দ্বিতীয় নম্বর হয়ে গেলো । এই
লক্ষ্মী - নারায়ণ খুবই প্রিয় । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের চিত্র আর রাম - সীতার
চিত্রের মধ্যে অনেক তফাৎ । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের উপরে কখনোই কেউ কলঙ্ক লাগায়নি ।
কৃষ্ণের উপরে ভুল করে কলঙ্ক লাগিয়েছে, রাম - সীতার উপরও লাগিয়েছে ।
বাবা বলেন, অতি মিষ্টি
তখনই হতে পারবে, যখন মনে করবে, আমি আত্মা । নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করাতে
অনেক মজা । তোমরা যত স্মরণ করবে, ততই সতোপ্রধান, ১৬ কলা সম্পূর্ণ হবে । ১৪ কলা তো
ডিফেক্টেড হয়ে গেলো, তারপর আরো ডিফেক্টেট হয়ে যেতে থাকে । তোমাদের ১৬ কলা পারফেক্ট
হতে হবে । এই জ্ঞান তো সম্পূর্ণ সহজ । যে কেউই আকৃষ্ট হবে । তোমরা কল্পে কল্পে ৮৪
জন্ম নিয়ে এসেছো । এখন ফিরে তো কেউই যেতে পারে না, যতক্ষণ না সম্পূর্ণ পবিত্র হচ্ছে
। তা নাহলে সাজা ভোগ করতে হবে । বাবা বার বার বোঝান, যতটা সম্ভব সর্বপ্রথমে এই একটি
কথা পাকা করো যে, আমি আত্মা । আমি আত্মা নিজের ঘরে থাকি, তখন সতোপ্রধান থাকি, তারপর
এখানে জন্মগ্রহণ করি । কেউ অনেক জন্ম, কেউ আবার কম জন্ম নেয় । পরের দিকে তমোপ্রধান
হয় । দুনিয়ার সেই সম্মান কম হয়ে যায় । নতুন বাড়ী তৈরী হলে সেখানে কতো আরামের
অনুভব হয় । তারপর আবার ডিফেকটেড হয়ে যায়, কলা কম হয়ে যায় । বাচ্চারা, তোমরা যদি
পারফেক্ট দুনিয়াতে যেতে চাও, তাহলে তোমাদের পারফেক্ট হতে হবে । কেবলমাত্র জ্ঞানকে
পারফেক্ট বলা হয় না । আত্মাকে পারফেক্ট হতে হবে । যতটা সম্ভব চেষ্টা করো - আমি
আত্মা, বাবার সন্তান । অন্তরে অনেক খুশী থাকা দরকার । মানুষ তার নিজের লোকেদের
দেহধারী মনে করে খুশী হয় । আমি অমুকের সন্তান - সে হলো অল্পকালের নেশা । বাচ্চারা,
তোমাদের এখন বাবার সঙ্গে সম্পূর্ণ বুদ্ধিযোগ লাগাতে হবে, এতে ঝিমিয়ে যেও না । যদিও
বিদেশেও যেখানেই যাও না কেন, একটা কথা দৃঢ়ভাবে মনে রেখো যে, বাবাকে স্মরণ করতে হবে
। বাবা হলেন প্রেমের সাগর । এই মহিমা কোনো মানুষের জন্য নয় । আত্মা তার নিজের
বাবার মহিমা করে । আত্মারা নিজেরা সব ভাই - ভাই । সকলের বাবা হলেন একজন । বাবা
সবাইকে বলেন - বাচ্চারা, তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, এখন তমোপ্রধান হয়ে গেছো ।
তমোপ্রধান হওয়ার কারণে তোমরা দুঃখী হয়ে গেছো । এখন আমি আত্মাকে পরমাত্মা বাবা
বলছেন, তোমরা প্রথমে পারফেক্ট ছিলে । সব আত্মারা ওখানে পারফেক্টই থাকে । যদিও পার্ট
আলাদা - আলাদা, তবুও পারফেক্ট তো, তাই না । পবিত্রতা ছাড়া ওখানে তো কেউই যেতে পারবে
না । সুখধামে তোমাদের সুখও থাকে, আবার শান্তিও থাকে, তাই তোমাদের ধর্ম হলো উঁচুর
থেকেও উঁচু । ওখানে অপার সুখ থাকে । একবার চিন্তা করে দেখো, আমরা কি তৈরী হই ।
স্বর্গের মালিক হই । সে হলো হীরের মতো জন্ম । এখন তো কড়িতুল্য জন্ম । এখন বাবা
তোমাদের স্মরণে থাকার ইঙ্গিত দেন । তোমরা তাঁকে ডাকো যে, তুমি এসে আমাদের পতিত থেকে
পবিত্র করো । সত্যযুগ হলো সম্পূর্ণ নির্বিকারী । রাম - সীতাকেও সম্পূর্ণ বলা যাবে
না । তাঁরা সেকেণ্ড গ্রেডে চলে যান । স্মরণের যাত্রায় পাস করতে পারেন না । জ্ঞানে
যতই তীক্ষ্ণ হও না কেন, বাবার কাছে প্রিয় মনে হবে না । স্মরণে থাকলেই তখন প্রিয়
আর মিষ্টি হতে পারবে । তখন বাবাও তোমাদের কাছে প্রিয় মনে হবে । এই পাঠ তো একেবারে
কমন, তোমাদের পবিত্র হতে হবে, স্মরণে থাকতে হবে । এই কথা খুব ভালোভাবে নোট করে নাও,
তারপর এই যে কোথায় - কোথায় ঝামেলা হয়, অহংকার এসে যায়, এই স্মরণের যাত্রায় থাকলে
তা আর কখনো হবে না । মূল বিষয় হলো, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো ।
দুনিয়াতে মানুষ কতো লড়াই - ঝগড়া করে । জীবন যেন বিষতুল্য করে দেয় । এই অক্ষর
সত্যযুগে থাকবে না । ভবিষ্যতে মানুষের জীবন আরো বিষতুল্য হয়ে যাবে । এ হলোই বিষয়
সাগর । সবাই ভয়ানক নরকে পড়ে আছে, খুবই দুর্গন্ধের জায়গা । দিনে দিনে এই দুর্গন্ধ
বৃদ্ধি পেতে থাকবে । একে বলা হয় নোংরা দুনিয়া । এখানে একে অপরকে দুঃখই দিতে থাকে,
কেননা দেহ অভিমানের ভূত রয়েছে । কামের ভূত রয়েছে । বাবা বলেন, তোমরা এই ভূতদের দূর
করো । এই ভূতই তোমাদের মুখ কালো করে দেয় । কাম চিতায় বসে কালো হয়ে যায়, তখন বাবা
বলেন, আমি সেইসময় এসে জ্ঞান অমৃতের বর্ষণ করি । তোমরা এখন কি তৈরী হচ্ছো । ওখানে তো
হীরের মহল হয়, সব প্রকারের বৈভব থাকে । এখানে তো সবই ভেজাল জিনিস । গরুদের খাবার
দেখো, সবকিছুর থেকে সারটা বের করে নিয়ে বাকিটা খাওয়ায় । গরুরাও ঠিকমতো খাবার পায়
না । কৃষ্ণের গরু দেখো, কেমন এক নম্বর দেখানো হয় । সত্যযুগে গরু এমন সুন্দর হয়
যে, সেকথা আর জিজ্ঞেস করো না । দেখলেই মুগ্ধতা এসে যায় । এখানে তো সব জিনিস থেকে
সুগন্ধ দূর করে দেয় । এ হলো খুবই ছি ছি দুর্গন্ধের দুনিয়া । তোমরা এই দুনিয়ায় মন
লাগিও না । বাব বলেন যে, তোমরা কতো বিকারী হয়ে গেছো । লড়াই - ঝগড়াতে কিভাবে একে
অপরকে মারতে থাকে । অ্যাটমিক বম্ব যারা বানায়, তাদেরও কতো মান, এতে সকলেরই বিনাশ হয়ে
যায় । বাবা বসে বলেন - আজকের মানুষ কি আর কাল কি হবে ! এখন তোমরা মাঝামাঝি রয়েছো।
সুসঙ্গ উদ্ধার করে, আর কুসঙ্গ নাশ করে । তোমরা পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য বাবার হাত ধরো
। কেউ যদি সাঁতার শেখায়, তাহলে তার হাত ধরতে হয় । না হলে ধাক্কা খাবে তাই এতে হাত
ধরতে হবে নাহলে মায়া আকর্ষণ করে নেয় । তোমরা এই সম্পূর্ণ বিশ্বকে স্বর্গ বানাও ।
নিজেকে নেশাতে রাখা উচিত । আমরা শ্রীমতের দ্বারা নিজেদের রাজত্ব স্থাপন করছি ।
সমস্ত মনুষ্য মাত্র দান তো করেই । ফকিরদেরও দেয় । তীর্থ যাত্রায় পাণ্ডাদেরও দান করে,
তারা একমুঠো চাল তো অবশ্যই দান করবে । এইসব নিয়ম ভক্তিমার্গের চলে আসছে । বাবা এখন
আমাদের ডবল দানী বানান । বাবা বলেন, তোমরা এই তিন পা পৃথিবীতে এই ঈশ্বরীয়
ইউনিভার্সিটি, ঈশ্বরীয় হসপিটাল খোলো, যাতে তোমরা ২১ জন্মের জন্য এসে সুস্বাস্থ্যের
অধিকারী হবে। এখানে তো কি না - কি রোগ হয় । এই রোগে কতো দুর্গন্ধ হয়ে যায় ।
হাসপাতালের অবস্থা দেখলে তো ঘৃণা আসে । মানুষের কতো কর্মভোগ । এইসব দুঃখ থেকে মুক্ত
হওয়ার জন্য বাবা বলেন - তোমরা কেবল আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের আর কোনো কষ্ট দিই
না । বাবা জানেন যে - বাচ্চারা অনেক দুর্দশা দেখেছে । বিকারী মানুষের মুখের চেহারাই
পরিবর্তন হয়ে যায় । একদম যেন মৃতের মুখ হয়ে যায় । মাতাল ব্যক্তি যেমন মদ ছাড়া
থাকতে পারে না । এই মদে খুব নেশা হয় কিন্তু তাও অল্পকালের জন্য । এতে বিকারী
মানুষের আয়ুও কতো কম হয়ে যায় । নির্বিকারী দেবতাদের আয়ু গড়ে ১২৫ - ১৫০ বছর হয়ে
থাকে । এভার হেল্দি হলে, আয়ুও তো বৃদ্ধি পাবে, তাই না । শরীরও নিরোগী হয়ে যায় ।
বাবাকে অবিনাশী সার্জনও বলা হয় । সদগুরু জ্ঞানের ইনজেকশন দিয়েছেন অজ্ঞান অন্ধকার
বিনাশের জন্য । বাবাকে জানে না তাই অজ্ঞান অন্ধকার বলা হয়, এ ভারতবাসীদেরই কথা ।
খ্রাইস্টকে তো জানে যে, অমুক সম্বতে এসেছিলেন । তাঁর তো সম্পূর্ণ লিস্ট আছে । পোপ
কিভাবে নম্বরের ক্রমানুসারে গদিতে বসে । এক ভারতই কারোর বায়োগ্রাফি জানে না । এমন
বলেও দুঃখহর্তা, সুখকর্তা পরমাত্মা, হে মাতা - পিতা.... আচ্ছা, মাতা - পিতার
বায়োগ্রাফি তো বলো । মানুষ কিছুই জানে না ।
তোমরা জানো যে - এটা
হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । আমরা এখন পুরুষোত্তম তৈরী হচ্ছি, তাই আমাদের
সম্পূর্ণভাবে এই পাঠ গ্রহণ করা উচিত । লোক - লজ্জা, কুলের মর্যাদা - এইসবে অনেকেই
আটকে থাকে । এই বাবা তো কোনোকিছুর পরোয়া করেননি । কতো গালি খেয়েছেন, কিন্তু না মন,
না চিত্ত লাগিয়েছেন তাতে । এই পথে চলতে চলতে ব্রাহ্মণ আটকেও যায় । বাবা ব্রাহ্মণ
বানিয়েছিলেন, তাই গালিও খেয়েছেন । সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত একদিকে আর দাদা অন্যদিকে ।
সমস্ত সিন্ধ্রি পঞ্চায়েত বলেছিলো - এ কি করছো? আরে, গীতাতে তো ভগবান উবাচঃ আছে -
কাম মহাশত্রু, একে জয় করতে পারলে বিশ্বের মালিক হতে পারবে । এ তো গীতার কথা । আমাকে
দিয়েই কেউ বলায় যে, কাম বিকার জয় করলে তোমরা জগৎজিৎ হবে । এই লক্ষ্মী - নারায়ণও তো
জয় করেছিলেন, তাই না । এতে লড়াই ইত্যাদির কোনো কথা নেই । আমি তোমাদের স্বর্গের
বাদশাহী দিতে এসেছি । তোমরা এখন পবিত্র হও আর বাবাকেই স্মরণ করো । স্ত্রী বলে, আমি
পবিত্র হবো, স্বামী বলে, আমি হবো না । তখন একজন হাঁস আর একজন বক হয়ে যায় । বাবা
এসে তোমাদের জ্ঞান রত্ন চয়নকারী হংস তৈরী করেন, কিন্তু একজন হলো আর একজন হলো না,
তখন ঝগড়া হয় । শুরুতে তো অনেক শক্তি ছিলো । এখন এখন এত শক্তি কারোর কারোর মধ্যে
নেই । যদিও তারা বলে যে, আমরা উত্তরাধিকারী কিন্তু উত্তরাধিকারী হওয়ার বিষয় আলাদা ।
শুরুতে তো একদম ম্যাজিক ছিলো । বড় বড় ঘরের লোকেরা চট করে ছেড়ে আসতো উত্তরাধিকার পেতে
। তারা যোগ্য হয়ে গেছে । প্রথম প্রথম যারা আসতো, তাদের মধ্যে বিশেষ গুণ ছিলো । এখন
সামান্য কিছুই এমন হবে । লোক - লজ্জা অনেক আছে । প্রথমে যারা এসেছিলো, তারা অনেক
সাহস দেখিয়েছিলো । এখন এতটা সাহস কেউ রাখবে - এ খুবই মুশকিল । হ্যাঁ, গরীবরা রাখতে
পারে । মালার দানা হতে হলে তো পুরুষার্থ করতেই হবে । মালা তো অনেক বড় । ৮ এরও আছে,
১০৮ এরও আছে, আবার ১৬ হাজার ১০৮ এরও আছে । বাবা নিজেই বলেন, তোমরা খুব পরিশ্রম করো
। নিজেকে আত্মা মনে করো । সবাই বলে না, কিন্তু যারা নিজেদের অনেক ভালো মনে করে,
তাদেরও বিকর্ম হয়ে যায় । যদিও 'জ্ঞানী আত্মা' । তারা খুবই ভালো বুঝতে পারে, কিন্তু
যোগের অভাব, তাই বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে না । স্মরণে না থাকলে তো আর হৃদয়ে
বিরাজ করতে পারবে না । স্মরণের দ্বারাই তো স্মরণ মিলিত হবে, তাই না । শুরুতে চট করে
বলিহারি যেতো । এখন বলিহারি যাওয়া তো মাসির ঘরে যাওয়ার মতো সহজ নয় । মূল বিষয় হলো
স্মরণ, তখনই খুশীর পারদ চড়বে । তোমাদের যতো কলা কম হয়ে গিয়েছে, ততই দুঃখ বৃদ্ধি
পেয়েছে । এখন যতো কলা বৃদ্ধি পাবে, ততই খুশীর পারদ চড়তে থাকবে । পরের দিকে তোমাদের
সব সাক্ষাৎকার হবে যে, বেশী স্মরণ করলে কি পদ প্রাপ্ত হয় । অনেক পরে তোমাদের
সাক্ষাৎকার হবে । বিনাশ যখন হবে, তখন তোমরা স্বর্গের সাক্ষাৎকারের হালুয়া খাবে ।
বাবা বারবার বোঝান - তোমরা স্মরণ করা বাড়াও । কাউকে কিছুটা বোঝালে - এতে বাবা খুশী
হন না । এক পণ্ডিতের গল্প আছে না! বলেছিল, রাম - রাম করলে সাগর পার হয়ে যাবে । এতে
দেখানো হয় যে - নিশ্চয়েই বিজয় । বাবার প্রতি সংশয় এলে বিনশন্তী হয়ে যায় । বাবার
স্মরণেই পাপমুক্ত হওয়া যায়, রাতদিন এই প্রচেষ্টা করা উচিত । তখনই কর্মেন্দ্রিয়ের
চঞ্চলতা বন্ধ হয়ে যাবে । এতে অনেক পরিশ্রম । অনেকই আছে, যারা স্মরণের চার্ট রাখে
না । মনে করো তাদের কোনো ভিত্তিই নেই । যতটা সম্ভব, যেভাবেই হোক স্মরণ করতে হবে,
তখনই সতোপ্রধান, ১৬ কলা সম্পন্ন হতে পারবে । পবিত্রতার সঙ্গে সঙ্গে স্মরণের
যাত্রারও প্রয়োজন । পবিত্র থাকলেই স্মরণে থাকতে পারবে । এই পয়েন্ট খুব ভালোভাবে
ধারণ করো । বাবা কতো নিরহংকারী । পরের দিকে সবাই তোমাদের চরণে মাথা নত করবে । ওরা
বলবে, নিশ্চিতভাবেই এই মাতারাই স্বর্গের দ্বার খোলে । স্মরণের জোর এখন কম । তোমরা
কোনো দেহধারীকেই স্মরণ করো না । তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হওয়াতেই পরিশ্রম । আচ্ছা
।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের বাবার তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
পতিত ছিঃ ছিঃ দুঃখদায়ী দুনিয়ার প্রতি মন লাগিও না । এক বাবার হাত ধরে এর থেকে পার
হতে হবে ।
২ ) মালার দানা হওয়ার
জন্য অনেক সাহস করে পুরুষার্থ করতে হবে । জ্ঞান রত্ন চয়নকারী হংস হতে হবে কোনো
বিকর্ম করবে না ।
বরদান:-
নিমিত্ত ভাবের দ্বারা সেবায় সফলতা প্রাপ্তকারী শ্রেষ্ঠ সেবাধারী ভব
নিমিত্ত ভাব - সেবাতে
স্বতঃ সফলতা প্রদান করে। নিমিত্ত ভাব নেই তো সফলতা নেই। শ্রেষ্ঠ সেবাধারী অর্থাৎ
প্রত্যেক কদম বাবার কদমের উপর রাখে। প্রত্যেক কদম শ্রেষ্ঠ মতে চলে শ্রেষ্ঠ বানায়।
যতটা সেবাতে, নিজের মধ্যে ব্যর্থ সমাপ্ত হয়ে যাবে ততই সমর্থ হতে থাকবে। আর সমর্থ
আত্মা প্রত্যেক কদমে সফলতা প্রাপ্ত করে। শ্রেষ্ঠ সেবাধারী হল সে যে নিজেও সদা
উৎসাহ-উদ্দীপনাতে থাকে আর অন্যদেরকেও উৎসাহিত করে।
স্লোগান:-
ঈশ্বরীয় সেবায় নিজেকে অফার করো তবে ধন্যবাদের পাত্র হতে থাকবে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম-প্রেমের অনুভবী হও
এই পরমাত্ম-প্রেমের
ধাগা দূর দূর থেকে টেনে নিয়ে আসে। এটা এমনই এক সুখদায়ী ভালোবাসা যে এই ভালোবাসাতে
এক সেকেন্ডের জন্যও যদি হারিয়ে যাও তাহলে অনেক দুঃখ ভুলে যাবে আর সবসময়ের জন্য
সুখের দোলনায় দুলতে থাকবে। বাবা তোমাদেরকে এতটাই ভালোবাসেন যে জীবনের সকল
সুখ-শান্তির সব কামনা পূরণ করে দেন। বাবা কেবল সুখ দেন না, বরং সুখের ভান্ডারের
মালিক বানিয়ে দেন।