02-11-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
31-10-2007 মধুবন
‘‘নিজের শ্রেষ্ঠ স্বমানের নেশায় থেকে অসম্ভবকে সম্ভব
করে নিশ্চিন্ত বাদশাহ হও"
আজ বাপদাদা চতুর্দিকে তাঁর নিজের শ্রেষ্ঠ স্বমানধারী বিশেষ বাচ্চাদের দেখছেন।
প্রত্যেক বাচ্চার স্বমান এত বিশেষ যা বিশ্বের কোনও আত্মার নেই। তোমরা সবাই বিশ্বের
আত্মাদের পূর্বজও আর পূজ্যও। সমগ্র সৃষ্টির বৃক্ষের মূলে তোমরা আধারমূর্ত। সমগ্র
বিশ্বের পূর্বজ, প্রথম রচনা। বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চার বিশেষত্ব দেখে খুশি হন। হতে
পারে তারা ছোট বাচ্চা অথবা বরিষ্ঠ মাতা কিংবা প্রবৃত্তির। প্রত্যেকের আলাদা আলাদা
বিশেষত্ব রয়েছে। আজকাল যতই বড় বড়ো সায়েন্টিস্ট থাকুক, দুনিয়ার বিচারে তারা বিশেষ
কিন্তু প্রকৃতিজিত তো হোক, চন্দ্র পর্যন্তও তারা পৌঁছে গেছে কিন্তু এত ছোট জ্যোতি
স্বরূপ আত্মাকে চিনতে পারে না। আর এখানে ছোট বাচ্চাও আমি আত্মা, জ্যোতি বিন্দুকে
জানে। নেশার সাথে বলে আমি আত্মা। হয়তো অনেক বড় বড়ো মহাত্মারা আছে, কিন্তু ব্রাহ্মণ
মাতারা যারা আছে তারা নেশার সাথে বলে আমরা পরমাত্মাকে পেয়ে গেছি। পেয়ে গেছ তো না!
আর মহাত্মারা কী বলে? পরমাত্মাকে পাওয়া খুব কঠিন। প্রবৃত্তির তারা চ্যালেঞ্জ করে যে
আমরাওল্ল সবাই প্রবৃত্তিতে সাথে থেকে, পবিত্র থাকি কেননা আমাদের মধ্যে বাবা আছেন।
সেইজন্য দুজনে সাথে থেকেও সহজভাবে পবিত্র থাকতে পারি। কেননা, পবিত্রতা আমাদের
স্বধর্ম। পর ধৰ্ম কঠিন হয়, স্ব ধর্ম সহজ হয়। আর লোকে কী বলে? আগুন আর তুলো একসাথে
থাকতে পারে না। খুব কঠিন আর তোমরা সবাই কী বলো? খুব সহজ। তোমাদের সকলের শুরুর সময়ে
এক গীত ছিল - যতই শেঠ, স্বামী থাকুক - কিন্তু এক অল্ফকে জানতে পারেনি। ছোট বিন্দু
আত্মা-তুলোকে তারা জানেনি কিন্তু তোমরা বাচ্চারা সবাই জেনে গেছ, প্রাপ্ত করেছ। কত
নিশ্চয় আর নেশার সাথে বলে থাকো অসম্ভব সম্ভব হয়। বাপদাদাও প্রত্যেক বাচ্চাকে বিজয়ী
রত্ন রূপে দেখে প্রফুল্লিত হন। কেননা, সাহসী বাচ্চা, সহায় বাবা। সেইজন্য দুনিয়ার
জন্য যা অসম্ভব বিষয় তা' তোমাদের জন্য সহজ আর সম্ভব হয়ে গেছে। তোমাদের নেশা থাকে
আমরা পরমাত্মার ডিরেক্ট বাচ্চা। এই নেশার কারণে, নিশ্চয়ের কারণে পরমাত্ম বাচ্চা
হওয়ার কারণে মায়ার থেকেও তোমরা বেঁচে রয়েছ। বাচ্চা হওয়া অর্থাৎ সহজভাবে বেঁচে যাওয়া।
তো তোমরা বাচ্চা হয়েছ আর সব বিঘ্ন থেকে, সমস্যা থেকে বেঁচে গেছ।
তো নিজেদের এত শ্রেষ্ঠ স্বমান তোমরা জানো তো না! কেন সহজ? কেননা, তোমরা সাইলেন্সের
শক্তি দ্বারা পরিবর্তন শক্তিকে কার্যে প্রয়োগ করো। নেগেটিভকে পজিটিভে রূপান্তর করে
নাও। মায়া যতই বড় সমস্যা রূপে আসুক কিন্তু তোমাদের পরিবর্তনের শক্তি দ্বারা
সাইলেন্সের শক্তি দ্বারা সমস্যাকে সমাধান স্বরূপ বানিয়ে দিয়ে থাকো। কারণকে নিবারণ
রূপে বদলে দাও। আছে না এত শক্তি তোমাদের, কোর্সও করাও তোমরা, তাই না! নেগেটিভকে
পজিটিভে রূপান্তর করার বিধি শেখাও তোমরা। এই পরিবর্তন শক্তি বাবা দ্বারা
উত্তরাধিকার রূপে পেয়েছ তোমরা। একটা শক্তিই নয়, সর্বশক্তি উত্তরাধিকার রূপে
পরমাত্মার থেকে প্রাপ্ত হয়েছে, সেইজন্য বাপদাদা প্রতিদিন বলেন, প্রতিদিন মুরলী শোনো
তো না! তো প্রতিদিন বাপদাদা এটাই বলেন - বাবাকে স্মরণ করো আর উত্তরাধিকার স্মরণ করো।
বাবার স্মরণও সহজে কেন আসে? যখন উত্তরাধিকারের প্রাপ্তি স্মরণ করো তখন বাবার স্মরণ
প্রাপ্তির কারণে সহজভাবে এসে যায়। সব বাচ্চার এই অধ্যাত্ম নেশা থাকে, হৃদয়ের গীত
গাইতে থাকে - যা পাওয়ার ছিল তা' পেয়ে গেছি। সবার হৃদয়ে আপনা থেকেই গীত বাজে তো না!
নেশা থাকে তো, তাই না! যত এই নেশায় থাকবে ততই নিশ্চিন্ত হবে - এটাই নেশার লক্ষণ। যদি
কোনও রকমের সংকল্পে বোলে কিংবা সম্বন্ধ-সম্পর্কে চিন্তা থাকে তবে নেশা নেই। বাপদাদা
নিশ্চিন্ত বাদশাহ বানিয়েছেন। বলো, নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়েছো? হয়েছো? হাত তোলো যারা
নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়েছো। যারা নিশ্চিন্ত তাদের কখনো কখনো চিন্তা এসে যায়? এটা ভালো,
বাপদাদা যখন নিশ্চিন্ত, তখন বাচ্চাদের কী চিন্তা! বাপদাদা তো বলে দিয়েছেন, সব চিন্তা
অথবা কোনও রকমের বোঝা যদি আছে তবে বাপদাদাকে দিয়ে দাও। বাবা সাগর তো না! সুতরাং
সমস্ত বোঝা সমাহিত হয়ে যাবে। কখনো কখনো বাচ্চাদের একটা গীত শুনে বাপদাদা স্মিত হাসি
হাসেন। জানো তোমরা কোন গীত? কী করবো, কীভাবে করব... কখনো কখনো গেয়ে থাকো। বাপদাদা
তো শুনতে থাকেন। কিন্তু বাপদাদা সব বাচ্চাকে এটাই বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, পরমাদরের
বাচ্চারা সাক্ষী দ্রষ্টার স্থিতির সিটে সেট হয়ে যাও আর সিটে সেট হয়ে খেলা দেখ খুব
মজা লাগবে, বাঃ! ত্রিকালদর্শী স্থিতিতে স্থিত হয়ে যাও। সিট থেকে তোমরা নিচে নেমে আসো,
সেইজন্য আপসেট হও। যদি সেট থাকো তবে আপসেট হবে না।
এই তিনটে জিনিস বাচ্চাদেরকে বিভ্রান্ত করে। কোন তিনটে জিনিস? - চঞ্চল মন, লক্ষ্যহীন
বুদ্ধি আর কী বলে থাকো - পুরানো সংস্কার। বাপদাদার বাচ্চাদের একটা কথা শুনে হাসি আসে,
জানো তোমরা কোন কথা? তোমরা বলে থাকো, বাবা কী করবো, আমার পুরানো সংস্কার তো না!
বাপদাদা মৃদু মৃদু হাসেন। যখন তোমরা বলছোই আমার সংস্কার, তো 'আমার' বানিয়েছো! তো
আমার উপরে অধিকার তো থাকেই। যখন পুরানো সংস্কারকে আমার বানিয়ে দিয়েছ তখন 'আমার' তো
জায়গা নেবেই, তাই না! আমার-আমার বলছো তো এই 'আমার' নিজের জায়গা বানিয়ে নিয়েছে। তোমরা
ব্রাহ্মণ, আমার বলতে পারো না। এটা পাস্ট জীবনের সংস্কার। শূদ্র জীবনের সংস্কার।
ব্রাহ্মণ জীবনের নয়। সুতরাং আমার আমার বলেছো তো সেও 'আমার' অধিকারে বসে গেছে।
ব্রাহ্মণ জীবনের শ্রেষ্ঠ সংস্কার জানো তো না! আর এই সংস্কার যেটাকে তোমরা পুরানো বলে
থাকো, সেটাও পুরানো নয়। কেননা, তোমরা সব শ্রেষ্ঠ আত্মার পুরানোর থেকে পুরানো
সংস্কার হলো অনাদি আর আদি সংস্কার। এসব তো দ্বাপর মধ্যকালের সংস্কার। তো মধ্যকালের
সংস্কার সমাপ্ত করে দাও, বাবার সহায়তায় সেটা কঠিন কিছু নয়। কী হয়? সময়কালে বাবা
কম্বাইন্ড, সেই কমবাইন্ড রূপ জানা, কেননা, কম্বাইন্ডের অর্থই হলো প্রয়োজনের সময়
সহযোগী। কিন্তু সময়মতো সহযোগ না নেওয়ার কারণে মধ্যকালের সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে
যায়।
বাপদাদা জানেন যে বাচ্চারা সবাই বাবার ভালোবাসার যোগ্য, অধিকারী। বাবা জানেন যে
ভালোবাসার কারণেই সবাই পৌঁছে গেছে। হতে পারে তারা বিদেশ থেকে এসেছে, অথবা দেশ থেকে
কিন্তু সবাই পরমাত্ম ভালোবাসার আকর্ষণে নিজের ঘরে পৌঁছে গেছে। বাপদাদাও জানেন,
ভালোবাসায় মেজরিটি পাস হয়েছে। বিদেশ থেকে প্রেম প্রীতি ভালোবাসার প্লেনে চড়ে তোমরা
পৌঁছেছ। বলো, সবাই ভালোবাসার ডোরে বেঁধে এখানে পৌঁছেছো তাই না! এই পরমাত্ম ভালোবাসা
হৃদয়কে আরাম দেয়। আচ্ছা - যারা প্রথমবার এখানে পৌঁছেছ তারা হাত তোলো। হাত নাড়াও।
স্বাগত, তোমরা পদার্পণ করেছ।
এখন বাপদাদা হোম ওয়ার্ক দিয়েছেন, স্মরণ আছে হোম ওয়ার্ক? স্মরণ আছে? বাপদাদার কাছে
কিছু কিছু জায়গা থেকে রেজাল্ট এসেছে। কিন্তু এখন তোমাদের কী করতে হবে? সবার রেজাল্ট
আসেনি। কিছু কিছুরই রেজাল্ট এসেছে কিছু পার্সেন্টেই। বাপদাদা কী চান? বাপদাদা এটাই
চান যে তোমরা সবাই পূজনীয় আত্মা তো পূজনীয় আত্মাদের আশীর্বাদ দেওয়াই হলো বিশেষ
লক্ষণ। তো তোমরা সবাই জানো যে তোমরা সবাই পূজনীয় আত্মা, সেইজন্য আশীর্বাদ দেওয়া
অর্থাৎ আশীর্বাদ নেওয়া আন্ডারস্টুড হয়ে যায়। যে যাকে আশীর্বাদ দেয় তার হৃদয় থেকে
বারবার আশীর্বাদকের জন্য শুভ ভাবনা শুভ কামনা বের হয়। তো পূজ্য আত্মারা তোমাদের তো
নিজেদের সংস্কার আশীর্বাদ দেওয়া। আশীর্বাদ দেওয়া অনাদি সংস্কার। তোমাদের জড় চিত্রও
যখন আশীর্বাদ দিচ্ছে তখন তোমরা চৈতন্য পূজ্য আত্মার আশীর্বাদ দেওয়া সেটা তো
ন্যাচারাল সংস্কার। এটা বলো আমার সংস্কার। মধ্যে দ্বাপরের সংস্কার ন্যাচারাল হয়ে
গেছে। নেচার হয়ে গেছে। বাস্তবে, এই সংস্কার আশীর্বাদ দেওয়ার ন্যাচারাল নেচার। যখন
কাউকে আশীর্বাদ দেওয়া হয় তখন সেই আত্মা কত খুশি হয়, সেই খুশির বায়ুমন্ডল কত সুখদায়ক
হয়! তো যারাই হোম ওয়ার্ক করেছে তাদের সবাইকে, হতে পারে তারা এসেছে, অথবা আসেনি
কিন্তু তারা বাপদাদার সামনেই আছে। তো তাদেরকে বাপদাদা অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তোমরা
হোম ওয়ার্ক করেছ আর সেসব নিজেদের ন্যাচারাল নেচার বানিয়ে ভবিষ্যতেও করো আর অন্যদেরও
করাতে থাকো। তাছাড়া, যারা অল্পবিস্তর তাদের হোম ওয়ার্ক করেছে বা যদি নাও করে থাকে
তবে তারা সবাই নিজেকে সদা আমি পূজ্য আত্মা, বাবার শ্রীমতে চলা আমি বিশেষ আত্মা এই
স্মরণ বারবার নিজের স্মৃতিতে এবং স্বরূপে নিয়ে এসো। কেননা, তোমাদের প্রত্যেককে যখন
জিজ্ঞাসা করা হয় যে তোমরা কী হতে যাচ্ছ, তো সবাই তোমরা বলো আমি লক্ষ্মী নারায়ণ হতে
চলেছি। রাম সীতা হওয়ায় কেউ হাত তোলে না। যখন তোমাদের লক্ষ্য ১৬ কলা হওয়ার তো ১৬ কলা
অর্থাৎ পরম পূজ্য, পূজ্য আত্মার কর্তব্যই হলো আশীর্বাদ দেওয়া। চলতে ফিরতে এই
সংস্কার সহজ বানাও আর সদাসর্বদার জন্য বানাও। তোমরা হওই পূজ্য। হওই ১৬ কলা। লক্ষ্য
এটাই তো না!
বাপদাদা খুশি, যারাই হোম ওয়ার্ক করেছে তারা তাদের নিজের মস্তকে বিজয়ের তিলক বাবা
দ্বারা লাগিয়ে দিয়েছে। সেইসঙ্গে সেবার সমাচারও সবার তরফ থেকে, বর্গের তরফ থেকে,
সেন্টারের তরফ থেকে খুব ভালো রেজাল্ট সহ বাপদাদার কাছে পৌঁছে গেছে। তো এক অভিনন্দন
হলো হোম ওয়ার্ক করার আরেক হলো সাথে সেবা করার অভিনন্দন, পদ্ম পদ্মগুন। বাবা দেখেছেন
যে গ্রামে গ্রামে বার্তা দেওয়ার সেবা খুব ভালো উপায়ে মেজরিটি এরিয়াতে করেছে। তো এই
সেবা হৃদয়বান হয়ে করায় এবং সেবার উৎসাহ- উদ্দীপনায় রেজাল্টও ভালো দেখা গেছে। যারা
পরিশ্রম করেনি, কিন্তু বাবার প্রতি ভালোবাসা আছে অর্থাৎ বার্তা দেওয়ার প্রতি
ভালোবাসা আছে, তো স্নেহ ভালোবাসায় সেই সেবা করেছে, সেইজন্য বাবারও পদ্ম পদ্মগুন
ভালোবাসার রিটার্ন সব সেবাধারীর আপনা থেকেই প্রাপ্ত হয়, হবেও। সেইসঙ্গে সবাই নিজের
প্রিয় দাদিকে অনেক স্নেহের সাথে স্মরণ করতে করতে দাদিকে ভালোবাসার রিটার্ন দিচ্ছে।
এই ভালোবাসার সুগন্ধি বাপদাদার কাছে খুব ভালো ভাবে পৌঁছে গেছে।
তাছাড়া, এখনও মধুবনে যে কার্য চলছে, হতে পারে তা' বিদেশিদের, অথবা ভারতের সেই সব
কার্যও পরস্পরের সহযোগ, সম্মানের আধারে খুব ভালোভাবে সফল হয়েছে আর ভবিষ্যতেও যে
কার্য হওয়ার আছে তা' সফল হয়েই আছে। কেননা, সফলতা তো তোমাদের গলার হার। তোমরা বাবারও
গলার হার। বাবা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন তো না, কখনও তোমরা হার (পরাজয়) স্বীকার করতে
পারো না। কারণ তোমরা বাবার গলার হার। সুতরাং গলার হার কখনও হার স্বীকার করতে পারে
না। তো হার (মালা) হতে চাও, নাকি হার (পরাজয়) মানতে চাও? না তো, তাই না! হার হওয়া
তো ভালো, তাই না! সুতরাং কখনো হার মেনো না। হার মেনে নেয় এমন অনেক আত্মা আছে, তোমরা
হার হয়ে গলায় গাঁথা হয়ে গেছ। এরকমই তো না! সুতরাং সংকল্প করো - মায়া যত বড় তুফানই
(সমস্যা) সামনে নিয়ে আসুক কিন্তু মাস্টার সর্বশক্তিমান আত্মাদের সামনে তুফানও উপহার
হয়ে যাবে বাবার ভালোবাসায়। এমন বরদান সদা স্মরণ করো। যত উঁচু পাহাড়ই হোক, পাহাড় বদলে
তুলো হয়ে যাবে। এখন সময়ের নৈকট্য অনুসারে বরদানকে সবসময় অনুভবে আনো। অনুভবের অথরিটি
হও। যখনই চাও তখনই নিজের অশরীরী হওয়ার, ফারিস্তা স্বরূপ হওয়ার এক্সারসাইজ করতে থাকো।
এই মুহূর্তে ব্রাহ্মণ, পর মুহূর্তে ফরিস্তা, তার পরের মুহূর্তে অশরীরী, চলতে ফিরতে
কাজকর্ম করার সময়ও এক মিনিট দু মিনিট বের করে অভ্যাস করো। চেক করো যে সংকল্প করেছ,
সেই স্বরূপ অনুভব করেছো? আচ্ছা।
চতুর্দিকের সদা শ্রেষ্ঠ স্বমানধারী, যারা সদা নিজেকে পরম পূজ্য আর পূর্বজ অনুভব করে,
সদা নিজেকে সব সাবজেক্টে অনুভাবী স্বরূপ বানায়, সদা বাবার সিংহাসনাসীন, ভ্রুকুটির
আসনাসীন সদা শ্রেষ্ঠ স্থিতির অনুভবে স্থিত থাকে, চতুর্দিকের সেই সব বাচ্চাকে
স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
সব জায়গা থেকে সকলের পত্র, ই-মেল, সমাচার সব বাপদাদার কাছে পৌঁছে গেছে, তো সেবার ফল
আর বল, সব সেবাধারীর প্রাপ্ত হয় আর হতেও থাকবে। ভালোবাসার অনেক পত্রও আসে,
পরিবর্তনেরও অনেক পত্র আসে। যারা পরিবর্তন শক্তির তাদেরকে বাপদাদা অমর ভব-র বরদান
দিচ্ছেন। যে সেবাধারী বাচ্চারা শ্রীমতকে পুরোপুরিভাবে ফলো করেছে, সেরকম ফলো করা
বাচ্চাদেরকে বাপদাদা এই বরদান দিচ্ছেন "আজ্ঞাকারী বাচ্চারা বাঃ!" আর ভালোবাসার
পাত্রদেরকে যারা অনেক অনেক ভালোবাসার সাথে বাবাকে তাদের হৃদয়ে সমাহিত করে, বাবা
তাদেরকে এভাবে বরদান দিচ্ছেন - তোমরা অতি প্রিয় এবং মায়ার অতি বিঘ্ন থেকে স্বতন্ত্র
হও - আচ্ছা।
এখন, সকলের হৃদয়ে কী উৎসাহ উৎপন্ন হচ্ছে? একই উৎসাহ -উদ্দীপনা বাবা সমান হতেই হবে।
আছে এই উৎসাহ? পাণ্ডব হাত তোলো। হতেই হবে। হবো, বো বো (ভবিষ্যৎ সূচক) ক'রো না। দেখবো,
হবো, বো বো করা উচিৎ নয় ... বরং হতেই হবে। পাক্কা, পাক্কা? আচ্ছা। প্রত্যেকে নিজের
ও.কে.র কার্ড নিজের টিচারের কাছে পার্ট রূপে দিতে থাকো। বেশি লিখো না, শুধু একটা
কার্ড নিয়ে নাও আর তা'তে লেখো ও.কে. অথবা লাইন টেনে দাও ব্যস্। এটা করতে পারো তো
না! লম্বা পত্র নয়। আচ্ছা।
বরদান:-
সঙ্গম যুগে প্রত্যক্ষ ফলের দ্বারা শক্তিশালী হয়ে সদা
সমর্থ আত্মা ভব
তারা সর্বশক্তিমান বাবার সাথে থাকার কারণে ব্যর্থ
থেকে সহজে মুক্ত হয়ে যায় । বিষাক্ত সাপের মতো পরিস্থিতিতেও তাদের বিজয় লাভ হয়।
সেইজন্য স্মৃতিচিহ্নে দেখানো হয় শ্রীকৃষ্ণ সাপের মাথায় ড্যান্স করেছে।
স্লোগান:-
পাস উইথ অনার হয়ে পাস্টকে পাস করো আর সদা বাবার পাশে
থাকো।
অব্যক্ত ইশারা :- আশরীরী ও বিদেহী স্থিতির অভ্যাস
বাড়াও বাপদাদা যেমন অশরীরী থেকে শরীরে আসেন, ঠিক তেমনই অশরীরী হয়ে শরীরে আসতে হবে।
অব্যক্ত স্থিতিতে স্থিত হয়ে তারপরে অব্যক্তে আসতে হবে। যেমন, এই শরীরকে ছাড়া আর
শরীর নেওয়ার অনুভব সবার আছে, তেমনই যখনই চাও তখনই শরীর বোধ ছেড়ে অশরীরী হয়ে যাও এবং
যখনই চাও তখনই শরীরের আধার নিয়ে কর্ম করো। একদম এরকম অনুভব হবে ঠিক যেমন এই স্থূল
বস্ত্র আলাদা এবং বস্ত্র ধারণকারী আমি আত্মা আলাদা।