04.08.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা এসেছেন তোমাদেরকে কিং অফ ফ্লাওয়ার (ফুলের রাজা) বানাতে, সেইজন্য বিকারের কোনো
দুর্গন্ধ যেন তোমাদের মধ্যে না থাকে”
প্রশ্নঃ -
বিকারের অংশ
সমাপ্ত করার জন্য কোন্ পুরুষার্থ করতে হবে?
উত্তরঃ
নিরন্তর
অন্তর্মুখী থাকার পুরুষার্থ করো। অন্তর্মুখ অর্থাৎ সেকেন্ডে শরীর থেকে ডিট্যাচ্। এই
দুনিয়ার সবকিছু একেবারে ভুলে যেতে হবে। এক সেকেন্ডে উপরে যাওয়া আর আসা। এই
অভ্যাসের দ্বারাই বিকারের অংশ সমাপ্ত হয়ে যাবে। কর্ম করতে করতে মাঝে-মাঝেই
অন্তর্মুখী হয়ে যাও, এইরকম মনে হবে, চারদিক যেন একদম নিস্তব্ধ। নামমাত্রও আওয়াজ বা
নড়াচড়া নেই। যেন মনে হবে যে, এই সৃষ্টি-ই নেই।
ওম্ শান্তি ।
এখানে
প্রত্যেককে বসানোর পর বলা হয়, অশরীরী হয়ে বাবার স্মরণে বসো আর সাথে সাথে এই
সৃষ্টিচক্রকেও স্মরণ করো। মানুষ ৮৪ র চক্রকে বুঝতে পারে না। একেবারেই কিছু জানে না।
যে ৮৪ বার এই জন্ম-মৃত্যুর চক্রে এসেছে সে-ই বোঝার জন্য এখানে আসবে। তোমাদেরকে এটাই
স্মরণ করতে হবে, একেই স্বদর্শনচক্র বলা যায়, যার দ্বারা আসুরিক চিন্তাভাবনা সমাপ্ত
হয়ে যায়। এই রকম নয় যে, কোনো অসুর বসে আছে, যার গলা কেটে যাবে। মানুষ স্বদর্শন
চক্রেরও অর্থ বুঝতে পারে না। এই জ্ঞান বাচ্চারা, তোমাদের এখানেই প্রাপ্ত হয়।
গৃহস্থ ব্যবহারে কমল ফুল সম থেকে পবিত্র হও। ভগবান উবাচঃ, তাই না। এই এক জন্ম
পবিত্র হলে ভবিষ্যতের ২১ জন্ম তোমরা পবিত্র দুনিয়ার মালিক হতে পারবে। সত্যযুগকে বলা
যায় শিবালয়। কলিযুগ হল বেশ্যালয়। এই দুনিয়া পরিবর্তন হতে থাকে। ভারতেরই কথা বলা
হয়েছে। তোমরা অন্যদের কথায় কর্ণপাত ক'রো না। তারা বলে, জন্তু-জানোয়ারদের কি হবে?
অন্যান্য ধর্মগুলির কি হবে? বলো - প্রথমে নিজেকে তো বোঝো, পরে অন্যদের কথা ভাববে।
ভারতবাসীরাই নিজের ধর্মকে ভুলে দুঃখী হয়ে গেছে। ভারতেই আহ্বান করে - তুমি মাতা-পিতা...
বিদেশে মাতা-পিতা এই শব্দই বলা হয় না। তারা তো কেবল গডফাদার বলে ডাকে। বরাবর ভারতই
সুখ-সম্পদে সমৃদ্ধ ছিল, ভারতেই স্বর্গ ছিল - এটাও তোমরা জেনে গেছো। বাবা এসে
কাঁটাদের ফুল বানাচ্ছেন। বাবাকে বাগানের মালিও বলা হয়। তোমরা বলেছিলে যে - এসে
কাঁটা থেকে আমাদেরকে ফুল বানাও। বাবা ফুলের বাগান বানাতে এসেছেন। কিন্তু মায়া
পুনরায় কাঁটার জঙ্গল বানিয়ে দেয়। মানুষ তো বলে দেয় যে - ঈশ্বর তোমার মায়া হল
অত্যন্ত প্রবল। না ঈশ্বরকে আর না মায়াকে তারা বুঝতে পারে। কেউ যদি কিছু শব্দ বলে
দেয়, ব্যস্ সেটাই পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। অর্থ কিছুই জানেনা। বাচ্চারা, তোমরা বুঝতে
পারো যে, এই ড্রামা হল রামরাজ্য আর রাবণ রাজ্যের খেলা। রাম রাজ্যে সুখ, আর রাবণ
রাজ্যে হয় দুঃখ। এখানকারই কথা। এখানে কোনও প্রভুর মায়া নেই। মায়া বলা যায় ৫
বিকারকে। যাকে রাবণও বলা হয়। এছাড়া মানুষ তো পুনর্জন্ম নিয়ে ৮৪-র চক্রতে আসে।
সতোগুণী থেকে তমোপ্রধান তো হতেই হয়। এই সময় সবাই বিকারের দ্বারা জন্মগ্রহণ করে,
এইজন্য বিকারী বলা যায়। নামও আছে পতিত দুনিয়া আর পবিত্র দুনিয়া। অর্থাৎ পুরানো
দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়া কিভাবে হয়, এটাই তো বোঝার জন্য সাধারণ বিষয়। নতুন
দুনিয়ায় প্রথমে স্বর্গ ছিল। বাচ্চারা জানে যে, স্বর্গের স্থাপনা যিনি করেন তিনি
হলেন পরম পিতা পরম আত্মা, তাঁর থেকেই সুখ-সমৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। জ্ঞানের দ্বারা দিন,
ভক্তির দ্বারা রাত কিভাবে হয় - এটাও কেউ বুঝতে পারে না। বলে যে - ব্রহ্মা তথা
ব্রহ্মা মুখ-বংশাবলী ব্রাহ্মণদের দিন আর সেই ব্রাহ্মণদেরই রাত। দিন আর রাত এখানেই
হয়ে থাকে, এটাও কেউ বুঝতে পারেনা। প্রজাপিতা ব্রহ্মার রাত, তো অবশ্যই ব্রহ্মা
মুখবংশাবলী ব্রাহ্মণদেরও রাত হবে। অর্ধকল্প দিন, অর্ধকল্প রাত।
এখন বাবা এসেছেন
নির্বিকারী দুনিয়া বানাতে। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, কাম হল মহাশত্রু, তার উপর বিজয়
পেতে হবে। সম্পূর্ণ নির্বিকারী পবিত্র হতে হবে। অপবিত্র হওয়ার কারণে তোমরা অনেক
পাপ করেছ। এটা হলই পাপাত্মাদের দুনিয়া। পাপ অবশ্যই শরীরের সাথেই করবে, তবেই
পাপাত্মা হবে। দেবতাদের পবিত্র দুনিয়াতে পাপ থাকে না। এখানে তোমরা শ্রীমতের দ্বারা
শ্রেষ্ঠ পূণ্য আত্মা তৈরি হচ্ছো। শ্রী শ্রী ১০৮ এর মালা হয়ে থাকে। উপরে থাকে ফুল,
তাকে বলা হয় শিব। তিনি হলেন নিরাকারী ফুল। পুনরায় সাকারে মেল-ফিমেল থাকে। তাদেরও
মালা তৈরী হয়। শিববাবার দ্বারা এনারা পূজ্য এবং স্মরণ যোগ্য হন। বাচ্চারা, তোমরা
জানো যে বাবা আমাদেরকে বিজয়মালার দানা বানাচ্ছেন। স্মরণের শক্তির দ্বারা আমরাই
বিশ্বের উপর বিজয় প্রাপ্ত করছি, স্মরণের দ্বারাই বিকর্ম বিনাশ হয়। পুনরায় তোমরা
সতোপ্রধান হয়ে যাবে। তারা তো কিছু না বুঝতে পেরেই বলে দেয় যে প্রভু তোমার মায়া
অত্যন্ত প্রবল। কারো কাছে বেশি ধন থাকলে, তারা বলে এর কাছে অনেক মায়া আছে। বাস্তবে
মায়া ৫ বিকারকে বলা যায়, যাকে রাবণও বলা হয়। তারা তো আবার ১০ মাথা যুক্ত রাবণের
চিত্র বানিয়ে দিয়েছে। এখন চিত্র আছে তাই বোঝানো হয়ে থাকে। যেরকম অঙ্গদ-এর জন্যও
দেখানো হয় যে, রাবণ তাকে নড়ানোর চেষ্টা করেও নড়াতে পারেনি। সেটারও দৃষ্টান্ত বানিয়ে
দিয়েছে। এছাড়া অন্য কোনও বিষয় নেই। বাবা বলছেন যে - মায়া তোমাদেরকে যতই নড়ানোর
চেষ্টা করুক না কেন, তোমরা স্থির থাকো। রাবণ, হনুমান, অঙ্গদ আদি এইসব দৃষ্টান্ত
বানিয়ে দিয়েছে। যার অর্থ বাচ্চারা তোমরাই জানো। ভ্রমরীর দৃষ্টান্তও দেখানো হয়।
ভ্রমরী আর ব্রাহ্মণীর রাশি মিলে যায়। তোমরা বিষ্ঠার পোকাকে জ্ঞান যোগের ভোঁ ভোঁ করে
পতিত থেকে পবিত্র বানাও। বাবাকে স্মরণ করো তাহলেই সতোপ্রধান হয়ে যাবে। কচ্ছপেরও
দৃষ্টান্ত দেখানো হয়। ইন্দ্রিয়গুলিকে সংকুচিত করে অন্তর্মুখী হয়ে বসে যায়।
তোমাদেরকেও বাবা বলছেন যে - যদিও কর্ম করো, তারপর অন্তর্মুখী হয়ে যাও। যেন মনে হবে
এই সৃষ্টি-ই নেই। নামমাত্র শব্দও বন্ধ হয়ে যাবে। ভক্তি মার্গে বহির্মুখী হয়ে
গিয়েছিলে। গীত গাওয়া, এই করা, ঐ করা, কত হাঙ্গামা, কত খরচা হয়। কত মেলা লাগে।
বাবা বলেন - এই সব ছেড়ে অন্তর্মুখী হয়ে যাও। যেন মনে হবে এই সৃষ্টি-ই নেই। নিজেকে
দেখো আমি যোগ্য হতে পেরেছি? কোনও বিকার তো বিরক্ত করছে না? আমি বাবাকে স্মরণ করছি?
বাবা, যিনি বিশ্বের মালিক বানাচ্ছেন, এইরকম বাবাকে দিন-রাত স্মরণ করতে হবে। আমি
হলাম আত্মা, তিনি হলেন আমাদের বাবা। মনের মধ্যে যেন এটাই চলতে থাকে - আমরা এখন নতুন
দুনিয়ার ফুল তৈরি হচ্ছি। আকন্দ বা টগর ফুল হব না। আমাকে তো অবশ্যই কিং অফ
ফ্লাওয়ার অবশ্যই সুগন্ধি ফুল হতে হবে। কোনও প্রকারের দুর্গন্ধ যেন না থাকে। খারাপ
চিন্তা সব বের করে দিতে হবে। মায়ার তুফান নিচে নামানোর জন্য অনেক আসবে।
কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা কোনো বিকর্ম ক'রো না। এইভাবে নিজেকে পাকাপোক্ত করতে হবে।
নিজেকে শুধরাতে হবে। কোনও দেহধারীকে আমি স্মরণ করবো না। বাবা বলেন - নিজেকে আত্মা
মনে করে আমাকে স্মরণ করো, শরীর নির্বাহের জন্য কর্মও করো। তার মধ্যেও সময় বের করতে
পারবে। খাবার খাওয়ার সময়ও বাবার মহিমা করতে থাকো। বাবাকে স্মরণ করে খেলে ভোজনও
পবিত্র হয়ে যায়। যখন বাবাকে নিরন্তর স্মরণ করবে, তখন স্মরণের দ্বারাই অনেক জন্মের
পাপ কেটে যাবে আর তোমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবে। দেখতে হবে যে আমি কতটা সত্যিকারের সোনা
হতে পেরেছি? আজকে কত ঘন্টা স্মরণে ছিলাম? কাল তিন ঘণ্টা স্মরণে ছিলাম, আজ দু' ঘন্টা
- তাহলে তো আজ ক্ষতি হয়ে গেছে। চড়াই-উতরাই হতেই থাকবে। তীর্থযাত্রা করতে গেলে
কোথাও উঁচু কোথাও নীচুতে নামতে হয়। তোমাদের অবস্থাও নিচু উপর হতে থাকবে। নিজের খাতা
দেখতে হবে। মুখ্য হলো স্মরণের যাত্রা।
ভগবানুবাচ তো অবশ্যই
বাচ্চাদেরকেই পড়াবেন, তাই না! সমগ্র দুনিয়াকে কিভাবে পড়াবেন। এখন ভগবান কাকে বলা
যাবে? কৃষ্ণ তো হল শরীরধারী। ভগবান তো হলেন নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মাকেই বলা যায়।
তিনি নিজে বলেন যে - আমি সাধারণ শরীরে প্রবেশ করি। ব্রহ্মাকেও বৃদ্ধ শরীরে দেখানো
হয়। সাদা দাড়ি গোঁফ তো বৃদ্ধেরই হয়ে থাকে, তাই না! অনুভবী রথই চাই অবশ্যই। ছোট রথে
কি তিনি প্রবেশ করবেন? তিনি নিজেই বলেন যে, আমাকে কেউ জানেই না। তিনি হলেন সুপ্রিম
গডফাদার বা সুপ্রিম সোল। তোমরাও ১০০% পবিত্র ছিলে, এখন ১০০% অপবিত্র হয়ে গেছো।
সত্যযুগে ১০০% পবিত্র ছিল, তাই শান্তি এবং সমৃদ্ধিও ছিল। মুখ্য হলো পবিত্রতা। তোমরা
দেখও যে, পবিত্র আত্মার কাছে অপবিত্ররা মাথা নত করে, তার মহিমা গীত করে।
সন্ন্যাসীদের সামনে এইরকম কখনো বলবে না যে - আপনি হলেন সর্ব্বগুণসম্পন্ন... আমি
হলাম পাপী নীচ। দেবতাদের সামনে এইরকম বলে থাকে। বাবা বুঝিয়েছেন যে - কুমারীকে সবাই
প্রণাম করে, কিন্তু বিয়ে করার পর সেই কুমারী গিয়ে সকলের কাছে মাথা নত করে, কেননা
সে বিকারী হয়ে যায়, তাই না ! এখন বাবা বলছেন যে - তোমরা নির্বিকারী হলে অর্ধকল্প
নির্বিকারীই থাকবে। এখন ৫ বিকারের রাজ্য সমাপ্ত হয়ে যায়। এটা হলো মৃত্যুলোক, সেটা
হল অমর লোক। এখন তোমাদের আত্মাদের জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হয়েছো। বাবা-ই
প্রদান করেন। কপালে তিলকও দেন। এখন আত্মাদের জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছে। কিসের জন্য? তোমরা
নিজেরাই নিজেকে রাজ তিলক দাও। যেরকম ব্যারিস্টারি যারা পড়ে, তারা পড়াশোনা করে
নিজেরাই নিজেকে ব্যারিস্টারির তিলক দিয়ে দেয়। পড়লেই তিলক প্রাপ্ত হবে।
আশীর্বাদের দ্বারা কিছু হবে না। তারপর তো সকলের উপরেই টিচার কৃপা করেন, সবাই পাস হয়ে
যায়। বাচ্চাদেরকে নিজেদেরকেই নিজেদেরকে রাজ তিলক দিতে হবে। বাবাকে স্মরণ করলে
বিকর্ম বিনাশ হবে আর চক্রকে স্মরণ করলে চক্রবর্তী মহারাজা হয়ে যাবে। বাবা বলেন যে
- আমি তোমাদেরকে রাজাদেরও রাজা বানাচ্ছি। দেবী-দেবতারা হলেন ডবল মুকুটধারী। পতিত
রাজারাও তাঁদেরকে পূজা করে। তোমাদেরকে পূজারী রাজাদের থেকেও উঁচু বানাচ্ছি। যে অনেক
দান-পূণ্য করে, সে রাজার ঘরে জন্ম নেয়, কেননা কর্ম ভালো করেছে। এখন এখানে তোমাদের
প্রাপ্ত হয় অবিনাশী জ্ঞান ধন, সেটাকে ধারণ করে পুনরায় দান করতে হবে। এটাই হলো
সোর্স অফ ইনকাম। টিচারও জ্ঞানের দান করতে থাকেন। সেই পড়া হল অল্পকালের জন্য। বিদেশ
থেকে পড়াশোনা করে আসে। আসার পরেই হার্ট ফেল হয়ে গেলে তো সমস্ত পড়াই শেষ হয়ে যায়।
তাহলে সেই পড়া বিনাশী হয়ে গেলো, তাই না। সমস্ত পরিশ্রমই ব্যর্থ চলে যায়। তোমাদের
পরিশ্রম এইভাবে ব্যর্থ যায় না। তোমরা যত ভালো করে পড়বে ততই ২১ জন্ম তোমাদের এই পড়া
বজায় থাকবে। সেখানে অকালে মৃত্যু হয় না। এই পড়া তোমাদের সাথে যাবে।
বাবা যেরকম কল্যাণকারী
সেই রকম বাচ্চারা, তোমাদেরকেও কল্যাণকারী হতে হবে। সবাইকে রাস্তা বলে দিতে হবে। বাবা
তো অনেক ভালো ভালো রায় দেন। একটাই কথা বোঝাও যে, সর্বশ্রেষ্ঠ শিরোমণী শ্রীমৎ ভাগবত
গীতার এত মহিমা কেন? ভগবানেরই শ্রেষ্ঠ মত হয়। এখন ভগবান কাকে বলা যাবে? ভগবান তো
একটাই হয়। তিনি হলেন নিরাকার, সমস্ত আত্মাদের বাবা, এই জন্য নিজেদের মধ্যে ভাই-ভাই
বলতে থাকে, পুনরায় যখন ব্রহ্মার দ্বারা নতুন সৃষ্টির রচনা হয়, তখন ভাই বোন হয়ে
যায়। এই সময় তোমরা ভাই-বোন হয়ে পবিত্র থাকো। এটাই হলো যুক্তি। ক্রিমিনাল আই একদম
যেন সমাপ্ত হয়ে যায়। সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের চোখ কোথাও ধোঁকা দিচ্ছে না তো?
বাজারে ছোলা ভাজা দেখে কিছু মনে হয় না তো? এই রকম অনেকেরই মনে মনে খেতে ইচ্ছা হয়,
তারপর খেয়ে নেয়। কোনো ভাইয়ের সাথে ব্রাহ্মণী কোথাও যাওয়ার সময় ভাই যদি বলে -
ছোলা খাবেন, একবার খেলে পাপ হবে না। যে কাঁচা হবে সে শীঘ্রই খেয়ে নেবে। এবিষয়ে
শাস্ত্রেও অর্জুনের দৃষ্টান্ত দেখানো হয়েছে। এই সমস্ত গল্প বসে বানানো হয়েছে।
কিন্তু সবই হলো এই সময়কার কথা।
তোমরা সবাই হলে সীতা।
তোমাদেরকে বাবা বলছেন যে - এক বাবাকে স্মরণ করো, তাহলেই পাপ বিনাশ হয়ে যাবে। এটা
ছাড়া আর অন্য কিছু কথা নেই। এখন তোমরা বুঝতে পেরেছ যে রাবণ কোনও মানুষ নয়। যখন
বিকারে প্রবেশ হয় তখনই রাবণ সম্প্রদায় বলা হয়। যে রকম কেউ কেউ এমন কাজ করে যে
তাকে বলা হয়, তুমি তো একদম অসুর হয়ে গেছো। চাল-চলন আসুরিক হয়ে গেছে। বিকারী
বাচ্চাকে বলো যে, তুমি তো কুল কলঙ্কিত করছো। এখানে পুনরায় অসীম জগতের বাবা বলছেন,
তোমাদেরকে আমি কালো থেকে গোরা বানাতে এসেছি, পুনরায় তোমরা মুখ কালো করে ফেলো।
প্রতিজ্ঞা করেও পুনরায় বিকারী হয়ে যাও। কালোর থেকেও কালো হয়ে যাও, এইজন্য পাথর
বুদ্ধি বলা যায়। পুনরায় এখন তোমরা পরশবুদ্ধি তৈরি হচ্ছো। তোমাদের এখন উন্নতি কলা
হয়। বাবাকে চেনা আর বিশ্বের মালিক হওয়া। সংশয়ের কথা হতেই পারেনা। বাবা হলেন
হেভেনলি গডফাদার। তাই অবশ্যই হেভেন উপহার হিসেবে নিয়ে আসবেন, বাচ্চাদের জন্য।
শিবজয়ন্তীও মানায় - সেখানে কি কি হয়? ব্রত আদি রাখে। বাস্তবে ব্রত রাখতে হবে
বিকারের। বিকারে যেও না। এর দ্বারাই তোমরা আদি, মধ্য, অন্ত দুঃখ পেয়েছ। এখন এই
একজন্ম পবিত্র হও। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তোমরা দেখবে যে ভারতে
৯ লক্ষ আত্মা থাকবে, পুনরায় সব শান্ত হয়ে যাবে। অন্যান্য কোনও ধর্মই থাকবে না যে
তালি বাজবে। এক ধর্মের স্থাপনা বাকি সমস্ত ধর্মের বিনাশ হয়ে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
অবিনাশী জ্ঞান-ধন নিজের মধ্যে ধারণ করে পুনরায় দান করতে হবে। পড়াশোনার দ্বারা
নিজেই নিজেকে রাজতিলক দিতে হবে। যেরকম বাবা হলেন কল্যাণকারী সেইরকমই কল্যাণকারী হতে
হবে।
২ ) খাদ্য পানীয়ের
উপরে সম্পূর্ণ সতর্ক থাকতে হবে। কখনো চোখ যেন ধোঁকা না দেয়, এটাও সতর্ক থাকতে হবে।
নিজেকে শুধরাতে হবে। কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা কোনও বিকর্ম ক'রো না।
বরদান:-
মন্সা
শক্তির অনুভবের দ্বারা বিশাল কার্যে সদা সহযোগী ভব
প্রকৃতিকে, তমোগুণী
আত্মাদের ভায়ব্রেশনকে পরিবর্তন করা তথা হিংসা-হানাহানির বায়ুমন্ডল, ভায়ব্রেশন থেকে
নিজেকে সেফ রাখা, অন্য আত্মাদেরকে সহযোগ দেওয়া, নতুন সৃষ্টিতে নতুন রচনার যোগবলের
দ্বারা প্রারম্ভ করা - এই সব বিশাল কার্যের জন্য মন্সা শক্তির প্রয়োজনীয়তা আছে।
মন্সা শক্তির দ্বারাই নিজের অন্তিম মুহুর্ত সুন্দর হবে। মন্সা শক্তি অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ
সংকল্প শক্তি, এক এর সাথে লাইন ক্লিয়ার - এখন এর অনুভবী হও তাহলে অসীমের কার্যে
সহযোগী হয়ে অসীম বিশ্বের রাজ্য অধিকারী হতে পারবে।
স্লোগান:-
নির্ভয়তা আর নম্রতাই হলো যোগী বা জ্ঞানী আত্মার স্বরূপ।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের অনুভবী হও
পরমাত্ম প্রেম হল
আনন্দময় দোলনা, এই সুখদায়ী দোলনাতে দুলতে-দুলতে সদা পরমাত্ম প্রেমে লভলীন থাকো তাহলে
কখনও কোনও পরিস্থিতি বা মায়ার দোলাচল আসতে পারবে না। পরমাত্ম ভালোবাসা হল অক্ষুণ্ণ,
অটল, এতটাই যে সকলের প্রাপ্ত হতে পারে কিন্তু পরমাত্ম প্রেম প্রাপ্ত করার বিধি হল -
সকলের থেকে ডিটাচ্ থাকা। যতটা ডিটাচ্ থাকবে ততই পরমাত্ম প্রেমের অধিকার প্রাপ্ত হবে।