04.11.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
এখন তোমরা সত্য বাবার দ্বারা সত্য দেবতা তৈরী হচ্ছো, তাই সত্যযুগে সৎসঙ্গ করার
প্রয়োজন নেই”
প্রশ্নঃ -
সত্যযুগে
দেবতাদের দ্বারা কোনো বিকর্ম হওয়া কেন সম্ভব নয়?
উত্তরঃ
কারণ তারা
সত্য বাবার কাছ থেকে বরদান পেয়েছে। রাবণ অভিশাপ দিলেই বিকর্ম হয়ে যায়। সত্য এবং
ত্রেতাযুগে তো কেবল সদগতি থাকবে, তখন দুর্গতির নামও থাকবে না। কোনো বিকার-ই থাকবে
না যার জন্য বিকর্ম হতে পারে। দ্বাপর এবং কলিযুগে সকলের দুর্গতি হয়ে যায়, তাই
বিকর্ম হতে থাকে। এটাও বোঝার বিষয়।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে বাবা বসে থেকে বোঝাচ্ছেন - ইনি একাধারে সুপ্রীম বাবা,
সুপ্রীম টিচার এবং সুপ্রীম সদ্গুরু । বাবার এইরকম গুণগান করলে অটোমেটিক্যালি সিদ্ধ
(প্রমাণিত) হয়ে যাবে যে কৃষ্ণ কারোর বাবা হতে পারে না। সে তো ছোটো বাচ্চা,
সত্যযুগের প্রথম প্রিন্স। তার পক্ষে টিচার হওয়াও সম্ভব নয়। সে নিজেই টিচারের কাছে
পড়তে যায়। আর ওখানে তো গুরু থাকবেই না। কারন ওখানে সকলেই সদগতিতে থাকে। অর্ধেক কল্প
সদগতিতে থাকে, তারপর অর্ধেক কল্প দুর্গতি হয়ে যায়। অতএব, ওখানে সদগতিতে থাকে বলে
জ্ঞানের কোনো প্রয়োজন হয় না। জ্ঞানের নামও থাকে না। কারন জ্ঞানের দ্বারাই ২১ জন্মের
জন্য সদগতি পাওয়া যায়। তারপর দ্বাপর থেকে কলিযুগের অন্তিম পর্যন্ত দুর্গতি হয়ে যায়।
তাহলে কৃষ্ণ কিভাবে দ্বাপরযুগে আসবে? এই বিষয়টা কারোর বুদ্ধিতে আসে না। প্রত্যেকটা
বিষয়ে অনেক গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে। সেগুলো বোঝানো দরকার। তিনিই হলেন সুপ্রীম বাবা
এবং সুপ্রীম টিচার। ইংরেজিতেও সুপ্রীম বলা হয়। কিছু কিছু ইংরেজি শব্দ খুব ভালো হয়।
যেমন ‛ড্রামা’ শব্দটা। ড্রামাকে নাটক বলা যাবে না। নাটকে তো পরিবর্তন হয়। অনেকেই বলে
যে এই সৃষ্টির চক্র আবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু কিভাবে আবর্তিত হচ্ছে, হুবহু আবর্তিত
হচ্ছে নাকি চেঞ্জ হচ্ছে - সেটা কেউই জানে না। বলা হয় - বানানোই আছে এবং সেটাই
পুনর্নিমাণ হচ্ছে…। সুতরাং অবশ্যই কোনো খেলা আছে যা চক্রাকারে রিপিট হচ্ছে। এই চক্রে
মানুষকেই আবর্তিত হতে হয়। আচ্ছা, এই চক্রের সময়সীমা কত? কিভাবে এটা রিপিট হয়? একবার
আবর্তন করতে কত সময় লাগে? এগুলো কেউই জানে না। ইসলাম, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্মগুলো হলো
এক একটা ঘরানা, যাদের এই ড্রামাতে পার্ট রয়েছে ।
তোমাদের মতো
ব্রাহ্মণদের কোনো ডিনায়েস্টি হয় না। এটা হলো ব্রাহ্মণ বংশ যাকে সর্বোত্তম বংশ বলা
হয়। দেবী-দেবতাদেরও বংশ রয়েছে। এই কথাগুলো খুব সহজেই বোঝানো যায়। সূক্ষ্মবতনে
ফরিস্তারা থাকে। ওখানে হাড়, মাংসের শরীর হয় না। দেবতাদের তো হাড়, মাংস থাকে।
ব্রহ্মাই বিষ্ণু হয় এবং বিষ্ণুই ব্রহ্মা হয়। কেন বিষ্ণুর নাভি কমল থেকে ব্রহ্মার
উৎপত্তি দেখানো হয়েছে? সূক্ষ্মবতনে তো এইসব ঘটনা ঘটে না। সেখানে কোনো মূল্যবান
রত্নও থাকতে পারে না। সেইজন্যই ব্রহ্মাকে শ্বেতবস্ত্রধারী ব্রাহ্মণ দেখানো হয়।
সাধারণ মানব জন্মের অন্তিমে ব্রহ্মা গরিব হয়ে যায়। এখন তো ইনি খাদির কাপড় ব্যবহার
করেন। ওরা বোঝে না যে সূক্ষ্ম শরীর আসলে কি? তোমাদেরকে বাবা বোঝাচ্ছেন যে ওখানে
ফরিস্তারা থাকে যাদের কোনো হাড়, মাংস থাকে না। সূক্ষ্মবতনে এইরকম সাজসজ্জা থাকার কথা
নয়। কিন্তু যেহেতু ছবিতে দেখানো হয়, তাই বাবা আগে ঐরকম সাক্ষাৎকার করান, তারপর তার
অর্থ বোঝান। যেভাবে কেউ হনুমানের দর্শন পায়। কিন্তু কোনো মানুষই হনুমানের মতো হয়
না। ভক্তিমার্গে এইরকম অনেক ছবি বানায়। যাদের সেই ছবির ওপরে বিশ্বাস হয়ে যায়,
তাদেরকে অন্য কিছু বললে রেগে যায়। দেবীদের কতো পূজা করে, তারপর বিসর্জন দিয়ে দেয়।
এগুলো সব ভক্তিমার্গ। ভক্তিমার্গের পাঁকে গলা পর্যন্ত ডুবে আছে। এদের বাইরে বের করবে
কীভাবে? বের করে আনতে খুব সমস্যা হয়। কেউ আবার অন্যকে বের করে আনার নিমিত্ত হতে গিয়ে
নিজেই ডুবে যায়। নিজেই গলা পর্যন্ত পাঁকে ডুবে যায় অর্থাৎ কাম বিকারের মধ্যে পড়ে
যায়। এটাই হলো সবথেকে জঘন্য পাঁক। সত্যযুগে এই ব্যাপারটা থাকে না। এখন তোমরা সৎ
বাবার দ্বারা সৎ দেবতা তৈরী হচ্ছো। এরপর ওখানে আর কোনো সৎসঙ্গ হবে না। এখানেই
ভক্তিমার্গে সৎসঙ্গ করে। মনে করে, সকলেই ঈশ্বরের রূপ। কিছুই বোঝে না। বাবা এখন বসে
থেকে বোঝাচ্ছেন - কলিযুগে সকলেই পাপাত্মা আর সত্যযুগে সকলেই পূণ্যাত্মা। রাত-দিনের
পার্থক্য। তোমরা এখন সঙ্গমযুগে আছ। কলিযুগ এবং সত্যযুগ উভয়ের জ্ঞান রয়েছে। আসল
ব্যাপার হলো এ’পার থেকে ও’পারে যাওয়া। ক্ষীরসাগর এবং বিষয় সাগর নিয়ে গানও আছে,
কিন্তু তার অর্থ বোঝে না। এখন বাবা বসে থেকে কর্ম এবং অকর্মের রহস্য বোঝাচ্ছেন। সকল
মানুষই কর্ম করে, কিন্তু কিছু কর্ম অকর্ম হয় আর কিছু কর্ম বিকর্ম হয়ে যায়। রাবণের
রাজত্বে সকল কর্ম বিকর্ম হয়ে যায়, আর সত্যযুগে কোনো বিকর্ম হয় না কারণ ওটা রামরাজ্য
- বাবার কাছ থেকে বর পেয়েছে। রাবণ অভিশাপ দেয়। এটাই হলো সুখ-দুঃখের খেলা। দুঃখের
সময়ে সকলেই বাবাকে স্মরণ করে। সুখের সময়ে কেউই তাঁর কথা স্মরণ করে না। ওখানে কোনো
বিকার থাকে না। এভাবে তিনি বাচ্চাদেরকে বোঝান - চারা রোপণ করেন। এখনই চারা লাগানোর
প্রচলন হয়েছে। আগে যখন ব্রিটিশ সরকার ছিল, তখন খবরের কাগজে গাছের চারা রোপণের খবর
থাকত না। এখন বাবা বসে থেকে দেবী-দেবতা ধর্মের চারা লাগাচ্ছেন। অন্য কেউ এভাবে চারা
রোপণ করে না। এখন অনেক ধর্ম রয়েছে, কিন্তু দেবী-দেবতা ধর্ম প্রায় লুপ্ত। ধর্মভ্রষ্ট,
কর্মভ্রষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে নামটাই পাল্টে দিয়েছে। যারা দেবী-দেবতা ধর্মের, তাদেরকে
পুনরায় সেই দেবী-দেবতা ধর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রত্যেককে নিজের ধর্মেই ফিরে যেতে
হবে। খ্রিস্টান ধর্মের কেউ বেরিয়ে এসে দেবী-দেবতা ধর্মে ঢুকতে পারবে না। চিরমুক্তিও
কেউ পাবে না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি দেবী-দেবতা ধর্ম থেকে কনভার্ট হয়ে খ্রিস্টান ধর্মে
চলে গিয়ে থাকে, তবে সে অবশ্যই নিজের দেবী-দেবতা ধর্মে ফিরে আসবে। এই জ্ঞান এবং যোগ
তার খুব ভালো লাগবে। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয়, সে আমাদের ধর্মের। এগুলো বোঝার জন্য
এবং বোঝানোর জন্য অনেক বুদ্ধির দরকার। ধারণ করতে হবে। যেমন কেউ গীতা পাঠ করে আর
মানুষ বসে বসে শোনে, সেইরকম কেবল বই পড়ে শোনালে হবে না। অনেকে গীতার শ্লোক হুবহু
মুখস্থ করে নেয়। তবে যে যার নিজের মতো করে এর অর্থ বিশ্লেষণ করে। সব শ্লোকই সংস্কৃত
ভাষায় রয়েছে। দুনিয়ায় গান আছে - সাগরকে কালি এবং সমস্ত অরণ্য দিয়ে কলম তৈরি করলেও
জ্ঞানের অন্ত পাওয়া যাবে না। গীতা তো খুব ছোট। কেবল আঠারো অধ্যায় আছে। খুব ছোট গীতা
তৈরি করে গলায় ঝুলিয়ে রাখে। খুব ছোট ছোট অক্ষরে লেখা থাকে। গলায় ঝুলিয়ে রাখার
অভ্যাস হয়ে যায়। খুব ছোট লকেট তৈরি করে। বাস্তবে এটা তো এক সেকেন্ডের ব্যাপার।
বাবার বাচ্চা হওয়া মানেই বিশ্বের মালিক হওয়া। ‛বাবা, আমি তোমার একদিনের বাচ্চা’ -
এভাবেও লেখা শুরু করে। একদিনেই নিশ্চিত হয়ে যায় আর পত্রও লিখে ফেলে। বাচ্চা হওয়া
মানেই বিশ্বের মালিক হওয়া। এটা বোঝার জন্যও অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তোমরা বিশ্বের
মালিক হয়ে যাও। ওখানে অন্য কোনো ভূখণ্ড থাকবে না। নাম-চিহ্ন কিছুই থাকবে না। কেউ
বুঝতেই পারবে না যে এখানেও কোনো ভূখণ্ড ছিল। যদি ছিল, তাহলে অবশ্যই তার
হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি থাকবে। কিন্তু ওখানে এইসব থাকবে না। তাই বলা হয়, তোমরা বিশ্বের
মালিক হবে। বাবা বুঝিয়েছেন, আমি যেমন তোমাদের বাবা, তেমনই আবার জ্ঞানের সাগর। এগুলো
হলো সর্বোত্তম জ্ঞান, যার দ্বারা আমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাই। আমাদের বাবা হলেন
সুপ্রীম। তিনিই সত্য বাবা এবং সত্য টিচার - সর্বদাই সত্য কথা বলেন। অসীম শিক্ষা দেন।
তিনি হলেন অসীম জগতের গুরু, সকলের সদগতি করেন। যদি একজনের মহিমা করা হয়, তাহলে তিনি
যতক্ষণ না অন্যদেরকেও নিজের সমান বানাচ্ছেন, ততক্ষণ সেই মহিমা অন্য কারোর হতে পারে
না। তাই, তোমাদেরকেও পতিত-পাবন বলা যায়। মানুষ ‛সৎ নাম’ লেখে। এই মাতা-রাই হলো
পতিত-পাবনী গঙ্গা। শিবশক্তি বলো কিংবা শিব বংশী, একই ব্যাপার। শিব বংশী
ব্রহ্মাকুমার এবং কুমারী। সকলেই শিব বংশী। যেহেতু ব্রহ্মার দ্বারা রচনা করা হয়, তাই
ব্রহ্মাকুমার এবং কুমারীরা এই সঙ্গমযুগেই থাকে। ব্রহ্মার দ্বারা দত্তক নেওয়া হয়।
সবার আগে ব্রহ্মাকুমার এবং কুমারীরাই থাকে। যদি কেউ মানতে না চায়, তাকে বলো - ইনি
হলেন প্রজাপিতা, এনার মধ্যে প্রবেশ করেন। বাবা বলেন, অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে আমি
এসে প্রবেশ করি। দেখানো হয়েছে - বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মা বেরিয়েছে। আচ্ছা, তাহলে
বিষ্ণু কার নাভি থেকে বেরিয়েছে? এক্ষেত্রে তীরচিহ্ন দিয়ে বোঝাতে পারো যে দুজনেই
অভিন্ন। ব্রহ্মাই বিষ্ণু হয় এবং বিষ্ণুই আবার ব্রহ্মা হয়। ওনার থেকে এনার, এবং
এনার থেকে ওনার জন্ম হয়েছে। এনার এক সেকেন্ড সময় লাগে আর ওনার ৫ হাজার বছর সময় লাগে।
কতো ওয়ান্ডারফুল বিষয়, তাই না? তোমরাও অন্যকে বোঝাবে। বাবা বলছেন - লক্ষ্মী ৮৪ বার
জন্ম নেয় এবং ওদের অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে আমি প্রবেশ করে আবার এইরকম বানিয়ে দিই।
এগুলো ভালোভাবে বুঝতে হয়। কিছুক্ষণ যদি বসতে পারো, তবে বুঝিয়ে দেব যে এনাকে কেন
ব্রহ্মা বলা হয়। এইসব ছবি গোটা পৃথিবীকে দেখানোর জন্য বানানো হয়েছে। আমরা বুঝিয়ে
দেব, যার বোঝার সে ঠিক বুঝবে। যে বুঝবে না, সে আমাদের বংশের নয়। সেই বেচারাও ওখানে
আসবে, কিন্তু প্রজা হবে। আমাদের কাছে তো সকলেই ‛বেচারা’। গরিব মানুষকে বেচারা বলা
হয়। বাচ্চাদেরকে অনেক পয়েন্ট ধারণ করতে হবে। বিভিন্ন টপিকের ওপর ভাষণ করতে হয়। এই
টপিকগুলোও কোনো অংশে কম নয়। প্রজাপিতা ব্রহ্মা এবং সরস্বতী - চার হাত দেখানো হয়,
যার মধ্যে দুটো হাত কন্যার। ইনি তো যুগল (জোড়া) নন। বাস্তবে কেবল বিষ্ণুই হলো যুগল
রূপ। সরস্বতী হলেন ব্রহ্মার কন্যা। শঙ্করেরও যুগল নেই, তাই শিব-শঙ্কর বলে দেয়।
কিন্তু শঙ্কর কি করে? বিনাশ তো পরমাণু বোমার দ্বারা হয়। পিতা কিভাবে সন্তানদের
সংহার করবে? তাহলে তো পাপ হয়ে যাবে। উল্টে বাবা তো কোনো পরিশ্রম ছাড়াই সবাইকে
শান্তিধামে নিয়ে যান। এটা কেয়ামতের (বিনাশ) সময়, তাই সমস্ত হিসাব মিটিয়ে সবাই ঘরে
ফিরে যায়। বাবা সেবা করার জন্যই আসেন। সবাইকে সদগতি প্রদান করেন। তোমরাও প্রথমে
গতিতে গিয়ে তারপর সদগতিতে আসবে। এগুলো সব বোঝার বিষয়। এইসব বিষয়ে কেউ বিন্দুমাত্রও
জানে না। তোমরা দেখতে পাও যে কেউ কেউ কিছুই বোঝে না, মাথা খারাপ করে দেয়। যার ভাগ্যে
ভালো কিছু বোঝার থাকবে, সে এসে বুঝবে। বলো - যদি এতো বিশদ ভাবে বুঝতে চান, তাহলে
সময় দিতে হবে। এখানে তো কেবল বাবার পরিচয় দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটা হলো
কাঁটার জঙ্গল, একে অপরকে কেবল দুঃখই দেয়। তাই এই দুনিয়াকে দুঃখধাম বলা হয়। সত্যযুগ
হলো সুখধাম। কিভাবে দুঃখধাম থেকে সুখধামের রচনা হয়, সেটাই আপনাদেরকে বোঝাবো।
লক্ষ্মী-নারায়ণ সুখধামে ছিলেন, তারপর ৮৪ বার জন্ম নিয়ে এই দুঃখধামে আসেন। কিভাবে
ব্রহ্মার নামকরণ হয়েছে? বাবা বলছেন, আমি এনার মধ্যে প্রবেশ করি এবং এনাকে অসীম
জগতের থেকে সন্ন্যাস নেওয়া করাই। ঝট করেই সন্ন্যাস নেওয়া করান, কারণ বাবাকে তো সেবা
করাতে হবে। সেই কাজই তিনি করাচ্ছেন। এনার পরে আরও অনেকেই এসেছিল যাদের নাম রাখা
হয়েছিল। দুনিয়ার মানুষ তো বিড়াল ছানার কথা বলে। এগুলো গল্পকথা। বিড়াল ছানা কিভাবে
থাকবে? বিড়াল ছানা কি বসে বসে জ্ঞান শুনবে? বাবা অনেক যুক্তি বলে দেন। কেউ যদি কোনো
বিষয় বুঝতে না পারে, তবে তাকে বলো - যতক্ষণ না বাবাকে বুঝতে পারছেন ততক্ষণ কিছুই
বুঝতে পারবেন না। এক একটা বিষয়ে নিশ্চিত হন, তারপর সেটা লিখে নিন। নয়তো ভুলে যাবেন।
মায়া ভুলিয়ে দেবে। বাবার পরিচয় হলো মুখ্য বিষয়। আমাদের বাবা হলেন সুপ্রীম বাবা এবং
সুপ্রীম টিচার। তিনি সমগ্র বিশ্বের আদি, মধ্য এবং অন্তিমের রহস্য বোঝান। অন্য কেউ
এই বিষয়ে কিছুই জানে না। এগুলো বোঝানোর জন্য সময় লাগে। যতক্ষণ না বাবাকে বুঝতে পারছে,
ততক্ষণ প্রশ্ন উঠতেই থাকবে। বাবাকে বুঝতে না পারলে কিছুই বুঝতে পারবে না, কেবল সংশয়
প্রকাশ করবে আর বলবে - এটা কিভাবে সম্ভব, শাস্ত্রে তো এইরকম আছে। তাই সবাইকে আগে
বাবার পরিচয় দাও। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কর্ম, অকর্ম এবং বিকর্মের সূক্ষ্ম পরিণামকে বুদ্ধিতে রেখে, এখন আর কোনো বিকর্ম করা
যাবে না। জ্ঞান এবং যোগের ধারণা করে, অন্যকেও শোনাতে হবে।
২ ) সত্য বাবার সত্য
জ্ঞান দান করে মানুষ থেকে দেবতা বানানোর সেবা করতে হবে। বিকারের পাঁক থেকে সবাইকে
উদ্ধার করতে হবে।
বরদান:-
অলৌকিক
নেশার অনুভূতির দ্বারা নিশ্চয়ের প্রমাণ দিয়ে থাকা সর্বদা বিজয়ী ভব
অলৌকিক আত্মিক নেশাই
নিশ্চয়ের প্রতিফলন (দর্পণ) । নিশ্চয়ের প্রমাণ হলো নেশা আর নেশার প্রমাণ হলো খুশী।
যে সর্বদা সুখী আর নেশায় থাকে, তার সামনে মায়ার কোনো চাল চলতে বেফিকর বাদশাহের
বাদশাহীর ভিতরে মায়া প্রবেশ করতে পারে না। অলৌকিক নেশা সহজেই পুরনো সংসার ও পুরনো
সংস্কার ভুলিয়ে দেয়। সেইজন্য সর্বদা আত্মিক স্বরূপের নেশায়, অলৌকিক জীবনের নেশায়,
ফরিস্তা অবস্থার নেশায় বা ভবিষ্যতের নেশায় থাকলে বিজয়ী হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
মধুরতার গুণই ব্রাহ্মণ জীবনের মহানতা । তাই মধুর হও আর মধুর বানাও।
অব্যক্ত ইশারা :-
অশরীরী ও বিদেহী স্থিতির অভ্যাস বাড়াও
যেমন বিদেহী বাপদাদাকে
দেহের আধার নিতে হয় বাচ্চাদেরকে বিদেহী বানানোর জন্য। ঠিক তেমনি তোমরাও এই জীবনে
থেকে, দেহে থেকেও বিদেহী আত্মা-স্থিতিতে স্থিত হয়ে এই দেহের দ্বারা করাবনহার হয়ে
কর্ম করাও।এই দেহ হলো করনহার। তোমরা হলে দেহী করাবনহার। এইরূপ স্থিতিকে "বিদেহী
স্থিতি" বলা হয়। একেই বলা হয় ফলো ফাদার। বাবাকে ফলো করবার স্থিতি হলো সদা অশরীরী ভব,
বিদেহী ভব, নিরাকারী ভব।