06-04-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
15-12-2004 মধুবন
“বাপদাদার বিশেষ আশা - প্রত্যেক বাচ্চা আশীর্বাদ দিক
আর আশীর্বাদ নিক"
আজ বাপদাদা চতুর্দিকে নিজের নিশ্চিন্ত বাদশাহদের সভা দেখছেন। সারা কল্পে এই রাজসভা
এই সময়েরই। আধ্যাত্মিক নেশাতে থাকো, সেইজন্য তোমরা নিশ্চিন্ত বাদশাহ। সকালে যখন ওঠো
তখনও নিশ্চিন্ত, ঘুরতে ফিরতে, কাজ করতে করতেও নিশ্চিন্ত এবং যখন ঘুমাতে যাও তখনও
নিশ্চিন্ত নিদ্রায় শুয়ে পড়ো। এমন অনুভব করো তো না! নিশ্চিন্ত তোমরা? তৈরি হয়েছ,
নাকি হচ্ছ? হয়ে গেছ তো না! নিশ্চিন্ত আর বাদশাহ, এই কর্মেন্দ্রিয়ের ওপরে রাজত্ব
কায়েম করা স্বরাজ্য অধিকারী নিশ্চিন্ত বাদশাহ তোমরা অর্থাৎ স্বরাজ্য অধিকারী। তো
এমন সভা তোমরা সব বাচ্চারই। কোনও দুশ্চিন্তা আছে তোমাদের? আছে কোনো দুশ্চিন্তা?
কেননা, তোমরা সমস্ত চিন্তা বাবাকে দিয়ে দিয়েছ। সুতরাং বোঝা তো নেমে গেছে, তাই না!
চিন্তা শেষ আর নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়ে অমূল্য জীবন অনুভব করছ। সবার মাথার ওপর লাইটের
মুকুট আপনা থেকেই জ্বলজ্বল করে। নিরুদ্বিগ্নতার উপরে লাইটের মুকুট, যদি কোনো চিন্তা
করো, কোনো বোঝা নিজের ওপর উঠিয়ে নাও, তো জানো তোমরা কী হয়, মাথার ওপর কী এসে যায়?
বোঝার টুকরী এসে যায়। সুতরাং ভাবো, মুকুট আর বোঝা দুটোই সামনে নিয়ে এসো, কোনটা
ভালো লাগে? টুকরী ভালো লাগে, নাকি লাইটের মুকুট ভালো লাগে? বলো, টিচার্স, কী ভালো
লাগে? মুকুট ভালো লাগে তো না! সব কর্মেন্দ্রিয়ের ওপর তোমরা যারা রাজত্ব করো তারা
বাদশাহ। পবিত্রতা লাইটের মুকুটধারী বানায়, সেইজন্য তোমাদের স্মৃতিচিহ্ন জড়চিত্রে
ডবল মুকুট দেখানো হয়েছে। দ্বাপর থেকে শুরু করে বাদশাহ অনেক হয়েছে, রাজা তো অনেক
হয়েছেই, কিন্তু ডবল মুকুটধারী কেউ হয়নি। স্বরাজ্য অধিকারী নিশ্চিন্ত বাদশাহও কেউ
হয়নি। কেননা, পবিত্রতার শক্তি মায়াজিৎ, কর্মেন্দ্রিয়জিৎ বিজয়ী বানিয়ে দেয়।
নিশ্চিন্ত বাদশাহর লক্ষণ হলো - তারা সদা নিজেও সন্তুষ্ট এবং অন্যদেরও সন্তুষ্ট করে।
কখনও কোনো অপ্রাপ্তি নেইই যে অসন্তুষ্ট হবে! যেখানে অপ্রাপ্তি আছে সেখানে অসন্তুষ্টি
থাকে। যেখানে প্রাপ্তি আছে সেখানে সন্তুষ্টি বিদ্যমান। এরকম হয়েছ? চেক করো - সদা
সর্বপ্রাপ্তি স্বরূপ, সন্তুষ্ট হয়েছ কিনা! গায়নও আছে - অপ্রাপ্ত কোনো বস্তু নেই,
শুধু দেবতাদের নয়, ব্রাহ্মণের ভান্ডারেও। সন্তুষ্টতা জীবনের শ্রেষ্ঠ রূপসজ্জা, এর
ভ্যাল্যু সর্বাগ্রগণ্য। তো তোমরা সন্তুষ্ট আত্মা, তাই তো না!
বাপদাদা এমন নিশ্চিন্ত বাদশাহ বাচ্চাদের দেখে খুশি হন। বাহ্ আমার নিশ্চিন্ত বাদশাহ
বাঃ! বাঃ! বাঃ! হও তো না! হাত তোলো, যারা নিশ্চিন্ত বাদশাহ। নিশ্চিন্ত? চিন্তা আসে
না? কখনো তো আসে? না? এটা ভালো। নিশ্চিন্ত হওয়ার বিধি খুব সহজ, মুস্কিল নয়। শুধু
শব্দের মধ্যে একটা অক্ষরের সামান্য তারতম্য রয়েছে। সেই শব্দ হলো - 'আমার' এই শব্দকে
'তোমার' এই শব্দে পরিবর্তন করো। আমার নয় তোমার। তো হিন্দি ভাষাতে মেরা লেখো আর তেরা
এটাও লেখো, (বাংলাতে 'আমার' ও 'তোমার' ) তাহলে আলাদা কী হয়, মে আর তে এই অক্ষরের (বাংলায়
আ এবং তো) কিন্তু পার্থক্য হয়ে যায় এত! তো তোমরা সবাই আমার-আমার গ্রুপের নাকি
তোমার- তোমার গ্রুপের? আমার-কে তোমার এতে পরিবর্তন করে নিয়েছ? যদি না করে থাকো তবে
করে নাও। আমার-আমার অর্থাৎ যারা দাস হবে, নিরাশ হবে। মায়ার দাস হয়ে যাও তো না!
সুতরাং, নিরাশ তো হবেই, তাই না! নিরাশা অর্থাৎ যারা মায়ার দাসী হবে। তো তোমরা
মায়াজিত অর্থাৎ মায়ার দাস নও। নৈরাশ্য আসে তোমাদের? কখনো কখনো টেস্ট করে নাও,
কেননা ৬৩ জন্ম নিরাশ হওয়ার অভ্যাস রয়েছে তো না! তাইতো কখনো কখনো সেটা ইমার্জ হয়ে
যায়। সেইজন্য বাপদাদা কী বলেছেন? প্রত্যেক বাচ্চা নিশ্চিন্ত বাদশাহ। যদি এখনও কোণে
কোথাও কোনো দুশ্চিন্তা রেখে দিয়ে থাকো তবে দিয়ে দাও। নিজের কাছে বোঝা কেন রেখে
দাও? বোঝা রেখে দেওয়ার অভ্যাস হয়ে গেছে? যখন বাবা বলছেন বোঝা আমাকে দিয়ে দাও,
তুমি লাইট হয়ে যাও, ডবল লাইট। ডবল লাইট ভালো, নাকি বোঝা ভালো? তো ভালো ক'রে চেক
করতে হবে। অমৃতবেলায় যখন তোমরা উঠছ তখন চেক করো যে বিশেষভাবে বর্তমান সময়ে
সাবকন্সাসেও কোনো বোঝা নেই তো? সাবকন্সাস কি! স্বপ্নমাত্রও বোঝার অনুভব হওয়া উচিত
নয়। তোমাদের পছন্দ তো ডবল লাইট, তাই না! সুতরাং বিশেষভাবে এই হোম ওয়ার্ক দিচ্ছি -
অমৃতবেলায় চেক করো। কীভাবে চেক করতে হয় জানো তো না! কিন্তু শুধু চেক ক'রো না, চেক
করার সাথে সাথে চেঞ্জও করো। আমার-কে তোমার এতে চেঞ্জ করে দিও। আমার, তোমার। তো চেক
করো আর চেঞ্জ করো, কেননা বাপদাদা বারবার বলছেন - সময় আর স্বয়ং উভয়কে দেখ। সময়ের
গতিও দেখ এবং স্বয়ং এর গতিও দেখ। পরে আবার এটা ব'লো না যে আমি তো জানতামই না, সময়
এত দ্রুত চলে গেছে! অনেক বাচ্চা মনে করে এখন পুরুষার্থ খানিকটা শিথিল হলেও অন্তে
তীব্রতার সাথে করে নেবো। কিন্তু বহুকালের অভ্যাস অন্তে সহযোগী হবে। বাদশাহ হয়ে তো
দেখ। তোমরা হয়েছ কিন্তু কিছু হয়েছ, কিছু হয়নি। চলছি, করছি, সম্পন্ন হয়ে যাবো...।
এখন শুধু চলা নয়, কিছু করা নয়, উড়তে হবে। এখন ওড়ার গতি প্রয়োজন। ডানা পেয়ে
গেছ তো না! উৎসাহ-উদ্দীপনা আর সাহসের পাখা সবার প্রাপ্ত হয়েছে, তাছাড়া, বাবার
বরদানও রয়েছে, বরদান স্মরণে আছে তোমাদের? সাহসের এক কদম তোমাদের আর হাজার কদম
সহায়তা বাবার, কারণ বাচ্চাদের সাথে বাবার ভালোবাসা হৃদয়ের। তো ভালবাসা-যোগ্য
বাচ্চাদের পরিশ্রম বাবা দেখতে পারেন না। ভালোবাসায় থাকো তাহলে পরিশ্রম সমাপ্ত হয়ে
যাবে। পরিশ্রম ভালো লাগে কি? ক্লান্ত হয়ে গেছ তো। ৬৩ জন্ম লক্ষ্যহীন ভাবে ঘুরতে
ঘুরতে পরিশ্রম ক'রে ক'রে ক্লান্ত হয়ে গেছিলে আর দিগ্বিদিক্ জ্ঞানশূন্য হয়ে
তোমাদের ঘুরে বেড়ানোর পরিবর্তে বাবা তাঁর নিজের ভালবাসায় তিন সিংহাসনের মালিক
বানিয়ে দিয়েছেন। তিন সিংহাসন সম্বন্ধে জানো? জানো কি বরং সিংহাসন নিবাসী তোমরা!
অকালতখত নিবাসীও তোমরা, বাপদাদার হৃদয় সিংহাসনাসীনও তোমরা আর ভবিষ্যতের বিশ্ব-
রাজ্যের সিংহাসনাসীনও। তো বাপদাদা সব বাচ্চাকে সিংহাসনাসীন দেখছেন। এমন
পরমাত্ম-হৃদয় সিংহাসনাসীন সমগ্র কল্পে তোমরা অনুভব করতে পারবে না। পান্ডব কী মনে
করছ? বাদশাহ হয়েছো? হাত উঠাচ্ছে। সিংহাসন ছেড়ো না। দেহভাবে যদি এসেছ অর্থাৎ মাটিতে
এসে গেছো। এই দেহ হলো মাটি। সিংহাসনাসীন যদি হ'লে তো বাদশাহ হ'লে।
বাপদাদা সব বাচ্চার পুরুষার্থের চার্ট চেক করেন, চার সাবজেক্টেই কে কে কতদূর পৌঁছেছে!
তো বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চার চার্ট চেক করেছেন, বাপদাদা যে সমুদয় ভান্ডার দিয়েছেন
সেই সমুদয় ভান্ডার কতটা তোমরা জমা করেছো। তো জমার খাতা তিনি চেক করেছেন, কেননা,
বাবা সবাইকে একরকম, সম পরিমাণ দিয়েছেন, কাউকে কম, কাউকে বেশি দেননি। ভান্ডার জমা
হওয়ার লক্ষণ কী? ভান্ডারের ব্যাপারে তোমরা তো জানোই, তাই না! সবচাইতে বড় ভান্ডার
হলো শ্রেষ্ঠ সংকল্পের ভান্ডার। সংকল্পও ভান্ডার তো বর্তমান সময়ও অনেক বড় ভান্ডার।
কেননা, বর্তমান সময়ে তোমরা যা কিছু প্রাপ্ত করতে চাও, যে বরদান নিতে চাও, নিজেকে
যতটা শ্রেষ্ঠ বানাতে চাও, ততটাই এখন বানাতে পারবে। এখন নয় তো কখনোই নয়। যেমন,
সংকল্পের ভান্ডার ব্যর্থ খুইয়ে দেওয়া অর্থাৎ নিজের সমূহ প্রাপ্তি খুইয়ে দেওয়া।
ঠিক তেমনই, তোমরা যদি সময়ের এক সেকেন্ডও ব্যর্থ খুইয়ে দাও, সফল না করো তবে অনেক
হারাবে। সেইসঙ্গে জ্ঞানের ভান্ডার, গুণের ভান্ডার, শক্তির ভান্ডার এবং সকল আত্মা এবং
পরমাত্মা দ্বারা কল্যাণকারী শুভ ভাবনার ভান্ডার। সর্বাপেক্ষা সহজ হলো পুরুষার্থে "শুভ
ভাবনা দাও আর শুভ ভাবনা নাও।" সুখ দাও আর সুখ নাও, না দুঃখ দাও না দুঃখ নাও। এমন নয়
যে দুঃখ দাওনি কিন্তু নিয়ে নেবে, তাহলেও দুঃখী হবে তো না! সুতরাং আশীর্বাদ দাও,
সুখ দাও আর সুখ নাও। আশীর্বাদ (দুয়) দিতে জানো? জানো তোমরা? কীভাবে নিতেও হয় তা'
জানো? যারা আশীর্বাদ দিতে এবং নিতে জানে তারা হাত তোলো। আচ্ছা - সবাই জানে? আচ্ছা -
ডবল ফরেনার্স তোমরাও জানো? অভিনন্দন। সবাইকে অভিনন্দন, যদি নিতেও জানো আর দিতেও জানো
তাহলে আর চাই কী? নিরন্তর আশীর্বাদ নিয়ে যাও আর আশীর্বাদ দিয়ে যাও, সম্পন্ন হয়ে
যাবে। কেউ যদি অভিসম্পাত করে তবে কী করবে? নেবে? তোমাদের অভিশাপ যদি দেওয়া হয় তবে
তোমরা কী করবে? নেবে? মনে করো, যদি অভিশাপ নিয়ে নিয়েছ তাহলে তোমাদের ভিতরে
স্বচ্ছতা থাকল? অভিশাপ তো খারাপ জিনিস, তাই না! তুমি নিয়ে নিলে, নিজের মধ্যে
স্বীকার করে নিলে তাহলে তো তোমার ভিতর স্বচ্ছ থাকল না তো না! যদি সামান্যও ডিফেক্ট
থাকে তবে পার্ফেক্ট হতে পারবে না। যদি খারাপ জিনিস কেউ দেয় তবে কি তোমরা সেটা নিয়ে
নেবে? খুব সুন্দর কিছু ফল আছে কিন্তু খারাপ হয়ে যাওয়া ফল যদি তোমাকে দেয়, ফল তো
খুব সুন্দর কিন্তু তুমি কি তা' নেবে? নেবে না, নাকি বলবে ভালই তো, ঠিক আছে, দিয়েছে
যখন নিয়েই নিই! কখনও কেউ যদি অভিশাপ দেয় তবে তুমি মনের ভিতরে ধারণ ক'রো না। বুঝতে
পারছ সেটা অভিশাপ কিন্তু অভিশাপ ভিতরে ধারণ ক'রো না, নয়তো ডিফেক্ট হয়ে যাবে। তো
পুরানো বছরের অল্প কিছু দিন বাকি আছে, কিন্তু এখন এই বছরে নিজেদের হৃদয়ে দৃঢ়
সংকল্প করো, এখনও কারও অভিশাপ যদি তোমাদের মনে থেকে থাকে তবে বের করে দাও আর কাল
থেকে আশীর্বাদ দেবে, আশীর্বাদ নেবে। মঞ্জুর? পছন্দ হয়েছে? পছন্দ হয়েছে নাকি করতেই
হবে? পছন্দ তো হয়েছে কিন্তু যারা মনে করছ, করতেই হবে, যা কিছুই হয়ে যাক কিন্তু
করতেই হবে, তারা হাত উঠাও। করতেই হবে।
যে সকল স্নেহী সহযোগী তোমরা এসেছ তারা হাত তোলো। তো যে স্নেহী সহযোগীরা এসেছে,
বাপদাদা তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন, কেননা সহযোগী তো বটেই, স্নেহীও তোমরা, কিন্তু আজ
আরও এক কদম এগিয়ে বাবার ঘরে তথা নিজের ঘরে এসেছো, তো নিজের ঘরে আসার অভিনন্দন। তো
তোমরা যারা স্নেহী সহযোগী এসেছ তারাও মনে করো কি যে আশীর্বাদ দেবে আর নেবে? মনে করো?
সাহস রাখো? যে স্নেহী সহযোগী সাহস রাখো, তারা সহায়তা পাবে, লম্বা করে হাত উঠাও।
আচ্ছা। তাহলে তো তোমরাও সম্পন্ন হয়ে যাবে, অভিনন্দন। আচ্ছা গডলি স্টুডেন্ট যারা
রেগুলার, হতে পারে তারা ব্রাহ্মণ জীবনে বাপদাদার সাথে মিলন উদযাপন করতে প্রথম বার
এসেছে, কিন্তু নিজেকে ব্রাহ্মণ মনে করে, রেগুলার স্টুডেন্ট মনে করে তারা যদি বুঝতে
পারো যে করতেই হবে, তাহলে তারা হাত তোলো। আশীর্বাদ দেবে, আশীর্বাদ নেবে? করবে?
টিচার্স হাত তুলেছে? কেবিনের এরা হাত তুলছে না। এরা ভাবছে আমরা তো দিয়েই থাকি। এখন,
করতেই হবে। যা কিছুই হয়ে যাক না কেন মনোবল বজায় রাখো। দৃঢ় সংকল্প রাখো। মনে করো,
কখনো যদি অভিশাপের প্রভাব পড়েও তবে ১০ গুন বেশি আশীর্বাদ দিয়ে সেটা শেষ করে দিতে
হবে। একটা অভিসম্পাতের প্রভাবকে ১০ গুন আশীর্বাদ দিয়ে হালকা করে দিতে হবে, পরে
আবার মনোবল এসে যাবে। লোকসান তো নিজের হয়, তাই না! অন্যে তো অভিশাপ দিয়ে চলে যায়,
কিন্তু যে অভিসম্পাত অন্তর্লীন করে নেয়! দুঃখী কে হয়? যে নেয়, নাকি যে অভিশাপ
দেয়? যে দেয় সেও হয় কিন্তু যে নেয় সে বেশি দুঃখী হয়। যে দেয় সেতো অসাবধান থাকে।
আজ বাপদাদা নিজের হৃদয়ের আশা বিশেষভাবে শোনাচ্ছেন, তাঁর সব বাচ্চার প্রতি, এক এক
বাচ্চার প্রতি, তা' তারা দেশের হোক বা বিদেশের, এমনকি যদি তারা সহযোগীও হয়, কারণ
সহযোগীরাও তো পরিচয় পেয়েছে তো না! তো তোমরা যখন পরিচয় পেয়েছই তখন সেই পরিচয়
দ্বারা প্রাপ্তি করা উচিত তো না! তো বাপদাদার এটাই আশা যে সব বাচ্চা যেন আশীর্বাদ
দিতে থাকে। আশীর্বাদের ভান্ডার যত সঞ্চয় করতে পারো ততটাই করতে থাকো। কেননা, এই সময়
যত আশীর্বাদ একত্রিত করবে, জমা করবে ততই তোমরা যখন পূজ্য হবে তখন আত্মাদের আশীর্বাদ
দিতে পারবে। তোমরা আশীর্বাদ যে দেবে সেটা শুধু এখন নয়, দ্বাপর থেকে শুরু করে সব
ভক্তকে আশীর্বাদ দিতে হবে। তো এত আশীর্বাদের স্টক সঞ্চয় করতে হবে। তোমরা রাজা
বাচ্চা তো না! বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে রাজা বাচ্চা রূপে দেখেন, কম নয়। আচ্ছা।
বাপদাদার আশা তোমরা আন্ডারলাইন করেছো? যে করেছ সে হাত উঠাও, করে নিয়েছ! আচ্ছা।
বাপদাদা ৬ মাসের হোম ওয়ার্ক দিয়েছিলেন, মনে আছে? টিচারদের মনে আছে? কিন্তু এই দৃঢ়
সংকল্পের এক মাসের রেজাল্ট দেখবেন কারণ নতুন বছর তো শীঘ্রই শুরু হবে। ৬ মাসের হোম
ওয়ার্ক নিজস্ব, এই এক মাসের দৃঢ় সংকল্পের রেজাল্ট দেখবেন। ঠিক আছে না? টিচার্স এক
মাস ঠিক আছে? পান্ডব ঠিক আছে? আচ্ছা - যারা প্রথমবার মধুবনে পৌঁছেছ, তারা হাত উঠাও।
খুব ভালো। দেখ, নতুন বাচ্চাদের বাপদাদার সদা খুব সুন্দর লাগে। কিন্তু বৃক্ষে যেমন
ছোট ছোট পাতা যে বের হয় না তা' পাখিদের খুব প্রিয়, সেরকম নতুন নতুন বাচ্চারাও আছে;
তো মায়ারও নতুন নতুন বাচ্চারা খুব প্রিয়। সেইজন্য তোমাদের প্রত্যেকে যারা নতুন,
তারা প্রতিদিন নিজের নবীনত্ব চেক করো, আজকের দিন নিজের মধ্যে কী নবীনত্ব এনেছ। কোন
বিশেষ গুণ, শক্তি নিজের মধ্যে ধারণ করেছ। তো নিরন্তর চেক করবে তো নিজেকে নিরন্তর
পরিপক্ব করবে এবং সেফ থাকবে। অমর থাকবে। সুতরাং অমর থাকা, অমর পদ পেতেই হবে। আচ্ছা।
চতুর্দিকের সকল নিশ্চিন্ত বাদশাহকে, সদা আধ্যাত্মিক নেশায় থাকা শ্রেষ্ঠ আত্মাদের,
যারা সঞ্চয়ের খাতায় সদা প্রাপ্ত হওয়া সমগ্র ভান্ডারের বৃদ্ধি করে সেই তীব্র
পুরুষার্থী আত্মাদের, সদা এক সময়ে তিন প্রকারের সেবা করে এমন শ্রেষ্ঠ সেবাধারী
বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ, পদম্ পদম্ পদম্ গুণ স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
সর্ব শক্তিকে অর্ডার অনুসারে নিজের সহযোগী বানিয়ে
প্রকৃতিজিৎ ভব
সবচাইতে বড় হতে বড় দাসী হলো প্রকৃতি। যে বাচ্চারা
প্রকৃতিজিত হওয়ার বরদান প্রাপ্ত করে নেয়, তাদের অর্ডার অনুসারে সর্বশক্তি এবং
প্রকৃতি দাসী রূপে কার্য করে অর্থাৎ প্রয়োজনের সময় সহযোগ দেয়। যদি প্রকৃতিজিত
হওয়ার পরিবর্তে অসাবধানতার নিদ্রায় কিংবা অল্পকালের প্রাপ্তির নেশায় কিংবা
ব্যর্থ সংকল্পের নৃত্যে মত্ত হয়ে নিজের সময় খুইয়ে দাও তবে শক্তিসমূহ তোমাদের
অর্ডারে কার্য করতে পারবে না। সেইজন্য চেক করো প্রথম এবং মুখ্য - সংকল্প শক্তি,
নির্ণয় শক্তি এবং সংস্কারের শক্তি এই তিন শক্তিই তোমাদের অর্ডারে আছে কিনা!
স্লোগান:-
নিরন্তর যদি বাপদাদার গুণ গাও তবে গুণমূর্ত হয়ে যাবে।
অব্যক্ত ইশারা :- "কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা
সদা বিজয়ী হও" কম্বাইন্ড সেবা ব্যতীত সফলতা অসম্ভব। এমন নয় যে সেবা করতে যাবে আর
ফিরে এসে বলবে মায়া এসে গেছিল, মুড অফ হয়ে গেছিল, ডিস্টার্ব্ড হয়ে গেছ, সেইজন্য
আন্ডারলাইন করো - সেবাতে সফলতা এবং সেবাতে বৃদ্ধির সাধন হলো স্ব সেবা এবং সকলের
কম্বাইন্ড সেবা।