06.05.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
স্মরণের যাত্রায় থাকার জন্য পরিশ্রম করো তাহলেই পবিত্র হয়ে যাবে, এখন বাবা তোমাদের
পড়াচ্ছেন, তারপর তোমাদের সাথে করে নিয়ে যাবেন"
প্রশ্নঃ -
তোমাদের কোন্
সমাচার সকলকে দিতে হবে?
উত্তরঃ
এখন ঘরে ফিরে
যেতে হবে তাই পবিত্র হও। পতিত-পাবন বাবা বলেন - আমাকে স্মরণ করো তাহলেই পবিত্র হয়ে
যাবে, এই সমাচার সকলকে দিতে হবে। বাচ্চারা, বাবা তাঁর নিজের পরিচয় তোমাদেরকে
দিয়েছেন। এখন তোমাদের কর্তব্য হলো বাবাকে শো (প্রত্যক্ষ) করানো। বলাও হয় যে, 'সন
শো'জ ফাদার' (পুত্রের মাধ্যমে পিতার প্রত্যক্ষতা) ।
গীতঃ-
া : - মরণ
তোমার পথে(গলি), বাঁচাও তোমার পথে....
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা
গানের অর্থ শুনেছে যে, বাবা আমরা তোমার রুদ্রমালায় গ্রথিত হয়েই যাবো। এই গানও
ভক্তিমার্গেই রচিত হয়েছে। এখনও দুনিয়ায় যত সামগ্রী রয়েছে, জপ-তপ, পূজা-পাঠ - এসবই
হলো ভক্তিমার্গের। ভক্তি হলো রাবণ-রাজ্য, জ্ঞান রাম-রাজ্য। জ্ঞানকে বলা হয় নলেজ,
পড়াশোনা। ভক্তিকে পড়াশোনা বলা যায় না। এতে কোনো উদ্দেশ্য থাকে না যে, আমরা কী হতে
চলেছি, ভক্তি কোনো পড়াশোনা নয়। রাজযোগ শেখাও হলো একধরণের পড়াশোনা , পড়াশোনা এক (বিশেষ)
স্থানে, স্কুলেই পড়ানো হয়। ভক্তিতে দুয়ারে-দুয়ারে ধাক্কা খেতে হয়। পড়া মানে পড়া।
তাই পড়াশোনা সম্পূর্ণরূপে করা উচিত। বাচ্চারা জানে যে, আমরা স্টুডেন্ট। অনেকেই
রয়েছেন যারা নিজেদের স্টুডেন্ট মনে করে না, কারণ তারা পড়েই না। না পিতাকে পিতা মনে
করে, না শিববাবাকে সদ্গতিদাতা মনে করে। এমনও আছে, যাদের বুদ্ধিতে কিছু বসেই না, এখন
তো রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে, তাই না! তাতে সব ধরণেরই মানুষ থাকে। বাবা এসেছেনই পতিতকে
পবিত্র করতে। বাবাকে আহ্বানও করে - হে পতিত-পাবন এসো। বাবা এখন বলেন, পবিত্র হও।
বাবাকে স্মরণ করো। প্রত্যেককে বাবার সমাচার দাও। এইসময় ভারতই বেশ্যালয়। পূর্বে
ভারতই শিবালয় ছিল। এখন দ্বি-মুকুট নেই। বাচ্চারা, এও তোমরাই জানো যে এখন পতিত-পাবন
বাবা বলেন - আমাকে স্মরণ করো তাহলেই তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাবে। স্মরণেই
পরিশ্রম। অতি অল্পসংখ্যকই রয়েছে যারা (বাবার) স্মরণে থাকে। ভক্তমালাও অল্পসংখ্যকেরই
হয়, তাই না! ধন্না ভগৎ (রাজস্থানে জাঠ পরিবারে জন্ম। গ্রন্থ সাহেবে তাঁর লেখা ৩টি
পদ রয়েছে), নারদ, মীরা ইত্যাদি নামের উল্লেখ রয়েছে। এরমধ্যেও সবাই তো এসে এই
ঈশ্বরীয় পাঠ পড়বে না। কল্প-পূর্বে যারা এসে এই পাঠ পড়েছিল তারাই আসে। তারা বলে,
বাবা কল্প-পূর্বেও আমরা ঈশ্বরীয় পাঠ পড়ার জন্য বা স্মরণের যাত্রা শেখার জন্য তোমার
সঙ্গে মিলিত হয়েছিলাম। বাচ্চারা, এখন বাবা এসেছেনই তোমাদের নিয়ে যেতে। তিনি বোঝান
যে, তোমাদের আত্মা অপবিত্র হয়ে গেছে তাই আহ্বান করো যে, এসে আমাদের পবিত্র করো। এখন
বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো, পবিত্র হও। বাবা পড়ানও, আবার সঙ্গে করেও নিয়ে যান।
বাচ্চাদের অন্তরে অত্যন্ত খুশী থাকা উচিত। বাবা পড়াচ্ছেন, কৃষ্ণকে বাবা বলা হবে না।
কৃষ্ণকে পতিত-পাবনও বলবে না। এ কেউ জানে না যে, বাবা কাকে বলা হয় আর তিনি কিভাবে
জ্ঞান প্রদান করেন। এ শুধু তোমরাই জানো। বাবা নিজের পরিচয় তাঁর সন্তানদেরই দেন।
নতুন কারোর সঙ্গে বাবা মিলতে পারেন না। বাবা বলেন, সন শো'জ ফাদার। বাচ্চাই বাবার শো
(প্রত্যক্ষতা) করবে। কারোর সঙ্গে বাবার মিলিত হওয়ার বা কথা বলার প্রয়োজন নেই। যদিও
বাবা এতটা সময় পর্যন্ত নতুন-নতুনদের সঙ্গে মিলিত হন। ড্রামায় ছিল, অনেকেই আসতো।
মিলিটারীদের উদ্দেশ্যে বাবা বুঝিয়েছেন যে, তাদের উদ্ধার করতে হবে, ওদেরও তো তাদের
ডিউটি পালন করতেই হবে। তা নাহলে তো শত্রু আক্রমণ করবে। শুধুমাত্র বাবাকে স্মরণ করতে
হবে। গীতায় রয়েছে, যারা যুদ্ধের ময়দানে শরীর পরিত্যাগ করবে তারা স্বর্গে যাবে।
কিন্তু এমন হতে পারে না। যিনি স্বর্গ স্থাপন করেন তিনি যখন আসবেন, তখনই যাবে।
স্বর্গ কি বস্তু, তাও কেউ জানে না। বাচ্চারা, এখন তোমরা ৫ বিকার-রূপী রাবণের সঙ্গে
যুদ্ধ করো, বাবা বলেন - অশরীরী ভব। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আমাকে স্মরণ করো। এভাবে
আর কেউ বলতে পারে না।
সর্বশক্তিমান একমাত্র বাবাকে ছাড়া আর কাউকেই বলা যাবে না। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরকেও
বলতে পারবে না। অলমাইটি হলেন একমাত্র বাবা-ই। ওয়ার্ল্ড অলমাইটি অথরিটি (বিশ্বের
সর্বময়কর্তা), জ্ঞানের সাগর একমাত্র বাবাকেই বলা হয়। এই যে সাধু-সন্তাদিরা রয়েছে
তারা হলো শাস্ত্রের অথরিটি। ভক্তির অথরিটিও বলা যাবে না। তাদের হলো শাস্ত্রের অথরিটি,
তাদের সবকিছুই শাস্ত্র-নির্ভর। তারা মনে করে, ভক্তির ফলও ভগবানকে দিতে হবে। ভক্তি
কবে থেকে শুরু হয়েছে, কবে সমাপ্ত হবে, সেও জানে না। ভক্তরা মনে করে, ভক্তিতেই ভগবান
রাজী (সন্তুষ্ট) হবেন। ভগবানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা থাকে, কিন্তু অন্য কাউকে
ভক্তি করলে তিনি রাজী হবেন কী? তাঁর ভক্তি করলে তবে তো সন্তুষ্ট হবেন, তাই না! তোমরা
শঙ্করের ভক্তি করলে বাবা কিভাবে সন্তুষ্ট হবেন? তোমরা হনুমানের পূজা করলে কি বাবা
সন্তুষ্ট হবেন? সাক্ষাৎকার হয়ে যাবে, কিন্তু (ফল) প্রাপ্তি কিছুই নেই। বাবা বলেন,
অবশ্যই আমি সাক্ষাৎকার করাই, কিন্তু এমন নয় যে তারা আমার সঙ্গে এসে মিলিত হতে পারবে।
না, তোমরাই কেবল আমার সঙ্গে মিলিত হও। ভক্ত ভক্তি করে ভগবানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার
জন্য। তারা বলে, জানি না ভগবান কিরূপে এসে মিলিত হবেন, তাই একে বলা হয় ব্লাইন্ড-ফেথ্।
এখন তোমরা বাবার সঙ্গে মিলিত হয়েছো। তোমরা জানো যে, তিনি হলেন নিরাকার পিতা, যখন
তিনি শরীর ধারণ করেন তখনই নিজের পরিচয় দেন যে, 'আমি তোমাদের পিতা'। ৫ হাজার বছর
পূর্বেও তোমাদের রাজ্য-ভাগ্য দিয়েছিলাম পুনরায় তোমাদের ৮৪ জন্ম নিতে হয়েছে। এই
সৃষ্টিচক্র আবর্তিত হতেই থাকে। দ্বাপরের পরেই অন্যান্য ধর্ম আসে, এসে নিজ-নিজ ধর্ম
স্থাপন করে। এ কোনো বড়াই করার মতন কথা নয়। মহিমা কারোর-ই নয়। ব্রহ্মার মহিমাও তখনই
হয় যখন বাবা এসে প্রবেশ করেন। তা নাহলে ইনিও তো ব্যবসা করতেন, ইনি কি জানতেন যে, 'আমার
মধ্যে ভগবান আসবেন', না জানতেন না। বাবা প্রবেশ করে বুঝিয়েছেন যে, 'কিভাবে আমি এনার
মধ্যে প্রবেশ করেছি'। কিভাবে এনাকে দেখিয়েছি যে - আমার যা তা তোমার, তোমার যা তা
আমার, দেখে নাও। নিজের তন-মন-ধন দ্বারা তুমি আমার সাহায্যকারী হও, তার ফলস্বরূপ তুমি
এইসব প্রাপ্ত করবে। বাবা বলেন - আমি সাধারণ শরীরে প্রবেশ করি, যে তার নিজের জন্মকেও
জানে না। কিন্তু আমি কবে আসি, কিভাবে আসি তা কেউ জানে না। তোমরা এখন দেখো যে, বাবা
সাধারণ শরীরে এসেছেন। এঁনার মাধ্যমে আমাদের জ্ঞান আর যোগ শেখাচ্ছেন। জ্ঞান অনেক সহজ।
নরকের ফটক (গেট) বন্ধ হয়ে স্বর্গের ফটক কিভাবে খোলে - সেও তোমরাই জানো। দ্বাপরে
রাবণ-রাজ্য শুরু হয় অর্থাৎ নরকের দ্বার খোলে। নতুন আর পুরানো দুনিয়াকে আধাআধি ভাবে
রাখা হয়। বাবা এখন বলেন - বাচ্চারা, আমি তোমাদের পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার যুক্তি বলি।
বাবাকে স্মরণ করো তাহলেই জন্ম-জন্মান্তরের পাপ নাশ হয়ে যাবে। এই জন্মের পাপের কথাও
বলতে হবে। স্মরণে তো থাকে, তাই না যে, কি পাপ করেছি? কি-কি দান-পুণ্য করেছি? এনার
নিজের বাল্যকালকে জানা আছে, তাই না! কৃষ্ণেরই নাম হলো শ্যাম আর সুন্দর(গৌরবর্ণ),
শ্যাম-সুন্দর। এর অর্থ কখনো কারোর বুদ্ধিতে আসবে না। নাম শ্যাম-সুন্দর, আর চিত্রতে
কালো করে দিয়েছে। রঘুনাথ-মন্দিরে গিয়ে দেখবে - সেখানেও কালো, হনুমানের মন্দিরে দেখো
- সেখানেও সকলকে কালো করে তৈরী করে। এ হলোই পতিত দুনিয়া। বাচ্চারা, এখন তোমাদের
চিন্তা (ওনা) রয়েছে যে, আমাদের শ্যাম থেকে সুন্দর হতে হবে। এরজন্যই তোমরা বাবার
স্মরণে থাকো। বাবা বলেন, এ হলো তোমাদের অন্তিম জন্ম। আমাকে স্মরণ করো তবেই পাপ
ভস্মীভূত হবে। তোমরা জানো যে, বাবা এসেছেন তোমাদের নিয়ে যেতে। তাহলে শরীর অবশ্যই
এখানে পরিত্যাগ করবে। শরীর-সহ কি নিয়ে যাবেন, না তা যাবেন না। অপবিত্র আত্মারা যেতে
পারবে না। অবশ্যই বাবা পবিত্র হওয়ার যুক্তি বলবেন। তিনি বলেন, আমাকে স্মরণ করো তবেই
বিকর্ম বিনাশ হবে। ভক্তিমার্গে থাকে অন্ধশ্রদ্ধা। শিব-কাশী বলে, আবার বলে - শিব
গঙ্গা এনেছেন, ভগীরথের মাধ্যমে গঙ্গা নির্গত হয়েছে। মাথার থেকে জল কিভাবে নির্গত হবে।
ভগীরথ কি কোনো পাহাড়ের উপর গিয়ে বসে রয়েছেন, যার জটা থেকে গঙ্গা নির্গত হবে। জল যা
বর্ষিত হয়, তা সমুদ্র থেকে (বাষ্পাকারে) টেনে নেওয়া হয়, যার থেকে সমগ্র দুনিয়ায়
জলবর্ষন হয়। নদী তো সর্বত্রই রয়েছে। পর্বতের উপরে বরফ জমে যায় তার থেকেও (বরফ গলে)
জল আসতে থাকে। পাহাড়ের গুহার অভ্যন্তরেও জলস্রোত থাকে, সেখান থেকেও কূয়োতে জল আসতে
থাকে। সেও আবার বর্ষার উপর ভিত্তি করে। বৃষ্টি না পড়লে কূয়াও শুকিয়ে যায়।
তারা বলেও যে, বাবা আমাদের পবিত্র করে স্বর্গে নিয়ে চলো। আশাই থাকে স্বর্গের,
কৃষ্ণপুরীর। বিষ্ণুপুরীর কথা কারোর জানা নেই। কৃষ্ণের ভক্তরা বলবে যে - যেদিকেই চাই
শুধু কৃষ্ণই-কৃষ্ণ দেখি। আরে, যখন পরমাত্মা সর্বব্যাপী তখন কেন বলো না যে, যেখানেই
দেখো শুধু পরমাত্মাই-পরমাত্মা। পরমাত্মার ভক্তরা আবার বলে যে, এসব ওনারই রূপ। তিনিই
এইসব লীলাখেলা করছেন। ভগবান রূপ ধরেন, লীলা করার জন্য। তাহলে এখন অবশ্যই লীলা করবেন,
তাই না! পরমাত্মার দুনিয়া স্বর্গে দেখো, ওখানে অপবিত্রতার কোনো কথাই নেই। এখানে তো
শুধু নোংরাই-নোংরা (শুধুই অপবিত্রতা) আবার এখানেই বলা হয় যে, পরমাত্মা সর্বব্যাপী।
পরমাত্মাই সুখ দেন। বাচ্চার জন্ম হলে সুখী হয়, মৃত্যু হলে দুঃখী হবে। আরে, ভগবান
তোমাদের কোনো জিনিস দিয়ে যদি নিয়ে নেয় তবে তাতে তোমাদের কান্নাকাটি করার কি দরকার !
সত্যযুগে এমন কান্নাকাটি করার মতন দুঃখ থাকেই না। মোহজীত রাজার দৃষ্টান্তও দেওয়া হয়।
এইসব হলো মিথ্যা উদাহরণ। এতে কোনো সার(সত্যতা) নেই। সত্যযুগে ঋষি-মুনি থাকে না। আর
এখানেও এমন কথা হতে পারে না। এমন কোনো মোহজীত রাজা হতে পারে না। ভগবানুবাচ - যাদব,
কৌরব, পান্ডব এখন কি করছে? তোমাদের বাবার সঙ্গে যোগ রয়েছে। বাবা বলেন - বাচ্চারা,
আমি তোমাদের দ্বারাই ভারতকে স্বর্গে পরিনত করি। এখন যারা পবিত্র হবে তারাই পবিত্র
দুনিয়ার মালিক হবে। যাকেই পাবে তাকেই বলো যে, ভগবান বলেন - মামেকম্ স্মরণ করো। আমার
সঙ্গে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হও আর কাউকে স্মরণ কোরো না। এ হলো অব্যভিচারী স্মরণ।
এখানে কোনো জল ইত্যাদি চড়াতে হবে না। ভক্তিমার্গে ইনি ব্যবসাদি করেও স্মরণ করতেন,
তাই না! গুরুরাও বলেন - আমাকে স্মরণ করো, নিজের পতিকে স্মরণ কোরো না। বাচ্চারা,
তোমাদের কত কথা বোঝান। মুখ্যকথা হলো এই যে, সকলকে সমাচার দাও - বাবা বলেন, মামেকম্
স্মরণ করো। বাবা মানেই ভগবান। ঈশ্বর নিরাকার। কৃষ্ণকে সকলে ভগবান বলে না। কৃষ্ণ তো
বাচ্চা। শিববাবা যদি এনার মধ্যে না থাকতেন তাহলে তোমরাও থাকতে কি? শিববাবা এনার
মাধ্যমে তোমাদের অ্যাডপ্ট করেছেন, নিজের করে নিয়েছেন। তিনি মাতাও হন, আবার পিতাও হন।
মাতা তো সাকারী-রূপে চাই, তাই না! তিনি হলেন পিতা। এমন-এমন কথা ভালভাবে ধারণ করো।
বাচ্চারা, তোমাদের কখনো কোনো কথায় বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়। ঈশ্বরীয় পড়াও কখনও ছাড়া
উচিত নয়। অনেক বাচ্চারা সঙ্গদোষে এসে অভিমানবশতঃ নিজে পাঠশালা খুলে ফেলে। নিজেদের
মধ্যে লড়াই-ঝগড়া করে তারপর গিয়ে যদি নিজে পাঠশালা খোলে, তবে তা মূর্খতা। অভিমানী হলে
তো তার পাঠশালা খোলার যোগ্যতাই নেই। এই দেহ-অভিমান তোমার কোনো কাজেই আসবে না, কারণ
বুদ্ধিতে তো শত্রুতা রয়েছে তা স্মরণে আসবে। কাউকে কিছুই বোঝাতে পারবে না। এমনও হয়
যে, যাকে জ্ঞান দিলো আর সে দ্রুত এগিয়ে গেলো, আর সে নিজে অধঃপতনে চলে গেলো। নিজেও
বুঝতে পারে যে, আমার থেকে এর অবস্থা ভালো। তখন যে পড়ে সে রাজা হয়ে যায় আর যে পড়ায়
সে দাস-দাসী হয়ে যায়, এমনও হয়। পুরুষার্থ করে বাবার গলার হার হতে হবে। বাবা জীবিত
অবস্থায় আমি তোমার হয়ে গেছি। বাবার স্মরণের দ্বারাই তরী পার হবে। আচ্ছা।
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) কখনো
কোনো কথায় বিভ্রান্ত হয়ো না। একে অপরের প্রতি অভিমান করে পড়া ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়।
শত্রুতাও হলো দেহ-অভিমান। সঙ্গদোষ থেকে নিজেকে অনেক-অনেকভাবে সুরক্ষিত রাখতে হবে।
পবিত্র হতে হবে, নিজের আচরণের দ্বারা বাবার শো' করতে হবে।
২) প্রীত-বুদ্ধি হয়ে
অদ্বিতীয় পিতার অব্যভিচারী স্মরণে থাকতে হবে। তন-মন-ধনের দ্বারা বাবার কার্যে
সহযোগী হতে হবে।
বরদান:-
পৃথক
এবং প্রিয় হওয়ার রহস্যকে জেনে খুশী থেকে রাজযুক্ত ভব
যে বাচ্চারা
প্রবৃত্তিতে থেকে পৃথক আর প্রিয় থাকার রহস্যকে জেনে গেছে তারা সদা স্বয়ং নিজের
প্রতি খুশী থাকে, প্রবৃত্তিকেও খুশীতে রাখে । এর সাথে সাথে স্বচ্ছ হৃদয় হওয়ার
কারণে সাহেবও (বাবা) সর্বদা তাদের প্রতি খুশী থাকেন । এমন খুশীতে থাকা রাজযুক্ত
বাচ্চাদের নিজের প্রতি বা অন্য কারোর প্রতি কাউকে কাজী বানানোর প্রয়োজন থাকে না।
কেননা তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত সদা নিজেরাই নিতে পারে তাই কাউকে কাজী, উকিল বা জজ
বানানোর প্রয়োজনই নেই ।
স্লোগান:-
সেবার
দ্বারা যে আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয় - সেই আশীর্বাদই হলো সুস্থতার আধার ।
অব্যক্ত ইশারা :-
আত্মিক রয়্যালিটি আর পিওরিটির পার্সোনালিটি ধারণ করো
স্থূল শরীরে যেমন
বিশেষভাবে শ্বাস চলা আবশ্যক । শ্বাস না থাকলে জীবন থাকবে না, তেমনই ব্রাহ্মণ জীবনের
শ্বাস হলো পবিত্রতা । ২১ জন্মের প্রারব্ধতার আধার হলো পবিত্রতা । আত্মা আর
পরমাত্মার মিলনের আধার হলো পবিত্র বুদ্ধি । সঙ্গমযুগী প্রাপ্তির আধার আর ভবিষ্যতে
পূজ্য পদ প্রাপ্ত করার আধার হলো পবিত্রতা, তাই এই পবিত্রতার পার্সোনালিটিকে বরদান
রূপে ধারণ করো ।