06.08.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
যখনই সময় পাবে একান্তে বসে স্মরণের যাত্রা করো, যখন তোমরা লক্ষ্যে পৌছাতে পারবে
তখনই এই যাত্রা সম্পূর্ণ হবে"
প্রশ্নঃ -
সঙ্গমে বাবা
নিজের বাচ্চাদের মধ্যে এমন কোন্ গুণ ভরে দেন, যা অর্ধকল্প ধরে চলতে থাকে?
উত্তরঃ
বাবা বলেন -
আমি যেমন সুইট বাচ্চাদেরও তেমনই সুইট বানিয়ে দিই। দেবতারা হলেন অত্যন্ত সুইট। তোমরা
বাচ্চারা এমনই সুইট হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো। যারা অনেকের কল্যাণ করে থাকে, যাদের
মধ্যে কোনও শয়তানী চিন্তা ভাবনাই থাকে না, তারাই হলো সুইট। তাদেরই উচ্চ পদ প্রাপ্ত
হয়। পরবর্তীতে তাদেরই পূজা হয়।
ওম্ শান্তি ।
বাবা বসে
বোঝান, এই শরীরের মালিক হলো আত্মা। প্রথমে এটাই বুঝতে হবে। কেননা বাচ্চারা এই জ্ঞান
এখনই শুনছে। প্রথমে এটাই বুঝতে হবে যে আমরা আত্মা। শরীরের দ্বারা আত্মা কাজ করে থাকে,
পার্ট প্লে করে থাকে। অন্য কোনো মানুষের এই ভাবনা আসেনা, কেননা তারা দেহ-অভিমানে
রয়েছে । এখানে তোমাদের প্রত্যেককেই এই ধারণা দিয়েই বসানো হয় যে, আমি আত্মা আর এ হলো
আমার শরীর। আমি আত্মা পরমপিতা পরমাত্মার সন্তান। এটা স্মরণ করতেই প্রতি মুহূর্তে
ভুলে যাও তোমরা। সর্বপ্রথমে এটাই সম্পূর্ণরূপে স্মরণ করা উচিত। যখন মানুষ তীর্থ
যাত্রায় যায়, তাদের বলা হয় চলতে থাকো । তোমাদেরও স্মরণের যাত্রায় এগিয়ে যেতে হবে
অর্থাৎ স্মরণ করতে হবে। স্মরণ না করা অর্থাৎ যাত্রা থেমে গেছে, দেহ-অভিমান এসে গেছে।
দেহ-অভিমানের কারণে কিছু না কিছু বিকর্ম হয়েই যায়। এমনটাও নয় যে মানুষ সবসময় বিকর্ম
করে চলেছে । কিন্তু উপার্জন (ঈশ্বরীয়) তো বন্ধ হয়ে যায়, তাইনা। সেইজন্যই স্মরণের
যাত্রায় শিথিল হওয়া উচিত নয়। একান্তে বসে নিজের সাথে বিচার সাগর মন্থন করে পয়েন্টস
বের করতে হয় । কতটা সময় বাবার স্মরণে থাকি, মিষ্টি জিনিস তো সহজেই মনে পড়ে যায়,
তাইনা !
বাচ্চাদের বাবা
বুঝিয়েছেন, এই সময় সকল মানুষই একে অপরের ক্ষতি সাধন করে চলেছে। বাবা শুধু টিচারের
মহিমা করেন, তার মধ্যেও কোনও কোনও টিচার মন্দ হয় । টিচার অর্থাৎ যিনি শিক্ষা
প্রদানকারী, ম্যানার্স (শিষ্টাচার) শেখান যিনি। যারা রিলিজিয়েস মাইন্ডেড হয় তাদের
স্বভাবও ভালো হয়, আচার-আচরণও সুন্দর হয়। কোনও বাবা যদি মদ্যপান করে তবে তার সন্তানও
সেই সঙ্গের দ্বারা প্রভাবিত হবে । একেই বলে খারাপ সঙ্গ, কেননা রাবণ রাজ্য যে ! রাম
রাজ্য অবশ্যই ছিল, কিন্তু সেটা কেমন ছিল, কিভাবে স্থাপন হয়েছিল, এইসব ওয়ান্ডারফুল
মিষ্টি বিষয় গুলি তোমরা বাচ্চারাই জানো । সুইট, সুইটার, সুইটেস্ট বলা হয়, তাই না!
বাবার স্মরণে থেকেই তোমরা পবিত্র হয়ে অন্যদেরও পবিত্র করে তোলো । বাবা নতুন সৃষ্টিতে
আসেন না। পৃথিবীতে মানুষ, জানোয়ার, জমি-বাড়ি ইত্যাদি থাকে, মানুষের জন্য সবকিছুই
প্রয়োজন, তাইনা। শাস্ত্রে প্রলয়ের বৃত্তান্ত ভুল, সম্পূর্ণ প্রলয় কখনোই সংঘটিত হয়
না। এই সৃষ্টি চক্র ঘুরতেই থাকে। বাচ্চাদের আদি থেকে শেষ পর্যন্ত এই বিষয়ে ধারণা
রাখতে হবে। মানুষ নানা রকম চিত্র স্মরণ রাখে, সমস্ত মেলা এবং সমাবেশ স্মরণে রাখে।
কিন্তু সেসবই হলো সীমিত জগতের । তোমাদের হলো অসীম জগতের স্মরণ, অনন্ত খুশি, অনন্ত
ধন । বাবা তো অসীম জগতের পিতা, তাইনা। লৌকিক পিতার কাছ থেকে সীমিত প্রাপ্তি হয় ।
অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অনন্ত সুখ প্রাপ্তি হয়। সুখ আসে ধন থেকে, আর সত্য যুগে
অপার ধন । সেখানে সবকিছুই সতোপ্রধান। তোমাদের বুদ্ধিতে আছে, আমরা সতোপ্রধান ছিলাম
আবারও হতে হবে। তোমরা এটাও জান তোমাদের মধ্যেও নম্বরানুসারে আছে - সুইট, সুইটার,
সুইটেস্ট। বাবার থেকেও মিষ্টি হবে যারা, তারা উচ্চ পদ মর্যাদার অধিকারী হবে।
সুইটেস্ট সে-ই যে অনেকের কল্যাণ করে থাকে। বাবাও তো সুইটেস্ট, তাইনা ! তবেই তো সবাই
তাঁকে স্মরণ করে থাকে। কেবল মধু বা চিনিকেই সুইটেস্ট বলা হয় না। মানুষের
আচার-আচরণকেই এমন বলা হয়। বলাও হয় না যে সুইট চাইল্ড(মিষ্টি বাচ্চা), সত্য যুগে
কোনও শয়তান ব্যাপার হয়না । উচ্চ পদ প্রাপ্ত করে যে, নিশ্চয়ই তারা এখানে পুরুষার্থ
করেছে।
তোমরা এখন নতুন
দুনিয়াকে জানো । তোমাদের জন্য তো নতুন দুনিয়া সুখধাম হবে। মানুষ তো জানেই না যে -
শান্তি কবে ছিল । বলে থাকে বিশ্বে শান্তি আসুক । তোমরা বাচ্চারা জানো যে - বিশ্ব
শান্তি ছিল, যা পুনরায় স্থাপন হতে চলেছে। এসব বিষয় সবাইকে বোঝাবে কিভাবে? এমনই সব
পয়েন্টস বের করতে হবে যা মানুষ ভীষণ ভাবে চায় । বিশ্বে শান্তি আসুক, এর জন্য মানুষ
মাথা ঠুকে মরে, কেননা বিশ্বে ভীষণ অশান্তি। লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র সামনে রাখতে হবে।
যখন এদের রাজ্য ছিল বিশ্বে শান্তি ছিল, একেই হেভেন ডিডি ওয়ার্ল্ড বলা হয়। সেখানে
বিশ্বে শান্তি ছিল। আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগের কথা কেউ-ই জানে না। এটাই হলো মুখ্য কথা
। সকল আত্মারা একত্রে বলছে বিশ্বে শান্তি কিভাবে আসবে? সকল আত্মারা শান্তিকে আহ্বান
করছে যেখানে তোমরা বিশ্বে শান্তি স্থাপনের জন্য পুরুষার্থ করছো। যারা শান্তি চায়
তাদের বল যে ভারতেই শান্তি ছিল, যখন ভারত স্বর্গ ছিল, এখন নরক হয়ে গেছে।
নরকে (কলিযুগ) অশান্তি,
কেননা অনেক ধর্ম, মায়ার রাজ্য এই কলিযুগ। ভক্তির আড়ম্বরও রয়েছে। প্রতিনিয়ত এই ভক্তি
বেড়েই চলেছে। মানুষও মেলা এবং বিভিন্ন জায়গায় একত্রিত হয়ে থাকে এই ভেবে যে কিছু
সত্য অবশ্যই পাওয়া যাবে। তোমরা এখন জেনেছ ওসব করে কখনোই পবিত্র হওয়া যায় না। পবিত্র
হওয়ার পথ কোনও মানুষ বলে দিতে পারে না। বাবাই একমাত্র পতিত-পাবন। দুনিয়া একই থাকে
শুধু মাত্র নতুন আর পুরানো বলা হয়ে থাকে। নতুন দুনিয়াতে নতুন ভারত, যাকে নতুন দিল্লি
বলা হয়। নতুন দুনিয়া যেখানে নতুন রাজ্য স্থাপন হবে। এই পুরানো দুনিয়াতে পুরানো
রাজ্য। পুরানো আর নতুন দুনিয়া কাকে বলে তোমরা জান। ভক্তির এতো বিস্তৃতি যাকে বলে
অজ্ঞানতা । জ্ঞানের সাগর একজনই বাবা। বাবা তোমাদের এমন বলেন না যে রাম-রাম বলো বা
কিছু করো । তা নয়, বাচ্চাদের বোঝানো হয় ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিয়োগ্রাফী কিভাবে
রিপিট হয়ে থাকে। এই শিক্ষা এখন তোমরা গ্রহণ করছ । একে বলে আধ্যাত্মিক এডুকেশন
স্পিরিচুয়াল নলেজ। বাবা আত্মাদের সাথে কথা বলছেন। এর অর্থ কেউ জানে না । জ্ঞানের
সাগর এক বাবাকেই বলা হয়। তিনি হলেন - স্পিরিচুয়াল নলেজফুল ফাদার । তোমরা বাচ্চারা
জান আধ্যাত্মিক বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন। এ হলো স্পিরিচুয়াল নলেজ। আধ্যাত্মিক নলেজকেই
স্পিরিচুয়াল নলেজ বলা হয়।
তোমরা বাচ্চারা জানো
পরমপিতা পরমাত্মা হলেন বিন্দু রূপ, তিনিই আমাদের শিক্ষা প্রদান করেন । আমরা আত্মারা
শিক্ষা গ্রহণ করছি । এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমরা আত্মারা যে নলেজ প্রাপ্ত করি,
সেটা আবার অন্য আত্মাদের দিয়ে থাকি । এই স্মৃতি তখনই স্থায়ী হবে যখন তোমরা নিজেকে
আত্মা মনে করে বাবার স্মরণে থাকবে। স্মরণেই অনেক কাঁচা, ঝট করে দেহ-অভিমান এসে যায়।
দেহী-অভিমানী হওয়ার অভ্যাস করতে হবে। আমি আত্মা এই আত্মার সাথে চুক্তি করছি, আমি
আত্মা ব্যবসা করছি । নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করার মধ্যেই লাভ আছে।
আত্মার মধ্যে জ্ঞান আছে যে, আমরা যাত্রা পথে আছি। কর্ম তো করতেই হবে। বাচ্চাদের
পাশাপাশি ব্যবসাও দেখতে হবে। কাজকর্ম করতে-করতে এটা মনে রাখা মুশকিল হয়, আমি আত্মা।
বাবা বলেন, কখনোই ভুল কাজ ক'রো না। সবচেয়ে বড় পাপ হলো বিকার । বিকারই বড় সমস্যা তৈরি
করে থাকে। এখন তোমরা বাচ্চারা পবিত্র হওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তারই স্মৃতিচারণ এই
রাখি বন্ধন । আগের দিনে রাখি ছিল মাত্র কয়েক পয়সার । ব্রাহ্মণ গিয়ে রাখি বাঁধতেন ।
আজকাল তো ফ্যাশনেবল রাখি তৈরি করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে রাখি এই সময়ের জন্যই প্রযোজ্য।
তোমরা বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করে থাক - আমরা কখনও বিকারে যাব না, বিশ্বের মালিক
হওয়ার জন্য তোমার কাছ থেকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করব । বাবা বলেন ৬৩ জন্ম ধরে তো বিষয়
বৈতরণী নদীতে ভেসেছো এখন তোমাদের ক্ষীর সাগরে নিয়ে যাবো । প্রকৃতপক্ষে কোনও সাগর
নেই, শুধুমাত্র তুলনা করার জন্য একথা বলা হয়। তোমাদের আমি শিবালয়ে নিয়ে যাই । সেখানে
অগাধ সুখ, এখন এটা তোমাদের অন্তিম জন্ম, হে আত্মারা পবিত্র হও । বাবার কথা কি তোমরা
শুনবে না ! ঈশ্বর তোমাদের বাবা তিনি বলছেন মিষ্টি বাচ্চারা, বিকারে যেও না।
জন্ম-জন্মান্তরের পাপ মাথায় সঞ্চিত হয়ে আছে, আমাকে স্মরণ করলেই সেই পাপ ভস্মীভূত হবে।
কল্প পূর্বেও তোমাদের শিক্ষা প্রদান করেছিলাম। বাবা প্রতিশ্রুতি তখনই দেন যখন
তোমরাও প্রতিশ্রুতি দিয়ে বল যে, বাবা আমরা তোমাকে স্মরণ করব। এতোটাই স্মরণ কর যেন
শরীরের চেতনাই না থাকে । সন্ন্যাসীদের মধ্যেও কেউ-কেউ নিষ্ঠাবান এবং ব্রহ্মজ্ঞানী
হয়ে থাকে, তারা বসে বসেই শরীর ত্যাগ করে। বাবা তোমাদের বোঝান, পবিত্র হয়ে যেতে হবে।
ওরা তো নিজের মতানুসারে চলে । এমন নয় যে ওরা শরীর ত্যাগ করে মুক্তি-জীবনমুক্তিতে
যেতে পারে। তা কিন্তু নয়। এখানেই তাদের ফিরে আসতে হয় কিন্তু ওদের অনুগামীরা বিশ্বাস
করে নির্বাণে চলে গেছেন। বাবা বোঝান - একজনও ফিরে যেতে পারেনা, নিয়ম-ই নেই। ঝাড়
বৃদ্ধি অবশ্যই হতে হবে।
এখন তোমরা সঙ্গম যুগে
বসে আছো, আর বাকি সব মানুষ আছে কলিযুগে। তোমরা এখন দৈবী সম্প্রদায় ভুক্ত হতে চলেছ ।
যারা তোমাদের ধর্মের হবে, তারাই আসবে। সত্য যুগে দেবী-দেবতাদের বংশ তাইনা। অন্যান্য
ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে এমন ব্যক্তিরাও আসবেন। তারা তাদের নিজের জায়গায় ফিরে আসবেন।
নয়তো ওখানে জায়গা পূর্ণ কে করবে । অবশ্যই তারা নিজেদের স্থান পূর্ণ করতে আসবেন ।
এসবই অতি সূক্ষ্ম বিষয়। অনেক ভালো -ভালো ব্যক্তি আসবে যারা অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত
হয়েছে, তারাও এসে নিজেদের স্থান পূর্ণ করবে। তোমাদের কাছে মুসলিমরাও আসবে । এই
ক্ষেত্রে কিন্তু অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তারা (পুলিশ) তদন্ত করতে আসবে যে
অন্য ধর্মের মানুষ এখানে কেন আসে? যখন জরুরি অবস্থা জারি হয়, তারা অনেককেই ধরে ফেলে
। তাদের তখন কিছু অর্থ দেওয়া হলে ছেড়ে দেয়। যা কল্প পূর্বে হয়েছিল, তোমরা এখন সেটা
দেখছো । কল্প পূর্বেও এমনই হয়েছিল। তোমরা এখন মানুষ থেকে দেবতা উত্তমপুরুষ হচ্ছ।
এটাই হলো সর্বোত্তম ব্রাহ্মণ কুল। এই সময় বাবা আর বাচ্চারা আধ্যাত্মিক সেবা করে
চলেছে। কোনো দরিদ্রকে ধনবান করা - এটাই হলো আধ্যাত্মিক সেবা। বাবা সবার কল্যাণ
করছেন সুতরাং বাচ্চাদেরও সহযোগ করা উচিত। যে অনেককেই পথ বলে দেয়, সে অনেক উচ্চে উঠতে
পারে। তোমরা বাচ্চাদের পুরুষার্থ করতে হবে, কিন্তু চিন্তা নয়। কেননা তোমাদের
দায়িত্ব বাবার উপর। তোমাদের তীব্র পুরুষার্থ করানো হয়, তারপর যে ফলাফল তোমরা পাও
তাতে মনে করা হয় কল্প পূর্বের মতোই তোমরা তা পেয়েছো ।
বাবা বাচ্চাদের বলেন
- বাচ্চারা চিন্তা ক'রো না। সেবা করার জন্য পরিশ্রম কর । বাচ্চারা যদি এমন না হয় তবে
কি করা যাবে ! যদি তারা এই বংশের না হয়, তবে যতই চেষ্টা কর না কেন, কেউ-কেউ তোমাদের
মাথা বেশি পরিমাণে খাবে কেউ-বা কিছু কম। বাবা বলেন সবাই আসবে যখন প্রচুর দুঃখের
মুখোমুখি হবে। তোমাদের কিছুই ব্যর্থ যাবে না, তোমাদের কর্তব্য সঠিক পথ দেখানো।
শিববাবা বলেন আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে। অনেকেই বলে থাকে ভগবান
অবশ্যই আছেন। মহাভারত লড়াইয়ের সময় ভগবান ছিলেন কিন্তু কোন ভগবান ছিলেন, এতেই
বিভ্রান্ত হয়ে গেছে। কৃষ্ণ তো হতে পারে না। কৃষ্ণ ঐ মুখাবয়বে সত্য যুগে থাকবেন ।
প্রতিটি জন্মেই চেহারার পরিবর্তন হয় । সৃষ্টি এখন পরিবর্তন হতে চলেছে। পুরানোকে
নতুন দুনিয়া ভগবান কিভাবে তৈরি করেন, কেউ-ই জানে না। শেষ পর্যন্ত তোমাদের নামই
উজ্জ্বল হবে। স্থাপনা হয়ে চলেছে তারপর ধ্বংস হবে এবং তোমরা রাজত্ব করবে । একদিকে
পুরানো দুনিয়া অন্যদিকে নতুন দুনিয়া - অত্যন্ত ওয়ান্ডারফুল চিত্র। বলাও হয়ে থাকে
ব্রহ্মা দ্বারা স্থাপনা, শঙ্কর দ্বারা বিনাশ.... কিন্তু অর্থ কিছুই জানে না। প্রধান
চিত্র ত্রিমূর্তির। উচ্চ থেকে উচ্চতর হলেন শিববাবা। তোমরা জান শিববাবা ব্রহ্মা
দ্বারা আমাদের স্মরণের যাত্রা শেখাচ্ছেন। বাবাকে স্মরণ করো, যোগ শব্দটি ডিফিকাল্ট
মনে হয়। স্মরণ শব্দটি অনেক সহজ। বাবা শব্দটি খুব মিষ্টি। তোমাদের নিজেদেরই লজ্জা
লাগবে যে - আমরা আত্মারা বাবাকে স্মরণ করতে পারিনা, যার কাছ থেকে বিশ্বের বাদশাহী
প্রাপ্ত হয়। এমনই লজ্জা লাগবে। বাবাও বলবেন তোমরা তো অবিবেচক, বাবাকে স্মরণ করতে
পারো না যখন উত্তরাধিকার কিভাবে প্রাপ্ত হবে। বিকর্ম বিনাশ কিভাবে হবে। তোমরা হলে
আত্মা আর আমি তোমাদের অবিনাশী পরমপিতা পরমাত্মা, তাইনা। তোমরা যদি চাও আমরা পবিত্র
হয়ে সুখধামে যাব তবে শ্রীমতে চলো । বাবাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে। স্মরণ না
করলে বিকর্ম বিনাশ কিভাবে হবে! আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সবরকম উপায়ে পুরুষার্থ করার চেষ্টা করতে হবে। কোনও বিষয় নিয়ে চিন্তা করা উচিত নয়,
কেননা আমাদের জন্য রেস্পন্সিবল হলেন বাবা স্বয়ং । আমাদের কোনো কিছুই ব্যর্থ যেতে
পারে না।
২ ) বাবার মতো খুব
খুব সুইট হতে হবে। অনেকের কল্যাণ করতে হবে। এই অন্তিম জন্মে অবশ্যই পবিত্র হতে হবে।
কাজকর্ম করতে-করতেও অভ্যাস করতে হবে যে, আমি আত্মা।
বরদান:-
প্রবৃত্তির বিস্তারে থেকে ফরিস্তা ভাবের সাক্ষাৎকার করানো সাক্ষাৎকারমূর্তি ভব
প্রবৃত্তির বিস্তার
থাকা সত্ত্বেও বিস্তারকে সংকীর্ণ আর ঊর্ধমুখী হয়ে থাকার অভ্যাস করো। এখন স্থুল
কার্য করছো, আবার এখনই অশরীরী হয়ে যাও - এই অভ্যাস ফরিস্তাভাবের সাক্ষাৎকার করাবে।
উঁচু স্থিতিতে থাকলে ছোটো ছোটো কথা ব্যক্ত ভাবের অনুভব হবে। উঁচুতে থাকলে নীচের
স্থিতি নিজে থেকেই সরে যাবে। পরিশ্রম করা থেকে বেঁচে যাবে। সময়ও বাঁচবে, সেবাও
ফাস্ট হবে। বুদ্ধি এত বিশাল হয়ে যাবে যে একই সময়ে অনেক কাজ করতে পারবে।
স্লোগান:-
খুশী
বজায় রাখার জন্য আত্মা রূপী প্রদীপে জ্ঞানের ঘৃত প্রতিদিন দিতে থাকো।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের অনুভবী হও
বাবা বাচ্চাদেরকে
ভালোবাসেন, এইজন্য সদা বলতে থাকেন বাচ্চারা, তোমরা যা, তোমরা যেমন - আমারই । এইরকম
তোমরাও সদা ভালোবাসাতে লভলীন থাকো, হৃদয় থেকে বলো বাবা, যা কিছু আছে সব তুমিই আছো।
কখনও অসত্যের রাজ্যের প্রভাবে এসো না। শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের রেখা অঙ্কন করার কলম বাবা
তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের হাতে দিয়েছেন, তোমরা যত চাও ততই নিজেদের ভাগ্য বানাতে পারো।
বিশেষ সূচনাঃ
বাবার শ্রীমৎ অনুসারে, মুরলী কেবল বাবার বাচ্চাদের জন্য, না কি সেই আত্মাদের জন্য
যারা রাজযোগের কোর্সও করেনি। সেইজন্য সকল নিমিত্ত টিচার্স এবং ভাই বোনেদের প্রতি
বিনম্র নিবেদন যে, সাকার মুরলীর অডিও বা ভিডিও ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম বা কোনও
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করবেন না।