06.11.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা এখন একেবারে তীরে (তোমাদের নৌকা তীরের কাছে) এসে দাঁড়িয়েছ, তোমাদের এখন এই
পার থেকে ওই পারে যেতে হবে। ঘরে ফেরার জন্য প্রস্তুত হতে হবে"
প্রশ্নঃ -
কোন্ বিষয়টিকে
স্মরণে রাখলে তোমাদের অবস্থা অবিচল - অটল হয়ে যাবে?
উত্তরঃ
পাস্ট ইজ
পাস্ট। বিগত বিষয়কে নিয়ে চিন্তা করতে নেই। এগিয়ে যেতে হয়। সদা একই দিকে যদি দেখতে
থাকো, তবে অবস্থা অবিচল-অটল হয়ে যাবে। তোমরা এখন কলিযুগের সীমিত সব কিছু ত্যাগ করে
দিয়েছো । এখন পিছন দিকে কেন দেখছো? তাতে এতটুকুও যেন বুদ্ধি না যায় - এটাই হলো
সূক্ষ্ম পড়াশোনা ।
ওম্ শান্তি ।
দিন বদলে যায়,
টাইম পাস হয়ে যায়। ভেবে দেখো, সত্যযুগ থেকে টাইম পার হতে হতে এখন এসে কলিযুগেরও
শেষ কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছো। এই সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর, কলিযুগের চিত্রও যেন মডেল।
সৃষ্টি তো অনেক বড়। তার মডেল রূপকে বাচ্চারা এখন জেনে গেছে। পূর্বে এটা জানা ছিল
না যে, এখন এই কলিযুগ সমাপ্ত হচ্ছে। এখন তোমরা জেনেছো । অতএব বাচ্চাদেরও বুদ্ধিতে
সত্যযুগ থেকে শুরু করে চক্র পরিক্রমা করে কলিযুগের অন্তিমে কিনারায় (তীরে) এসে
দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত। বাচ্চাদের এটা বোঝা উচিত যে, সময় টিক্ টিক্ করে অতিক্রান্ত হয়ে
যাচ্ছে। ড্রামা ক্রমাগত পরিক্রমণ করে এগিয়ে যাচ্ছে। ড্রামার তবে আর কতটা বাকি থাকতে
পারে? সামান্যই বাকি রয়েছে নিশ্চয়ই। আগে জানা ছিল না। এখন বাবা বুঝিয়ে দিয়েছেন
যে - কোণে এসে দাঁড়িয়েছে। এই দুনিয়া থেকে ওই দুনিয়াতে যাওয়ার এখন বাকি আর সামান্যই
সময়। এই জ্ঞানও এখনই প্রাপ্ত হয়েছে । আমরা সত্যযুগ থেকে শুরু করে চক্র পরিক্রমণ
করতে করতে এখন কলিযুগের অন্তিমে এসে পৌঁছেছি। এখন পুনরায় ফিরে যেতে হবে। আসার আর
যাওয়ার গেট হয়, তাই না ! এও তেমন। বাচ্চাদের এখন বুঝতে হবে - প্রায় তীরে বা তটে
এসে দাঁড়িয়েছি। এটা হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ, তাই না ! এখন আমরা কিনারায় উপস্থিত
হয়েছি। খুব অল্প সময় আর আছে। এখন এই পুরানো দুনিয়ার থেকে আসক্তি দূর করতে হবে।
এখন তো নতুন দুনিয়াতে যেতে হবে। বাবা এসব বাচ্চাদের সহজভাবেই সব বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
বুদ্ধিতে এ'সব ভালো ভাবে রাখা উচিত। সৃষ্টি চক্রকে বুদ্ধিতে ঘোরাতে হবে। এখন তোমরা
আর কলিযুগে নেই। তোমরা এখন সীমিত সব কিছুকে ত্যাগ করেছো, তাহলে তোমাদের কী ওই তরফকে
স্মরণ করা উচিত? যখন ছেড়েই এসেছো পুরানো দুনিয়াকে । আমরা এখন রয়েছি পুরুষোত্তম
সঙ্গমযুগে, তাহলে পিছন দিকে তাকাবোই বা কেন? বুদ্ধিযোগ বিকারী দুনিয়াতে কেন যুক্ত
রাখবো? এ হল খুব সূক্ষ্ম সব বিষয়। বাবা জানেন, কেউ কেউ তো এক টাকার মধ্যে এক আনাও
বোঝে না। শুনলো আর ভুলে গেলো। পিছনের দিকে তোমাদের তাকানো উচিত নয়। বুদ্ধি দিয়ে
কাজ করতে হবে। আমরা পার'কে ছেড়ে এসেছি - তাহলে আর পিছনেই বা দেখবো কেন? পাস্ট ইজ
পাস্ট। বাবা বলেন, বাবা কত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়কে বোঝান। তবুও বাচ্চাদের কাঁধ
পিছনের দিকে ফিরে থাকে কেন? বাবা বলেন, কাঁধ এই দিকে ঘুরিয়ে নাও। ওই পুরানো দুনিয়া
তোমার কোনো কাজের নয়। বাবা পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য এনে দেন, নতুন দুনিয়া
সামনে উপস্থিত, পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য। ভেবে দেখো - আমাদের এই রকম অবস্থা
তৈরী হয়েছে? বাবা বলেন, পাস্ট ইজ পাস্ট। বিগত ঘটনার কথা চিন্তাতেও আনবে না, পুরানো
দুনিয়াতে আর কোনো আশা রাখবে না। এখন তো একটাই আশা রাখতে হবে - আমরা চলেছি সুখধামে।
বুদ্ধিতে সুখধামই স্মরণে রাখতে হবে। পিছনে কেন ফিরে তাকাবে? কিন্তু অনেকেরই পিঠ
পিছনে ঘুরে যায়। তোমরা এখন রয়েছ পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে ।পুরানো দুনিয়ার থেকে নিজেকে
সরিয়ে নিয়েছ। এটা বুঝতে হবে, তাই না ! কোথাও দাঁড়িয়ে যাবে না । কোনো দিকেই তাকাবে
না। বিগতকে স্মরণ করবে না। বাবা বলছেন - এগিয়ে যেতে থাকো, পিছন ফিরে তাকাবে না। এক
দিকেই তাকিয়ে চলো, তবেই অবিচল, স্থির, অটল অবস্থা হতে পারে। পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখতে
থাকলে পুরানো দুনিয়ার আত্মীয় পরিজন সকলের কথা মনে আসতে থাকবে। সকলে নম্বর অনুসারে
না ! আজ দেখছো খুব ভালো চলছে, কাল পড়ে গেল, তো মন একেবারে এ'সব থেকে (হতাশ) হয়ে সরে
যাবে। এমন গ্রহের দশা লেগে যাবে যে, মুরলী শোনারও ইচ্ছা হবে না। ভেবে দেখো, এই রকম
হয় কিনা? বাবা বলেন, তোমরা এখন সঙ্গমে দাঁড়িয়ে আছো, তাই দিশা সামনের দিকেই রাখতে
হবে। সামনে হল নতুন দুনিয়া, তবেই খুশীর অনুভব হবে । এখন একেবারে সমীপে, কিনারায় (নৌকা
থেকে পারে নামার সময় যেমন আমরা নৌকার কিনারায় এসে দাঁড়াই) উপস্থিত হয়েছো। বলে না
- এখন তো আমার দেশের গাছপালা চোখে পড়ছে। আওয়াজ দাও দেখবে সাথে সাথে শুনতে পাবে।
তট অর্থাৎ একেবারে সামনে। তোমরা স্মরণ করবে আর দেবতারা হাজির হয়ে যাবে। আগে কী
থাড়াই আসতো? সূক্ষ্মলোক থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আসতো কী? এখন তো শ্বশুরবাড়ির আর
বাপেরবাড়ির সবাই গিয়ে মিলিত হয়। তবুও বাচ্চারা চলতে চলতে ভুলে যায়। বুদ্ধিযোগ
তখন পিছনের দিকে চলে যায়। বাবা বলেন, এটা হল তোমাদের সকলের অন্তিম জন্ম । তোমরা
পিছনে সরে এসো না। এখন পার হতে হবে। এই তরফ থেকে ওই তরফে যেতে হবে। মৃত্যুও কাছে
এগিয়ে আসতে থাকবে। বাকি তো কেবল পা' বাড়ানোর অপেক্ষা। নৌকা পারে এসে লাগলে সেই দিকে
পা বাড়াতে হয়, তাই না ! বাচ্চারা, তোমাদেরকে গিয়ে দাঁড়াতে হবে কিনারার দিকে।
তোমাদের বুদ্ধিতে আছে আত্মারা যায় তাদের সুইট হোমে। এটা স্মরণে রাখলে খুশী
তোমাদেরকে অচল অটল বানিয়ে দেবে। এই বিষয়েই বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। এ হল
বুদ্ধিরই বিষয়। আমরা আত্মারা এখন যাচ্ছি, নৌকা একেবারে পারের কাছাকাছি । আর বাকি
কেবল সামান্যই সময়। একেই বলা স্মরণের যাত্রা। বাচ্চারা এও ভুলে যায়। চার্ট লিখতেও
ভুলে যায়। তোমার হৃদয়ে হাত রেখে দেখো - বাবা যে বলেন নিজেকে এই রকম মনে করো যে,
আমরা নৌকার একেবারে কিনারায় (সত্যযুগ রূপী তটভূমিতে) নামার জন্য দাঁড়িয়ে আছি,
আমাদের অবস্থা কি এইরকম হয়েছে? বুদ্ধিতে এক বাবারই স্মরণ থাকবে। বাবা স্মরণের
যাত্রাকে নানান ভাবে শেখাচ্ছেন। এই স্মরণের যাত্রাতেই মজে থাকতে হবে। ব্যস্ এখন
আমাদেরকে যেতে হবে। এখানে সবই হল মিথ্যা সম্বন্ধ। সত্য হলো সত্যযুগের সম্বন্ধ।
নিজেকে দেখো আমি কোথায় দাঁড়িয়ে আছি? সত্যযুগ থেকে শুরু করে বুদ্ধিতে এই চক্রকে
স্মরণ করো। তোমরা হলে স্বদর্শন চক্রধারী, তাই না? সত্যযুগ থেকে শুরু করে চক্র
পরিক্রমা করে এখন কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছো। নৌকা তটের কাছেই হল, তাই না ! কেউ কেউ
তো নিজের সময়কে অনেক নষ্ট করে। বড়জোর ৫-১০ মিনিট স্মরণে থাকে হয়ত।
স্বদর্শন-চক্রধারী তো সারাদিন হওয়া উচিত। তেমন তো হয় না। বাবা বাচ্চাদেকে নানান
ভাবে বোঝান। সবই হল আত্মারই কথা। তোমাদের বুদ্ধিতে চক্র ঘুরতে থাকে। তোমাদের
বুদ্ধিতে এটা কেন স্থিত থাকে না? এখন আমরা কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছি। এই কিনারা
বুদ্ধিতে কেন স্মরণ থাকে না? যখন তোমরা জানো যে, আমরা পুরুষোত্তম হয়ে উঠছি, তাই
কিনারায় গিয়ে দাঁড়াও। উঁকুনের মতো (ধীরে ধীরে) এগিয়ে চলো। কেন তোমরা এই প্র্যাকটিস
করো না? চক্র কেন বুদ্ধিতে আসে না ? এটা তো স্বদর্শনচক্র, তাই না ! বাবা তো প্রথম
থেকে শুরু করে সমস্ত চক্রকে বোঝাতে থাকেন। তোমাদের বুদ্ধি পুরো চক্র পরিক্রমা করে
কিনারায় এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত। আর কোনো রকমের বাইরের পরিবেশের ঝামেলা যাতে না
থাকে। দিন দিন বাচ্চারা, তোমাদেরকে সাইলেন্সেই যেতে হবে। টাইম অযথা নষ্ট করবে না।
পুরানো দুনিয়াকে ছেড়ে নতুন সম্বন্ধে তোমাদের বুদ্ধির যোগকে নিযুক্ত করো। যোগ যুক্ত
যদি না হও তবে পাপ কীভাবে কাটবে? তোমরা জানো যে, এই দুনিয়াকেই শেষ হতে হবে। এর মডেল
কতো ছোট। পাঁচ হাজার বছরের দুনিয়া। আজমের এ স্বর্গের মডেল আছে, কিন্তু স্বর্গের কথা
স্মরণে আসবে কী? স্বর্গের বিষয়ে তারা কী জানবে? মানুষ তো মনে করে স্বর্গ ৪০ হাজার
বছর পরে আসবে। বাচ্চারা, বাবা তোমাদেরকে বসে বোঝাচ্ছেন - এই দুনিয়াতে কাজকর্ম করো
কিন্তু বুদ্ধিতে স্মরণে রাখো, এই দুনিয়া তো শেষ হয়ে যাবে। এখন ফিরে যেতে হবে, আমরা
এখন একেবারে শেষে এসে দাঁড়িয়েছি। একটু একটু করে উঁকুনের মতো এগিয়ে চলেছে। আমাদের
লক্ষ্য কতো বড়ো । বাবা তো লক্ষ্যস্থলকে জানেন, তাই না ! বাবার সাথে দাদাও একসাথে
রয়েছেন। একজন বোঝালে কি ইনি বোঝাতে পারেন না? ইনিও তো শোনেন, তাই না ! ইনি কি
এইরকম এইরকম বিচার সাগর মন্থন করেন না? বাবা তোমাদেরকে বিচার সাগর মন্থন করবার
পয়েন্টস শোনাতে থাকেন। এমন তো নয় যে ইনি (ব্রহ্মা বাবা) অনেক দূরে পিছনে রয়েছেন।
আরে ইনি তো একেবারে আমার পিছনেই লেজে মতোই রয়েছেন, বেশী দূরে কীভাবে থাকবেন ! এই
সকল গূঢ় গূঢ় বিষয়কে ধারণ করতে হবে। গাফিলতি করা ছাড়তে হবে। বাবার কাছে ২ - ২ বছর
পর আসে, তাতে কী স্মরণে থাকবে যে আমরা একেবারে কাছে কিনারায় রয়েছি এখন? এখন যেতে
হবে। অবস্থা যদি এই রকম হয়ে যায়, তবে আর বাকি কী চাই? বাবা তো এটাও বুঝিয়েছেন যে
- দ্বি-রাজমুকুট.... এ হলো কেবল নাম, বাকি লাইটের মুকুট বলে সেখানে কিছু থাকে না। এ
তো হল পবিত্রতার চিহ্ন । সকল ধর্ম স্থাপকদের চিত্রেই লাইট অবশ্যই দেখিয়ে থাকে।
কেননা তারা হলেন ভাইসলেস সতোপ্রধান, তারপর রজো, তমো'তে আসে। বাচ্চারা, তোমরা নলেজ
পেয়ে থাকো, তাতে মজে থাকা চাই । যদিও আছো এই দুনিয়াতেই, কিন্তু তোমার বুদ্ধিযোগ
যেন ওখানে যুক্ত হয়ে থাকে। এখানের প্রতি দায়িত্ব তো তো তোমাকে পালন করতে হবে। এই
কুলের যদি হয়, তবে বেরিয়ে আসবে। স্যাপলিং (চারা রোপন) লাগছে। আদি সনাতন দেবী
দেবতার যারা হবে, তারা অবশ্যই আগে পরে আসবে। পরে যারা আসবে তারা পুরানোদের, থেকেও
অনেক এগিয়ে যাবে। শেষ সময় পর্যন্ত এই রকম হতে থাকবে। তারা পুরানোদের থেকেও জোর পায়ে
এগিয়ে যাবে। সমস্ত পরীক্ষাটাই হল স্মরণের যাত্রা। যদি দেরিতে আসে, কিন্তু স্মরণের
যাত্রাতে যদি নিযুক্ত হয়ে যায়, সব বৈষয়িক কাজকর্ম ছেড়ে স্মরণের যাত্রাতে বসে পড়ে,
খাবার তো খেতেই হবে। ভালো ভাবে যদি স্মরণে থাকে, তবে এই খুশীর মতো পুষ্টিকর পথ্য আর
নেই। এই নেশাতে পড়ে যাবে - এখন ঘরে ফিরতে হবে। ২১ জন্মের রাজ্য ভাগ্য প্রাপ্ত হয়।
লটারি লেগে গেলে খুখীর পারদ চড়ে যায় না ! তোমাদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। একেই
অন্তিম অমূল্য জীবন বলা হয়ে থাকে। স্মরণের যাত্রাতে অনেক মজা। হনুমানও পুরুষার্থ
করতে করতে স্থিত (স্থেরিয়ম) হয়ে গিয়েছিল না ! খড়ের গাদায় আগুন লেগেছিল, রাবণের
রাজ্য পুড়ে গেল। এটাকে একটা গল্প বানিয়ে দিয়েছে। বাবা সঠিক জিনিসটিই বসে বোঝান।
রাবণ রাজ্য বিনষ্ট হয়ে যাবে। স্থির বুদ্ধি একেই বলা হয় । ব্যস্ এখন আমাদের নৌকা
পারে পৌঁছানোর কিনারায়। আমরা এখন যাচ্ছি। এই ভাবে স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করো,
তাহলে খুশীর পারদ চড়তে থাকবে। আয়ুও যোগবলের দ্বারাই বৃদ্ধি পায়। তোমরা এখন দৈবী
গুণ ধারণ করে থাকো, তারপর সেটা আধা কল্প ধরে চলে। এই এক জন্মে তোমরা এত পুরুষার্থ
করো যে, তোমরা এরপর (সত্যযুগে) এই লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়ে থাকো। তাহলে কতখানি
পুরুষার্থ করা উচিত ! এতে গাফিলতি বা একেবারেই টাইম ওয়েস্ট করা উচিত নয়। যে করবে
সে পাবে। বাবা শিক্ষা দিতে থাকেন। তোমরা বুঝতে পারো যে - কল্প কল্প আমরা বিশ্বের
মালিক হই। এত কম সময়ের মধ্যেও আমরা কামাল করে দিই। সমস্ত দুনিয়াকে আমরা চেঞ্জ করে
দিই। বাবার জন্য তো কোনো বড় ব্যাপার নয়। প্রতি কল্প কল্প তিনি করে থাকেন। বাবা
বাচ্চাদেরকে বোঝান - চলতে ফিরতে, খাবার দাবার খাওয়ার সময়ও তোমার বুদ্ধি যোগ যেন
বাবার সাথে রাখো। এই গুপ্ত কথা বাবাই কবল বসে বাচ্চাদেরকে বোঝান। নিজের অবস্থাকে
খুব ভালো ভাবে জমাতে থাকো। নাহলে উচ্চ পদ থেকে বঞ্চিত থেকে যাবে। তোমরা বাচ্চারা
নম্বর অনুক্রমে পুরুষার্থ অনুসারে পরিশ্রম করে থাকো। তোমরা বুঝেছো যে, আমরা তো এখন
কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। তাহলে পিছনের দিকে কেন দেখবো? সামনের দিকেই পা এগিয়ে
যাবে। এতে অন্তর্মুখিতার অনেক বেশী প্রয়োজন। সেইজন্য কচ্ছপেরও উদাহরণ রয়েছে। এই সব
উদাহরণ গুলি সবই হল তোমাদের জন্য। সন্ন্যাসীরা তো হল হঠযোগী। তারা তো রাজযোগ শেখাতে
পারবে না। ওরা যদি শোনে ভাববে আমাদের ইনসাল্ট করছে। সেইএ'সব অত্যন্ত যুক্তির সাথে
লিখতে হবে। বাবা ছাড়া রাজযোগ কেউই শেখাতে পারে না। তোমরা ইন-ডিরেক্টলি বলবে যিতে
তারা অপমানিত বোধ না করতে পারে। যুক্তির সাথে চলতে হয়, তাই না ! যাতে সাপও মরে
আবার লাঠিও না ভাঙে। আত্মীয় কুটুম পরিবারের সকলের সাথে প্রীতি রাখো, কিন্তু বুদ্ধি
যোগ থাকবে বাবার সাথে। তোমরা জানো যে, আমরা এখন এক এরই মতে রয়েছি। এ হল দেবতা
হওয়ার মত। একেই বলা হয় অদ্বৈত মত। বাচ্চাদেরকে দেবতা হতে হবে । তোমরা কত বার হয়েছো?
অনেক বার। এখন তোমরা সঙ্গমযুগে দাঁড়িয়ে রয়েছো। এটা হল তোমাদের অন্তিম জন্ম ।এখন
তো যেতে হবে। পিছনের দিকে কী দেখবে? দেখেও তোমরা নিজেদের অটল ভাবে স্থিত রয়েছো।
লক্ষ্যকে ভুলবেন না। তোমরাই হলে মহাবীর যে মায়ার উপরে বিজয় লাভ করো। এখন তোমরা
বুঝতে পারো - হার এবং জিতের এই চক্র ঘুরতেই থাকে। কতখানি ওয়ান্ডারফুল বাবার এই
জ্ঞান ! তোমাদের জানা ছিল কি যে, নিজেকে বিন্দু ভাবতে হবে। এত ছোট বিন্দুতে সমস্ত
পার্ট ভরা রয়েছে যা কিনা চক্র পরিক্রমা করতে থাকে ! খুবই ওয়ান্ডারফুল। ওয়ান্ডার
বলেই এ নিয়ে আর কোনো কথা হবে না। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
পিছন ফিরে দেখবে না। কোনো কারণেই থেমে যাবে না। এক বাবাকেই দেখো আর নিজের অবস্থাকে
একরস রাখো।
২ ) বুদ্ধিতে স্মরণ
রাখতে হবে যে, এখন আমরা কিনারায় দাঁড়িয়ে। ঘরে ফিরতে হবে। নিজের অবস্থাকে জমানোর
পরিশ্রম করতে হবে।
বরদান:-
সকলের
হৃদয়ের ভালোবাসা প্রাপ্তকারী ডিট্যাচ, প্রিয়, নিঃসংকল্প ভব
যেসব বাচ্চাদের মধ্যে
ডিট্যাচ ও প্রিয় থাকার গুণ বা নিঃসংকল্প থাকার বিশেষত্ব রয়েছে অর্থাৎ, যাদের এই
বরদান প্রাপ্ত হয়েছে, তারা সকলের প্রিয় হয়ে যায় । কেননা ডিট্যাচ হওয়ার ফলে সকলের
হৃদয়ের ভালোবাসা স্বাভাবিকভাবেই প্রাপ্ত হয়ে যায়। তারা নিজেদের শক্তিশালী
নিঃসংকল্প স্থিতি বা শ্রেষ্ঠ কর্মের দ্বারা বহু মানুষের সেবার নিমিত্ত হয়। সেই
কারণে তারা নিজেরাও সন্তুষ্ট থাকে এবং অন্যদেরও কল্যাণ করে থাকে । সমস্ত কাজে তারা
স্বভাবতঃই সফলতা প্রাপ্ত করে থাকে।
স্লোগান:-
এক
“বাবা” শব্দই হলো সকল খাজানার চাবি - এই চাবিটিকে সর্বদা সযত্নে রাখো।
অব্যক্ত ইশারা :-
অশরীরী ও বিদেহী স্থিতির অভ্যাস বাড়াও
এক সেকেন্ডে এই দেহ
রূপী বস্ত্রের থেকে আলাদা হওয়া তখনই সম্ভব, যখন কোনো প্রকারের সংস্কারের টাইটনেস
থাকবে না । যেমন, কোনো জিনিস যদি একেবারে সেঁটে আটকে থাকে, তাহলে সেটাকে আলাদা করা
কঠিন হয়ে যায়। হালকা হলে সহজেই আলাদা হয়ে যায়। তেমনি যদি নিজের সংস্কারগুলিতে
একটুও ইজি ভাব না থাকে, তবে অশরীরী ভাবের অনুভব করতে পারবে না । সেইজন্য সবসময়
অ্যালার্ট থাকো।