07.06.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা এখন পূজারী থেকে পূজ্য হচ্ছো, পূজ্য বাবা এসেছেন তোমাদেরকে নিজ সম পূজ্য বানাতে"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, তোমাদের ভিতরে কোন্ দৃঢ় বিশ্বাস আছে?

উত্তরঃ  
তোমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, প্রাণ থাকতে তোমরা বাবার কাছ থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নিয়েই ছাড়বে । বাবার স্মরণে এই পুরানো শরীর ত্যাগ করে বাবার সাথে যাবে । বাবা আমাদের ঘরে যাওয়ার সহজ পথ বলে দিচ্ছেন ।

গীতঃ-
ওম্ নমঃ শিবায়....

ওম্ শান্তি ।
ওম্ শান্তি । ওম্ শান্তি তো অনেক মানুষই বলে । বাচ্চারাও বলে যে, ওম্ শান্তি । অন্তরে যে আত্মা আছে, সেও বলে যে, ওম্ শান্তি, কিন্তু আত্মারা তো যথার্থ রীতিতে নিজেকে জানে না, না তারা বাবাকে জানে । যদিও তারা ডাকে, কিন্তু বাবা বলেন, আমি যা বা যেমন, আমাকে যথার্থ রীতিতে কেউই জানে না । এই ব্রহ্মাও বলেন যে, আমি নিজেকে যথার্থ রীতিতে জানতাম না যে, আমি কে, কোথা থেকে এসেছি । আত্মা তো পুরুষ, তাই না । সেও তো বাচ্চা । বাবা হলেন পরমাত্মা । তাই আত্মারা নিজেদের মধ্যে ভাই - ভাই হয়ে গেলো । এরপর শরীরে আসার কারণে কাউকে মেল আবার কাউকে ফিমেল বলা হয়, কিন্তু যথার্থ রূপে আত্মা কেমন, এ কোনো মনুষ্য মাত্রই জানে না । এখন বাচ্চারা, তোমরা এই জ্ঞান পাও, যা তোমরা সাথে করে নিয়ে যাও । ওখানে কেবল এই জ্ঞানই থাকে যে, আমরা আত্মা, আমরা এই পুরানো শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করি । আত্মার পরিচিতি সঙ্গে করেই নিয়ে যায় । পূর্বে তো এই আত্মাকেই জানতো না । আমরা কবে থেকে পার্ট প্লে করছি, কিছুই জানতো না । এখনো পর্যন্ত কেউই নিজেকে সম্পূর্ণ চিনতে পারেনি । স্থূল ভাবে জানে আর স্থূল লিঙ্গ রূপকেই স্মরণ করে । আমি আত্মা হলাম বিন্দু । বাবাও বিন্দু, এইভাবে স্মরণ করে এমন খুব কমই আছে । নম্বরের ক্রমানুসারেই তো বুদ্ধি হয়, তাই না । কেউ কেউ তো খুব ভালোভাবে বুঝে অন্যদেরও বোঝাতে লেগে যায় । তোমরা বোঝাও যে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে । তিনিই হলেন পতিত পাবন । প্রথমে তো মানুষ আত্মাকেই চেনে না, তাই তাদের তাও বোঝাতে হবে । নিজেকে যখন আত্মা নিশ্চিত করবে, তখন বাবাকেও জানতে পারবে । মানুষ আত্মাকেই চেনে না, তাই বাবাকেও সম্পূর্ণ জানতে পারে না । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে, আমরা আত্মারা হলাম বিন্দু এতো ছোটো আত্মার মধ্যে ৮৪ জন্মের পার্ট নির্ধারিত রয়েছে, এও তোমাদেরই বোঝাতে হবে । না হলে শুধু বলে দেবে, এই জ্ঞান খুব ভালো । ভগবানের সঙ্গে মিলনের পথ খুব ভালো, এমন বলে দেয়, কিন্তু আমি কে, বাবা কে, এ কথা জানে না । কেবল ভালো - ভালো বলে দেয় । কেউ তো আবার এমনও বলে দেয় যে, এরা তো নাস্তিক বানিয়ে দেয় । তোমরা জানো যে - জ্ঞানের বোধ কারোর মধ্যেই নেই । তোমরা বোঝাও যে, আমরা এখন পূজ্য হচ্ছি । আমরা কারোর পুজো করি না, কেননা যিনি সকলের পূজ্য, উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবান, আমরা তাঁর সন্তান । তিনিই হলেন পূজ্য পিতাশ্রী । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে - পিতাশ্রী আমাদের আপন করে নিয়েছেন আর পড়াচ্ছেন । সবথেকে উঁচুর থেকেও উঁচু পূজ্য হলেন একজনই, তিনি ছাড়া আর কেউই পূজ্য বানাতে পারে না । পূজারী অবশ্যই পূজারীই বানাবেন । দুনিয়াতে সকলেই হলেন পূজারী । তোমরা এখন পূজ্যকে পেয়েছো, যিনি তোমাদের নিজের সমান তৈরী করছেন । তোমাদের পুজো ছাড়িয়ে দিয়েছেন । তিনি তোমাদের সাথে করে নিয়ে যান । এ হলো ছিঃ - ছিঃ দুনিয়া । এ হলোই মৃত্যুলোক । ভক্তি তখনই শুরু হয়, যখন রাবণ রাজ্য হয় । আমরা পূজ্য থেকে পূজারী হয়ে যাই । তারপর পূজারী থেকে পূজ্য বানানোর জন্য বাবাকেই আসতে হয় । এখন তোমরা পূজ্য দেবতা তৈরী হচ্ছো । আত্মা শরীরের দ্বারা অভিনয় করে । বাবা এখন আত্মাকে পবিত্র করার জন্য আমাদের পূজ্য দেবতা বানাচ্ছেন । বাচ্চারা, তাই তোমাদের এই যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে - বাবাকে স্মরণ করলে তোমরা পূজারী থেকে পূজ্য হয়ে যাবে, কেননা এই বাবা হলেন সর্ব পূজ্য । যারা অর্ধেক কল্প পূজারী হয়, তারাই আবার অর্ধেক কল্প পূজ্য হয় । এও এই ড্রামাতে নির্ধারিত আছে । এই ড্রামার আদি - মধ্য এবং অন্তকে কেউই জানে না । বাচ্চারা, এখন তোমরা বাবার কাছে জানতে পারো আর তোমরা অন্যদেরও বোঝাও । প্রথম প্রথম মুখ্য এই বিষয় বোঝাতে হবে যে - নিজেকে আত্মা বিন্দু মনে করো । আত্মার বাবা হলেন নিরাকার, সেই নলেজফুল বাবা এসেই পড়ান । তিনি এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তের রহস্য বুঝিয়ে বলেন । বাবা একবারই আসেন । তাঁকে একবারই জানতে পারা যায় । তিনি একবার এই সঙ্গমযুগেই আসেন । তিনি এসে এই পুরানো পতিত দুনিয়াকে পবিত্র বানান । বাবা এখন এই ড্রামার নিয়ম অনুসারে এসেছেন । এ কোনো নতুন কথা নয় । তিনি বলেন, আমি কল্প - কল্প এইভাবেই আসি । এক সেকেণ্ডও আগে - পিছে হতে পারে না । বাচ্চারা, তোমরা এই কথা মনে স্বীকার করে নিয়েছো যে, বরাবর বাবা আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের প্রকৃত জ্ঞান দিচ্ছেন, আবার পরের কল্পেও বাবাকেই আসতে হবে । বাবার কাছে আমরা যে এই সময়কে জানতে পেরেছি, তা আবার পরের কল্পে জানবো । তোমরা এও জানো যে, এখন পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হয়ে যাবে, তারপর তোমরা সত্যযুগে এসে আবার অভিনয় করবে । তোমরা সত্যযুগী স্বর্গবাসী হবে । এ কথা তো বুদ্ধিতে স্মরণে আছে, তাই না । এই স্মরণ থাকলে তোমাদের খুশীও থাকবে । এ তো হলো তোমাদের স্টুডেন্ট লাইফ, তাই না । আমরা এখন স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য পড়ছি । যতক্ষণ না এই স্টাডি সম্পূর্ণ হচ্ছে, তোমাদের এই খুশী স্থায়ী থাকা চাই । বাবা বোঝান যে, তোমাদের পড়া তখনই শেষ হবে, যখন বিনাশের জন্য সামগ্রী তৈরী হবে । তখন তোমরা বুঝে যাবে যে, আগুন অবশ্যই লাগবে । তৈরী তো হতেই থাকে, তাই না । একে অপরের প্রতি কতো উত্তেজিত হতে থাকে । চারিদিকে ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের সেনারা আছে । সবাই লড়াই করার জন্য তৈরী হতেই থাকে । কেউ না কেউ এমন আক্রমণ করে যে লড়াই লেগেই যায় । পূর্ব কল্পের মতো বিনাশ তো হতেই হবে । বাচ্চারা, তোমরা এই সব দেখবে । আগেও বাচ্চারা দেখেছিলো যে, একটা আগুনের ফুলকি থেকে কতো লড়াই লেগেছিলো । একজন অন্যজনকে ভয় দেখাতে থাকে যে, এমন করো, না হলে আমাদের এই বম্ব-এর প্রয়োগ করতে হবে । মৃত্যু সামনে এসে যায়, তখন বম্ব তৈরী না করে থাকতে পারে না । আগেও যখন লড়াই লেগেছিলো, তখন এই বোম্বের প্রয়োগ করেছিলো । এ তো ভবিতব্য ছিলো, তাই না । এখন তো হাজার - হাজার বম্ব্স ।

বাচ্চারা, তোমাদের এই কথা অবশ্যই বোঝাতে হবে যে, এখন বাবা এসেছেন, সকলকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে । সকলেই ডাকছে - হে পতিত পাবন, এসো । এই ছিঃ ছিঃ দুনিয়া থেকে আমাদের পবিত্র দুনিয়াতে নিয়ে চলো । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, পবিত্র দুনিয়া হলো দুটি - মুক্তি আর জীবনমুক্তি । সকলের আত্মা পবিত্র হয়ে মুক্তিধামে চলে যাবে । এই দুঃখধাম বিনাশ হয়ে যাবে, যাকে মৃত্যুলোক বলা হয় । প্রথমে অমরলোক ছিলো, তারপর চক্র ঘুরে তোমরা এখন মৃত্যুলোকে এসেছো । আবার অমরলোকের স্থাপনা হয় । ওখানে কোনো অকালমৃত্যু হয় না, তাই ওই দুনিয়াকে অমরলোক বলা হয় । শাস্ত্রে যদিও এই অক্ষর আছে, তবুও যথার্থ রীতিতে কেউই বুঝতে পারে না । এও তোমরা জানো যে - বাবা এখন এসেছেন । মৃত্যুলোকের তো অবশ্যই বিনাশ হতে হবে । এ হানড্রেট পার্সেন্ট সার্টেন (নিশ্চিত) । বাবা এখন বোঝাচ্ছেন যে, নিজেদের আত্মাকে যোগবলের দ্বারা পবিত্র বানাও । তোমরা যদি আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে, কিন্তু এও বাচ্চারা স্মরণে রাখতে পারে না । বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার বা রাজত্ব নিতে হলে পরিশ্রম তো চাই, তাই না । যতখানি সম্ভব স্মরণে থাকতে হবে । নিজেকে দেখতে হবে যে - কতটা সময় আমরা স্মরণে থাকি, আর কতোজনকে স্মরণ করাই? 'মন্মনাভব' একে মন্ত্রও বলা যাবে না, এ হলো বাবার স্মরণ । দেহ বোধকে ত্যাগ করতে হবে । তুমি হলে আত্মা, আর এ হলো তোমার শরীর রূপী রথ, এর দ্বারা তুমি কতো কাজ করো । সত্যযুগে তোমরা দেবী দেবতা হয়ে কিভাবে রাজত্ব করো, তোমরা এই অনুভবও করতে পারবে । ওই সময় তো তোমরা প্রত্যক্ষভাবে আত্ম - অভিমানী থাকো । আত্মা বলবে যে, আমার এই শরীর বৃদ্ধ হয়েছে, এখন এই শরীর ত্যাগ করে নতুন শরীর ধারণ করবো । দুঃখের কোনো কথাই নেই । এখানে তো শরীর ত্যাগ যাতে না হয়, তারজন্য কতো ডাক্তারের ওষুধ ইত্যাদি নেওয়ার পরিশ্রম করে । বাচ্চারা, তোমাদের অসুস্থতা ইত্যাদিতেও এই পুরানো শরীরে বিরক্ত হওয়া উচিত নয়, কেননা তোমরা বুঝতে পারো, এই শরীরেই বেঁচে থেকে বাবার কাছ থেকে আমাদের উত্তরাধিকার পেতে হবে । শিব বাবার স্মরনেই তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে । এই হলো পরিশ্রম, কিন্তু প্রথমে তো আত্মাকে জানতে হবে । তোমাদের মুখ্য হলো স্মরণের যাত্রা । স্মরণে থাকতে থাকতে তারপর আমরা চলে যাবো মূল বতন । আমরা যেখানের নিবাসী, সেই হলো শান্তিধাম । তোমরাই শান্তিধাম আর সুখধামকে জানো আর তা স্মরণ করো । আর কেউই তা জানে না । যারা পূর্ব কল্পে বাবার উত্তরাধিকার নিয়েছিলো, তারাই নেবে ।

মুখ্য হলো স্মরণের যাত্রা । ভক্তিমার্গের যাত্রা সব শেষ হয়ে যাবে । ভক্তি মার্গই শেষ হয়ে যাবে । ভক্তি মার্গ কি? যখন জ্ঞান হবে তখন বুঝতে পারবে । ওরা মনে করে ভক্তির দ্বারা ভগবানকে পাওয়া যাবে । ভক্তির ফল কি দেবে? কিছুই জানে না । বাচ্চারা, তোমরা এখন বুঝতে পারো যে, বাবা বাচ্চাদের অবশ্যই স্বর্গের বাদশাহীর উত্তরাধিকার দেন । সবাইকে তিনি উত্তরাধিকার দিয়েছিলেন, যথা রাজা - রানী তথা প্রজা সকলেই স্বর্গবাসী ছিলো । বাবা বলেন যে, পাঁচ হাজার বছর পূর্বে আমি তোমাদের স্বর্গবাসী বানিয়েছিলাম । এখন আবারও তোমাদের বানাচ্ছি । এরপর তোমরা এভাবে ৮৪ জন্ম নেবে । এইকথা বুদ্ধিতে স্মরণ রাখা চাই, ভুলে যাওয়া উচিত নয় । যে জ্ঞান এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তের জ্ঞাতা বাবার কাছে আছে, সেই জ্ঞানই বাচ্চাদের বুদ্ধিতে ঝরে পড়ে । আমরা কিভাবে ৮৪ জন্মগ্রহণ করি, এখন আবার বাবার থেকে উত্তরাধিকার নিচ্ছি, অনেকবার বাবার থেকে উত্তরাধিকার নিয়েছি, বাবা বলেন যে, যেভাবে তোমরা নিয়েছিলে, ঠিক তেমনভাবে আবার নাও । বাবা তো সবাইকে পড়াতে থাকেন । দৈবী গুণ ধারণ করার জন্যও বাবা সাবধান করতে থাকেন । নিজেকে যাচাই করার জন্য সাক্ষী হয়ে দেখা উচিত যে, আমরা কতখানি পুরুষার্থ করছি । কেউ কেউ মনে করে আমরা খুব ভালো পুরুষার্থ করছি । আমরা প্রদর্শনী ইত্যাদির প্রবন্ধ করতে থাকি যাতে সবাই জানতে পারে যে, ভগবান বাবা এসেছেন । বেচারা মানুষ ঘোর অন্ধকারে ঘুমিয়ে আছে । জ্ঞানের খবর তো কেউই জানে না, তাই অবশ্যই ভক্তিকেই উঁচু মনে করবে । এর আগে তোমাদের মধ্যেও কি জ্ঞান ছিলো কি? তোমরা এখন জানতে পেরেছো যে জ্ঞানের সাগর হলেন বাবাই, তিনিই ভক্তির ফল দেন, যে বেশী ভক্তি করেছে, সেই বেশী ফল পাবে । সে খুব ভালোভাবে এই ঈশ্বরীয় পাঠ গ্রহণ করে উঁচু পদ প্রাপ্তির জন্য । এ কতো মিষ্টি - মিষ্টি কথা । বৃদ্ধাদের জন্যও খুব সহজ করে বোঝানো হয় । তোমরা নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । উচ্চ থেকেও উচ্ হলেন ভগবান শিব । শিব পরমাত্মায়ে নমঃ - এই কথা বলা হয়, তিনি বলেন মামেকম্ স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । ব্যস । তিনি আর কোনো কষ্ট দেন না । ভবিষ্যতে মানুষ শিব বাবাকেই স্মরণ করতে লেগে যাবে । উত্তরাধিকার তো নিতেই হবে, প্রাণ থাকতে বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার নিয়েই ছাড়বে । শিব বাবার স্মরণে যদি শরীরও ত্যাগ করে তাহলে সেই সংস্কার নিয়ে যায় । স্বর্গে তো অবশ্যই আসবে, যত যোগ, ততোই ফলপ্রাপ্তি হবে । মূল কথা হলো - চলতে - ফিরতে যতখানি সম্ভব স্মরণে থাকতে হবে । নিজের মাথাকে ভার মুক্ত করতে হবে, কেবল স্মরণ করা চাই, বাবা আর কোনো পরিশ্রম করান না । তিনি জানেন যে, অর্ধেক কল্প বাচ্চারা অনেক কষ্ট করেছে, তাই আমি এখন এসেছি, তোমাদের উত্তরাধিকার নেওয়ার সহজ পথ বলে দিতে । তোমরা কেবল বাবাকেই স্মরণ করো । যদিও তোমরা স্মরণ আগেও করতে, কিন্তু কোনো জ্ঞান ছিলো না, বাবা এখন এই জ্ঞান দিয়েছেন যে, এই রীতিতে আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । যদিও শিবের ভক্তি তো দুনিয়াতে অনেকেই করে, অনেকেই স্মরণ করে কিন্তু পরিচয় কেউ জানে না । এই সময় বাবা এসে নিজেই পরিচয় দেন যে, তোমরা আমাকে স্মরণ করো । তোমরা এখন জানো যে, আমরা খুব ভালোভাবে জানি । তোমরা বলবে যে, আমরা বাপদাদার কাছে যাই । বাপদাদা এই ভাগীরথ (ভাগ্যশালী রথ ) নিয়েছেন, ভাগীরথও তো বিখ্যাত, এনার দ্বারা তিনি বসে জ্ঞান শোনান । এও ড্রামাতে লিপিবদ্ধ আছে । তিনি কল্প - কল্প এই ভাগ্যশালী রথে আসেন । তোমরা জানো যে, ইনি হলেন তিনি, যাকে শ্যাম সুন্দর বলা হয় । এও তোমরাই বোঝো । মানুষ আবার অর্জুনের নাম রেখে দিয়েছে । বাবা এখন যথার্থ ভাবে বোঝান - ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু আবার বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা কিভাবে হয় । বাচ্চারা এখন বুঝতে পেরেছে যে, আমরা হলাম ব্রহ্মাপুরীর, তারপর বিষ্ণুপুরীর হবো । বিষ্ণুপুরী থেকে ব্রহ্মাপুরীতে আসতে ৮৪ জন্ম সময় লাগে । এও তোমাদের অনেকবার বোঝানো হয়েছে, যা তোমরা আবার শুনছো । আত্মাকে এখন বাবা বলেন যে, তোমরা মামেকম্ স্মরণ করো তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে, তাই তোমাদের খুশীও হয় । এই এক অন্তিম জন্ম পবিত্র হলে আমরা পবিত্র দুনিয়ার মালিক হতে পারবো । তাহলে আমরা কেন না পবিত্র হই । আমরা এক বাবার সন্তান ব্রহ্মাকুমার আর ব্রহ্মাকুমারী, তবুও এই শরীরের বৃত্তি পরিবর্তন হতে সময় লাগে । ধীরে ধীরে পরের দিকে তোমাদের কর্মাতীত অবস্থা হবে । এই সময় কারোরই কর্মাতীত অবস্থা হওয়া অসম্ভব । কর্মাতীত অবস্থা হয়ে গেলে তখন তো এই শরীরও থাকবে না, একে ত্যাগ করতে হবে । লড়াই লেগে যাবে, তখন এক বাবার স্মরণই যেন থাকে, এতেই পরিশ্রম । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সাক্ষী হয়ে নিজেকে দেখতে হবে যে, আমরা কতোখানি পুরুষার্থ করি? চলতে - ফিরতে, কর্ম করতে করতে কতো সময় বাবার স্মরণে থাকি?

২ ) এই শরীরের প্রতি কখনোই বিরক্ত হবে না । এই শরীরে থেকেই বাবার থেকে উত্তরাধিকার পেতে হবে । স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য এই জীবনে এই সম্পূর্ণ ঈশ্বরীয় পড়াশোনা করতে হবে ।

বরদান:-
ত্রিকালদর্শী আর সাক্ষীদ্রষ্টা হয়ে সকল কর্ম করে বন্ধনমুক্ত স্থিতির অনুভবের দ্বারা দৃষ্টান্ত রূপ ভব

যদি ত্রিকালদর্শী স্টেজের উপর স্থিত থেকে, কর্মের আদি মধ্য অন্তকে জেনে কর্ম করতে থাকো তাহলে কোনও কর্ম বিকর্ম হতে পারবে না, সদা সুকর্মই হবে। এইরকমই সাক্ষীদ্রষ্টা হয়ে কর্ম করলে কোনও কর্মের বন্ধনে কর্মবন্ধনী আত্মা হবে না। কর্মের ফল শ্রেষ্ঠ হওয়ার কারণে কর্ম সম্বন্ধে আসবে, বন্ধনে নয়। কর্ম করার সময় পৃথক এবং প্রিয় থাকবে তাহলে অনেক আত্মাদের সামনে দৃষ্টান্ত রূপ অর্থাৎ এক্জাম্পেল হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
যারা মন থেকে সদা সন্তুষ্ট থাকে, তারাই ডবল লাইট হয়।

অব্যক্ত ঈশারা :- আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো, অন্তর্মুখী হও

যেকোনও সমর্থ সংকল্প আত্মিক শক্তি অর্থাৎ এনার্জি জমা করে, সময়ও সফল করে। ব্যর্থ সংকল্প এনার্জি আর সময়কে ব্যর্থ নষ্ট করে এইজন্য এখন ব্যর্থ সংকল্পের রচনা বন্ধ করো। এই রচনাই আত্মা রচয়িতাকে অশান্ত করে তোলে সেইজন্য এই শানে (মর্যাদা /নেশায়) থাকো যে আমি আত্মা হলাম মাস্টার সর্বশক্তিমান, সমর্থ আত্মা, তাহলে কখনও অশান্ত হবে না আর অনেকের মানসিক অশান্তিরও সমাপ্তকারী হয়ে যাবে।