07.11.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
শিববাবা এসেছেন তোমাদের সব ভান্ডার ভরপুর করতে, বলাও হয়ে থাকে - ভান্ডারা ভরপুর, তো
কাল কন্টক দূর"
প্রশ্নঃ -
জ্ঞানবান
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে কোন্ একটি বিষয়ে নিশ্চয় সুদৃঢ়?
উত্তরঃ
তাদের এই
নিশ্চয় সুদৃঢ় হবে যে, আমাদের যে পার্ট আছে সেটা কখনো ঘষে যায় না বা মুছে যায় না।
আমি অর্থাৎ এই আত্মাতে ৮৪ জন্মের অবিনাশী পার্ট নির্ধারিত হয়ে রয়েছে, এই জ্ঞানই
বুদ্ধিতে থাকলে তবে জ্ঞানবান হবে। না হলে সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধি থেকে উড়ে যাবে।
ওম্ শান্তি ।
বাবা এসে আত্মা
রূপী বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে কি বলছেন? কি সেবা করছেন? এই সময় বাবা এই আধ্যাত্মিক পাঠ
পড়ানোর সেবা করেন। তোমরা এটাও জানো যে, এখানে বাবারও পার্ট রয়েছে, টিচারের পার্টও
রয়েছে আর গুরুর পার্টও রয়েছে । এই তিনটি পার্ট তিনি খুব সুন্দর ভাবেই পালন করছেন।
তোমরা জানো যে, তিনি হলেন বাবা, সদ্গতি প্রদানকারী গুরুও এবং সকলেরই। আবালবৃদ্ধবনিতা
সকলের জন্যই তিনি সুপ্রিম বাবা, সুপ্রিম টিচার। তিনি অসীম জগতের শিক্ষা প্রদান করেন
। তোমরা কন্ফারেন্সেও বোঝাতে পারো যে, আমরা সকলের বায়োগ্রাফী (জীবনী) জানি। পরমপিতা
পরমাত্মা শিববাবার জীবন-কাহিনীও জানি। নম্বর অনুযায়ী সব স্মরণে আসা চাই। সমগ্র
বিরাট রূপ অবশ্যই বুদ্ধিতে থাকবে। আমরা এখন ব্রাহ্মণ হয়েছি, আবার আমরা দেবতা হবো,
তারপর ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র হবো। এটা তো বাচ্চাদের মনে আছে। বাচ্চারা, তোমরা
ব্যাতীত এই কথা আর কারোর স্মরণে থাকে না। উত্থান আর পতনের সমস্ত রহস্য বুদ্ধিতে থাকে।
আমাদের উত্থান হয়েছিলো, তারপর আবার পতন হতে শুরু হয়েছে, এখন মধ্যবর্তী অবস্থা।
আমরা এখন শূদ্রও নই, সম্পূর্ণ ব্রাহ্মণও হয়ে উঠিনি। এখন যদি পাক্কা ব্রাহ্মণ হয় তো
এরপর আর শূদ্রপনার অ্যাক্ট হবে না। ব্রাহ্মণদের মধ্যেও আবার শূদ্রত্ব এসে যায়। তোমরা
এটাও জানো- কবে থেকে পাপ শুরু করা হয়েছে? যেদিন থেকে কাম চিতার উপরে উঠেছো। সুতরাং
তোমাদের বুদ্ধিতে সমগ্র চক্র আছে। উপরে থাকেন পরমপিতা পরমাত্মা বাবা, তারপর হলে
তোমরা অর্থাৎ আত্মারা। এই কথা বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে অবশ্যই স্মরণে থাকা উচিত।
এখন আমরা হলাম ব্রাহ্মণ, দেবতা হচ্ছি আবার বৈশ্য, শূদ্র ডিনায়েস্টিতে (বংশে) আসবো।
বাবা এসে আমাদেরকে শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ তৈরী করেন, আবার আমরা ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা
হবো। ব্রাহ্মণ হয়ে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করে আবার ফিরে যাবো। তোমরা বাবাকেও জানো।
ডিগবাজি বা ৮৪ জন্মের চক্রকেও তোমরা জানো। ডিগবাজির উদাহরণ দিয়ে তোমাদের খুব ইজি করে
বোঝানো হয়। বাবা তোমাদেরকে খুব হাল্কা করে দেন, যাতে তোমরা নিজেকে বিন্দু মনে করো
আর তাড়াতাড়ি নিজ নিকেতনের দিকে ছুটে যেতে পারো। স্টুডেন্ট ক্লাসে বসে থাকে তো
বুদ্ধিতে স্টাডিই স্মরণে থাকে। তোমাদেরও এই পড়াশুনা স্মরণে থাকা উচিত। আমরা এখন
সঙ্গমযুগে আছি, এরপর ওরকম ভাবে চক্রে আবর্তিত হবো। এই চক্র সর্বদা বুদ্ধিতে আবর্তিত
হওয়া উচিত। এই চক্র ইত্যাদির নলেজ তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের মধ্যেই আছে, নয়তো
কি শূদ্রদের কাছে ! দেবতাদের মধ্যেও এই জ্ঞান নেই। এখন তোমরা বুঝতে পারো ভক্তি
মার্গে যে যে চিত্র তৈরী হয়েছে সব হলো ডিফেক্টেড। তোমাদের কাছে অ্যাকুউরেট চিত্র
আছে, কারণ তোমরা অ্যাকুউরেট তৈরী হচ্ছো। তোমরা এখন জ্ঞান প্রাপ্ত করেছো, তবেই বুঝতে
পারছো ভক্তি কাকে বলা যায়, জ্ঞান কাকে বলা যায়? জ্ঞান প্রদানকারী জ্ঞানের সাগর
বাবাকে এখন তোমরা পেয়েছো। স্কুলে পড়ার সময় স্টুডেন্টদের তাদের এইম অবজেক্টেট তো
জানা থাকে। ভক্তি মার্গে তো এম অবজেক্ট থাকে না। তোমাদের কি আর এটা জানা ছিলো যে
আমরা উচ্চ দেবী-দেবতা ছিলাম আবার নীচে পড়ে গিয়েছি। এখন যখন ব্রাহ্মণ হয়েছো, তখন
জ্ঞাত হয়েছো। ব্রহ্মাকুমার - কুমারী অবশ্যই আমরা আগেও হয়েছিলাম। প্রজাপিতা
ব্রহ্মার নাম তো বিখ্যাত । প্রজাপিতা তো মানুষ, তাই না ! ওনার এতো বাচ্চা আছে যখন
তো অবশ্যই তারা অ্যাডপ্টেড হবে। কতো কতো অ্যাডপ্টেড হয়েছে । আত্মার রূপে তোমরা সকলে
তো হলে ভাই-ভাই। তোমাদের বুদ্ধি এখন বহু দূরে যায়। তোমরা জানো যেমন উপরে তারারা
রয়েছে, দূর থেকে কতো ছোট দেখা যায়। তোমরাও হলে অনেক ছোট আত্মা। আত্মা কখনো ছোটো-বড়
হয় না। হ্যাঁ, তোমাদের পদ-মর্যাদা অনেক উচ্চ। তাদেরও সূর্য দেবতা, চন্দ্রমা দেবতা
বলে। সূর্য বাবা, চন্দ্রমা মা বলে। এছাড়া সব আত্মারা সকলে হলো নক্ষত্র-তারা। তাই
আত্মারা সব একরকম, ছোট্ট। এখানে এসে পার্টধারী হয়ে ওঠে। তোমরাই তো দেবতায় পরিণত হও।
আমরা অত্যন্ত
পাওয়ারফুল তৈরী হচ্ছি। বাবাকে স্মরণ করার ফলে আমরা সতোপ্রধান দেবতা হয়ে যাবো।
নম্বর অনুযায়ী কিছু-কিছু তো পার্থক্য থাকেই। কোনো আত্মা পবিত্র হয়ে সতোপ্রধান দেবতা
হয়ে যায়, কোনো আত্মা সম্পূর্ণ পবিত্র হয় না। জ্ঞান তো এতটুকুও জানা নেই । বাবা
বুঝিয়েছেন যে, বাবার পরিচয় অবশ্যই যেন সকলের পাওয়া উচিত । সর্বশেষে তো বাবাকে
চিনবেই, তাই না ! বিনাশের সময় সকলে জানতে পারবে যে বাবা এসেছেন। এখনো কেউ-কেউ বলে
ভগবান অবশ্যই কোথাও এসেছেন কিন্তু জানা যাচ্ছে না। মনে করে যে কোনো না কোনো রূপে এসে
যাবেন। মনুষ্য মত যে অনেক তাই না ! তোমাদের হলো একই ঈশ্বরীয় মত। তোমরা ঈশ্বরীয়
মতের দ্বারা কি হচ্ছো? এক হলো মনুষ্য মত, দ্বিতীয় হলো ঈশ্বরীয় মত আর তৃতীয় হলো দৈবী
মত। দেবতাদেরও মত কে দিয়েছেন? বাবা। বাবার শ্রীমৎ হলোই শ্রেষ্ঠ করে তোলার।
শ্রী-শ্রী বাবাকেই বলবে, না কি মানুষকে ! শ্রী-শ্রী এসেই শ্রী করে তোলেন। দেবতাদের
শ্রেষ্ঠ তৈরী করার জন্য একমাত্র বাবা আছেন, তাঁকেই শ্রী-শ্রী বলা হয়। বাবা বলেন, আমি
তোমাদের ঐরকম যোগ্য করে তুলি। তারা তো আবার নিজেদের উপর শ্রী-শ্রীর টাইটেল রেখে
দিয়েছে। তোমরা কনফারেন্সেও বোঝাতে পারো। বোঝানোর জন্য তোমরাই নিমিত্ত হয়েছো। শ্রী
শ্রী তো হলেন একমাত্রই শিববাবা, যিনি এরকম শ্রী দেবতা তৈরী করেন। সেইসব লোক তো
শাস্ত্র ইত্যাদি অধ্যয়ণ করে টাইটেল নিয়ে আসে। তোমাদের তো শ্রী শ্রী বাবা-ই শ্রী
অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ তৈরী করছেন। এটা হলোই তমোপ্রধান ভ্রষ্টাচারী দুনিয়া। ভ্রষ্টাচার
থেকে জন্ম নেয়। কোথায় বাবার টাইটেল, কোথায় এই পতিত মানুষ নিজেদের উপর রেখে থাকে।
সত্যিকারের শ্রেষ্ঠ মহান আত্মারা তো হল দেবী-দেবতারা ! সতোপ্রধান দুনিয়াতে একজনও
তমোপ্রধান মানুষ হতে পারে না। রজোতে রজো মানুষই থাকবে, না কি তমোগুণী। বর্ণের
বিষয়েও তো বলা হয়, তাই না । তোমরা এখন বুঝতে পারো, পূর্বে তো আমরা কিছুই বুঝতাম না।
বাবা এখন কতো বিচক্ষণ করে তুলছেন। তোমরা কতো ধনবান হচ্ছো। শিববাবার ভান্ডারা হলো
ভরপুর। শিববাবার ধন-ভান্ডার কোনটি?(অবিনাশী জ্ঞান রত্নের) শিববাবার ভান্ডারা ভরপুর,
তো কাল(মৃত্যু) কন্টক দূর। বাবা তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের জ্ঞান রত্ন দিতে থাকেন।
তিনি নিজেই হলেন সাগর। জ্ঞান রত্নের সাগর। বাচ্চাদের বুদ্ধি অসীম জগতের প্রতি হওয়া
উচিত। কতো কোটি কোটি আত্মা নিজ নিজ শরীর রূপী আসনের উপর বিরাজমান। এটা হলো অসীম
জগতের নাটক। আত্মা এই আসনের উপর বিরাজমান হয়ে থাকে। এই আসন (শরীর) একটা দ্বিতীয়টার
সাথে মেলে না। সকলের আলাদা-আলাদা ফিচার্স হয়, একে বলা হয় নেচার। প্রত্যেকের কেমন
অবিনাশী পার্ট। এতো ছোট আত্মায় ৮৪ জন্মের রেকর্ড ভরা থাকে। অত্যন্ত সূক্ষ্ম। এর
থেকে সূক্ষ্ম ওয়ান্ডার হতে পারে না। এতো ছোট আত্মাতে সমগ্র পার্ট ভরা আছে, যা কিনা
এখানেই পার্ট প্লে করছে। সূক্ষ্মবতনে তো কেউ পার্ট প্লে করে না। বাবা কতো ভালো করে
বোঝান। বাবার দ্বারা তোমরা সব কিছু জেনে যাও। এটাই হলো নলেজ। এরকম নয় যে, সকলের
অন্তরকে জানার জন্য তিনি রয়েছেন । তিনি এই নলেজ জানেন, যে নলেজ তোমাদের মধ্যেও
ইমার্জ (সুস্পষ্ট) হচ্ছে। যে নলেজের জন্যই তোমরা এতো উচ্চ পদ প্রাপ্ত করো। এটাও মনে
থাকে যে না ! বাবা হলেন বীজরূপ। তাঁর মধ্যে বৃক্ষের আদি, মধ্য, অন্তের নলেজ আছে।
মানুষ তো লক্ষ বছর আয়ু দিয়ে দিয়েছে, তাই তাদের মধ্যে জ্ঞান আসতে পারে না। এখন
তোমাদের সঙ্গমে এই সমস্ত জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছে। বাবার দ্বারা তোমরা সমগ্র চক্রকে জেনে
যাও। এর আগে তোমরা কিছুই জানতে না। তোমরা এখন সঙ্গমে আছো। এটা হলো তোমাদের শেষের
জন্ম। পুরুষার্থ করতে করতে আবার তোমরা সম্পূর্ণ ব্রাহ্মণ হয়ে যাবে। এখন হওনি। এখন
তো ভালো-ভালো বাচ্চারাও ব্রাহ্মণ থেকে আবার শূদ্র হয়ে যায়। একে বলা হয় মায়ার কাছে
হার মানা। বাবার কোল থেকে হার মেনে রাবণের কোলে চলে যায়। কোথায় বাবার শ্রেষ্ঠ হওয়ার
কোল, কোথায় ভ্রষ্ট হওয়ার কোল। সেকেন্ডে জীবনমুক্তি। সেকেন্ডে পুরো দুর্দশা হয়ে যায়।
ব্রাহ্মণ বাচ্চারা ভালো ভাবে জানে- কীভাবে দুর্দশা হয়ে যায়। আজ বাবার হলে, কাল আবার
মায়ার থাবায় এসে রাবণের হয়ে যায়। আবার তোমরা বাঁচানোর চেষ্টা করলে কেউ-কেউ আবার
বেঁচেও যায়। ডুবে যাচ্ছে দেখলে তোমরা বাঁচানোর চেষ্টা করতে থাকো। কতো টানা-পোড়েন
হয়।
বাবা বসে বাচ্চাদের
বোঝান। এখানে তোমরা স্কুলে পড়ো, তাই না ! তোমাদের জানা আছে যে কীভাবে আমরা এই চক্র
আবর্তিত করি। বাচ্চারা. তোমাদের শ্রীমৎ প্রাপ্ত হতে থাকে এইরকম-এইরকম করো।
ভগবানুবাচ তো অবশ্যই আছে। এ হলো ওঁনার শ্রীমত ! বাচ্চারা, আমি তোমাদের এখন শূদ্র
থেকে দেবতা বানাতে এসেছি। এখন কলিযুগে হলো শূদ্র সম্প্রদায়। তোমরা জানো যে, কলিযুগ
সম্পূর্ণ হচ্ছে। তোমরা এখন সঙ্গম যুগে বসে আছো। এটা বাবার দ্বারা তোমাদের নলেজ
প্রাপ্ত হয়। যা কিছু শাস্ত্র তৈরী হয়েছে তার সব কিছুতেই হলো মনুষ্য মত। ঈশ্বর তো
শাস্ত্র তৈরী করেন না। এক গীতার উপরেই কতো নাম লিখে দিয়েছে। গান্ধী গীতা, টেগোর
গীতা ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেক নাম আছে। গীতাকে মানুষ কেন এতো পড়ে? বুঝতে তো কিছুই
পারে না। কিছু অধ্যায় তুলে নিয়ে নিজের নিজের মতো অর্থ করতে থাকে। সেটাই তো সব
মানুষদের তৈরী হয়ে গেল, তাই না ! তোমরা বলতে পারো মানুষের মতে তৈরী গীতা পড়ার ফলে
আজ এই হাল হয়েছে। গীতাই তো প্রথম নম্বরের শাস্ত্র। সেটা হলো দেবী-দেবতা ধর্মের
শাস্ত্র। এটা হলো তোমাদের ব্রাহ্মণ কুল। এটাও ব্রাহ্মণ ধর্ম যে না। কতো ধর্ম,
যারা-যারা যে ধর্ম রচনা করেছে তার সেই নাম রেখে চলে। জৈনরা মহাবীর বলে। তোমরা অর্থাৎ
বাচ্চারা হলে মহাবীর-মহাবীরঙ্গনা। মন্দিরে (দিলওয়ারা মন্দির) তোমাদের স্মারক আছে।
রাজযোগ যে। নীচে যোগ তপস্যায় বসে আছে, উপরে রাজত্বের চিত্র। রাজযোগের অ্যাকুউরেট
মন্দির। আবার কারা- কারা কোন-কোন সব নাম রেখে দিয়েছে। স্মারক একদম অ্যাকুউরেট,
বুদ্ধি সহযোগে কাজ করে ঠিক তৈরী করেছে, তবে যে যা নাম বলেছে সেই সব রেখে দিয়েছে।
এটা মডেল রূপে তৈরী করেছে। স্বর্গ আর রাজযোগ সঙ্গমযুগের তৈরী। তোমরা আদি, মধ্য,
অন্তকে জানো। আদিকেও তোমরা দেখেছো। আদি সঙ্গমযুগকে বলো বা সত্যযুগকে বলো।
সঙ্গমযুগের সীন (দৃশ্য) নীচে দেখানো হয় আবার রাজত্ব উপরে দেখানো হয়েছে। সুতরাং
সত্যযুগ হলো আদি আবার মধ্যতে হলো দ্বাপর। অন্তকে তোমরা দেখছই। এই সব শেষ হয়ে যাবে।
সম্পূর্ণ স্মরণিক তৈরী হয়ে আছে। দেবী-দেবতারাই আবার বাম মার্গে যায়। তাদের দিয়েই
বাম মার্গ শুরু হয়। স্মরণিক সম্পূর্ণ অ্যাকুউরেট (সঠিক)। স্মরণিক রূপে অনেক মন্দির
তৈরী হয়েছে। এখানেই সব চিহ্ন আছে। মন্দিরও এখানেই তৈরী হয়। দেবী-দেবতা ভারতবাসীই,
তারাই রাজত্ব করে গেছে । তারাই পরে আবার কতো কতো মন্দির বানায়। শিখ-রা, অনেকে
একত্রিত হলে তারা নিজেদের জন্য মন্দির বানিয়ে ফেলবে । মিলিটারীর লোকেরাও নিজেদের
মন্দির তৈরী করে । ভারতবাসী নিজেদের কৃষ্ণ বা লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দির তৈরী করবে।
হনুমান, গণেশের তৈরী করবে। এই সমগ্র সৃষ্টির চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়, কীভাবে স্থাপনা,
বিনাশ, প্রতিপালন হয়- এটা তোমরাই জানো। একে বলা হয় অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত। ব্রাহ্মার
দিন আর ব্রহ্মার রাতই গাওয়া হয়, কারণ ব্রহ্মাই চক্রতে (জন্ম-মরণের) আসে, এখন তোমরা
হলে ব্রাহ্মণ আবার দেবতা হবে। মুখ্য তো ব্রহ্মা হলেন যে না! ব্রহ্মাকে রাখবে না
বিষ্ণুকে রাখবে! ব্রহ্মা হলেন রাতের আর বিষ্ণু হলেন দিনের। তিনিই রাত্রি থেকে আবার
দিনে আসেন। দিন থেকে আবার ৮৪ জন্ম পরে রাতে আসেন। কতো সহজ বোঝানো। এটাও সম্পূর্ণ
স্মরণ করতে পারো না। সম্পূর্ণ নিয়মে অধ্যয়ণ না করলে নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ
অনুসারে পদ প্রাপ্ত হয়। যতো স্মরণ করবে সতোপ্রধান হবে। সতোপ্রধান ভারতই তমোপ্রধান
হবে। বাচ্চাদের মধ্যে কতো জ্ঞান আছে। এই নলেজ মন্থন করতে হয়। এই জ্ঞান হলোই নূতন
দুনিয়ার জন্য, যা অসীম জগতের পিতা এসে দেন। সমস্ত মানুষ অসীমজগতের পিতাকে স্মরণ করে।
ইংরেজ লোকেরাও বলে ওহ্ গড ফাদার লিব্রেটর, গাইড অর্থ তো তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের
বুদ্ধিতে আছে। বাবা এসে দুঃখের দুনিয়া আইরন এজ্ থেকে বের করে গোল্ডেন এজে নিয়ে যান।
অবশ্যই গোল্ডেন এজ পাস করে যায়, তাই তো স্মরণ করে যে না! বাচ্চারা, তোমাদের
ভিতরে-ভিতরে অনেক খুশী থাকা উচিত আর দৈবী কর্মও করা উচিত। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার থেকে অবিনাশী জ্ঞান রত্নের অক্ষয় ভান্ডার প্রাপ্ত হচ্ছে - তাকে মনে রেখে
বুদ্ধিকে অসীম জগতে নিয়ে যেতে হবে। এই অসীম জগতের নাটকে আত্মারা কীভাবে নিজের-নিজের
আসনে বিরাজমান- এমন প্রকৃতির বিস্ময়কে সাক্ষী হয়ে দেখতে হবে।
২ ) সর্বদা বুদ্ধিতে
যেন স্মরণ থাকে যে, আমরা হলাম সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ, বাবার শ্রেষ্ঠ কোল আমাদের
প্রাপ্ত হয়েছে। আমরা রাবণের কোলে যেতে পারি না। আমাদের কর্তব্য হলো - যে ডুবে যাচ্ছে
তাকেও বাঁচানো।
বরদান:-
ব্যর্থ
সংকল্পরূপী পিলার গুলিকে আধার বানানোর পরিবর্তে সকল সম্বন্ধের অনুভবকে বৃদ্ধি করে
সত্যিকারের স্নেহী ভব
মায়া দুর্বল
সংকল্পগুলিকে মজবুত বানানোর জন্য অত্যন্ত রয়্যাল পিলার্স লাগায়, বার-বার এই সংকল্প
দেয় যে এরকম তো হতেই থাকে, বড়-রাও এরকমই করে, এখনও তো সম্পূর্ণ হই নি, অবশ্যই কোনও
না কোনও দুর্বলতা তো থাকবেই, এইসব ব্যর্থ সংকল্পরূপী পিলার্স দুর্বলতাকে আরও মজবুত
করে দেয়। এখন এইরকম পিলার্সের আধার নেওয়ার পরিবর্তে সর্ব সম্বন্ধের অনুভবকে বৃদ্ধি
করো। সাকার রূপে সাথের অনুভব করে সত্যিকারের স্নেহী হও।
স্লোগান:-
সন্তুষ্টতা হলো সবথেকে বড় গুণ, যারা সদা সন্তুষ্ট থাকে তারাই প্রভু-প্রিয়, লোক
প্রিয় বা স্বয়ং প্রিয় হয়।