07-12-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
02-02-2008 মধুবন
"সম্পূর্ণ পবিত্রতার দ্বারা অধ্যাত্ম রয়্যালটি আর
পার্সোনালিটির অনুভব করতে করতে নিজের স্বরূপ মাস্টার জ্ঞানসূর্য রূপকে ইমার্জ করো"
আজ বাপদাদা চতুর্দিকে তাঁর নিজের রয়্যালটি আর পার্সোনালিটির পরিবারকে দেখছেন। এই
রয়্যালটি এবং অধ্যাত্ম পার্সোনালিটির ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণ পিওরিটির। পিওরিটির লক্ষণ
সবার মস্তকে। সবার মাথার ওপরে লাইটের মুকুট ঝলমল করছে। এমন ঝলমলে মুকুটধারী
অধ্যাত্ম রয়্যালটি, অধ্যাত্ম পার্সোনালিটির শুধু তোমরা ব্রাহ্মণ পরিবারই। কেননা,
পিওরিটিকে নিজের করেছ। তোমরা সব ব্রাহ্মণ আত্মার পিওরিটির প্রভাব আদিকাল থেকে
প্রসিদ্ধ। স্মরণে আসে তোমাদের নিজেদের অনাদি আর আদিকাল! স্মরণ করো অনাদিকালেও তোমরা
পিওর আত্মারা আত্মা রূপেও বিশেষ ঝলমলে নক্ষত্র। অন্য আরও আত্মারা ঝলমল করতে থাকে,
কিন্তু তোমরা সব নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা সবার সাথে থেকেও বিশেষভাবে জ্বল-জ্বল করে।
যেমন আকাশে অনেক নক্ষত্র থাকে কিন্তু স্পেশালি কোনো কোনো নক্ষত্র ঝকমকে হয়। সবাই
নিজেকে দেখছ, পরে আদিকালে তোমাদের পিওরিটির রয়্যালটি আর পার্সোনালিটি কত মহান ছিল!
সবাই পৌঁছে গেছ আদিকালে? পৌঁছে যাও। চেক করো, তোমাদের দ্যুতিরেখা কত পার্সেন্টে আছে!
আদিকাল থেকে অন্তিমকল পর্যন্ত তোমাদের পিওরিটির রয়্যালটি, পার্সোনালিটি সদা থাকে।
অনাদিকালের ঝলমলে নক্ষত্র, অত্যুজ্জ্বল বাবার সাথে একসাথে নিবাস করে। এই মুহূর্তে
নিজের বিশেষত্ব অনুভব করো। পৌঁছে গেছ সবাই অনাদিকালে? সমগ্র কল্পে তোমরা সব পবিত্র
আত্মার রয়েল্টি বিভিন্ন রূপে থাকে। কেননা, তোমরা- আত্মাদের মতো কেউ সম্পূর্ণ পবিত্র
তৈরিই হয়নি। পবিত্রতার জন্মসিদ্ধ অধিকার বাবার থেকে তোমরা বিশেষ আত্মাদের প্রাপ্ত
হয়। এখন আদিকালে এসে যাও। অনাদিকালও দেখেছ, এখন অদিকালেও তোমাদের পবিত্রতার
রয়েল্টির স্বরূপ কত মহান! সবাই পৌঁছে গেছে সত্যযুগে! পৌঁছে গেছ! এসে গেছ। দেবতা রূপ
কত অনুপম! দেবতাদের মতো রয়েল্টি আর পার্সোনালিটি সমগ্র কল্পে কোনও আত্মার থাকে না।
দেবতা রূপের দীপ্তি অনুভব করছ তো না! এত অধ্যাত্ম পার্সোনালিটি, এসব পবিত্রতার
প্রাপ্তি। এখন দেবতা রূপের অনুভব করতে করতে মধ্যকালে এসে যাও। এসে গেছ? আসা অনুভব
করা সহজ তো না! তো মধ্যকালেও দেখ, তোমাদের ভক্ত তোমরা সব পূজ্য আত্মার পূজা করে,
চিত্র বানায়। কত রয়্যালটির চিত্র বানায় এবং কত রয়্যালটির সাথে তারা পূজা করে।
নিজেদের পূজ্য চিত্র সামনে এসে গেছে তো না! চিত্র তো ধর্মাত্মাদেরও তৈরি হয়। ধর্ম
পিতাদেরও তৈরি হয়, অভিনেতাদেরও তৈরি হয়। কিন্তু তোমাদের চিত্রের আধ্যাত্মিকতা আর
বিধিপূর্বক পূজাতে ফারাক থাকে। তো নিজেদের পূজ্য স্বরূপ সামনে এসেছে! আচ্ছা এবারে
এসো অন্তকাল সঙ্গমে, এই অধ্যাত্ম ড্রিল করছ তো না! চক্কর লাগাও এবং নিজের পিওরিটির,
নিজের বিশেষ প্রাপ্তির অনুভব করো। অন্তিমকাল সঙ্গমে তোমরা সব ব্রাহ্মণ আত্মার
পরমাত্ম পরিপালনের, পরমাত্ম ভালোবাসার, পরমাত্ম পাঠের ভাগ্য কোটি কোটির মধ্যে থেকে
তোমাদের কিছু আত্মারই প্রাপ্ত হয়। যার দ্বারা তোমরা ব্রাহ্মণরাই বিশ্বের আত্মাদেরও
মুক্তির উত্তরাধিকার বাবার দ্বারা প্রাপ্ত করাও। তো এই সম্পূর্ণ চক্রভ্রমণে
অনাদিকাল, আদিকাল, মধ্যকাল আর অন্তিমকাল সম্পূর্ণ চক্রে তোমাদের এত শ্রেষ্ঠ
প্রাপ্তির আধার পবিত্রতা। সম্পূর্ণ চক্কর লাগিয়েছ, এখন নিজেকে চেক করো, নিজেকে দেখো,
দেখার আয়না আছে তো না! নিজেকে দেখার আয়না আছে? যাদের আছে তারা হাত উঠাও। আয়না আছে,
আয়না ক্লিয়ার? তো আয়নাতে দেখ যে তোমার পবিত্রতা কত পার্সেন্ট আছে! পবিত্রতা শুধু
ব্রহ্মচর্য নয়,বরং ব্রহ্মাচারী। মন-বচন-কর্ম, সম্বন্ধ-সম্পর্ক সবেতে পবিত্রতা আছে?
কত পার্সেন্টে আছে? পার্সেন্টেজ কীভাবে বের করতে হয় জানো তো না! টিচার্স জানো তোমরা?
পাণ্ডব তোমরা জানো? আচ্ছা চতুর তোমরা! মাতারা জানে? জানা আছে মাতাদের? আচ্ছা।
পবিত্রতার পরখ - বৃত্তি, দৃষ্টি আর কৃতি এই তিনের মধ্যে চেক করো, সম্পূর্ণ
পবিত্রতার যে বৃত্তি হবে, তা' বুদ্ধিতে এসে গেছে কিনা! ভাবো, সম্পূর্ণ পবিত্রতার
বৃত্তি অর্থাৎ সব আত্মার প্রতি শুভ ভাবনা, শুভ কামনা। তোমরা অনুভাবী তো না! আর
দৃষ্টি কী হবে? সব আত্মাকে আত্মারূপে দেখা। আত্মিক স্মৃতিতে বলা এবং জীবনযাপন করা।
বাবা তোমাদের শর্টে শোনাচ্ছেন। ডিটেলে তোমরা ভাষণ দিতে পারো। আর কৃতি অর্থাৎ কর্মের
সুখ নেওয়া সুখ দেওয়া। এটা চেক করো - আমার দৃষ্টি, বৃত্তি, কৃতি এই অনুসারে হয়? সুখ
নাও, দুঃখ নিও না। তো চেক করো কখনো দুঃখ নিয়ে নিচ্ছ! কখনো কখনো অল্প অল্প? দুঃখ দেয়
এমনও তো থাকে না! মনে করো সে দুঃখ দেয়, তবে কি তোমায় তাকে ফলো করতে হবে! ফলো করতে
হবে কি হবে না? কা'কে ফলো করতে হবে? যে দুঃখ দেয় তাকে, নাকি বাবাকে? বাবা, ব্রহ্মা
বাবা নিরাকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তো বটেই, কিন্তু ব্রহ্মা বাবা কোনো বাচ্চার দুঃখ
নিয়েছেন? সুখ দিয়েছেন আর সুখ নিয়েছেন। ফলো ফাদার হয়, নাকি কখনো কখনো নিতেই হয়? নামই
দুঃখ, যখন দুঃখ দেয়, ইনসাল্ট করে, তখন তো জানো যে এটা খারাপ জিনিস, কেউ তোমাকে
ইনসাল্ট করলে, তবুও তুমি তাকে ভালো মনে করো? খারাপ মনে করো তাই না! সুতরাং সে তোমাকে
দুঃখ দেয় কিংবা ইনসাল্ট করে, তো খারাপ জিনিস তোমাকে যদি কেউ দেয়, তবে তুমি নিয়ে নাও?
নিয়ে নাও? অল্প সময়ের জন্য; বেশি সময় নয় অল্প সময়? খারাপ জিনিস নেওয়া যায় কি? তো
দুঃখ কিংবা ইনসাল্ট কেন নাও? অর্থাৎ মনে ফিলিংস রূপে রাখো কেন? তো নিজেকে জিজ্ঞাসা
করো আমি কি দুঃখ নিই? নাকি দুঃখকে পরিবর্তনের রূপে দেখো? প্রথম লাইনের তোমরা কী মনে
করো, দুঃখ নেওয়া রাইট? রাইট? মধুবনের তোমরা, এটা রাইট? একটু একটু নিয়ে নেওয়া উচিত?
প্রথম লাইন, দুঃখ নিয়ে নেওয়া উচিত, তাই না! নেওয়া উচিত নয়, কিন্তু নিয়ে নাও। ভুল করে
নিয়ে নাও। দুঃখের এই ফিলিংসে চিন্তাগ্রস্ত কে হয়? মনে আবর্জনা যদি রাখো তবে চিন্তিত
কে হবে? যেখানে আবর্জনা থাকবে সেখানেই চিন্তাগ্রস্ত হবে তো না! তো সেই সময় নিজের
রয়েল্টি আর পার্সোনালিটি সামনে আনো। নিজেকে কোন স্বরূপে দেখবে? জানো তোমাদের টাইটেল
কী? তোমাদের টাইটেল হলো সহনশীলতার দেব। সুতরাং তুমি কে? সহনশীলতার দেবী তোমরা,
সহনশীলতার দেব তোমরা। নাকি না? কখনো কখনো হয়ে যাও। নিজের পজিশন স্মরণ করো, স্বমান
স্মরণ করো। আমি কে! এটা স্মৃতিতে নিয়ে এসো। সমগ্র কল্পের বিশেষ স্বরূপের স্মৃতি নিয়ে
এসো। স্মৃতি আসে তো না!
যেমন, বাপদাদা দেখেছেন যে স্মরণকালে সহজে 'আমার' শব্দ তোমরা পরিবর্তন করেছো। তো
আমার-এর বিস্তার অন্তর্লীন করার জন্য কী বলো তোমরা? আমার বাবা। যখনই আমার আমার আসে
তখন আমার বাবাতে অন্তর্লীন করে নাও। আর বারবার আমার বাবা বলাতে স্মরণও সহজ হয়ে যায়
এবং প্রাপ্তিও বেশি হয়। এভাবেই সারাদিনে যদি কোনও রকমের সমস্যা কিংবা কারণ উৎপত্তি
হয়, সেটার জন্য এই দুই বিশেষ শব্দ - আমি আর আমার। তো বাবা শব্দ বলার সাথে সাথে যেমন
আমার শব্দ স্মরণ হয়েছে, হয়েছে না? সবাই এখন বাবা বাবা বলে না, আমার বাবা বলে। ঠিক
তেমনই এই যে আমি শব্দ রয়েছে, এটাও পরিবর্তন করার জন্য যখনই আমি শব্দ বলবে তখন নিজের
স্বমানের লিস্ট সামনে আনো। আমি কে? কেননা, আমি শব্দ অধ:গতির নিমিত্তও হয় আর আমি
শব্দ স্বমানের স্মৃতি দ্বারা উঁচুতেও ওঠায়। তো যেভাবে আমার বাবা অভ্যাস হয়ে গেছে,
সেভাবেই আমি শব্দকে বডি কন্সাসনেসের স্মৃতির পরিবর্তে নিজের শ্রেষ্ঠ স্বমানকে সামনে
আনো। আমি শ্রেষ্ঠ আত্মা, সিংহাসনাসীন আত্মা, বিশ্ব কল্যাণী আত্মা, এভাবে কোনো না
কোনো স্বমানের সাথে জুড়ে নাও। তো আমি শব্দ যেন উন্নতির সাধন হয়ে যায়। ঠিক এভাবেই,
এখন আমার শব্দ মেজরিটির জন্য যেন বাবা শব্দ স্মরণ করায়। কেননা, সময় প্রকৃতি দ্বারা
তোমাদের চ্যালেঞ্জ করছে।
সময়ের নৈকট্যকে কমন ব্যাপার হিসেবে ধ'রো না। আকস্মিক আর এভাররেডি শব্দকে নিজের
কর্মযোগী জীবনে সবসময় স্মৃতিতে রাখো। নিজের শান্তির শক্তি নিজের জন্যও ভিন্ন ভিন্ন
রূপে প্রয়োগ করো। যেমন সায়েন্স নিজের নতুন নতুন প্রয়োগ করতে থাকে। স্ব এর জন্য যত
প্রয়োগ করার প্র্যাকটিস করতে থাকবে ততই অন্যের জন্যও শান্তির শক্তির প্রয়োগ হতে
থাকবে।
এখন, নিজের শক্তির সকাশ বিশেষভাবে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দাও। যখন তোমাদের প্রকৃতির
সূর্যের শক্তি, সূর্যের কিরণ কত রূপে নিজের কার্য করছে - জল বর্ষণও করে, জল শুকিয়ে
দিতেও পারে। দিন থেকে রাত, রাত থেকে দিন করে দেখায়। তখন কি তোমরা নিজের শক্তির সকাশ
বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে দিতে পারো না? নিজেদের শক্তির সকাশ দ্বারা আত্মাদের দুঃখ অশান্তি
থেকে নিষ্কৃতি দিতে পারো না! জ্ঞানসূর্য স্বরূপ ইমার্জ করো। কিরণ ছড়িয়ে দাও, সকাশ
দাও। যেভাবে, স্থাপনের আদিকালে অনেক আত্মার বাপদাদার থেকে সুখশান্তির সকাশ প্রাপ্ত
হওয়ার অনুভব হয়েছে ঘরে বসেই। সংকল্প প্রাপ্ত হয়েছে যাও (বেরিয়ে পড়ো) ঠিক সেভাবে
এখন তোমরা সব মাস্টার জ্ঞানসূর্য বাচ্চাদের দ্বারা সুখশান্তির তরঙ্গ ছড়িয়ে যাওয়ার
অনুভূতি হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সেটা তখনই হবে যার সাধন হলো মনের একাগ্রতা, স্মরণের
একাগ্রতা। নিজের মধ্যে একাগ্রতার শক্তি বাড়াও। যখনই চাইবে, যেভাবে চাইবে, যতক্ষণ
চাইবে, ততক্ষণ যেন মনকে একাগ্র করতে পারো। এখন মাস্টার জ্ঞানসূর্যের স্বরূপ ইমার্জ
করো আর শক্তির কিরণ, সকাশ ছড়িয়ে দাও।
বাপদাদা শুনেছেন এবং খুশি হয়েছেন, বাচ্চারা সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনায় জায়গায় জায়গায়
ভালো সেবা করছে, বাপদাদার কাছে সেবার ভালো ভালো সমাচার পৌঁছেছে, হয় সেসব প্রদর্শনী
দ্বারা, কিংবা সমাচারপত্রের মাধ্যমে অথবা টিভির মাধ্যমে সমাচার দেওয়ার কার্য তোমরা
এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছ। তাদের কাছেও সমাচার পৌঁছে যায়, তোমরা উত্তমরূপে সমাচার পৌঁছে
দিচ্ছো। গ্রামেও যেখানে থাকে, প্রতিটা জোন নিজের নিজের এরিয়াতে সেবা বাড়িয়ে যাচ্ছে।
সংবাদপত্রের মাধ্যমে, টিভির মাধ্যমে, বিভিন্ন সাধনের দ্বারা উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে
করছে। এগুলো যারা করছে সেই সব বাচ্চাকে বাপদাদা অতি স্নেহযুক্ত আশীর্বাদ পূর্ণ
অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কিন্তু এখন বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা আছে,
তাছাড়া, চতুর্দিকে ব্রহ্মাকুমারিজ কী, তারা খুব ভালো এবং শক্তিশালী কার্য করছে - এই
আওয়াজও ভালোভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে এবং বর্ধিত হচ্ছে। কিন্তু, কিন্তু কী সেটা কি বাবা
তোমাদের বলবেন! বলবেন কিন্তু!... কিন্তু ব্রহ্মাকুমারীদের বাবা কত ভালো, সেই আওয়াজ
এখন বৃদ্ধি পাওয়া উচিত। ব্রহ্মাকুমারীরা ভালো কাজ করছে, কিন্তু করানোর মালিক কে,
এখন সেটার প্রত্যক্ষতা প্রয়োজন। বাবা এসেছেন, এই সমাচার মন পর্যন্ত পৌঁছানো দরকার।
এর প্ল্যান বানাও।
বাপদাদার কাছে বাচ্চারা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে যে, উত্তরাধিকারী বা মাইক কা'কে বলা
হবে? মাইক বেরিয়েছেও, কিন্তু এখনের সময় অনুসারে বাপদাদা এমন মাইক চান অথবা আবশ্যকতা
আছে যার আওয়াজের সূক্ষ্মতা থাকবে। যদি কেবলমাত্র বাবা সম্বোধনটুকুও করে, সেটুকুও
ভালো বলবো যে, এতটা পর্যন্ত নিয়ে তো এসেছে! তো বাপদাদা অভিনন্দন জানান, কিন্তু এখন
এমন মাইক প্রয়োজন যার আওয়াজেরও ভ্যাল্যু থাকবে লোকের কাছে। এমন প্রসিদ্ধ হতে হবে,
প্রসিদ্ধ হওয়া মানে এটা নয় যে শ্রেষ্ঠ পদাধিকারী হতে হবে। কিন্তু তার আওয়াজ শুনে
যেন বুঝতে পারে, এই বক্তা যা বলছে তার কথার ভ্যাল্যু আছে। যদি সে অনুভব থেকে বলে তবে
তার ভ্যাল্যু থাকবে। মাইক তো যেমন অনেক হয়, কিন্তু এক একটা মাইক এক এক রকমের
পাওয়ারের হয়ে থাকে । সেই রকমই এমন মাইক খোঁজো, যার আওয়াজে শক্তি থাকবে। তার আওয়াজ
শুনে যেন লোকের উপলব্ধি হয় যে এ' অনুভব করে এসেছে, সুতরাং অবশ্য কোনো বিষয় আছে!
বর্তমান সময়ে অবশ্য প্রতিটি জোনে এবং প্রতিটি বর্গে মাইক বের হয়েছে। বাপদাদা এটা
বলেন না যে সেবার প্রত্যক্ষ রেজাল্ট বের হয়নি, বের হয়েছে। কিন্তু এখন সময় কম আর
তোমাদের সেই আত্মাদের নিমিত্ত বানাতে হবে যাদের সেবার মহত্ত্ব আছে। যাদের আওয়াজের
ভ্যাল্যু আছে। যদি বা পদ না থাকে, কিন্তু তাদের প্র্যাকটিক্যাল লাইফ আর
প্র্যাকটিক্যাল অনুভবের অথরিটি থাকবে। বুঝেছো কেমন মাইক প্রয়োজন? উত্তরাধিকারীকে তো
জানোই তোমরা। যার প্রতি শ্বাসে, প্রতি কদমে বাবা আর কর্তব্য এবং সেইসাথে
মন-বচন-কর্ম, তন-মন-ধন সবকিছুতে বাবা আর যজ্ঞ সমাহিত হয়ে থাকে। অসীম জগতের সেবা
সমাহিত থাকবে। সকাশ দেওয়ায় সমর্থ হবে। আচ্ছা।
এখন এক সেকেন্ডে, এক সেকেন্ড হলো? এক সেকেন্ডে সমগ্র সভা যে যেখানেই আছ সেখানে মনকে
একই সঙ্কল্পে স্থিত করো - বাবা আর আমি পরমধামে অনাদি জ্যোতির্বিন্দু স্বরূপ, পরমধামে
বাবার সাথে বসে যাও। আচ্ছা। এখন সাকারে এসো।
এখন, বর্তমান সময়ের হিসেবে মন-বুদ্ধিকে একাগ্র করার অভ্যাস করো, যে কার্য তোমরা করছ
সেই কার্যে মনকে একাগ্র করো, বেশি বাড়াও কন্ট্রোলিং পাওয়ার। মন-বুদ্ধি-সংস্কার এই
তিনের ওপর কন্ট্রোলিং পাওয়ার। এই অভ্যাস আগত সময়ে অনেক সহযোগ দেবে। বায়ুমণ্ডল
অনুসারে এক সেকেন্ডে কন্ট্রোল করতে হবে। যা চাইবে সেটা হতে হবে। তো এই অভ্যাস অতি
অবশ্যাক। এটা শিথিল হতে দিও না। কেননা, সময়কালে এটাই অন্তে আনন্দ আর প্রসন্নতা দেবে।
আচ্ছা।
চতুর্দিকের ডবল আসনে আসীন, বাপদাদার সিংহাসনাসীন, সাথে বিশ্ব রাজ্যের আসন অধিকারী,
সদা নিজের অনাদি স্বরূপ, আদি স্বরূপ, মধ্য স্বরূপ, অন্তিম স্বরূপে যখনই চায় তখনই
স্থিত হয়, সদা সর্ব ভাণ্ডার স্বয়ং কার্যে প্রয়োগ করে এবং অন্যদেরও ভাণ্ডারে সম্পন্ন
বানায়, সর্ব আত্মাকে বাবার দ্বারা মুক্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করায়, এমন পরমাত্ম
ভালোবাসার যোগ্য আত্মাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন, হৃদয়ের আশীর্বাদ আর নমস্কার।
বরদান:-
সাথি আর সাক্ষীভাবের অনুভবের দ্বারা সদা সফলতা মূর্ত
ভব
যে বাচ্চারা সদা বাবার সাথে থাকে তারা আপনা থেকেই
সাক্ষী হয়ে যায়। কেননা, বাবা স্বয়ং সাক্ষী হয়ে পার্ট প্লে করেন। তাইতো তাঁর সাথে
যারা থাকে তারাও সাক্ষী হয়ে পার্ট প্লে করবে। তাছাড়া, যাদের সাথি স্বয়ং
সর্বশক্তিমান বাবা তারা আপনা থেকেই সফলতা মূর্ত হয়েই যায়। ভক্তিমার্গে তো চিৎকার করে
অল্প সময়ের সাথের অনুভব করাও, ক্ষণিকের জন্য দেখা দাও কিন্তু তোমরা সর্ব সম্বন্ধে
সাথি হয়ে গেছো - তাইতো এই খুশি আর নেশায় থাকো - যা পাওয়ার ছিল পেয়ে গেছি।
স্লোগান:-
ব্যর্থ সঙ্কল্পের লক্ষণ হলো - মন উদাস আর খুশি গায়েব।
অব্যক্ত ইশারা :- এখন সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন
লাগাও বহুকাল অটল-অনড়, নির্বিঘ্ন, নির্বন্ধন, নির্বিকল্প, নির্বিকর্ম অর্থাৎ
নিরাকারী, নির্বিকারী এবং নিরহঙ্কারী স্থিতিতে থাকো, তবে কর্মাতিত হতে পারবে। সেবার
বিস্তার যতই বাড়াও না কেন, কিন্তু বিস্তারে যেতে যেতে সার এর স্থিতির অভ্যাস যেন কম
না হয়ে যায়, বিস্তারে যেন সার ভুলে যেও না। খাও-দাও, সেবা করো কিন্তু স্বতন্ত্রতা
ভুলো না।