08-06-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
15-11-2005 মধুবন
“নির্মল হৃদয়ের সাথে বাবা ও পরিবারের স্নেহী হয়ে
পরিশ্রম মুক্ত হওয়ার প্রতিজ্ঞা করো এবং সুবিধা নাও”
আজ বাপদাদা চতুর্দিকে নিজের শ্রেষ্ঠ স্বরাজ্য অধিকারী, স্বমানধারী বাচ্চাদের দেখছেন।
বাবা বাচ্চাদের নিজের থেকেও উঁচু স্বমান দিয়েছেন। প্রত্যেক বাচ্চাকে পায়ে পড়া
থেকে নিষ্কৃতি দিয়ে মাথার মুকুট বানিয়ে দিয়েছেন। নিজেকে সদাই প্রিয় বাচ্চাদের
সেবাধারী বলেছেন। এত বড় অথরিটির স্বমান দিয়েছেন বাচ্চাদের। তো প্রত্যেকে তোমরা
নিজেকে এত স্বমানধারী মনে করো? স্বমানধারীর বিশেষ লক্ষণ কী? যে যত স্বমানধারী হবে
ততোই সবাইকে সম্মান দেবে। যত স্বমানধারী ততই নির্মল স্বভাবের, সকলের স্নেহী হবে।
স্বমানধারীর লক্ষণ - বাবার প্রিয় হয় সেই সাথে সকলের প্রিয়। সীমিত দুনিয়ার প্রিয়
হওয়া নয়, অসীম জগতের প্রিয়। যেমন, বাবা সকলের প্রিয়, হতে পারে কেউ এক মাসের
বাচ্চা, কেউ আদি রত্ন কিন্তু প্রত্যেকে মানে আমি বাবার, বাবা আমার। এই লক্ষণ হলো
সকলের প্রিয় হওয়ার, শ্রেষ্ঠ স্বমানের, কেননা, এমন বাচ্চারা ফলো ফাদার করে। দেখ,
বাবা সব বর্গের বাচ্চাদের, ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে অভিজ্ঞসম বাচ্চাদের স্বমান
দিয়েছেন। ইয়ুথদের বিনাশকারী থেকে বিশ্ব কল্যাণকারীর স্বমান দিয়েছেন। মহান
বানিয়েছেন। যারা প্রবৃত্তির তাদেরকে বড় বড়ো জগৎ গুরু, মহাত্মাদের থেকেও উঁচু
বানিয়েছেন। তারা প্রবৃত্তিতে থাকলেও তাদের ঊর্ধ্বে হওয়ার অনুভূতি থাকে, এমন
মহাত্মাদেরও বিনয়াবনত হতে শিখিয়েছেন। কন্যাদের শিবশক্তি স্বরূপের স্বমান স্মরণ
করিয়ে দিয়েছেন, সেইরূপ বানিয়েছেন। অভিজ্ঞ বাচ্চাদের ব্রহ্মাবাবার মতো একসমান
অনুভাবী স্বমান দিয়েছেন। এভাবেই স্বমানধারী বাচ্চারা সব আত্মাকে এরকম স্বমানের সাথে
দেখবে। শুধু দেখবে না বরং সম্বন্ধ সম্পর্কে আসবে। কেননা, স্বমান দেহ অভিমান সমাপ্ত
করে দেয়। যেখানে স্বমান থাকবে সেখানে দেহের অভিমান থাকবে না। অনেক সহজ সাধন হলো,
দেহ অভিমান সমাপ্ত করার জন্য সদা স্বমানে থাকতে হবে। সদা প্রত্যেককে স্বমানের সাথে
দেখতে হবে। হতে পারে কেউ পেয়াদা, অথবা কেউ ১৬ হাজারের মালায় লাস্ট নম্বরের, কিন্তু
লাস্ট নম্বরও ড্রামা অনুসারে বাবা দ্বারা কোনো না কোনো বিশেষত্ব আছে। স্বমানধারী
বিশেষত্ব দেখে স্বমান দিয়ে থাকে। তার দৃষ্টিতে, বৃত্তিতে, কৃতিতে, প্রত্যেকের
বিশেষত্ব সমাহিত হয়ে থাকে। যারাই বাবার হয়েছে তারা বিশেষ আত্মা, হতে পারে
নম্বরক্রম রয়েছে কিন্তু দুনিয়ার কোটি কোটির মধ্যে তারা কেউ। এরকমভাবে সবাই নিজেকে
বিশেষ আত্মা মনে করো? স্বমানে স্থিত থাকতে হবে। দেহ অভিমানে নয়, স্বমানে।
প্রত্যেক বাচ্চার প্রতি বাবার ভালোবাসা রয়েছে কেন? কারণ বাবা জানেন আমাকে চিনে
বাচ্চারা আমার হয়েছে, তাই না! হতে পারে আজ এই মেলাতেও প্রথমবার কেউ এসেছ, তবুও বাবা
বলেছ, তো বাবার ভালবাসার যোগ্য হয়ে গেছ। বাপদাদার চতুর্দিকের সব বাচ্চারা সবার থেকে
প্রিয়। ফলো ফাদার এমনই, কেউই অপ্রিয় নয়, সর্বপ্রিয়। দেখো, যে বাচ্চারাই আমার
বাবা বলে, তো 'আমার' এই ভাব কে এনেছে? স্নেহ। যারাই এখানে বসে আছ, তোমরা মনে করো যে
স্নেহই বাবার বানিয়ে নিয়েছে। বাবার স্নেহ চুম্বক, স্নেহের চুম্বক দ্বারা বাবার হয়ে
গেছ। হৃদয়ের স্নেহ, কথার স্নেহ নয়। হৃদয়ের স্নেহ এই ব্রাহ্মণ জীবনের ফাউন্ডেশন।
মিলন উদযাপন করতে কেন আসো? স্নেহ নিয়ে আসে তো না! তোমরা সবাই যারা বসে আছ, এখানে
এসেছ, কেন এসেছো? স্নেহ টেনে এনেছে, তাই না! কত স্নেহ আছে? ১০০% আছে নাকি কম আছে?
যে মনে করে স্নেহে আমি ১০০%, সে হাত উঠাও। স্নেহতে ১০০%। একটুও কম নয়? আচ্ছা। তো
ব্রাহ্মণদের নিজেদের মধ্যে এত স্নেহ আছে? এই ব্যাপারে হাত উঠাবে? এতে পার্সেন্টেজ
আছে। যেমন সবার প্রতি বাবার স্নেহ আছে, তেমনই বাচ্চাদেরও সবার প্রতি স্নেহ আছে,
সবার স্নেহী। অন্যের দুর্বলতা দেখো না। যদি কেউ সংস্কারের বশীভূত হয়, তো কাকে ফলো
করতে হবে, যে বশীভূত তাকে? তোমরা বশীভূত মন্ত্র দিয়ে থাকো, বশীভূত হওয়া থেকে
রেহাই পাওয়ার মন্ত্র, রেহাইপ্রাপ্ত করাও তো না! নাকি তোমরা দর্শক? তোমাদের দেখা
দিয়ে যায় কি? যদি কোনো খারাপ জিনিস দেখাও দেয়, তো কী করো তোমরা? দেখতেই থাকো,
নাকি সরিয়ে দাও? কেননা, বাপদাদা দেখেছেন যে, যারা হৃদয়ের স্নেহী, বাবার হৃদয়ের
স্নেহী তারা অবশ্যই সর্বস্নেহী হবে। হৃদয়ের স্নেহী হওয়ার খুব সহজ বিধি হলো
সম্পন্ন আর সম্পূর্ণ হওয়ার। কেউ যতই জ্ঞানী হোক না কেন, কিন্তু যদি হৃদয়ের স্নেহ
না থাকে তবে ব্রাহ্মণ জীবন তৃপ্তিকর জীবন হবে না। রুক্ষ-শুষ্ক জীবন হবে। কেননা,
জ্ঞানের ক্ষেত্রে, জ্ঞান যদি স্নেহ বিনা হয় তবে জ্ঞানের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে কেন, কী!
কিন্তু স্নেহসহ জ্ঞান হলে স্নেহী সদা স্নেহে লাভলীন থাকে। স্মরণ করার জন্য স্নেহীকে
পরিশ্রম করতে হয় না। শুধু জ্ঞানী, স্নেহ নেই তো পরিশ্রম করতে হয়। এরা পরিশ্রমের
ফল খায়, তারা ভালবাসার ফল খায়। জ্ঞান বীজ, কিন্তু জল স্নেহ। যদি বীজ স্নেহের জল
না পায় তবে ফল বেরোয় না। তাইতো, আজ বাপদাদা সব বাচ্চার হৃদয়ের স্নেহ চেক করছিলেন।
তা' বাবার প্রতি হোক কিম্বা সবার প্রতি। তো সবাই তোমরা নিজেকে কী মনে করো? স্নেহী?
তোমরা স্নেহী? যে মনে করো হৃদয়ে স্নেহী, সে হাত তোলো। সর্বস্নেহী? সবার স্নেহী?
আচ্ছা - বাবার তো হৃদয়ের স্নেহী তোমরা, সবার স্নেহী হয়েছো? সবার? প্রত্যেকে তোমরা
মনে করো এরা আমার ভাই-বোন? প্রত্যেকে মনে করো এরা আমার? নাকি কেউ কেউ মনে করো? যেমন,
বাবার স্নেহে সবাই হাত তোলে - হ্যাঁ, তোমরা বাবার স্নেহী, তেমনই তোমরা প্রত্যেকের
জন্য হাত তুলবে যে হ্যাঁ এ' সর্বস্নেহী? এই সার্টিফিকেট পাবে? কারণ বাপদাদা আগেও
বলেছেন যে শুধু বাবার থেকে সার্টিফিকেট নিলে হবে না, ব্রাহ্মণ পরিবারের থেকেও নিতে
হবে, কেননা এই সময় বাবা ধর্ম ও রাজ্য উভয়ই একসাথে স্থাপন করছেন। রাজ্যে শুধু বাবা
থাকবেন না, পরিবারও থাকবে। বাবার প্রিয়, পরিবারেরও প্রিয় হওয়া দরকার। জ্ঞানী
হয়েছ, কিন্তু সেইসঙ্গে স্নেহী হওয়াও আবশ্যক। ব্রাহ্মণ জন্ম নেওয়ার সাথে সাথেই
বাবা প্রত্যেকে বাচ্চাকে সম্মান দিয়েছেন, তবে তো উঁচু হয়েছ তোমরা। এই এক জন্ম
সম্মান দিতে হবে আর সমগ্র কল্প তার প্রালব্ধ রূপে সম্মান প্রাপ্ত হবে। অর্ধেক কল্প
রাজ্য অধিকারীর সম্মান প্রাপ্ত হয়, অর্ধেক কল্প ভক্তিতে ভক্তদের দ্বারা সম্মান লাভ
হয়। কিন্তু সমগ্র কল্পে এর আধার হলো এই এক জন্ম সম্মান দেওয়া, সম্মান নেওয়া।
এখন-এখনই বাপদাদা দেখছেন বিদেশে চতুর্দিকে কেউ কেউ রাতে, কেউ কেউ দিনে মিলন উদযাপন
করছে। ভালো পুরুষার্থের গতি বাড়াতে তোমরা দাদিও ভালো পেয়েছো। এরকমই তো না?
সামান্য একটু যদি খামতি দেখে, সেই সময়ই ক্লাসে সেই ব্যাপারে ক্লাস করান। যে কোনো
বাচ্চার, তারা দেশের হোক বা বিদেশের, কোনও সাব্জেক্টে তাদের পরিশ্রম লাগার মূল কারণ
হৃদয়ের স্নেহের খামতি। স্নেহ মানে লভলীন। স্মরণ করতে হয় না, স্মরণ ভুলে যাওয়া
কঠিন হয়। যদি পরিশ্রম করতে হয় তো তার কারণ আছে, হৃদয়ের স্নেহ চেক করো। কোথাও
লিকেজ নেই তো? হতে পারে সেটা কোনো ব্যক্তির প্রতি আকর্ষণ, অথবা ব্যক্তির বিশেষত্বের
প্রতি, কিংবা কোনো উপকরণের প্রতি অথবা স্যালভেশন বা এক্সট্রা স্যালভেশন এর প্রতি,
নিয়ম অনুযায়ী পর্যাপ্ত স্যালভেশন (সাধন/সুযোগ সুবিধা) ঠিক আছে, কিন্তু এক্সট্রা
স্যালভেশন এর প্রতিও তোমাদের ভালবাসা হয়, আকর্ষণ থাকে। নিরন্তর সেই স্যালভেশন তোমরা
স্মরণ করতে থাকো। তার লক্ষণ হলো - কোথাও যদি লিকেজ থাকে তাহলে যে কোনো কারণে জীবনে
সদা সন্তুষ্টতার অনুভূতি হবে না। কোনো না কোনো কারণে অসন্তুষ্টতার অনুভব করাবে। আর
যেখানে সন্তুষ্টতা থাকবে তার লক্ষণ হবে সদা প্রসন্নতা। সদা রূহানী গোলাপের মতো হাসতে
থাকবে, প্রস্ফুটিত (প্রকাশমান )থাকবে। মুড অফ হবে না, সদা ডবল লাইট। সুতরাং বুঝেছ
পরিশ্রম থেকে এখন সুরক্ষিত থাকো। বাচ্চাদের পরিশ্রম বাপদাদার ভালো লাগে না। অর্ধেক
কল্প তোমরা পরিশ্রম করেছ, এখন নির্মল আনন্দ করো। ভালবাসায় লাভলীন থেকে অনুভবের মোতি
জ্ঞানের সাগর-তলে অনুভব করো। কেবল ডুব দিয়ে সাগর থেকে বের হয়ে এসো না, ডুবে থাকো।
সবাই প্রতিজ্ঞা করেছ তো না যে সাথে থাকবে, সাথে যাবে? করেছো, প্রতিজ্ঞা করেছ? সাথে
যাবে নাকি পিছনে পিছনে আসবে? যে সাথে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত সে হাত তোলো। প্রস্তুত
আছ এটা জেনে বুঝে হাত তোলো, প্রস্তুত আছো অর্থাৎ বাবা সমান। কে সাথে যাবে? যে সমান
সেই তো সাথে যাবে, তাই না! তো যাবে সাথে? এভাররেডি? প্রথম লাইন এভাররেডি? এভাররেডি?
কাল যাওয়ার জন্য অর্ডার করলে যাবে? আচ্ছা, যারা প্রবৃত্তির তারা যাবে? বাচ্চারা
স্মরণে আসবে না? মাতারা যাবে? মাতারা প্রস্তুত? স্মরণে আসবে না? টিচারদের সেন্টার
স্মরণে আসবে, জিজ্ঞাসু স্মরণে আসবে? স্মরণে আসবে না? আচ্ছা। সবাই তোমরা নির্মোহ হয়ে
গেছ! তবে তো খুব ভালো ব্যাপার। তাহলে তো পরিশ্রম করতে হবে না, তাই না।
আজ হয় তোমরা সমুখে বসে আছো অথবা দূরে বসেও বাবার হৃদয়ে বসে আছো, আজকের দিনে
বাপদাদা সবাইকে পরিশ্রম মুক্ত বানাতে চান। হবে? তালি তো বাজিয়ে দিয়েছ, তোমরা হবে?
কাল থেকে দাদিদের কাছে যাবে না। তোমাদের জন্য তাদের পরিশ্রম করাবে না, তাই তো না?
সানন্দে সাক্ষাৎ (দেখা করা) করবে। জোন হেডের কাছে যাবে না, কমপ্লেন করবে না,
কমপ্লিট, ঠিক আছে? এখন হাত উঠাও। দেখো, ভেবেচিন্তে হাত তুলো, অনর্থক তুলো না। প্রথম
লাইন উঠাচ্ছে না। তোমরা উঠিয়েছ। কোনো কমপ্লেন নেই। কোনো আমার আমার নেই, কেউ আমার
নেই। আমিও নেই, আমারও নেই, দেখো, তোমরা প্রতিজ্ঞা তো করেছ, সেটা ভালো, অভিনন্দন!
কিন্তু কী হয়, প্রতিজ্ঞা থেকে লাভ করতে পারো না। খুব তাড়াতাড়ি প্রতিজ্ঞা করে নাও
কিন্তু প্রাপ্তির জন্য রোজ তোমরা এক তো রিয়ালাইজেশন করো, আরেক রিভাইস করো, রোজ
প্রতিজ্ঞা রিভাইস করো কি প্রতিজ্ঞা করেছো! অমৃত বেলায় মিলনের পর প্রতিজ্ঞা আর
প্রাপ্তি দুইয়ের ব্যালেন্সের চার্ট বানাও। কী প্রতিজ্ঞা করেছো! আর কী প্রপ্তিলাভ
করেছো? রিয়ালাইজ করো, রিভাইস করো, যদি ব্যালেন্স হয়ে যায় তবে ঠিক হয়ে যাবে।
বাপদাদা জানেন যারা মিটিং করে তারা প্রতিজ্ঞা করেছে।
বাপদাদা দেখেছেন তোমরা খুব ভালো ভালো প্ল্যান বানাও, বাপদাদার পছন্দ। বাপদাদা কী
চান? বাপদাদা কেবল একটা কথা চান - সেই একটা কথা হলো - সফল করো, সফল হও। যে সমূহ
ভাণ্ডার তোমাদের রয়েছে, শক্তি, সংকল্প, বোল, কর্মও শক্তি, এই সময়ও মহা মূল্যবান
শক্তি - এই সব ভাণ্ডার সময়োপযোগী করতে হবে। তা' স্থূল ধন হোক কিম্বা অলৌকিক
ভাণ্ডার, সব সফল করতে হবে। সফলতা- মূর্ত হওয়ার সার্টিফিকেট নিতেই হবে। সফল করো আর
সফল করাও। যদি কেউ সময়োপযোগী না করতে পারে তাহলে বোল দ্বারা শিক্ষা না দিয়ে নিজের
শুভ কামনা শুভ ভাবনা এবং সদা শুভ সম্মান দেওয়ার মাধ্যমে সফল করাও। কেবল শিক্ষণ দিও
না, যদি শিক্ষণ দিতেই হয় তবে ক্ষমা এবং শিক্ষা তথা ক্ষমারূপ হয়ে শিক্ষণ দাও।
মার্সিফুল হও, হৃদয়বান হও। তোমাদের মার্সিফুল রূপ অবশ্যই শিক্ষার ফল দেখাবে। দেখ,
আজকাল যারা সায়েন্সের লোক তারাও অপারেশন করার আগে প্রথমে কী করে? প্রথমে পরামর্শ
করে নেয়। পরে কাটে, প্রথমেই কাটে না, টিঞ্চার লাগায়, ফুঁ দেয় আবার টিঞ্চার লাগায়।
তো তোমরাও প্রথমে মার্সিফুল হও, তারপরে শিক্ষণ দাও, তাহলে তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে,
নয়তো কী হয় - তোমরা যখন শিক্ষণ দিতে শুরু করো, আগে থেকেই তারা তোমাদের থেকে বেশি
ওস্তাদ (শিক্ষক)। তো শিক্ষক, শিক্ষকের শিক্ষণ গ্রহণ করতে নারাজ। তাদেরকে তোমরা যে
পয়েন্ট বলবে - এভাবে ক'রো না, এভাবে করো, তা' কাট করার জন্য তাদের কাছে ১০ পয়েন্ট
হবে। সেইজন্য ক্ষমা এবং শিক্ষা একসাথে হওয়া দরকার। তো এই ৭০ বছরের থিম হলো - সফল
করো, সফল করাও। সফলতা মূর্ত হও। সব সফল করো। ডবল লাইট হতে হবে তো না! সুতরাং
সময়োপযোগী করে নাও। সংস্কারও সফল করো। তোমরা সব আত্মার যে অরিজিনাল আদি সংস্কার,
দৈবী সংস্কার, অনাদি সংস্কার তা' ইমার্জ করো। ভুল সংস্কারের সংস্করণ করো। আদি অনাদি
সংস্কার ইমার্জ করো। এখন, সকলের একটা কমপ্লেন বিশেষভাবে থেকে গেছে - সংস্কার বদলায়
না, সংস্কার বদলায় না।
সবাই পরিশ্রম মুক্ত হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছ, করেছো না? করেছো? ফটো তোলো। তো এখন এক
মিনিটের জন্য আপন হৃদয় থেকে এই প্রতিজ্ঞায় দৃঢ়তার আন্ডারলাইন করো। নিজের মনে
পাক্কা করো।(ড্রিল) আচ্ছা।
চতুর্দিকের স্বমানধারী সর্ব বাচ্চাকে, সদা বাবার হৃদয়ের স্নেহী, সকলের স্নেহী
শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, যারা সদা পরিশ্রম মুক্ত, জীবন্মুক্ত অনুভব করে এমন তীব্র
পুরুষার্থী বাচ্চাদের, সদা প্রতিজ্ঞা আর প্রতিজ্ঞার প্রাপ্তিলাভ ক'রে ব্যালেন্স রাখে
এমন ব্লিসফুল বাচ্চাদের, সদা পরমানন্দে থাকে, অন্যদেরও পরমানন্দে থাকার অনুভব করায়,
সঙ্গমযুগী এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের অধিকারী বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
নমস্কার।
দাদিদের সাথে :- তোমরা ঠিক আছো
না! সবাই তোমাদের দেখে খুশি হয়। বাবা আর বাচ্চাদের, উভয়কে দেখে খুশি হয়। উভয়ই
সমান। সকলের হারানিধি তোমরা। দাদিদের প্রতি সকলের বিশেষ ভালবাসা আছে তো না! অনেক
ভালবাসা। কারণ যারা নিমিত্ত হয়, সেই নিমিত্ত হওয়া তাদের উপরে দায়িত্বও থাকে,
তাইতো তারাও ঠিক ততটাই ভালবাসা পেয়েছে, কারণ সকলের ভালবাসা আর আশীর্বাদের লিফ্ট
তাদের জীবনেও প্রাপ্ত হয়। তোমরাও যারা নিমিত্ত হও তাদেরও লিফ্ট প্রাপ্ত হয়। কিন্তু
লিফ্টের গিফ্ট যদি কায়েম রাখো তবে অনেক প্রাপ্তিলাভ হতে পারে। এই এক্সট্রা বরদান
তোমরা লাভ করো। যে কোনো কার্যের জন্য - তা' ঈশ্বরীয় কার্যে হোক বা যজ্ঞ সেবাতে যারা
বিশেষ নিমিত্ত হয়ে থাকে, তাদের আশীর্বাদ আর ভালবাসা উভয় লিফ্ট প্রাপ্ত হয়।
ভালবাসা এক এমন জিনিস যে কী থেকে কী বানিয়ে দেয়! আজ দুনিয়াতেও যে কোনও কাউকে
জিজ্ঞাসা করো কি চাই, বলবে ভালবাসা চাই। শান্তি চাই। যতই হোক, সেটা কেবল পাওয়া যেতে
পারে ভালবাসার দ্বারা। সুতরাং ভালোবাসা, আত্মিক ভালবাসা সবচাইতে শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা।
বরদান:-
কম্বাইন্ড স্বরূপের স্মৃতির দ্বারা অবিস্মৃত হয়ে
নিরন্তর যোগী ভব
যে বাচ্চারা নিজেকে বাবার সাথে কম্বাইন্ড অনুভব করে
তাদের নিরন্তর যোগী ভব'র বরদান আপনা থেকেই প্রাপ্ত হয়, কেননা তারা যেখানেই থাকে
মিলন মেলা হতে থাকে। তাদেরকে কেউ যতই ভুলিয়ে দিতে চেষ্টা করুক না কেন তারা কিন্তু
অবিস্মৃত হয়। এমন অবিস্মৃত বাচ্চারা বাবার অতি প্রিয় তারাই নিরন্তর যোগী হয়।
কেননা, ভালবাসার লক্ষণ হলো - স্বত: স্মরণ। তাদের সংকল্পের নখাগ্রও মায়া নাড়াতে
পারে না।
স্লোগান:-
কারণ শোনানোর পরিবর্তে যদি তার নিবারণ করে নাও তাহলে
আশীর্বাদের অধিকারী হয়ে যাবে।
অব্যক্ত ইশারা :- আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো,
অন্তর্মুখী হও অন্তর্মুখী হয়ে জ্ঞান মননের অভ্যাস দ্বারা অলৌকিক আনন্দে সদা মজে
থাকলে এই দুনিয়ার ঝামেলা ঝঞ্ঝাট নিজের দিকে আকর্ষণ করবে না। যেমন, মিলিটারি যখন
আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যায় তখন বাইরের বম্বস ইত্যাদির প্রভাব পড়ে না। তোমরা
অন্তর্মুখী, আত্মিক স্থিতিরূপী আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকার অভ্যাস করো তাহলে
বহির্মুখিতার পরিস্থিতি ডিস্টার্ব করবে না।