08.11.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা দেহী-অভিমানী হও, তবেই সকল রোগ সমাপ্ত হয়ে যাবে আর তোমরা ডবল মুকুটধারী
বিশ্বের মালিক হয়ে যাবে"
প্রশ্নঃ -
বাবার সম্মুখে
কোন্ বাচ্চাদের বসা উচিত?
উত্তরঃ
যারা
জ্ঞান-ডান্স করতে জানে। জ্ঞান-ডান্স করা বাচ্চারা যখন বাবার সম্মুখে থাকে, তখন
মুরলীও এমনভাবেই চলতে থাকে। যদি কেউ সম্মুখে বসে এ'দিকে-ও'দিকে দেখে তখন বাবা বুঝে
যান যে, এই বাচ্চা কিছুই বোঝে না। তখন বাবা ব্রাহ্মণীদেরকেও বলবেন যে, এ কাকে নিয়ে
এসেছো, যে বাবার সামনেও হাই তুলছে। বাচ্চারা তো এমন বাবা পেয়েছে যে খুশীতে তাদের
ডান্স করা উচিত।
গীতঃ-
দূরদেশ নিবাসী...
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
বাচ্চারা গান শুনেছো। আত্মা-রূপী বাচ্চারা মনে করে আধ্যাত্মিক পিতা যাকে আমরা স্মরণ
করে এসেছি, দুঃখ-হরণকারী, সুখ-প্রদানকারী বা তুমি মাতা-পিতা....পুনরায় এসে আমাদের
গভীর সুখ প্রদান করো, আমরা দুঃখী, সমগ্র এই দুনিয়াই দুঃখী কারণ এ হলো কলিযুগীয়
পুরানো দুনিয়া। পুরানো দুনিয়া বা পুরানো ঘরে এত সুখ থাকতে পারে না, যতখানি নতুন
দুনিয়া, নতুন ঘরে থাকে। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, আমরা বিশ্বের মালিক, আদি সনাতন
দেবী-দেবতা ছিলাম, আমরাই ৮৪ জন্ম নিয়েছি। বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা নিজেদের
জন্মকে জানো না যে কত জন্ম তোমরা নিজেদের ভূমিকা পালন করেছো। মানুষ মনে করে ৮৪ লক্ষ
বার পুনর্জন্ম হয়। একেকটি পুনর্জন্ম কত বছরের হয়। ৮৪ লক্ষের হিসেবানুযায়ী তো
সৃষ্টি-চক্র অনেক বড় হয়ে যায়। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, আত্মা-রূপী আমাদের পিতা
পড়াতে এসেছেন। আমরাও দূরদেশে থাকি। আমরা এখানকার অধিবাসী নই। এখানে আমরা নিজের
নিজের পার্ট প্লে করতে এসেছি। বাবাকেও আমরা পরমধামেই স্মরণ করি। এখন এই পরের দেশে
এসেছি। শিবকে বাবা বলবো। রাবণকে বাবা বলবো না। ঈশ্বরকে বাবা বলবো। বাবার মহিমা আলাদা,
৫ বিকারের কি কেউ মহিমা করবে! দেহ-অভিমান হলো সর্বাপেক্ষা বড় রোগ। আমরা দেহী-অভিমানী
হলে তখন কোনো রোগ থাকবে না আর আমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাব। একথা তোমাদের বুদ্ধিতে
রয়েছে। তোমরা জানো যে, শিববাবা আত্মা-রূপী আমাদের পড়ান। আর এত যেসকল সৎসঙ্গাদি রয়েছে,
কোথাও এরকম মনে করা হয় না যে, আমাদের বাবা এসে রাজযোগ শেখাবেন। রাজত্বের জন্য
পড়াবেন। রাজা তৈরী করার জন্য তো রাজাই চাই, তাই না! সার্জেন পড়িয়ে নিজের মতন
সার্জেনই করবে। আচ্ছা! ডবল মুকুটধারী যিনি বানাবেন তিনি কোথা থেকে আসবেন! তিনি যখন
আমাদের ডবল মুকুটধারী বানিয়েছেন, তাই মানুষ পুনরায় কৃষ্ণের নাম ডবল মুকুটধারী রেখে
দিয়েছে। কিন্তু কৃষ্ণ কিভাবে পড়াবে। অবশ্যই বাবা সঙ্গমে এসেছিলেন, এসে রাজত্ব
স্থাপন করেছিলেন। বাবা কিভাবে আসেন, একথা তোমরা ছাড়া আর কারোর বুদ্ধিতেই থাকবে না।
দূরদেশ থেকে বাবা এসে আমাদের পড়ান, রাজযোগ শেখান। বাবা বলেন, আমার কোনো আলোর বা
রত্ন জড়িত মুকুট নেই। তিনি কোনো রাজত্ব পান না। ডবল মুকুটধারী হন না, অন্যদের করেন।
বাবা বলেন, আমি যদি রাজা হতাম তবে আমায় ফকিরও হতে হতো। ভারতবাসীরা রাজা ছিল এখন
ফকির হয়ে গেছে। তোমরাও ডবল মুকুটধারী হও, তোমাদের যিনি তৈরী করেন তাঁরও ডবল
মুকুটধারীই হওয়া উচিত, যাতে তোমাদের যোগও লাগে। যে যেমন হবে সে তেমনই নিজের মতন তৈরী
করবে। সন্ন্যাসীরা প্রচেষ্টা করে সন্ন্যাসী করার। তোমরা গৃহস্থী আর তারা সন্ন্যাসী
তাহলে তোমরা তো ফলোয়ার্স নও। তারা বলে - অমুকে শিবানন্দের ফলোয়ার। কিন্তু
সন্ন্যাসীরা মুণ্ডিত মস্তক হয় কিন্তু তোমরা তো তা ফলো করো না। তবে তোমরা ফলোয়ার কেন
বলো। ফলোয়ার তো সে-ই যে তৎক্ষনাৎ বস্ত্র ছেড়ে কফন পড়ে নেবে। তোমরা তো
গৃহস্থ-ব্যবহারে বিকারাদির মধ্যে থাকো তাহলে শিবানন্দের ফলোয়ার্স কিভাবে বলো। গুরুর
কাজ হলো সদ্গতি করা। গুরু তো এমন বলবে না যে, অমুককে স্মরণ করো। তাহলে তো নিজে গুরু
হলেন না। মুক্তিধামে যাওয়ার জন্যই যুক্তি চাই। বাচ্চারা, তোমাদের বোঝানো হয় যে,
তোমাদের ঘর হলো মুক্তিধাম অথবা নিরাকারী দুনিয়া। আত্মাকে বলা হয় নিরাকারী সোল। শরীর
হলো ৫ তত্ত্বে তৈরী। আত্মা কোথা থেকে আসে? পরমধাম, নিরাকারী দুনিয়া থেকে। ওখানে
অনেক আত্মারা থাকে। ওটাকে বলা হয় সুইট সাইলেন্স হোম। ওখানে আত্মা দুঃখ-সুখ থেকে
মুক্ত অর্থাৎ পৃথক থাকে। এটা ভালমতন পাকা করে নিতে হবে। আমরা হলাম সুইট সাইলেন্স
হোমের অধিবাসী। এখানে এটা হলো নাট্যশালা (রঙ্গমঞ্চ), যেখানে আমরা নিজেদের পার্ট প্লে
করতে আসি। এই নাট্যশালায় সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রাদি আলোকমন্ডলী রয়েছে। কেউ গণনা করতে
পারবে না যে এই নাট্যশালা কত মাইলের অর্থাৎ কত বড়। এরোপ্লেনে করে উপরে যায় কিন্তু
তাতে পেট্রোলাদি এতখানি ঢালতে পারবে না যারফলে গিয়ে পুনরায় ফিরেও আসতে পারে। এতদূর
যেতে পারে না। তারা মনে করে এত মাইল! যদি ফিরে আসতে না পারি তাহলে ধরাশায়ী হয়ে যাব।
সমুদ্র বা আকাশ তত্ত্বের অন্ত পাওয়া যেতে পারে না। এখন বাবা তোমাদের অন্ত বলে দেন।
আত্মা এই আকাশ-তত্ত্বের ও'পারে চলে যায়। কত বড় রকেট। আত্মারা, তোমরা যখন পবিত্র হয়ে
যাবে তখন পুনরায় রকেটের মতন উড়তে থাকবে। রকেট কত ছোট। সূর্য, চন্দ্রেরও ও'পারে
মূললোকে চলে যাবে। সূর্য, চন্দ্রের অন্ত খুঁজে পাওয়ার অনেক প্রচেষ্টা করে। দূরের
তারাগুলিকে কত ছোট দেখতে লাগে। ওগুলো কিন্তু অনেক বড়। যেমন তোমরা ঘুড়ি ওড়াও তখন তা
উপরে কত ছোট-ছোট দেখায়। তোমাদের আত্মা তো সর্বাপেক্ষা তীক্ষ্ণ। সেকেন্ডে এক শরীর
থেকে বেরিয়ে অন্য গর্ভে প্রবেশ করে। কারোর হিসেব-নিকেশ যদি লন্ডনে থাকে, তবে সে
সেকেন্ডে লন্ডনে গিয়ে জন্ম নেবে। সেকেন্ডে জীবনমুক্তির গায়নও রয়েছে, তাই না! বাচ্চা
গর্ভ থেকে বেরোয় আর মালিক হয়, উত্তরাধিকারী হয়েই গেছে। বাচ্চারা, তোমরাও বাবাকে
জেনেছো অর্থাৎ বিশ্বের মালিক হয়ে গেছো। অসীম জগতের পিতাই এসে তোমাদের বিশ্বের মালিক
করে দেন। স্কুলে ব্যারিস্টারি পড়লে তখন ব্যারিস্টার হবে। এখানে তোমরা ডবল মুকুটধারী
হওয়ার জন্য পড়ো। যদি উত্তীর্ণ হও তবে অবশ্যই ডবল মুকুটধারী হবে। তারপর স্বর্গেও
অবশ্যই আসবে। তোমরা জানো, বাবা সদাই ওখানে থাকেন। 'ও গডফাদার' বলবে তবুও দৃষ্টি
কিন্তু অবশ্যই উপরের দিকে থাকবে। যখন গডফাদার তখন অবশ্যই কিছু তো পার্ট থাকবে, তাই
না ! এখন তিনি তাঁর পার্ট প্লে করছেন। ওনাকে বাগান-প্রতিপালকও বলা হয়। এসে কাঁটা
থেকে ফুলে পরিনত করেন। বাচ্চারা, তাহলে তোমাদের খুশী হওয়া উচিত। বাবা এসেছেন এই
পরদেশে। দূরদেশের অধিবাসী এসেছে পরদেশে। দূরদেশের অধিবাসী তো বাবা-ই। আর আত্মারাও
ওখানে থাকে। এখানে ভূমিকা পালন করতে আসে। পরদেশ - এর অর্থ কেউ জানে না। মানুষ
ভক্তিমার্গে যাকিছু শোনে তাতেই তারা সত্য-সত্য করতে থাকে। বাচ্চারা, বাবা তোমাদের
কত ভালভাবে বোঝান। আত্মা অপবিত্র হওয়ার জন্য উড়তে পারে না। পবিত্র না হলে ফিরে যেতে
পারবে না। পতিত-পাবন একমাত্র বাবাকেই বলা হয়। ওনাকে আসতেও হয় সঙ্গমে। তোমাদের কত
খুশী হওয়া উচিত। বাবা আমাদের দ্বিমুকুটধারী বানাচ্ছেন, এর থেকে উচ্চপদ কারোর হয় না।
বাবা বলেন - আমি দ্বিমুকুটধারী হই না। আমি আসিই একবার। পরদেশে, পর-শরীরে। এই দাদাও
বলেন - আমি কি শিব নাকি! না তা নই। আমায় তো লখীরাজ বলা হতো, পুনরায় যখন সমর্পিত হই
তখন বাবা নাম রাখেন ব্রহ্মা। এনার মধ্যে প্রবেশ করে এনাকে বলি যে, তুমি তোমার জন্মকে
জানো না। ৮৪ জন্মের হিসেবও তো থাকা উচিত, তাই না! ওরা তো ৮৪ লক্ষ বলে দেয়, যা একদমই
অসম্ভব। ৮৪ লক্ষ জন্মের রহস্য বোঝাতেই শত-শত বছর লেগে যাবে। স্মরণও করতে পারবে না।
৮৪ লক্ষ যোনীতে তো পশু, পক্ষী ইত্যাদিও সব চলে আসে। মানুষের জন্মই দুর্লভ এমন গায়ন
করা হয়। জানোয়াররা কি বুঝতে পারবে, না তা পারবে না। তোমাদের বাবা এসে জ্ঞান পাঠ
করান। তিনি স্বয়ং বলেন - আমি আসি রাবণ রাজ্যে। মায়া তোমাদের কত
প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন করে দিয়েছে। এখন বাবা তোমাদের পুনরায় পারশবুদ্ধিসম্পন্ন
করছেন। অবতরণ-কলায় তোমরা প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে গেছো। এখনা বাবা-ই তোমাদের
উত্তরণ-কলায় নিয়ে যায়, নম্বরের ক্রমানুসার তো হয়ই, তাই না! প্রত্যেককে নিজের
পুরুষার্থের দ্বারা বুঝতে হবে। স্মরণই হলো মুখ্য কথা। রাতে যখন শুতে যাও তখনও এসব
খেয়াল করো। বাবা আমরা তোমায় স্মরণ করেই শয়ন করি। আমরা অবশ্যই শরীর পরিত্যাগ করে
তোমার কাছে চলে আসি। এমনভাবেই বাবাকে স্মরণ করতে-করতে শুয়ে পড়ো তখন দেখো কেমন মজা
লাগে। সাক্ষাৎকারও হতে পারে। কিন্তু এই সাক্ষাৎকারাদিতে খুশী হওয়া উচিত নয়। বাবা
আমরা তো তোমাকেই স্মরণ করি। তোমার কাছে আসতে চাই। বাবাকে স্মরণ করতে-করতে তোমরা অতি
আরাম করে চলে আসবে। সূক্ষ্মলোকেও চলে যেতে পারো। মূললোকে তো যেতে পারবে না। ফিরে
যাওয়ার সময় এখন কোথায় এসেছে। হ্যাঁ, বিন্দুর সাক্ষাৎকার হয়েছে, পুনরায় ছোট-ছোট
আত্মাপুঞ্জ (বৃক্ষ-সদৃশ) দেখতে পাওয়া যাবে। যেমন তোমাদের বৈকুন্ঠের সাক্ষাৎকার হয়,
তাই না! এমন নয় যে, সাক্ষাৎকার হলেই তোমরা বৈকুন্ঠে চলে যাবে। না তারজন্য তোমাদের
পরিশ্রম করতে হবে। তোমাদের বোঝানো হয় যে, সর্বপ্রথমে তোমরা যাবে সুইট হোমে। সকল
আত্মারা নিজেদের ভূমিকা পালন থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আত্মা পবিত্র
হবে ততক্ষণ পর্যন্ত যেতে পারবে না। এছাড়া সাক্ষাৎকারের দ্বারা কিছুই প্রাপ্ত হয় না।
মীরার সাক্ষাৎকার হয়েছিল, সে কি বৈকুন্ঠে চলে গিয়েছিল, না তা যায় নি। বৈকুন্ঠ তো
সত্যযুগেই হয়। এখন তোমরা বৈকুন্ঠের মালিক হওয়ার জন্য (নিজেদের) তৈরী করছো। বাবা
ধ্যানাদিতে এত যেতে দেন না, কারণ তোমাদের তো পড়তে হবে, তাই না! বাবা এসে পড়ান,
সকলের সদ্গতি করেন। বিনাশও সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এছাড়া অসুর আর দেবতাদের লড়াই তো
হয় না। তারা পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করে তোমাদের জন্য কারণ তোমাদের জন্য নতুন দুনিয়া
চাই। এছাড়া তোমাদের লড়াই হলো মায়ার সঙ্গে। তোমরা হলে অতি খ্যাতনামা যোদ্ধা। কিন্তু
কেউ জানে না যে, দেবীদের এত জয়গান(মহিমা-কীর্তন) কেন গাওয়া হয়। এখন তোমরা ভারতকে
যোগবলের দ্বারা স্বর্গে পরিণত করো। তোমরা এখন বাবাকে পেয়েছো। তোমাদের বোঝান -
জ্ঞানের মাধ্যমে নতুন দুনিয়া জিন্দাবাদ অর্থাৎ দীর্ঘজীবী হয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ
নতুন দুনিয়ার মালিক ছিল, তাই না ! এখন এ হলো পুরানো দুনিয়া। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ
পূর্বেও মূষলের (মিসাইল) দ্বারা হয়েছিল। মহাভারতের লড়াই হয়েছিল। সে'সময় বাবা রাজযোগ
শেখাচ্ছিলেন। এখন বাবা প্র্যাকটিক্যালি রাজযোগ শেখাচ্ছেন, তাই না! বাবা-ই তোমাদের
সত্য বলেন। সত্য-পিতা যখন আসেন তখন তোমরা সদা খুশীতে ডান্স করো। এ হলো
জ্ঞান-ড্যান্স। তাই যাদের জ্ঞান-ডান্সের শখ রয়েছে তাদেরই সম্মুখে বসা উচিত। যারা
বুঝবে না, তারা হাই তুলবে। বোঝা যায় যে, এরা কিছুই বোঝে না। জ্ঞানের কিছুই বোঝে না
তাই এদিক-ওদিক দেখতে থাকে। বাবাও ব্রাহ্মণীকে বলবে যে, এ তুমি কাকে নিয়ে এসেছো। যারা
শেখে আর শেখায় তাদের সম্মুখে বসা উচিত। তাদের খুশী হতে থাকবে। আমাদের ড্যান্স করতে
হবে। এ হলো জ্ঞান-ডান্স। কৃষ্ণ তো না জ্ঞান শুনিয়েছে, না ড্যান্স করেছে। মুরলী তো
জ্ঞানের, তাই না! তাই বাবা বুঝিয়েছেন - রাতে শোওয়ার সময় বাবাকে স্মরণ করতে থাকো,
চক্রকে বুদ্ধিতে স্মরণ করতে থাকো। বাবা আমরা এখন এই শরীর পরিত্যাগ করে তোমার কাছে
আসছি। এমনভাবে স্মরণ করতে-করতে শুয়ে পড়ো পুনরায় দেখো কি হয়। পূর্বে কবরস্থান তৈরী
করে তারপর কেউ শান্তিতে চলে যেতো, কেউ রাস করতে থাকতো। যারা বাবাকে জানেই না, তারা
স্মরণ কিভাবে করবে। মানুষমাত্রই বাবাকে জানে না, তাহলে স্মরণ করবে কিকরে! তখন বাবা
বলেন - আমি যা, আমি যেমন, আমাকে কেউই জানে না। এখন তোমাদের কত বোধ এসেছে। তোমরা হলে
গুপ্ত যোদ্ধা। যোদ্ধা শুনে দেবীদের তরবারি, বাণাদি দিয়ে দিয়েছে। তোমরা যোদ্ধা হলে
যোগবলের। যোগবলের দ্বারা বিশ্বের মালিক হও। বাহুবলের দ্বারা যদিও কেউ-কেউ কতই না
প্রচেষ্টা করে কিন্তু বিজয়প্রাপ্ত করতে পারে না। ভারতের যোগ বিখ্যাত। তা বাবা এসেই
শেখান। এও কারোর জানা নেই। উঠতে-বসতে বাবাকেই স্মরণ করতে থাকো। বলে যে, যোগ লাগে
না। 'যোগ' শব্দটাই সরিয়ে দাও। বাবা তো বাচ্চাদের স্মরণ করে, তাই না! শিববাবা বলেন -
"মামেকম্ স্মরণ করো" । আমিই সর্বশক্তিমান। আমাকে স্মরণ করলে তোমরা সতোপ্রধান হয়ে
যাবে। যখন সতোপ্রধান হয়ে যাবে তখন পুনরায় আত্মাদের বরযাত্রা বেরোবে। যেমন মাছির
ঝাঁক বেরোয় না! এ হলো শিববাবার বরযাত্রা। শিববাবার পিছনে-পিছনে সব আত্মারা মশা সদৃশ
ছটবে। বাকি শরীর এখানেই সমাপ্ত হয়ে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আধ্যাত্মিক পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
রাতে শোওয়ার পূর্বে বাবার সঙ্গে মিষ্টি-মিষ্টি বার্তালাপ করতে হবে। বাবা আমরা এই
শরীর পরিত্যাগ করে তোমার নিকটে যাই, এভাবে স্মরণ করে শুয়ে পড়তে হবে। স্মরণই মুখ্য,
স্মরণের দ্বারাই পারশবুদ্ধিসম্পন্ন হবে।
২ ) ৫ বিকারের রোগ
থেকে বাঁচার জন্য দেহী-অভিমানী হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। অগাধ খুশীতে থাকতে হবে,
জ্ঞান ড্যান্স করতে হবে। ক্লাসে আলস্যের রেশ ছড়িয়ে দিও না।
বরদান:-
সেবার
মাধ্যমে বহু আত্মার আশীর্বাদ লাভ করে সর্বদা অগ্রসর হওয়া মহাদানী ভব
মহাদানী হওয়া অর্থাৎ
অন্যদের সেবা করা। অন্যদের সেবা করলে নিজের সেবাও স্বভাবতঃই হয়ে যায়। মহাদানী হওয়া
অর্থাৎ নিজেকে ধনবান করা। যত বেশি আত্মাদের সুখ, শক্তি ও জ্ঞানের দান দেবে, ততই
আত্মাদের কাছ থেকে প্রাপ্তির আশীর্বাদের শব্দ বা “ধন্যবাদ” বেরিয়ে আসবে, সেটিই
তোমার জন্য আশীর্বাদের রূপে পরিণত হবে। এই আশীর্বাদই হলো অগ্রগতির সাধন। যারা
আশীর্বাদ পায়, তারা সর্বদা সুখী থাকে। তাই প্রতিদিন অমৃতবেলায় মহাদানী হওয়ার
প্রোগ্রাম বানাও। যেন কোনো দিন বা সময় এমন না হয়, যেদিন দান না করা হয়।
স্লোগান:-
বর্তমানের প্রত্যক্ষ ফল আত্মাকে ড়তি কলার বল প্রদান করে।
অব্যক্ত ইশারা :-
অশরীরী ও বিদেহী স্থিতির অভ্যাস বাড়াও
বাবার সমীপ ও সমান হতে
হলে দেহে থেকেও বিদেহী হওয়ার অভ্যাস করো। যেমন কর্মাতীত হওয়ার এক্জাম্পল হিসেবে
সাকারে ব্রহ্মা বাবাকে দেখেছো, তেমনি ফলো ফাদার করো। যতক্ষণ এই দেহে আছো,
কর্মেন্দ্রিয়ের সাথে এই কর্মক্ষেত্রে নিজের পার্ট প্লে করে চলেছো, ততক্ষণ কর্ম করতে
করতেই কর্মেন্দ্রিয়ের আধার নাও তারপর ডিট্যাচ হয়ে যাও। কর্মাতীত অবস্থার ভিত্তিতে
প্রিয় হয়ে উঠবে। এই অভ্যাস বেদেহী বানিয়ে দেবে।