09.06.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা হলে সম্পূর্ণ বিশ্বে শান্তির রাজ্য স্থাপনকারী বাবার সাহায্যকারী, তোমাদের
সামনে এখন সুখ আর শান্তির দুনিয়া"
প্রশ্নঃ -
বাবা তাঁর
বাচ্চাদের কিসের জন্য পড়ান, এই পড়ার সার কি?
উত্তরঃ
বাবা তাঁর
বাচ্চাদের স্বর্গের প্রিন্স, বিশ্বের মালিক বানানোর জন্য পড়ান, বাবা বলেন বাচ্চারা,
এই পড়ার সার হলো, দুনিয়ার সব বিষয়কে ত্যাগ করো, এমন কখনোই মনে করো না যে, আমাদের
কাছে কোটি টাকা আছে বা লাখ টাকা আছে । কিছুই কিন্তু সঙ্গে যাবে না, তাই খুব ভালোভাবে
পুরুষার্থ করো, পড়ার প্রতি নজর দাও ।
গীতঃ-
অবশেষে সেই
দিন এলো আজ.....
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা গান
শুনেছে - অবশেষে এই বিশ্বে শান্তির সময় এসেছে । সবাই বলে, এই বিশ্বে কিভাবে শান্তি
আসবে, তারপর যে সঠিক রায় দেয়, তাকেই প্রাইজ দেয় । নেহেরুও রায় দিয়েছিলেন, কিন্তু
শান্তি তো হয়নি । তিনি কেবল রায় দিয়ে গিয়েছিলেন । বাচ্চারা, এখন তোমাদের বুদ্ধিতে
আছে যে, কোনো এক সময় এই বিশ্বে সুখ, শান্তি, সম্পত্তি ইত্যাদি সব ছিলো । তা এখন আর
নেই । আবার এখন তা হতে চলেছে। চক্র তো ঘুরে আসবেই, তাই না । একথা তোমাদের মতো
সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণদের বুদ্ধিতেই আছে । তোমরা জানো যে, ভারত আবার সোনার হয়ে উঠবে।
ভারতকেই গোল্ডেন স্প্যারো (সোনার চড়ুই) বলা হয় । মহিমা যদিও করে কিন্তু তা এখন
কথার কথা । তোমরা তো এখন প্র্যাক্টিক্যালে পুরুষার্থ করছো । তোমরা জানো যে, আর অল্প
দিনই আছে, তাই এইসব নরকের দুঃখের কথা তোমরা ভুলে যাও । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সুখের
দুনিয়া সামনে উপস্থিত । আগে যেমন বিলেত থেকে ফেরার সময় মনে হতো আর অল্প সময়ই বাকি
আছে পৌঁছাতে, কেননা আগে বিলেত থেকে আসতে অনেক টাইম লাগতো । এখন তো এরোপ্লেনে খুব
তাড়াতাড়ি পৌঁছে যায় । বাচ্চারা, এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, এখন আমাদের সুখের দিন
আসছে, যার জন্য আমরা পুরুষার্থ করছি । বাবা এই পুরুষার্থও অনেক সহজ করে দিয়েছেন ।
ড্রামা অনুসারে আগের কল্পের মতো এও সার্টেন । তোমরা দেবতা ছিলে, দেবতাদের জন্য কতো
মন্দির তৈরী হয়েছে । বাচ্চারা জানে যে, এই মন্দির ইত্যাদি বানিয়ে কি করবে? বাকি আর
কতদিন আছে! বাচ্চারা তোমরা হলে নলেজের অথরিটি । একথা বলা হয় যে, পরমপিতা পরমাত্মা
হলেন সর্বশক্তিমান অলমাইটি অথরিটি । তোমরা হলে জ্ঞানের অথরিটি । ওরা হলো ভক্তির
অথরিটি । বাবাকে বলা হয় অলমাইটি অথরিটি। বাচ্চারা, তোমরাও পুরুষার্থের নম্বর
অনুসারে এমন হচ্ছো । তোমাদের এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান আছে । তোমরা
জানো যে, আমরা পুরুষার্থ করছি বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্য । যারা
ভক্তির অথরিটি, তারা সবাইকে ভক্তির কথা শোনায় । তোমরা হলে জ্ঞানের অথরিটি, তাই তোমরা
জ্ঞানের কথা শোনাও । সত্যযুগে কোনো ভক্তি থাকে না । একজনও পূজারী নেই সেখানে, সকলেই
পূজ্য । অর্ধেক কল্প হলো পূজ্য আর অর্ধেক কল্প পূজারী । ভারতবাসীরা যখন পূজ্য ছিলো,
তখন স্বর্গ ছিলো । এখন ভারত পূজারী, তাই নরক । বাচ্চারা, তোমরা এখন প্র্যাক্টিক্যাল
লাইফ তৈরী করছো । তোমরা পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে সবাইকে বোঝাও আর তখন বৃদ্ধি পেতে
থাকো। এই ড্রামাতে তা পূর্ব নির্ধারিত । ড্রামা তোমাদের দিয়ে পুরুষার্থ করায় আর
তোমরা পুরুষার্থ করতে থাকো । তোমরা জানো যে, এই ড্রামাতে তোমাদের অবিনাশী পার্ট,
দুনিয়া এই বিষয়ে কি করে জানবে? এই ড্রামাতে আমাদেরই পার্ট । যে বলবে, সে নিশ্চয়ই
বুঝতে পেরেছে যে, এই ড্রামাতে আমাদের কিভাবে পার্ট রয়েছে । এই সৃষ্টিচক্র ঘুরতেই
থাকে । ওয়ার্ল্ডের এই হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি তোমরা ছাড়া আর কেউই জানে না । উচ্চ
থেকেও উচ্চ কে, দুনিয়াতে কেউই তা জানে না । ঋষি - মুনিরাও বলতো যে - আমরা জানি না ।
নেতি - নেতি (এও না, ওটাও না) - বলতো, তাই না । বাচ্চারা, এখন তো তোমরা জানো যে,
বাবা হলেন সেই রচয়িতা, যিনি আমাদের পড়ান । বাবা এও বারবার বুঝিয়েছেন যে, তোমরা এখানে
যখন বসো, তখন দেহী - অভিমানী হয়ে বসো । এক বাবাই তোমাদের রাজযোগ শেখান আর এই
ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি বোঝান । বাবা বলেন, আমি কোনো থট রিডার নই, এতো বড়
দুনিয়া, এখানে কিভাবে বসে আমি প্রত্যেকের মনের কথা জানতে পারবো । বাবা তো নিজেই
বলেন, আমি এই ড্রামার সময় অনুসারে আসি তোমাদের পবিত্র করার জন্য । ড্রামাতে আমার যে
পার্ট আছে, তাই আমি পার্ট প্লে করতে আসি । বাকি আমি কারোর মনের কথা পড়তে পারি না,
আমি এ কথাই জানাই যে, ড্রামাতে আমার কি পার্ট আছে, আর তোমরা কি পার্ট প্লে করছো ।
তোমরা এই নলেজ শিখে অন্যদেরও শেখাচ্ছো । আমার পার্টই হলো পতিতকে পবিত্র করা ।
বাচ্চারা, এও তোমরা জানো, তোমরা তিথি - তারিখ ইত্যাদি সবই জানো । দুনিয়াতে এ কথা
কেউ জানেই না । বাবা তোমাদের এখন এই কথা শেখাচ্ছেন, আবার যখন এই চক্র তোমরা
সম্পূর্ণ করবে, তখন বাবা আবার আসবেন । সেই সময় যেসব দৃশ্য চলেছিলো, পরের কল্পেও
এমনই চলবে । এক সেকেণ্ডও অন্য সেকেণ্ডের সঙ্গে মেলে না । এই নাটক আবর্তিত হতে থাকে
। বাচ্চারা, তোমরা এই অসীম জগতের নাটককে জানো । তবুও তোমরা প্রতি মুহূর্তে ভুলে যাও
। বাবা বলেন, তোমরা কেবল স্মরণ করো, আমার বাবা, তিনিই টিচার, তিনিই গুরু । তোমাদের
বুদ্ধি তাঁর দিকেই চলে যাওয়া দরকার । আত্মা বাবার মহিমা শুনে খুশী হয় । সকলেই বলে,
আমার বাবা, তিনি বাবা, আবার টিচারও, তিনিই সত্য । এই পড়াও সত্য এবং সম্পূর্ণ ।
জাগতিক মানুষদের পড়াশোনা হলো অসম্পূর্ণ । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে তাই কতো খুশী
হওয়া উচিত । বড় পরীক্ষা যারা পাস করে তাদের বুদ্ধিতে বেশী খুশী থাকে । তোমরা কতো
উচ্চ পাঠ গ্রহণ করো, তাই তোমাদের কতো খুশীর নেশা থাকা উচিত । ভগবান বাবা, অসীম
জগতের বাবা আমাকে পড়াচ্ছেন । তোমাদের রোমাঞ্চিত হওয়া উচিত । সেই এপিসোডই আবার রিপিট
হচ্ছে, একথা তোমরা ছাড়া আর কেউই জানে না । ওরা কল্পের আয়ু বাড়িয়ে দিয়েছে । তোমাদের
বুদ্ধিতে এখন পাঁচ হাজার বছরের গল্পের এই সম্পূর্ণ চক্র সর্বদা ঘুরতে থাকে, যাকে
স্বদর্শন চক্র বলা হয় ।
বাচ্চারা বলে যে,
অনেক ঝড় আসে, আর আমরা ভুলে যাই । বাবা বলেন, তোমরা কাকে ভুলে যাও? যে বাবা তোমাদের
ডবল মুকুটধারী এই বিশ্বের মালিক বানান, তোমরা তাঁকে ভুলে যাও? দ্বিতীয় অন্য কাউকে
তো ভুলে যাও না । স্ত্রী, সন্তান, কাকা, মামা, আত্মীয় পরিজন সকলেই তো তোমাদের
স্মরণে থাকে । বাকি এই বিষয়কে তোমরা কেন ভুলে যাও । তোমাদের যুদ্ধ এই স্মরণেই, যত
যত সম্ভব, তোমাদের স্মরণ করতে হবে । বাচ্চারা, তোমাদের উন্নতির জন্য ভোরবেলা উঠে
বাবার স্মরণে তোমাদের ভ্রমণ করতে হবে । তোমরা ছাদে বা বাইরের ঠান্ডা হাওয়ায় যাও ।
এখানে এসেই বসতে হবে, এমন কোনো জরুরী নেই । তোমরা বাইরেও যেতে পারো, ভোরের সময় কোনো
ভয় ইত্যাদির বিষয় থাকে না । বাইরে গিয়ে হাঁটতে থাকো । নিজের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলো,
দেখি, কে বাবাকে বেশী স্মরণ করতে পারে, তারপর তোমাদের বলা উচিত যে, কতো সময় আমি
স্মরণ করেছি । বাকি সময় আমাদের বুদ্ধি কোথায় - কোথায় গেছে । একেই বলা হয় একে অপরের
থেকে উন্নতি করা । তোমরা নোট করো, কতো সময় বাবাকে স্মরণ করেছো । কিভাবে অভ্যাস করতে
হবে, বাবাই বলে দেন । এই স্মরণে তোমরা যদি এক ঘন্টাও হাঁটতে থাকো, তাও পা ব্যাথা
করবে না । এই স্মরণে তোমরা কতো পাপ মুক্ত হবে । চক্রকে তো তোমরা জানোই, তোমাদের
বুদ্ধিতে এখন রাতদিন এই কথাই আছে যে, আমরা এখন ঘরে ফিরে যাচ্ছি । তোমরা পুরুষার্থ
করো, আর কলিযুগের মানুষ একথা একটুও জানে না, তারা মুক্তির জন্য কতো ভক্তি করে ।
এখানে অনেক মত আছে । তোমাদের মতো ব্রাহ্মণদের হলো এক মত, যারা ব্রাহ্মণ হয়, তাদের
সকলের জন্য হলো শ্রীমত । তোমরা বাবার শ্রীমতে দেবতা হও । দেবতাদের কোনো শ্রীমৎ নেই
। তোমরা ব্রাহ্মণরাই এখন শ্রীমৎ পাও । ভগবান হলেনই নিরাকার । যিনি তোমাদের রাজযোগ
শেখান, যাতে তোমরা রাজ্য - ভাগ্য নিয়ে এই বিশ্বের কতো বড় মালিক হও । ভক্তিমার্গে
এই বেদ - শাস্ত্র ইত্যাদি কতো অনেক বই আছে, কিন্তু এক গীতাই হলো কাজের । ভগবান এসে
তোমাদের রাজযোগ শেখান । একেই গীতা বলা হয় । তোমরা এখন বাবার কাছ থেকে পাঠ গ্রহণ করো,
যাতে তোমরা স্বর্গের রাজত্ব পাও । যে পড়েছে, সেই তা নিতে পেরেছে । ড্রামাতে তো
পার্ট নির্ধারিত রয়েছে, তাই না । জ্ঞান শোনানোর জন্য জ্ঞানের সাগর একমাত্র বাবাই
আছেন । তিনি এই ড্রামার নিয়ম অনুসারে কলিযুগের অন্তে এবং সত্যযুগের আদিতে এই সঙ্গম
যুগেই আসেন । কোনো বিষয়েই তোমরা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ো না । বাবা এনার মধ্যে এসে পড়ান,
আর কেউই এমন পড়া পড়াতে পারে না । এই দাদাও যদি অন্য কারোর কাছে পড়তো, তাহলে আরো
অনেকেই তাঁর কাছে পড়তো । বাবা তো বলেন - এই গুরু ইত্যাদি সকলের উদ্ধার করতে আমিই আসি
। বাচ্চারা, তোমাদের এইম অবজেক্ট এখন সামনে উপস্থিত । আমরা এমন তৈরী হই, এই হলো নর
থেকে নারায়ণ হওয়ার সত্য কথা । এর মহিমাই ভক্তিমার্গে চলতে থাকে । ভক্তিমার্গের নিয়ম
চলেই আসছে । এখন এই রাবণ রাজ্য সম্পূর্ণ হবে । তোমরা এখন দশহরা ইত্যাদিতে যাবেই না
। তোমরা তো বোঝাবে যে, এরা কি করে । এ তো বাচ্চাদের কাজ । বড় - বড় লোকেরাও দেখতে
যায় । রাবণকে কিভাবে দহন করে, এ কে, কেউই বলতে পারে না । এ তো রাবণ রাজ্য, তাই না ।
দশহরা ইত্যাদিতে মানুষ কতো খুশী পালন করে, যাতে তারা রাবণকে জ্বালিয়ে এসেছে, কিন্তু
দুঃখই পেয়ে এসেছে, কিছুই বুঝতে পারে না । তোমরা এখন বুঝতে পারো যে, আমরা কতো অবুঝ
ছিলাম । রাবণ তোমাদের অবুঝ করে দেয় । তোমরা এখন বলো - বাবা, আমরা অবশ্যই লক্ষ্মী -
নারায়ণ হবো । আমরা কম পুরুষার্থ করবোই না । এ হলো একমাত্রই স্কুল, যেখানে পড়া খুবই
সহজ । বৃদ্ধা মাতারা যদি আর কিছু স্মরণ নাও করতে পারে, তাহলেও কেবল বাবাকেই স্মরণ
করবে । মুখে তো মানুষ 'হে রাম' বলেই । বাবা একথা খুব সহজ করে বলেন যে, তুমি হলে
আত্মা, পরমাত্মা বাবাকে যদি স্মরণ করো তাহলে তোমার তরী পার হয়ে যাবে । তোমরা কোথায়
চলে যাবে? শান্তিধাম আর সুখধাম । আর সবকিছুই তোমরা ভুলে যাও । যা কিছুই এতদিন শুনেছো
বা পড়েছো, সেইসব ভুলে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকেই স্মরণ করো, তাহলে বাবার থেকে
অবশ্যই অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবে । বাবার স্মরনেই পাপ মুক্ত হওয়া যায় । এ
কতো সহজ । এমন বলাও হয় যে, ভ্রুকুটির মাঝে ঝলমল করে এক তারা । তাহলে খুব ছোটো
আত্মাই তো হবে, তাই না । আত্মাকে দেখার জন্য ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করে, কিন্তু তা
খুবই সূক্ষ্ম । হঠ ইত্যাদি যোগের দ্বারাও কেউই দেখতে পায় না । বাবাও এমনই এক বিন্দু
। তিনি বলেন - তোমরা যেমন সাধারণ, আমিও তেমনই সাধারণ হয়েই তোমাদের পড়াই । কেউ কিভাবে
জানবে যে, এনাকে ভগবান কিভাবে পড়ান । কৃষ্ণ পড়ালে তো সম্পূর্ণ আমেরিকা, জাপান
ইত্যাদি সবদিক থেকে পড়তে এসে যাবে । তাঁর মধ্যে অনেক আকর্ষণ আছে । কৃষ্ণের প্রতি তো
সকলেরই প্রেম আছে, তাই না। বাচ্চারা, তোমরা তো এখন জানো যে, আমরাও তেমনই তৈরী হচ্ছি
। কৃষ্ণ হলেন রাজকুমার, তাঁকে কোলে নিতে চাইলে তো পুরুষার্থ করতে হবে, এ তো কোনো বড়
কথা নয় । বাবা তাঁর বাচ্চাদের স্বর্গের প্রিন্স, বিশ্বের মালিক বানানোর জন্যই পড়ান
।
বাবা বলেন - বাচ্চারা,
এই পড়ার সার হলো - দুনিয়ার সব বিষয় ত্যাগ করো । এমন কখনোই মনে করো না যে, আমাদের
কাছে কোটি বা লাখ টাকা আছে । কিছুই হাতে আসবে না, তাই খুব ভালো করে পুরুষার্থ করো ।
বাবার কাছে এলে বাবা অনুযোগ করেন - তোমরা ৮ মাসে একবার আসো, আর যে বাবার থেকে তোমরা
স্বর্গের বাদশাহী পাও, তাঁর সঙ্গে এতো সময় দেখাই করো না । তোমরা বলে দাও - বাবা
অমুক কাজ ছিলো । আরে! তোমরা যদি মরে যেতে তাহলে এখানে কিভাবে আসতে! এই বাহানা চলতেই
পারে না । বাবা তোমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছেন আর তোমরা তা শেখো না, যারা অনেক ভক্তি
করেছে, তাদের সাত দিন কেন, এক সেকেণ্ডেই তীর লেগে যাবে । সেকেণ্ডে এই বিশ্বের মালিক
হতে পারে । ইনি যে এখানে বসে আছেন, ইনি নিজেই অনুভবী, ইনি বিনাশ দেখেছেন, চতুর্ভুজ
রূপ দেখেছেন, ব্যস, কেবল বুঝতে পারতেন, আহা, আমি এই বিশ্বের মালিক হবো । তাঁর
সাক্ষাৎকার হয়েছিলো, উৎসাহ - উদ্দীপনা এসেছিলো, আর সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন । বাচ্চারা,
এখানে তোমরা জানতে পেরেছো যে, বাবা এসেছেন, এই বিশ্বের বাদশাহী দিতে । বাবা জিজ্ঞেস
করেন - তোমাদের নিশ্চয় কবে থেকে এসেছে? তখন বলে ৮ মাস । বাবা বুঝিয়েছেন যে, মূল
বিষয় হলো স্মরণ আর জ্ঞান । বাকি সাক্ষাৎকার তো কোনো কাজের নয় । বাবাকে চিনে গেছো,
এবার তোমরা পড়তে শুরু করো, তাহলে এমন হতে পারবে । তোমরা পয়েন্টস পাও, যা দিয়ে তোমরা
কাউকে বোঝাতে পারো । তোমরা খুব মিষ্টি করে বোঝাও । শিববাবা, যিনি পতিত পাবন, তিনি
বলেন - তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলে পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হতে পারবে ।
তোমাদের যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে । তোমরা তো চাও - গড ফাদার তোমাদের উদ্ধার করে সুইট
হোমে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন । আচ্ছা, তোমাদের উপরে এখন যে জং লেগে আছে, তারজন্যই বাবা
বলেন, আমাকে স্মরণ করো । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
ভোরবেলা উঠে হাটতে চলতে বাবাকে স্মরণ করো, নিজেদের মধ্যে এই রুহরিহান করো যে - দেখি,
কে কতটা সময় বাবাকে স্মরণ করে, তারপর নিজের অনুভব শোনাও ।
২ ) বাবাকে চিনে
নিয়েছো, তাই আর কোনো বাহানা নয়, এই পড়াতে মনোযোগ দিতে হবে, মুরলী কখনো মিস ক'রো না
।
বরদান:-
সকলের
গুণ দেখে নিজের মধ্যে বাবার গুণ ধারণকারী গুণমূর্তি ভব
সঙ্গম যুগে যে
বাচ্চারা গুণের মালা ধারণ করে তারাই বিজয় মালাতে আসে এইজন্য হোলী হংস হয়ে সকলের
গুণগুলিকে দেখো আর এক বাবার গুণগুলিকে নিজের মধ্যে ধারণ করো, এই গুণের মালা সকলেই
যেন পরিধান করে। যে যত বাবার গুণ নিজের মধ্যে ধারণ করে তার গলায় তত বড়ই মালা শোভিত
হয়। গুণমালা গুলিকে স্মরণ করলে নিজেও গুণমূর্তি হয়ে যাবে। এর স্মরণিক রূপে দেবতা আর
শক্তিদের গলায় মালা দেখানো হয়।
স্লোগান:-
সাক্ষীভাবের স্থিতিই যথার্থ নির্ণয়ের সিংহাসন।
অব্যক্ত ঈশারা :-
আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো, অন্তুর্মুখী হও
অন্তর্মুখী হয়ে কাজ
করলে বিঘ্নগুলি থেকে, ব্যর্থ সংকল্পগুলির থেকে রক্ষা পাবে আর সময়ও অনেক বেঁচে যাবে।
যে অন্তুর্মুখী থাকে তার মধ্যে স্মৃতির সমর্থীও আসে আর আত্মারূপী নেত্র পাওয়ারফুল
হতে থাকে যার দ্বারা যদি কোনও বিঘ্ন আসার হবে তাহলে অনুভব হবে যে আজ কোনও পরিস্থিতি
আসতে পারে আর যত আগে থেকে অনুভব হবে ততই হুশিয়ার হওয়ার কারণে সফলতাও পেয়ে যাবে।