09.08.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ হলো কল্যাণকারী যুগ, এই সময়েই তোমাদেরকে শ্রীমতে চলে শ্রীকৃষ্ণপুরীর মালিক হতে হবে”

প্রশ্নঃ -
বাবা মাতাদেরকেই কেন জ্ঞানের কলস দিয়েছেন? কোন্ পদ্ধতিটি কেবলমাত্র ভারতেই প্রচলিত আছে?

উত্তরঃ  
পবিত্রতার রাখী বন্ধন করে সবাইকে পতিত থেকে পাবন বানানোর জন্য বাবা মাতাদের উপরে জ্ঞানের কলস রেখেছেন। রাখী-বন্ধনের এই পবিত্র উৎসবটি ভারতেই প্রচলিত রয়েছে । বোন ভাইকে রাখী বাঁধে। এটা হলো পবিত্রতার প্রতীক। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা শুধু আমাকেই স্মরণ করো, তাহলে পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে।

গীতঃ-
ভোলানাথের থেকে অনন্য আর কেউ নেই...

ওম্ শান্তি ।
এ হলো ভোলানাথের মহিমা, যাকে দাতা বলা হয়। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে শ্রীলক্ষ্মী-নারায়ণকে এই রাজ্য-ভাগ্য কে দিয়েছেন! অবশ্যই ভগবান দিয়েছেন, কেননা স্বর্গের স্থাপনা তো তিনিই করেন। স্বর্গের রাজত্ব ভোলানাথ যেরকম লক্ষ্মী-নারায়ণকে দিয়েছেন, সেরকম কৃষ্ণকেও দিয়েছেন। রাধে-কৃষ্ণ বা লক্ষ্মী-নারায়ণ, কথা তো একই। কিন্তু রাজধানী তো নেই। পরমপিতা পরমাত্মা ছাড়া তাদেরকে অন্য কেউ এই রাজ্য দিতে পারে না। তাঁদের জন্ম স্বর্গতেই হবে। বাচ্চারা, এটা তোমরাই জানো। বাচ্চারা, তোমরাই সবাইকে জন্মাষ্টমীর বিষয়ে বোঝাবে। কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী হলে তো রাধারও হওয়া উচিত, কেননা দুজনেই স্বর্গবাসী ছিলেন। রাধা-কৃষ্ণই স্বয়ংবরের পর লক্ষ্মী-নারায়ণ হন। মুখ্য কথাই হল, তাদেরকে এই রাজ্য কে দিয়েছেন ? এই রাজযোগ কবে আর কে শিখিয়েছেন ? স্বর্গতে তো শেখানো হয় না। সত্যযুগে তো তাঁরা হলেনই উত্তম পুরুষ। কলিযুগের পর আসে সত্যযুগ। তো অবশ্যই কলিযুগের অন্তেই এই রাজযোগ শেখানো হয়েছে। যার কারণে নতুন জন্মে রাজত্ব প্রাপ্ত হয়। পুরানো দুনিয়া থেকেই নতুন পবিত্র দুনিয়া স্থাপন হয়। অবশ্যই পতিত-পাবন আসেন। এখন সঙ্গম যুগে কোন্ ধর্ম হয়, এটাও কারো জানা নেই। পুরানো দুনিয়া আর নতুন দুনিয়ার এটা হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ, যার মহিমা করা হয়ে থাকে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ হলো নতুন দুনিয়ার মালিক। এনার আত্মাকে অবশ্যই আগের জন্মে পরমপিতা পরমাত্মা রাজযোগ শিখিয়েছিলেন, যার পুরুষার্থের প্রালব্ধ পুনরায় নতুন জন্মে প্রাপ্ত হয়, এই যুগের নামই হলো কল্যাণকারী পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ। অবশ্যই অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে এনাদেরকে কেউ রাজযোগ শিখিয়েছিলেন। কলিযুগে হলো অনেক ধর্ম, সত্যযুগে ছিল এক দেবী-দেবতা ধর্ম। সঙ্গমে কোন্ ধর্ম থাকে, যার কারণে তোমরা পুরুষার্থ করে, রাজযোগ শিখে, সত্যযুগের প্রালব্ধ ভোগ করো। বোঝা যায় যে, সঙ্গম যুগে ব্রহ্মার দ্বারাই ব্রাহ্মণদের জন্ম হয়। চিত্রতেও আছে যে, ব্রহ্মার দ্বারা কৃষ্ণপুরীর স্থাপনা। বিষ্ণু অথবা নারায়ণপুরী, ব্যাপারটা তো একই। এখন তোমরা জেনে গেছো যে, আমরা এই পড়াশোনা করে, পবিত্র থেকে কৃষ্ণপুরীর মালিক হতে চলেছি। শিব ভগবানুবাচ, তাইনা! কৃষ্ণের আত্মাই অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে পুনরায় এই (ব্রহ্মা) হন। ৮৪ জন্ম গ্রহণ করেন, তাই না! এটা হল ৮৪ তম জন্ম, এঁনারই নাম ব্রহ্মা রাখা হয়। না হলে, ব্রহ্মা কোথা থেকে আসবে ! ঈশ্বর রচনা করেন, তাে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর কোথা থেকে আসেন! কিভাবে রচনা করেন? ছুঃ মন্ত্র করলো আর এদের জন্ম হয়ে গেল ! বাবা-ই এদের ইতিহাস বলে দেন। অ্যাডপ্ট করা হয়, তাই তাদের নামও বদলে যায়। এনার নাম তো ব্রহ্মা ছিল না, তাই না ! বলা হয় অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে.... তাহলে তো অবশ্যই তিনি পতিত মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন। ব্রহ্মা কোথা থেকে এসেছেন, কারোরই এ বিষয়ে জানা নেই। অনেক জন্মের অন্তিম জন্ম কার হয়েছে? লক্ষ্মী-নারায়ণই অনেক জন্ম নিয়েছেন। নাম, রূপ, দেশ, কাল সবই পরিবর্তিত হয়ে যায়। কৃষ্ণের চিত্রতে ৮৪ জন্মের কাহিনী পরিষ্কার করে লেখা আছে। জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণের চিত্রও অনেক বিক্রি হয়, কেননা কৃষ্ণের মন্দিরে তো সবাই যাবে, তাই না! রাধা-কৃষ্ণের মন্দিরেই সবাই যায়। কৃষ্ণের সাথে রাধা অবশ্যই থাকবেন। রাধা-কৃষ্ণ, প্রিন্স-প্রিন্সেসই লক্ষ্মী-নারায়ণ মহারাজা-মহারাণী হন। তাঁরাই ৮৪ জন্ম নিয়ে পুনরায় অন্তিম জন্মে ব্রহ্মা-সরস্বতী হন। অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে বাবা এসে তাঁর মধ্যে প্রবেশ করেন, আর এঁনাকে বলেন যে - তুমি নিজের জন্মকে জানো না। তুমি প্রথম জন্মে লক্ষ্মী-নারায়ণ ছিলে। পুনরায় এই জন্ম নিয়েছো। তারা তো অর্জুনের নাম বলে দিয়েছে। তারা বলে যে অর্জুনকে রাজযোগ শেখানো হয়েছে। অর্জুনকে আলাদা করে দিয়েছে। কিন্তু তার নাম তো অর্জুন নয়। ব্রহ্মার তো জীবন চরিত্র চাই, তাই না ! কিন্তু ব্রহ্মা আর ব্রাহ্মণদের বর্ণনা কোথাও নেই। এই সমস্ত কথা বাবা-ই বসে বোঝাচ্ছেন। সমস্ত বাচ্চারা শুনছে, পুনরায় বাচ্চারাই অন্যদেরকে বোঝাবে। ভক্তিমার্গে কাহিনী শুনে তারা পুনরায় অন্যদেরকে বসে শোনায়। তোমরাও এখন শুনছো, পুনরায় অন্যদেরকে শোনাবে। এটা হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ, লিপ যুগ। অতিরিক্ত যুগ। পুরুষোত্তম মাস হলে তো ১৩ মাস হয়ে যায়। এই সঙ্গমযুগের উৎসবই প্রত্যেক বছর তারা পালন করে। এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগের বিষয়ে কারোরই জানা নেই। এই সঙ্গম যুগেই বাবা এসে বাচ্চাদের থেকে পবিত্র থাকার প্রতিজ্ঞা করিয়ে নেন। পতিত দুনিয়ার থেকেই পবিত্র দুনিয়া স্থাপন করেন। রক্ষা বন্ধনের প্রচলন ভারতের মধ্যেই আছে। বোন ভাইকে রাখি বাঁধে। কিন্তু সেই কুমারিও একসময় অপবিত্র হয়ে যায়। মাতা-রা, এখন বাবা তোমাদের উপর জ্ঞানের কলস রেখেছেন। যাঁদের কাছে ব্রহ্মাকুমার-ব্রহ্মাকুমারিরা বসে পবিত্রতার প্রতিজ্ঞা করে রাখি বাঁধে। বাবা বলেন যে, মামেকম্ স্মরণ করো তো তোমরা পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে। তখন তো আর রাখি ইত্যাদি বাঁধার কোনো দরকারই হবে না। এটাই বোঝানো হয়। যেরকম সাধু-সন্ন্যাসীরা দান প্রার্থনা করে। কেউ বলে ক্রোধের দান দাও, কেউ বলে পেঁয়াজ খেওনা। যে নিজে খায় না, সেই দান গ্রহণ করে। এইসবের থেকে শ্রেষ্ঠ প্রতিজ্ঞা তো অসীম জগতের বাবা করান। তোমরা পবিত্র হতে চাও তো পতিত-পাবন বাবাকে স্মরণ করো। দ্বাপর যুগ থেকে তোমরা পতিত হয়ে এসেছো, এখন সমগ্র দুনিয়া পবিত্র চাই, সেটা তো বাবা-ই বানাতে পারেন। সকলের গতি সদ্গতি দাতা কোনও মানুষ হতে পারে না। বাবা-ই পবিত্র হওয়ার প্রতিজ্ঞা করান। ভারত পবিত্র স্বর্গ ছিল, তাই না! পতিত-পাবন হলেন সেই পরমপিতা পরমাত্মা। কৃষ্ণকে পতিত-পাবন বলা যায় না। তাঁর তো জন্ম হয়। তাঁর তো মা-বাবাও দেখানো হয়। এক শিব বাবার-ই অলৌকিক জন্ম হয়। তিনি নিজেই নিজের পরিচয় দেন যে, আমি সাধারণ শরীরে প্রবেশ করি। শরীরের আধার অবশ্যই নিতে হয়। আমি জ্ঞানের সাগর পতিত-পাবন, রাজযোগ শেখাই। বাবা-ই হলেন স্বর্গের রচয়িতা আর নরকের বিনাশ করেন। যখন স্বর্গ থাকে, তখন নরক থাকে না। এখন তো সবটাই হল অতি-নরক, যখন একদম তমোপ্রধান নরক হয়ে যায়, তখনই বাবা এসে সতোপ্রধান স্বর্গ তৈরি করেন। ১০০ শতাংশ পতিত থেকে ১০০ শতাংশ পবিত্র বানান। প্রথম জন্ম অবশ্যই সতোপ্রধানই প্রাপ্ত হবে। বাচ্চাদেরকে বিচারসাগর মন্থন করে ভাষণ করতে হবে। প্রত্যেকের বোঝানোর প্রক্রিয়াও তো আলাদা আলাদা হয়। বাবাও তো আজ একটি কথা বোঝাচ্ছেন, কাল আবার অন্য কথা বোঝাবেন। একই রকম বোঝানো তো হয় না। মনে করো, টেপ রেকর্ডারের দ্বারা কেউ অ্যাক্যুরেট শুনেও কিন্তু অ্যাক্যুরেট শোনাতে পারবে না, পার্থক্য অবশ্যই হয়ে যায়। বাবা যা কিছু শোনাচ্ছেন, তোমরা জানো যে এসব কিছুই ড্রামার মধ্যে পূর্ব নির্ধারিত হয়ে আছে। পূর্ব কল্পের মতই প্রতিটি শব্দ আজ পুনরায় শোনাচ্ছেন। এই রেকর্ড ভরা আছে। ভগবান নিজে বলছেন যে, আমি ৫ হাজার বছর পূর্বে যা কিছু শুনিয়েছিলাম সেই সব অক্ষর বাই অক্ষর সেটাই শোনাচ্ছি। এ হলো পূর্বের শ্যুট করা ড্রামা। এরমধ্যে বিন্দুমাত্রও পার্থক্য থাকে না। এত ছোট আত্মার মধ্যে রেকর্ড ভরা আছে। এখন, কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী কবে হয়েছিল, এটাও বাচ্চারা বুঝে গেছে। আজ থেকে ৫ হাজার বছরের কিছু দিন কম, বলবে কেননা এখন তোমরা পড়ছো। নতুন দুনিয়ার স্থাপনা হচ্ছে। বাচ্চাদের মনে খুশী হচ্ছে। তোমরা জানো যে, কৃষ্ণের আত্মা ৮৪ বার জন্ম-মৃত্যর চক্র লাগিয়ে এখন পুনরায় কৃষ্ণের নাম রূপে আসছেন। চিত্রতে দেখানো হয়েছে যে কৃষ্ণ পুরানো দুনিয়াকে লাথি মারছে। নতুন দুনিয়া তাঁর হাতে আছে। এখন পড়াশোনা করছে, এইজন্য বলা যায় - শ্রীকৃষ্ণ আসছে। অবশ্যই বাবা অনেক জন্মের অন্তেই এসে পড়াচ্ছেন। এই পড়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে কৃষ্ণ জন্ম নেবে। এখন, খুবই অল্পসময় অবশিষ্ট আছে। অবশ্যই অনেক ধর্মের বিনাশ হওয়ার পর কৃষ্ণের জন্ম হয়। সেটাও একটি কৃষ্ণের কথা নয়, সমগ্র কৃষ্ণপুরী হবে। এই ব্রাহ্মণেরাই পুনরায় এই রাজযোগ শিখে দেবতা পদ প্রাপ্ত করবে। এই জ্ঞান ধারণের দ্বারাই দেবতা পদ প্রাপ্ত হয়। বাবা-ই এসে এই পড়ার আধারে মানুষ থেকে দেবতা বানাচ্ছেন। এটা হলো পাঠশালা, এখানে সব থেকে বেশি সময় লাগে। পড়া তো হলো খুবই সহজ, কিন্তু যোগেতেই পরিশ্রম আছে। তোমরা বলতে পারো যে, কৃষ্ণের আত্মা এখন রাজযোগ শিখছে - পরমপিতা পরমাত্মার দ্বারা। শিববাবা ব্রহ্মার দ্বারা আমাদের অর্থাৎ আত্মাদেরকে পড়াচ্ছেন - বিষ্ণুপুরীর রাজ্য দেওয়ার জন্য। আমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার বাচ্চারা হলাম ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী। এ হলো সঙ্গম যুগ। এই যুগ হলো অত্যন্ত ছোট। মাথার টিকি খুব ছোট হয়, তাইনা! তারপর তো তার থেকে মুখ হলো বড়, তার থেকেও বড় হয় বাহু, তার থেকে বড় হয় পেট, আবার তার থেকেও বড় হয় পা। বিরাট রূপ দেখিয়েছে, কিন্তু সে বিষয়ে কেউ বোঝাতে পারেনি। বাচ্চারা তোমাদেরকেই এই ৮৪ জন্মের রহস্য বোঝাতে হবে, শিব জয়ন্তীর পরই আসে কৃষ্ণ জয়ন্তী।

বাচ্চারা, তোমাদের জন্য এটা হলো সঙ্গম যুগ। তোমাদের জন্য কলিযুগ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। বাবা বলছেন যে - মিষ্টি বাচ্চারা, এখন আমি এসেছি তোমাদেরকে সুখ ধাম, শান্তিধামে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তোমরা সুখ ধামের বাসিন্দা ছিলে, পুনরায় এই দুঃখ ধামে এসেছো। তোমরা ডেকেছিলে যে বাবা এসো, এই পুরানো দুনিয়াতে। তোমাদের দুনিয়া তো নেই। এখন তোমরা কি করছো? যোগবলের দ্বারা নিজেদের দুনিয়া স্থাপন করছো। বলা হয় যে, অহিংসা পরম দেবী-দেবতা ধর্ম। তোমাদেরকে অহিংসক হতে হবে। না কাম কাটারি চালাবে, আর না নিজেদের মধ্যে লড়াই-ঝগড়া করবে। বাবা বলছেন যে, আমি প্রত্যেক ৫ হাজার বছর পরে আসি। লক্ষ বছরের তো কোনও কথাই নেই। বাবা বলেন - যজ্ঞ, তপ, দান, পুণ্যাদি করে তোমরা নিচে নেমে গেছো। জ্ঞানের দ্বারাই তোমাদের সদ্গতি হয়। মানুষ তো কুম্ভকর্ণের নিদ্রায় শুয়ে আছে, জাগরিত হতেই চায় না। এইজন্য বাবা বলেন যে, আমি কল্প-কল্পে আসি, আমারও ড্রামাতে পার্ট নির্ধারিত রয়েছে । পার্ট ছাড়া আমি কিছুই করতে পারিনা। আমিও ড্রামার বন্ধনে বাঁধা রয়েছি । আমি সময় অনুসারে আসি। ড্রামার প্ল্যান অনুসারে বাচ্চারা, তোমাদের পুনরায় বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাই। এখন বলছি - মন্মনা ভব। কিন্তু এর অর্থ কেউই জানে না। বাবা বলছেন যে, দেহের সকল সম্বন্ধকে ছেড়ে মামেকম্ স্মরণ করো, তাহলে তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। বাচ্চারা বাবাকে স্মরণ করার জন্য পরিশ্রম করতে থাকে। এটা হল ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সমগ্র বিশ্বের সদ্গতি দাতা দ্বিতীয় কোনও বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে না। ঈশ্বর বাবা নিজে এসে সমগ্র বিশ্বকে পরিবর্তন করছেন। নরক থেকে স্বর্গে পরিণত করছেন। তোমরা পুনরায় যেখানে রাজত্ব করবে। শিবকে বাবুলনাথও বলা হয়। কেননা তিনি এসে তোমাদেরকে কাম কাটারি থেকে মুক্ত করে পবিত্র বানাচ্ছেন। ভক্তি মার্গে তো অনেক শো (show) দেখায়, কিন্তু এখানে তোমাদের শান্ত হয়ে স্মরণ করতে হবে। তারা তো অনেক প্রকারের হটযোগ আদি করতে থাকে। তাদের নিবৃত্তি মার্গই হল আলাদা। তারা ব্রহ্মকে মানে। তারা হল ব্রহ্মযোগী, তত্ত্বযোগী। কিন্তু সেটা তো হল আত্মাদের থাকার স্থান, যাকে ব্রহ্মাণ্ড বলা হয়। তারা তো আবার এই ব্রহ্মাণ্ডকে ভগবান মনে করে। সেখানেই লীন হয়ে যায়। তারা আত্মাকে বিনাশী, নশ্বর বলে দেয়। বাবা বলেন যে, আমি এসে সকলের সদ্গতি করি। শিব বাবা-ই সকলের সদ্গতি করেন, তাই তো তিনি হলেন হীরের মত। তিনি তোমাদেরকে পুনরায় সুবর্ণ যুগে নিয়ে যাচ্ছেন। তোমাদের এই জন্ম হলো হীরের মত, তারপর তোমরা স্বর্ণযুগে আসো। এই জ্ঞান বাবা-ই এসে তোমাদেরকে পড়ান, যার দ্বারা তোমরা দেবতা তৈরি হও। পুনরায় এই জ্ঞান প্রায়ঃলোপ হয়ে যায়। এই লক্ষ্মী নারায়ণের মধ্যেও রচয়িতা আর রচনার জ্ঞান নেই। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই পুরানো দুনিয়াতে থেকেও ডবল্ অহিংসক হয়ে যোগবলের দ্বারা নিজেদের নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে হবে। নিজের জীবনকে হিরে তুল্য বানাতে হবে।

২ ) বাবা যা কিছু শোনাচ্ছেন, তার উপর বিচার সাগর মন্থন করে অন্যদেরকেও শোনাতে হবে। সর্বদা এই নেশা যেন থাকে যে, এই পড়াশোনা সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই আমরা কৃষ্ণপুরীতে যাবো।

বরদান:-
অপবিত্রতার নাম লক্ষণকেও সমাপ্ত করে হিজ্ হোলিনেস - এর টাইটেল প্রাপ্তকারী হোলীহংস ভব

যেরকম হংস কখনও কাঁকড় ঠোকরায় না, রত্ন ধারণ করে। এইরকম হোলিহংস কারো অবগুণ অর্থাৎ কাঁকড় ধারণ করে না। তারা ব্যর্থ আর সমর্থকে আলাদা করে ব্যর্থকে ছেড়ে দেয়, সমর্থকে ধারণ করে। এইরকম হোলীহংসই হল পবিত্র শুদ্ধ আত্মারা, তাদের আহার, ব্যবহার সব শুদ্ধ হয়। যখন অশুদ্ধি অর্থাৎ অপবিত্রতার নাম লক্ষণও সমাপ্ত হয়ে যায় তখন ভবিষ্যতে হিজ্ হোলিনেস-এর টাইটেল প্রাপ্ত হয় এইজন্য কখনও ভুল করেও কারো অবগুণ ধারণ করবে না।

স্লোগান:-
সর্বংশ ত্যাগী হলো সে, যে পুরানো স্বভাব-সংস্কারের বংশকেও ত্যাগ করে।

অব্যক্ত ঈশারা :- সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের অনুভবী হও

কোনও কার্য করার সময় বাবার স্মরণে লভলীন থাকো। কোনও কথার বিস্তারে না গিয়ে, বিস্তারকে বিন্দু লাগিয়ে বিন্দুতে সমাহিত করে দাও, বিন্দু হয়ে যাও, তাহলে সব বিস্তার, সব জাল সেকেন্ডে সমাহিত হয়ে যাবে আর সময় বেঁচে যাবে, পরিশ্রম করা থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। বিন্দু হয়ে বিন্দুতে লভলীন হয়ে যাবে।