11.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
সর্ব প্রথমে সবাইকে বাবার সঠিক পরিচয় দিয়ে প্রমাণ করো গীতার ভগবান কে, তখন তোমাদের
নাম মহিমান্বিত হবে”
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমরা চার যুগেরই চক্র পরিক্রমা করেছো, সেটার রীতি-রেওয়াজ ভক্তিতেও চলে আসছে, সেটা
কোনটি?
উত্তরঃ
তোমরা চার
যুগেরই চক্র পরিক্রমা করেছো আর তারা (কলিযুগের ভক্তরা) সমস্ত শাস্ত্র, চিত্র আদিকে
গাড়ীতে রেখে চারিদিকে পরিক্রমা করে। তারপর বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। তোমরা ব্রাহ্মণ,
দেবতা, ক্ষত্রিয়... হও। আর তারা এই চক্রের পরিবর্তে পরিক্রমা করা শুরু করে দিয়েছে।
এটাও হলো ভক্তির রীতি-রেওয়াজ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক বাবা
তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন যে, যখন কাউকে বোঝাও তো প্রথমে এটা ক্লিয়ার করে
দাও যে, বাবা হলেন একজনই, জিজ্ঞাসা করতে হবে না যে - বাবা এক না অনেক। এইরকম হলে তো
তারা তখন বলতে পারে - বাবা অনেক। বলতে হবে যে - বাবা, রচয়িতা, গড ফাদার হলেন এক ।
তিনি হলেন সমস্ত আত্মাদের পিতা। প্রথমে তোমরা এটাও বলবে না যে, তিনি হলেন বিন্দু,
এরফলে সে দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারে। প্রথমে তো এটা ভালোভাবে বোঝাও যে - বাবা হলেন
দু'জন - লৌকিক আর পারলৌকিক। লৌকিক পিতা তো প্রত্যেকেরই থাকে, কিন্তু তাঁকে (পারলৌকিক
পিতাকে) কেউ খুদা, কেউ গড বলে ডাকে। তিনি তো হলেন একজনই। সবাই সেই এক পিতাকে স্মরণ
করে। সর্ব প্রথমে এবিষয়ে স্থির নিশ্চয় করাও যে ফাদার হলেন স্বর্গের রচয়িতা। তিনি
এখানে আসেন স্বর্গের মালিক বানানোর জন্য, যাকে শিবজয়ন্তীও বলা হয়। বাচ্চারা, এটাও
তোমরা জানো যে, স্বর্গের রচয়িতা ভারতেই স্বর্গ রচনা করেন, যেখানে দেবী-দেবতারাই
রাজত্ব করে থাকেন। তাই সর্ব প্রথমে বাবারই পরিচয় দিতে হবে। তাঁর নাম হলো শিব। গীতাতে
ভগবানুবাচ লেখা আছে, তাই না! প্রথমে তো এটা নিশ্চয় করিয়ে লিখিয়ে নিতে হবে। গীতাতে
আছে ভগবানুবাচ - আমি তোমাদেরকে রাজযোগ শেখাই অর্থাৎ নর থেকে নারায়ণ তৈরী করি। এইরকম
দেবী-দেবতা কে তৈরী করতে পারেন? অবশ্যই বোঝাতে হবে। ভগবান কে? এটাও বোঝাতে হবে।
সত্য যুগে প্রথম নম্বরে যে লক্ষ্মী-নারায়ণ আসেন, তাঁরা অবশ্যই ৮৪ বার জন্ম নেবেন।
পরবর্তী কালে অন্যান্য ধর্মাত্মারা আসেন। তাদেরকে এত জন্ম নিতে হয় না। যাঁরা প্রথম
দিকে আসেন, তাঁদেরই ৮৪ বার জন্ম নিতে হয়। সত্যযুগে তো কিছু শেখার দরকার হয় না।
অবশ্যই সঙ্গম যুগেই শিখতে হবে। তাই সর্ব-প্রথমে বাবার পরিচয় দিতে হবে। যেরকম আত্মাকে
দেখা যায়না, অনুভাব করা যায়, সেইরকম পরমাত্মাকেও দেখা যায় না। বুদ্ধির দ্বারা বুঝতে
হয় যে, তিনি হলেন আমাদের আত্মাদের পিতা। তাঁকে পরম আত্মা বলা যায়। তিনি সর্বদাই
পবিত্র থাকেন। তিনি এসে পতিত দুনিয়াকে পবিত্র বানান। তাই প্রথমে বাবা হলেন এক, এটা
প্রমাণ করে বলার কারণে গীতার ভগবান যে কৃষ্ণ নয়, সেটাও প্রমাণিত হয়ে যাবে। বাচ্চারা
তোমাদেরকেই প্রমাণ দিয়ে বলতে হবে, এক বাবাকেই সত্য বলা যায়। বাকি কর্মকাণ্ড বা
তীর্থ আদির কথা সব ভক্তির শাস্ত্রতে আছে। জ্ঞানমার্গে এর তো কোনও বর্ণনাই নেই। এখানে
কোনও শাস্ত্র নেই। বাবা এসে সমস্ত রহস্য বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা প্রথমে তোমাদের এই
কথাতে জয়ী হতে হবে যে ভগবান হলেন এক নিরাকার, নাকি সাকার। পরমপিতা পরমাত্মা শিব
ভগবানুবাচ, জ্ঞানের সাগর সকলের বাবা হলেন তিনি। শ্রীকৃষ্ণ তো সকলের বাবা হতে পারে
না। সে কাউকে বলতেও পারবেনা যে দেহের সব ধর্মকে ছেড়ে এক আমাকে স্মরণ করো। আছে তো
খুব সহজ কথা। কিন্তু মানুষ শাস্ত্র আদি পড়ে ভক্তিতে পরিপক্ব হয়ে গেছে। আজকাল তো
শাস্ত্র আদিকে গাড়িতে রেখে পরিক্রমা করে। চিত্র আর গ্রন্থগুলিকেও পরিক্রমা করিয়ে
পুনরায় ঘরে নিয়ে এসে রেখে দেয়। বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে আমরা দেবতা থেকে
ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র হয়েছি, এই চক্র লাগিয়েছি। চক্রের পরিবর্তে তারা আবার
পরিক্রমা করিয়ে ঘরে গিয়ে রেখে দেয়। তাদের একটা নির্দিষ্ট দিন ধার্য করা থাকে, সেই
দিনে তারা পরিক্রমা করতে বের হয়। তাই সর্ব প্রথম এটাই প্রমাণিত করে বলতে হবে যে -
শ্রীকৃষ্ণ ভগবানুবাচ নয়, শিব ভগবানুবাচ। শিব-ই পুনর্জন্ম থেকে বিরত থাকেন। তাঁকে
অবশ্যই আসতে হয়, তার দিব্য জন্ম হয়। ভাগরথের শরীরে তিনি আসেন। তিনি এসে পতিতদেরকে
পবিত্র বানান। রচয়িতা আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য এসে বোঝান, এই জ্ঞান তিনি ছাড়া
আর কেউ-ই জানে না। বাবাকে নিজেই এসে নিজের পরিচয় দিতে হয়। মুখ্য কথাই হল বাবার
পরিচয় দেওয়া। তিনিই হলেন গীতার ভগবান, এটাই তোমরা সিদ্ধ করে বললে তোমাদের নামও
প্রসিদ্ধ হয়ে যাবে। তো এইরকম পর্চা বানিয়ে তাতে চিত্রাদি লাগিয়ে এরোপ্লেন থেকে ছড়িয়ে
দিতে হবে। বাবা মুখ্য বিষয়গুলি বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তোমাদের মুখ্য একটি কথাতে জয় হলে তো
ব্যস্, তোমরা জয়ী হয়ে যাবে। এতে তোমাদের নামও খুব প্রসিদ্ধ হবে, এতে কেউ তর্ক করবে
না। এটা অত্যন্ত পরিষ্কার কথা। বাবা বলছেন যে - আমি সর্বব্যাপি কিভাবে হতে পারি? আমি
তো এসে বাচ্চাদেরকে জ্ঞান শোনাই। আমাকে আহ্বান করে বলে যে - হে ভগবান! এসে আমাদের
পবিত্র বানাও। রচয়িতা আর রচনার জ্ঞান শোনাও। বাবার মহিমা আলাদা, কৃষ্ণের মহিমা আলাদা।
এরকম নয় যে শিববাবা এসে তিনিই পুনরায় কৃষ্ণ বা নারায়ণ হন, ৮৪ জন্ম গ্রহণ করেন! না।
তেমাদের বুদ্ধি সর্বদা এই সমস্ত কথা বোঝানোর জন্য যেন তৎপর থাকে। মুখ্য হলোই গীতা।
বলা হয় - ভগবানুবাচ, তাই অবশ্যই ভগবানের মুখ চাই, তাই না! ভগবান তো হলেন নিরাকার।
আত্মা মুখ ছাড়া কিভাবে বলবে। তিনি বলেন যে - আমি সাধারণ শরীরের আধার নিই। যাঁরা
প্রথম জন্মে লক্ষ্মী-নারায়ণ হন, তাঁরাই ৮৪ জন্ম নিতে নিতে যখন অন্তিম জন্ম নেন তখন
তাঁর শরীরে আমি আসি। কৃষ্ণের অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে আমি আসি। এইভাবে বিচার সাগর
মন্থন করো যে কিভাবে কাউকে বোঝাবো! একটি কথাতেই তোমাদের নাম প্রসিদ্ধ হয়ে যাবে।
রচয়িতা বাবার সম্বন্ধে সবাই জ্ঞাত হয়ে যাবে। তারপর তোমাদের কাছে অনেকে আসবে।
তোমাদেরকে নিমন্ত্রণ জানাবে যে - এখানে এসে ভাষণ করো, সেইজন্য সর্বপ্রথমে অল্ফকে (ভগবানকে)
প্রমাণিত করে বোঝাও। বাচ্চারা তোমরা জানো যে, বাবার থেকে আমরা স্বর্গের অবিনাশী
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি। বাবা প্রত্যেক ৫ হাজার বছর পর ভাগ্যশালী রথের মধ্যে (ভাগীরথের
মধ্যে) আসেন। ইনি হলেন সৌভাগ্যশালী, যে রথে ভগবান এসে বসেন। এটা কি কম কথার বিষয়!
ভগবান এনার মধ্যে বসে বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন যে - আমি অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে
এনার মধ্যে প্রবেশ করি। শ্রীকৃষ্ণের আত্মার তো রথ আছেই, তাই না! তিনি (ব্রহ্মাবাবা)
এখন তো কৃষ্ণ নন। অনেক জন্মের অন্তিম জন্ম হলো এটা। প্রত্যেক জন্মেই ফিচার্স (চারিত্রিক
বৈশিষ্ট্য), অক্যুপেশন (কর্তব্য) ইত্যাদির পরিবর্তন হতে থাকে। অনেক জন্মের অন্তিম
জন্মে যার মধ্যে প্রবেশ করি তিনিই পুনরায় কৃষ্ণ হন। আমি আসিই সঙ্গম যুগে। আমিও (ব্রহ্মা
বাবা) বাবার হয়ে বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। বাবা জ্ঞান শুনিয়ে
সাথে নিয়ে যান, এখানে কোনও পরিশ্রমের কথা নেই। বাবা শুধু বলেন যে, "মামেকম্ স্মরণ
করো," তাই খুব ভালো ভাবে বিচার সাগর মন্থন করতে হবে যে কিভাবে লিখে বোঝানো যায়।
এটাই হল মুখ্য মিস্টেক, যার কারনেই ভারত আনরাইটিয়াস (অধার্মিক), ইরিলিজিয়াস (নাস্তিক),
ইনসলভেন্ট (দেউলিয়া) হয়ে গেছে। বাবা পুনরায় এসে রাজযোগ শেখাচ্ছেন। ভারতকে রাইটিয়াস,
সলভেন্ট বানিয়ে তোলেন। সমগ্র দুনিয়াকে রাইটিয়াস বানিয়ে তুলছেন। সেই সময় (সত্যযুগে)
সমগ্র বিশ্বের মালিক তোমরাই হও। বলা হয় না - উইশ ইউ লং লাইফ অ্যান্ড প্রস্পারিটি (তোমার
দীর্ঘায়ু এবং সমৃদ্ধি কামনা করি) বাবা এই আশীর্বাদ দেন না যে - সদা (অমর) জীবিত থাকো।
এই কথা তো সাধু-সন্ন্যাসীরা বলে যে - 'অমর রহো' । বাচ্চারা, তোমরা বুঝে গেছো যে,
অমরপুরীতে অবশ্যই তোমরা অমর হবে। কিন্তু এই মৃত্যলোকে তারা কিভাবে অমর ভব -বলতে
পারেন। তো বাচ্চারা যখন মিটিং ইত্যাদি করে তখন বাবার থেকে রায় নেয়। বাবা এডভান্স
রায় দেন, সবাই নিজের নিজের রায় লিখে পাঠাও তাহলে সকলের মত একত্রিত হবে। রায় তো
মুরলীতে লিখলে সবার কাছে পৌঁছাতে পারে। ২-৩ হাজার খরচা বেঁচে যাবে। এই ২-৩ হাজার
দিয়ে তো ২-৩টি সেন্টার খুলতে পারবে। চিত্র ইত্যাদি নিয়ে গ্রামে গ্রামে যেতে হবে।
বাচ্চারা, সূক্ষ্ম
বতনের কথা নিয়ে তোমাদের অধিক আগ্রহ যেন না থাকে। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শংকর আদির চিত্র
তো আছে তাই এনাদের বিষয়ে অল্প কিছু বোঝানো যায়। এইসময় এঁনাদের অল্প একটু পার্ট আছে।
তোমরা সূক্ষ্ম বতনে যাও, মিলন মানাও, ব্যস্ আর কিছু নেই, এইজন্য এবিষয়ে অত্যাগ্রহ
প্রকাশ করো না। এখানে আত্মাদেরকে আহ্বান করা হয়, তাদেরকে দেখানো হয়। কেউ কেউ তো এসে
আবার কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। কেউ তো আবার প্রেমপূর্বক মিলন মানায়। কারো তো দুঃখের
অশ্রু প্রভাবিত হয়। এসব কিছু ড্রামাতে পার্ট আছে, যাকে চিটচ্যাট (বার্তালাপ,
chit-chat) বলা হয়। লৌকিক ব্রাহ্মণেরা তো কোনো আত্মাকে আহ্বান করে তারপর তাকে
কাপড়াদি পড়ায়। এখন সেই আত্মার শরীর তো শেষ হয়ে গেছে, তাহলে কাকে কাপড় পড়াবে?
তোমাদের মধ্যে সেই সংস্কার নেই। কান্নাকাটি আদির তো কোনও কথাই নেই। তো উঁচুর থেকেও
উঁচু হতে হবে, সেটা কি করে হবে? অবশ্যই মাঝে সঙ্গম যুগ থাকবে, যেখানে তোমরা পবিত্র
হবে। তোমরা একটি কথা প্রমাণ করে দেখালে তো তারা বলবে যে এরা তো একদম ঠিক কথাই বলছে।
ভগবান কখনও কি মিথ্যা বলতে পারেন? তারপর তো অনেকেরই বাবার প্রতি ভলোবাসা জন্মাবে,
অনেকেই আসবে। সময়ানুসারে বাচ্চারাও সমস্ত পয়েন্টস পেতে থাকবে। অন্তিম সময়ে কি কি হবে
সেটাও তোমরা দেখতে পাবে, যুদ্ধ লাগবে, বম্বস্ পড়বে। প্রথম দিকে মৃত্যু হবে তাদের।
এখানে তো রক্তের নদী প্রবাহিত হবে তারপর ঘি-দুধের নদী। প্রথম ধোঁয়া তো বিদেশেই দেখা
যাবে। ভয়ও সেখানে থাকবে। কতো বড় বড় বম্বস বানায়। কতো কি সব তার মধ্যে দেয়, যেটা
শহরকে একদম ধূলিসাৎ করে দেয়। এটাও বলতে হবে যে, কে স্বর্গের রাজত্ব স্থাপন করেছেন?
ঊর্ধ্বস্থিত গড ফাদার অবশ্যই সঙ্গমে আসেন। তোমরা জানো যে, এখনই হল সঙ্গম। তোমাদেরকে
মুখ্য কথা বোঝানো হয় যে, বাবাকে স্মরণ করো, যার দ্বারাই পাপ নাশ হবে। ভগবান যখন
এসেছিলেন তখন বলেছিলেন যে, মামেকম স্মরণ করো তো তোমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবে।
মুক্তিধামে যেতে পারবে। তারপর আবার প্রথম থেকে চক্রের পুনরাবৃত্তি হবে। দেবী-দেবতা
ধর্ম, ইসলাম ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম... তোমাদের স্টুডেন্টদের বুদ্ধিতে এইসমস্ত জ্ঞান থাকা
চাই। এটা ভেবে তোমাদের খুশী হয় যে, আমরা কতো উপার্জন করছি, এই অমর কথা অমর বাবা
তোমাদেরকে শোনাচ্ছেন। তোমাদের অনেক নাম রেখে দিয়েছে। প্রধান এবং সর্ব প্রথম হল
দেবী-দেবতা ধর্ম, তারপর আসতে আসতে সকলের বৃদ্ধি হতে হতে বৃক্ষের বৃদ্ধি হয়। অনেক
ধর্ম, অনেক মত হয়ে যায়। এই এক ধর্ম এক শ্রীমতের আধারেই স্থাপন হয়। এখানে দ্বৈতের কথা
নেই। এই আধ্যাত্মিক জ্ঞান আত্মিক পিতা বসে বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা তোমাদেরকে সর্বদা
খুশীতেই থাকতে হবে।
তোমরা জানো যে, বাবা
আমাদের এখন পড়াচ্ছেন, তোমরা অনুভবের দ্বারা এই কথা বলছো তাই এই শুদ্ধ অহংকার রাখতে
হবে যে ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন, আর কি চাই! যখন আমরা বিশ্বের মালিক হতে চলেছি তাহলে
খুশী কেন থাকে না বা নিশ্চয়ের মধ্যে কেন সংশয় আসে? বাবার প্রতি সংশয় রেখো না। মায়া
সংশয়ে নিয়ে এসে সব ভুলিয়ে দেয়। বাবা বুঝিয়েছেন যে, মায়া চোখের দ্বারা অনেক ধোঁকা
দেয়। ভালো কিছু খাবার জিনিস দেখলে মনে বারংবার সেটা খাওয়ার লোভ জন্মাবে। চোখ দিয়ে
দেখলে তবেই ক্রোধের উৎপত্তি হয়, মারতে উদ্যত হয়। না দেখলে তো মারবে কিভাবে? চোখ দিয়ে
দেখলে তবেই লোভ, মোহের উদ্রেক হয়। চোখ-ই ধোঁকা দেওয়ার জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করে।
তাই এর উপর সম্পূর্ণ সতর্ক থাকতে হবে। আত্মা জ্ঞান প্রাপ্ত করলে, তো ক্রিমিনাল সুলভ
দৃষ্টি সমাপ্ত হয়ে যায়। এই রকমও নয় যে, চোখ নষ্ট করে দিতে হবে। তোমাদেরকে তো,
ক্রিমিনাল আইকে সিভিল আই (আত্মিক দৃষ্টি) বানাতে হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সর্বদা এই নেশায় বা খুশীতে থাকতে হবে যে, আমাদেরকে ভগবান পড়াচ্ছেন। কোনও কথাতে সংশয়
বুদ্ধি হয়ো না। শুদ্ধ অহংকার রাখতে হবে।
২ ) সূক্ষ্ম বতনের
বিষয়ে বেশী ইন্টারেস্ট রাখবে না। আত্মাকে সতোপ্রধান বানানোর জন্য সম্পূর্ণ
পুরুষার্থ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সবাইকে বাবার সঠিক পরিচয় দিতে হবে।
বরদান:-
পাস
উইথ অনার হওয়ার জন্য পুরুষার্থের গতি তীব্র আর ব্রেক পাওয়ারফুল রেখে যথার্থ যোগী ভব
বর্তমান সময় অনুসারে
পুরুষার্থের গতি তীব্র আর ব্রেক পাওয়ারফুল চাই, তবে অন্তিম সময়ে পাস উইথ অনার হতে
পারবে। কেননা সেই সময়ের পরিস্থিতিগুলি বু্দ্ধিতে অনেক সংকল্প নিয়ে আসবে, সেই সময় সব
সংকল্পের থেকে ঊর্ধ্বে এক সংকল্পে স্থিত হওয়ার অভ্যাস চাই। বুদ্ধি যখন চারিদিকে
উদ্ভ্রান্ত হয়ে ছুটতে থাকবে তখন স্টপ করার প্র্যাক্টিস চাই। স্টপ করা আর হওয়া। যতটা
সময় চাও ততটা সময় বুদ্ধিকে এক সংকল্পে স্থিত করে নেওয়া - এটাই হল যথার্থ যোগ।
স্লোগান:-
তোমরা
হলে ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট, সেইজন্য কখনও নিস্পৃহ থাকতে পারো না, সার্ভেন্ট মানে সদা
সেবাতে উপস্থিত।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
যেরকম ইঞ্জেকশনের
দ্বারা ব্লাডের মধ্যে শক্তি ভরে দেয়। এইরকম তোমাদের শ্রেষ্ঠ সংকল্প ইন্জেকশনের কাজ
করবে। সংকল্প দ্বারা সংকল্পে শক্তি এসে যাবে - এখন এই সেবার অত্যন্ত প্রয়োজন। নিজের
সেফ্টির জন্যও শুভ আর শ্রেষ্ঠ সংকল্পের শক্তি আর নির্ভয়তার শক্তি জমা করো তবেই
অন্তিম সময় সুন্দর আর অসীমের কার্যে সহযোগী হয়ে অসীম বিশ্বের রাজ্য অধিকারী হতে
পারবে।