12.11.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা এসেছেন বাচ্চারা, তোমাদের শৃঙ্গার (সুসজ্জিত) করতে, পবিত্রতার সাজ হলো
সর্বোত্তম শৃঙ্গার"
প্রশ্নঃ -
যারা পুরো ৮৪
বার জন্ম গ্রহণ করবে, তাদের প্রধান লক্ষণ কি হবে?
উত্তরঃ
১ ) তারা
বাবার সাথে সাথে টিচার এবং সদ্গুরু - তিনজনকেই স্মরণ করবে। এমন নয় যে, বাবাকে স্মরণ
করলে টিচারকে ভুলে যাবে। তিনজনকে স্মরণ করলেই কৃষ্ণপুরীতে যেতে পারবে, অর্থাৎ
আদিকাল থেকে পার্ট প্লে করতে পারবে। ২ ) কোনো মায়াবী তুফান তাদেরকে কখনো হারাতে
পারবে না।
ওম্ শান্তি ।
সবার আগে বাবা
বাচ্চাদেরকে বলছেন - তোমরা এটা ভুলে যাও না তো যে, তোমরা বাবার সামনে, টিচারের সামনে
এবং সদগুরুর সামনে বসে আছো? বাবা মনে করেন যে, সবাই এইরকম স্মৃতিতে বসে নেই। তবুও
বাবার কর্তব্য হলো বোঝানো। এটাই হলো অৰ্থ সহ স্মরণ করা। আমাদের বাবা একদিকে যেমন
অসীম জগতের পিতা, সেইরকম টিচারও। আবার সদগুরু রূপে বাচ্চাদেরকে সাথে করে নিয়েও
যাবেন। বাবা বাচ্চাদেরকে সাজানোর জন্যই এসেছেন। পবিত্রতার সাজে সাজানোর জন্যই তিনি
আসেন। অসীম ধন-সম্পত্তিও দেন। যেখানে তোমাদেরকে যেতে হবে, সেই নুতন দুনিয়ার জন্যই
ধন-সম্পত্তি দেন। এইসব কথা বাচ্চাদেরকে স্মরণে রাখতে হবে। কিন্তু বাচ্চারা গাফিলতি
করার জন্য ভুলে যায়। যতটা খুশি হওয়া উচিত, ততটা হয় না। এইরকম বাবা তো কখনোই পাওয়া
যাবে না। তোমরা জানো যে আমরা তো অবশ্যই বাবার সন্তান। তিনি আবার আমাদেরকে শিক্ষাও
দেন। তাই তিনি হলেন আমাদের টিচার। আমাদের এই পড়াশুনা নুতন দুনিয়া অর্থাৎ অমরপুরীর
জন্য। এখন আমরা সঙ্গমযুগে রয়েছি। এটা অবশ্যই বাচ্চাদেরকে স্মরণে রাখতে হবে। যথাযথ
ভাবে স্মরণ করতে হবে। তোমরা জানো যে, এখন তোমরা কংসপুরী অর্থাৎ আসুরি দুনিয়াতে রয়েছ।
ধরে নাও কারোর সাক্ষাৎকার হলো। কিন্তু সাক্ষাৎকার হলেই তো কেউ কৃষ্ণপুরী অর্থাৎ তার
সাম্রাজ্যে যেতে পারবে না। বাবা, টিচার এবং গুরু তিনজনকে একসাথে স্মরণ করলেই যেতে
পারবে। এইসব কথা তো আত্মাদেরকেই বলা হচ্ছে। আত্মারাই বলে - হ্যাঁ বাবা, তুমি তো
ঠিকই বলছ। তুমি একদিকে যেমন পিতা, সেইরকম আবার শিক্ষক বা টিচার। সুপ্রিম আত্মাই
শিক্ষা দেন। লৌকিক পড়াশুনাও তো আত্মাই শরীরের দ্বারা করে। কিন্তু ওই আত্মাও পতিত এবং
শরীরটাও পতিত। দুনিয়ার মানুষ তো জানেই না যে আমরা আসলে নরকবাসী। তোমরা এখন বুঝেছ যে
আমরা তো এবার আমাদের স্বদেশে যাব। এটা তোমাদের স্বদেশ নয়। এটা তো রাবণের দেশ বা
বিদেশ। তোমাদের স্বদেশে তো অসীম সুখ থাকে। কংগ্রেসীরা এইরকম মনে করে না যে, পরের
রাজত্বে রয়েছে। আগে মুসলমানদের রাজত্বে ছিল, তারপর খ্রীস্টানদের রাজত্বে ছিল। এখন
তোমরা জানো যে আমরা নিজেদের রাজত্বে যাচ্ছি। আগে আমরা রাবণের রাজ্যকে নিজের রাজ্য
ভাবতাম। আমরা যে আগে রাম রাজ্যে ছিলাম সেটাই ভুলে গিয়েছিলাম। তারপর ৮৪ বার
জন্মগ্রহণ করার ফলে রাবণের রাজ্যে, দুঃখের দুনিয়ায় এসে গেছি। পরের রাজত্বে তো দুঃখই
হয়। এইসব জ্ঞানের বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে। বাবার কথা তো অবশ্যই মনে থাকবে। কিন্তু
তিনজনকেই স্মরণ করতে হবে। এই জ্ঞান তো মানুষই বুঝতে পারবে। জন্তু-জানোয়ার তো পড়বে
না। তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ যে ওখানে কেউ ব্যারিস্টার হওয়ার পড়াশুনা করবে না। বাবা
এখানেই তোমাদেরকে মালামাল করে দিচ্ছেন। কিন্তু সকলে তো রাজা হবে না। সব রকমের কাজই
হবে কিন্তু ওখানে তোমাদের কাছে অসীম সম্পত্তি থাকবে। কারোর কোনো লোকসান হবে না।
ওখানে কোনো ছিনতাই হয় না। নামটাই হলো স্বর্গ। বাচ্চারা, এখন তোমাদের স্মরণে এসেছে
যে আমরা স্বর্গে ছিলাম এবং তারপর পুনর্জন্ম নিতে নিতে নীচে নেমেছি। বাবা ওদেরকেই
এইসব কাহিনী শোনান। বাবা এটাও বোঝাচ্ছেন যে যারা ৮৪ জন্ম নেয়নি তাদেরকে মায়া হারিয়ে
দেবে। মায়াবী তুফান খুবই শক্তিশালী। অনেককেই মায়া হারানোর চেষ্টা করে। ভবিষ্যতে
তোমরা এইরকম অনেক দেখবে, অনেক শুনবে। যদি বাবার কাছে সবার ছবি থাকত তবে তোমরা দেখে
অবাক হয়ে যেতে যে অমুক বাচ্চা এতদিন ধরে বাবার জ্ঞানে চলার পরেও মায়া খেয়ে নিয়েছে।
ওরা মরে গেছে, মায়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। এখন কেউ দেহত্যাগ করলে এই দুনিয়াতেই
আবার জন্ম নেয়। তোমরা শরীর ছাড়ার পড়ে বাবার সঙ্গে সসীম জগতের ঊর্ধ্বে যে আত্মাদের
ঘর, সেখানে যাবে। ওখানে বাবা, মাম্মা এবং সকল বাচ্চারা থাকবে। পরিবার তো এইরকমই হয়।
মূলবতনে তো বাবা এবং ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক। অন্য কোনো সম্বন্ধ নেই। এখানে বাবা এবং
ভাই-বোনের সম্পর্ক থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে চাচা, মামা ইত্যাদি অনেক সম্বন্ধ হয়ে
যায়। সঙ্গমযুগে তোমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান হও। তাই তোমরা হলে ভাই-বোন। যখন
শিববাবাকে স্মরণ করো, তখন তোমরা হলে ভাই-ভাই। এইসব বিষয়গুলো ভালো ভাবে মনে রাখতে হবে।
অনেক বাচ্চাই ভুলে যায়। বাবা তো বোঝাচ্ছেন। বাবার কর্তব্য হলো বাচ্চাদেরকে মাথায়
বসানো। সেইজন্যই তিনি নমস্কার করেন। সবকিছু অর্থ সহ বোঝাচ্ছেন। ভক্তিমার্গের
সাধু-সন্তরা তোমাদেরকে জীবনমুক্তির উপায় বলতে পারবে না। ওরা তো কেবল মুক্তিলাভের
আশায় পুরুষার্থ করে। ওরা হলো নিবৃত্তি মার্গের পথিক। ওরা কিভাবে তোমাদেরকে রাজযোগ
শেখাবে ? রাজযোগ কেবল প্রবৃত্তি মার্গের জন্যই। প্রজাপিতা ব্রহ্মার চারটে হাত দেখানো
হয়। এটা তো প্রবৃত্তি মার্গের-ই প্রতীক। এখানে বাবা এনাদেরকে দত্তক নিয়ে নাম
রেখেছেন ব্রহ্মা এবং সরস্বতী। লক্ষ্য করো - ড্রামাতে কেমন সবকিছু পূর্ব-নির্ধারিত
রয়েছে। বানপ্রস্থ অবস্থায় ৬০ বছর হয়ে গেলে মানুষ গুরু করে। এনার মধ্যেও ৬০ বছর বয়সে
বাবা প্রবেশ করেছেন এবং বাবা, টিচার, গুরু হয়েছেন। আজকাল তো নিয়ম পাল্টে গেছে। ছোটো
বাচ্চাদেরকেও গুরু করিয়ে দিচ্ছে। ইনি তো নিরাকার। ইনি হলেন তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের
পিতা, শিক্ষক এবং সদগুরু। নিরাকার দুনিয়াকে আত্মাদের দুনিয়া বলা হয়। এমন নয় যে কোনো
দুনিয়াই নেই। ওটাকে শান্তিধাম বলা হয়। ওখানে আত্মারা থাকে। যদি বলা হয় যে পরমাত্মার
নাম, রূপ, দেশ, কাল কিছুই নেই তবে তাঁর সন্তানেরা এলো কোথা থেকে ? তোমরা বাচ্চারা
এখন বুঝতে পেরেছ যে এই অসীম জগতের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি কীভাবে আবর্তিত হয়। হিস্ট্রি
তো কোনো চৈতন্য ব্যক্তির হয়ে থাকে, আর জিওগ্রাফি হয় জড় বস্তুর। তোমরা আত্মারা জানো
যে, আমরা কতদিন রাজত্ব করি। পরে কাহিনীর আকারে সেই হিস্ট্রির বর্ণনা করা হয়।
জিওগ্রাফি তো কোনো দেশের হয়। কোনো চৈতন্য ব্যক্তিই তো রাজত্ব করেছে। জড় বস্তু তো
করেনি। অমুক ব্যক্তির রাজত্ব কতদিন ছিল, খ্রীস্টানরা ভারতে কতদিন রাজত্ব করেছিল…ইত্যাদি।
কিন্তু এই অসীম জগতের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি তো কেউই জানে না। বলে দেয় যে, কয়েক লক্ষ
বছর আগে সত্যযুগ ছিল। ওখানে কে কত সময় ধরে রাজত্ব করেছিল সেইসব কেউই জানে না।
এটাকেই হিস্ট্রি বলা হয়। আত্মা হল চৈতন্য আর শরীর হলো জড়। গোটাটাই জড় আর চৈতন্যের
খেলা। মানুষ জন্মকেই সর্বোত্তম জন্ম বলা হয়। মানুষেরই জনগণনা করা হয়।
জন্তু-জানোয়ারের সংখ্যা তো গোনাই সম্ভব নয়। গোটা খেলাটাই তোমাদেরকে কেন্দ্র করে।
হিস্ট্রি-জিওগ্রাফির কাহিনীও তোমরাই শোনো। এনার মধ্যে এসে বাবা তোমাদেরকে সকল বিষয়
বুঝিয়ে দেন। এইসব হলো অসীম জগতের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি । এইসব জ্ঞান ছিল না বলে তোমরা
কতো নির্বোধ হয়ে গিয়েছিলে। মানুষ হয়ে যদি দুনিয়ার হিস্ট্রি-জিওগ্রাফিকেই জানলো না,
তবে সেই মানুষ কোনো কাজের নয়। এখন তোমরা বাবার কাছ থেকে বিশ্বের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি
শুনছো। এটা খুবই সুন্দর বিষয়। কে পড়াচ্ছেন? বাবা। বাবা-ই তো সর্বশ্রেষ্ঠ পদ প্রাপ্ত
করান। লক্ষ্মী-নারায়ণের এবং যারা ওদের সঙ্গে স্বর্গে থাকে তাদের পদ সর্বশ্রেষ্ঠ।
ওখানে তো কেউ ওকালতি করবে না। ওখানে কেবল কিছু কৌশল শিখতে হবে। নাহলে ঘর-বাড়ি বানাবে
কিভাবে। একে অপরকে কৌশল শেখাবে। নাহলে এত ঘর-বাড়ি কে বানাবে ? নিজে থেকে তো নিশ্চয়ই
হবে না। বাচ্চারা, এইসব রহস্য এখন তোমাদের বুদ্ধিতেও পুরুষার্থের ক্রমানুসারে রয়েছে।
তোমরা জানো যে এই চক্র ক্রমাগত আবর্তিত হয়। এত সময় ধরে আমরা রাজত্ব করি, তারপর
রাবণের রাজত্বে আসি। দুনিয়ার মানুষ জানেই না যে, আমরা রাবণের রাজত্বে রয়েছি। কেবল
আকুতি করে - বাবা, আমাকে রাবণের রাজত্ব থেকে উদ্ধার করো। কংগ্রেসীরা তো
খ্রীস্টানদের রাজত্ব থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করেছে। কিন্তু তারপরেও বলতে থাকে - হে গড
ফাদার, আমাকে মুক্তি দাও। সেইসব কথা কি মনে পড়ে? কেউই জানে না যে, সবাই কেন এইরকম
বলে। তোমরা এখন বুঝেছো যে, গোটা বিশ্বের ওপরেই রাবণের রাজত্ব। সকলেই রাম রাজ্য চাইছে।
তাহলে কে মুক্তি দেবে? ওরা মনে করে গড ফাদার মুক্তি দেবে এবং গাইড হয়ে নিয়ে যাবে।
ভারতবাসীদের এতটা বুদ্ধি নেই। একেবারে তমোপ্রধান হয়ে গেছে। ওরা এত দুঃখও পায় না, আর
অত সুখও পায় না। ভারতবাসীরাই সবথেকে বেশি সুখী হয় এবং দুঃখীও হয়। সবই হিসাব অনুসারে।
এখন তো কতো দুঃখ। যারা ধার্মিক মনোভাবাপন্ন তারা গড ফাদার, মুক্তিদাতাকে স্মরণ করে।
তোমাদের অন্তরেও রয়েছে যে বাবা এসে আমাদের দুঃখ হরণ করে সুখধামে নিয়ে যাবেন। ওরা তো
বলে শান্তিধামে নিয়ে চলো। তোমরা বলো যে শান্তিধামে আর সুখধামে নিয়ে চলো। এখন যেহেতু
বাবা এসেছেন, তাই অনেক খুশি হতে হবে। ভক্তিমার্গে তো অনেক কানরস রয়েছে। কোনো সত্য
ঘটনার বর্ণনা ওখানে নেই। থাকলেও আটা মাখার সময় যেটুকু নুনের প্রয়োজন, সেইটুকুই রয়েছে।
চন্ডিকা দেবীর পূজাতেও মেলা হয়। চন্ডিকা দেবীর জন্য মেলা কেন হয়? কাকে চন্ডী বলা হয়?
বাবা বুঝিয়েছেন যে এখান থেকেই কেউ চন্ডাল হয়ে জন্ম নেবে। যারা এখানে থেকে সারাদিন
ভালোমন্দ খাওয়া-দাওয়া করে, সামান্য কিছু দান করার পর বলে - আমি যা দিয়েছি সেগুলো
আমাকে ফেরৎ দাও, আমি এইসব মানি না। যদি সংশয় চলে আসে, তবে সে ওখানে গিয়ে কি হবে?
এইরকম চন্ডিকার পূজাতেও মেলা হয়। হাজার হোক, সত্যযুগে তো আসবে, তাই না? সামান্য
সময়ের জন্য সহযোগী হলেও স্বর্গে আসতে পারবে। ওইসব ভক্তরা তো এ'সব জানে না। কারোর
কাছেই কোনো জ্ঞান নেই। ওদের কাছে যে গীতা রয়েছে তাতে চিত্র রয়েছে। ওইসব থেকে কত
রোজকার করে। আজকাল তো মানুষ ছবি খুব ভালোবাসে। ঐগুলোকেই আর্ট মনে করে। কিন্তু মানুষ
জানবে কি করে যে দেবী-দেবতাদের চিত্র আসলে কেমন। বাস্তবে তোমরা খুবই সুন্দর ছিলে।
কিন্তু এখন কেমন হয়ে গেছো। ওখানে কেউ এইরকম অন্ধ হবে না। দেবতাদের মধ্যে একটা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থাকবে। ওখানে সবার এইরকম ন্যাচারাল সৌন্দর্য থাকবে। সবকিছু
বোঝানোর পর বাবা বলছেন - বাচ্চারা, বাবাকে স্মরণ করো। বাবা হলেন পিতা, টিচার এবং
সদগুরু। তিনটে রূপেই স্মরণ করলে তিনটে উত্তরাধিকারই পেয়ে যাবে। অন্তিমে যারা আসবে
তারা তিনটে রূপে স্মরণ করতে পারবে না। ওরা কেবল মুক্তিতে যাবে। বাবা বুঝিয়েছেন,
সুক্ষ্মবতনে যাকিছু দেখতে পাও, সেগুলো তো কেবল সাক্ষাৎকার হয়। হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি
তো পুরোটাই এখানকার। এর আয়ু কত সেটা কেউই জানে না। বাচ্চারা, তোমাদেরকে এখন বাবা
বুঝিয়েছেন এবং তোমরা এরপর অন্য যেকোনো ব্যক্তিকে বোঝাতে পারবে। আগে তো বাবার পরিচয়
দিতে হবে। ইনি হলেন অসীম জগতের পিতা বা পরমপিতা। লৌকিক পিতাকে কখনো পরমাত্মা বা
সুপ্রীম আত্মা বলা হয় না। সুপ্রীম তো একজনই, ওঁনাকেই ভগবান বলা হয়। তিনি নলেজফুল বলে
তোমাদেরকেও শিক্ষা দেন। ঈশ্বরীয় নলেজ হলো সোর্স অফ ইনকাম। নলেজও উত্তম, মধ্যম এবং
কনিষ্ঠ হয়। যেহেতু বাবা সর্বশ্রেষ্ঠ, তাই তাঁর শিক্ষাও সর্বোত্তম এবং প্রাপ্ত পদটাও
শ্রেষ্ঠ। হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি তো সহজেই জেনে যায়। কিন্তু স্মরণের যাত্রাতেই যুদ্ধ
চলতে থাকে। এই বিষয়ে যদি তোমরা হেরে যাও তবে নলেজের বিষয়তেও হেরে যাবে। হেরে গিয়ে
যদি চলে যায় তবে জ্ঞানটাকেও ছেড়ে দেয়। তখন সেই আগের মতোই হয়ে যায়। তার থেকে আরও
খারাপ হয়ে যায়। বাবার সামনে বাচ্চার আচরণ দেখেই বোঝা যায় কার মধ্যে দেহ-অভিমান রয়েছে।
যদিও ব্রাহ্মণদেরও মালা আছে, কিন্তু কেউ কেউ তো একেবারে বোঝেই না যে আমি এখানে
কিভাবে ক্রমানুসারে বসে আছি। অনেক দেহ-অভিমান রয়েছে। যার নিশ্চয় আছে, সে খুব খুশি
হবে। কে কে নিশ্চিত যে আমি এই শরীরটা ছাড়ার পরেই প্রিন্স হবো? (সকলেই হাত তুলেছে)
বাচ্চারা খুব খুশি হয়। যখন তোমরা নিশ্চিত, তাহলে তো তোমাদের সবার মধ্যেই সকল
দিব্যগুণ থাকা উচিত। নিশ্চিত হওয়ার অর্থ বিজয় মালায় স্থান পাওয়া অর্থাৎ শাহজাদা হওয়া।
এমন একদিন অবশ্যই আসবে যখন অন্য সব তীর্থ ত্যাগ করে ফরেনাররা সবথেকে বেশি আবুতে আসবে।
ওরা ভারতের রাজযোগ শিখতে আগ্রহী। প্যারাডাইস কে স্থাপন করেছিল। পুরুষার্থ করা হয়।
যদি আগের কল্পে হয়েছিল তবে অবশ্যই এই কল্পেও মিউজিয়াম তৈরি হবে। বোঝাতে হবে যে আমরা
সবদিনের জন্য এইরকম প্রদর্শনী লাগিয়ে রাখতে চাই। ৪-৫ বছরের জন্য লিজে বাড়ি নিয়েও
করতে পারো। সুখধাম বানানোর জন্য আমরা ভারতের সেবা করছি। এতে অনেকের কল্যাণ হবে।
আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
অসীম খুশিতে থাকার জন্য সর্বদা স্মৃতিতে রাখতে হবে যে, স্বয়ং বাবা আমাদেরকে
সাজাচ্ছেন। তিনি আমাদেরকে অগাধ ধন-সম্পত্তি দেন। আমরা নুতন দুনিয়া বা অমরপুরীর জন্য
পড়াশুনা করছি।
২ ) বিজয়মালাতে স্থান
পাওয়ার জন্য নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। যা কিছু দিয়েছি সেইসব ফেরত
নেওয়ার কথা যেন কখনো চিন্তাতেও না আসে। বুদ্ধিতে সংশয় তৈরি করে নিজের পদ ভ্রষ্ট করা
উচিত নয়।
বরদান:-
ক্রোধী
আত্মাকে করুণার শীতল জল দ্বারা গুণ দান করে বরদানী আত্মা ভব
ক্রোধ অগ্নিতে জ্বলতে
থাকা কোনও আত্মা যদি তোমাদের সামনে আসে, তোমাদেরকে গালি দেয়, নিন্দা করে... তো
এইরকম আত্মাকেও নিজের শুভভাবনা, শুভকামনা দ্বারা, বৃত্তির দ্বারা, স্থিতির দ্বারা
গুণ দান করো বা সহনশীলতার শক্তির বরদান দাও। ক্রোধী আত্মা পরবশে থাকে, এইরকম পরবশ
আত্মাকে করুণার শীতল জল দ্বারা শান্ত করে দাও, এটাই হল তোমাদের, বরদানী আত্মাদের
কর্তব্য। চৈতন্য রূপে যখন তোমাদের মধ্যে এইরকম সংস্কার ভরপুর থাকবে তবেই তো জড়
চিত্র দ্বারা ভক্তদের বরদান প্রাপ্ত হবে।
স্লোগান:-
স্মরণের দ্বারা সর্ব শক্তির খাজানার অনুভবকারীই শক্তি সম্পন্ন থাকে।