21.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
পুরুষার্থ করে তোমাদের দৈবী গুণ খুব ভালোভাবে ধারণ করতে হবে। কাউকেই দুঃখ দেবে না,
তোমাদের আচার - আচরণ কখনোই আসুরী হওয়া উচিত নয়"
প্রশ্নঃ -
কোন্ আসুরী
গুণ তোমাদের শৃঙ্গারকে খারাপ করে দেয়?
উত্তরঃ
নিজেদের মধ্যে
লড়াই ঝগড়া করা, রেগে যাওয়া, সেন্টারে গন্ডগোল করা, কাউকে দুঃখ দেওয়া - এ হলো আসুরী
গুণ, যা তোমাদের শৃঙ্গারকে খারাপ করে দেয় । যে বাচ্চারা বাবার হয়েও এই আসুরী গুণকে
ত্যাগ করে না, বিপরীত কর্ম করে, তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায় । এ হলো হিসাব আর হিসাব
। বাবার সঙ্গে ধর্মরাজও আছে ।
গীতঃ-
ভোলানাথের চেয়ে
অনুপম কেউ নেই...
ওম্ শান্তি ।
আত্মা রূপী
বাচ্চারা একথা তো জেনেছেই যে, উচ্চ থেকেও উচ্চ হলেন ভগবান । মানুষ গায়ন করে আর তোমরা
দেখো দিব্যদৃষ্টিতে । তোমরা বুদ্ধির দ্বারাও জানতে পারো যে, আমাদের তিনি পড়াচ্ছেন ।
আত্মাই শরীরের দ্বারা পড়ে । সবকিছুই আত্মা এই শরীরের দ্বারা করে । শরীর হলো বিনাশী,
যা ধারণ করে আত্মা এই পার্ট প্লে করে । আত্মার মধ্যেই সমস্ত পার্ট নির্ধারিত রয়েছে
। আত্মার মধ্যেই এই ৮৪ জন্মের পার্ট নির্ধারিত রয়েছে । সর্বপ্রথমে তো নিজেকে আত্মা
মনে করতে হবে । বাবা হলেন সর্বশক্তিমান । বাচ্চারা, তোমরা তাঁর থেকেই শক্তি পাও ।
যোগ থেকেই তোমরা বেশী শক্তি পাও, যাতে তোমরা পবিত্র হও । বাবা তোমাদের এই বিশ্বের
রাজত্ব করার জন্য শক্তি প্রদান করেন । বাবা এতো মহান শক্তি দান করেন তোমাদের, আর ওই
সায়েন্সের অহংকারীরা এতো সবকিছু বানায় বিনাশের জন্য । ওদের বুদ্ধি হলো বিনাশের জন্য
আর তোমাদের বুদ্ধি হলো অবিনাশী পদ পাওয়ার জন্য । তোমরা অনেক শক্তি পাও, যাতে তোমরা
এই বিশ্বের রাজত্ব অর্জন করো । ওখানে প্রজার উপর প্রজার রাজত্ব হয় না । ওখানে হলো
রাজা - রানীর রাজত্ব । উঁচুর থেকেও উঁচু হলেন ভগবান । তোমরা তাঁকেই স্মরণ করো ।
মানুষ কেবল লক্ষ্মী - নারায়ণের মন্দির বানিয়ে পূজা করে । তবুও উঁচুর থেকেও উঁচু
ভগবানের গায়ন আছে । এখন তোমরা বুঝতে পারো যে, এই লক্ষ্মী - নারায়ণ বিশ্বের মালিক
ছিলেন । অসীম জগতের বাবার থেকে উচ্চ থেকেও উচ্চ বিশ্বের বাদশাহী পাওয়া যায় । তোমরা
কতো উঁচু পদ পাও । বাচ্চাদের তাই কতো খুশী হওয়া উচিত । যার থেকে কিছু পাওয়া যায়,
তাঁকে তো স্মরণ করা হয়, তাই না । কন্যার তার পতির প্রতি কতো প্রেম থাকে, কতো মেয়ে
পতির জন্য প্রাণ দিয়ে দেয় । পতি মারা গেলে কতো দুঃখের সঙ্গে কাঁদতে থাকে । আর ইনি
হলেন পতিরও পতি, ইনি তোমাদের কতো সাজাচ্ছেন - এই উচ্চ থেকেও উচ্চ পদ প্রাপ্ত করাবার
জন্য । তাই বাচ্চারা, তোমাদের কতো নেশা থাকা উচিত । দৈবীগুণও তোমাদের এখানেই ধারণ
করতে হবে । অনেকের মধ্যেই এখনো পর্যন্ত আসুরী অপগুণ আছে, লড়াই - ঝগড়া করা, রেগে
যাওয়া, সেন্টারে গন্ডগোল বাঁধানো.... বাবা জানেন, বাবার কাছে অনেক রিপোর্টও আসে ।
কাম মহাশত্রু, ক্রোধও কিন্তু কম শত্রু নয় । অমুককে বেশী ভালোবাসে, আমাকে কেন
ভালোবাসে না ! অমুক কথা একে জিজ্ঞেস করলো, আমাকে কেন জিজ্ঞেস করলো না ! এমন - এমন
কথা বলা সংশয় বুদ্ধির অনেকেই আছে । রাজধানী তো স্থাপন হচ্ছে, তাই না । এমন যারা,
তারা কি পদ পাবে ? এই পদে তো অনেক তফাৎ থাকে । মেথরদেরও দেখো কতো ভালো ভালো বাড়ীতে
থাকে সেখানে, কেউ আবার অন্য কোথাও থাকে । প্রত্যেকেরই নিজেকে খুব ভালো পুরুষার্থ করে
দৈবীগুণ ভালোভাবে ধারণ করতে হবে । দেহ অভিমানে আসার কারণে আসুরী আচরণ হয়ে যায় ।
যখন দেহী অভিমানী হয়ে খুব ভালোভাবে ধারণ করতে থাকো, তখন উঁচু পদ পাও । দৈবী গুণ
ধারণ করার জন্য এমন পুরুষার্থ করতে হবে । কাউকেই দুঃখ দেবে না । বাবা, তোমরা দুঃখ
হর্তা এবং সুখকর্তা বাবার সন্তান । তোমাদের কাউকেই দুঃখ দেওয়া উচিত নয় । যে
সেন্টার সামলায়, তার উপর অনেক দায়িত্ব । বাবা যেমন বলেন - বাচ্চারা, যদি কেউ ভুল করে
তাহলে শতগুণ দণ্ড ভোগ করতে হয় । দেহ অভিমান আসার কারণে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়, কেননা
তোমরা ব্রাহ্মণরা ওদের শুধরে দেওয়ার জন্য নিমিত্ত হয়েছো । নিজেরাই যদি সংশোধন করে
নিতে না পারো, তাহলে তাহলে অন্যদের কিভাবে সংশোধন করবে? তখন অনেক ক্ষতি হয়ে যায় ।
এ তো পাণ্ডব গভর্নমেন্ট, তাই না । উঁচুর থেকে উঁচু বাবাও যেমন আছেন, তাঁর সঙ্গে
ধর্মরাজও আছেন । ধর্মরাজের কাছে অনেক বড় সাজা ভোগ করে । এমন কিছু কর্ম করে যে নিজের
অনেক ক্ষতি করে ফেলে । হিসেব তো হিসেবই, বাবার কাছে সম্পূর্ণ হিসেব থাকে ।
ভক্তিমার্গেও হিসেব হিসেবই । এমন বলেও থাকে যে - ভগবান তোমার হিসেব নেবে । এখানে
বাবা নিজেই বলেন যে, ধর্মরাজ অনেক বড় হিসেব নেবে । তখন সেই সময় কি করতে পারবে !
সাক্ষাৎকার হবে যে - আমরা এই এই করেছিলাম । ওখানে তো অল্প সাজা ভোগ করো আর এখানে তো
অনেক সাজা ভোগ করতে হবে । বাচ্চারা, তোমাদের সত্যযুগে গর্ভজেলে আসতে হবে না । ওখানে
তো গর্ভ মহল । ওখানে কেউ পাপ ইত্যাদি করে না । তাই এমন রাজ্য - ভাগ্য পাওয়ার জন্য
বাচ্চাদের অনেক সাবধান থাকতে হবে । কোনো কোনো বাচ্চা ব্রহ্মাণীর (টিচার ) থেকেও
তীক্ষ্ণ হয়ে যায় । তাদের ভাগ্য ব্রহ্মাণীর ( টিচার ) থেকেও উঁচু হয়ে যায় । বাবা
এও বুঝিয়েছেন যে - ভালো সেবা না করলে তাহলে তো জন্ম - জন্মান্তর দাস - দাসী হবে ।
বাবা সম্মুখে এসেই
বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন - বাচ্চারা, দেহী - অভিমানী হয়ে বসেছো তো? বাবার
বাচ্চাদের প্রতি মহাবাক্য হলো - আত্ম - অভিমানী হওয়ার জন্য অনেক পুরুষার্থ করতে হবে
। ঘুরতে - ফিরতেও তোমাদের বিচার সাগর মন্থন করতে হবে । অনেক বাচ্চারা আছে, যারা মনে
করে যে, আমরা খুব তাড়াতাড়ি নরকের এই ছি - ছি দুনিয়া থেকে সুখধামে যাবো । বাবা বলেন
যে, খুব ভালো ভালো মহারথীরাও যোগে ফেল করে যায় । তাদেরও আবার পুরুষার্থ করানো হয়
। যোগ না হলে একদম নেমে যাবে । জ্ঞান তো খুবই সহজ । এই হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি
সম্পূর্ণভাবে বুদ্ধিতে এসে যায় । খুব ভালো ভালো বাচ্চা আছে যারা প্রদর্শনীতে খুব
তীক্ষ্ণভাবে বোঝাতে পারে, কিন্তু তাদের যোগ নেই, ফলে দৈবী গুণও নেই । মাঝে মাঝে মনে
হয়, বাচ্চাদের কি অবস্থা । দুনিয়াতে কতো দুঃখ । শীঘ্রই এই দুঃখ যেন সমাপ্ত হয়ে
যায় । বাবা (ব্রহ্মা )অপেক্ষায় বসে থাকে যে শীঘ্রই সুখধামে যাবে । বাচ্চারা ছটফট
করতে থাকে, যেমন বাবার সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য তারা ছটফট করে, কেননা বাবা আমাদের
স্বর্গের পথ বলে দেন । এমন বাবাকে দেখার জন্য ছটফট করে । তারা মনে করে এমন বাবার
সামনে গিয়ে রোজ মুরলী শুনি । এখন তো তোমরা বুঝতে পারো যে, এখানে কোনো ঝঞ্ঝাটের কথা
থাকে না । বাইরে থাকলেই সমস্ত সম্বন্ধ - সম্পর্কের বন্ধন মুক্ত হয়ে কর্তব্য পালন
করতে হয় । না হলে তো সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাবে, তাই বাবা ধৈর্য ধরতে বলেন । এতে
অনেক গুপ্ত পরিশ্রম । কেউ কেউ এই স্মরণের পরিশ্রম করতে পারে না । গুপ্ত স্মরণে থাকলে
বাবার নির্দেশ মতোই চলবে । দেহ অভিমান থাকলে বাবার এই নির্দেশে চলেই না । আমি বলি
যে চার্ট বানাও, তাহলে অনেক উন্নতি হবে । একথা কে বলেছেন ? শিববাবা বলেছেন । টিচার
যদি কোনো কাজ দেয়, তাহলে তো করে আসে, তাই না । এখানে ভালো ভালো বাচ্চাদেরও মায়া
করতে দেয় না । এই ভালো ভালো বাচ্চাদের চার্ট যদি বাবার কাছে আসে, তাহলে বাবা বলতে
পারেন যে - দেখো, কিভাবে তোমরা স্মরণে থাকো । তারা মনে করে আমরা আত্মারা এক
প্রিয়তমের (মাশুক) আশিক প্রিয়তমা (আশিক)। ওই দেহের প্রিয়তম - প্রিয়তম (আশিক - মাশুক)
তো অনেক প্রকারের হয় । তোমরা অনেক পুরানো আশিক । তোমাদের এখন দেহী - অভিমানী হতে
হবে । তোমাদের কিছু না কিছু সহ্য করতেই হবে । তোমরা অতি চালাকি করো না । বাবা এমন
বলেনই না যে, তোমরা তোমাদের অস্থি পর্যন্ত বিসর্জন দাও । বাবা তো এমন কথাই বলেন যে,
তোমরা সুস্থ থাকো, তাহলে সেবাও ভালোভাবে করতে পারবে । অসুস্থ হলে তো পড়ে থাকবে ।
কেউ কেউ হাসপাতালেও সেবা করে, তখন ডাক্তাররা বলে যে, এরা তো ফরিস্তা । চিত্র সাথে
করে নিয়ে যায় । যারা এমন সার্ভিস করবে, তাদের দয়ালু বলা হবে । সেবার কারণে অনেকেই
বেড়িয়ে পড়ে । তোমরা যতো স্মরণের শক্তিতে থাকবে, ততই অন্য মানুষদের আকর্ষণ করতে পারবে,
এতে তো শক্তি আছে । পবিত্রতা হলো প্রথম শক্তি । এমন বলাও হয় যে, প্রথমে হলো
পবিত্রতা, তারপর শান্তি এবং সম্পদ । এই স্মরণের বলেই তোমরা পবিত্র হও । এরপর হলো
জ্ঞান বল । তোমরা স্মরণে দুর্বল হয়ো না । এই স্মরনেই বিঘ্ন আসে । এই স্মরণে থাকলেই
তোমরা পবিত্র হতে পারবে এবং তোমাদের মধ্যে দৈবী গুণ এসে যাবে । বাবার মহিমা তো তোমরা
জানো, তাই না । বাবা তোমাদের কতো সুখ দেন । ২১ জন্মের জন্য তোমাদের সুখের যোগ্য করে
তোলেন । তোমাদের কখনোই কাউকে দুঃখ দেওয়া উচিত নয় ।
কোনো কোনো বাচ্চা
ডিসসার্ভিস করে নিজেরাই নিজেদের অভিশপ্ত করে দেয়, অন্যদেরও খুব বিরক্ত করে ।
কুপুত্র বাচ্চা হলে নিজেরাই নিজেদের অভিশপ্ত করে দেয় । ডিসসার্ভিস করলে একদম পড়ে
যায় । অনেক বাচ্চা আছে, যারা বিকারে পড়ে যায় অথবা ক্রোধে এসে পড়া ছেড়ে দেয় ।
এখানে অনেক প্রকারের বাচ্চা বসে আছে । এখান থেকে তারা রিফ্রেশ হয়ে যায়, তারপর
ভুলের জন্য অনুতাপ করে । তবুও এই অনুতাপে তো কোনো মাফ হতে পারে না । বাবা বলেন,
তোমরা নিজেরাই নিজেকে ক্ষমা করো । তোমরা স্মরণে থাকো । বাবা কাউকেই ক্ষমা করেন না ।
এ তো হলো পড়া । বাবা পড়ান, বাচ্চাদের নিজেদের উপর কৃপা করে সেই পড়া পড়তে হয় ।
ব্যবহারও খুব সুন্দর রাখতে হয় । বাবা ব্রহ্মাণীদের বলে যে, রেজিস্টার নিয়ে এসো ।
এক একজনের খবর নিয়ে তাদের বুঝিয়ে বলা হয় । তাই তারা তখন মনে করে যে, ব্রহ্মাণী তো
রিপোর্ট দিয়েই দিয়েছে, তাই আরো ডিসসার্ভিস করতে লেগে যায় । এ অনেক পরিশ্রমের । মায়া
অনেক বড় শত্রু । বাঁদর থেকে মন্দির হতে দেয় না । তখন উঁচু পদ পাওয়ার পরিবর্তে
সম্পূর্ণ নীচে নেমে যায় । তখন আর উঠতে পারে না, ফলে মৃত হয়ে যায় । বাবা
বাচ্চাদের বারবার বুঝিয়ে বলেন, এ অনেক উঁচু লক্ষ্য, তোমাদের এই বিশ্বের মালিক হতে
হবে । বড় মানুষদের বাচ্চারা অনেক বড় রাজকীয়তার সঙ্গে চলাফেরা করে । কোথাও যেন বাবার
সম্মান না নষ্ট হয় । লোকে তখন বলবে - তোমাদের বাবা কতো ভালো আর তোমরা কেমন কুপুত্র
। তোমরা তোমাদের বাবার সম্মান নষ্ট করছো । এখানে তো প্রত্যেকেই তার সম্মান নষ্ট করে
। ফলে অনেক সাজা ভোগ করতে হয় । বাবা সাবধান করেন, তোমরা খুব সাবধানে চলো । জেলের
কয়েদি হয়ো না । জেলের কয়েদি তো এখানেই হয়, সত্যযুগে তো আর কোনো জেল থাকে না । তবুও
তোমাদের এই ঈশ্বরীয় পড়া পড়ে উঁচু পদ প্রাপ্ত করা চাই । তোমরা কোনো গাফিলতি করো না
। কাউকেই দুঃখ দিও না । স্মরণের যাত্রায় থাকো । এই স্মরণই তোমাদের কাজে আসবে ।
প্রদর্শনীতেও তোমরা এই মুখ্য কথাই বলো । বাবার স্মরণেই তোমরা পবিত্র হতে পারবে ।
সবাই তো পবিত্র হতে চায় । এ হলোই পতিত দুনিয়া । সকলের সদগতি করতে তো এক বাবাই আসেন
। খ্রাইস্ট, বুদ্ধ ইত্যাদি তো কারোরই সদগতি করতে পারে না । এরপর ব্রহ্মার নামও নেওয়া
হয় । ব্রহ্মাকেও সদগতিদাতা বলা যাবে না । তিনি হলেন দেবী - দেবতা ধর্মের নিমিত্ত ।
যদিও দেবী - দেবতা ধর্মের স্থাপন তো শিববাবাই করেন, তবুও নাম তো আছে না, যে ব্রহ্মা,
বিষ্ণু এবং শঙ্কর । ত্রিমূর্তি ব্রহ্মা বলে দেয় । বাবা বলেন যে, ইনিও গুরু নন ।
গুরু তো একজনই, তাঁর দ্বারা তোমরা আত্মিক গুরু হও । বাকি ওরা হলো ধর্ম স্থাপক ।
ধর্ম স্থাপকদের কিভাবে সদগতিদাতা বলা যাবে, এ বোঝার জন্য খুব গভীর কথা । অন্য ধর্ম
স্থাপকরা তো কেবল ধর্ম স্থাপন করেন, যাদের পিছনে সবাই এসে যায়, তারা কখনো কাউকেই
ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে না । তাদের তো পুনর্জন্মে আসতেই হবে, সবার জন্যই এ কথা
বোঝানো হয়েছে । একজন গুরুও নেই সদগতি দান করার জন্য । বাবা বোঝান যে, গুরু পতিত
পাবন একজনই, তিনিই সকলের সদগতি দাতা, উদ্ধারকর্তা, এ কথা বলা উচিত যে, আমাদের গুরু
একজনই, যিনি আমাদের সদগতি দান করেন, শান্তিধাম আর সুখধামে নিয়ে যান । সত্যযুগে
অনেক অল্প লোক থাকে । সেখানে কার রাজ্য ছিলো, সে তো চিত্রতে দেখাবে, তাই না ।
ভারতবাসীরাই এ কথা মানবে, দেবতাদের পূজারী চট করে মানবে যে, বরাবর এঁরাই তো
স্বর্গের মালিক ছিলেন । স্বর্গে এনাদের রাজত্ব ছিলো । বাকি সব আত্মারা কোথায় ছিলো ?
তোমরা অবশ্যই বলবে যে, নিরাকারী দুনিয়াতেই ছিলো । এও তোমরা এখনই বুঝতে পারো । পূর্বে
কিছুই জানতে না । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন এই চক্র ঘুরতে থাকে । বরাবর পাঁচ হাজার বছর
পূর্বে ভারতে এনাদের রাজ্য ছিলো, জ্ঞানের প্রলব্ধ যখন সম্পূর্ণ হয় তখন ভক্তি মার্গ
শুরু হয়, তারপর পুরানো দুনিয়ার জন্য বৈরাগ্য চাই । ব্যস, এখন আমরা নতুন দুনিয়াতে
যাবো । পুরানো দুনিয়ার থেকে আমাদের মন উঠে যায় । ওখানে পতি , বাচ্চা সব এমনই পাওয়া
যাবে । অসীম জগতের পিতা তো আমাদের এই বিশ্বের মালিক বানান । যে বাচ্চারা এই বিশ্বের
মালিক হবে, তাদের চিন্তাভাবনা অনেক উঁচু আর চাল চলন রয়্যাল হবে । তাদের ভোজনও খুব
কম, লোভ থাকা উচিত নয় । যারা স্মরণে থাকে, তাদের ভোজনও খুব সূক্ষ্ম হবে । অনেকেরই
খাওয়ার দিকে বুদ্ধি চলে যায় । বাচ্চারা, তোমরা এই বিশ্বের মালিক হওয়ার নেশায় খুশীতে
থাকো । এমন বলা হয় যে, খুশীর মতো খাবার নেই । এমন খুশীতে যদি সদা থাকো তাহলে
খাওয়াদাওয়ার ইচ্ছাও কম হয়ে যাবে । অনেক খাবার খেলে ভারী হয়ে যায় তখন ঝিমুনি আসতে
থাকে । তখন বলে যে, বাবা ঘুম এসে যায় । ভোজন সর্বদা একরস হওয়া চাই, এমন নয় যে ভালো
খাবার হলে অনেক বেশী খেতে হবে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
আমরা দুঃখহর্তা সুখকর্তা বাবার সন্তান, আমাদের কাউকেই দুঃখ দেওয়া উচিত নয় ।
ডিসসার্ভিস করে নিজেকে কখনোই অভিশপ্ত করা উচিত নয় ।
২ ) নিজের চিন্তাভাবনা
অনেক উচ্চ এবং রাজকীয় রাখতে হবে । দয়ালু হয়ে এই সেবাতে তৎপর থাকতে হবে ।
খাওয়াদাওয়ার লোভ ত্যাগ করতে হবে ।
বরদান:-
অনেস্ট
হয়ে বাবার কাছে নিজেকে পরিস্কার রেখে চড়তি কলার অনুভবী ভব
তুমি যা, তুমি ঠিক
যেমন - তেমনটিই নিজেকে বাবার সামনে পরিস্কার ভাবে তুলে ধরা- এটাই হলো সবথেকে বড়র
থেকেও বড় চড়তি কলার সাধন। বুদ্ধিতে যে অনেক প্রকারের বোঝা রয়েছে, সেগুলিকে সমাপ্ত
করার এটাই হলো সহজ যুক্তি। অনেস্ট হয়ে নিজেকে বাবার সামনে স্পষ্ট করা অর্থাৎ
পুরুষার্থের মার্গ স্পষ্ট বানানো। কখনও চালাকি করে মনমত আর পরমতের প্ল্যান বানিয়ে
বাবা বা নিমিত্ত হওয়া আত্মাদের কাছে যদি কোনও কথা বলো - তাহলে সেটা অনেস্টি নয়।
অনেস্টি অর্থাৎ যেরকম, বাবা যা, বাবা ঠিক, বাচ্চাদের সামনে স্পষ্ট ভাবে রয়েছেন,
সেইরকমই বাচ্চারা বাবার সামনে স্পষ্ট থাকবে।
স্লোগান:-
সত্যিকারের তপস্বী সে, যে সদা সর্বস্ব ত্যাগীর পজিশনে থাকে।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
বর্তমান হলো
ভবিষ্যতের দর্পণ। বর্তমানের স্টেজ অর্থাৎ দর্পণ দ্বারা নিজের ভবিষ্যত স্পষ্ট দেখতে
পারো। ভবিষ্যতের রাজ্য অধিকারী হওয়ার জন্য চেক করো যে বর্তমানে আমার মধ্যে রুলিং
পাওয়ার কতখানি আছে? প্রথমে, যে সূক্ষ্ম শক্তিগুলি আছে, সংকল্প শক্তির উপর, বুদ্ধির
উপর যখন বিশেষ কার্যকর্তার সম্পূর্ণ অধিকার থাকবে তখন নিজের ভবিষ্যত উজ্জ্বল বানাতে
পারবে।