23.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
যখনই সময় পাবে, একান্তে বসে বিচার সাগর মন্থন করো, যেসব পয়েন্টস শুনছো সেগুলো
রিভাইজ করো”
প্রশ্নঃ -
তোমাদের এই
স্মরণের যাত্রা কখন সম্পূর্ণ হবে?
উত্তরঃ
যখন তোমাদের
কোনো কর্মেন্দ্রিয় আর ধোঁকা দেবে না, কর্মাতীত অবস্থায় পৌঁছে যাবে, তখন স্মরণের
যাত্রা সম্পূর্ণ হবে। এখন তোমাদেরকে পুরোদমে পুরুষার্থ করতে হবে। নিরাশ হলে চলবে
না। সেবাতেও সর্বদা হাজির থাকতে হবে।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
বাচ্চারা, তোমরা কি আত্ম-অভিমানী হয়ে বসেছো? বাচ্চারা বুঝেছে যে, অর্ধেক কল্প ধরে
আমরা দেহ-অভিমানী ছিলাম। তাই এখন দেহী-অভিমানী হয়ে থাকার জন্য পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
বাবা এসে বোঝাচ্ছেন, নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করে বসলেই বাবা স্মরণে থাকবেন, নাহলে
ভুলে যাবে। স্মরণ না করলে যাত্রা করবে কিভাবে? পাপ নাশ হবে কিভাবে? অনেক ক্ষতি হয়ে
যাবে। প্রতিমুহূর্তে স্মরণ করতে থাকো। এটাই আসল কথা। এছাড়াও বাবা অনেক ধরনের যুক্তি
বলে দিচ্ছেন। কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল সেটাও বোঝাচ্ছেন। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। তিনি
ভক্তিমার্গের ব্যাপারেও জানেন। বাচ্চাদেরকে ভক্তিমার্গে কত কিছুই না করতে হয়। তিনি
বোঝাচ্ছেন - এইসব যজ্ঞ, তপস্যা ইত্যাদি সব ভক্তিমার্গের বিষয়। হয়তো বাবার গুনগান
করে কিন্তু সব ভুলভাল। বাস্তবে ওরা কৃষ্ণের মহিমা সম্বন্ধেও সবকিছু জানে না।
প্রত্যেকটা বিষয় ভালোভাবে বুঝতে হবে। যেমন কৃষ্ণকে বৈকুণ্ঠনাথ বলা হয়। আচ্ছা ঠিক
আছে। কিন্তু বাবা জিজ্ঞেস করছেন, কৃষ্ণকে কি ত্রিলোকের নাথ বলা যায়? ত্রিলোকীনাথের
কতো গায়ন রয়েছে। ত্রিলোকের নাথ অর্থাৎ তিন লোকের নাথ। তিন লোক মানে মূলবতন,
সূক্ষ্মবতন আর স্থূলবতন। বাচ্চারা, তোমাদেরকে বুঝিয়েছি যে তোমরা হলে ব্রহ্মান্ডের
মালিক। কৃষ্ণ কি নিজেকে এইরকম ব্রহ্মান্ডের মালিক মনে করবে? না, সে তো বৈকুণ্ঠে
থাকবে। স্বর্গ অথবা নতুন দুনিয়াকে বৈকুণ্ঠ বলা হয়। সুতরাং কেউই ত্রিলোকের নাথ নয়।
বাবা এখন সঠিক কথা বোঝাচ্ছেন। তিন লোক তো অবশ্যই আছে। শিববাবা যেমন ব্রহ্মান্ডের
মালিক, সেইরকম তোমরাও ব্রহ্মান্ডের মালিক। সূক্ষ্মবতনের তো কোনো ব্যাপার-ই নেই। তিনি
স্থূলবতনেরও মালিক নন - স্বর্গেরও মালিক নন, আর নরকেরও মালিক নন। কৃষ্ণ হলো
স্বর্গের মালিক। নরকের মালিক হলো রাবণ। এটাকে রাবণের রাজ্য বা অসুরের রাজ্য বলা হয়।
মানুষ হয়তো মুখে এইরকম বলে, কিন্তু এর অর্থ বোঝে না। তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকে এখন
বাবা নিজে বসে থেকে বোঝাচ্ছেন। রাবণের ১০টা মাথা দেখানো হয়েছে - স্ত্রীলোকের ৫
বিকার এবং পুরুষের ৫ বিকার। এই ৫টা বিকার তো সকলের মধ্যেই রয়েছে। সকলেই রাবণের
রাজত্বে রয়েছে। তোমরা এখন শ্রেষ্ঠাচারী হচ্ছ। বাবা নিজে এসে এইরকম শ্রেষ্ঠাচারী
দুনিয়া তৈরি করেন। একান্তে বসে থাকলে এইরকম বিচার সাগর মন্থন চলতে থাকবে। দুনিয়ার
পড়াশোনার জন্যেও স্টুডেন্ট একান্তে বই নিয়ে পড়তে থাকে। তোমাদের তো কোনো বই পড়ার
দরকার নেই। তবে হ্যাঁ, তোমরা পয়েন্টস নোট করো। পরে এগুলো রিভাইজ করতে হবে। এগুলো
খুবই গুহ্য বিষয়, ভালোভাবে বুঝতে হবে। বাবা বলছেন - আজকে আমি তোমাদেরকে সবথেকে
গুহ্য এবং নুতন নুতন কথা বোঝাচ্ছি। লক্ষ্মী-নারায়ণই হলো পরশপুরীর মালিক। বিষ্ণুকেও
বলা যাবে না। মানুষ তো বোঝেই না যে বিষ্ণু আসলে লক্ষ্মী-নারায়ণ। তোমরা সংক্ষেপে
তোমাদের লক্ষ্যের বিষয়ে বোঝাও। ব্রহ্মা এবং সরস্বতীর মধ্যে কোনো মেল-ফিমেল সম্পর্ক
নেই। প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার বলা যায়। কিন্তু শিববাবা-কে
কেবল বাবা বলা যাবে। বাকি সবাই ভাই। এতজন সবাই ব্রহ্মার সন্তান। সবাই জানে যে আমরা
হলাম ভগবানের সন্তান অর্থাৎ ভাই-ভাই। কিন্তু সেটা তো নিরাকারী দুনিয়ার সম্পর্ক। এখন
তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছ। সত্যযুগকে বলা হয় নতুন দুনিয়া। এই যুগের নাম হলো পুরুষোত্তম
সঙ্গমযুগ। সত্যযুগে সকলেই পুরুষোত্তম হবে। এগুলো কতোই না সুন্দর কথা। তোমরা এখন সেই
নুতন দুনিয়ার জন্য তৈরি হচ্ছ। এই সঙ্গমযুগেই তোমরা পুরুষোত্তম হও। তোমরা বলো যে আমরা
লক্ষ্মী-নারায়ণ হবো। এরা সবথেকে উত্তম পুরুষ। ওদেরকেই দেবতা বলা হয়। লক্ষ্মী-নারায়ণ
হলো সর্বোত্তম, সর্বপ্রথম। তারপরে ক্রমানুসারে তোমরা বাচ্চারা রয়েছ। সূর্যবংশকেই
উত্তম বলা যাবে। ক্রম তো অবশ্যই থাকবে। ধীরে ধীরে কলা কমতে থাকে। তোমরা বাচ্চারা
এখন নুতন দুনিয়ার উদ্ঘাটন করছো। যেমন নুতন ঘর বানানো হলে বাচ্চারা কতো খুশি হয়।
দ্বারোদ্ঘাটন করা হয়। লেখা আছে, সেখানে স্বর্ণপুষ্পের বৃষ্টি হয়। বাচ্চারা, তোমাদের
কতোই না খুশি হওয়া উচিত। তোমরা সুখ-শান্তি দুটোই পেয়ে যাও। অন্য কেউই এতো সুখ-শান্তি
পায় না। অন্য ধর্মগুলো আসতে আরম্ভ করলে দ্বৈত মত হয়ে যায়। তোমরা বাচ্চারা তো অসীম
খুশিতে রয়েছো যে - আমরা পুরুষার্থ করে অনেক ভালো পদ পাবো। কখনোই এইরকম ভাবা উচিত
নয় যে - ভাগ্যে যা আছে সেটাই তো পাবো, যদি পাস হওয়ার থাকে তাহলে হব। না, প্রত্যেক
বিষয়ে অবশ্যই পুরুষার্থ করতে হবে। পুরুষার্থ করতে না পারলে বলে দেয় - যা ভাগ্যে আছে
সেটাই হবে। তারপর পুরুষার্থ করা বন্ধ করে দেয়। বাবা বলছেন, আমি তোমাদের মতো
মাতাদেরকে কতো শ্রেষ্ঠ বানিয়ে দিই। সব জায়গাতেই মহিলাদেরকে সম্মান করা হয়। বিদেশেও
সম্মান দেয়। আর এখানে কন্যা সন্তানের জন্ম হলে তো খাট শুদ্ধ উল্টে দেয়। দুনিয়াটা
খুবই খারাপ। তোমরা এখন জেনেছ যে ভারত আগে কি ছিল আর এখন কি হয়ে গেছে। মানুষ সবকিছু
ভুলে গিয়ে কেবল শান্তি চাইছে। সবাই চায় বিশ্বে শান্তি আসুক। তোমরা ওদেরকে এই
লক্ষ্মী-নারায়ণের ছবি দেখাও। বলো - যখন এনাদের রাজ্য ছিল, তখন পবিত্রতা, সুখ, শান্তি
সবকিছুই ছিল। তোমরা তো এইরকম রাজ্যই চাও, তাই না ? মূলবতনে শান্তি থাকলেও সেটাকে তো
বিশ্বের শান্তি বলা যাবে না। এনাদের রাজত্বের সময়েই বিশ্বে শান্তি হবে। সমগ্র বিশ্বে
দেবতাদের রাজত্ব ছিল। মূলবতন তো আত্মাদের দুনিয়া। মানুষ জানেই না যে আত্মাদের কোনো
আলাদা দুনিয়া আছে। বাবা বলছেন, আমি তোমাদেরকে কতো শ্রেষ্ঠ পুরুষোত্তম বানিয়ে দিই।
এগুলো সবই বোঝানোর বিষয়। কেবল ভগবান এসে গেছেন বলে চিৎকার করলে কেউ বিশ্বাস করবে
না। আরো বেশি গালাগালি খাবে আর গালাগালি দেবে। ওরা বলবে - বি.কে.রা তো নিজেদের
বাবাকেই ভগবান বলে। এভাবে কখনো সেবা হয় না। *বাবা অনেক যুক্তি বলে দেন। রুমের মধ্যে
দেওয়ালে ৮-১০টা ছবি টাঙ্গিয়ে দাও আর বাইরে লিখে দাও - যদি অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে
সীমাহীন উত্তরাধিকার পেতে চান অথবা মানুষ থেকে দেবতা হতে চান, তবে আসুন, আমরা আপনাকে
বুঝিয়ে বলব।* এভাবে লিখে দিলে অনেকেই আসবে, আপনা-আপনিই আসবে।))) বিশ্বে একটা সময়ে
তো শান্তি ছিল। এখন কত ধর্ম হয়ে গেছে। এই তমোপ্রধান দুনিয়াতে কিভাবে শান্তি স্থাপন
সম্ভব ? কেবল ভগবান-ই বিশ্বে শান্তি স্থাপন করতে পারবেন। শিববাবা নিশ্চয়ই সঙ্গে করে
কোনো উপহার নিয়ে আসেন। এতো বড় বাবা তিনি, তার ওপর আবার ৫ হাজার বছর পরে আসেন। যেমন
যাত্রা করে ফিরলে বাবা বাচ্চাদের জন্য উপহার নিয়ে আসেন। একজন ব্যক্তি যেমন তার
স্ত্রীর স্বামী, সেইরকম তার সন্তানদের পিতা। সেইরকম ঠাকুরদাদা, তারপর ঠাকুরদাদার
বাবাও হন। এনাকে তোমরা একদিকে যেমন বাবা বলো, সেইরকম ইনি তোমাদের ঠাকুরদাদাও হবেন।
আবার গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদারও বলা যাবে। বহু প্রজন্ম রয়েছে। আদম কিংবা আদিদেব নাম তো
প্রচলিত আছে। কিন্তু মানুষ বুঝতে পারে না। বাচ্চারা, তোমাদেরকে এখন বাবা নিজে বসে
থেকে বোঝাচ্ছেন। বাবার কাছ থেকে সৃষ্টিচক্রের হিস্ট্রি জিওগ্রাফি জেনে গিয়ে তোমরা
চক্রবর্তী রাজা হচ্ছ। বাবা কতো ভালোবেসে আর যত্ন নিয়ে পড়াচ্ছেন। তাই অবশ্যই পড়তে হবে।
*সকালে তো সবাই ফ্রি থাকে। সকালে আধঘণ্টা-পঁয়তাল্লিশ মিনিট ক্লাসে এসে মুরলী শুনে
যাও। স্মরণ তো যেকোনো জায়গাতেই করা যায়। রবিবার ছুটি থাকে। সকালে ২-৩ ঘন্টার জন্য
বসো। সারাদিনের উপার্জন মেকআপ করে নাও। ঝোলা ভর্তি করে নাও। সময় তো অনেক পাওয়া যায়।
কিন্তু মায়াবী বিঘ্ন আসার জন্য স্মরণ করতে পারে না। বাবা একেবারে সহজ ভাবে
বোঝাচ্ছেন। ভক্তিমার্গে কতো মানুষ সৎসঙ্গে যায়। কৃষ্ণের মন্দিরে, নয়তো শ্রীনাথের
মন্দিরে, নয়তো অন্য কারোর মন্দিরে যায়। যাত্রা করার সময়েও খুব ব্যভিচারী হয়ে যায়।
এত কষ্ঠস্থ করে (উচ্চারণ করে), কিন্তু কোনো লাভ হয় না। এইসব ড্রামাতেই রয়েছে।
পুনরায় হবে। তোমাদের মধ্যে অর্থাৎ আত্মাদের মধ্যে ভূমিকা ভরা আছে। আগের কল্পের সত্য
এবং ত্রেতাযুগে যেমন ভূমিকা পালন করেছিলে, সেটাই আবার করবে। যাদের বুদ্ধি কম, তারা
এটাও বুঝতে পারবে না। যাদের বুদ্ধি খুব সূক্ষ্ম, তারাই এগুলো বুঝতে পারবে এবং
অন্যকেও বোঝাবে। ওরা অন্তর থেকে বুঝতে পারে যে এই অবিনাশী নাটক তৈরি হয়েই আছে।
দুনিয়ায় কেউই জানে না যে এটা আসলে একটা সীমাহীন নাটক। এটাকে বোঝার জন্যেও সময় লাগে।
প্রত্যেক বিষয় বিস্তারিত ভাবে বোঝানোর পরে বলা হয় - মুখ্য ব্যাপার হলো স্মরণের
যাত্রা। এক সেকেন্ডে জীবনমুক্তির গায়ন রয়েছে। জ্ঞানের সাগরের কথাও প্রচলিত আছে।
সমগ্র সাগরের জলকে কালি বানালে, সমগ্র জঙ্গলকে কলম বানিয়ে এবং গোটা পৃথিবীকে কাগজ
বানালেও তাঁর মহিমা লিখে শেষ করা যাবে না। শুরু থেকে তো তোমরা কত কিছু লিখছ। সব
মিলিয়ে রাশি রাশি কাগজ হয়ে যাবে। তোমাদের এখন আর ধাক্কা খেতে হবে না। মুখ্য ব্যাপার
হলো অল্ফ অথবা বাবা। বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এখানে তোমরা শিববাবার কাছে আসো। শিববাবা
এনার মধ্যে প্রবেশ করে কতো ভালোবেসে তোমাদেরকে পড়ান। কোনো অহংকার নেই। বাবা বলছেন -
আমি তো পুরাতন শরীরেই আসি। কতো সাধারণ ভাবে শিববাবা এসে শিক্ষা দেন। একটুও অহংকার
নেই। বাবা বলছেন, তোমরাই তো বলো - বাবা, তুমি পতিত শরীরে, পতিত দুনিয়ায় এসে আমাদেরকে
শিক্ষা দাও। সত্যযুগে কখনোই বলবে না - এসো, এসে হীরে মানিকের মহলে বসো, খাবার খাও।
শিববাবা তো খাবার খান না। আগে তোমরা ভোজন খাওয়ার জন্য ডাকতে। ৩৬ রকমের ভোজন খাওয়াতে।
এইসব আবার হবে। এগুলোই হলো চরিত্র। কৃষ্ণের চরিত্র কেমন? সে তো সত্যযুগের রাজকুমার।
তাকে পতিত-পাবন বলা যাবে না। কৃষ্ণ কিভাবে সত্যযুগের মালিক হয়েছিল, সেটা তোমরাই এখন
জেনেছ। মানুষ তো একেবারে ঘন অন্ধকারে রয়েছে। তোমরা এখন উজ্জ্বল আলোকে রয়েছ। বাবা
এসেই রাতকে দিন বানিয়ে দেন। তোমরা অর্ধেক কল্প ধরে রাজত্ব করবে, তাই কত খুশি হওয়া
উচিত। যখন তোমাদের কোনো কর্মেন্দ্রিয় আর ধোঁকা দেবে না, তখন তোমাদের স্মরণের যাত্রা
সমাপ্ত হবে। কর্মাতীত অবস্থায় পৌঁছে গেলে তোমাদের স্মরণের যাত্রা সমাপ্ত হয়ে যাবে।
এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। এখন তোমাদেরকে পুরোদমে পুরুষার্থ করতে হবে। হতাশ হয়ে গেলে চলবে
না। সেবা আর সেবা। বাবাও তো এসেছেন এবং এই বৃদ্ধ শরীরের দ্বারা সেবা করছেন। বাবা
হলেন করণ-করাবনহার। বাচ্চাদের জন্য তিনি কত ভাবনা-চিন্তা করেন - এটা বানাতে হবে,
বাড়ি বানাতে হবে। যেমন লৌকিক বাবার সীমিত ভাবনা-চিন্তা থাকে, সেইরকম পারলৌকিক বাবার
সুবিশাল ভাবনা-চিন্তা থাকে। তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকেই তো সেবা করতে হবে। দিনে দিনে
আরো সহজ হয়ে যাচ্ছে। বিনাশ যত এগিয়ে আসবে, তত তোমাদের মধ্যে শক্তি আসবে। গায়ন আছে,
ভীষ্ম পিতামহরা অন্তিম পর্যায়ে তীর বিদ্ধ হয়েছিল। এখন যদি ওদের তীর লেগে যায় তাহলে
অনেক হইচই শুরু হয়ে যাবে। এতো ভিড় হয়ে যাবে যে ভাবতেও পারবে না। মাথা চুলকানোর
সময়টাও পাবে না। কিন্তু এখন এইরকম হবে না। যখন ভিড় হয়ে যাবে, তখন এইরকম অবস্থা হবে।
যখন এরা তিরবিদ্ধ হবে, তখন তোমাদের প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে। সকল বাচ্চাই তো অবশ্যই বাবার
পরিচয় পাবে।
তোমরা ৩ পা পৃথিবী
পেলেও এই অবিনাশী হসপিটাল এবং গডলি ইউনিভার্সিটি খুলে দাও। পয়সা না থাকলেও সমস্যা
নেই। ছবি তোমাদেরকে দিয়ে দেওয়া হবে। সেবার জন্য মান-অপমান, দুঃখ-সুখ, ঠান্ডা-গরম
সবকিছুই সহ্য করতে হবে। কাউকে হীরেতুল্য বানানো কি কম ব্যাপার? তোমরা ক্লান্ত হয়ে
যাও কেন? আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
ভোরবেলা আধঘণ্টা থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট খুব ভালোবাসা এবং যত্ন সহকারে পড়াশুনা করতে
হবে। বাবার স্মরণে থাকতে হবে। এত বেশি স্মরণ করার পুরুষার্থ করতে হবে যাতে সব
কর্মেন্দ্রিয় নিজের বশে এসে যায়।
২ ) সেবার জন্য
মান-অপমান, দুঃখ-সুখ, ঠান্ডা-গরম সবকিছুই সহ্য করতে হবে। সেবার ক্ষেত্রে কখনো
ক্লান্ত হয়ে যেও না। ৩ পা পৃথিবী পেলেও এই অবিনাশী হসপিটাল এবং গডলি ইউনিভার্সিটি
খোলার সেবা করতে হবে।
বরদান:-
সত্যিকারের আত্মিক স্নেহ অনুভূতি প্রদানকারী মাস্টার স্নেহের সাগর ভব
যেমন সাগরের পারে গেলে
শীতলতা অনুভব হয় তেমনই তোমরা বাচ্চারাও মাস্টার স্নেহের সাগর হও , যে কোনো আত্মা
যখনই তোমাদের সামনে আসবে সে যেন অনুভব করে যে স্নেহের মাস্টার সাগরের তরঙ্গ স্নেহের
অনুভূতি করাচ্ছে কেননা আজকের দুনিয়া প্রকৃত আত্মিক স্নেহের ক্ষুধার্ত। স্বার্থপর
স্নেহ দেখে অন্তর সেই স্নেহের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েছে , তাই আত্মিক স্নেহের কিছু
মুহূর্তের অনুভূতিও জীবনের জন্য সাহারা (আশ্রয়) বলে মনে করবে।
স্লোগান:-
জ্ঞান
ধনে ভরপুর থাকলে স্থূল ধনের প্রাপ্তি স্বতঃতই হতে থাকবে।
অব্যক্ত ইশারা :-
সংকল্প শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
যেমন সত্যযুগের
দুনিয়ার জন্য বলা হয় যে এক রাজ্য এক ধর্ম। তেমনই স্বরাজ্যেও একটাই রাজ্য অর্থাত্
স্ব - এর ইচ্ছানুযায়ী সবাই কাজ করবে। মন তার নিজের নির্দেশ মত চলবে না ,বুদ্ধি যেন
তার নির্ণয় শক্তিকে ব্যাহত না করে। যখন সংস্কার আত্মাকে নাচাবে না , তখনই বলা হবে
যে এক ধর্ম, এক রাজ্য। সুতরাং এমনই কন্ট্রোল পাওয়ার ধারণ করো , এটাই হলো অসীম সেবার
সাধন।