24.12.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দানই হলো মহাদান, এই দানের দ্বারা রাজত্ব প্রাপ্ত হয়। তাই
মহাদানী হও”
প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চাদের
সার্ভিস করার শখ থাকে তাদের মুখ্য লক্ষণ কি?
উত্তরঃ
১. তাদের
পুরানো দুনিয়ার আবহাওয়া একেবারেই ভালো লাগবে না, ২. তাদের অনেককে নিজের মতন তৈরি
করার সেবা করে খুশী অনুভব হবে, ৩. তাদের পড়াশোনা করতে এবং অন্যদের পড়াতে আরাম অনুভব
হবে, ৪. বোঝাতে-বোঝাতে গলা খারাপ হওয়া সত্ত্বেও খুশীতে থাকবে, ৫. তাদের কারো
সম্পত্তি চাই না। তারা অন্যের সম্পত্তির জন্য সময় নষ্ট করবে না। ৬. তাদের মোহ সব
দিক থেকে ছিন্ন হয়ে থাকবে। ৭. তারা বাবার মতন উদারচিত্ত হবে। সেবা ছাড়া কিছুই তাদের
ভালো লাগবে না।
গীতঃ-
ওম্ নমো শিবায়....
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক পিতা
যার মহিমা শুনলে তিনি বসে বাচ্চাদের পড়াচ্ছেন, এ হলো পাঠশালা, তাইনা। তোমরা সবাই
এখানে পাঠ পড়ছো টিচারের কাছে। ইনি হলেন সুপ্রিম টিচার, যাকে পরমপিতাও বলা হয়।
পরমপিতা আত্মিক পিতাকেই বলা হয়। লৌকিক পিতাকে কখনও পরমপিতা বলবে না। তোমরা বলবে এখন
আমরা পারলৌকিক পিতার পিতার কাছে বসে আছি। কেউ বসে আছে, কেউ অতিথি হয়ে এসেছে। তোমরা
বুঝেছো যে আমরা অসীম জগতের পিতার কাছে বসে আছি, অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্তির জন্যে।
সুতরাং অন্তরে অনেক খুশীর অনুভব হওয়া উচিত। মানুষ তো আর্তনাদ করে। এই সময় দুনিয়ায়
সবাই বলে যাতে দুনিয়ায় শান্তি হোক। মানুষ তো জানেনা, যে শান্তি কি জিনিস। জ্ঞানের
সাগর, শান্তির সাগর বাবা কেবল শান্তি স্থাপন করেন। নিরাকারী দুনিয়ায় তো শান্তি-ই
থাকে। এখানে চিৎকার করে যে দুনিয়ায় শান্তি কীভাবে হবে ? নতুন দুনিয়া সত্যযুগে শান্তি
ছিল, তখন একটি ধর্ম ছিল। নতুন দুনিয়াকে বলা হয় প্যারাডাইজ, দেবতাদের দুনিয়া।
শাস্ত্রে সর্ব ক্ষেত্রে অশান্তির কথা লিখে দিয়েছে। দেখানো হয়েছে দ্বাপরে কংস ছিল,
তারপরে হিরণ্যকাশ্যপকে সত্যযুগে দেখানো হয়েছে, ত্রেতায় রাবণের ঝামেলা .....।
সর্বত্র অশান্তি দেখিয়ে দিয়েছে। মানুষ ঘোর অন্ধকারে আছে। প্রার্থনায় ডাকে অসীমের
পিতাকে। যখন গড ফাদার আসেন তখনই উনি এসে শান্তি স্থাপন করেন। গড কে মানুষ জানেনা।
শান্তি হয় নতুন দুনিয়ায়। পুরানো দুনিয়ায় হয় না। নতুন দুনিয়া স্থাপন করেন একমাত্র
বাবা। তাঁকেই প্রার্থনা করা হয় এসে শান্তি স্থাপন করুন। আর্য সমাজীরা গান গায় শান্তি
দেবা।
বাবা বলেন প্রথমে হলো
পবিত্রতা। এখন তোমরা পবিত্র হচ্ছো। সেখানে পবিত্রতাও আছে, শান্তিও আছে, হেল্থ-ওয়েলথ
সব আছে। ধন ব্যতীত মানুষ উদাসীন হয়ে যায়। তোমরা এখানে আসো এই রূপ লক্ষ্মী-নারায়ণ সম
বিত্তবান হওয়ার জন্যে। তারা বিশ্বের মালিক ছিলেন তাইনা। তোমরা এসেছো বিশ্বের মালিক
হতে। কিন্তু সেই বুদ্ধি নম্বর অনুসারে থাকে। বাবা বলেছিলেন - যখন প্রভাতফেরীতে যাও
তখন সাথে লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র অবশ্যই রাখবে। এমন যুক্তি রচনা করো। এখন বাচ্চাদের
বুদ্ধি স্পর্শবুদ্ধি হবে। এই সময় বুদ্ধি তমোপ্রধান থেকে রজো পর্যন্ত গেছে। এখনও সতো,
সতোপ্রধান পর্যন্ত যেতে হবে। তেমন শক্তি এখন নেই। স্মরণে থাকে না। যোগবল কম আছে। চট
করে সতোপ্রধান হতে পারবে না। এই যে গায়ন আছে সেকেন্ডে জীবনমুক্তি, সে তো ঠিক কথা।
তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছো অর্থাৎ জীবনমুক্ত তো হয়েই গেছো, পরে জীবনমুক্তিতেও সর্বোত্তম,
মধ্যম, কনিষ্ঠ আছে। যারা বাবার আপন হয় তাদের জীবনমুক্তি তো প্রাপ্ত হয়ই। যদি বাবার
আপন হয়ে বাবাকে ত্যাগও করে তবুও জীবনমুক্তি অবশ্যই পাবে। স্বর্গে সাফাইয়ের কর্তব্যে
নিয়োজিত হবে। স্বর্গে তো যাবেই। যদিও পদমর্যাদা কম প্রাপ্ত হয়। বাবা অবিনাশী জ্ঞান
প্রদান করেন, সেই জ্ঞান কখনও বিনাশ হয় না। বাচ্চাদের মনে খুশীর ঢাক ঢোল ধ্বনিত হওয়া
উচিত। এই হায়-হায় হওয়ার পরে বাঃ-বাঃ হবে।
এখন তোমরা হলে
ঈশ্বরীয় সন্তান। পরে দৈবী সন্তান হবে। এই সময় তোমাদের এই জীবন হল হীরে তুল্য। তোমরা
ভারতের সার্ভিস করে ভারতকে পীসফুল বানাও। সেখানে পবিত্রতা, সুখ, শান্তি সব থাকে। এই
জীবন তোমাদের দেবতাদের চেয়েও উঁচু। এখন তোমরা রচয়িতা পিতাকে এবং সৃষ্টি চক্রকে
জেনেছো। বলা হয় এই উৎসব ইত্যাদি যা আছে সবই পরম্পরা থেকে চলে আসছে। কিন্তু কবে থেকে?
সে কথা কেউ জানে না। তারা ভাবে যখন থেকে সৃষ্টি শুরু হয়েছে, রাবণ দহন ইত্যাদি সবই
পরম্পরা ধরে হয়ে আসছে। এবারে সত্যযুগে তো রাবণ থাকে না। সেখানে কেউ দুঃখে থাকে না
তাই গড কেও স্মরণ করে না। এখানে সবাই গড কে স্মরণ করতে থাকে। ভাবে গড ই স্বয়ং বিশ্বে
শান্তি স্থাপন করবেন, তাই বলেন এসে দয়া করুন। আমাদের দুঃখ থেকে উদ্ধার করুন।
বাচ্চারাই বাবাকে স্মরণ করে আহ্বান করে কারণ বাচ্চারা তো সুখ দেখেছে। বাবা বলেন -
তোমাদেরকে পবিত্র করে সঙ্গে নিয়ে যাবো। যারা পবিত্র হবে না তারা দন্ড ভোগ করবে। এতে
মন, বচন, কর্মে পবিত্র থাকতে হবে। মন খুব ভালো হওয়া দরকার। এতখানি পরিশ্রম করতে হবে
যাতে শেষ সময়ে কোনও ব্যর্থ চিন্তন না আসে। একমাত্র বাবা ব্যতীত অন্য কেউ যেন স্মরণে
না আসে। বাবা বোঝান এখনও মনে তো সঙ্কল্প আসবেই, যতক্ষণ কর্মাতীত অবস্থা না হচ্ছে।
হনুমানের মতন অটল হও, এতেই তো খুব পরিশ্রম চাই। যারা আজ্ঞাকারী, বিশ্বস্ত, সুপুত্র
বাচ্চারা আছে তাদের প্রতি বাবার ভালোবাসা বেশি থাকে। ৫ বিকারকে যে জয় করে সে ও এত
প্রিয় হয় না। তোমরা বাচ্চারা জানো আমরা কল্প-কল্প বাবার কাছে এই অবিনাশী
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি অতএব খুশীর পারদ ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। এই কথাও জানো যে
স্থাপনের কার্য তো হবেই। এই পুরানো দুনিয়া কবরে পরিণত হবে নিশ্চয়ই। আমরা পরীস্তানে
যাওয়ার জন্যে কল্প পূর্বের মতন পুরুষার্থ করতে থাকি। এই হল কবরখানা। পুরানো দুনিয়া
ও নতুন দুনিয়া সিঁড়িতে বোঝাতে হয়। এই সিঁড়ি'র জ্ঞান খুব ভালো, তবুও মানুষ বোঝে না।
এখানে সাগরের তীরের বাসিন্দাও পুরো বোঝে না। তোমাদের তো জ্ঞান ধনের দান করা উচিত।
ধন দান করলে ধন বৃদ্ধি পায়। দানী, মহাদানী বলা হয়, তাইনা। যারা হাসপাতাল, ধর্মশালা
ইত্যাদি নির্মাণ করায়, তাদের মহাদানী বলে। তার ফল পরের জন্মে অল্পকালের জন্য অবশ্যই
প্রাপ্ত হয়। যদি ধর্মশালা নির্মাণ করে তো পরজন্মে বাড়ির সুখ পাবে। কেউ অনেক ধন দান
করে তো রাজার ঘরে ধনীর ঘরে জন্ম নেয়। সেসব দানের ফল। তোমরা পড়াশোনা করে রাজত্ব
প্রাপ্ত করো। এই হল পড়াশোনা এবং দান । এখানে হল ডাইরেক্ট, ভক্তিমার্গে হয়
ইনডায়রেক্ট। শিববাবা তোমাদের পড়াশোনা দ্বারা এইরকম বানিয়ে দেন। শিববাবার কাছে তো
আছেই অবিনাশী জ্ঞান রত্ন। এক-একটি রত্ন হল লক্ষ টাকার। ভক্তির জন্য এমন বলা হয় না।
একে জ্ঞান বলা হয়। শাস্ত্রে ভক্তির জ্ঞান আছে, ভক্তি কীভাবে করা উচিত তারই শিক্ষা
প্রাপ্ত হয়। বাচ্চারা, তোমাদের রয়েছে জ্ঞানের অপরিসীম নেশা। ভক্তির পরে তোমাদের
জ্ঞানের প্রাপ্তি হয়। জ্ঞানের দ্বারা বিশ্বের বাদশাহীর অপরিসীম নেশা থাকে। যে বেশি
সার্ভিস করবে, তাদের নেশা বৃদ্ধি পাবে। প্রদর্শনী অথবা মিউজিয়ামেও যে ভালোভাবে ভাষণ
দিতে পারে তাকে ডাকা হয়। সেখানেও অবশ্যই নম্বর অনুসারে হবে। মহারথী, অশ্বারোহী,
পদাতিক বিভিন্ন শ্রেণী আছে। দিলওয়ারা মন্দিরেও স্মরণিক বানানো আছে। তোমরা বলবে এই
হলো চৈতন্য দিলওয়াড়া, ওই হল জড়। তোমরা হলে গুপ্ত তাই তোমাদেরকে জানে না।
তোমরা হলে রাজঋষি,
তারা হলো হঠযোগ ঋষি। এখন তোমরা হলে জ্ঞান জ্ঞানেশ্বরী। জ্ঞান সাগর তোমাদের জ্ঞান
প্রদান করেন। তোমরা হলো অবিনাশী সার্জেনের সন্তান। সার্জেন তো নাড়ি দেখবেন। যে
নিজের নাড়ি দেখতে জানেনা সে অন্যের দেখবে কীভাবে। তোমরা হলে অবিনাশী সার্জেনের
সন্তান। জ্ঞান অঞ্জন সদ্গুরু প্রদান করেন... এ হল জ্ঞান ইনজেকশন তাইনা। আত্মাকে
ইনজেকশন লাগানো হয় তাইনা। এই হল বর্তমানের মহিমা বর্ণনা । এই হল সদগুরুর মহিমা।
গুরুদেরকে জ্ঞান ইনজেকশন সদগুরুই দেবেন। তোমরা অবিনাশী সার্জেনের সন্তান তাই
তোমাদের কর্তব্য হল জ্ঞান ইনজেকশন লাগানো। ডাক্তারদের মধ্যেও কেউ মাসে লক্ষ টাকা,
কেউ ৫০০ টাকা আয় করবে। নম্বর অনুসারে এক-দুইজনের কাছে যায়। হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টে
জাজমেন্ট প্রাপ্ত হয় - ফাঁসি হবে। তারপরে প্রেসিডেন্টের কাছে আপীল করে তখন
প্রেসিডেন্ট ক্ষমাও করে দেন।
বাচ্চারা, তোমাদের তো
নেশা থাকা উচিত, উদারচিত্ত হওয়া উচিত। এই ভাগীরথে বাবা প্রবেশ করে এনাকে বাবা
উদারচিত্ত করে দিয়েছেন তাইনা। স্বয়ং সব কিছু করতে পারেন। এনার দেহে প্রবেশ করে
মালিক হয়ে বসেছেন। এই সব ভারতের কল্যাণার্থে লাগাতে হবে। তোমরা ধন লাগাও, ভারতের
কল্যাণের জন্য। কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে খরচের টাকা কোথা থেকে আনছো? বলো, আমরা নিজেরাই
তন-মন-ধন দ্বারা সার্ভিস করি। আমরা রাজত্ব করবো তাই ধনও আমরাই লাগাবো। আমরা নিজেরাই
খরচ করি। আমরা ব্রাহ্মণ রা শ্রীমৎ অনুযায়ী রাজত্ব স্থাপন করি। যে ব্রাহ্মণ হবে সে
খরচ করবে। শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হবে তারপরে দেবতা হবে। বাবা তো বলেন সব চিত্র গুলি
এমন ট্রান্সলাইটের বানাও যাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়। কারো চট করে জ্ঞান বাণ লেগে যাবে।
কেউ জাদুর ভয়ে আসবেই না। মানুষ থেকে দেবতা হওয়া - এ হলো জাদু তাইনা। ভগবানুবাচ, আমি
তোমাদের রাজযোগের শিক্ষা প্রদান করি। হঠযোগী কখনও রাজযোগ শেখাতে পারে না। এইসব কথা
তোমরা এখন বুঝেছো। তোমরা মন্দির সম পরিণত হচ্ছো। এই সময় এই সম্পূর্ণ বিশ্ব হলো
অসীমের লঙ্কা (রাবণের রাজ্য)। সম্পূর্ণ বিশ্বে এখন রাবণের রাজত্ব। সত্যযুগ-ত্রেতায়
রাবণ ইত্যাদি কীভাবে থাকবে।
বাবা বলেন, আমি এখন
যে জ্ঞান শোনাছি, সেসব শোনো। এই চোখ দিয়ে কিছু দেখো না। এই পুরানো দুনিয়া বিনাশ হয়ে
যাবে, তাই নিজের শান্তিধাম-সুখধামকেই স্মরণ করো। এখন তোমরা পূজ্য থেকে পূজারী হচ্ছো।
ইনি নম্বর ওয়ান পূজারী ছিলেন, নারায়ণের অনেক পূজা করতেন। এখন পুনরায় পূজ্য নারায়ণ
স্বরূপে পরিণত হচ্ছেন। তোমরাও পুরুষার্থ করে এমন স্বরূপে পরিণত হতে পারো। রাজধানী
তো চলে তাইনা। যেমন কিং অ্যাডওয়ার্ড দি ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড চলে। বাবা বলেন
তোমরা সর্বব্যাপী বলে আমার অপমান করে এসেছো। তা সত্বেও আমি তোমাদের উপকার করি। এই
খেলাটি এমনই ওয়ান্ডারফুল বানানো হয়েছে। পুরুষার্থ নিশ্চয়ই করতে হবে। কল্প পূর্বে
যারা পুরুষার্থ করেছে, তারা ই ড্রামা অনুসারে করবে। যে বাচ্চাদের সার্ভিস করার শখ
থাকে, তার রাত-দিন শুধুমাত্র এই চিন্তনই থাকে। তোমরা বাচ্চারা বাবার কাছে রাস্তা
পেয়েছো, তাই বাচ্চারা তাই তোমাদের সার্ভিস ছাড়া অন্য কিছু ভালো লাগে না। দুনিয়ার
পরিবেশ ভালো লাগে না। সার্ভিসেবল বাচ্চাদের সার্ভিস না করলে আরাম অনুভব হবে না।
টিচারের তো পড়ালেই আনন্দ হয়। এখন তোমরা হয়েছো উচ্চ মানের টিচার। তোমাদের কর্তব্য
কর্ম হলো এটাই, যত ভালোভাবে টিচার নিজের মতন বানাবে, তারা ততই পুরস্কার প্রাপ্ত করবে।
না পড়ালে তাদের আরাম অনুভব হবে না। প্রদর্শনী ইত্যাদিতে রাত বারোটা বাজলেও খুশী
অনুভব হয়। ক্লান্তি অনুভব হয়, গলা ব্যথা হয়ে যায় তবু খুশী অনুভব হয়। ঈশ্বরীয়
সার্ভিস তাইনা। এই হল খুব উঁচু সার্ভিস, তাদের আর কিছু ভালো লাগে না। তারা বলবে আমরা
এই বাড়ি ইত্যাদি নিয়ে কি করব, আমাদের তো পড়াতে হবে। এই সার্ভিস করতে হবে। সম্পত্তি
নিয়ে মতবিরোধ হলে বলবে এই সোনা কোন্ কাজে লাগবে যার দ্বারা কান কেটে যায়। সার্ভিস
দ্বারা তো ভব সাগর পার হবে। বাবা বলেন, বাড়ি যার নামেই থাকুক, বি.কে.দের সার্ভিস
করতে হবে। এই সার্ভিসে কোনো রকম বাইরের বন্ধন ভালো লাগে না। কারো মোহ থাকে। কারো
মোহ থাকে না। বাবা বলেন, "মন্মনাভব", তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে। খুব সাহায্য
প্রাপ্ত হয়। এই সার্ভিস করা উচিত। এতে আয় হয় অনেক। বাড়ি ইত্যাদির কথা নেই। বাড়ি দেবে
আর বন্ধনে আবদ্ধ করবে এমন নেবে না। যারা সার্ভিস করতে জানে না তার কাজের নয়। টিচার
নিজের মতন বানাবে। তা নাহলে কোনও কাজের নয়। সাহায্যকারী হাতের দরকার তো থাকেই। এতে
কন্যাদের, মাতাদের প্রয়োজন বেশি থাকে। বাচ্চারা বোঝায় - বাবা হলেন টিচার, বাচ্চারাও
টিচার চাই। এমন নয় টিচার অন্য কোনও কাজ করতে পারবে না। সব কাজ করা উচিত। আচ্ছা!
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
দিন-রাত সার্ভিসের চিন্তনে থাকতে হবে এবং সব রকমের মোহ ত্যাগ করতে হবে। সার্ভিস ছাড়া
আরাম নেই, সার্ভিস করে নিজের মতন বানাতে হবে।
২ ) বাবার মতন উদার
চিত্ত হতে হবে। সবার নাড়ি দেখে সেবা করতে হবে। নিজের তন-মন-ধন ভারতের কল্যাণে লাগাতে
হবে। অটল-অনড় হওয়ার জন্য আজ্ঞাকারী বিশ্বস্ত হতে হবে।
বরদান:-
কি,
কেন -র প্রশ্নের জাল থেকে সদা মুক্ত থাকা বিশ্ব সেবাধারী চক্রবর্তী ভব
যখন স্বদর্শন চক্র
সঠিক দিকে ঘোরার পরিবর্তে ভুল দিকে ঘোরে, তখন মায়াজীৎ হওয়ার পরিবর্তে পরদর্শণের
সমস্যার চক্রে এসে যাও যার দ্বারা কি, কেন -র প্রশ্নের জাল তৈরী হয়ে যায়, যেটা
নিজেরাই রচনা করে, পুনরায় তাতেই ফেঁসে যায়, এইজন্য নলেজফুল হয়ে স্বদর্শন চক্র ঘোরাতে
থাকো, তাহলে কি, কেন-র প্রশ্নের জাল থেকে মুক্ত হয়ে যোগযুক্ত, জীবন্মুক্ত, চক্রবর্তী
হয়ে বাবার সাথে বিশ্ব কল্যাণের সেবাতে চক্র লাগাতে থাকবে। বিশ্ব সেবাধারী চক্রবর্তী
রাজা হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
প্লেন
বুদ্ধির দ্বারা প্ল্যানকে প্র্যাক্টিক্যালে নিয়ে এসো তাতেই সফলতা সমাহিত হয়ে আছে।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও
যখন কর্মাতীত স্থিতির
নিকটে পৌঁছে যাবে তখন কোনও আত্মার প্রতি বুদ্ধির আকর্ষণ, কর্মের বন্ধন হবে না।
কর্মাতীত অর্থাৎ সর্ব কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত, পৃথক হয়ে প্রকৃতি দ্বারা নিমিত্ত মাত্র
কর্ম করাবে। কর্মাতীত অবস্থার অনুভব করার জন্য পৃথক হওয়ার পুরুষার্থ বারংবার করতে
হবে না, সহজ আর স্বতঃই অনুভব হবে যে কর্ম করানোর মালিক আর কর্ম করতে থাকা এই
কর্মেন্দ্রিয় হল আলাদা।