25.12.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা বহুসময় পরে পুনরায় বাবার সঙ্গে মিলিত হয়েছো, সেইজন্য তোমরা হলে অনেক অনেক
আদরের হারানিধি সন্তান"
প্রশ্নঃ -
নিজের স্থিতিকে
একরস বানানোর সাধন কি?
উত্তরঃ
সর্বদা স্মরণে
রেখো - যে মুহূর্ত অতিবাহিত হয়ে গেছে তা ড্রামা। কল্প-পূর্বেও এমনই হয়েছিল। এখন
নিন্দা-স্তুতি, মান-অপমান সবকিছুই সামনে আসবে, সেইজন্য নিজের স্থিতিকে একরস বানানোর
জন্য অতীতের চিন্তা ক'রো না।
ওম্ শান্তি ।
আত্মা-রূপী
বাচ্চাদেরকে আত্মাদের পিতা বোঝাচ্ছেন। আত্মিক পিতার নাম কি? শিববাবা। তিনি সকল
আত্মাদের পিতা। সকল আত্মিক বাচ্চাদের নাম কি? আত্মা। জীবের (শরীর) পৃথক-পৃথক নাম হয়,
আত্মার নাম একই থাকে। এও বাচ্চারা জানে যে, সৎসঙ্গ তো অসংখ্য রয়েছে। এ হলো
সত্যিকারের সত্যের সঙ্গ যার মাধ্যমে সত্য পিতা রাজযোগ শিখিয়ে আমাদের সত্যযুগে নিয়ে
যান। এমন আর কোনো সৎসঙ্গ বা পাঠশালা হতে পারে না। বাচ্চারা, তোমরা এও জানো। বাচ্চারা,
সমগ্র সৃষ্টি-চক্রই তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারাই হলে
স্বদর্শন-চক্রধারী। বাবা বসে থেকে বোঝান যে, এই সৃষ্টি-চক্র কিভাবে আবর্তিত হয়।
কাউকে বোঝাতে হলে তাকে চক্রের সামনে দাঁড় করাও। এখন তোমরা এদিকে যাবে। বাবা
জীবাত্মাদের বলেন, নিজেদের আত্মা মনে করো। এ কোনও নতুন কথা নয়। তোমরা জানো, প্রতি
কল্পেই শুনেছে, এখন পুনরায় শুনছে। কোনো দেহধারী পিতা, টিচার, গুরু তোমাদের বুদ্ধিতে
নেই। তোমরা জানো যে, বিদেহী শিববাবা আমাদের টিচার এবং গুরু। আর কোনো সৎসঙ্গে এমন কথা
বলবে না। মধুবন তো একটাই। ওরা আবার এক মধুবনকে বৃন্দাবনে দেখায়। ভক্তিমার্গে মানুষ
এসব বসে-বসে তৈরী করেছে। প্র্যাকটিক্যাল মধুবন তো এটাই। তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে,
আমরা সত্যযুগ-ত্রেতা থেকে পুনর্জন্ম নিতে নিতে এখন সঙ্গমে এসে দাঁড়িয়েছি -
পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য। বাবা এসে আমাদের স্মৃতি প্রদান করেছেন। কে এবং কিভাবে ৮৪
জন্ম নেবে, তাও তোমরা জানো। মানুষ শুধু বলে দেয় বোঝে না কিন্তু কিছুই। বাবা ভালভাবে
বোঝান। সত্যযুগে সতোপ্রধান আত্মারা ছিল, শরীরও সতোপ্রধান ছিল। এ'সময় তো সত্যযুগ নেই,
এ হলো কলিযুগ। আমরা স্বর্ণযুগে ছিলাম। পুনরায় পরিক্রমণ করে পুনর্জন্ম নিতে-নিতে
আমরা আয়রন এজে এসে পৌঁছেছি এরপর অবশ্যই আবার পরিক্রমা করতে হবে। এখন যেতে হবে নিজের
ঘরে। তোমরা তো হারানিধি বাচ্চা, তাই না! হারানিধি তাদের বলা হয় যারা নিখোঁজ হয়ে যায়,
পুনরায় বহুকাল পরে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়। তোমরা ৫ হাজার বছর পর এসে মিলিত হয়েছো।
বাচ্চারা, তোমরাই জানো - ইনি হলেন সেই বাবা যিনি ৫ হাজার বছর পূর্বে আমাদের এই
সৃষ্টি-চক্রের জ্ঞান প্রদান করেছিলেন। স্বদর্শন-চক্রধারী বানিয়েছিলেন। এখন পুনরায়
বাবা এসে মিলিত হয়েছেন। আমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার প্রদানের জন্য। এখানে বাবা আমাদের
রিয়েলাইজ করান। এরমধ্যে আত্মার ৮৪ জন্মের উপলব্ধিও চলে আসে। এ'সব বাবা বসে-বসে
বোঝান। যেমনভাবে ৫ হাজার বছর পূর্বেও বুঝিয়েছিলাম - মানুষকে দেবতা বা কাঙ্গালকে
মুকুটধারী বানানোর জন্য। তোমরা জানো যে, আমরা ৮৪ বার পুনর্জন্ম নিয়েছি। যারা নেয় নি
তারা এখানে শেখার জন্য আসবেও না। কেউ অল্প বুঝবে। নম্বরের অনুক্রম তো আছেই, তাই না!
নিজের নিজের ঘর-গৃহস্থে থাকতে হবে। সকলে এখানে এসে তো বসবে না। রিফ্রেশ হতে তারাই
আসবে, যারা অতি উচ্চপদ প্রাপ্ত করার অধিকারী হবে। স্বল্প পদাধিকারীরা অধিক
পুরুষার্থও করবে না। এই জ্ঞান এমন যে, এতটুকুও যদি কেউ পুরুষার্থ করে তাও তা ব্যর্থ
হয়ে যাবে না। সাজাভোগ করে চলে আসবে। ভাল পুরুষার্থ করলে সাজাও কম হয়। স্মরণের যাত্রা
ব্যতীত বিকর্ম বিনাশ হবে না। প্রতিমুহূর্তে নিজেকে এ'কথা স্মরণ করাও। যদি কোনো
মানুষকে পাও, তখন প্রথমে তাকে এটা বোঝাতে হবে - নিজেকে আত্মা মনে করো। এই নাম তো পরে
শরীরের জন্য পেয়েছো। কাউকে ডাকলে শরীরের নাম ধরে ডাকবে। এই সঙ্গমেই অসীম জগতের পিতা
তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের ডাকেন। তোমরা বলবে আধ্যাত্মিক পিতা এসেছেন। বাবা বলবেন,
আমার আত্মিক বাচ্চারা। প্রথমে আত্মা, পরে বাচ্চাদের নাম নেন। আত্মা-রূপী বাচ্চারা,
তোমরা জানো যে আত্মিক পিতা কি বোঝান। তোমাদের বুদ্ধি জানে -- শিববাবা এই ভগীরথে (ভাগ্যশালী
রথ ব্রহ্মা) বিরাজমান, আমাদের তিনিই রাজযোগ শেখাচ্ছেন। আর কোন মানুষ নেই যার মধ্যে
বাবা এসে রাজযোগ শেখাবেন। সেই পিতা আসেনই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে, আর কোনো মানুষ এভাবে
বলতে পারে না, বোঝাতে পারে না। এও তোমরা জানো যে, এ'শিক্ষা এই বাবার(ব্রহ্মা) নয়।
ইনি তো জানতেনই না যে কলিযুগ সমাপ্ত হয়ে সত্যযুগ আসবে। এনার এখন কোনো দেহধারী গুরু
নেই আর সব মানুষই তো বলে যে, অমুকে আমাদের গুরু। অমুকে মহাজ্যোতিতে বিলীন হয়ে গেছে।
সকলের দেহধারী গুরু রয়েছে। ধর্মস্থাপকও দেহধারী। এই ধর্ম কে স্থাপন করেছে? পরমপিতা
পরমাত্মা ত্রিমূর্তি শিববাবা ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপন করেছেন। এনার শরীরের নাম
ব্রহ্মা। খ্রীস্টানরা বলবে খ্রাইস্ট এই ধর্ম স্থাপন করেছে। সে তো দেহধারী। চিত্রও
রয়েছে। এই ধর্মের ধর্মস্থাপকের চিত্র কি দেখাবে? শিবেরই দেখাবে। শিবের চিত্র কেউ বড়,
কেউ ছোট বানায়। হন তো তিনি বিন্দুই। তাঁর নাম-রূপও রয়েছে কিন্তু অব্যক্ত। এই নয়নের
দ্বারাই দেখতে পারবে না। বাচ্চারা, শিববাবা তোমাদের রাজ্য-ভাগ্য দিয়ে গেছেন, তবেই
তো স্মরণ করো, তাই না! শিববাবা বলেন - মন্মনাভব। আমাকে অর্থাৎ একমাত্র বাবাকেই
স্মরণ করো। কারোর স্তুতি করা উচিত নয়। আত্মার বুদ্ধিতে যেন কোন দেহ না আসে, এ হলো
ভালভাবে বোঝার মতন বিষয়। আমাদের শিববাবা পড়ান, সারাদিন এটাই রিপীট করতে থাকো। শিব
ভগবানুবাচ, সর্বপ্রথমে অল্ফ অর্থাৎ ঈশ্বরকেই বুঝতে হবে। এটাই পাকা না হলে, আর যদি
বে অর্থাৎ বাদশাহীর (রাজত্ব) কথা বলি তাহলে তো কিছুই বুদ্ধিতে বসবে না। কেউ বলে, এ
তো সঠিক কথা। কেউ বলে, এটা বোঝার জন্য সময়ের প্রয়োজন। কেউ বলে, বিচার-বিবেচনা করবো।
অনেকধরণের আসে। এ হলো নতুন কথা। পরমপিতা পরমাত্মা শিব আত্মাদের বসে পড়ান। বিচার চলতে
থাকে, কি করা যায় যাতে মানুষ এসব বুঝতে পারে। শিবই জ্ঞানের সাগর। আত্মাকে জ্ঞানের
সাগর কিভাবে বলবে, যার শরীরই নেই। তিনি জ্ঞানের সাগর তাহলে অবশ্যই কখনো জ্ঞান
শুনিয়েছেন তবেই তো তাঁকে জ্ঞানের সাগর বলা হয়। এমনি-এমনিই কেন বলবে? কেউ-কেউ অনেক
পড়াশোনা করে,তখন বলা হয় ইনি তো অনেক বেদ-শাস্ত্রাদি পড়েছেন, তাই এনাকে শাস্ত্রী বা
বিদ্বান বলা হয়। বাবাকে জ্ঞানের সাগর, সর্বময়কর্তা বলা হয়। অবশ্যই তিনি এখানে
এসেছিলেন তারপর চলে গেছেন। প্রথমে জিজ্ঞাসা করা উচিত যে, এখন কলিযুগ না সত্যযুগ?
নতুন দুনিয়া নাকি পুরোনো দুনিয়া? এইম অবজেক্ট তো তোমাদের সামনে উপস্থিত রয়েছে ।
এই লক্ষ্মী-নারায়ণ যদি থাকতো তাহলে তাদের রাজ্য হতো। এই পুরোনো দুনিয়া, এই
কাঙ্গালত্ব কখনই আসতো না। এখন কেবল তাদের চিত্রই রয়েছে। মন্দিরে মডেল দেখানো হয়।
নাহলে ওখানে তাদের মহল, বাগিচাদি কত বড়-বড় হয়। তারা কি শুধু মন্দিরেই থাকবে! না তা
থাকবে না। প্রেসিডেন্টের বাড়ি কত বিশালাকৃতির হয়। দেবী-দেবতারা তো বড়-বড় প্রাসাদে
থাকবে। সেখানে অনেক জায়গা। ওখানে ভয়-ভীতি ইত্যাদির কোনও কথাই নেই। সদাই ফুলের মেলা
অর্থাৎ ফুল ফুটতেই থাকে। কাঁটা থাকেই না। ওটা হলো বাগিচা। ওখানে কাঠ ইত্যাদি
জ্বালানো হবে না। কাঠ জ্বললে ধোঁয়া হয় তাতে দুঃখের অর্থাৎ অস্বস্তির অনুভূতি হয়।
ওখানে আমরা অতি ছোট জায়গায় বসবাস করি। পরে সেই স্থান বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে থাকে। অনেক
সুন্দর সুন্দর বাগান থাকবে, সুগন্ধ আসতে থাকবে। জঙ্গল হবেই না। যদিও দেখতে পাবে না
কিন্তু এখন তা অনুভব করবে। ধ্যানে তোমরা অনেক বড়-বড় প্রাসাদাদি দেখে আসো, সেসব এখানে
তৈরী করতে পারবে না। সাক্ষাৎকার হয়ে আবার তা হারিয়ে যাবে। সাক্ষাৎকার তো হয়েছে, তাই
না! রাজা, যুবরাজ-যুবরানী থাকবে। স্বর্গ অতি রমনীয় হবে। যেমন এখানে মহীশূর ইত্যাদি
রমনীয়, তেমনই ওখানে অতি মনোরম বাতাস বইতে থাকে। জলের ঝরনা বইতে থাকে। আত্মা মনে করে
- আমরা ভালো ভালো জিনিস নির্মাণ করবো। স্বর্গ তো আত্মা তো স্বর্গকে স্মরণ করে, তাই
না! বাচ্চারা, তোমরা রিয়েলাইজ করো - কি কি হবে, কোথায় আমরা ছিলাম। এই সময় এসব
স্মৃতিতে থাকে। চিত্র দেখো, তোমরা কত সৌভাগ্যশালী ছিলে। ওখানে দুঃখের কোন কথাই থাকবে
না। আমরা তো স্বর্গে ছিলাম, পরে নীচে নেমেছি। এখন পুনরায় স্বর্গে যেতে হবে। কিভাবে
যাবে? দড়ি বেঁধে ঝুলে-ঝুলে যাবে কি? আত্মারূপী আমরা তো শান্তিধামের বাসিন্দা। বাবা
তোমাদের মনে করিয়েছেন যে, এখন তোমরা পুনরায় দেবতায় পরিণত হচ্ছো আর অন্যদেরকেও তৈরী
করছো। ঘরে বসেও কতজন সাক্ষাৎকার করে। সংসারজালে আবদ্ধ মাতা'রা (বাঁধেলী) কখনো সাক্ষাৎ
করেছে নাকি, না করেনি। কিভাবে আত্মা উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। নিজের ঘরে যাওয়ার সময় নিকটে
এলে, আত্মার খুশী হতে থাকে। তারা বোঝে যে, বাবা আমাদের জ্ঞান-শৃঙ্গার করতে এসেছেন।
শেষে একদিন সংবাদপত্রেও বেরোবে। এখন তো নিন্দা-স্তুতি, মান-অপমান সব সামনে আসবে।
তারা জানে যে, কল্প-পূর্বেও এরকম হয়েছিল। যেই মুহূর্ত অতিবাহিত হয়ে গেছে তার চিন্তন
করা উচিত নয়। কল্প-পূর্বেও সংবাদপত্রে এমনভাবে পড়েছিলে। পুনরায় পুরুষার্থ করতে হয়।
গোলমাল যা হওয়ার ছিল তা তো হয়েই গেছে। নাম তো হয়ে গেছে, তাই না! পুনরায় তোমরা
রেসপন্স করো। কেউ পড়ে, কেউ পড়ে না। অবসর পায় না। অন্যান্য কাজ করতে লেগে পড়ে। এখন
তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে, এ হলো অসীম জগতের বড় ড্রামা। টিক-টিক করে চলতে থাকে,
চক্র আবর্তিত হতে থাকে। এক সেকেন্ডে যা অতিবাহিত হয়ে যায় তা পুনরায় ৫ হাজার বছর পর
রিপীট হয়। যা হয়ে গেছে তা এক সেকেন্ড পর স্মরণে আসে। এমন ভুল হয়ে গেছে, ড্রামায়
নির্ধারিত রয়েছে। কল্প-পূর্বেও এমনই ভুল হয়েছিল, যা অতীত হয়ে গেছে। এখন পুনরায়
ভবিষ্যতে আর করবে না। পুরুষার্থ করতে থাকে। তোমাদের বোঝানো হয় যে, প্রতিমুহূর্তে
এমন ভুল হওয়া ঠিক নয়। এই কাজ ভাল নয়। হৃদয় দংশিত হয় - আমাদের দ্বারা এমন কার্য
সংঘটিত হয়েছে। বাবা বোঝান, এমন কোরো না, কেউ দুঃখ পাবে। বারণ করা হয়। বাবা বলে দেন
- এমন কাজ ক'রো না, না বলে কোনো জিনিস তুলে নিলে তাকে চুরি বলা হয়। এমন কাজ কোরো
না। কড়া কথা বোলো না। আজকাল দুনিয়া দেখো কেমন হয়ে গেছে - কেউ চাকরের উপর রাগ করলে
সেও তখন শত্রুতা করতে থাকে। ওখানে তো বাঘে-গরুতে পরস্পর ক্ষীরখন্ড (মিলেমিশে) হয়ে
থাকে। অনৈক্য (লুনপানী) আর ঐক্য (ক্ষীরখন্ড)। সত্যযুগে সকল মনুষ্য আত্মারা পরস্পর
ক্ষীরখন্ড হয়ে থাকে। আর এই রাবণ-রাজ্যে সকল মানুষ পরস্পর বিরোধী হয়। বাবা আর তার
সন্তানের মধ্যেও বিরোধ রয়েছে। কাম মহাশত্রু, তাই না! কাম-কুঠারের আঘাতে একে-অপরকে
দুঃখ দেয়। সমগ্র এই দুনিয়াই বিরোধপূর্ণ। সত্যযুগীয় দুনিয়া হলো ক্ষীরখন্ড। এইসমস্ত
কথা দুনিয়া কি জানে! মানুষ তো স্বর্গকে লক্ষ-লক্ষ বছর বলে দেয়। তাই কোনো কথা
বুদ্ধিতে থাকতে পারে না। যারা দেবতা ছিল কেবল তাদেরই স্মৃতিতে আসে। তোমরা জানো যে,
এই দেবতারা সত্যযুগে ছিল। যারা ৮৪ জন্ম নিয়েছিল পুনরায় তারাই এসে পড়বে এবং কাঁটা
থেকে ফুল হবে। এ হলো বাবার একমাত্র ইউনিভার্সিটি, এর শাখা-প্রশাখা বের হতে থাকে।
খুদা যখন আসবে তখন তাঁর সহযোগী হবো, যাদের দ্বারা স্বয়ং খুদা রাজত্ব স্থাপন করবেন।
তোমরা জানো যে, আমরা হলাম খুদার (ঈশ্বর) সহযোগী। ওরা শারীরিক সহযোগিতা করে, এ হলো
আত্মিক। বাবা আমাদের অর্থাৎ আত্মাদেরকে আত্মিক সেবা শেখাচ্ছেন কারণ আত্মাই
তমোপ্রধান হয়ে গেছে। পুনরায় বাবা সতোপ্রধান বানাচ্ছেন। বাবা বলেন - মামেকম্ স্মরণ
করো তবেই বিকর্ম বিনাশ হবে। এ হলো যোগ-অগ্নি। ভারতের প্রাচীন রাজযোগের গায়ন রয়েছে,
তাই না! আর্টিফিসিয়াল যোগ তো অনেক আছে সেইজন্য বাবা বলেন, স্মরণের যাত্রা বলা সঠিক।
বাবাকে স্মরণ করতে-করতে তোমরা শিবপুরীতে চলে যাবে। এটা হলো শিবপুরী। ওটা হলো
বিষ্ণুপুরী। আর এ হলো রাবণপুরী। বিষ্ণুপুরীর পর আসে রামপুরী। সূর্যবংশীয়-র পর
চন্দ্রবংশীয়। এ হলো সাধারণ কথা। অর্ধেক কল্প সত্যযুগ-ত্রেতা, অর্ধেককল্প
দ্বাপর-কলিযুগ। এখন তোমরা সঙ্গমে রয়েছ। এও কেবলমাত্র তোমরাই জানো। যে ভালভাবে ধারণ
করে সে অন্যকেও বোঝায়। আমরা পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে রয়েছি। এও যদি কারোর বুদ্ধিতে থাকে
তাহলেও সমগ্র ড্রামা বুদ্ধিতে চলে আসবে। কিন্তু কলিযুগীয় দেহের আত্মীয়-পরিজনেরা
স্মরণে আসতে থাকে। বাবা বলেন - তোমাদের স্মরণ করতে হবে অদ্বিতীয় পিতাকেই। সকলের
সদ্গতিদাতা রাজযোগ শিক্ষা প্রদানকারী একজনই সে'জন্য বাবা বোঝান যে, শিববাবারই জয়ন্তী
(জন্মদিন) পালিত হয় যিনি সমগ্র দুনিয়াকে পরিবর্তন করেন। তোমরা ব্রাহ্মণরাই জানো যে,
এখন আমরা পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে রয়েছি। যে ব্রাহ্মণ, তারই রচয়িতা আর রচনার জ্ঞান
বুদ্ধিতে থাকে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
এমন কোনো কর্ম ক'রো না যার ফলে কারো দুঃখ হয়। কড়া কথা বলা উচিত নয়। অনেক-অনেক
ক্ষীরখন্ড (মিলেমিশে) হয়ে চলতে হবে।
২ ) কোনো দেহধারীর
প্রশংসা করা উচিত নয়। বুদ্ধিতে যেন থাকে যে আমাদের শিববাবা পড়াচ্ছেন, সেই এক-এরই
মহিমা করা উচিত। আধ্যাত্মিক সহযোগী হতে হবে।
বরদান:-
শুদ্ধ
সংকল্পের ব্রতের (দৃঢ়তা) দ্বারা বৃত্তির পরিবর্তনকারী হৃদয় সিংহাসনধারী ভব
বাপদাদার হৃদয়
সিংহাসন এতটাই পিওর যে এই সিংহাসনের উপর সদা পিওর আত্মারাই বসতে পারে। যাদের সংকল্প
মাত্রেও অপবিত্রতা বা অমর্যাদা এসে যায় তারা সিংহাসনে বসার পরিবর্তে অবনতি কলায় নিচে
নেমে যায়, এইজন্য প্রথমে শুদ্ধ সংকল্পের ব্রত দ্বারা নিজের বৃত্তির পরিবর্তন করো।
বৃত্তি পরিবর্তনের দ্বারা ভবিষ্যৎ জীবন রূপী সৃষ্টি পরিবর্তন হয়ে যাবে। শুদ্ধ
সংকল্প বা দৃঢ় সংকল্পের ব্রত-র প্রত্যক্ষফল হলই সদাকালের জন্য বাপদাদার হৃদয়সিংহাসন।
স্লোগান:-
যেখানে
সর্বশক্তিগুলি সাথে থাকে, সেখানে নির্বিঘ্ন সফলতা আছেই।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও
অন্তঃবাহক স্থিতি
অর্থাৎ কর্মবন্ধন মুক্ত কর্মাতীত স্থিতির বাহন অর্থাৎ অন্তিম বাহন, যার দ্বারা
সেকেন্ডে বাবার সাথে উড়ে যেতে পারবে। এরজন্য সকল পার্থিব জগত থেকে ঊর্ধ্বে অসীম
স্বরূপে, অসীম জগতের সেবাধারী, সকল পার্থিব জিনিসের উপর বিজয় প্রাপ্তকারী বিজয়ীরত্ন
হও তবেই অন্তিম কর্মাতীত স্বরূপের অনুভবী স্বরূপ হতে পারবে।