27-04-2025 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 03-02-2005 মধুবন


"সেবা করার কালে উপরম এবং অসীম বৃত্তি দ্বারা এভাররেডি হয়ে, ব্রহ্মা বাবা সমান সম্পন্ন হও"


আজ গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার চতুর্দিকে কোটির মধ্যে কিছু আর কিছুর মধ্যেও কিছু নিজের বাচ্চাদের ভাগ্য দেখে আনন্দিত হচ্ছেন। এত বিশেষ ভাগ্য আর কারও প্রাপ্ত হতে পারে না। প্রত্যেক বাচ্চার বিশেষত্ব দেখে আনন্দিত হন। যে বাচ্চারা বাপদাদার সাথে হৃদয়ে সম্বন্ধ জুড়েছে সেই প্রত্যেক বাচ্চার মধ্যে কোনো না কোনো বিশেষত্ব অবশ্যই আছে। সর্বাপেক্ষা প্রথম বিশেষত্ব সাধারণ রূপে আগত বাবাকে চিনে মেনে নিয়েছে "আমার বাবা।'' এই স্বীকৃতি সবচাইতে বড় বিশেষত্ব। হৃদয় থেকে তারা স্বীকৃত হয়েছে আমার বাবা আর বাবা স্বীকৃতি দিয়েছেন আমার বাচ্চা। বড় বড়ো যে ফিলোসফার, সায়েনসিস্ট, ধর্মাত্মা চিনতে পারেনি, ওই সাধারণ বাচ্চারা চিনে নিজেদের অধিকার নিয়ে নিয়েছে। কেউই এসে এই সভার বাচ্চাদের দেখে তো বুঝতেই পারবে না যে এই ভোলাভালা মাতারা, এই সাধারণ বাচ্চারা এত মহান বাবাকে চিনে নিয়েছে। তো এটাই বিশেষত্ব - স্বীকৃত হওয়া, বাবাকে চিনে আপন করে নেওয়া, এটা কোটি কোটির মধ্যে তোমরা কিছু বাচ্চাদের ভাগ্য। সব বাচ্চা যারা সমুখে বসে আছে কিংবা দূরে বসে সমুখে থাকার অনুভব করছে, সেই বাচ্চারা সকলেই হৃদয় থেকে স্বীকৃত হয়েছে। চিনে নিয়েছে নাকি চিনছ? যারা চিনে নিয়েছ তারা হাত তুলেছে। (সবাই হাত তুলেছে) চিনে নিয়েছো? আচ্ছা। তো বাপদাদা স্বীকৃত হওয়ার বিশেষত্বের জন্য প্রত্যেক বাচ্চাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বাঃ! ভাগ্যবান বাচ্চারা বাঃ! চিনে নেওয়ার তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত করে নিয়েছে। বাচ্চাদের হৃদয়ের গীত বাপদাদা শুনতে থাকেন, কোন্ গীত? যা পাওয়ার ছিল তা' পেয়ে গেছি। বাবাও বলেন, ও প্রিয় বাচ্চারা, বাবার থেকে যা নেওয়ার ছিল তা' তোমরা নিয়ে নিয়েছ। প্রত্যেক বাচ্চা অফুরান অধ্যাত্ম - ভান্ডারের বালক তথা মালিক হয়ে গেছে।

তো আজ বাপদাদা ভান্ডারের মালিক বাচ্চাদের ভান্ডারের দিনপঞ্জি (পোতামেল) দেখছিলেন। বাবা সবাইকে একরকম এবং সমপরিমাণ ভান্ডার দিয়েছেন। কাউকে পদ্ম, কাউকে লাখে ভান্ডার দেননি। কিন্তু সমূহ ভান্ডারকে জানা আর প্রাপ্ত করা, জীবনে অন্তর্লীন করার ক্ষেত্রে তোমরা নম্বরক্রমে। বাপদাদা আজকাল বারবার বিভিন্ন ভাবে বাচ্চাদের অ্যাটেনশন দেওয়াচ্ছেন - সময়ের নৈকট্য দেখে নিজে নিজেকে বিশাল সূক্ষ্ম-বুদ্ধি দ্বারা চেক করো কী পেয়েছ, কী নিয়েছ আর নিরন্তর সেই খাজানায় পরিপোষণ হচ্ছে কিনা! চেকিং অতি আবশ্যক। কেননা, মায়া বর্তমান সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপে তোমাদের ট্রায়াল করতে থাকে রয়্যাল দীর্ঘসূত্রিতার এবং রয়্যাল আলস্যের। সেইজন্য সদা নিজের চেকিং করতে করতে এগিয়ে চলো। অসাবধান হয়ে এমন অ্যাটেনশন দ্বারা চেকিং নয় - খারাপ কিছু করিনি, দুঃখ দিইনি, খারাপ দৃষ্টি রাখিনি, এই চেকিং তো হয়েছে কিন্তু ভালো হতে ভালো কী করেছো? আত্মিক দৃষ্টি সদা ন্যাচারাল ছিল? নাকি স্মৃতি বিস্মৃতির খেলা করেছো? কত সংখ্যককে তোমরা শুভ ভাবনা, শুভ কামনা, আশীর্বাদ দিয়েছো? এভাবে জমার খাতা কত আর কীরকম ছিল? কারণ তোমরা ভালোভাবে জানো যে জমার খাতা শুধু এখনই সঞ্চয় করতে পারো। এই সময়, খাতা জমা করার ফুল সময়। তারপর তো সম্পূর্ণ সময় জমা অনুযায়ী রাজ্য ভাগ্য আর পূজ্য দেবী দেবতা হওয়ার। জমা যদি কম হয় তো রাজ্য ভাগ্যও কম আর পূজ্য হওয়াতেও নম্বরক্রমে হয়। জমা কম হলে পূজাও কম, বিধিপূর্বক যদি জমা না হয় তবে পূজাও বিধিপূর্বক হবে না, কখনো কখনো বিধিপূর্বক হলে তো পূজা আর পদও কখনো কখনো হবে। সেইজন্য বাপদাদার প্রত্যেক বাচ্চার প্রতি অতিশয় ভালবাসা রয়েছে, তাইতো বাপদাদা এটাই চান যে প্রত্যেক বাচ্চা সম্পন্ন হোক, সমান হোক। সেবা করো কিন্তু সেবাতেও উপরম, অসীম বৃত্তি হোক।

বাপদাদা দেখেছেন মেজরিটি বাচ্চাদের যোগ অর্থাৎ স্মরণের সাব্জেক্টে পছন্দ বা অ্যাটেনশন কম থাকে, সেবাতে বেশি। কিন্তু বিনা স্মরণের সেবাতে অ্যাটেনশন যদি বেশি হয় তবে তা'তে সীমাবদ্ধতা এসে যায়। উপরম বৃত্তি হয় না। নাম আর মানের, পজিশনের মিক্স হয়ে যায়। অসীম বৃত্তি কম হয়ে যায়। সেইজন্য বাপদাদা চান যে কোটির মধ্যে কিছু, কিছুর মধ্যে কিছু আমার বাচ্চারা এখন থেকে যেন এভাররেডি হয়ে যায়, কেন? কেউ কেউ ভাবে সময় হলে হয়ে যাবে। কিন্তু সময় তোমাদের ক্রিয়েশন। ক্রিয়েশনকে তোমরা নিজেদের শিক্ষক বানাবে কি? আরেকটা বিষয় তোমরা জানো যে বহুকালের হিসেব রয়েছে, বহুকালের সম্পন্নতা বহুকালের প্রাপ্তি করায়। তো এখন সময়ের নৈকট্য অনুযায়ী বহুকালের জমা হওয়া আবশ্যক, পরে আবার অভিযোগ ক'রো না যে আমরা তো ভেবেছি বহুকাল সময় বাকি আছে। এখন থেকে বহুকালের অ্যাটেনশন রাখো। বুঝেছ! অ্যাটেনশন প্লিজ।

বাপদাদা এটাই চান যে বাচ্চাদের মধ্যে কোনও একটা সাব্জেক্টেরও খামতি যেন না থেকে যায়। ব্রহ্মা বাবার প্রতি ভালবাসা আছে তো না! ভালবাসার রিটার্ন দেবে তো না! তো ভালোবাসার রিটার্ন হলো - নিজের খামতি চেক করো আর রিটার্ন দাও, টার্ন করো। নিজেকে নিজের টার্ন করা, এটাই রিটার্ন দেওয়া। তো রিটার্ন দেওয়ার মনোবল আছে তোমাদের? হাত তো তুলে দাও, খুব খুশি করে দাও তোমরা। হাত দেখে তো বাপদাদা খুশি হয়ে যান, এখন হৃদয়ে সম্পূর্ণ পাকাপোক্ত, এক পার্সেন্টও কাঁচা নয়, এমন দৃঢ় ব্রত নাও - রিটার্ন দিতেই হবে। নিজেকে নিজের টার্ন করতে হবে।

এখন শিবরাত্রি আসছে তো, তাই না! তো সব বাচ্চার মধ্যে বাবার জয়ন্তী তথা নিজেদের জয়ন্তী উদযাপন করার উৎসাহ-উদ্দীপনা খুব, ভালবাসার সাথে তারা পালন করে। ভালো ভালো প্রোগ্রাম বানাচ্ছে। সেবার প্ল্যান তো খুব ভালো বানিয়ে থাকো, বাপদাদা খুশি হন। কিন্তু..., কিন্তু বলা ভালো লাগে না। জগদম্বা মা কিন্তু (লেকিন) শব্দ বলতেন। সিন্ধি ভাষাতে লে -কিন (কিন-তু) এই কিন বলা হয় আবর্জনাকে। সুতরাং লেকিন বলা মানে কিছু না কিছু আবর্জনা নেওয়া। তাইতো লেকিন তথা কিন্তু বলা ভালো লাগে না। তবুও বলতে হয়। তোমরা যেমন অন্যান্য সেবার প্ল্যান বানিয়েছ এবং আরও প্ল্যান বানাবেও, তেমনই এই ব্রত নেওয়ার প্রোগ্রামও বানাও। রিটার্ন দিতেই হবে, কেননা যখন বাপদাদা বা অন্য কেউ তোমাদের জিজ্ঞাসা করে কেমন আছ, তখন মেজরিটি এই উত্তর দেয়, আছি তো খুব ভালো কিন্তু বাপদাদা যেমন বলেন তেমন নয়। এখন এই উত্তর হওয়া উচিত বাপদাদা যেমন চান তেমনই আছি। নোট করো বাপদাদা কী চান, সেই লিস্ট বের করো এবং চেক করো বাপদাদা যেটা চান সেটা আছে, নাকি নেই? দুনিয়ার লোকে তোমরা সব পূর্বজ দ্বারা মুক্তি চায়, তারা চিৎকার করছে মুক্তি দাও মুক্তি দাও। যতক্ষণ না পর্যন্ত মেজরিটি বাচ্চা নিজেদের পুরানো সংস্কার, যাকে তোমরা নেচার ব'লে থাকো, ন্যাচারাল নয় নেচার, তাতে যদি সামান্যও কিছু থেকে গেছে, মুক্ত হয়নি তবে সকল আত্মার মুক্তি প্রাপ্ত হতে পারে না। তো বাপদাদা বলেন - হে মুক্তি দাতার বাচ্চারা মাস্টার মুক্তি দাতা এখন নিজেদের মুক্ত করো, তবে সকল আত্মার জন্য মুক্তির দ্বার খুলে যাবে। তোমাদের বলা হয়েছিল তো না - গেটের চাবি কী, "অসীম বৈরাগ্য।" সব কার্য করো কিন্তু ভাষণে যেমন বলে থাকো, কর্তা ভাব থেকে মুক্ত, স্বতন্ত্র, না সাধনের বশ, না পজিশনের। কিছু না কিছু যেন প্রাপ্তি হয় - এটা পজিশন নয় অপোজিশন, মায়ার। স্বতন্ত্র এবং বাবার প্রিয়। মুস্কিল হয় কি স্বতন্ত্র হয়েও প্রিয় হওয়া? যাদের মুস্কিল লাগে তারা হাত তোলো। (কেউ হাত তোলেনি) কারও মুস্কিল লাগে না, এরপরে তো শিবরাত্রি পর্যন্ত সব সম্পন্ন হয়ে যাবে। যখন মুস্কিল নয় তখন হতেই হবে। ব্রহ্মা বাবার সমান হতেই হবে। সংকল্পেও, বোলেও, সেবাতেও, সম্বন্ধ সম্পর্কেও, সবকিছুতে ব্রহ্মা বাবা সমান।

আচ্ছা যারা মনে করো, ব্রহ্মা বাবা আর দাদা, গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার, তাঁর প্রতি আমার অনেক অনেক, ১০০ পার্সেন্ট থেকেও বেশি ভালোবাসা রয়েছে, তারা হাত তোলো। খুশি করার জন্য ক'রো না, শুধু এখন এখনই এমন খুশি ক'রো না। সবাই হাত তুলেছো। এই প্রোগ্রাম টিভিতে রেকর্ড করা হচ্ছে তো না? টি. শিবরাত্রিতে বাবা এই টি. ভি. দেখবেন আর হিসেব নেবেন। ঠিক আছে! সমান হওয়াতে সামান্যও ফারাক যেন না হয়। ভালবাসার জন্য সমর্পণ করা কি এমন বড় ব্যাপার! দুনিয়ার লোকে তো অশুদ্ধ ভালবাসার জন্য জীবন পর্যন্ত দিতে তৈরি হয়ে যায়। বাপদাদা শুধু বলেন, আবর্জনা দিয়ে দাও ব্যস্! ভালো জিনিস দিও না, আবর্জনা দিয়ে দাও। দুর্বলতা, খামতি এগুলো কী? আবর্জনাই তো না! আবর্জনা সমর্পণ করা কি কোনো বড় ব্যাপার! পরিস্থিতি যেন সমাপ্ত হয়ে যায়, স্ব স্থিতি শ্রেষ্ঠ হয়ে যায়। তোমরা বলো তো না যে কী করব পরিস্থিতিই এমন ছিল। অতএব, টলিয়ে দেয় এমন পরিস্থিতির নামও যেন না থাকে, স্ব স্থিতি এমন শক্তিশালী হতে হবে। সমাপ্তির পর্দা খুলে গেলে তখন তোমাদের কেমন দেখতে লাগা উচিত? ফরিস্তা ঝলমল করছে। সব বাচ্চা যেন ঝলমলে প্রতীয়মান হয়। সেইজন্য এখন পর্দা খোলা অপেক্ষা করে আছে। দুনিয়ার লোকে চিৎকার করছে পর্দা খোলো, পর্দা খোলো, পর্দা খোলো। তো নিজেদের প্ল্যান নিজেরাই বানাও। যখন কেউ তোমাদের প্ল্যান বানিয়ে দেয় তখন একটা আলাদা ব্যাপার হয়। নিজের প্ল্যান নিজের সাহস দ্বারা বানাও। দৃঢ়তার চাবি যদি লাগাও তবে সফলতা প্রাপ্ত হবেই। তোমরা দৃঢ় সংকল্প করো আর বাপদাদা খুশি হন - বাঃ বাচ্চারা বাঃ! দৃঢ় সংকল্প তোমরা করো কিন্তু দৃঢ়তায় আবার অল্পস্বল্প অসতর্কতা মিক্স হয়ে যায়। সেইজন্য সফলতাও কখনো অর্ধেক, কখনো পৌনে (তিন চতুর্থাংশ) পার্সেন্টেজে হয়ে যায়। তোমাদের ভালবাসা যেমন ১০০ পার্সেন্ট আছে তেমনই পুরুষার্থে সম্পন্নতাও যেন ১০০ পার্সেন্ট হয়। ১০০ পার্সেন্টের বেশি হতে পারে কিন্তু কম যেন না হয়। পছন্দ এটা? পছন্দ হয়েছে তো না? শিবরাত্রিতে জলসা করবে তাই না! হতেই হবে। আমি হবো না তো কে হবে! এই নিশ্চয় রাখো, আমিই ছিলাম, আমিই আছি আমিই হবো। এই নিশ্চয় তোমাদের বিজয়ী বানিয়ে দেবে। পর দর্শন করো না, নিজেকেই দেখ।

অনেক বাচ্চা আত্মিক বার্তালাপ করে যখন তো বলে একে সামান্য ঠিক করে দাও, পরে আমি ঠিক হয়ে যাবো। একে সামান্য বদলে দাও তাহলে আমিও বদলে যাবো। কিন্তু না সে বদলাবে, না তুমি বদলাবে। নিজে যদি বদলাও তবে সেও বদলে যাবে। কোনও আধার রেখো না। এটা হলে তাহলে এটা হবে। আমাকেই করতে হবে।

আচ্ছা, যারা প্রথমবার এসেছ তারা হাত তোলো। তো যারা প্রথমবার এসেছো তাদের জন্য বাপদাদা বিশেষভাবে বলেন যে এমন সময় এসেছ যখন সময় খুব কম অবশিষ্ট আছে, কিন্তু পুরুষার্থ এত তীব্র করো যাতে লাস্ট সো ফাস্ট আর ফাস্ট সো ফার্স্ট নম্বরে এসে যেতে পারো। কেননা, এখন চেয়ার গেমস চলছে। কে জয়ী, সেটা এখনও আউট হয়নি। তোমরা লেট এসেছ, কিন্তু যদি ফাস্ট চলো তবে পৌঁছে যাবে। শুধু অমৃতবেলায় নিজে নিজেকে অমর ভব-র বরদান স্মরণ করিয়ে দিও। আচ্ছা - সবাই, কেউ দূর থেকে কেউ কাছের থেকে এসেছে। বাপদাদা বলেন, যদিও বা তোমরা এসেছ নিজের ঘরে। সংগঠন ভালো লাগে তোমাদের। টিভিতে দেখো তো না, সভা ফুল হ'লে কত ভালো লাগে! আচ্ছা। তো এভাররেডি? এভাররেডির পাঠ পড়বে তো না! আচ্ছা।

মধুবন নিবাসীদের প্রতি - যারা মধুবনের তারা হাত তোলো। অনেক রয়েছো। মধুবনের তোমরা হোস্ট, অন্যান্যরা তো গেস্ট হয়ে আসে আর চলে যায়। কিন্তু মধুবনের যারা তারা হোস্ট। তারা নিয়ারেস্টও, ডিয়ারেস্টও। মধুবনের তোমাদের দেখে সবাই খুশী হয় তো না। কোনও স্থানে মধুবনের তোমরা যখন যাও তো সবাই কোন নজরে দেখে! বাঃ মধুবন থেকে এসেছে! কেননা, মধুবন নাম শুনে মধুবনের বাবা স্মরণে এসে যান। সেইজন্য মধুবন নিবাসীদের মহত্ত্ব আছে। আছে মহত্ত্ব? খুশি হও তো না! এমন প্রেমপূর্বক পরিপালনের স্থান কোটি কোটির মধ্যে কিছুরই প্রাপ্তি হয়েছে। সবাই চায় মধুবনেই থেকে যাই, আমরা কি থাকতে পারি! আগে থাকতেই তোমরা থাকছ। তো এটা ভালো। যারা মধুবনের তাদেরকে বাবা ভুলে যান না, তোমরা ভাবো বাবা আমাদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেননি, কিন্তু বাপদাদা সদা তাঁর হৃদয়ে জিজ্ঞাসা করেন। যারা মধুবনের তারা আগে। মধুবনের যারা তারা না থাকলে সবাই আসবে কোথায়! তোমরা সেবার নিমিত্ত তো না! সেবাধারী যতই হোক তবুও ফাউন্ডেশন তো তারা, যারা মধুবনের। তো যারা উপরে জ্ঞান সরোবরে, পান্ডব ভবনে আছে, তাদেরও সবাইকে বাপদাদা হৃদয়ের আশীর্বাদ আর স্মরণ স্নেহ দিচ্ছেন। এখানে যে টোলি দেওয়া হয় তা' উপরে মধুবনে পায়? তাহলে তো মধুবনের তোমরা টোলিও পাও, বোলিও (উচ্চারিত মুরলী) পাও। দুইই মেলে। আচ্ছা।

গ্লোবাল হাসপাতালের প্রতি - যারা হসপিটালের তারা সবাই ঠিক আছে, কেননা হসপিটালেরও বিশেষ পার্ট আছে তো না! তারা আসে নীচে? আচ্ছা, অল্প কয়েক আসে। যারা হসপিটালের সাথে যুক্ত তারা ভালো সেবা করছে। দেখ, সঙ্কটের সময় তো হসপিটালই কাজে আসে তো না! তাছাড়া, যখন থেকে হসপিটাল খোলা হয়েছে তখন থেকে সবার নজরে এটা এসেছে যে ব্রহ্মা কুমারীরা শুধু জ্ঞান দেয় না, বরং সময়কালে সহযোগিতাও করে, সোস্যাল সেবাও করে। তো হসপিটাল হওয়ার পরে আবুতে এই বায়ুমন্ডল বদল হয়ে গেছে। আগে যে নজরে দেখতো, এখন সেই নজরে দেখে না। এখন সহযোগের নজরে দেখে। জ্ঞান মানুক আর নাই মানুক কিন্তু সহযোগের নজরে দেখে। তো যারা হসপিটালের সাথে যুক্ত তারা সেবা করছে তো না! এটা ভালো।

আচ্ছা - আজকের বিষয় মনে আছে? সম্পন্ন হতেই হবে, যাই হয়ে যাক না কেন সম্পন্ন হতেই হবে। অনবছিন্ন প্রয়াস যেন জারি থাকে, সম্পন্ন হতে হবে, সমান হতে হবে। আচ্ছা।

চতুর্দিকের কোটি কোটির মধ্যে কিছু, কিছুর মধ্যেও কিছু ভাগ্যবান, ভগবানের বাচ্চা শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সদা তীব্র পুরুষার্থ দ্বারা যা ভেবেছে সেটা করেছে, শ্রেষ্ঠ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ করা, লক্ষ্য আর লক্ষণ সমান বানানো এমন বিশেষ আত্মাদের, সদা বহুকালের পুরুষার্থ দ্বারা রাজ্য ভাগ্য আর পূজ্য হওয়া শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সদা বাবার স্নেহের রিটার্নে নিজেকে টার্ন করে নম্বর ওয়ান উইন করে, তেমন ভাগ্যবান বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

বরদান:-
বিশ্ব কল্যাণকারীর উঁচু স্টেজে স্থিত থেকে বিনাশ লীলা দেখে সাক্ষী দ্রষ্টা ভব

অন্তিম বিনাশ লীলা দেখার জন্য বিশ্ব কল্যাণকারীর উঁচু স্টেজ চাই। যে স্টেজে স্থিত হ'লে দেহের সর্ব আকর্ষণ অর্থাৎ সম্বন্ধ, পদার্থ, সংস্কার, প্রকৃতির অস্থিরতার আকর্ষণ সমাপ্ত হয়ে যায়। যখন এমন স্টেজ হবে তখন সাক্ষী দ্রষ্টা হয়ে উপরের স্টেজে স্থিত হয়ে শান্তির, শক্তির কিরণ সর্ব আত্মার প্রতি দিতে পারবে।

স্লোগান:-
যদি বলবান হও তবে মায়ার ফোর্স সমাপ্ত হয়ে যাবে।

অব্যক্ত ইশারা : - "কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও" বরদাতা বাবা এবং এই বরদানী আত্মারা উভয়ই কম্বাইন্ড। এই স্মৃতি যদি সদা থাকে তবে পবিত্রতার ছত্রছায়া আপনা থেকেই থাকবে, কেননা যেখানে সর্বশক্তিমান বাবা আছেন সেখানে অপবিত্রতা স্বপ্নেও আসতে পারে না। সদা বাবা আর তুমি যুগল রূপে থাকো, সিঙ্গল নয়, যদি সিঙ্গল হয়ে যাও তবে পবিত্রতার সুহাগও (সাথীর সাহচর্য) চলে যাবে।