27-07-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
14-03-2006 মধুবন
‘‘পরমাত্ম মিলনের অনুভূতির জন্য ভুল আমিত্ব ভাবকে
জ্বালানোর হোলি উদযাপন করো, দৃষ্টির পিচকারির দ্বারা সকল আত্মাকে সুখ, শান্তি,
প্রেম, আনন্দের রং লাগাও’’
আজ হোলিয়েস্ট বাবা নিজের হোলি বাচ্চাদের সাথে মিলন উদযাপন করছেন। চতুর্দিকের হোলি
বাচ্চারা দূরে বসেও বাবার কাছে। বাপদাদা এমন হোলি অর্থাৎ মহান পবিত্র বাচ্চাদের
মস্তকে ভাগ্যের ঝলমলে নক্ষত্র দেখছেন। সমগ্র কল্পে এমন মহান পবিত্র আর কেউ হয় না।
এই সঙ্গম যুগে যারা পবিত্রতার ব্রত নেয় এমন ভাগ্যবান বাচ্চারা ভবিষ্যতে ডবল পবিত্র,
শরীরেও পবিত্র, আর আত্মাও পবিত্র হয়। সমগ্র কল্পে চক্কর লাগাও, যত মহান আত্মাই এসে
থাকুক না কেন কিন্তু শরীরও পবিত্র আর আত্মাও পবিত্র, এমন পবিত্র না ধর্ম আত্মা
হয়েছে, না মহাত্মা হয়েছে। বাপদাদা তোমরা সব বাচ্চার জন্য গর্বিত, বাহ্ আমার মহান
পবিত্র বাচ্চারা বাহ্! ডবল পবিত্র, ডবল মুকুটধারীও কেউ হয় না, তোমরা শ্রেষ্ঠ
আত্মারাই ডবল মুকুটধারী হও। নিজেদের সেই ডবল পবিত্র ডবল মুকুটধারী স্বরূপ সামনে আসছে
তো না! সেইজন্য এই সঙ্গম যুগে তোমরা সব বাচ্চার যে প্র্যাকটিক্যাল জীবন হয়েছে, সেই
প্রতিটা জীবনের বিশেষত্বের স্মৃতিচিহ্ন দুনিয়ার লোকে উৎসব রূপে পালন করতে থাকে।
আজও তোমরা সবাই স্নেহের বিমানে হোলি উদযাপন করার জন্য এখানে পৌঁছে গেছ। হোলি উদযাপন
করতে এসেছ, তাই তো না! তোমরা সবাই নিজের জীবনে পবিত্রতার হোলি উদযাপন করেছ, সব
আধ্যাত্মিক রহস্যকে দুনিয়ার লোকে স্থূল রূপ দিয়েছে। কারণ তারা বডি কন্সাস তো না!
তোমরা সবাই সোল কন্সাস, আধ্যাত্মিক জীবন তোমাদের আর তারা বডি কন্সাস। তো সবকিছু
স্থূল রূপ নিয়ে নিয়েছে। নিজের যোগ অগ্নির দ্বারা নিজের পুরানো সংস্কার স্বভাব
ভস্ম করেছ, জ্বালিয়েছো আর দুনিয়ার লোকে স্থূল অগ্নিতে জ্বালায়। কেন? পুরানো
সংস্কার জ্বালানো ব্যতীত না পরমাত্ম সঙ্গের রং লাগতে পারে, না পরমাত্ম মিলনের অনুভব
করতে পারে। তো তোমাদের জীবনের এত ভ্যাল্যু যে তোমাদের প্রতিটা কাজের উদ্যোগ উৎসব
রূপে উদযাপিত হয়ে থাকে। কেন? সম্পূর্ণ সঙ্গমযুগ তোমরা উৎসাহ-উদ্দীপনার জীবন
বানিয়েছ। তোমাদের জীবনের স্মৃতিচিহ্ন এক দিনের উৎসব রূপে তারা পালন করে। তো
তোমাদের সবার সদা এমন উৎসাহ-উদ্দীপনার খুশির জীবন হয়েছে তো না! হয়েছে নাকি কখনো
কখনো হয়? সদা উৎসাহ থাকে নাকি কখনো কখনো? যারা মনে করো যে সদা উৎসাহে থাকো, খুশিতে
থাকো, তাদের জন্য খুশি জীবনের বিশেষ পরমাত্ম গিফ্ট, এমন অনুভব হয় তোমাদের? যা কিছু
হয়ে যাক কিন্তু ব্রাহ্মণ জীবনের খুশি, উৎসাহ, উদ্দীপনা চলে যেতে পারে না। বাপদাদা
সব বাচ্চার মুখমণ্ডল সদা আনন্দদায়ক দেখতে চান। কেননা, তোমাদের মতো সৌভাগ্যবান না
কেউ হয়েছে, না কেউ হতে পারে। বিভিন্ন বর্গের তোমরা বসে আছ তো এমন অনুভাবী মূর্ত
হওয়ার জন্য স্ব প্রতি প্ল্যান বানিয়েছো?
বাপদাদা খুশি হন, আজ অমুক বর্গ, অমুক বর্গ এসেছে, ওয়েলকাম। অভিনন্দন, তোমরা এসেছো।
সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা ভালো। কিন্তু প্রথমে স্ব-এর প্ল্যান, বাপদাদা দেখেছেন সব
বর্গের সবাই একে অপরের থেকে আগে প্ল্যানস বানায় আর খুব ভালো বানায়, আর এইসঙ্গে
স্ব-উন্নতির প্ল্যান বানানো অতি আবশ্যক। বাপদাদা এটাই চান সব বর্গ স্ব-উন্নতির
প্র্যাকটিক্যাল প্ল্যান বানাক আর নম্বর নিক। সংগঠনে যেমন একত্রিত হয়, ফরেনের হোক
বা দেশের, তোমরা মিটিং করো, প্ল্যান বানাও, বাপদাদা তা'তেও সন্তুষ্ট কিন্তু যেমন
উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সংগঠিত রূপে সেবার প্ল্যান বানাও তেমনই এতটাই উৎসাহ-উদ্দীপনার
সাথে স্ব-উন্নতির নম্বর নিতে আরও অ্যাটেনশন দিতে হবে। বাপদাদা শুনতে চান যে এইমাসে
এই বর্গের তারা স্ব-উন্নতির প্ল্যান প্র্যাকটিক্যালি করেছে। যত বর্গ এসেছ তারা হাত
উঠাও। সবাই বর্গের। আচ্ছা এত এসেছে, অনেক এসেছে। শুনেছি ৫/৬ বর্গ থেকে এসেছে। খুব
ভালো তারা এসেছে। এখন একটা টার্ন বাকি আছে, বাপদাদা তো হোম ওয়ার্ক দিয়ে
দিয়েছিলেন। বাপদাদা তো রোজ রেজাল্ট দেখেন, তোমরা ভাববে বাপদাদা লাস্ট টার্নে হিসেব
নেবেন, কিন্তু বাপদাদা রোজ দেখেন, এখনও আরও ১৫ দিন আছে। এই ১৫ দিনে সব বর্গের যারা
এসেছ তাদেরও, যারা আসেনি সেই বর্গের নিমিত্ত হওয়া বাচ্চাদেরও বাপদাদা এই ইশারা দেন
যে, সব বর্গ নিজেদের স্ব-উন্নতির যে কোনো প্ল্যানই বানাও, বিশেষ শক্তিস্বরূপ হওয়ার
কোনো প্ল্যান, অথবা বিশেষ গুণমূর্ত হওয়ার কোনো প্ল্যান, কিংবা বিশ্ব কল্যাণের জন্য
লাইট মাইট দেওয়ার, প্রত্যেক বর্গ নিজেদের মধ্যে নিশ্চিত করো আর চেক করো, যারাই
বর্গের মেম্বার, এটা ভালো যে তোমরা মেম্বার হয়েছ, কিন্তু প্রত্যেক মেম্বারের নম্বর
ওয়ান হওয়া উচিত। শুধু নাম নোট হয়ে গেছে তুমি অমুক বর্গের মেম্বার, এটা নয়। অমুক
বর্গের স্ব- উন্নতির মেম্বার। এটা হতে পারে? যারা বর্গের নিমিত্ত তারা ওঠো। হ্যাঁ,
যত বর্গ আছে, যারা নিমিত্ত হয়েছে, সেই নিমিত্তরা ওঠো। ফরেনের যারা তারাও ওঠো। ফরেনে
যারা নিমিত্ত তারা ওঠো। ফরেনের যে ৪-৫ জন নিমিত্ত আছে তারা ওঠো। বাপদাদার সবাইকে
খুব শক্তিশালী মূর্তি রূপে দেখেন। খুব সুন্দর মূর্তি! তো তোমরা সবাই মনে করছ ১৫
দিনের মধ্যে কিছু করে দেখাব, হতে পারে? বলো হতে পারে? (পুরো পুরুষার্থ করবো) এছাড়া
বলো হতে পারে কি? (প্রশাসক বর্গ প্ল্যান বানিয়েছ যে কেউ রাগ করবে না) তার এনকোয়ারি
করো? তোমরা বোনেরা (টিচারদের প্রতি) মনোবল বজায় রাখো - ১৫ দিনে এনকোয়ারি করে
রেজাল্ট বানাতে পারো। যারা ফরেন থেকে তারা তো হ্যাঁ করছে। তোমরা কী মনে করছো, হতে
পারে? ভারতের তোমরা বলো হতে পারে? বাপদাদার তো তোমাদের সকলের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে
যে রেজাল্ট ভালো। কিন্তু যদি ১৫ দিনও অ্যাটেনশন রাখার পুরুষার্থ করো তবে এই অভ্যাস
ভবিষ্যতেও কাজে আসবে। এখন এমনই মিটিং করতে হবে, যার যা লক্ষ্য নিতে হবে - হয় তা'
কোনো গুণের বা কোনো শক্তি রূপের তা'তে বাপদাদা নম্বর দেবেন। বাপদাদা তো দেখতে থাকেন।
স্ব-সেবাতে নম্বর ওয়ান বর্গ কা'রা কা'রা! কেননা, বাপদাদা দেখেছেন যে প্ল্যান খুব
ভালো হয়, কিন্তু সেবা আর স্ব উন্নতি যদি সাথে সাথে না হয় তবে সেবার প্ল্যানে যতটা
সফলতা দরকার ততটা হয় না। সেইজন্য সময়ের নৈকট্য সামনে দেখে সেবা আর স্ব-উন্নতিকে
কম্বাইন্ড রাখো। শুধু স্ব-উন্নতিও নয়, সেবাও প্রয়োজন। তবে স্ব-উন্নতির স্থিতির
দ্বারা সেবায় সাফল্য বেশি হবে। সেবার কিংবা স্ব-উন্নতির সফলতার লক্ষণ হলো - উভয়ত:
সন্তুষ্টতা থাকবে, নিজে নিজের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে এবং যাদের সেবা করছে তাদেরও সেই
সেবার দ্বারা সন্তুষ্টতার অনুভব হবে। যদি নিজের বা যাদের সেবার নিমিত্ত, তাদের
সন্তুষ্টতা অনুভব না হলে তবে সফলতা কম, পরিশ্রম বেশি করতে হবে।
তোমরা সবাই জানো যে সেবাতে কিংবা স্ব-উন্নতিতে সফলতা সহজভাবে প্রাপ্ত করার গোল্ডেন
চাবি কোনটা? অনুভব তো তোমাদের সকলেরই আছে। গোল্ডেন চাবি হলো - আচরণে নির্মান ভাব,
মুখে নির্মল বাণী, সম্বন্ধ সম্পর্কে নিমিত্ত ভাব থাকা। যেমন ব্রহ্মা বাবা আর
জগদম্বাকে তোমরা দেখেছ, কিন্তু এখন কোথাও কোথাও সেবার সফলতায় পার্সেন্টেজ হয়ে যায়।
তোমরা যা চাও, যতটা করো, যত প্ল্যান বানাও তা'তে পার্সেন্টেজ হয়ে যায় কেন? তার
কারণ বাপদাদা মেজরিটির মধ্যে দেখেছেন সফলতায় ঘাটতি হওয়ার কারণ হলো এক শব্দ, কী
সেটা? "আমি।" আমি শব্দ তিন রকম ভাবে ইউজ হয়। দেহী- অভিমানী এতেও আমি আত্মা, আমি
শব্দ আসে। দেহ অভিমানেও আমি যা বলি, করি তা' ঠিক, আমি বুদ্ধিমান, এটা সীমাবদ্ধতার
আমি। আমি দেহ অভিমানেও আসে আর তৃতীয় আমি আসে যখন কেউ নিরাশ হয়ে যায়। আমি এটা করতে
পারব না, আমার সাহস নেই। আমি এটা শুনতে পারি না, আমি এটা সমাহিত করতে পারি না... তো
বাপদাদা তিন প্রকারের আমি আমি-র গীত শুনতে থাকেন। ব্রহ্মা বাবা, জগৎ অম্বা যে নম্বর
নিয়েছেন তার বিশেষত্ব ছিল এটাই উলট আমিত্ব ভাবের অভাব, অবিদ্যা। ব্রহ্মা বাবা কখনো
এটা বলেননি আমি রায় দিই, আমি রাইট। বাবা, বাবা..বাবা করাচ্ছেন, আমি করি না। আমি
চতুর নই, বাচ্চারা চতুর। জগৎ অম্বারও স্লোগান ছিল মনে আছে? যারা পুরানো তাদের মনে
থাকবে। জগৎ অম্বা এটাই বলতেন হুকুম (সর্বময় কর্তা) হুকুম (অনুশাসন) চালাচ্ছেন। আমি
না, চালানোর মালিক বাবা চালাচ্ছেন। করাবনহার বাবা করাচ্ছেন। তো প্রথমে সবাই নিজের
ভিতর থেকে এই অভিমান আর অপমানের আমিকে সমাপ্ত করে সামনে এগিয়ে যাও। ন্যাচারালি সব
বিষয়ে যেন বাবা বাবা নির্গত হয়। ন্যাচারালি নির্গত হোক, কেননা বাবা সমান হওয়ার
সংকল্প তো সবাই নিয়েছোই। সুতরাং সমান হওয়ার ক্ষেত্রে শুধু এক রয়্যাল আমিকে
জ্বালিয়ে দাও। আচ্ছা ক্রোধও করবে না। ক্রোধ কেন আসে? আমিত্ব ভাব উৎপন্ন হয়।
তো হোলি উদযাপন করতে এসেছো তোমরা, হোলি উদযাপন করতে এসেছ তো না? তো প্রথমে কোন হোলি
উদযাপন করা হয়? জ্বালানোর। বাস্তবে, তোমরা খুব ভালো, খুব যোগ্য। বাবার আশার দীপক
তোমরা, শুধু এই সামান্য আমিকে কেটে বাদ দিয়ে দাও। দুটো আমিকে কেটে দাও, এক আমিকে
রাখো। কেন? বাপদাদা দেখছেন, তোমাদেরই অনেক ভাই বোন, ব্রাহ্মণ নয় অজ্ঞানী আত্মা
নিজেদের জীবনে সাহস হারিয়ে ফেলেছে। এখন তাদেরকে সাহসের পাখা লাগাতে হবে। একদম
অসহায় হয়ে গেছে, নিরাশ হয়ে গেছে। তো হে হৃদয়বান, কৃপালু, দয়ালু, বিশ্বের
আত্মাদের ইষ্ট দেব আত্মারা! তোমাদের নিজেদের শুভ ভাবনা, দয়ার ভাবনা, আত্মিক ভাবনা
দ্বারা তাদের ভাবনা পূর্ণ করো। দুঃখ অশান্তির ভাইব্রেশন তোমাদের আসে না। নিমিত্ত
আত্মা তোমরা, তোমরা পূজ্য, বৃক্ষের কাণ্ড ফাউন্ডেশন তোমরা। সবাই তোমাদের খুঁজছে,
কোথায় গেছে আমাদের রক্ষক! কোথায় গেছে আমাদের ইষ্ট দেব! বাবা তো অনেক আর্তরব শুনতে
পান। এখন স্ব- উন্নতির দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন শক্তির সকাশ দাও। মনোবলের পাখনা লাগাও।
নিজের দৃষ্টি দ্বারা, তোমাদের দৃষ্টিই পিচকারি, তো নিজের দৃষ্টির পিচকারির দ্বারা
সুখের রঙ লাগাও, শান্তির রঙ লাগাও, প্রেমের রঙ লাগাও, আনন্দের রঙ লাগাও। তোমরা তো
পরমাত্ম সঙ্গের রঙে এসে গেছ। অন্য আত্মাদেরও আধ্যাত্মিক রঙের অনুভব করাও। পরমাত্ম
মিলনের মঙ্গল মেলার অনুভব করাও। লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো আত্মাদের ঠিকানার রাস্তা
বলে দাও।
তো স্ব-উন্নতির প্ল্যান বানাবে তোমরা, এতে নিজের চেকার হয়ে চেক করো, রয়্যাল রূপে
এটা আসছে না তো! কেননা, আজ তোমরা হোলি উদযাপন করতে এসেছো। তো বাপদাদা এই সংকল্প
দিচ্ছেন, আজ দেহ অভিমান আর অপমানের যে 'আমি' আসে, হতাশার আমি আসে, সেসব জ্বালিয়ে
ফিরে যেয়ো, সাথে নিয়ে যেয়ো না। কিছু তো অন্তত: জ্বালাবে, আগুন জ্বালাবে কি!
জ্বালামুখী যোগ অগ্নি জ্বালাও। কীভাবে জ্বালাতে হয় জানো তোমরা? হ্যাঁ, জ্বালামুখী
যোগ জানো? নাকি সাধারণ যোগ জানো? জ্বালামুখী হও। লাইট মাইট হাউজ। তো এটা পছন্দ?
অ্যাটেনশন প্লিজ, আমিকে জ্বালাও। বাপদাদা যখন আমি আমির গীত শোনেন তখন সুইচ বন্ধ করে
দেয়। বাঃ! বাঃ! এর গীত হ'লে আওয়াজ বাড়িয়ে দেন। কারণ আমি আমিতে অনেক আকর্ষণ থাকে।
সব বিষয়ে আকর্ষণ করবে - এটা নয়, ওটা নয়, এভাবে নয়, ওভাবে নয়। সুতরাং আকর্ষণ
হওয়ার কারণে ভ্রম জন্ম নেয়। বাপদাদার আকর্ষণ, সংশয় আর স্বভাব (ভুল স্বভাব) পছন্দ
নয়। বাস্তবে, স্বভাব শব্দ খুব ভালো। স্বভাব - স্ব এর ভাব। কিন্তু সেটা উল্টো করে
দিয়েছে। না পরিস্থিতির আকর্ষণে করবে, না নিজের দিকে কাউকে আকৃষ্ট করবে! তারাও খুব
উত্যক্ত করে। কেউ যতই তোমাকে বলুক না কেন কিন্তু তুমি নিজের দিকে টানবে না। না
পরিস্থিতিকে টানবে, না নিজের দিকে টানবে, টানাটানি (পারস্পরিক আকর্ষণ) শেষ। বাবা,
বাবা আর বাবা। পছন্দ তো না! তিন বিষয় কিংবা এক আমিকে এখানে ছেড়ে যেয়ো, সাথে নিয়ে
যেয়ো না, ট্রেনে এটা তোমাদের বোঝা হবে। তোমাদের একটা গীত আছে না - আমি বাবার, বাবা
আমার, আছে না? তো এক আমি রাখো, দুটো আমি শেষ। তো হোলি উদযাপন করেছো তোমরা, জ্বালিয়ে
দিয়েছ সংকল্পে? এখন তো সংকল্প করবে। সংকল্প করেছ? হাত উঠাও। করেছ নাকি একটু একটু
থাকবে? অল্প অল্প ছাড় দেবে? হাতুরিকে অব্যাহতি দেওয়া যাক? যারা মনে করছো অল্প
অল্পের ছাড় তো দরকার, তারা হাত তোলো। অল্প থাকবে তো না! থাকবে না? তোমরা তো খুব
বাহাদুর! অভিনন্দন, খুশিতে নাচো, গাও। বাধ্যবাধকতায় নয়। আকর্ষণে নয়। আচ্ছা।
এখন এক সেকেন্ডে নিজের মনের থেকে সব সংকল্প সমাপ্ত ক'রে এক সেকেন্ডে বাবার সাথে উঁচু
হতে উঁচু স্থান পরমধামে উঁচু হতে উঁচু বাবার সাথে উঁচু স্থিতিতে ব'সো। আর বাবা সমান
মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়ে বিশ্বের আত্মাদের শক্তির কিরণ দাও। আচ্ছা।
চতুর্দিকের হোলিয়েস্ট, হাইয়েস্ট বাচ্চাদের সর্ব বিশ্ব কল্যাণকারী বিশেষ আত্মাদের,
সকল পূর্বজ এবং পূজ্য আত্মাদের, বাবার হৃদয় সিংহাসনাসীন সকল বাচ্চাকে বাপদাদার
স্মরণ স্নেহ আর হৃদয়ের শুভ ভাবনা শুভ কামনা সহ হৃদয়ের সস্নেহ নমস্কার।
দূর দূরান্ত থেকে আসা পত্র, কার্ড, ইমেল, কম্পিউটারের দ্বারা বার্তা বাপদাদা
পেয়েছেন এবং বাপদাদার সেই বাচ্চাদের সম্মুখে দেখে পদম গুন স্মরণের স্নেহ-সুমন
দিচ্ছেন। হোলির অভিনন্দন জানাচ্ছেন। আচ্ছা।
বরদান:-
নিজের পূর্বজ স্বরূপের স্মৃতির দ্বারা সকল আত্মাকে
শক্তিশালী বানিয়ে আধারমূর্ত ও উদ্ধারমূর্ত ভব
এই সৃষ্টি বৃক্ষের মূল কাণ্ড, সকলের পূর্বজ, তোমরা
ব্রাহ্মণ আত্মা তথা দেবতা। সব কর্মের আধার, কুল মর্যাদার আধার, রীতি রেওয়াজের আধার
তোমরা পূর্বজগণ সকল আত্মার আধার এবং উদ্ধারমূর্ত। তোমরা সব কাণ্ড দ্বারাই সকল
আত্মার শ্রেষ্ঠ সংকল্পের শক্তি বা সর্বশক্তির প্রাপ্তি হয়। তোমাদের সবাই ফলো করছে
সেইজন্য দায়িত্ব কত বড় সেটা বুঝে সব সংকল্প এবং কর্ম করো। কেননা, তোমরা সব পূর্বজ
আত্মার আধারেই সৃষ্টির সময় আর স্থিতির আধার।
স্লোগান:-
যে সর্বশক্তিরূপী কিরণ চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেয় সেই
মাস্টার জ্ঞান সূর্য।
অব্যক্ত ইশারা :- সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ
সেবার নিমিত্ত হও তিন শব্দের কারণে কন্ট্রোলিং পাওয়ার, রুলিং পাওয়ার কম হয়ে যায়।
সেই তিন শব্দ হলো - ১) হোয়াই(why/কেন), ২) হোয়াট(what/ কী), ৩) ওয়ান্ট want/চাই)।
এই তিন শব্দ শেষ করে শুধু এক শব্দ বলো। বাহ্ যদি বলো তো কন্ট্রোলিং পাওয়ার এসে যাবে,
তার পরে সংকল্প শক্তি দ্বারা অসীম সেবার নিমিত্ত হতে পারবে।