27.12.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের দুঃখের দিন এখন পূর্ণ হয়েছে, তোমরা এখন এমন দুনিয়ায় যাচ্ছো যেখানে কোনো
অপ্রাপ্ত বস্তু নেই"
প্রশ্নঃ -
কোন্ দুটি
শব্দের রহস্য তোমাদের বুদ্ধিতে থাকার কারণে পুরোনো দুনিয়ার থেকে অসীমের বৈরাগ্য আসে?
উত্তরঃ
অবতরণ-কলা আর
উত্তরণ-কলার রহস্য তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। তোমরা জানো যে, অর্ধেক কল্প ধরে আমরা
অবতরণ করেছি, এখন উত্তরণের সময়। বাবা এসেছেন নর থেকে নারায়ণে পরিণত করার সত্য জ্ঞান
প্রদান করতে। আমাদের জন্য এখন কলিযুগ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে,
সেইজন্য এর(কলিযুগ) থেকে অসীমের বৈরাগ্য এসেছে।
গীতঃ-
ধৈর্য ধর যে
মন/মানব....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মা-রূপী বাচ্চারা গান শুনেছে। আত্মাদের পিতা বসে-বসে বোঝান - এ হলো একটাই
পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ যখন প্রতি কল্পে বাবা এসে আত্মা-রূপী বাচ্চাদের পড়ান। রাজযোগ
শেখান। বাবা আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে বলেন - মনুয়া অর্থাৎ আত্মা, হে আত্মা ধৈর্য ধরো।
আত্মাদের সঙ্গে কথা বলেন। এই শরীরের মালিক হলো আত্মা। আত্মা বলে - আমি অবিনাশী আত্মা,
এ হলো আমার বিনাশী শরীর। আত্মিক পিতা বলেন - বাচ্চারা, আমি একবারই কল্পের সঙ্গমে এসে
তোমাদের ধৈর্য প্রদান করি যে এখন সুখের দিন আসতে চলেছে। এখন তোমরা দুঃখধাম,... নরকে
রয়েছো। কেবলমাত্র তুমিই নও, সমগ্র দুনিয়াই এখন.... নরকে রয়েছে, তোমরা যে আমার বাচ্চা
হয়েছো, ..... নরক থেকে বেরিয়ে এসে স্বর্গে যাচ্ছো। সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর
অতিবাহিত হয়ে গেছে। কলিযুগও তোমাদের কাছে গত হয়ে গেছে। তোমাদের কাছে এ হলো
পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ যখন তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাও। আত্মা যখন
সতোপ্রধান হয়ে যাবে তখন এই শরীর পরিত্যাগ করবে। সতোপ্রধান আত্মার সত্যযুগে নতুন
শরীর চাই। ওখানকার সবকিছুই নতুন হয়। বাবা বলেন - বাচ্চারা, এখন দুঃখধাম থেকে সুখধামে
যেতে হবে, তারজন্য পুরুষার্থ করতে হবে। সুখধামে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল।
তোমরা নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো। নর থেকে নারায়ণ হওয়ার এই জ্ঞানই
হলো সত্য। ভক্তিমার্গে প্রতি পূর্ণিমায় কথা শুনে এসেছ, কিন্তু এ হলোই ভক্তিমার্গ।
একে সত্যমার্গ বলা হবে না, জ্ঞান-মার্গই হলো সত্য। তোমরা সিঁড়িতে নামতে-নামতে
অসত্য-খন্ডে চলে এসেছ। এখন তোমরা জেনেছো যে সত্য-পিতার কাছ থেকে এই জ্ঞান পেয়ে আমরা
২১ জন্মের জন্য দেবী-দেবতায় পরিনত হবো। আমরা ছিলাম, পরে সিড়ি বেয়ে নেমে এসেছি।
অবতরণ-কলা আর উত্তরণ-কলার রহস্য তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। আবাহনও করে - হে পিতা, তুমি
এসে আমাদের পবিত্র করো। এক পিতাই হলেন পবিত্রকারী। বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা
সত্যযুগে বিশ্বের মালিক ছিলে। অত্যন্ত ধনবান, অত্যন্ত সুখী ছিলে। এখন অতি অল্পসময়
বাকি রয়েছে। পুরোনো দুনিয়ার বিনাশ সম্মুখে উপস্থিত । নতুন দুনিয়ায় এক রাজ্য, এক
ভাষা ছিল। তাকে বলা হয় অদ্বৈত রাজ্য। এখন দ্বিতীয় কতকিছু হয়ে গেছে, বহু ভাষা রয়েছে।
যেমন মানুষের (কল্প) বৃক্ষ বৃদ্ধি পেতে থাকে তেমনই ভাষার বৃক্ষও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে
থাকে। পুনরায় হবে এক ভাষা। গায়নও রয়েছে, তাই না ! ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রী-জিওগ্রাফী
রিপিট হবে। মানুষের বুদ্ধিতে বসে না। বাবা-ই দুঃখের পুরোনো দুনিয়াকে পরিবর্তন করে
সুখের নতুন দুনিয়া স্থাপন করেন। লেখাও রয়েছে, প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা
দৈবী-দুনিয়ার স্থাপনা। এ হলো রাজযোগের পাঠ। এই জ্ঞান যা গীতায় লেখা রয়েছে, বাবা যা
সম্মুখে শুনিয়েছেন মানুষ বসে-বসে পুনরায় তা ভক্তিমার্গের জন্য লিখেছে, যার দ্বারা
তোমরা অধঃপতনে গেছো। এখন ভগবান তোমাদের পড়ান উপরে ওঠার জন্য। ভক্তিকে বলাই হয়
অবতরণ-কলার মার্গ। জ্ঞান হলো উত্তরণ-কলার মার্গ। একথা বোঝানোর সময় তোমরা ভয় পেয়ো
না। যদিও এমনও রয়েছে, যারা এসমস্ত কথা না বোঝার কারণে বিরোধিতা করবে, শাস্ত্রের কথা
বলবে। কিন্তু তোমাদের কারোর সঙ্গে শাস্ত্রালাপ করতে হবে না। বলো যে, শাস্ত্র, বেদ,
উপনিষদ বা গঙ্গা-স্নান করা, তীর্থাদি করা - এসব কান্ড হলো ভক্তির। ভারতে রাবণও
অবশ্যই ছিল, যার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়, অল্পকালের জন্য। একমাত্র এই রাবণেরই
কুশপুত্তলিকা প্রতিবর্ষে দাহ করে। বাবা বলেন - তোমরা গোল্ডেন এজেড বুদ্ধি থেকে
আয়রন এজেড বুদ্ধির হয়ে গেছো। তোমরা কতো সুখী ছিলে। বাবা আসেনই সুখধাম স্থাপন করতে।
পরে যখন ভক্তিমাগ শুরু হয় তখন দুঃখী হয়ে যায়। পুনরায় সুখদাতাকে স্মরণ করে, সেও
নামমাত্র কারণ তাঁকে জানেই না। গীতায় নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। সর্বপ্রথমে
তোমরা বোঝাও যে, সর্বোচ্চ ঈশ্বর হলেন অদ্বিতীয়, স্মরণও ওঁনাকেই স্মরণ করা উচিত।
একজনকে স্মরণ করাকেই অব্যভিচারী স্মরণ, অব্যভিচারী জ্ঞান।বলা হয়। তোমরা এখন
ব্রাহ্মণ হয়েছো তাই ভক্তি করো না। তোমাদের কাছে জ্ঞান রয়েছে। বাবা আমাদের পড়ান,
যারফলে আমরা দেবতা হয়ে যাই। দৈবী-গুণও ধারণ করতে হবে সেইজন্য বাবা বলেন - নিজের
চার্ট রাখো তবেই জানতে পারবে যে আমার মধ্যে কোনো আসুরিক-গুণ নেই তো! দেহ-অভিমান হলো
প্রথম অবগুণ, তারপরের শত্রু হলো কাম-বিকার। কাম-বিকারের উপর বিজয়প্রাপ্ত করলে তোমরা
জগৎজিত হয়ে যাবে। তোমাদের উদ্দেশ্যই এই, এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্যে অন্য কোনো ধর্ম
ছিল না। সত্যযুগে দেবতাদের রাজ্য থাকে, কলিযুগে থাকে মানুষের। যদিও তারাও মানুষ
কিন্তু দৈবী-গুণসম্পন্ন। এই সময় সকল মানুষই হলো আসুরিক-গুণসম্পন্ন। সত্যযুগে কাম
মহাশত্রু হয় না। বাবা বলেন - এই কাম মহাশত্রুর উপরে বিজয়প্রাপ্ত করলে তোমরা জগৎজিত
হয়ে যাবে। ওখানে রাবণ থাকে না। এও মানুষ বুঝতে পারে না। স্বর্ণযুগ থেকে নামতে-নামতে
তমোপ্রধান বুদ্ধি হয়ে গেছে। এখন পুনরায় সতোপ্রধান হতে হবে। তারজন্য একটাই ওষুধ
রয়েছে, বাবা বলেন - নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো তবেই তোমাদের
জন্ম-জন্মান্তরের পাপ ভস্মীভূত হয়ে যাবে। তোমরা বসেছো পাপ ভস্মীভূত করতে সেইজন্য
ভবিষ্যতে আর কোনো পাপ করা উচিত নয়। তা নাহলে তা শতগুণ হয়ে যাবে। বিকারে গেলে তো
শতগুণ দন্ডভোগ করতে হবে। তবে তারা মুশকিলই উত্তরণ করতে পারবে। প্রথম নম্বরের শত্রু
হলো এই কাম-বিকার। ৫ তলা থেকে পড়লে তখন হাড়গোড় সম্পূর্ণ ভেঙে যাবে। মারাও যেতে পারে।
উপর থেকে পড়লে একদম চুরমার হয়ে যায়। বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করে যদি মুখ কালো করে তবে
তারা তো অবশ্যই আসুরীয় দুনিয়ায় চলে গেছে। এখানে তারা মৃত। তাদের ব্রাহ্মণও নয়,
শূদ্র বলা হবে। বাবা কত সহজভাবে বোঝায়। প্রথমে সেই নেশা থাকতে হবে। যদি মনে করো
কৃষ্ণ ভগবানুবাচ হয়, সেও তো বুঝিয়ে নিজ-সম বানাবে, তাই না! কিন্তু কৃষ্ণ তো ভগবান
হতে পারে না। তিনি তো পুনর্জন্মে আসেন। বাবা বলেন - আমি পুনর্জন্ম রহিত। রাধা-কৃষ্ণ,
লক্ষ্মী-নারায়ণ অথবা বিষ্ণু একই ব্যাপার। বিষ্ণুর দুই-রূপ লক্ষ্মী-নারায়ণ আর
লক্ষ্মী-নারায়ণই শৈশবে রাধা-কৃষ্ণ। ব্রহ্মার-ও রহস্য বোঝান হয়েছে -
ব্রহ্মা-সরস্বতীই লক্ষ্মী-নারায়ণ। এখন ট্রান্সফার হয়। পরে এনার নাম ব্রহ্মা রাখা হয়।
দেখো, এছাড়া এই ব্রহ্মা তো আয়রন এজে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ইনিই পরে তপস্যা করে কৃষ্ণ বা
শ্রী নারায়ণ হন। বিষ্ণু বললে তাতে দুজনেই এসে যায়। ব্রহ্মার কন্যা সরস্বতী। এ'কথা
কেউ বুঝতে পারে না। চারভূজা বিষ্ণুকেও দেওয়া হয় কারণ তিনি প্রবৃত্তিমার্গীয়, তাই
না! নিবৃত্তি-মার্গীয়রা এই জ্ঞান প্রদান করতে পারে না। অনেককে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে আসে
যে, চলো আমরা প্রাচীন রাজযোগ শেখাব। এখন সন্ন্যাসীরা তো রাজযোগ শেখাতে পারে না। এখন
ঈশ্বর এসেছেন, তোমরা এখন ওনার সন্তান ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়ের হয়েছো। ঈশ্বর এসেছেন
তোমাদের পড়াতে। তোমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছেন। তিনি নিরাকার। ব্রহ্মার দ্বারা তোমাদের
আপন করে নিয়েছেন। তোমরা 'বাবা-বাবা' ওনাকেই বলো, ব্রহ্মা তো এরমাঝে দোভাষী।
ভাগ্যশালী রথ। এনার দ্বারা বাবা তোমাদের পড়ান। তোমরাও পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাও।
বাবা পড়ান - মানব থেকে দেবতা বানানোর জন্য। এখন তো রাবণ-রাজ্য, আসুরী-সম্প্রদায়,
তাই না ! এখন তোমরা ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়ের হয়েছো পুনরায় দৈবী-সম্প্রদায়ের হবে। এখন
তোমরা পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে রয়েছো, পবিত্র হতে চলেছো। সন্ন্যাসীরা তো ঘর-পরিবার
ত্যাগ করে চলে যায়। এখানে বাবা বলেন - যদিও স্ত্রী-পুরুষ ঘরে একত্রে থাকো, তথাপি
এমন ভেবোনা যে স্ত্রী নাগিনী, তাই আমি আলাদা হয়ে যাই তাহলেই মুক্তি পেয়ে যাব।
তোমাদের পালিয়ে যেতে হবে না। ওটা হলো পার্থিব জগতের সন্ন্যাস, যেখানে (ঘর থেকে)
পালিয়ে যায়। তোমরা এখানে বসে রয়েছো কিন্তু তোমাদের এই বিকারী দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য
রয়েছে। এ'সমস্ত কথা তোমাদের ভালোভাবে ধারণ করতে হবে, নোট করতে হবে, সংযমও রাখতে হবে।
দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে। শ্রীকৃষ্ণের গুণ গাওয়া হয়, তাই না! এটাই তোমাদের এইম
অবজেক্ট। বাবা হন না, আমাদের বানান। পুনরায় আধাকল্প পরে তোমরা অধঃপতনে যাও,
তমোপ্রধান হয়ে যাও। আমি হই না, ইনি(ব্রহ্মা) হন। ৮৪ জন্মও ইনি নিয়েছেন। এনাকেও
সতোপ্রধান হতে হবে, ইনিও পুরুষার্থী। নতুন দুনিয়াকে সতোপ্রধান বলা হবে। প্রত্যেক
বস্তু প্রথমে সতোপ্রধান, পুনরায় সতঃ-রজঃ-তমঃতে আসে। ছোট শিশুদেরও মহাত্মা বলা হয়।
কারণ তাদের মধ্যে বিকার থাকে না, তাই তাদের ফুল বলা হয়। সন্ন্যাসীদের থেকেও ছোট্ট
শিশুদের উত্তম বলা হয় কারণ সন্ন্যাসীরা তো জীবন অতিবাহিত করে আসে, তাই না ! ৫
বিকারের অনুভব রয়েছে। শিশুদের তো এসব জানাই থাকে না তাই তাদের দেখলে আনন্দ হয়, তারা
তো চৈতন্য ফুল। আমাদের এটা হলোই প্রবৃত্তিমার্গ। বাচ্চারা, এখন তোমাদের এই পুরানো
দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে। অমরলোকে যাওয়ার জন্য তোমরা এখন পুরুষার্থ করছো,
মৃত্যুলোক থেকে ট্রান্সফার হয়ে যাও। যদি দেবতা হতে হয় তবে এখন পরিশ্রম করতে হবে,
তোমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান ভাই-বোন হয়ে যাও। ভাই-বোনই তো ছিলে, তাই না!
প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান তাহলে পরস্পর কি হয়ে গেলে? প্রজাপিতা ব্রহ্মা বলা হয়।
যতক্ষণ পর্যন্ত প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান না হচ্ছো, সৃষ্টির রচনা কিভাবে হবে?
সকলেই হলো প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান। ওই ব্রাহ্মণেরা হলো দেহজ যাত্রী । তোমরা হলো
আধ্যাত্মিক যাত্রী। ওরা পতিত, তোমরা পবিত্র। ওরা কেউ প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান নয়।
একথা তোমরা বোঝ। যখন ভাই-বোন মনে করবে তখন আর বিকারে যাবে না। বাবাও বলেন, সতর্ক
থাকো, আমার সন্তান হয়ে কোনো ক্রিমিনাল কার্য ক'রো না, তা নাহলে
প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে যাবে। ইন্দ্রসভার গল্পও রয়েছে, শূদ্রকে নিয়ে আসায়
ইন্দ্রসভায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তখন জিজ্ঞাসা করা হয় যে, পতিতকে এখানে কেন আনা হয়েছে?
তখন তাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে। বাস্তবে এই সভায় কোনো অপবিত্র আসতে পারে না। যদিও বাবা
জানুক বা না জানুক, এ তো নিজেরই ক্ষতি করে ফেলা, আরও শতগুণ দন্ডভোগ করতে হবে।
অপবিত্রদের অনুমতি নেই। তাদের জন্য ভিজিটিং রুমই ঠিক। যখন পবিত্র হওয়ার গ্যারান্টি
করবে, দৈবগুণ ধারণ করবে তখন অনুমতি পাবে। দৈবগুণ ধারণ করতে সময় লাগে। পবিত্র হওয়ার
একটাই প্রতিজ্ঞা। এও বোঝানো হয় - দেবতাদের আর পরমাত্মার মহিমা আলাদা আলাদা রকমের।
পতিত-পাবন, মুক্তিদাতা, গাইড হলেন একমাত্র বাবা-ই। সর্বপ্রকারের দুঃখ থেকে মুক্ত করে
নিজের শান্তিধামে নিয়ে যায়। শান্তিধাম, সুখধাম আর দুঃখধাম - এও এক চক্র। এখন
দুঃখধামকে ভুলে যেতে হবে। শান্তিধাম থেকে সুখধামে তারাই আসবে যারা নম্বরের
ক্রমানুসারে উত্তীর্ণ হবে, তারাই আসতে থাকবে। এই চক্র আবর্তিত হতেই থাকে। অসংখ্য
আত্মা রয়েছে, সকলের নম্বরের অনুক্রমে পার্ট রয়েছে। যাবেও নম্বরের অনুক্রমে। তাকে বলা
হয় শিববাবার বরযাত্রী বা রুদ্রমালা। নম্বরের ক্রমানুসারে যায় আবার নম্বরের
অনুক্রমেই আসে। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও এমনই হয়। বাচ্চাদের রোজ বোঝান হয়,
স্কুলে রোজ পড়বে না, মুরলী শুনবে না, তাহলে পরে অ্যাবসেন্ট হয়ে যাবে। পড়ার লিস্ট তো
অবশ্যই চাই। গডলী ইউনিভার্সিটিতে অ্যাবসেন্ট হওয়া উচিত কি, না তা হওয়া উচিত নয়। এই
পড়া কত উচ্চমার্গের, যার দ্বারা তোমরা সুখধামের মালিক হয়ে যাও। ওখানে আনাজপাতি সবই
ফ্রী, পয়সা লাগেনা। এখন তো কত দাম। ১০০ বছরে কত দাম হয়ে গেছে। ওখানে কোনও বস্তুর
অপ্রাপ্তি নেই যারজন্য অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে। ওটা হলোই সুখধাম। এখন তোমরা
সেখানকার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছো। তোমরা বেগার টু প্রিন্স হয়ে যাও। ধনবানেরা নিজেদের
বেগার (ভিখারী) মনে করে না। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার কাছে সম্পূর্ণ পবিত্র হওয়ার যে প্রতিজ্ঞা করেছো, তা ভঙ্গ ক'রো না। অনেক-অনেক
সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। নিজের চার্ট দেখতে হবে - আমাদের মধ্যে কোনো অবগুণ নেই
তো?
২ ) গডলী
ইউনিভার্সিটিতে কখনো অ্যাবসেন্ট থাকবে না। সুখধামের মালিক হওয়ার উচ্চ পাঠ একদিনও
মিস করা উচিত নয়। মুরলী রোজ অবশ্যই শুনতে হবে।
বরদান:-
দুঃখধাম - প্রতিটি সেকেন্ড প্রতিটি সংকল্পের মহত্বকে জেনে পুণ্যের পুঁজি জমা কারী
পদ্মাপদমপতি ভব
তোমাদের পূণ্য
আত্মাদের সংকল্পে এত বিশেষ শক্তি আছে, যে শক্তির দ্বারা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারো।
যেরকম আজকাল যন্ত্রের দ্বারা মরুভূমিতেও বৃক্ষরোপন করছে, পাহাড়েও ফুল উৎপাদন করছে,
এইরকম তোমরা নিজের শ্রেষ্ঠ সংকল্পের দ্বারা হতাশাগ্রস্ত মানুষের মধ্যে আশার আলো
জাগিয়ে তুলতে পারো। কেবল প্রত্যেক সেকেন্ড প্রত্যেক সংকল্পের ভ্যালুকে জেনে, সংকল্প
আর সেকেন্ডকে ইউজ করে পূণ্যের পুঁজি জমা করো। তোমাদের সংকল্প শক্তি এতই শ্রেষ্ঠ যে
একটা সংকল্পই পদ্মাপদমপতি বানিয়ে দিতে পারে।
স্লোগান:-
সকল
কর্ম অধিকারের নিশ্চয় আর নেশায় থেকে করো তাহলে পরিশ্রম সমাপ্ত হয়ে যাবে।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও
কর্মাতীত স্থিতিকে
পাওয়ার জন্য বিশেষ নিজের মধ্যে গুটিয়ে ফেলার শক্তি আর সমাহিত করার শক্তি ধারণ করা
অত্যন্ত আবশ্যক। কর্মবন্ধনী আত্মারা যেখানে থাকে সেখানেই কার্য করতে পারে আর
কর্মাতীত আত্মারা একই সময়ে চারিদিকে নিজের সেবার পার্ট প্লে করতে পারে কেননা তারা
কর্মাতীত স্থিতিতে থাকে। তাদের স্পিড খুবই তেজগতী হয়। সেকেন্ডে যেখানে চায়, সেখানে
পৌঁছাতে পারে, তো এই অনুভূতিকে বাড়াও।