28.04.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের ভালোবাসা বিনাশী শরীরের প্রতি থাকা উচিত নয়, একমাত্র বিদেহীকে ভালোবাসো,
দেহকে দেখেও দেখো না"
প্রশ্নঃ -
বুদ্ধিকে
স্বচ্ছ করার পুরুষার্থ কি? স্বচ্ছ বুদ্ধির লক্ষণ কি?
উত্তরঃ
দেহী-অভিমানী
হলেই বুদ্ধি স্বচ্ছ হয়। এমন দেহী-অভিমানী বাচ্চারা নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে একমাত্র
বাবাকে ভালোবাসবে। বাবার কথাই শুনবে। কিন্তু যারা বুদ্ধিহীন হয় তারা দেহকে ভালোবাসে,
দেহেরই শৃঙ্গার করে।
ওম্ শান্তি ।
ওম্ শান্তি কে
বললো এবং কারা শুনলো? অন্য সৎসঙ্গে কৌতূহলী ভক্তরা শোনে। মহাত্মা বা গুরু ইত্যাদিরা
বলেন, এমন বলা হবে। এখানে পরমাত্মা বলেন এবং আত্মারা শোনে। নতুন কথা তাইনা।
দেহী-অভিমানী হতে হবে। অনেকে এখানেও দেহ-অভিমানী হয়ে বসে। বাচ্চারা, তোমাদের
দেহী-অভিমানী হয়ে বসা উচিত। আমি আত্মা এই শরীরে বিরাজমান। শিববাবা আমাদের বোঝান, এই
কথা বুদ্ধিতে ভালো ভাবে স্মরণ থাকা উচিত। আমি আত্মা আমার কানেকশন হল পরমাত্মার সঙ্গে।
পরমাত্মা এসে এই শরীরের দ্বারা জ্ঞান দান করেন, সুতরাং ইনি হলেন মাধ্যম। তোমাদের
বোঝান উনি (শিববাবা)। এনাকেও (ব্রহ্মা বাবাকেও) অবিনাশী উত্তরাধিকার শিববাবাই দেন।
অতএব বুদ্ধি শিববাবার দিকে থাকা উচিত। কোনও পিতার ৫-৭ টি সন্তান থাকলে তাদের
বুদ্ধিযোগ পিতার দিকে থাকবে তাইনা কারণ পিতার কাছে লৌকিক উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়।
ভাইয়ের কাছে উত্তরাধিকার প্রাপ্তি হয় না। সর্বদা পিতার কাছে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়।
আত্মা, আত্মার কাছে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে না। তোমরা জানো আত্মা রূপে আমরা সবাই
হলাম ভাই-ভাই। আমরা সবাই আত্মা আমাদের সবার কানেকশন এক পরমপিতা পরমাত্মার সঙ্গেই আছে।
তিনি বলেন, "মামেকম্ স্মরণ করো" । একমাত্র আমার সঙ্গে প্রীতি রাখো। রচনার সঙ্গে নয়।
দেহী-অভিমানী হও। আমি ছাড়া অন্য কোনও দেহধারীকে স্মরণ করলে বলা হয় দেহ-অভিমান। যদিও
এই দেহধারী অর্থাৎ ব্রহ্মাবাবা তোমাদের সামনে আছেন কিন্তু তোমরা এনাকে দেখবে না।
বুদ্ধিতে শিববাবার স্মৃতি থাকা উচিত। তারা তো শুধুমাত্র বলতে হয় তাই ভাই-ভাই বলে,
এখন তোমরা জানো আমরা হলাম আত্মা পরমপিতা পরমাত্মার সন্তান। অবিনাশী উত্তরাধিকার
পরমাত্মা পিতার কাছে প্রাপ্ত হয়। তিনি আমাদের পিতা, তিনি বলেন তোমাদের ভালোবাসা
একমাত্র আমার সঙ্গে থাকা উচিত। আমি নিজে এসে নিজের সঙ্গে তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পূর্বে আশীর্বাদ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করি। কোনও দেহধারীর
সঙ্গে আশীর্বাদ নয়। অন্য সব সম্বন্ধ গুলি হলো দেহের, এখানকার সম্বন্ধ। এইসময়
তোমাদের দেহী-অভিমানী হতে হবে। আমরা আত্মারা বাবার কাছে জ্ঞান প্রাপ্ত করি, বুদ্ধি
বাবার দিকে থাকা উচিত। শিববাবা এনার (ব্রহ্মা বাবার) পাশে বসে আমাদের জ্ঞান প্রদান
করেন। তিনি এই তন লোনে নিয়েছেন। আত্মা এই শরীর রুপী ঘরে এসে পার্ট প্লে করে। যেমন
করে তারা নিজেদের আন্ডার-হাউস আ্যরেস্ট করায় - পার্ট প্লে করার জন্য। সবই হলো ফ্রী।
কিন্তু এতে প্রবেশ করে নিজেকে এই ঘরে বন্ধ করে পার্ট প্লে করে। আত্মা-ই এক শরীর ছেড়ে
অন্য শরীরে প্রবেশ করে পার্ট প্লে করে। এই সময় যে যতখানি দেহী-অভিমানী স্থিতিতে
থাকবে উঁচু পদের অধিকারী হবে। বাবার শরীরেও তোমাদের ভালোবাসা থাকা উচিত নয়, একটুও
নয়। এই শরীর তো কোনো কাজের নয়। আমি এই শরীরে প্রবেশ করি, শুধুমাত্র তোমাদের বোঝানোর
জন্য। এটা হলো রাবণের রাজ্য, অন্যের দেশ। রাবণকে দাহ করে কিন্তু বোঝে না কিছু।
চিত্র ইত্যাদি যা কিছু তৈরি করে, সে বিষয়ে কিছু জানে না। একেবারেই বুদ্ধিহীন। রাবণ
রাজ্যে সবাই বুদ্ধিহীন হয়ে যায়। দেহ-অভিমান থাকে তাইনা। তুচ্ছ বুদ্ধি হয়ে গেছে। বাবা
বলেন যারা বুদ্ধিহীন হবে তারা দেহকে স্মরণ করবে, দেহকে ভালোবাসবে। স্বচ্ছ বুদ্ধি
যারা হবে তারা তো নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে পরমাত্মাকে স্মরণ করবে পরমাত্মার কথা
শুনবে, এতেই সব পরিশ্রম লাগে। এই ব্রহ্মা হলেন শিববাবার রথ। অনেকের তো ব্রহ্মার সাথে
ভালোবাসা থাকে। যেমন হুসেনের ঘোড়া, তাকে কত সাজানো হয়। যদিও মহিমা তো হুসেনের তাইনা।
ঘোড়ার তো নয়। নিশ্চয়ই মানুষের দেহে হুসেনের আত্মা প্রবেশ করে তাইনা। তারা এই কথা
গুলি বোঝে না। এখন একেই বলা হয় রাজস্ব অশ্বমেধ অবিনাশী রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ। অশ্ব নাম
শুনে তারা ঘোড়া ভেবে নিয়েছে, তারই বলিদান করে। এইসব কাহিনী হল ভক্তি মার্গের। যে
যাত্রী এখন তোমাদের সুন্দর করেন, তিনি হলেন শিববাবা।
এখন তোমরা জানো আমরা
প্রথমে গৌর বর্ণ ছিলাম পরে শ্যাম বর্ণে পরিণত হয়েছি। যে আত্মারা প্রথমে এসেছে তারা
প্রথমে থাকে সতোপ্রধান তারপরে সতঃ, রজঃ, তমঃ স্থিতিতে আসে। বাবা এসে সবাইকে সুন্দর
করেন। যারা ধর্ম স্থাপনের জন্য আসে, তারা সবাই হল সুন্দর আত্মা, পরে কাম চিতায় বসে
কালো হয়। প্রথমে সুন্দর পরে শ্যাম হয়। ব্রহ্মা সর্ব প্রথমে এক নম্বরে আসেন তাই
সবচেয়ে বেশি সুন্দর হন। এই (লক্ষ্মী-নারায়ণ) এর মতন ন্যাচারাল সুন্দর তো কেউ হয় না।
এই হল জ্ঞানের কথা। যদিও খ্রিস্টানরা ভারতীয়দের চেয়ে ফর্সা কারণ ওইদিকের নিবাসী
কিন্তু সত্যযুগে তো ন্যাচারাল বিউটি থাকে। আত্মা ও শরীর দুই-ই সুন্দর থাকে। এইসময়
সবাই পতিত শ্যামবর্ণ হয়েছে তাই বাবা এসে সবাইকে সুন্দর করেন। প্রথমে সতোপ্রধান
পবিত্র থাকে তারপরে নামতে-নামতে কাম চিতায় বসে কালো হয়ে যায়। এখন বাবা এসেছেন সকল
আত্মাদের পবিত্র করতে। বাবাকে স্মরণ করলেই তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। সুতরাং স্মরণ করতে
হবে একজনকেই। দেহধারীর সঙ্গে প্রীতি রাখবে না। বুদ্ধিতে এই কথা যেন থাকে যে আমরা এক
পিতার সন্তান, তিনি হলেন সব। এই চোখ দিয়ে যারা দৃশ্যমান, সেসব বিনাশ হয়ে যাবে। এই
চোখ দুটিও শেষ হয়ে যাবে। পরমপিতা পরমাত্মাকে তো ত্রিনেত্রী বলা হয়। তাঁর আছে
জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র। ত্রিনেত্রী, ত্রিকালদর্শী, ত্রিলোকীনাথ এই টাইটেল তাঁকেই দেওয়া
হয়। এখন তোমাদের ত্রি-লোকের জ্ঞান আছে পরে এই জ্ঞান লুপ্ত হয়ে যায়, যাঁর জ্ঞান থাকে
তিনি এসে আবার প্রদান করেন। বাবা তোমাদের ৮৪ জন্মের কাহিনী শোনান। বাবা বলেন নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করো। আমি এই শরীরে প্রবেশ করে এসেছি তোমাদের পবিত্র করতে। আমাকে স্মরণ
করলেই পবিত্র হবে অন্য কাউকে স্মরণ করলে সতোপ্রধান হতে পারবে না। পাপ বিনষ্ট না হলে
বলা হবে বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি বিনশন্তি। মানুষ তো অন্ধশ্রদ্ধায় আছে। দেহধারীদের
প্রতি মোহে আচ্ছন্ন থাকে। এখন তোমাদের দেহী-অভিমানী হতে হবে। একের প্রতি মোহ রাখতে
হবে। অন্য কারো প্রতি মোহ থাকলে বলা হবে বাবার প্রতি বিপরীত বুদ্ধি। বাবা কত বোঝান
আমি পিতা আমাকেই স্মরণ করো, এতেই পরিশ্রম লাগে। তোমরাও বলো আমরা পতিত হয়েছি এসে
আমাদের পবিত্র করো। একমাত্র বাবা পবিত্র করেন। বাচ্চারা, একমাত্র বাবা তোমাদেরকে ৮৪
জন্মের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি বোঝান। সেসব তো সহজ তাইনা। যদিও স্মরণ করার বিষয়টি হল
সবচেয়ে কঠিন বিষয়। বাবার সঙ্গে যোগ যুক্ত হতে কেউ বুদ্ধিমান নয়।
যে আত্মা বাচ্চারা
স্মরণে তীক্ষ্ণ নয় তারা হল পন্ডিত। জ্ঞানে যতই তীক্ষ্ণ থাকুক যদি স্মরণ করতে না পারে
তাহলে তো হল পন্ডিত। বাবা পন্ডিতের একটি কাহিনী শোনান। যাকে শোনানো হয় সে তো
পরমাত্মাকে স্মরণ করে পার হয়ে যায়। পন্ডিতের দৃষ্টান্ত তোমাদের জন্য। বাবাকে তোমরা
স্মরণ করলে ভবসাগর পার হয়ে যাবে। শুধু মুরলীতে তীক্ষ্ণ হলে পার হতে পারবে না। স্মরণ
ব্যতীত বিকর্ম বিনাশ হবে না। এই সব দৃষ্টান্ত বসে তৈরি করা হয়েছে। বাবা বসে যথার্থ
রীতি বোঝান। এই কথায় দৃঢ় নিশ্চয় হয়েছে। একটি কথা ধরে রেখেছে যে পরমাত্মাকে স্মরণ
করলে পার হয়ে যাব। শুধু জ্ঞান থাকবে, যোগ নয় তো উঁচু পদের অধিকারী হতে পারবে না।
এমন অনেকে আছে, স্মরণে থাকে না, মুখ্য কথা হলো স্মরণের। খুব ভালো সার্ভিসেবল
বাচ্চারা রয়েছে, কিন্তু বুদ্ধিযোগ ঠিক না থাকলে আটকে যাবে। যোগী কখনও দেহ-অভিমানে
আটকাবে না, অশুদ্ধ সঙ্কল্প মনে আনবে না। স্মরণে কাঁচা থাকলে সংকল্পের ঝড় আসবে।
যোগের দ্বারা কর্মেন্দ্রিয় গুলি বশে থাকে। বাবা রাইট ও রং বোঝার বুদ্ধি তো দিয়েছেন।
অন্যদের দেহের প্রতি বুদ্ধি গেলে বিপরীত বুদ্ধি বিনশন্তি হয়ে যাবে। জ্ঞান ও যোগ দুই
- ই হলো পৃথক। যোগের দ্বারা হেল্থ, জ্ঞানের দ্বারা ওয়েলথ প্রাপ্ত হয়। যোগের দ্বারা
শরীরের আয়ু বৃদ্ধি পায়, আত্মা তো ছোট-বড় হয় না। আত্মা বলে আমার শরীরের আয়ু বাড়ে।
এখন আয়ু কম পরে অর্ধকল্পের জন্য শরীরের আয়ু বেড়ে যাবে। আমরা তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হয়ে যাবো। আত্মা পবিত্র হয়, সম্পূর্ণ টা নির্ভর করছে আত্মাকে পবিত্র করার
পুরুষার্থে। পবিত্র না হলে পদ মর্যাদাও প্রাপ্ত হবে না।
মায়া বাচ্চাদের চার্ট
রাখতে অলস করে দেয়। স্মরণের যাত্রার চার্ট বাচ্চাদের শখের বশে রাখা উচিত। দেখা উচিত
আমরা বাবাকে স্মরণ করি নাকি কোনও মিত্র আত্মীয় স্বজনের দিকে বুদ্ধি যায়। সারা দিন
কাকে স্মরণ করি অথবা প্রীতি কার দিকে ছিল, সময় কতখানি নষ্ট হল? সবের চার্ট রাখা
উচিত। কিন্তু কারো এত শক্তি নেই যে নিজের চার্ট রেগুলার রাখবে। কেউ কেউ বিশেষ থাকে
তারা রাখে। মায়া পুরো চার্ট রাখতে দেয় না। অলস করে দেয়। স্ফূর্তি উৎসাহ শেষ হয়ে যায়।
বাবা বলেন, "মামেকম্ স্মরণ করো" । আমি তো সকল প্রেমিকাদের প্রেমিক। সুতরাং প্রেমিককে
স্মরণ করা উচিত তাইনা। প্রেমিক শিবপিতা বলেন তোমরা অর্ধকল্প স্মরণ করেছ, এখন আমি
বলছি আমাকে স্মরণ করো তো বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। এমন পিতা যিনি সুখ প্রদান করেন,
তাঁকে কতখানি স্মরণ করা উচিত। অন্যরা সবাই তো দুঃখ দিয়ে থাকে। কেউ কাজে আসবে না।
শেষ সময় একমাত্র পরমাত্মা বাবাই কাজে লাগেন। শেষ সময় এক হয় দৈহিক বা সীমিত, আরেক হয়
আত্মিক বা অসীম।
বাবা বোঝান ভালো ভাবে
স্মরণ করতে থাকলে অকালে মৃত্যু হবে না। তোমাকে অমর করি। সর্বপ্রথম বাবার সঙ্গে
প্রীত বুদ্ধি চাই। কারো শরীরের প্রতি প্রীতি থাকলে পতন হবে। ফেল হয়ে যাবে।
চন্দ্রবংশী হবে। স্বর্গ সত্যযুগী সূর্যবংশী রাজ্যকে বলা হয়। ত্রেতা-কে স্বর্গ বলা
হবে না। যেমন দ্বাপর এবং কলিযুগ আছে তো কলিযুগকে ঘোর নরক, তমোপ্রধান বলা হয়।
দ্বাপরকে এতটা বলা হবে না তবে তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হওয়ার জন্য স্মরণ করতে হবে।
নিজেরাও বুঝতে পারো আমাদের অমুকের প্রতি প্রীতি আছে, তার আধার না থাকলে আমার কল্যাণ
হবে না। এবার এইরূপ স্থিতিতে যদি মৃত্যু হয় তাহলে কি হবে। বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি
বিনশন্তি। ধুলোছাই পদ (নগন্য পদ) মর্যাদা প্রাপ্ত হবে।
আজকাল দুনিয়ায়
ফ্যাশান একটি বড় বিপদ। নিজেকে ভালোবাসার দরুন শরীরকে টিপটপ করে। এখন বাবা বলেন
বাচ্চারা কারো নাম-রূপে আটকে যেও না। লক্ষ্মী-নারায়ণের ড্রেস দেখো কতখানি রয়্যাল।
ওই হল শিবালয়, এই হল বেশ্যালয়। মানুষ এই দেবতাদের সামনে দাঁড়িয়ে বলে আমরা বেশ্যালয়ে
আছি। আজকাল তো ফ্যাশানের বিপদ আছে, সবার দৃষ্টি যায়, তারপর হরণ করে। সত্যযুগে তো
নিয়ম অনুযায়ী আচরণ থাকে। সেখানে তো ন্যাচারাল বিউটি থাকে, তাইনা। অন্ধশ্রদ্ধার কোনো
কথা নেই। এখানে মাত্র চোখের দেখায় আকৃষ্ট হয়ে অন্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে বিবাহ
সম্পন্ন হয়। এখন তোমাদের হলো ঈশ্বরীয় বুদ্ধি, পাথরবুদ্ধি থেকে পরশবুদ্ধি বাবা
ব্যতীত কেউ করতে পারে না। ওই হল রাবণ সম্প্রদায়। তোমরা এখন রাম সম্প্রদায় হয়েছো।
পাণ্ডব ও কৌরব একই সম্প্রদায়ের ছিল, যাদব হল ইউরোপবাসী। গীতা পাঠ করে কেউ বোঝে না
যাদব হল ইউরোপবাসী। তারা তো যাদব সম্প্রদায়কেও এখানেই বলে দেয়। বাবা বসে বোঝান,
যাদব হল ইউরোপবাসী, যারা নিজেদের বিনাশের জন্য এই মিসাইল ইত্যাদি তৈরি করেছে।
পাণ্ডবদের বিজয় হয়, তারা গিয়ে স্বর্গের মালিক হবে। পরমাত্মা এসে স্বর্গের স্থাপনা
করেন। শাস্ত্রে দেখানো হয়েছে পাণ্ডব গলে মরেছে তারপর কি হয়েছে? কিছুই জানে না। পাথর
বুদ্ধি কিনা। ড্রামার রহস্য একটুও জানে না। বাবার কাছে বাচ্চারা আসে, যদিও তাদের বলা
হয় অলঙ্কার ইত্যাদি পরো। তারা বলে বাবা এখানে অলঙ্কার শোভনীয় নয়! পতিত আত্মা, পতিত
শরীরে অলঙ্কার কীভাবে শোভনীয় হবে! সেখানে তো আমরা এই অলঙ্কারে সজ্জিত থাকবো।
অপরিসীম ধন থাকে। সবাই সুখী থাকে। যদিও সেখানে জ্ঞান থাকে ইনি রাজা, আমরা প্রজা।
কিন্তু দুঃখ থাকে না। এখানে আনাজ ইত্যাদি পাওয়া যায় না তখন মানুষ কত দুঃখে থাকে।
সেখানে তো সবকিছু পাওয়া যায়। দুঃখ বলে কিছু থাকে না। নামটাই হলো স্বর্গ। ইউরোপবাসী
তাকে প্যারাডাইজ বলে। তারা ভাবে গড-গডেজ অর্থাৎ দেব-দেবীরা সেখানে থাকতো তাই তাদের
চিত্র কিনে রাখে। কিন্তু সেই স্বর্গ কোথায় গেলো - সেই জ্ঞান কারো নেই। এখন তোমরা
জানো এই চক্র কীভাবে ঘুরপাক খায়। নতুন হয় পুরানো, পুরানো আবার হয় নতুন। দেহী-অভিমানী
হতেই পরিশ্রম লাগে। তোমরা দেহী-অভিমানী হলে এই অনেক রোগ ইত্যাদি থেকে মুক্ত হবে।
বাবাকে স্মরণ করলে উঁচু পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করবে। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কোনও দেহধারীকে নিজের আধার বানাবে না। শরীরের প্রতি প্রীতি রাখবে না। মনের ভালোবাসা
একমাত্র বাবার প্রতি রাখতে হবে। কারো নাম-রূপ দেখে আটকে পড়বে না।
২ ) স্মরণের চার্ট শখ
করে রাখতে হবে, এই চার্ট লেখায় আলস্য করবে না। চার্টে দেখতে হবে - আমার বুদ্ধি কোন্
দিকে যায়? কত সময় নষ্ট হয় ? সুখ প্রদানকারী বাবার স্মরণ কতক্ষণ থাকে ?
বরদান:-
গৃহস্থ
ব্যবহার আর ঈশ্বরীয় ব্যবহার, দুয়ের মধ্যে সমতার দ্বারা সদা হাল্কা আর সফল ভব
সকল বাচ্চাদের শরীর
নির্বাহ আর আত্ম নির্বাহের ডবল সেবা প্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু দুটো সেবাতেই সময়ের,
শক্তির সমান অ্যাটেনশন চাই। যদি শ্রীমতের কাঁটা ঠিক থাকে তাহলে দুটো সাইড সমান হবে।
কিন্তু গৃহস্থ শব্দ বলতেই গৃহস্থী হয়ে যাও, এইজন্য গৃহস্থী নয়, ট্রাস্টি আছি, এই
স্মৃতির দ্বারা গৃহস্থ ব্যবহার আর ঈশ্বরীয় ব্যবহার দুটোতেই সমতা রাখো তাহলে সদা
হালকা আর সফল থাকবে।
স্লোগান:-
ফার্স্ট ডিভিশনে আসার জন্য কর্মেন্দ্রিয়জিৎ, মায়াজিৎ হও।
অব্যক্ত ঈশারা :-
“কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”
তোমাদের শিবশক্তি
কম্বাইন্ড রূপের স্মরণিক সদা পূজিত হয়। শক্তি শিবের থেকে আলাদা নয়, শিব শক্তিদের
থেকে আলাদা নয়। এইরকম কম্বাইন্ড রূপে থাকো, এই স্বরূপকেই সহজযোগী বলা হয়। যোগ লাগানো
আত্মা নয়, সদা কম্বাইন্ড অর্থাৎ সাথে থাকা আত্মা। যে প্রতিজ্ঞা করেছিলে যে সাথে
থাকবো, একসাথে রাজত্ব করবো, একসাথে ফিরে যাবো... এই প্রতিজ্ঞা পাক্কা স্মরণে রাখো।