28-12-2025 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 18-03-2008 মধুবন


‘‘কারণ শব্দকে নিবারণে পরিবর্তিত করে মাস্টার মুক্তিদাতা হও, সবাইকে বাবার সঙ্গের রং লাগিয়ে সমান হওয়ার হোলি উদযাপন করো"


আজ সর্ব ভাণ্ডারের মালিক বাপদাদা ভাণ্ডারে সম্পন্ন তাঁর বাচ্চাদের চতুর্দিকে দেখছেন। প্রত্যেক বাচ্চার ভাণ্ডারে কত জমা হয়েছে, সেটা দেখে প্রফুল্লিত হচ্ছেন। ভাণ্ডার তো সবার একই সময়ে একই রকম প্রাপ্ত হয়েছে, তবুও জমার খাতা সব বাচ্চারই আলাদা আলাদা। কেননা, সময় অনুসারে এখন বাপদাদা সব বাচ্চাকে সর্ব ভাণ্ডারে সম্পন্ন দেখতে চান। কেননা, এই ভাণ্ডার শুধু এখন এক জন্মের জন্য নয়, এই অবিনাশী ভাণ্ডার অনেক জন্ম সাথে থাকবে। এই সময়ের সমূহ ভাণ্ডারকে তোমরা বাচ্চারা তো সবাই জানই। বাপদাদা কী কী ভাণ্ডার দিয়েছেন, বলার সাথে সাথেই তা' সবার সামনে এসে গেছে। সবার সামনে ভাণ্ডারের লিস্ট ইমার্জ হয়ে গেছে তো না! কেননা, বাপদাদা আগেই বলেছেন যে ভাণ্ডার তো প্রাপ্ত হয়েছে, কিন্তু জমা করার বিধি কী? যে যতটা নিমিত্ত আর নির্মান (নিরহংকার) হয় ততই ভাণ্ডার জমা হয়।

সুতরাং চেক করো - নিমিত্ত আর নির্মান হওয়ার বিধির দ্বারা আমার খাতায় কত ভাণ্ডার জমা হয়েছে! ভাণ্ডার যত জমা হবে, পরিপূর্ণ হবে তার আচার আচরণ এবং মুখমণ্ডল দ্বারা পরিপূর্ণ আত্মার আধ্যাত্মিক নেশা আপনা থেকেই প্রতীয়মান হবে। তার মুখমণ্ডলে সদা আধ্যাত্মিক নেশা বা গৌরব দীপ্তিময় হয়, তাছাড়া অধ্যাত্ম গৌরব অর্থাৎ অধ্যাত্ম নেশা নিশ্চিন্ত বাদশাহর লক্ষণ।তো নিজেকে চেক করো - আমার আচরণে এবং মুখমণ্ডলে নিশ্চিন্ত বাদশাহর নিশ্চয় আর নেশা আছে? দর্পণ সবাই পেয়েছ তো না! তো হৃদয়ের দর্পণে নিজের মুখমণ্ডল চেক করো। কোনো রকমের চিন্তা নেই তো! কী হবে! এটা হবে না তো! কোনও সঙ্কল্প থেকে যায়নি তো? নিশ্চিন্ত বাদশাহর সঙ্কল্প এটাই হবে যা হচ্ছে তা' খুব ভালো আর যা হওয়ার আছে তা' আরও ভালো থেকে ভালো হবে। একে বলা হয়ে থাকে দিব্য গরিমা অর্থাৎ স্বমানধারী আত্মা। যারা যত বিনাশী ধন উপার্জন করে সময় অনুসারে অতটাই দুশ্চিন্তায় থাকে। তোমাদের নিজেদের ঈশ্বরীয় ভাণ্ডারের জন্য চিন্তা আছে? তোমরা নিশ্চিন্ত, তাই না! কেননা, যারা ভাণ্ডারের মালিক আর পরমাত্ম বালক তারা সদাসর্বদা স্বপ্নেও নিশ্চিন্ত বাদশাহ। কেননা, তাদের নিশ্চয় আছে, এই ঈশ্বরীয় ভাণ্ডার কেবল এই জন্মে নয়, বরং অনেক জন্ম সাথে আছে, সাথে থাকবে। সেইজন্য তারা নিশ্চয়বুদ্ধি নিশ্চিন্ত।

তো আজ বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের জমার খাতা দেখছিলেন। আগেও বলেছেন যে তোমরা বিশেষ তিন রকমের খাতা জমা করেছো আরও করতে পারো। এক হলো - নিজের পুরুষার্থ অনুযায়ী খাতা জমা করা। এটা একটা খাতা। দ্বিতীয় খাতা হলো আশীর্বাদের খাতা। আশীর্বাদের খাতা জমা হওয়ার সাধন হলো সদা সম্বন্ধ-সম্পর্ক এবং সেবাতে থেকে সঙ্কল্প, বোল আর কর্মে এই তিনেতেই নিজেও নিজের প্রতি সন্তুষ্ট হবে আর অন্যরাও অন্য সবার প্রতি সন্তুষ্ট হবে। সন্তুষ্টতা আশীর্বাদের খাতা বৃদ্ধি করে। আর তৃতীয় খাতা হলো - পুণ্যের খাতা। পুণ্যের খাতার সাধন হলো - যারাই সেবা করছ তারা হয় মন দ্বারা, বাণী দ্বারা অথবা কর্ম দ্বারা, কিংবা সম্বন্ধ-সম্পর্কে ব্যবহারে এসে সদা নিঃস্বার্থ আর অসীম বৃত্তি, স্বভাব, ভাব আর ভাবনা দ্বারা সেবা করো। এর দ্বারা পুণ্যের খাতা আপনা থেকেই জমা হয়ে যায়। তো চেক করো - কীভাবে চেক করে তোমরা জানো তো না! জানো? যারা জানো না তারা হাত উঠাও। যারা জানে না, কেউ নেই মানে সবাই জানে। তো চেক করেছ তোমরা? স্ব পুরুষার্থের খাতা, আশীর্বাদের খাতা, পুণ্যের খাতা এই তিন রকমের খাতা কত পার্সেন্টে জমা হয়েছে? চেক করেছো? যে চেক করে সে হাত তোলো। চেক করো? প্রথম লাইন তোমরা চেক করো না? কী বলো তোমরা? চেক করো তো না! কেননা, বাপদাদা বলে দিয়েছেন, ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন যে এখন সময়ের নৈকট্য তীব্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সেইজন্য নিজের চেকিং বারবার করতে হবে। কারণ বাপদাদা সব বাচ্চাকে রাজা বাচ্চা, রাজযোগী তথা রাজা বাচ্চা হিসেবে দেখতে চান। এটাই পরমাত্ম বাবার অধ্যাত্ম নেশা যে প্রত্যেক বাচ্চা রাজা বাচ্চা। স্বরাজ্য অধিকারী তথা বিশ্ব রাজ্য অধিকারী পরমাত্ম বাচ্চা।

তো বাপদাদা দ্বারা ভাণ্ডার তো প্রাপ্ত হতেই থাকে। এই সমুদয় ভাণ্ডার জমা করার খুব সহজ বিধি হলো - বিধি বলো বা চাবি বলো, সেটা জানো তো না! জমা করার চাবি কী? জানো তোমরা? তিন বিন্দু। আছে না সবার কাছে চাবি? তিন বিন্দু লাগাও আর ভাণ্ডার জমা হতে থাকবে। মাতা-রা চাবি লাগাতে জানো তো না! চাবি সামলানোতে সাবধান থাকো তো না! তো সব মাতা এই তিন বিন্দুর চাবি সামলে রেখেছে, লাগিয়েছো? বলো মাতারা, চাবি আছে? যার কাছে আছে সে হাত তোলো। মাতা-রা তোলো। চাবি চুরি হয়ে যায় না তো? সাধারণতঃ ঘরের সব জিনিসের চাবি সামলাতে মাতা-রা খুব ভালো জানে। তো এই চাবিও সদা সাথে থাকে তো না?

তো বর্তমান সময়ে বাপদাদা এটাই চান - এখন সময় সমীপ হওয়ার কারণে বাপদাদা সব বাচ্চার ভেতর থেকে একটা শব্দ সঙ্কল্প দ্বারা, বোল দ্বারা এবং প্র্যাকটিক্যাল কর্ম দ্বারা চেঞ্জ হ'তে দেখতে চান। সাহস আছে? সব বাচ্চার একটাই শব্দ বাপদাদা পরিবর্তন করাতে চান, যে একটা শব্দ বারবার তীব্র পুরুষার্থী থেকে আসাবধান পুরুষার্থী বানিয়ে দেয়। আর এখন সময় অনুসারে কোন পুরুষার্থ প্রয়োজন? তীব্র পুরুষার্থ এবং সবাই চায়ও যে তীব্র পুরুষার্থীর লাইনে যেন আসতে পারে, কিন্তু একটা শব্দ আসাবধান করে তোলে। সেটা জানো তোমরা? পরিবর্তন করার জন্য তৈরি তোমরা? তৈরি আছো? হাত তোলো, তৈরি আছো? দেখো, তোমাদের ফটো টিভিতে আসছে। তৈরি আছো, আচ্ছা অভিনন্দন। আচ্ছা - তীব্র পুরুষার্থ দ্বারা পরিবর্তন করবে, নাকি করে নেবে, দেখে নেবে... এইরকম নয় তো? সেই একটা শব্দ জেনে তো গেছ, কেননা, তোমরা সবাই চতুর, এক শব্দ সেটা যা 'কারণ' শব্দকে পরিবর্তন করে 'নিবারণ' শব্দকে সামনে নিয়ে আসে। কারণ সামনে আসায় বা কারণ সম্বন্ধে ভাবলে নিবারণ হয় না। তো বাপদাদা সঙ্কল্পকে পর্যন্ত, শুধু বলা পর্যন্ত নয়, বরং সঙ্কল্প পর্যন্ত, এই কারণ শব্দকে নিবারণে পরিবর্তন করতে চান। কেননা, কারণ ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের হয় আর সেসব যখন ভাবনাতে, কথায়, কর্মে প্রবেশ করে যায় তখন সেই কারণ তীব্র পুরুষার্থের সামনে বন্ধন হয়ে যায়। কেননা, তোমাদের সকলের বাপদাদার কাছে প্রতিজ্ঞা রয়েছে, স্নেহের সাথে প্রতিজ্ঞা করেছ যে তোমরা সবাই বিশ্ব পরিবর্তনের কার্যে বাবার সাথী হবে। তোমরা বাবার সাথী, বাবা একলা করেন না, বাচ্চাদের সাথে আনেন। তো বিশ্ব পরিবর্তনের কার্যে তোমাদের কী কার্য রয়েছে? সর্ব আত্মার কারণ তোমাদের নিবারণ করতে হবে। কেননা, আজকাল মেজরিটি দুঃখী আর অশান্ত হওয়ার কারণে এখন মুক্তি চায়, দুঃখ অশান্তি থেকে, সর্ব বন্ধন থেকে মুক্তি চায় আর মুক্তিদাতা কে? বাবার সাথে তোমরা বাচ্চারাও মুক্তিদাতা। তোমাদের জড় চিত্র থেকে আজ পর্যন্ত তারা কী চাইছে? এখন দুঃখ অশান্তি বাড়তে দেখে তোমরা সব মুক্তিদাতা আত্মাকে মেজরিটি আত্মারা স্মরণ করে। মনে দুঃখ নিয়ে চিৎকার করে - হে মুক্তিদাতা মুক্তি দাও। তোমরা কি আত্মাদের দুঃখ অশান্তির আর্তনাদ শুনতে পাও না? মুক্তিদাতা হয়ে প্রথমে এই 'কারণ' শব্দকে মুক্ত করো। তাহলে আপনা থেকেই মুক্তির আওয়াজ তোমাদের কানে গুঞ্জরিত হবে। আগে নিজের ভিতর থেকে নিজে এই শব্দ থেকে মুক্ত যদি হও তবেই অন্যদের মুক্ত করতে পারবে। এখন তো দিন দিন তোমাদের সামনে মুক্তিদাতা মুক্তি দাও - এর ক্যু লাগবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নিজের পুরুষার্থে অনেক 'কারণ' শব্দের অজুহাত দেওয়ার কারণে মুক্তির দ্বার বন্ধ। সেইজন্য আজ বাপদাদা এই শব্দের পরিবর্তন চান, কেননা, এর সাথে আরও দুর্বল শব্দ আসে। যতই হোক, বিশেষ শব্দ হলো কারণ, আর এর সাথে অন্য দুর্বলতা থাকে - এভাবে, ওভাবে, কীভাবে এসব এর সাথী শব্দ, যা দ্বার বন্ধ হওয়ার কারণ।

তো আজ সবাই হোলি উদযাপন করতে এসেছ, তাইনা! সবাই ছুটতে ছুটতে এসেছ। স্নেহের বিমানে চড়ে এসেছ। বাবার প্রতি স্নেহ আছে, তাইতো বাবার সাথে হোলি উদযাপন করতে এখানে পৌঁছে গেছো। অভিনন্দন, স্বাগত তোমাদের! বাপদাদা অভিনন্দন জ্ঞাপন করছেন। বাপদাদা দেখছেন, যাদের শরীর যথেষ্ট সুস্থ নয়, তারা কেউ কেউ হুইল চেয়ারে করে মনের জোরে (সাহস) এখানে পৌঁছে গেছে। এই দৃশ্য বাপদাদা দেখছেন, তারা এখানে ক্লাসে আসে তো না! যখন প্রোগ্রামে আসে তখন পাণ্ডাকে ধরে হুইল চেয়ারে বসে এসে যায়। তো এটাকে কী বলা যাবে? পরমাত্ম ভালোবাসা। বাপদাদাও এমন সাহসিক স্নেহী, হৃদয়ের স্নেহী বাচ্চাদেরকে বিশেষভাবে তাঁর হৃদয়ের অনেক অনেক আশীর্বাদ, হৃদয়ের ভালোবাসা দিচ্ছেন। সাহস করে এসেছ, বাবার আর পরিবারের সহায়তা আছেই। সবাই যথাযথ স্থান পেয়েছো? পেয়েছো? যারা যথোপযুক্ত স্থান পেয়েছ তারা হাত উঠাও। ফরেনার্স তোমরা উপযুক্ত স্থান পেয়েছো? এটা মেলা, মেলা। ওখানে মেলায় তো ধুলোবালির মধ্যেই তোমাদের ভোজনও চলতে থাকে। এখানে তোমরা ভালো ব্রহ্মা ভোজন পাও, পেয়েছো? হাত ভালোই নাড়াচ্ছে। শোয়ার জন্য তিন পা ভূমি পেয়েছ। এমন মিলন আবার ৫ হাজার বছর পরে সঙ্গমেই হবে। তার আগে আর হবে না।

তো আজ বাপদাদার সঙ্কল্প আছে যে সব বাচ্চার জমার খাতা দেখবেন। দেখেছেনও, ভবিষ্যতেও দেখবেন, কেননা, বাপদাদা এটা আগেই বাচ্চাদের অবহিত করিয়েছেন যে জমার খাতা জমা করার সময় এখন এই সঙ্গমযুগ। এই সঙ্গমযুগে এখন যত জমা করতে চাও, সমগ্র কল্পের খাতা এখন জমা করতে পারো। তারপরে খাতা জমা করার ব্যাঙ্কই বন্ধ হয়ে যাবে। তখন কী করবে? বাচ্চাদের প্রতি বাবার ভালোবাসা আছে তো না! সেইজন্য বাপদাদা জানেন যে বাচ্চারা আসাবধানতায় কখনো ভুলেও যাও - হয়ে যাবে, দেখে নেবো, করছি তো, চলছি তো না! বেশ মজার সাথেই বলো, আপনি দেখছেন না, আমরা করছি, হ্যাঁ আমরা চলছি আর কী করবো? কিন্তু চলা আর ওড়াতে কত পার্থক্য আছে? চলছ, অভিনন্দন। কিন্তু এখন চলার সময় সমাপ্ত হচ্ছে। এখন ওড়ার সময়। তবেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। সাধারণ প্রজাতে আসা, ভগবানের বাচ্চা আর সাধারণ প্রজা! এটা শোভন?

আজ হোলি উদযাপন করতে এসেছ তো না! হোলির অর্থ হলো - যা অতিবাহিত হয়েছে তা' অতীত। তো বাপদাদা এটাই চান, আজ থেকে যা অতীত তা' অতীত, কোনও কারণে যদি কোনও দুর্বলতা থেকে যায় তবে এই মুহূর্তের অতীতকে অতীতকালীন করে নিজের চিত্র স্মৃতিতে নিয়ে এসো, নিজেরই চিত্রকর হয়ে নিজের ছবি বের করো। জানো তোমরা বাপদাদা এখনও প্রত্যেক বাচ্চার কোন চিত্র সামনে দেখছেন? এখনই তোমরাও সবাই নিজের চিত্র তোলো। কীভাবে চিত্র তুলতে হয় জানো তোমরা? জানো তো না! শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের কলম দ্বারা নিজের চিত্র এই মুহূর্তে সামনে আনো। প্রথমে সবাই ড্রিল করো, মাইন্ড ড্রিল। কর্মেন্দ্রিয়ের ড্রিল নয়, মনের ড্রিল করো। রেডি, ড্রিল করার জন্য রেডি আছ? কাঁধ নাড়াও। দেখো, সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ থেজে শ্রেষ্ঠ চিত্র হয় - মুকুট, সিংহাসন, তিলকধারীর। তো নিজের চিত্র সামনে আনো। অন্য সব সঙ্কল্প একপাশে সরিয়ে দিয়ে দেখ, তোমরা সবাই বাপদাদার হৃদয় সিংহাসনাসীন। সিংহাসন, তাইতো না! এমন সিংহাসন তো কোথাও পাওয়া যাবে না। তো প্রথমে এই চিত্র বের করো যে আমি বিশেষ আত্মা, স্বমানধারী আত্মা, বাপদাদার প্রথম রচনা আমি শ্রেষ্ঠ আত্মা, বাপদাদার হৃদয় সিংহাসনাসীন। সিংহাসনাসীন হয়ে গেছ! সেইসঙ্গে পরমাত্ম রচনা আমি পূর্বজ ও পূজ্য আত্মা এই বৃক্ষের মূলে বসে আছি, এই স্মৃতির তিলকধারী আমি। স্মৃতির তিলক লাগিয়েছ! এইসঙ্গে নিশ্চিন্ত বাদশাহ, সমস্ত চিন্তার বোঝা বাপদাদাকে অর্পণ করে আমি ডবল লাইটের মুকুটধারী। সুতরাং মুকুট, তিলক আর সিংহাসনধারী, এমন বাবা অর্থাৎ পরমাত্ম প্রিয় আত্মা আমি।

তো নিজের এই চিত্র তুলেছ। সদা এই ডবল লাইটের মুকুট ঘুরতে ফিরতে ধারণ করতে পারো। কখনও যদি নিজের স্বমান স্মরণ করো তবে এই মুকুট, তিলক, সিংহাসনাসীন আত্মা - নিজের এই চিত্র দৃঢ় সঙ্কল্পের দ্বারা সামনে আনো। স্মরণে আছে - শুরু শুরুতে তোমাদের অভ্যাস বারবার এক শব্দের স্মৃতিতে থাকত, সেই এক শব্দ ছিল - আমি কে? এই আমি কে? এই শব্দ বারবার স্মৃতিতে আনো এবং নিজের ভিন্ন ভিন্ন স্বমান, টাইটেল, ভগবানের থেকে পাওয়া টাইটেল। আজকাল লোকে, মানুষের থেকে যদি মানুষ টাইটেল পায় তবুও কত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে আর তোমরা সব বাচ্চার বাবা দ্বারা কত টাইটেল প্রাপ্ত হয়েছে? স্বমান প্রাপ্ত হয়েছে? সদা স্বমানের লিস্ট নিজের বুদ্ধিতে মনন করতে থাকো। আমি কে? লিস্ট আনো। এই নেশায় যদি থাকো তবে কারণ যে শব্দ আছেনা, সেই শব্দ মার্জ হয়ে যাবে আর নিবারণ সব কর্মে দেখা যাবে। যখন তোমরা নিবারণের স্বরূপ হয়ে যাবে তখন সকল আত্মার নির্বাণধামে, মুক্তিধামে যাওয়ার সহজ রাস্তা বলে দিয়ে তাদের মুক্ত করে নেবে।

দৃঢ় সঙ্কল্প করো - কীভাবে দৃঢ় সঙ্কল্প করে জানো তোমরা? যখন দৃঢ়তা থাকে তখন দৃঢ়তাই সফলতার চাবি। দৃঢ় সঙ্কল্পে সামান্যতমও খামতি হতে দিও না, কেননা, মায়ার কাজ হলো পরাজিত করা আর তোমাদের কাজ কী? তোমাদের কাজ হলো - বাবার গলার হার হওয়া, মায়ার কাছে হার মেনে নেওয়া নয়। তো সবাই এই সঙ্কল্প করো আমি সদা বাবার গলার বিজয় মালা। গলার হার। গলার হার বিজয়ী হার।

তো বাপদাদা তোমাদের হাত তুলিয়ে থাকেন - তোমরা কী হবে? তোমরা সবাই কী উত্তর দাও? একই উত্তর দাও লক্ষ্মী-নারায়ণ হবে। রামসীতা নয়। তো লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে যাওয়া আমরা বাপদাদার বিজয়ী মালার দানা, পূজ্য আত্মা। তোমাদের মালার দানা জপতে জপতে তারা নিজেদের সমস্যা সমাপ্ত করে। এমন শ্রেষ্ঠ দানা তোমরা। তো আজ বাপদাদাকে তোমরা কী দেবে? হোলি উপলক্ষ্যে কোনো গিফ্ট দেবে তো না! এই কারণ শব্দ, এই তো তো, অন্য আর কারণ, তো তো যদি করবে তবে তোতা হয়ে যাবে, যাবে না! তো তো এটাও নয়, এভাবে ওভাবেও নয়, কোনও রকম কারণ নয়, নিবারণ। আচ্ছা।

বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে সমান হওয়ার, শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প করার পদ্ম পদ্মগুন অভিনন্দন জ্ঞাপন করছেন। অভিনন্দন অভিনন্দন অভিনন্দন। নেশা আছে তো না - আমাদের মতো পদম পদম ভাগ্যবান কে? এই নেশাতে থাকো।

এখন এক সেকেন্ডে সব ব্রাহ্মণ নিজের রাজযোগের অভ্যাস করতে করতে মনকে একাগ্র করার মালিক হয়ে মনকে যেখানে চাও, যত সময় চাও, যেভাবে চাও সেভাবে এই মুহূর্তে মনকে একাগ্র করো। কোথাও যেন মন এখানে ওখানে চঞ্চল না হয়। আমার বাবা, মিষ্টি বাবা, প্রিয় বাবা এই স্নেহের সঙ্গের রঙে আধ্যাত্মিক হোলি উদযাপন করো। (ড্রিল) আচ্ছা।

চতুর্দিকের শ্রেষ্ঠ বিশেষ হোলি এবং হাইয়েস্ট বাচ্চাদের, সদা স্বয়ংকে বাবা সমান সর্বশক্তিতে সম্পন্ন মাস্টার সর্বশক্তিমান অনুভব করে, সদা সব দুর্বলতা থেকে মুক্ত হয়ে অন্য আত্মাদেরও মুক্তি প্রাপ্ত করায় এমন মুক্তিদাতা বাচ্চাদের, সদা স্বমানের সিটে সেট থাকে, সদা অমর ভব-র বরদানের অনুভব স্বরূপ হয়, চতুর্দিকের এমন বাচ্চারা, হয় তারা সামনে বসে আছে, অথবা দূরে বসে স্নেহে সমাহিত হয়ে আছে, সেই সব বাচ্চাকে স্মরণ-স্নেহ এবং যারা নিজের উৎসাহ-উদ্দীপনায় পুরুষার্থের সমাচার দিয়ে থাকে, তারা বাপদাদার হৃদয়ের অনেক অনেক স্মরণ-স্নেহ আর হৃদয়ের পদ্ম পদ্মগুন স্মরণের স্নেহ-সুমন স্বীকার করো এবং সকল রাজযোগী তথা রাজ্য অধিকারী বাচ্চাদের নমস্কার।

বরদান:-
আলমাইটি সত্ত্বার আধারে আত্মাদের সৌভাগ্যবান (মালামাল) বানিয়ে পুণ্য আত্মা ভব

যেমন, দান পুণ্য অর্জনের ইচ্ছা থেকে দান করে এমন সত্ত্বার রাজাদের মধ্যে সত্ত্বার ফুল পাওয়ার ছিল। যে পাওয়ারের আধারে, হতে পারে তারা কাউকে কিছু বানিয়ে দিতে পারত। তেমনই তোমরা মহাদানী পুণ্য আত্মাদের ডায়রেক্ট বাবা দ্বারা প্রকৃতিজিৎ, মায়াজিতের বিশেষ সত্ত্বা প্রাপ্ত হয়েছে। তোমরা নিজেদের শুদ্ধ সঙ্কল্পের দ্বারা যে কোনো আত্মাকে বাবার সাথে সম্বন্ধ জুড়ে সৌভাগ্যবান বানাতে পারো। কেবল এই সত্ত্বাকে যথার্থ রীতিতে ইউজ করো।

স্লোগান:-
যখন তোমরা সম্পূর্ণতার অভিনন্দন উদযাপন করবে, তখন সময়, প্রকৃতি আর মায়া বিদায় নেবে।

অব্যক্ত ইশারাঃ :- এখন সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও যখন মন বুদ্ধি কর্মে খুব বিজি থাকবে, সেই সময় ডিরেকশন দাও ফুলস্টপ। কর্মেরও সঙ্কল্প যেন স্টপ হয়ে যায়। এই প্র্যাকটিস এক সেকেন্ডের জন্য হলেও করো। কিন্তু অভ্যাস নিরন্তর করো। কেননা, অন্তিম সার্টিফিকেট এক সেকেন্ডের ফুলস্টপ লাগানোতেই প্রাপ্ত হয়। সেকেন্ডে বিস্তারকে গুটিয়ে নাও, সার স্বরূপ হয়ে যাও, এই অভ্যাসই কর্মাতীত বানাবে।