29.04.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের এই জন্ম খুবই অমূল্য, এই জন্মেই তোমাদের মানব থেকে দেবতা হওয়ার জন্য পবিত্র
হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে"
প্রশ্নঃ -
ঈশ্বরীয়
সন্তান নামপ্রাপ্ত বাচ্চাদের মুখ্য ধারণা কি হবে?
উত্তরঃ
তারা নিজেদের
মধ্যে অত্যন্ত ক্ষীরখণ্ড হয়ে থাকবে । কখনোই নুনজল হবে না । দেহ-অভিমানী মানুষ যারা,
তারা উল্টোপাল্টা কথা বলে, লড়াই ঝগড়া করতে থাকে । বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যে এই
অভ্যাস থাকতে পারে না । তোমাদের এখানে দৈবীগুণ ধারণ করতে হবে, কর্মাতীত অবস্থা
প্রাপ্ত করতে হবে ।
ওম্ শান্তি ।
সর্ব প্রথমে
বাবা বাচ্চাদের বলেন, দেহী-অভিমানী ভব । নিজেকে আত্মা মনে করো । গীতা ইত্যাদিতে যা
কিছুই থাকুক না কেন, সে সবই হলো ভক্তিমার্গের শাস্ত্র । বাবা বলেন, আমি হলাম
জ্ঞানের সাগর । বাচ্চারা, আমি তোমাদের জ্ঞান শোনাই । তিনি কোন্ জ্ঞান শোনান? তিনি
এই সৃষ্টির বা ড্রামার আদি-মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান শোনান । এ হলো ঈশ্বরীয় পাঠ ।
হিস্ট্রি আর জিওগ্রাফি তো আছে তাই না । ভক্তিমার্গে কেউ হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি পড়ে না
। তারা এর নামই নেবে না । সাধু-সন্তাদি বসে শাস্ত্র পাঠ করে । এই বাবা তো আর কোনো
শাস্ত্র পাঠ করে শোনান না । তিনি এই পড়া পড়িয়ে তোমাদের মানুষ থেকে দেবতা বানান ।
তোমরা এখানে মানুষ থেকে দেবতা হতেই আসো । যদিও ওরাও মানুষ আর তোমরাও মানুষ, কিন্তু
মানুষ বাবাকেই ডাকে যে, হে পতিত পাবন এসো । তোমরা তো একথা জানো যে, দেবতারা হলেন
পবিত্র । বাকি তো সমস্ত মানুষ অপবিত্র, তারা তো দেবতাদের নমন করে । তারা দেবতাদের
পবিত্র আর নিজেদের পতিত মনে করে, কিন্তু দেবতারা পবিত্র কিভাবে হলেন, তাঁদের পবিত্র
কে বানালো - এ কোনো মানুষ মাত্রেই জানে না । বাবা তাই বোঝান -নিজেকে আত্মা জ্ঞান করে
বাবাকে স্মরণ করা - এতেই যত পরিশ্রম । তোমাদের দেহ-অভিমান থাকা উচিত নয় । আত্মা হলো
অবিনাশী, সংস্কারও আত্মার মধ্যেই থাকে । আত্মাই ভালো এবং খারাপ সংস্কার নিয়ে যায়,
তাই বাবা এখন বলেন, তোমরা দেহী-অভিমানী হও । নিজের আত্মাকেও কেউ জানে না । রাবণ
রাজ্য যখন শুরু হয় তখনই অন্ধকারের মার্গ শুরু হয় । মানুষ দেহ-অভিমানী হয়ে যায় ।
বাবা বসে তোমাদের বোঝান - বাচ্চারা, তোমরা এখানে কার কাছে এসেছো? এনার কাছে নয় ।
আমি এনার মধ্যে প্রবেশ করেছি । এনার অনেক জন্মেরও অন্তিম জন্মে এ হলো পতিত জন্ম ।
অনেক জন্ম কি? সেও আমি তোমাদের বলেছি, অর্ধেক কল্প হলো পবিত্র জন্ম, আর অর্ধেক কল্প
হলো পতিত জন্ম । তাই ইনিও এখন পতিত হয়ে গেছেন । ব্রহ্মা নিজেকে দেবতা বা ঈশ্বর
বলেন না । মানুষ মনে করে, প্রজাপিতা ব্রহ্মা দেবতা ছিলেন, তাই তারা বলে, ব্রহ্মা
দেবতায়ে নমঃ । বাবা বোঝান যে, ব্রহ্মা, যিনি পতিত ছিলেন, তিনি অনেক জন্মের অন্তে
আবার পবিত্র হয়ে দেবতা হন । তোমরা হলে বি.কে । তোমরাও ব্রাহ্মণ, আর এই ব্রহ্মাও
ব্রাহ্মণ । এনাকে কে দেবতা বলেন? ব্রহ্মাকে ব্রাহ্মণ বলা হয়, না কি দেবতা? ইনি যখন
পবিত্র হন, তাও তখনও ব্রহ্মাকে দেবতা বলা হবে না । যতক্ষণ না বিষ্ণু (লক্ষ্মী -নারায়ণ
) হন, ততক্ষণ দেবতা বলা হবে না । তোমরা হলে ব্রাহ্মণ - ব্রাহ্মণী । তোমাদের প্রথমে
শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ, তারপর ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা বানাই । তোমাদের এই জন্মকে অমূল্য
হীরে তুল্য জন্ম বলা হয় । যদিও কর্ম ভোগ তো হতেই থাকে । তাই বাবা এখন বলছেন, নিজেকে
আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে থাকো । এই অভ্যাস হলেই তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে ।
নিজেকে দেহধারী মনে করলে বিকর্ম বিনাশ হবে না । আত্মা ব্রাহ্মণ নয়, শরীর সাথে
থাকলেই তখন ব্রাহ্মণ তারপর দেবতা... শূদ্র ইত্যাদি হয় । তাই এখন বাবাকে স্মরণ
করারই পরিশ্রম । এ হলো সহজযোগও । বাবা বলেন, এ হলো সহজের থেকেও সহজ । কারোর কারোর
তো শক্তও লাগে । তারা প্রতি মুহূর্তে দেহ বোধে এসে বাবাকেও ভুলে যায় । দেহী-অভিমানী
হওয়াতে সময়ও তো লাগে । এমন হতেই পারে না যে, এখনই তুমি একরস হয়ে গেলে আর বাবার
স্মরণ স্থায়ীভাবে টিকে গেলো । তা নয় । তোমরা কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত হলে তখন
তোমাদের শরীরও থাকবে না । পবিত্র আত্মা হাল্কা হয়ে একদম শরীরকে ছেড়ে দেয় । পবিত্র
আত্মার সঙ্গে অপবিত্র শরীর থাকে না । এমন নয় যে, এই দাদা কোনো পারে পৌঁছে গেছে ।
ইনিও বলেন - স্মরণের খুব পরিশ্রম । দেহ অভিমানে থাকলে উল্টোপাল্টা কথাবার্তা, লড়াই
ঝগড়া ইত্যাদি চলতে থাকে । আমরা আত্মারা সব ভাই-ভাই, তাই আত্মাদের মধ্যে কিছু হতে
পারে না । দেহ অভিমানের জন্যই এই দ্বিধা এসে যায় । বাচ্চারা, এখন তোমাদের
দেহী-অভিমানী হতে হবে । দেবতারা যেমন ক্ষীরখণ্ড, তেমনই তোমাদেরও নিজেদের মধ্যে খুবই
ক্ষীরখণ্ড হয়ে থাকা উচিত । তোমাদের কখনো নুনজল হওয়া উচিত নয় । যারা দেহ-অভিমানী
মানুষ, তারা উল্টোপাল্টা কথাবার্তা, লড়াই-ঝগড়া করতে থাকে । বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যে
এই অভ্যাস হতে পারে না । তোমাদের তো এখানে দেবতা হওয়ার জন্য দৈবীগুণ ধারণ করতে হবে
। কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করতে হবে । তোমরা জানো যে, এই শরীর, এই দুনিয়া পুরানো এবং
তমোপ্রধান । পুরানো জিনিস, পুরানো সম্বন্ধে ঘৃণা করতে হয় । দেহ অভিমান ত্যাগ করে
নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে তাহলেই পাপ বিনাশ হবে । অনেক বাচ্চাই
এই স্মরণের যাত্রায় ফেল করে যায় । জ্ঞান অনুভব করাতে খুবই তীক্ষ্ণ হয় কিন্তু এই
স্মরণের পরিশ্রম খুব বেশী । এ হলো বড় পরীক্ষা । অর্ধেক কল্পের পুরানো ভক্তই তা বুঝতে
পারে । ভক্তিতে যারা পিছনে থাকে তারা এ তো বুঝতে পারে না ।
বাবা এই শরীরে এসে বলেন, আমি প্রতি পাঁচ হাজার বছর অন্তর আসি । আমার এই ড্রামাতে
পার্ট রয়েছে এবং আমি একবারই আসি । এ হলো সেই সঙ্গম যুগ । লড়াইও সামনে উপস্থিত । এই
নাটক হলো পাঁচ হাজার বছরের । কলিযুগের আয়ু যদি আরো চল্লিশ হাজার বছর হয়, তাহলে না
জানি কি হবে ! ওরা তো বলে, ভগবানও যদি আসে, তাহলেও আমরা শাস্ত্রের বলা পথ ছাড়বো না
। তারা এও জানে না যে, চল্লিশ হাজার বছর পরে কোন্ ভগবান আসবেন? কেউ মনে করে, কৃষ্ণ
ভগবান আসবেন । নিকট ভবিষ্যতে তোমাদের নাম উজ্জ্বল হবে কিন্তু সেই অবস্থাও হওয়া চাই
। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে খুবই প্রেমের সম্পর্ক থাকা উচিত । তোমরা তো ঈশ্বরীয়
সন্তান, তাই না । তোমরা হলে ঈশ্বরের সাহায্যকারী, এমন মহিমাও আছে । তোমরা বলো যে,
আমরা পতিতকে পবিত্র করার জন্য বাবার সহযোগী । বাবা, আমরা কল্পে-কল্পে আত্ম - অভিমানী
হয়ে তোমার শ্রীমতে চলে যোগবলের দ্বারা নিজেদের বিকর্ম বিনাশ করি । যোগবল হলো
সাইলেন্সের শক্তি । সাইলেন্সের শক্তি আর সায়েন্সের শক্তির মধ্যে রাত দিনের তফাৎ ।
ভবিষ্যতে তোমাদের অনেক সাক্ষাৎকার হতে থাকবে । শুরুর দিকেও কতো বাচ্চা সাক্ষাৎকার
করেছে, পার্ট প্লে করেছে । আজ আর তারা নেই । মায়া তাদের গিলে ফেলেছে । যোগে না থাকতে
পারলে মায়া খেয়ে ফেলে । যদিও বাচ্চারা জানে যে, ভগবান আমাদের পড়ান, তাহলে নিয়মমতো
পড়া উচিত । না হলে, খুবই কম পদ পাবে । সাজাও অনেক ভোগ করবে । এমন গায়নও তো আছে - আমি
জন্ম -জন্মান্তরের পাপী । সত্যযুগে তো রাবণ রাজ্যই থাকে না, তাহলে বিকারের নামও
সেখানে কিভাবে আসতে পারে? সে হলো সম্পূর্ণ নির্বিকারী রাজ্য । সে হলো রাম রাজ্য আর
এ রাবণ রাজ্য । এই সময় সকলেই তমোপ্রধান । প্রত্যেক বাচ্চাকেই নিজেদের স্থিতির
পর্যবেক্ষণ করা দরকার যে, আমরা বাবার স্মরণে কতো সময় থাকতে পারি? দৈবী গুণ কতটা
ধারণ করেছি? মূখ্য বিষয় হলো, নিজেদের ভিতরে দেখতে হবে, আমাদের মধ্যে কোনো অপগুণ তো
নেই? আমাদের খাওয়া দাওয়া কেমন? সারাদিনে কোনো ফালতু কথা বা মিথ্যা কথা বলি না তো?
অনেকসময় শরীর নির্বাহের কারণেও তো মিথ্যা বলে ফেলতে হয়, তাই না । তখন মানুষ মনে করে,
দানপুণ্য করলে এই পাপ খণ্ডন হয়ে যাবে । ভালো কাজ করলে অবশ্যই পরিবর্তে ভালো ফল
পাওয়া যায় । কেউ যদি হাসপাতাল তৈরী করে তাহলে পরের জন্মে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়
। কলেজ তৈরী করে দিলে ভালো পড়াশোনা হবে, কিন্তু পাপের প্রায়শ্চিত্ত কি? তার জন্য
তারা আবার গঙ্গাস্নান করতে যায় । বাকি যে ধন দান করে, তা দ্বিতীয় জন্মে পেয়ে যায়
। তাতে পাপ মুক্ত হওয়ার কোনো কথা থাকে না । সে হলো ধনের লেনদেন, ঈশ্বরের জন্য
দিয়েছে, ঈশ্বর আবার অল্পকালের জন্য ফেরত দিয়ে দিয়েছে । এখানে তো তোমাদের পবিত্র হতে
হবে, বাবার স্মরণ ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই । পবিত্র মানুষ পতিত দুনিয়াতে থাকবেই না
। ওরা ঈশ্বরের জন্য ইনডায়রেক্ট করে । ঈশ্বর তো এখন বলেন - আমি তোমাদের সম্মুখে
এসেছি পবিত্র বানানোর জন্য । আমি তো দাতা, তোমরা আমাকে দাও, তখন আমি তার পরিবর্তে
তোমাদের দিয়ে থাকি । আমি নিজের কাছে কিছুই রাখি না । বাচ্চারা, তোমাদের জন্যই এই
বাড়িঘর ইত্যাদি বানানো হয়েছে । সন্ন্যাসীরা তো নিজেদের জন্য বড় বড় মহল ইত্যাদি
বানায় । এখানে তো শিববাবা নিজের জন্য কিছুই বানান না । তিনি বলেন, এর পরিবর্তে তোমরা
নতুন দুনিয়াতে ২১ জন্মের জন্য প্রাপ্ত করবে, কেননা তোমরা সম্মুখ লেনদেন করো । তোমরা
যে অর্থ দান করো তা তোমাদেরই কাজে লাগে । ভক্তিমার্গেও আমি দাতা আর এখানেও আমি দাতা
। ওখানে হলো অপ্রত্যক্ষ আর এখানে প্রত্যক্ষ । বাবা তো বলে দেন, যা কিছুই আছে তা দিয়ে
তোমরা সেন্টার খোলো । অনেকের কল্যাণ করো । আমিও তো সেন্টার খুলি, তাই না ।
বাচ্চাদের দেওয়া, তা দিয়ে আমি বাচ্চাদেরই সাহায্য করি । আমি তো নিজের সঙ্গে অর্থ
নিয়েই আসি না । আমি তো এসে এনার মধ্যে প্রবেশ করি, এঁর দ্বারাই কর্তব্য করাই । আমি
তো স্বর্গে আসি না । এ সবকিছুই তোমাদের জন্য, আমি তো অভোক্তা । আমি কিছুই গ্রহণ করি
না । আমি এমনও বলি না যে, তোমরা আমার পায়ে পড়ো । বাচ্চারা, আমি তো তোমাদের মোস্ট
ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট। তোমরা এও জানো যে - সেই হলো আমাদের মাতা পিতা..... আমাদের
সবকিছুই । তাও তিনি নিরাকার । তোমরা কোনো গুরুকে কখনোই ত্বমেব মাতা-পিতা বলবে না ।
গুরুকে গুরু আর টিচারকে টিচার বলবে । এনাকেই তোমরা মাতা-পিতা বলো । বাবা বলেন, আমি
কল্পে-কল্পে একইবার আসি । তোমরাই ১২ মাস পরে জয়ন্তী পালন করো, কিন্তু শিববাবা কখন
এলেন, কি করলেন, এ কেউই জানে না । ব্রহ্মা -বিষ্ণু এবং শঙ্করের কর্তব্যের খবরও কেউ
জানে না কেননা উপরে শিবের চিত্র উড়িয়ে দিয়েছে । না হলে, শিববাবা তো হলেন
করনকরাবনহার । তিনি ব্রহ্মার দ্বারা সব করান । এও বাচ্চারা, তোমরাই জানো যে, তিনি
কিভাবে এসে প্রবেশ করে সব করে দেখান । তিনি তোমাদেরও বলেন, তোমরাও এমনভাবে করো । এক
তো খুব ভালোভাবে পড়ো । বাবাকে স্মরণ করো, দৈবী গুণ ধারণ করো । এনার আত্মাও যেভাবে
করেন । ইনিও বলেন, আমি বাবাকে স্মরন করি । বাবাও এনার সঙ্গেই থাকেন । তোমাদের
বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা নতুন দুনিয়ার মালিক হবো । তাই আমাদের চাল -চলন, খাওয়াদাওয়া
আদি সবই পরিবর্তন করতে হবে । বিকারকে আমাদের ত্যাগ করতে হবে । আমাদের তো অবশ্যই
শুধরাতে হবে । যত শুধরাতে থাকবে, তারপর ধীরে ধীরে শরীর ত্যাগ করবে এবং উচ্চ কুলে
জন্ম নেবে । এই কুলেরও আবার নম্বরের ক্রমানুসার হয় । এখানেও খুব ভালো ভালো বংশ হয়
। ৪ - ৫ ভাই সবাই একসাথে থাকে, কোনরকম ঝগড়া আদি হয় না । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো,
আমরা অমরলোকে যাচ্ছি, যেখানে কোনো কাল গ্রাস করতে পারে না । ভয়ের কোনো কথাই থাকে না
। এখানে তো দিন-দিন ভয় বাড়তে থাকবে । তোমরা বাইরে বের হতে পারবে না । তোমরা এও জানো
যে, এখানে কোটিতে কয়েকজনই এই পাঠ গ্রহণ করবে । কেউ তো খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে,
লিখেও রাখে, এরা খুবই ভালো । এমন বাচ্চাও অবশ্যই আসবে । রাজধানী তো স্থাপন হতে হবে,
তাই না । আর অল্প সময়ই বাকি আছে ।
বাবা সেইসব পুরুষার্থী
বাচ্চাদের খুবই মহিমা করেন, যারা এই স্মরণের যাত্রায় তীক্ষ্ণ দৌড় লাগাবে । এই
স্মরণের কথাই হলো মুখ্য । এতেই পুরানো হিসাব নিকাশ শোধ হয় । কোনো কোনো বাচ্চা
বাবাকে লেখে যে - বাবা, আমি রোজ এতো ঘণ্টা স্মরণ করি, বাবাও তখন মনে করেন, এ খুব
ভালো পুরুষার্থী । পুরুষার্থ তো করতেই হবে, তাই না, তাই বাবা বলেন, নিজেদের মধ্যে
কখনোই লড়াই ঝগড়া করা উচিত নয় । এ তো পশুদের কাজ । লড়াই ঝগড়া, এ হলো দেহ বোধের
পরিচয় । এতে বাবার নাম বদনাম করে দেবে । বাবার জন্যই এমন কথা বলা হয় যে, সদগুরুর
নিন্দক টিকতে পারে না । সাধুরা এ কথা নিজেদের জন্য বলে দিয়েছে । তাই মায়েরা তাঁদের
খুব ভয় পায় যে, তারা অভিশাপ না দিয়ে দেয় । তোমরা এখন জানো যে, আমরা মানুষ থেকে দেবতা
হতে চলেছি । এখন আমরা প্রকৃত অমর কথা শুনছি । তোমরা বলো, আমরা এই পাঠশালাতে আসি শ্রী
লক্ষ্মী-নারায়ণের পদ প্রাপ্তির জন্য, আর কোথাও এমন কথা বলে না । এখন আমরা নিজেদের
ঘরে ফিরে যাবো । এখানে স্মরণের পুরুষার্থই হলো মুখ্য । অর্ধেক কল্প আমরা স্মরণ করি
নি । এখন এই এক জন্মেই আমাদের স্মরণ করতে হবে । এই হলো পরিশ্রম । তোমাদের বাবাকে
স্মরণ করতে হবে, দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে, কোনো পাপ কর্ম করলে শত গুন দণ্ড ভোগ করতে
হবে । তোমাদের পুরুষার্থ করতে হবে, নিজের উন্নতি করতে হবে । আত্মাই তো শরীরের দ্বারা
পড়ে ব্যরিস্টার বা সার্জন আদি তৈরী হয়, তাই না । এই লক্ষ্মী-নারায়ণ পদ তো খুবই উঁচু,
তাই না । অদূর ভবিষ্যতে তোমাদের অনেক সাক্ষাৎকার হবে । তোমরা তো সর্বোত্তম ব্রাহ্মণ
কুলভূষণ, স্বদর্শন চক্রধারী । পূর্ব কল্পেও আমি তোমাদের এই জ্ঞান শুনিয়েছিলাম ।
আবারও আমি সেই জ্ঞান শোনাচ্ছি । তোমরা এই জ্ঞান শুনে পদ প্রাপ্তি করো । এরপর এই
জ্ঞান আবার প্রায় লোপ হয়ে যায় । বাকি এইসব শাস্ত্র ইত্যাদি সবই ভক্তিমার্গের ।
আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা আত্মারূপী বাচ্চাদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) মনে
মনে নিজের পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে - আমি বাবার স্মরণে কতটা সময় থাকি? দৈবী গুণ
কতখানি ধারণ করেছি? আমার মধ্যে কোনো অপগুণ নেই তো? আমার খাওয়া দাওয়া, আচার-আচরণ
রয়্যাল তো? আমি অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলি না তো? মিথ্যা কথা বলি না তো?
২ ) স্মরণের চার্ট
বৃদ্ধি করার জন্য অভ্যাস করতে হবে - আমরা সব আত্মারা হলাম ভাই-ভাই । দেহ ভাব থেকে
দূরে থাকতে হবে । নিজের একরস স্থিতি মজবুত করতে হবে এবং এরজন্য সময় দিতে হবে ।
বরদান:-
পাঁচ
তত্ত্ব আর পাঁচ বিকারকে নিজের সেবাধারী বানিয়ে মায়াজিৎ স্বরাজ্য অধিকারী ভব
যেরকম সত্যযুগে বিশ্ব
মহারাজা এবং বিশ্ব মহারাণীর রাজ-ড্রেসকে পিছন থেকে দাস-দাসীরা ওঠায়, এইরকম সঙ্গম
যুগে তোমরা বাচ্চারা যখন মায়াজিৎ স্বরাজ্য অধিকারী হয়ে টাইটেল্স রূপী ড্রেস দ্বারা
সজ্জিত থাকবে তখন এই পাঁচ তত্ত্ব আর পাঁচ বিকার তোমাদের ড্রেসকে পিছন থেকে উঠিয়ে
রাখবে অর্থাৎ অধীন হয়ে চলবে। এরজন্য দৃঢ় সংকল্পের বেল্ট দ্বারা টাইটেল্সের ড্রেসকে
টাইট করো, ভিন্ন-ভিন্ন ড্রেস আর শৃঙ্গারের সেট দ্বারা নিজেকে সজ্জিত করে বাবার সাথে
থাকো তাহলে এই বিকার বা তত্ব পরিবর্তন হয়ে সহযোগী সেবাধারী হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
যে গুণ
বা শক্তিগুলির বর্ণনা করছো, সেগুলির অনুভবে হারিয়ে যাও। অনুভব-ই হলো সবথেকে বড়
অথোরিটি।
অব্যক্ত ঈশারা :-
“কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”
নিজেকে বাবার সাথে
কম্বাইন্ড মনে করলে বিনাশী সাথী বানানোর সংকল্প সমাপ্ত হয়ে যাবে কেননা সর্বশক্তিমান
হলেন সাথী। যেরকম সূর্যের আগে অন্ধকার স্থিত হতে পারে না সেইরকম সর্বশক্তিমানের আগে
মায়ার কোনও ব্যর্থ সংকল্পও স্থিত থাকতে পারবে না। কোনও শত্রু আক্রমন করার পূর্বে
প্রথমে তোমাদেরকে একা বানাবে (অর্থাৎ বাবার সঙ্গ ভুলিয়ে দেবে), এইজন্য কখনও একা হয়ো
না।