29.12.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে, সেইজন্য দেহ সহ দেহের সকল সম্বন্ধকে ভুলে মামেকম্ স্মরণ করো
আর পবিত্র হও”
প্রশ্নঃ -
আত্মার বিষয়ে
কি এমন সূক্ষ্ম কথা কেবলমাত্র সূক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন আত্মারাই বুঝতে পারে?
উত্তরঃ
আত্মার উপর
সূঁচের মতো ধীরে ধীরে জং (মরিচা) লাগতে থাকে। বাবার স্মরণে থাকলে সেই জং সরে যায় ।
যখন জং ছেড়ে যায় অর্থাৎ আত্মা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয় তখন বাবার আকর্ষণে বাবার
সাথে গৃহে ফিরে যেতে পারে। ২- যত বেশী জং ছাড়তে থাকবে ততই অন্যদেরকে বোঝানোর জন্য
আকর্ষণ করবে। এই কথাগুলি হলো অত্যন্ত সূক্ষ্ম, যেটা স্থুলবুদ্ধি সম্পন্ন আত্মারা
বুঝতে পারে না।
ওম্ শান্তি ।
ভগবানুবাচ।
এখন বুদ্ধিতে কে এসেছেন? যারা সেখানকার গীতা পাঠশালা ইত্যাদিতে থাকে, তাদের তো
ভগবানুবাচ বলার সাথে সাথেই বুদ্ধিতে শ্রীকৃষ্ণই আসবে। বাচ্চারা এখানে তো তোমাদের
বুদ্ধিতে উঁচুর থেকে উঁচু বাবা স্মরণে আসবে। এই সময় এটা হল সঙ্গম যুগ, পুরুষোত্তম
হওয়ার। বাবা বাচ্চাদেরকে বসে বোঝাচ্ছেন যে দেহের সাথে দেহের সকল সম্বন্ধকে ত্যাগ
করে নিজেকে আত্মা মনে করো। এটা হলো অত্যন্ত জরুরী কথা, যেটা এই সঙ্গম যুগে বাবা এসে
বোঝাচ্ছেন। আত্মাই পতিত হয়ে গেছে। পুনরায় আত্মাকে পবিত্র হয়ে ঘরে ফিরে যেতে হবে।
পতিতপাবনকে স্মরণ করতে এসেছে, কিন্তু জানেনা কিছুই। ভারতবাসীরা একদমই ঘন অন্ধকারে
আছে। ভক্তি হলো রাত, জ্ঞান হলো দিন। রাতে অন্ধকার, দিনে আলো হয়ে থাকে। দিন হল
সত্যযুগ, রাত হলো কলিযুগ। এখন তোমরা কলিযুগে আছো, সত্যযুগে যেতে হবে। পবিত্র
দুনিয়াতে পতিতের কোনো প্রশ্নই থাকে না। যখন পতিত হয়ে যায়, তখন পবিত্র হওয়ার
প্রশ্ন উঠতে থাকে। যখন পবিত্র থাকে, তখন পতিত দুনিয়া স্মরণেও আসে না। এখন হল পতিত
দুনিয়া, তাই পবিত্র দুনিয়ার কথা স্মরণে আসছে। পতিত দুনিয়া হল পিছনের ভাগ, পবিত্র
দুনিয়া হল প্রথম ভাগ। সেখানে কোনো পতিত থাকতে পারেনা। যারা পবিত্র ছিল, তারাই পতিত
হয়েছে। ৮৪ জন্মের কথাও তাদেরকে বোঝানো হয়ে থাকে। এটা হল অত্যন্ত গুপ্তকথা, বোঝার
জন্য। অর্ধেক কল্প ভক্তি করে এসেছে সেটা এত তাড়াতাড়ি যেতে পারে না। মানুষ একদমই
ঘন অন্ধকারে আছে, কোটির মধ্যে কয়েকজনই বেরিয়ে আসে, খুব অল্প কয়েকজনের বুদ্ধিতেই
এসব কথার ধারণা হবে। মুখ্য কথা তো বাবা বলছেন যে দেহের সকল সম্বন্ধেকে ভুলে আমাকে
স্মরণ করো। আত্মাই পতিত হয়ে গেছে, তাকে পবিত্র হতে হবে। এই জ্ঞানও বাবাই দিয়ে
থাকেন কেননা এই বাবা হলেন প্রিন্সিপাল, স্বর্ণকার, ডাক্তার, ব্যারিস্টার সবকিছু।
এসব নাম সেখানে থাকবে না। সেখানে এই পড়াশোনাও থাকবে না। এখানে পড়াশোনা করে চাকরি
করার জন্য। আগে মহিলারা এতটা পড়াশোনা করত না। এইসব পরবর্তীকালে শিখেছে। স্বামী মারা
গেলে তখন দেখাশোনা করবে কে? এইজন্য মহিলারাও সবকিছু শিখছে। সত্যযুগে তো এরকম কথা
হয়না যেটা চিন্তা করতে হবে। এখানে মানুষ ধনসম্পদ ইত্যাদি একত্রিত করতে থাকে, এইরকম
সময়ের জন্য। সেখানে তো এইরকম পরিস্থিতি আসবে না যে চিন্তা করতে হবে। বাচ্চারা বাবা
তোমাদেরকে কতইনা ধনবান বানিয়ে দিচ্ছেন। স্বর্গে অনেক খাজানা থাকে। হীরে-জহরতের
খনিগুলি সব ভরপুর হয়ে যায়। এখানে জমি অনুর্বর হয়ে যায়, তাই সেই শক্তিও থাকে না।
সেখানকার ফুল আর এখানকার ফুলের মধ্যে রাত-দিনের তফাৎ। এখানে তো সব জিনিসের থেকে
শক্তিই চলে গেছে। যদিও অনেককিছু করে আমেরিকা ইত্যাদি জায়গা থেকে বীজ নিয়ে আসা হয়
কিন্তু শক্তি হ্রাস হয়ে যায়। আসলে ধরনীই হলো এইরকম, যেখানে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে
হয়। সেখানে তো প্রত্যেক জিনিসই সতোপ্রধান হয়ে থাকে। প্রকৃতিও সতোপ্রধান তো
সবকিছুই সতোপ্রধান হয়ে যায়। এখানে তো সব জিনিসই তমোপ্রধান হয়ে গেছে। কোনও
জিনিসেই শক্তি নেই। এই পার্থক্যও তোমরা বুঝতে পারো। যখন সতোপ্রধান জিনিস দেখো তখন
ধ্যানেই দেখতে পাও। সেখানকার ফুল ইত্যাদি কত সুন্দর হয়ে থাকে। হতে পারে - সেখানকার
আনাজ ইত্যাদি সবকিছুই তোমরা ধ্যানে বসে দেখতে পাবে। বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারবে।
সেখানকার প্রত্যেক জিনিসের অনেক শক্তি থাকে। নতুন দুনিয়া কারোরই বুদ্ধিতে নেই। এই
পুরানো দুনিয়ার কথা তো জিজ্ঞাসাই করো না। গল্প কথাও অনেক লম্বা চওড়া বলে দেয়।
মানুষ একদমই অন্ধকারে শুয়ে পড়েছে। তোমরা যখন বলো যে আর বাকি অল্প সময় অবশিষ্ট আছে
তখন তোমাদের নিয়ে কেউ কেউ আবার হাসি ঠাট্টাও করতে থাকে। রাজকীয়তার সাথে তো সে বুঝতে
থাকে যে নিজেকে ব্রাহ্মণ মনে করে। এটা হল নতুন ভাষা, আত্মিক পড়াশোনা, তাই না!
যতক্ষণ না স্পিরিচুয়াল ফাদার না আসেন, ততক্ষণ কেউ বুঝতে পারেনা। স্পিরিচুয়াল
ফাদারকে বাচ্চারা তোমরাই জানো। তারা তো গিয়ে যোগ ইত্যাদি শেখাতে থাকে, কিন্তু
তাদেরকে কে শিখিয়েছেন ? এরকম তো বলবে না যে স্পিরিচুয়াল ফাদার শিখিয়েছেন। বাবা
তো শেখাচ্ছেনই আত্মিক বাচ্চাদেরকে। তোমরা সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণরাই এটা বুঝতে পারো।
ব্রাহ্মণ সেই হবে যে আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের হবে। তোমরা ব্রাহ্মণরা হলে
অল্পসংখ্যক। দুনিয়াতে তো ভিন্ন ভিন্ন ধরনের অনেক জাতি আছে। একটা বই তো অবশ্যই হবে
যার দ্বারা জানা যাবে যে এই দুনিয়াতে কত ধর্ম, কত ভাষা আছে। তোমরা জানো যে এসব
কিছুই থাকবে না। সত্যযুগে তো এক ধর্ম, এক ভাষাই ছিল। সৃষ্টিচক্রকে তোমরা জেনেছো।
তাে ভাষাকেও জানতে পারবে যে এইসব থাকবে না। এতসবাই শান্তিধামে চলে যাবে। এই
সৃষ্টিচক্রের জ্ঞান এখন বাচ্চারা তোমাদেরই প্রাপ্ত হয়েছে। বাচ্চারা তোমরা মানুষদেরকে
বোঝাচ্ছ, তবুও তারা কিছুই বোঝে না। কোনও বড় ব্যক্তির দ্বারা ওপেনিংও এইজন্য করাও
যে সে হলো অনেক বিখ্যাত। চারিদিকে রটে যাবে যে - বাঃ প্রেসিডেন্ট, প্রাইম মিনিস্টার
ওপেনিং করেছেন। এই বাবা যদি যান, তো মানুষ কি বুঝতে পারবে যে পরমপিতা পরমাত্মা ওপেনিং
করেছেন, তারা মানবে না। কোনও বিখ্যাত ব্যক্তি, কমিশনার ইত্যাদি যদি আসেন তো তার
পিছনে পিছনে অনেকে আসবে। এঁনার পিছনে তো কেউ আসবে না। এখন তোমাদের, ব্রাহ্মণ
সন্তানদের সংখ্যা হল কম। যখন তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হবে, তখন বুঝবে। এখন যদি বুঝে
যায় তো বাবার কাছে ছুটে আসবে। কেউ একজন, বাচ্চীকে বলেছিল যে যিনি তোমাদেরকে এসব
শিখিয়েছেন, আমরা প্রত্যক্ষভাবে কেননা তাঁর কাছে যাই! কিন্তু সূঁচের উপর জং লেগে আছে,
তাহলে চুম্বকের আকর্ষণ কি করে হবে? জং যখন সম্পূর্ণভাবে সরে যাবে তখন চুম্বক তাকে
আকড়ে ধরবে। সূঁচের একটি কোণেও যদি জং লেগে থাকে তো ততটা আকর্ষণ করতে পারবে না।
সমস্ত জং সরে যাবে, সেটা তো পরে যখন এইরকম হবে তখন পুনরায় বাবার সাথে বাড়ি ফিরে
যাবে। এখন তো এই চিন্তা আছে যে আমরা তমোপ্রধান হয়ে গেছি, জং লেগে আছে। যত স্মরণ
করবে, ততই জং পরিষ্কার হতে থাকবে। আস্তে আস্তে সমস্ত জং ছেড়ে যাবে। জং লেগেওছে
আস্তে আস্তে তাইনা, পুনরায় ছাড়বেও এইভাবে। যেরকমভাবে জং লেগেছে, সেরকমভাবেই সাফ হবে,
তারজন্য বাবাকে স্মরণও করতে হবে। স্মরণের দ্বারা কারো অধিক জং ছেড়ে যায়, কারো কম।
যার জং যত বেশী ছেড়ে যাবে ততই সে অন্যদেরকে বোঝানোর জন্য আকর্ষণ করবে। এটা হল
অত্যন্ত সূক্ষ্ম কথা। স্থুল বুদ্ধিসম্পন্ন আত্মারা এসব বুঝতে পারবে না। তোমরা জানো
যে রাজত্ব স্হাপন হচ্ছে। বোঝানোর জন্যও দিন-প্রতিদিন যুক্তি বের হতে থাকছে। আগে কি
জানা ছিল যে প্রদর্শনী, মিউজিয়াম ইত্যাদি তৈরি হবে। পরবর্তীকালে হতে পারে আরো কিছু
বেরোবে। এখনও সময় হাতে আছে, স্থাপনা হবে। হার্ট ফেলও হয়ে যেও না।
কর্মেন্দ্রিয়গুলিকে বশ করতে না পারলে তো ভেঙে পড়ে। বিকারে গেলে তো পুনরায় সূঁচের
উপর অনেক জং লেগে যাবে। বিকারের দ্বারা অধিক বেশি জং লাগতে থাকে। সত্যযুগ ত্রেতাতে
একদম অল্প, পুনরায় অর্ধেক কল্পে তাড়াতাড়ি জং লাগতে থাকে। নিচের দিকে নামতে থাকে
এইজন্য নির্বিকারী আর বিকারী বলা হয়ে থাকে। নির্বিকারী হলো দেবতাদের নিদর্শন, তাই
না! বাবা বলছেন যে দেবী-দেবতা ধর্ম প্রায় লোপ হয়ে গেছে। কিন্তু নিদর্শনগুলি তো রয়ে
গেছে, তাই না। সব থেকে ভালো নিদর্শন হল এই চিত্র। তোমরা এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র
নিয়ে পরিক্রমা করতে পারো, কেননা তোমরা এটা হচ্ছ তাই না। রাবণ রাজ্যের বিনাশ,
রামরাজ্যে স্থাপনা হচ্ছে। এই হল রামরাজ্য, এই হল রাবণ রাজ্য আর এই হল সঙ্গম। অনেক
অনেক পয়েন্টস্ আছে। ডাক্তারদের বুদ্ধিতে অনেক ওষুধ মনে থাকে। ব্যারিস্টারের
বুদ্ধিতেও অনেক প্রকারের পয়েন্টস্ থাকে। অনেক টপিকস্ এর খুব ভালো একটা বই তৈরি হতে
পারে। তারপর যখন কোথাও ভাষণ দিতে যাবে তখন পয়েন্টগুলিকে নজর থেকে বের করো। তীক্ষ্ণ
বুদ্ধিযুক্ত আত্মারা ঝট করে দেখে নেবে। প্রথমে তো লিখতে হবে যে এইভাবে এইভাবে বোঝাবো।
ভাষণ করার পরেও স্মরণে আসে, তাই না! এইরকম ভাবে যদি বোঝাতাম তাহলে আরো ভালো হতো। এই
পয়েন্টস্ অন্যদেরকে বোঝালে তাদের বুদ্ধিতে বসবে। টপিকস্ এর লিস্ট বানাতে হবে। তারপর
একটা টপিক বেঁছে নাও, নিজের মনে মনে ভাষণ করতে থাকো বা লিখতে থাকো। তারপর দেখতে হবে
যে সব পয়েন্টস্ লেখা হয়েছে। যত মাথা খাটাবে ততোই ভালো। বাবা তো বোঝেন যে ইনি হলেন
সবথেকে ভালো সার্জেন, এনার বুদ্ধিতে অনেক পয়েন্টস্ আছে। ভরপুর হয়ে গেলে তো সেবা
ছাড়া মজাই আসবে না।
তোমরা প্রদর্শনী করতে
থাকো, কোথাও ২-৪ জন বা কোথাও ৬-৮ জন বেরিয়ে আসে। কোথাও তো আবার একজনও বেরিয়ে আসে
না। দেখেছে হাজার জন কিন্তু বেরোলো কত অল্প, এইজন্য এখন বড় বড় চিত্র বানাতে থাকে।
তোমরা সতর্ক হয়ে যাচ্ছ। বড় বড় ব্যক্তিদের কি অবস্থা, সেটাও তোমরা দেখছো। বাবা
বুঝিয়েছেন যে, চেক করতে হবে যে কাদেরকে এই জ্ঞান দেওয়া উচিত। নাড়ি দেখতে হবে যারা
আমার ভক্ত। গীতা পাঠীদেরকে মুখ্য কথা একটাই বোঝাও যে - ভগবান উঁচুর থেকেও উঁচুকেই
বলা যায়। তিনি হলেন নিরাকার। কোনও দেহধারী মানুষকে ভগবান বলা যায়না। বাচ্চারা
তোমাদের এখন সবকিছু বোধগম্য হয়েছে। সন্ন্যাসীরাও ঘরের সন্ন্যাস করে পালিয়ে যায়।
কোনও ব্রহ্মচারীই চলে যায়। পুনরায় দ্বিতীয় জন্মেও এইরকমই হয়ে থাকে। জন্ম তো
অবশ্যই মাতার গর্ভ থেকেই নিয়ে থাকে। যতক্ষণ না বিবাহ না করে, ততক্ষণ বন্ধনমুক্ত
থাকে, এতকিছু সম্বন্ধী ইত্যাদি স্মরণে আসে না। বিবাহ করলে তো সম্বন্ধ স্মরণে আসবে।
সময় লাগবে, তাড়াতাড়ি বন্ধনমুক্ত হতে পারে না। নিজের জীবন কাহিনী সম্বন্ধে তো
সকলেরই জানা আছে। সন্ন্যাসীরা বোঝে যে, প্রথমে আমরা গৃহস্থী ছিলাম তারপর সন্ন্যাস
করেছি। তোমাদের হল বড় সন্ন্যাস এই জন্য পরিশ্রম হয়। সেইসব সন্ন্যাসীরা গায়ে
ছাই-ভষ্ম লাগায়, মাথার চুল পরিত্যাগ করে, পোশাক পরিবর্তন করে। তোমাদের তো এরকম কিছু
করার দরকার নেই। এখানে তো পোশাক পরিবর্তন করারও কথা নেই। তোমরা যদি সাদা শাড়ি নাও
পরিধান করো, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। এটা তো হল বুদ্ধির জ্ঞান। আমরা হলাম আত্মা,
বাবাকে স্মরণ করতে হবে, তবেই জং সরে যাবে আর আমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবো। বাড়ি তো
সবাইকেই ফিরে যেতে হবে। কেউ যোগবলের দ্বারা পবিত্র হয়ে যাবে, কেউ শাস্তি খেয়ে যাবে।
বাচ্চারা তোমাদের জং ছাড়ানোর জন্যই পরিশ্রম করতে হয়, এইজন্য একে যোগঅগ্নিও বলা হয়ে
থাকে। অগ্নিতেই পাপ ভস্মীভূত হয়। তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। কামচিতাকেও অগ্নি বলা হয়।
কাম অগ্নিতে জ্বলে পুড়ে কালো হয়ে গেছো। এখন বাবা বলছেন গোরা হও। এইসব কথা তোমরা
ব্রাহ্মণেরা ছাড়া কারো বুদ্ধিতে বসবে না। এই কথাগুলিই হল সবার থেকে আলাদা। তোমাদের
উদ্দেশ্যে বলে যে, এরা তো শাস্ত্রকেও মানে না। নাস্তিক হয়ে গেছে। বলো, শাস্ত্রতো
আমরা পড়তাম, তারপর তো বাবা এসে জ্ঞান প্রদান করলেন। জ্ঞানের দ্বারাই সদ্গতি প্রাপ্ত
হয়। ভগবানুবাচ, বেদ-উপনিষদ ইত্যাদি পড়ে, দান-পূণ্য করে কেউই আমাকে প্রাপ্ত করতে পারে
না। আমার দ্বারাই আমাকে প্রাপ্ত করতে পারবে। বাবাই এসে আমাদেরকে যোগ্য বানাচ্ছেন।
আত্মার উপর জং লেগে গেলে তখন বাবাকে আহ্বান করে, বলে যে, এসে পবিত্র বানাও। যে আত্মা
তমোপ্রধান হয়ে গেছে তাকেই সতোপ্রধান হতে হয়, তমোপ্রধান থেকে তমঃ, রজঃ, সতঃ পুনরায়
সতোপ্রধান হতে হয়। আর যদি মাঝপথে গন্ডগোল হয়, তবে পুনরায় জং লেগে যাবে।
বাবা আমাদেরকে এতো
উঁচু বানাচ্ছেন, তো সেই খুশীতে থাকতে হবে, তাই না! বিদেশে যখন পড়তে যায় তখন খুশীতে
যায় তাই না! এখন তোমরা অনেক বোঝদার হচ্ছ। কলিযুগে তোমরা কতোখানি তমোপ্রধান অবুঝ হয়ে
যাও! যতই ভালোবাসো, তত আরো বেশী মোকাবিলা করতে। বাচ্চারা তোমরা বুঝতে পারছ যে,
আমাদের রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। যে ভালো রীতি পড়বে, স্মরণে থাকবে সে ভালো পদ পাবে।
চারাগাছ রোপন করা ভারত থেকেই শুরু হয়। দিন দিন খবরের কাগজে তোমাদের নাম খ্যাত হতে
থাকবে। খবরের কাগজের প্রতিনিধিরা তো সবদিকে যায়। সেই প্রতিনিধিদেরকে যদি দেখো তো
দেখবে, তারা কখনও ভালো খবর ছাপায় তো কখনও খারাপ, কেননা তারাও শোনা কথা অনুসারে চলে,
তাই না! যে যেটা শোনায়, সেটাই তারা ছাপিয়ে দেয়। শোনা কথার পরিপ্রেক্ষিতে তারা চলতে
থাকে, একে পরমত বলা হয়। পরমত আসুরিক মত হয়ে যায়। বাবার হল শ্রীমত। কেউ যদি
উল্টোপাল্টা কথা বলে তো ব্যস্, আসাই ছেড়ে দেয়। যে সেবা করে, তার এবিষয়ে জ্ঞান থাকে।
এখানে তোমরা যাকিছু সেবা করে থাকো, এটাই হল তোমাদের নম্বর ওয়ান সেবা। এখানে তোমরা
সেবা করো, সেখানে ফল প্রাপ্ত হয়। কর্তব্য তো এখানে বাবার সাথে করে থাকো, তাই না।
আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
আত্মা রূপী সূঁচের উপর জং লেগে গেছে, যোগবলের দ্বারা তাকে সরিয়ে সতোপ্রধান হওয়ার
পরিশ্রম করতে হবে। লোকের কথা শুনে কখনও পড়াশোনা ছেড়ে দিও না।
২ ) বুদ্ধিতে জ্ঞানের
পয়েন্টস্ দিয়ে ভরপুর করে সেবা করতে হবে। নাড়ি দেখে জ্ঞান শোনাতে হবে। অত্যন্ত
তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন হতে হবে।
বরদান:-
কলিযুগী
দুনিয়ার দুঃখ অশান্তির সীন দেখেও সদা সাক্ষী এবং অসীমের বৈরাগী ভব
এই কলিযুগী দুনিয়াতে
যাকিছু হয়, তাতে তোমাদের সদা উন্নতিই হয়। দুনিয়ার জন্য হাহাকার আর তোমাদের জন্য হল
জয়জয়কার। তোমরা কোনও পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে যাবে না, কেননা তোমরা পূর্ব থেকেই তৈরী আছো।
সাক্ষী হয়ে প্রত্যেক প্রকারের খেলা দেখছো। কেউ কাঁদছে, কেউ চিৎকার করছে, সাক্ষী হয়ে
দেখলে মজা আসে। যে কলিযুগী দুনিয়ার দুঃখ অশান্তির সীন সাক্ষী হয়ে দেখে সে সহজেই
অসীমের বৈরাগী হয়ে যায়।
স্লোগান:-
যেকোনও
ধরণী তৈরী করার জন্য বাণীর সাথে সাথে বৃত্তির দ্বারাও সেবা করো।
অব্যক্ত ঈশারা :- এখন
সম্পন্ন বা কর্মাতীত হওয়ার ধুন লাগাও
যেরকম কোনও মেশিনারীকে
সেট করা যায় তো একবার সেট করার পর অটোমেটিক্যালি চলতেই থাকে। এই রীতিতে নিজের
সম্পূর্ণ স্টেজ বা বাবার সমান স্টেজ বা কর্মাতীত স্থিতির স্টেজের সেটকে এমন করে সেট
করে দাও যে পুনরায় সংকল্প, শব্দ বা কর্ম সেই সেটিংস অনুসারে অটোমেটিক চলতেই থাকে।