30.07.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
মায়া শত্রু তোমাদের সামনে রয়েছে সেইজন্য নিজেকে খুব সাবধানে রাখবে, যদি চলতে-চলতে
মায়াতে ফেঁসে যাও তাহলে নিজের ভাগ্যের সামনে রেখা টেনে দেবে”
প্রশ্নঃ -
তোমাদের,
রাজযোগী বাচ্চাদের মুখ্য কর্তব্য কী?
উত্তরঃ
পড়া আর পড়ানো,
এটাই হলো তোমাদের মুখ্য কর্তব্য। তোমরা ঈশ্বরীয় মতে চলছো। তোমাদেরকে কোনও বনে জঙ্গলে
যেতে হবে না। ঘর-গৃহস্থে থেকে শান্তিতে বসে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। অল্ফ আর বে (বাবা
আর বাদশাহী) - এই দুই শব্দের মধ্যে তোমাদের সমস্ত পড়া এসে যায়।
ওম্ শান্তি।
বাবাও ব্রহ্মার দ্বারা বলতে পারেন যে বাচ্চারা গুড মর্নিং। কিন্তু তারপর
বাচ্চাদেরকেও রেসপন্ড দিতে হবে। এখানে হলই বাবা আর বাচ্চাদের মধ্যে কানেকশন। নতুন
যারা আছে, যতক্ষণ না পরিপক্ব হচ্ছে, ততক্ষণ কিছু না কিছু জিজ্ঞেস করতেই থাকবে। এটা
তো পড়াশোনা, ভগবানুবাচও লেখা আছে। ভগবান হলেন নিরাকার। এটা বাবা ভালোভাবে পাক্কা
করিয়ে দেন, কাউকে বোঝাবার জন্য, কেননা ওইপারে আছে মায়ার জোর। এখানে তো মায়ার জোর
নেই। বাবা তো বুঝতে পারেন যে, যারা কল্প পূর্বে উত্তরাধিকার নিয়েছে তারা আপনা হতেই
এসে যাবে। এমন নয় যে অমুক আত্মা যেন ছেড়ে চলে না যায়, একে ধরে রাখো। চলে গেলে চলে
যাবে। এখানে তো জীবিত থেকেও মৃতবৎ হয়ে থাকতে হবে। বাবা এডাপ্ট করেন। এডাপ্ট করা
হয়েই থাকে কিছু উত্তরাধিকার দেওয়ার জন্য। বাচ্চারা মা-বাবার কাছে আসেই
উত্তরাধিকারের লোভে। ধনীর বাচ্চা কখনও গরীবের ঘরে এডাপ্ট হবে কী! এত ধন দৌলত ইত্যাদি
সবকিছু ছেড়ে কিভাবে যাবে। এডাপ্ট করে ধনী ব্যক্তিরা। এখন তোমরা জেনে গেছো যে বাবা
আমাদেরকে স্বর্গের বাদশাহী দিচ্ছেন। কেন আমি তাঁর বাচ্চা হব না! প্রত্যেক বিষয়ে লোভ
তো থাকে। যত বেশী পড়বে ততই বড় লোভ হবে। তোমরাও জানো যে বাবা আমাদেরকে এডাপ্ট করেছেন
অসীম জগতের উত্তরাধিকার দেওয়ার জন্য। বাবাও বলেন যে তোমাদের সবাইকে আমি পুনরায় পাঁচ
হাজার বছর পূর্বের ন্যায় এডাপ্ট করি। তোমরাও বলে থাকো যে বাবা আমি তোমার। পাঁচ
হাজার বছর পূর্বেও তোমার হয়েছিলাম। তোমরা প্র্যাক্টিক্যালে কতজন ব্রহ্মাকুমার-কুমারী
আছো। প্রজাপিতাও তো হলেন সুনামধন্য। যতক্ষণ শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ না হবে, ততক্ষণ
দেবতা হতে পারবে না। বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে এখন এই চক্র আবর্তিত হতে থাকে - আমি
শূদ্র ছিলাম, এখন ব্রাহ্মণ হয়েছি পুনরায় দেবতা হতে হবে। সত্যযুগে আমরা রাজ্য করবো।
তো এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ অবশ্যই হবে। সম্পূর্ণ নিশ্চয় না হলে ছেড়ে চলে যায়। কিছু
বাচ্চা আছে যারা পতিত হয়ে যায়, এটাও ড্রামাতে পূর্ব নির্ধারিত আছে। মায়া শত্রু সামনে
দাঁড়িয়ে আছে, তো সে নিজের দিকে আকর্ষণ করে নেয়। বাবা প্রতি মুহুর্তে পাক্কা
করাচ্ছেন, মায়ার জালে ফেঁসে যেও না, না হলে তো নিজের ভাগ্যের সামনে রেখা টেনে দেবে।
বাবা-ই জিজ্ঞেস করতে পারেন যে আগে কবে মিলিত হয়েছো? আর কারোর এটা জিজ্ঞেস করার
ক্ষমতাই নেই। বাবা বলছেন আমাকেও পুনরায় গীতা শোনাতে আসতে হয়। এসে তোমাদেরকে রাবণের
জেল থেজে মুক্ত করতে হয়। অসীমের বাবা অসীমের কথা বোঝাচ্ছেন। এখন হল রাবণের রাজ্য,
পতিত রাজ্য, যেটা অর্ধেক কল্প থেকে শুরু হয়েছে। রাবণের ১০টি মাথা দেখিয়েছে, বিষ্ণুর
চার হাত দেখিয়েছে। এরকম কোনও মানুষ হয় না। এখানে তো প্রবৃত্তি মার্গ দেখানো হয়েছে।
এটা হল এইম্-অবজেক্ট, বিষ্ণুর দ্বারা পালনা। বিষ্ণুপুরীকে কৃষ্ণপুরীও বলা হয়।
শ্রীকৃষ্ণের তো দুটি বাহুই দেখানো হয়। সাধারণ মানুষ তো কিছুই বুঝতে পারে না। বাবা
প্রত্যেক কথা বুঝিয়ে বলছেন। সেইসব হল ভক্তি মার্গ। এখন তোমাদের কাছে জ্ঞান আছে,
তোমাদের এইম্-অবজেক্টই হল নর থেকে নারায়ণ হওয়ার। এই গীতা পাঠশালা হলোই জীবন্মুক্তি
প্রাপ্ত করার জন্য। ব্রাহ্মণ তো অবশ্যই চাই। এ হলো রূদ্র জ্ঞান যজ্ঞ। শিবকে রূদ্রও
বলা হয়। এখন বাবা জিজ্ঞেস করছেন জ্ঞান যজ্ঞ কৃষ্ণের নাকি শিবের? শিবকে পরমাত্মাই বলা
হয়, শংকরকে দেবতা বলা হয়। ভক্তিতে আবার শিব আর শঙ্করকে এক করে দিয়েছে। এখন বাবা
বলছেন আমি এর মধ্যে প্রবেশ করেছি। তোমরা বাচ্চারা বলে থাকো বাপদাদা। তারা বলে
শিব-শঙ্কর। জ্ঞান সাগর তো হলেনই এক।
এখন তোমরা জেনে গেছো
যে জ্ঞানের দ্বারাই ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু হয়। চিত্রও সেই অনুসারে তৈরী করে। বিষ্ণুর
নাভী থেকে ব্রহ্মা বেরিয়েছে। এর অর্থও কেউ বুঝতে পারে না। ব্রহ্মার হাতে শাস্ত্র
দেখিয়েছে। এখন শাস্ত্রের সার বাবা বসে শোনাচ্ছেন নাকি ব্রহ্মা? ইনিও মাস্টার জ্ঞান
সাগর তৈরী হন। বাদবাকি চিত্র এত অধিক বানিয়েছে যেগুলো যথার্থ নয়। সেসব হলো ভক্তি
মার্গের। ৮-১০ বাহু বিশিষ্ট কোনও মানুষ হয় না। এখানে তো কেবল প্রবৃত্তি মার্গ দেখানো
হয়েছে। রাবণেরও অর্থ বলেছেন - অর্ধেক কল্প হল রাবণ রাজ্য, রাত। অর্ধেক কল্প হল রাম
রাজ্য, দিন। বাবা প্রত্যেক কথা বোঝাচ্ছেন। তোমরা সবাই হলে এক বাবার বাচ্চা। বাবা
ব্রহ্মার দ্বারা বিষ্ণুপুরী স্থাপন করছেন। আর তোমাদেরকে রাজযোগ শেখাচ্ছেন। অবশ্যই
সঙ্গমের সময়েই রাজযোগ শেখাবেন। দ্বাপড়ে গীতা শোনানো হয়েছে - এটা তো রং হয়ে যায়। বাবা
সত্য বলছেন। অনেকেরই ব্রহ্মার, শ্রীকৃষ্ণের সাক্ষাৎকার হয়েছে। ব্রহ্মাকে শ্বেত
শুভ্র বসনেই দেখা যায়। শিববাবা তো হলেন বিন্দু। বিন্দুর সাক্ষাৎকার হলে তো কিছু
বুঝতে পারবে না। তোমরা বলো যে আমরা হলাম আত্মা, এখন আত্মাকে কে দেখেছে, কেউ না।
আত্মা তো হল বিন্দু। বুঝতে পারো তাই না। যে, যে ভাবনা নিয়ে যাকে পূজা করে, তার কাছে
সে-ই রূপই সাক্ষাৎকার হবে। অন্য রূপ দেখলে তো দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। হনুমানের পূজা
করলে তো তার কাছে হনুমানেরই সাক্ষাৎকার হবে। গনেশের পূজারী গনেশকেই দেখবে। বাবা
বলছেন আমি তোমাদেরকে এত ধনবান বানিয়েছি যে, সেখানে হিরে জহরতের মহল ছিল, তোমাদের
কাছে অগণিত ধন ছিল, তোমরা এখন সেই সব কোথায় হারিয়ে ফেলেছো? এখন তোমরা কাঙ্গাল হয়ে
গেছো, ভিক্ষা চাইছো। বাবা তো বলতে পারেন, তাই না। এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝতে পারো যে
বাবা এসেছেন, আমরা পুনরায় বিশ্বের মালিক হতে চলেছি। এই ড্রামা অনাদি তৈরী হয়ে আছে।
প্রত্যেকে ড্রামাতে নিজের নিজের পার্ট অভিনয় করছে। কেউ এক শরীর ছেড়ে গিয়ে অন্য শরীর
নেয়, এতে কান্নাকাটির কি কথা আছে? সত্যযুগে কখনও কাঁদবে না। এখন তোমরা মোহজীৎ হচ্ছ।
মোহজীৎ রাজা হলেন এই লক্ষ্মী-নারায়ণ। সেখানে মোহ থাকবে না। বাবা অনেক প্রকারের কথা
বোঝাচ্ছেন। বাবা হলেন নিরাকার। সাধারণ মানুষ তো তাঁকে নাম রূপ তেকে পৃথক বলে দিয়েছে।
কিন্তু নাম রূপ নেই এমন কোনও জিনিস থোরাই হয়! হে ভগবান, ও গড ফাদার বলে, তাই না। তো
নাম রূপ আছে তাই না। লিঙ্গ-কে শিব পরমাত্মা, শিববাবাই বলে। বাবা তো অবশ্যই আছেন তাই
না। অবশ্যই বাবার বাচ্চাও থাকবে। নিরাকারকে নিরাকার বাচ্চারাই বাবা বলে ডাকে।
মন্দিরে গেলে তো তাঁকে বলবে শিববাবা আবার ঘরে এসে বাবাকেও বলে বাবা। অর্থ তো বুঝতে
পারে না।, আমরা তাঁকে শিববাবা কেন বলি! বাবা সবথেকে বড় পড়া দুই অক্ষরে পড়ান - অল্ফ
আর বে। অল্ফ-কে স্মরণ করো তো বে-বাদশাহী হল তোমাদের। এটা হলো অনেক বড় পরীক্ষা।
মানুষ যখন বড় পরীক্ষায় পাস করে তখন প্রথম দিকের পড়া থােড়াই কারোর স্মরণে থাকে। পড়তে
পড়তে অবশেষে সার সংক্ষেপ বুদ্ধিতে এসে যায়। এটাও এইরকম। তোমরা পড়তে এসেছো। অন্তে
পুনরায় বাবা বলছেন মন্মনা ভব, তাহলে দেহের অভিমান ভেঙে যাবে। এই মন্মনা ভব-র অভ্যাস
পড়ে গেলে অন্তিম সময়েও বাবা আর উত্তরাধিকার স্মরণে থাকবে। মুখ্য হলই এটা, কত সহজ।
লৌকিক পড়াতেও এখন তো না জানি কি কি পড়ায়। যেরকম রাজা সেরকম তার নীতি চালায়। আগে মণ,
সের, পাও এর হিসাব চলতো। এখন তো কিলো ইত্যাদি কত কি বেরিয়েছে। কত আলাদা আলাদা
প্রান্ত হয়ে গেছে। দিল্লীতে যে জিনিসটা এক পয়সা সের ছিল, বম্বে তে সেটা পাওয়া যেত ২
পয়সা সের। কেননা প্রান্ত আলাদা আলাদা ছিল। প্রত্যেকেই মনে করতো আমি নিজের প্রান্তের
মানুষ জনকে থোড়াই ক্ষুধার্ত রাখবো। কত ঝগড়া ইত্যাদি হয়, কত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
ভারত কতই না সলভেন্ট
ছিল, পুনরায় ৮৪ র চক্র পরিক্রমা করে ইনসলভেন্ট হয়ে গেছে। বলা হয় যে - মূল্যহীন কড়ি-র
পিছুনে ছুটতে গিয়ে হিরের মত জীবন হারিয়ে ফেলেছে... বাবা বলছেন তোমরা কড়ির পিছুনে
ছুটে কেন মরছো। এখন তো বাবার থেকে উত্তরাধিকার নাও, পবিত্র হও। আহ্বানও করে থাকো -
হে পতিত-পাবন এসো, পাবন বানাও। তো এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে তোমরা পাবন ছিলে, এখন
নেই। এখন হলই কলিযুগ। বাবা বলছেন আমি পাবন দুনিয়া বানাবো তো পতিত দুনিয়ার অবশ্যই
বিনাশ হবে এইজন্যই এই মহাভারতের যুদ্ধ কথিত আছে যেটা এই রূদ্র জ্ঞান যজ্ঞের দ্বারাই
প্রজ্বলিত হয়েছে। ড্রামাতে তো এই বিনাশ হওয়াও পূর্ব নির্ধারিত আছে। সবার প্রথমে তো
বাবার সাক্ষাৎকার হয়েছে। দেখে যে এত বড় রাজত্ব প্রাপ্ত হচ্ছে তখন অনেক খুশী হয়,
তারপর বিনাশের সাক্ষৎকারও করায়। মন্মনা ভব, মধ্যাজী ভব। এটা হল গীতার শব্দ। গীতার
কিছু কিছু শব্দ ঠিক আছে। বাবাও বলছেন আমি তোমাদেরকে এই জ্ঞান শোনাচ্ছি, এটা আবার
প্রায়ঃলোপ হয়ে যাবে। এটা কারোরই জানা নেই যে একসময় লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল,
তখন অব্য কোনও ধর্ম ছিল না। সেই সময় জনসংখ্যা খুব কম ছিল, এখন কতো বেশী হয়ে গেছে।
তো এই পরিবর্তন হওয়া চাই। অবশ্যই বিনাশও চাই। মহাভারতের যুদ্ধও আছে। অবশ্যই ভগবানও
থাকবেন। শিব জয়ন্তী পালন করে তো শিব বাবা এসে কি করেছেন? সেটাও জানে না। এখন বাবা
বোঝাচ্ছেন, গীতা থেকেই শ্রীকৃষ্ণের আত্মা রাজ্য প্রাপ্ত করে। গীতাকে মাতা-পিতা বলবে,
যার দ্বারা তোমরা পুনরায় দেবতা হচ্ছ। গীতার জ্ঞান থেকে রাজযোগ শিখে শ্রীকৃষ্ণ এইরকম
হয়েছেন। তারা আবার গীতাতে শিববাবার পরিবর্তে শ্রীকৃষ্ণের নাম দিয়ে দিয়েছে। তো বাবা
বোঝাচ্ছেন, এটা তো নিজেদের মধ্যে পাক্কা নিশ্চয় করে নাও, কেউ যেন উল্টো-পাল্টা কথা
শুনিয়ে তোমাদের নিচে নামিয়ে না দিতে পারে। অনেক কথা জিজ্ঞেস করতে থাকে - বিকার ছাড়া
সৃষ্টি কিভাবে চলবে? এটা কিভাবে হবে? আরে, তোমরা নিজেরা বলছো - সেটা ভাইসলেস দুনিয়া
ছিল। সম্পূর্ণ নির্বিকারী বলে থাকো তাই না, তাহলে বিকারের কথা কিভাবে হতে পারে? এখন
তোমরা জেনে গেছো যে অসীম জগতের বাবার থেকে অসীম জগতের বাদশাহী প্রাপ্ত হচ্ছে, তো
এইরকম বাবাকে কেন স্মরণ করবে না? এটা হলোই পতিত দুনিয়া। কুম্ভ মেলায় কত লক্ষাধিক
মানুষ যায়। এখন বলে যে সেখানে এক নদী গুপ্ত আছে। এখন, নদী গুপ্ত হতে পারে কী?
এখানেও গোমুখ বানিয়েছে। বলে যে গঙ্গা এখানে আসে। আরে, গঙ্গা নিজের রাস্তা দিয়ে
সমুদ্রে যাবে নাকি এখানে তোমাদের কাছে পাহাড়ে আসবে। ভক্তি মার্গে কত ধাক্কা খেতে হয়।
জ্ঞান ভক্তি, তারপর হল বৈরাগ্য। এক হল লৌকিক জগতের বৈরাগ্য, অন্যটি হল অসীম জগতের।
সন্ন্যাসীরা ঘরবাড়ি ছেড়ে জঙ্গলে গিয়ে থাকে, এখানে তো সেসব কথা নেই। তোমরা বুদ্ধি
দিয়ে সমগ্র পুরাবো দুনিয়ার সন্ন্যাস করছো। তোমাদের, রাজযোগী বাচ্চাদের মুখ্য
কর্তব্য হল পড়া আর পড়ানো। এখন রাজযোগ কোনও জঙ্গলে থোড়াই শেখানো হয়। এটা হল স্কুল।
ব্রাঞ্চেস্ (শাখা) বের হতে থাকে। বাচ্চারা তোমরা এখন রাজযোগ শিখছো। শিববাবার কাছ
থেকে পড়ে ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণীরা শেখায়। এক শিববাবা থোড়াই সবাইকে বসিয়ে শেখাবেন। তো
এটা হল পান্ডব গভর্নমেন্ট। তোমরা ঈশ্বরীয় মতে চলছো। এখানে তোমরা কত শান্তিতে বসে আছো,
বাইরে তো অনেক হাঙ্গামা হয়। বাবা বলছেন পাঁচ বিকারের দান দাও তাহলে গ্রহণ কেটে যাবে।
আমার হও, তাহলে আমি তোমাদের সকল মনোস্কামনা পূরণ করে দেবো। বাচ্চারা তোমরা জানো যে
এখন আমরা সুখধামে যাচ্ছি, দুঃখধামে আগুন লেগে যাবে। বাচ্চারা বিনাশের সাক্ষৎকারও
করেছে। এখন টাইম খুবই অল্প এইজন্য স্মরণের যাত্রাতে লেগে গেলে বিকর্মও বিনাশ হবে আর
উঁচু পদও পেয়ে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার উত্তরাধিকারের পুরো অধিকার নেওয়ার জন্য জীবিত থেকেও মৃতবৎ হয়ে থাকতে হবে।
অ্যাডপ্টেড হয়ে যেতে হবে। কখনও নিজের উঁচু ভাগ্যের সামনে রেখা টেনে দেবে না।
২ ) কোনও উল্টো-পাল্টা
কথা শুনে সংশয়ে আসবে না। নিশ্চয় যেন এতটুকুও খন্ডিত না হয়। এই দুঃখধামে এখন আগুন
লাগবে সেইজন্য এর থেকে নিজের বুদ্ধিযোগ বের করে দিতে হবে।
বরদান:-
বিশেষত্বরূপী সঞ্জীবনী বুটির দ্বারা মুর্ছিতকে সুরজীৎ কারী বিশেষ আত্মা ভব
প্রত্যেক আত্মাকে
শ্রেষ্ঠ স্মৃতির, বিশেষত্বগুলির স্মৃতিরূপী সঞ্জীবনী বুটি খাওয়াও তাহলে সে মূর্ছিত
থেকে সুরজীৎ হয়ে যাবে। বিশেষত্বগুলির স্বরূপের দর্পণ তার সামনে রাখো। অন্যদেরকে
স্মরণ করিয়ে দিলে তোমরা বিশেষ আত্মা হয়েই যাবে। আর যদি কাউকে তার নিজের
দুর্বলতাগুলিকে শোনাও তাহলে সে লুকিয়ে যাবে, স্বীকার করবে না। তোমরা তার
বিশেষত্বগুলিকে শোনাও তাহলে সে নিজেই নিজের দুর্বলতাগুলিকে স্পষ্ট অনুভব করবে। এই
সঞ্জীবনী বুটির দ্বারা মূর্ছিতকে সুরজীৎ করে উড়তে থাকো আর অন্যদেরকেও ওড়াতে থাকো।
স্লোগান:-
নাম-মান-মর্যাদা (শান) এবং সাধন গুলির সংকল্পকেও ত্যাগ করা হলো মহান ত্যাগ।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ সেবার নিমিত্ত হও
নিমিত্ত হওয়া
বাচ্চাদের বিশেষ নিজের প্রত্যেক সংকল্পের উপরে অ্যাটেনশন দিতে হবে, যখন তোমরা
নির্বিকল্প, নির্ব্যর্থ সংকল্পে থাকবে তখন বুদ্ধি সঠিক নির্ণয় করবে, নির্ণয় ঠিক
থাকলে তো নিবারণও সহজে করে নিতে পারবে। নিবারণ করার পরিবর্তে যদি নিজেই কারণ-কারণ
বলতে থাকে তাহলে তোমাদের পরে আসা আত্মারাও প্রত্যেক কথাতে কারণ বলতে থাকবে।