06-07-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
18-01-2006 মধুবন
“সংকল্প, সময় আর বোলের সঞ্চয়ের স্কিম দ্বারা
সফলতার সেরিমনি উদযাপন করো, নিরাশ আত্মাদের মধ্যে আশার দীপ জ্বালাও"
আজ স্নেহের দিন। চতুর্দিকের সব বাচ্চা স্নেহের সাগরে সমাহিত হয়ে আছে। এই স্নেহ সহজ
যোগী বানায়। স্নেহ অন্যান্য সমস্ত আকর্ষণের ঊর্ধ্বে নিয়ে যায়। স্নেহের বরদান
তোমরা সব বাচ্চার জন্মের বরদান। স্নেহতে রয়েছে পরিবর্তন করানোর শক্তি। তো আজকের
দিনে চতুর্দিকে দু' প্রকারের বাচ্চা দেখেছেন। লভলি বাচ্চা তো সবাই কিন্তু এক হলো
লাভলি বাচ্চা, দ্বিতীয় বাচ্চা হলো লাভলিন বাচ্চা। লাভলিন বাচ্চারা প্রতিটা সংকল্প,
প্রতিটা শ্বাসে, প্রতিটা বোল, প্রতিটা কর্মে আপনা থেকেই বাবা সমান সহজ থাকে, কেন?
বাচ্চাদের বাবা সমর্থ ভব-র বরদান দিয়েছেন। আজকের দিনকে স্মৃতি দিবস তথা সমর্থ দিবস
বলো, কেন? বাবা আজকের দিনে নিজেকে ব্যাকবোন বানিয়েছেন আর লাভলিন বাচ্চাদের বিশ্বের
স্টেজে প্রত্যক্ষ করিয়েছেন। ব্যক্ত রূপে বাচ্চাদের প্রত্যক্ষ করিয়েছেন আর নিজে
অব্যক্ত রূপে সাথী হয়েছেন। আজকের এই স্মৃতি দিবস তথা সমর্থ দিবস বাচ্চাদের বালক হতে
মালিক বানিয়েছেন, সর্বশক্তিমান বাবাকে মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়ে প্রত্যক্ষ করানার
কার্য দিয়েছেন আর বাবা দেখে খুশি হন যে বাচ্চারা সবাই তাদের যোগ্যতা তথা শক্তি
অনুযায়ী বাবাকে প্রত্যক্ষ করানোর কার্যে অর্থাৎ বিশ্ব কল্যাণ করে বিশ্ব পরিবর্তন
করার কার্যে নিয়োজিত রয়েছে। বাবার দ্বারা সর্ব শক্তির যে অবিনাশী উত্তরাধিকার
তোমাদের প্রাপ্ত হয়েছে তা' স্ব এর জন্য এবং বিশ্বের আত্মাদের জন্য তোমরা কার্যে
প্রয়োগ করছ। বাপদাদাও এমন মাস্টার সর্বশক্তিমান, বাবা সমান উৎসাহ-উদ্দীপনায় থাকে
এমন অলরাউন্ড সেবাধারী, নিঃস্বার্থ সেবাধারী, অসীম দুনিয়ার সেবাধারী বাচ্চাদেরকে
হৃদয় থেকে পদম্ পদম্ গুন অভিনন্দন জানাচ্ছেন। অভিনন্দন, অভিনন্দন। দেশ বিদেশ উভয়ত:,
দেশের বাচ্চারাও কম নয় আর বিদেশের বাচ্চারাও কম নয়। বাপদাদা এমন বাচ্চাদের গভীর
হৃদয়ে মহিমাও করেন আর গীতও গেয়ে থাকেন - বাহ্! বাচ্চারা বাহ্! তোমরা সবাই বাহ্!
বাহ্! তোমরা বাচ্চা তো না! হাত নাড়াচ্ছে, খুব ভালো। বাপদাদা গর্বিত, বাচ্চাদের
জন্য তাঁর গর্ব হয় - সমগ্র কল্পে এমন কোনো বাবা নেই যার সব বাচ্চা স্বরাজ্য অধিকারী
রাজা। তোমরা সবাই স্বরাজ্য অধিকারী রাজা তো না? প্রজা নয় তো না! বাচ্চারা অনেকে
যখন আধ্যাত্মিক বার্তালাপ করে তখন তারা বলে ভবিষ্যতে আমি কী হবো সেই চিত্র আমাকে
দেখাও। বাপদাদা কী বলেন? পুরানো বাচ্চারা তো বলে জগদম্বা মা চিত্র দিতেন প্রত্যেককে।
তো আমাদেরও চিত্র দাও। বাপদাদা বলেন, প্রত্যেক বাচ্চাকে বাবা বিচিত্র দর্পণ
দিয়েছেন, সেই দর্পণে নিজের ভবিষ্যতের চিত্র দেখতে পারো যে আমি কে! জানো তোমরা? সেই
দর্পণ আছে তোমাদের কাছে? জানো তোমরা সেটা কোন দর্পণ? প্রথম লাইনের তোমরা তো
নিশ্চয়ই জানবে, তাই না! জানো? সেই দর্পণ হলো বর্তমান সময়ের স্বরাজ্য স্থিতির
দর্পণ। বর্তমান সময়ে যতটা তোমরা স্বরাজ্য অধিকারী সেই অনুযায়ী বিশ্বের রাজ্য
অধিকারী হবে। এখন নিজেকে নিজে দর্পণে দেখ তুমি স্বরাজ্য অধিকারী কিনা! নাকি কখনো
অধীন, কখনো অধিকারী? যদি কখনো অধীন, কখনো অধিকারী হও তবে কখনো তোমাদেরকে চোখ
প্রতারণা করে, কখনো মন প্রতারণা করে, কখনো মুখ প্রতারণা করে, কখনো কানও প্রতারণা করে।
ব্যর্থ বিষয়ে শোনার আগ্রহ তৈরি হয়। যদি কোনও কর্মেন্দ্রিয় প্রতারণা করে, পরবশ
বানিয়ে দেয় তাহলে এটাই প্রমাণ হয় যে বাবার দ্বারা যে সর্বশক্তি বরদান রূপে
প্রাপ্ত হয়েছে, কিম্বা উত্তরাধিকার হিসেবে প্রাপ্ত হয়েছে তার কন্ট্রোলিং পাওয়ার,
রুলিং পাওয়ার নেই। সুতরাং ভাবো, যে স্ব এর উপরে রুল করতে পারে না সে বিশ্বের উপরে
কীভাবে রুল করবে? নিজের বর্তমান স্থিতির স্বরাজ্য অধিকারীর দর্পণে চেক করো। দর্পণ
সকলের প্রাপ্ত হয়েছে তো না? দর্পণ যদি পেয়ে থাকো তো হাত উঠাও। দর্পণে কোনো দাগ হয়ে
যায়নি তো? দর্পণ পরিষ্কার আছে?
বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে স্বরাজ্য অধিকারীর স্বমান দিয়েছেন। বাবার দ্বারা সব
বাচ্চার মাস্টার সর্বশক্তিমানের টাইটেল প্রাপ্ত হয়েছে। মাস্টার শক্তিমান নয়,
সর্বশক্তিমান। অনেক বাচ্চা আধ্যাত্মিক বার্তালাপে এটাও বলে থাকে - বাবা তুমি তো
সর্বশক্তি দিয়েছো কিন্তু এই শক্তি কখনো কখনো সময়মতো কাজ করে না। রিপোর্ট করে -
সময়মতো ইমার্জ হয় না, সময় চলে যায়, তার পরে ইমার্জ হয়। কারণ কী! যে সময় যে
শক্তি আহ্বান করো সেই সময় চেক করো যে তুমি মালিক হয়ে সিটে সেট আছ কিনা! যদি কেউ
সিটে সেট না থাকে তবে সিটবিহীন কারও কোনো অর্ডার সে মানবে না। আমি স্বরাজ্য অধিকারী,
মাস্টার সর্বশক্তিমান, বাবার দ্বারা উত্তরাধিকার আর বরদানের অধিকারী - এই সিটে সেট
হয়ে তারপর অর্ডার করো। কী করবো, কীভাবে করবো, হচ্ছে না.. সিট থেকে নিচে বসে, সিট
থেকে নিচে নেমে যদি অর্ডার করো তবে মানবে কীভাবে! আজকালকার দুনিয়াতেও কোনো প্রাইম
মিনিস্টার সিটে আছে তো সবাই মানবে, কিন্তু যদি সিট থেকে নেমে যায় তবে কেউ মানবে?
সুতরাং চেক করো তুমি সিটে সেট আছ কিনা! অধিকারী হয়ে অর্ডার করো কিনা! বাবা
প্রত্যেক বাচ্চাকে অথরিটি দিয়েছেন, পরমাত্ম অথরিটি, কোনো আত্মার অথরিটি প্রাপ্ত
হয়নি, কোনো মহাত্মার অথরিটি প্রাপ্ত হয়নি, পরমাত্ম অথরিটি, সুতরাং অথরিটি আর
অধিকার এই স্থিতিতে স্থিত হয়ে যে কোনও শক্তিকে যদি অর্ডার করো, সে জী হুজুর জী
হুজুর করবে। সর্বশক্তির সামনে এই মায়া, প্রকৃতি, সংস্কার, স্বভাব সব দাসী হয়ে যাবে।
তারা তোমরা-সব মালিকের অপেক্ষা করবে - মালিক কোনো অর্ডার করো।
সমর্থ দিবস তো না! তো বাচ্চাদের মধ্যে কি কি সামর্থ্য আছে বাপদাদা সেটা রিভাইস
করাচ্ছেন। আন্ডারলাইন করাচ্ছেন। সময়কালে কেন শক্তিহীন হয়ে যায়। বাপদাদা দেখেছেন,
মেজরিটি বাচ্চার লিকেজ রয়েছে, লিকেজ থাকার কারণে সমূহ শক্তি কম হয়ে যায়। এছাড়াও,
লিকেজ হয় বিশেষ দুটো বিষয়ে। সেই দুটো বিষয় হলো - সংকল্প আর সময় ওয়েস্ট চলে যায়।
খারাপ হয় না কিন্তু ব্যর্থ সময়কালে খারাপ কাজ না করলেও, জমাও করে না। তোমরা শুধু
দেখ আজ খারাপ কাজ কিছু হয়নি কিন্তু ভালো কিছু কী জমা করেছ? নষ্ট করনি কিন্তু
উপার্জন করেছ? দুঃখ দাওনি কিন্তু সুখ কতজনকে দিয়েছ? কাউকে অশান্ত করনি কিন্তু
শান্তির ভাইব্রেশন কতটা ছড়িয়েছ? শান্তিদূত হয়ে কতজনকে শান্তি দিয়েছ -
বায়ুমণ্ডল দ্বারা কিংবা মুখ দ্বারা অথবা ভাইব্রেশন দ্বারা? কেননা, তোমরা জানো যে
এটা পুরুষোত্তম কল্যাণকারী সময়, এই অল্প একটু সময়ই তোমাদের জমা করার সময়। এখন নয়
তো কখনো নয়, এটা প্রতিটা মুহূর্ত যেন স্মরণে থাকে। হয়ে যাবে, করে নেবো... এখন নয়
তো কখনো নয়। ব্রহ্মা বাবার এই তীব্র গতির পুরুষার্থ ছিল তবেই নম্বর ওয়ান লক্ষ্যে
পৌঁছেছেন। তো বাবা যে শক্তি গুলি (সমর্থী) দিয়েছেন, আজ সমর্থ দিবসে তা' স্মরণে
এসেছে তো না! সঞ্চয়ের স্কিম বানাও। সংকল্পের সঞ্চয়, সময়ের সঞ্চয়, বাণীর সঞ্চয়,
যা যথার্থ বোল নয়, অযথার্থ ব্যর্থ বোল তা না হওয়ার থেকে সঞ্চয়।
বাপদাদা সব বাচ্চাকে সদা অথরিটির সিটে থাকা স্বরাজ্য অধিকারী রাজা রূপে দেখতে চান।
পছন্দ? এই রূপ পছন্দ হয়েছে তো না! কখনও যদি বাপদাদা কোনও বাচ্চাকে টিভিতে দেখেন তো
এই রূপে যেন দেখতেপান। বাপদাদার ন্যাচারাল টিভি আছে, সুইচ টিপতে হয় না। একই সময়ে
চতুর্দিকে দেখতে পারেন। প্রতিটা কোণে প্রত্যেক বাচ্চাকে দেখতে পারেন। এটা হতে পারে?
কাল থেকে টিভি যদি খোলা হয় তবে কী দৃশ্যমান হবে? ফরিস্তা ড্রেসে। ফরিস্তার ড্রেস
হলো ঝলমলে ড্রেস, ঝলমলে লাইটের ড্রেস, শরীরী ভাবের এই মাটির ড্রেস পরো না। ঝলমলে
ড্রেস হবে, সফলতার নক্ষত্র হবে, প্রত্যেকের এমন মূর্তি বাপদাদা দেখতে চান। পছন্দ
হয়েছে তো না! তোমরা মাটির ড্রেস পরিধান করলে তো মাটির হয়ে যাবে, তাই না! ঠিক যেমন
বাবা অশরীরী, তেমন ব্রহ্মা বাবাও আছেন ঝলমলে ড্রেসে, ফরিস্তা। তো ফলো ফাদার।
স্থূলভাবে দেখো, তোমাদের কোনো কাপড়ে যদি মাটি লেগে যায়, দাগ হয়ে যায় তবে কী করে
থাকো তোমরা? বদলে নাও তো না! এভাবেই চেক করো যে, সদা ঝলমলে ফরিস্তা ড্রেসে আছ কিনা!
যাতে বাবা গৌরবান্বিত হন যে প্রত্যেক বাচ্চা রাজা বাচ্চা, সেই স্বরূপে থাকো। রাজা
হয়ে থাকো। এভাবেই মায়া তোমাদের দাসী হয়ে যাবে আর বিদায় নিতে আসবে, অর্ধেক
কল্পের জন্য বিদায় নিতে আসবে, আঘাত করবে না। বাপদাদা সদা বলেন - বাবার প্রতি যে
নিজেকে নিজে সমর্পণ করে দেয় তারা কখনো পরাজিত হয় না। যদি পরাজয় হয় তবে সমর্পণ
নেই।
এখন তোমাদের সকলের মিটিং হবে, তাই না! মিটিংয়ের ডেট ফিক্স হয় তো না! তো এই বারে
শুধু সার্ভিসের প্ল্যানের মিটিং বাপদাদা দেখতে চান না, সার্ভিসের প্ল্যান বানাও
কিন্তু মিটিংয়ে সফলতার সেরিমনির ডেট ফিক্স করো। তোমরা হয়তো ভাবছো যে সবাই কেমন হবে!
বাপদাদা বলেন, কমপক্ষে ১০৮ রত্ন তো সফলতা মূর্ত হওয়ার সেরিমনি উদযাপন করে।
এক্সাম্পল হয়েছে। এটা হতে পারে? বলো। প্রথম লাইনের তোমরা বলো, হতে পারে? উত্তর
দেওয়ার সাহস রাখো না। তোমরা ভাবছ জানি না করবো কি করবো না! সাহসের দ্বারা সব কিছু
হতে পারে। দাদি বলবে। ১০৮ সফলতা মূর্ত হতে পারে? (হ্যাঁ অবশ্যই পারে, সফলতার সেরিমনি
হতে পারে) দেখো, দাদির মধ্যে সাহস আছে। তোমাদের সকলের তরফে দাদি সাহস রাখছে। সুতরাং
সহযোগী হও। তো এই যে মিটিং হবে তা'তে বাপদাদা রিপোর্ট নেবেন। পাণ্ডব তোমরা তো বলো,
কেন চুপ করে আছ? চুপ করে আছ কেন? এই সাহস কেন রাখো না? করে দেখাব, এভাবে? সেটা ভালো,
সাহস তো রাখতে পারো। যারা ভাবছ আমরা তো সাহস বজায় রেখে করে দেখাবো, তারা হাত উঠাও।
করবে? কোনো সংস্কার থাকবে না? কোনো দুর্বলতা থাকবে না? আচ্ছা, মধুবনের যারা, তারাও
হাত উঠাচ্ছে। বাঃ! অভিনন্দন, অভিনন্দন। আচ্ছা ১০৮- এ হওয়া তো তাহলে সহজ হয়ে যাবে।
যখন এত সবাই হাত তুলেছে তখন ১০৮ কি এমন বড় ব্যাপার! ডবল ফরেনার্স তোমরা কী করবে?
হ্যাঁ, দাদি জানকি শুনছে, তার আগ্রহ হচ্ছে আমি বলি। ফরেনের মালাও দেখবো, ঠিক আছে?
হাত উঠাও, ঠিক আছে। আচ্ছা আজ এরা কত সংখ্যক বসে আছে? (২০০) এর মধ্যে থেকে ১০৮ তো
তৈরি হয়ে যাবে! ঠিক আছে তো না! এক্ষেত্রে যেটা করতে হবে, 'প্রথমে আমি' - অন্যকে
দেখার দরকার নেই, প্রথমে আমি। আর ম্যায় ম্যায় (আমি আমি) ক'রো না, এই 'আমি' অবশ্যই
ক'রো। বাপদাদা তোমাদের আরও কাজ দিচ্ছেন।
আজ সমর্থ দিবস তো না তাইতো 'মানসিক বল' (সামর্থ্য) রয়েছে। বাপদাদা এক বিচিত্র
দীপাবলি উদযাপন করতে চান। তোমরা তো অনেকবার দীপাবলি উদযাপন করেছ, কিন্তু বাপদাদা
বিচিত্র দীপাবলি উদযাপন করতে চান। বলবেন? বলবেন? বলবেন? আচ্ছা। বর্তমান সময়কে তো
দেখছো, দিন দিন চতুর্দিকের মনুষ্য আত্মাদের মধ্যে অত্যধিক নিরাশা বাড়ছে। সুতরাং,
হয় মন্সা সেবা করো, কিংবা বাচা সেবা, অথবা সম্বন্ধ সম্পর্কের সেবা, কিন্তু বাপদাদা
নিরাশ মানুষের মধ্যে আশার দীপ জ্বেলে দিতে চান। চতুর্দিকে মনুষ্য আত্মাদের মনে যেন
আশার দীপ জ্বলে ওঠে। আশা-দীপের এই দীপাবলি বাপদাদা দেখতে চান। হতে পারে এটা? এই
আশার দীপ যদি অন্তত: বায়ুমণ্ডলে জ্বলে ওঠে তবে বিশ্ব পরিবর্তন এই হলো ব'লে।
গোল্ডেন প্রভাত সমাগত প্রায়। কিছু হওয়ার নেই, কিছু হওয়ার নেই - এই নিরাশা যেন
শেষ হয়ে যায়, আশার দীপ জ্বলে ওঠে। এটা করতে পারো তো, তাই না! এটা সহজ তো না, নাকি
কঠিন? সহজ? যে করবে সে হাত উঠাও। করবে তোমরা? এত সবাই দীপ জ্বালাবে তাহলে দীপমালা
হয়েই যাবে, তাই না! ভাইব্রেশন এত পাওয়ারফুল করো। ঠিক আছে তাদের সামনে পৌঁছাতে না
পারো কিন্তু লাইট হাউজ, মাইট হাউজ হয়ে দূর পর্যন্ত ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দাও। যখন
সায়েন্স লাইট হাউজ দ্বারা দূর পর্যন্ত লাইট দিতে পারে তাহলে কি তোমরা ভাইব্রেশন
ছড়িয়ে দিতে পারবে না? শুধু দৃঢ় সংকল্প করো - করতেই হবে। বিজি হয়ে যাও। মনকে যদি
বিজি রাখো তবে নিজেরও লাভ আর অন্য আত্মাদেরও লাভ। চলতে ফিরতে এটাই বৃত্তিতে রাখো যে
বিশ্বের কল্যাণ করতেই হবে। এই বৃত্তি বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়বে, কেননা, সময়
অনুসারে সবকিছু আচমকা হবে। এমন যেন না হয় যে তোমাদের ভাই-বোনেরা অভিযোগ তুলবে তোমরা
আমাদের বলনি কেন! অনেক বাচ্চারা ভাবে শেষ সময় পর্যন্ত করে নেবে কিন্তু শেষ সময়ে
করলেও তারা তোমাদের প্রতি অভিযোগ করবে। এই অভিযোগই করবে, কিছু সময় আগে আমাদের যদি
বলতে তবে কিছু তো করতে পারতাম! সেইজন্য সব সংকল্পে বাপদাদার স্মরণে লাইট নিতে থাকো,
লাইট হাউজ হয়ে লাইট দিতে থাকো। টাইম ওয়েস্ট ক'রো না। বাপদাদা যখন দেখেন যে তোমরা
অনেক যুদ্ধ করছ, তখন বাপদাদার সেটা ভালো লাগে না। মাস্টার সর্বশক্তিমান আর যুদ্ধ
করছ! সুতরাং রাজা হও, সফলতা মূর্ত হও, নিরাশা শেষ করে আশার দীপ জ্বালাও। আচ্ছা।
সব দিকের বাচ্চাদের স্নেহের স্মরণের অনেক মালা তো পৌঁছে গেছে, যারা স্মরণ পাঠিয়েছে
বাপদাদা তাদেরকে সমুখে দেখতে দেখতে স্মরণের রেসপন্ড হিসেবে হৃদয়ের আশীর্বাদ,
হৃদয়ের ভালোবাসা দিচ্ছেন। আচ্ছা - এখন কী করতে হবে?
যারা প্রথমবার এসেছো তারা ওঠো - এটা ভালো, সব টার্নে দেখা গেছে মেজরিটি নতুন থাকে।
তো সার্ভিস তোমরা বাড়িয়েছ তো না, এত সংখ্যককে বার্তা দিয়েছ। তোমরা যেমন সমাচার
পেয়েছ তেমনই তোমরাও আরও দ্বিগুন, দ্বিগুন সমাচার পৌঁছে দাও। যোগ্য বানাও। এটা ভালো।
সব সাব্জেক্টে আরও উৎসাহ-উদ্দীপনায় এগিয়ে যাও।
আচ্ছা - এখন সবাই লক্ষ্য রাখো, চলতে ফিরতে হয় মন্সা, অথবা বাচা, কিংবা কর্মণা, সেবা
ব্যতীত থাকা উচিত নয় আর স্মরণ বিনাও থেকো না। স্মরণ আর সেবা সদা সাথেই থাকবে।
নিজেকে এতটাই বিজি রাখো, স্মরণেও সেবাতেও। যদি তোমরা খালি থাকো তবে মায়া আসার
চান্স পেয়ে যায়। এত বিজি থাকো যে দূর থেকেই মায়া যেন সাহস না পায় আসার। তখন, যে
লক্ষ্য রেখেছ বাবা সমান হওয়ার তা' সহজ হয়ে যাবে। পরিশ্রম করতে হবে না, স্নেহী
স্বরূপ থাকবে। আচ্ছা।
বাপদাদার নয়নে সমাহিত আলোক রত্ন বাচ্চাদের, বাবার সমুদয় প্রপার্টির অধিকারী
শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, বাচ্চারা যারা সদা উৎসাহ-উদ্দীপনার ডানা মেলে ওড়ে এবং অন্যদের
ওড়ায় সেই মহাবীর বীরাঙ্গনা বাচ্চাদের, এক বাবাই সংসার - এই একাগ্রতায় মগ্ন থাকে
এমন বাচ্চাদের, লাভলিন হওয়া অর্থাৎ বাবা সমান সহজ হওয়া লাভলি আর লাভলিন উভয়
বাচ্চাদের অনেক অনেক পদম্ পদম্ গুন স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
নিজের সব কর্ম বা বিশেষত্বের দ্বারা দাতাকে
প্রত্যক্ষ করিয়ে প্রকৃত সেবাধারী ভব
প্রকৃত সেবাধারী কোনও আত্মাকে সহযোগ দিয়ে নিজের
প্রতি আটকে রাখবে না। তারা বাবার সাথে সকলের কানেকশন করিয়ে দেবে। তাদের প্রতিটা
বোল বাবার স্মৃতি জাগিয়ে তুলবে। তাদের প্রতিটি কর্মের দ্বারা বাবা প্রতীয়মান হবেন।
তাদের এই রকম কোনও সংকল্প আসবে না যে আমার বিশেষত্বের কারণে এ' আমার সহযোগী হয়েছে।
যদি তোমাকে দেখে, বাবাকে নয় - তবে সেটা সেবা করোনি; বাবাকে ভুলিয়ে দিয়েছো।
প্রকৃত সেবাধারী সত্যের সাথে সবার সম্বন্ধ জুড়ে দেবে, নিজের সাথে নয়।
স্লোগান:-
যে কোনো আর্জি পেশ করার পরিবর্তে সদা সন্তুষ্ট থাকো।
অব্যক্ত ইশারা :- সংকল্পের শক্তি জমা করে শ্রেষ্ঠ
সেবার নিমিত্ত হও শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের রেখা টানার বিধি হলো - শ্রেষ্ঠ সংকল্প আর শ্রেষ্ঠ
কর্ম। অন্য আত্মা হোক বা সেবাধারী আত্মা উভয়ই এই আধার দ্বারা নম্বর নিতে পারে।
উভয়েরই ভাগ্য বানানোর পুরো চান্স আছে, যে যত ভাগ্য বানাতে চাইবে সে ততই বানাতে পারে।